জীবনে দেশ ছেড়ে এতদূরে থাকবো কখনো ভাবিনি । ইংলিশ মুভি দেখতে দেখতে মাঝে মাঝে আমেরিকায় যেতে ইচ্ছা করত কিন্তু তাই বলে অস্ট্রেলিয়া ! তবে ঘটনাচক্রে ২০০৩ থেকে অস্ট্রেলিয়াতে আছি আরো নির্দিষ্ট করে বললে সিডনীতে আছি । অনেকদিন কিছু লেখা হয়না এমনকি ব্লগেও আসা হয়না । এমনি একটা ডুব মেরে আছি । তাই এটাকে ঠিক কামব্যাক পোস্ট ও বলা যাচ্ছেনা কারণ আমার ডুব মারার সম্ভাবনা অনেক বেশি । তৌফিক (এম সি সি) কোন লেখায় যেন বলেছিল সিডনী জীবন নিয়ে কিছু লেখার জন্য । আসুন আজকে আপনাদের আমার সিডনী জীবনের খন্ড খন্ড গল্প বলি ।
১.
ফেব্রুয়ারির আটাশ তারিখে সিডনী পৌছালাম, সালটা ২০০৩ । দূর সম্পর্কের এক খালা থাকেন তাই প্রাথমিক ভাবে উনার বাসাতেই উঠলাম । এয়ারপোর্ট থেকে বাসায় এসেই শাফায়েতকে (এম সি সি ৯৪) ফোন করে জানালাম আমি সিডনীতে আসছি । প্রথমে তো বিশ্বাস করতে চায়না আমি আসছি, পরে রেগে গেল ওকে আগে কেন জানালামনা আমি আসতেছি সিডনীতে । এয়ারপোর্টে আমাকে রিসিভ করতে পারতো । এসব বলে বিশাল ঝাড়ি খেলাম । কোন রকমে সরি বলে বাঁচলাম । পরেরদিন ওর বাসায় গেলাম । মজার ব্যাপার ওরা তিন ভাই এর তিনজনই অস্ট্রেলিয়াতে থাকে । ওর সাথে দেখা করতে গিয়ে জীবনে প্রথম ট্রেনে চড়লাম, তেমন আহামরি কিছু লাগলোনা । বাংলাদেশে আমি জীবনে কখনো ট্রেনে চড়িনাই । ভাবতেই অদ্ভুত লাগে । এবার (২০০৮) দেশে গিয়েও চড়তে পারলাম না । ট্রেনে উঠে বসতেই শুনি ট্রেন যাবে না আ্যাকসিডেন্ট করেছে । যাকগে পুরা ঘটনা আরেকদিন বলব । শাফায়েত এইচ এস সি এর পর থেকেই সিডনীতে । ওর পরে জাহিদ,শশী,জান্নাতুল আর সবার পরে আসলাম আমি । তখন ওর আম্মা ও বেড়াতে আসছিলেন । আমি আবার কলেজ স্টাইলে আম্মুকে একটা চিঠি লিখে দিলাম । পরে শাফায়েত আমাকে বাসা যে সাবার্বে সে সাবার্বের স্টেশন পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে চলে গেল । যাবার সময় কিছু খুচরা পয়সা দিয়ে গেল যাতে দরকার পড়লে ওকে পে ফোন থেকে ফোন করি । স্টেশন থেকে খালার বাসা ১৫ মিনিট হাঁটা পথে । আমি ওকে চলে যেতে বললাম । শাফায়েত যাবার পরই সিডনী জীবনের প্রথম ধাক্কা খেলাম । কিছুদূর যাবার পর একটা অন্ধকার রাস্তায় পড়লাম ছিনতাইকারীদের হাতে । ছোটখাটো দুই ভিয়াতনামীজ তাদের চেয়ে বড় এক ছুরি হাতে নিয়ে সব দিয়ে দিতে বলল । ভাগ্যিস বেশি কিছু ছিলনা । ২০ ডলারের একটা নোট আর শাফায়েতের দেয়া খুচরা পয়সা, দিয়ে দিলাম । ঢাকায় কখনো যে অভিজ্ঞতা হয়নি সিডনীতে হয়ে গেল । খুবই অবাক হলাম । পুলিশ সম্পর্কে বাংলাদেশের ধারনা তখনো কাটিয়ে উঠতে পারিনি তাই আর কমপ্লেইন করলাম না, আর ২০ ডলারের জন্য কমপ্লেইন শুনতে কেমন লাগে । এইতো গেল আমার সিডনী জীবনের দ্বিতীয় দিনের কাহিনী ।
২.
এবার ফাস্ট ফরোয়ার্ড করে কয়েকমাস আগের ঘটনায় যাই । রোযার আগে দিয়ে শাহেদের (সি সি সি) সাথে গল্প করছি । ওর হঠাত মনে হল আমাদের ব্যাচের পোলাপানের আড্ডাবাজি কম হচ্ছে, কিছু একটা করা দরকার । বাসায় এসে দেখি ফেসবুকে গ্রুপ মেসেজ এসেছে । প্রতি মাসে আমাদের ম্যারেড দোস্তদের গেট টুগেদার এ্যারেন্জ করার প্রস্তাব নিয়ে । এরপর থেকে শুরু হল আমাদের প্রায় প্রতি মাসে নিয়ম করে একবার অথবা দুবার করে আড্ডাবাজি । কেউ আড্ডা মিস করলে তাদের জন্য এক্সট্রা ড্রিল । অটোমেটিক তার পরের সপ্তাহে দাওয়াত ইস্যু । এখন পর্যন্ত আমাদের শশী একটা এক্সট্রা ড্রিল পেয়েছে । আমাদের লাস্ট আড্ডাবাজিটা ছিল শাফায়েতের বাসায় । মোট ১১ জন এসেছিলাম আমরা বিভিন্ন কলেজের । আর ভাবীরা তো ছিলোই । মজার খাওয়া দাওয়া, ধুমায়া আড্ডা আর সংসদের মত গোল হয়ে বসে.. না সিগারেট টানা হয়নি । বিয়ে করে সিগারেট অনেকের জীবনে ব্যান । তার বদলে আমরা হুক্কা টেনেছি 😀 ঠিক যেন কলেজের বৃহস্পতিবারের আড্ডাটা ।
ইশশ এত আনন্দ কেন। হিংসিত হইছে চরম হিংসিত...
পড়া শেষ করে এদিকে এসে পর 😀
মাস্টার্স পাশ করতে করতে ২০১২ ... তখন দেশে যাইতে চাই আর বাইরে না আর ভাল্লাগে না। অবশ্য তখন দেখা যাবে দেশের থেকে পোলাপান সব বাইরেই বেশি। আমরা ইন্টার পাশ করে এসে ধরা খাইলাম।
সিসিবিতে তো দেখি পুরা কামব্যাক সপ্তাহ চলতেছে 🙂
লেখা পড়ে মজা লাগল আদনান ভাই :thumbup:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
ধন্যবাদ আহসান । খবর কি তোমার ? পরীক্ষা শেষ হইছে ?
আপাতত শেষ হয়েছে। অনেক দিন পর একটু রিল্যাক্স হয়েছি।
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
মনে রাখছেন দেখি... 🙂
আমি একদম একা পড়ে গেছি... কেউ নাই... 🙁
পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম। ;;)
আরে মিয়া তোমারে কত করে কইতাসি, আমাদের এইদিকে চইলা আসো। :grr:
আইসা পর সিডনীতে 😀
ছোট ভাই একটা আবদার করছে ফেলি কেমনে ! আবার নিজের কলেজ প্লাস নিজের হাউসের । পাংগাও তো খাইছো কত 😀
এই বললাম, আর এই পোষ্ট দিলা 😮
তোমার তো ভাব'ই আলাদা 😛
থেমে থেকো না কিন্তু 🙂
কি যে লিখব বুঝতেছিলাম না । হঠাত করে এক বসায় লিখে ফেললাম । কাজের প্রেশার এখন একটু বেশি । সব কিছু মিলিয়ে টাইম বাইর করতে পারিনা । তবে লিখব আবার । একটা কিছুর আইডিয়া আসুক 😀
এতো ছোট পোস্ট ক্যান? মাইনাস। 😀
তোমারে আজকাল দেখাই যাইতেসেনা, বিশাল ব্যস্ত মনে হইতাসে :grr:
ঐ কারণে না। 😀 সেমিস্টার ফাইনাল চলে। পড়ি আর বাঁশ খাই। তারপর আবার পড়ি, আবার বাঁশ খাই। আজকে হলে যেয়ে প্রশ্ন নিয়া দেখি, ২৪০ এর মধ্যে ২০ নম্বরও পারি না। দুনিয়াজুরা পচুর গিয়ানজাম, বুঝলেন 🙁
=)) =)) =))
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
বিলাইয়ের মত হাসিস ক্যান :grr: :grr:
দিহান তোমারে আজকাল দেখাই যাইতেসেনা, বিশাল ব্যস্ত মনে হইতাসে :grr:
অফটপিকঃ
ভাইয়া মাঝে ফ্যামিলি সিকডে গেলোতো, তাই বোধহয়,
ভালো আছেন? আপনার ব্যথা আছে এখনো? 🙂
ইমরান ভাইয়ের কি হইছিল? সামি পরীক্ষা ভালমতো দে । রায়হানা কই? ওরে দেখিনা যে ।
কই ছোট নাতো মাঝারি 😀
মাইনাস দিস না এত্তোদিন পরে আসলাম :hug:
একটু রিওয়ইন্ড করে সিডনিতে যাবার পরের কাহিনী গুলো নিয়ে আরও পোস্ট চাই 🙂
আর মেসেন্ঞ্জারে না আসার জন্য তোরে ব্যাঞ্চাই
ঐ
আসুমনে আজকে । আগের কাহিনীও হবে নো ওয়ারিয মাইট 😛
দোস্ত, ছবিটা দেইখা একটু হিংসা হিংসা হইতেছিল, কিন্তু হিংসা করা ভালো না বইলা আমি আর হিংসা করলাম না! :grr: :grr:
লেখাটা ছোট হইয়া গেছে, তাড়াতাড়ি আরও বড় কইরা পরের পর্ব দে।
তোমরা যে প্রতি সপ্তাহে গেট টুগেডার আর প্রতি মাসে ট্যুর মার ঐটার কি হবে মামা ? আর আমি দেশে গেলে ট্যুরের জন্য কাউকে হারিকেন জ্বালায়েও পাওয়া যায় না x-(
শাহেদরে দেইখা মনটাই ভালো হইয়া গেল।
পারলে বলিস, আমি ওরে ইয়াদ করছি। 😀
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
আইচ্ছা 🙂
কামরুল আমিও তোরে ওনেক ই্য়াদ করি !!! কেমন আছিশ ??
সিরিজ হইবো মনে হইতাছে 🙂
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
নিয়্যত তো সেরকমই । আছেন কেমন বস ?
খালি ছিনতাইকারী আর গেট টুগেদারের কথা দিয়াই সারলেন। ওইযে একবার নাকি কুন স্বর্ণকেশী অযি তরুণীরে আপনি বিচ থেইকা লিফট দিছিলেন বাসা পর্যন্ত ঐ গল্পটা তো কইলেন না। ;)) ;))
আপনার শুরু অভিজ্ঞতাটা নিদারুণ, তবে আপনাকে হিংসে হচ্ছে ভাইয়া, কলেজমেট না হয় ব্যচমেট পেয়েছেন অস্ট্রেলিয়ায়। আমার এইখানে কেউ নাই। আর যোজন ক্রোশ দূরে তৌফিক ভাই আর দিহান আপু থাকে। আইতে কইলে আসে না, যাইতে চাইলে কয় পরে আসিস, এখন ব্যস্ত আছি(এইটুকু ডাহা মিথ্যা) ;তাই আমার অবস্থা এখন অপেক্ষায় আছি - রকিবুদ্দীন।
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
সাদিদ ভাই, সামী ভাই, মোস্তফা ভাইও আছেন। চলেন একটা গেট টুগেদার করি। ঐ উছিলায় সবার সাথে দেখা হইবো। 😀
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
তুই দ্যাশে আইলে অবিশ্যি অবিশ্যি আমার এইখান থিকা ঘুইরা যাবি......অপেক্ষায় আছি....... 😀 😀
ঐ রকিবের বাচ্চা রকিব, তোরে কবে কইসিরে?? 😡
তোর :just: ফেরেন্ড আইতেসেনা দেইখ্যাই তো তুইও আইতেসিস না :grr:
ম্যাশ পটেটো কি জানে?? তোর এই :just: ফেরেন্ডের কথা?? ;;)
কুন জাস্ট ফ্রেন্ডের কথা কইতাছেন?আপনারে কল দিছিলাম ফুন ধরেন নাই ক্যান?
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
x-( আমারে না জানাইয়া :just: ফেরেন্ড?খাড়া তোরে আইজকা লাকড়ি বানামু রকিব্বা :duel:
ছোট্ট তোর খবর'ই আসেরে ;)) ;))
মনে থাকি জানি যা যা কইলাম :grr: :grr:
খালি খালি নিরীহ নিষ্পাপ, সার্টিফাইড আগাছার নামে কিলিক লাগাইলেন। 😡 😡
আমি আমরণ অনশনে যাইতেছি। CO2, O2, H2O আর সূর্যের আলো ছাড়া কিছুই খামু না। :bash:
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
তুই যখন গল্প শুনতে চাইলি বলবনে একটা নো প্রবলেম । খালি আসল ঘটনা জানতে চাইস না 😛
জট্টিল কামব্যাক :clap: :clap: :clap:
লেখা জাক্কাস :thumbup:
থ্যাংকু
ইয়ে আদনান ভাই,আমার বাসায় আইসা ওই যে সিবিচের বার্বিকিউ পার্টির একটা গল্পে মাতাল হওয়া এক তন্বীর গল্প করছিলেন ওইটাও একটু সেন্সর কইরা সিসিবিতে দিয়া দিয়েন :-B
তোর :just: ফ্রেন্ড এর গল্পটাও কমু নাকি B-)
ফাস্ট ফরোয়ার্ড এর ব্যান চাই... x-(
আদনান ভাই, শুভ কামব্যাক... B-)
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
রিওয়াইন্ড ও হবে ব্যান করিস না 😀
কালকে রাতে ঢুঁ মেরে গিয়েছিলাম। কিন্তু মন খুব অস্থির ছিলো বলে পড়া হয়নি। আজকে ছুটির দিনের দুপুরে একটা আরামের খাওয়া খেয়ে বসলাম।
লেখাটা ভালো লাগছে আদনান ভাই, তবে আকারে ছোট হয়েছে। পড়তে পড়তে জমে উঠেছে আর দেখি শেষ। আমি আশা করছিলাম বিদেশের আলো-বাতাস-প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য-রাস্তা-ঘাট-নদী-দালান-কোঠা-জামা-কাপড় সবকিছুর :-B :-B একটা পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা পাবো!
আইচ্ছা আশায় আশায় রইলাম, পরের পর্বে নিশ্চয়ই আসছে সেগুলো! 😀
হুমম আসলেই ছোট হইছে । লিখতে আর ইচ্ছা করছিলনা । পরেরটা বড় করে লিখ ইনশাল্লাহ ।
ছেলে গুলা বেশির ভাগ আমাদের মত জামা-কাপড় পরে 😛