উপরে যে কয়েকটি গুণাবলীর কথা উল্লেখ করলাম, তার মধ্যে প্রথম তিনটি যাদের মধ্যে আছে, শেষেরটিও তাদের মধ্যে অবশ্যই পাওয়া যাবে। অর্থাৎ যিনি অপরের প্রতি সৌজন্য, সহযোগিতা এবং সুআচরণ প্রদর্শন করে থাকেন, তিনি অপরকে অবশ্যই সম্মানও করে থাকেন, এবং এ কারণে নিজেকেও অপরের নিকট সম্মানীয় করে তোলেন। অস্ট্রেলিয়ায় এটা আমার তৃতীয় সফর। প্রতিবারে আমি এখানকার পথে ঘাটে, ট্রামে বাসে ট্রেনে, শপিং মলে, রেস্তোরাঁয় এখানকার মানুষের মাঝে এই গুণগুলোর পরিচয় পেয়েছি।
বিস্তারিত»ভারী জীবনের ভারবাহী কিছু মানুষের কথা…..
দিনটি ছিল শনিবার, ১১ জুন ২০২২। ড্যান্ডিনং স্টেশনে নেমে আমরা অন্য লাইনের একটি ট্রেন ধরার জন্য প্ল্যাটফর্ম বদল করতে যাচ্ছিলাম। স্টেশনটি সে সময়ে মোটামুটি জনশূন্য ছিল বলা যায়। কিছুদূর এগোতেই দেখি, প্ল্যাটফর্মের মেঝেতে কে যেন শুয়ে আছে। তার পাশে একজন হাটু গেঁড়ে বসে তার মাথায়, গালে পরম মমতায় হাত বুলাচ্ছে। দু’জন ইউনিফর্মধারী স্টেশন সিকিউরিটি স্টাফ উদ্বিগ্ন চেহারায় শায়িত ব্যক্তির দিকে তাকিয়ে আছে এবং মৃদু পায়চারি করছে।
বিস্তারিত»ক্ষণিকের দেখা, এ মায়াময় ভুবনে – ৪
আগের পর্বটি পড়তে পারবেন এখানেঃ ক্ষণিকের দেখা, মায়াময় এ ভুবনে – ৩
এ পর্বে আমি যে দুটো ‘ক্ষণিকের দেখা’ স্মৃতি রোমন্থন করবো, তার প্রথমটি একটি দৃশ্যের, আর পরেরটি একটি (মানুষের) মুখের। অবশ্য প্রথমটি শুধুমাত্র একটি দৃশ্যের হলেও, তার পেছনে ছিল একটি অদেখা, কল্পিত মুখও।
সে বহুদিন আগের কথা। আমার বয়স তখন পঁচিশ-ত্রিশের মাঝামাঝি, আমি সেনাবাহিনীর একজন তরুণ অফিসার। ডিসেম্বর-জানুয়ারী মাসে সেনাবাহিনীর বাৎসরিক শীতকালীন যৌথ প্রশিক্ষণ অনুশীলন হয়ে থাকে।
বিস্তারিত»ক্ষণিকের দেখা, মায়াময় এ ভুবনে – ৩
এর আগের পর্বটি পড়তে পারবেন এখানেঃ ক্ষণিকের দেখা, এ মায়াময় ভুবনে -২
২০১৮ সালের ১১ জানুয়ারী, আমরা দুই বন্ধু মিলে সস্ত্রীক ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার (সম্ভবতঃ) পদ্মা তীরবর্তী মৈনট ঘাটে বেড়াতে গিয়েছিলাম। যদিও এটাকে অনেকে ঢাকার ‘মিনি কক্সবাজার’ বলে থাকেন, আমার কাছে তেমন আহামরি কিছু মনে হয়নি। তবে যাওয়ার পথে থেমে থেমে এটা ওটা করে বেশ আনন্দ করেছিলাম, যেমন সরিষা ক্ষেতে নেমে সোঁদা গন্ধের মাটিতে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা,
বিস্তারিত»সকাল ছয়টা বারো
আমার জীবনে ছয় কিংবা বারো,
সংখ্যাদুটোর কোনটাই–
তেমন কোন প্রভাব কখনো রাখেনি।
অথচ গত দুটো মাস ধরে ক্রমাগত
সংখ্যাদুটো একসাথে পাশাপাশি বসে
আমাকে নিত্য ডাক দিয়ে যাচ্ছে।
আমি কখনো কখনো অপেক্ষা করে থাকি
এ সময়টার জন্য। কখনো বা এমনিতেই
চোখ পড়ে যায় ঠিক এই সময়টাতেই,
ডিজিটাল ঘড়িতে। প্রত্যুষের প্রার্থনা শেষে
আমি বাইরে তাকাই।
ক্ষণিকের দেখা, এ মায়াময় ভুবনে -২
এর আগের পর্বটি পড়তে পারবেন এখানেঃ ক্ষণিকের দেখা এ মায়াময় ভুবনে-১
আজকের এ পর্বে ক্ষণিকের দেখা তিনটি চরিত্রের কথা বলবো, ঘটনার দিন-তারিখ উল্লেখসহঃ
০১ জনুয়ারী ২০২১, সকাল দশটা। গত চারদিন ধরে আম্মা রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল হাসপাতালের সন্নিকটস্থ ‘ডক্টর্স ক্লিনিক’ এ চিকিৎসাধীন আছেন। অবস্থার কিছুটা উন্নতি হচ্ছে বিধায় চিকিৎসক জানিয়েছেন যে আজ কালের মধ্যে ওনাকে ছেড়ে দিবেন। আমরা চাচ্ছি যে হাসপাতাল থেকে বাড়ী নিয়ে আসার আগে তাঁকে আমাদের প্রস্তাবিত (কল করা) আরেকজন নিউরো মেডিসিন বিশেষজ্ঞ পরীক্ষা করে দেখুক।
বিস্তারিত»হেমন্তের কথা
আজ পহেলা অগ্রহায়ণ। আজ থেকে শুরু হলো হেমন্ত ঋতুর দ্বিতীয় মাস। আমার জন্ম-মাস। শৈশবে-কৈশোরে পর পর কয়েকটি শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষায় বাংলা রচনা লিখার জন্য “তোমার প্রিয় ঋতু” একটি অবধারিত বিষয় ছিল। আমি সাধারণতঃ বাংলা বা ইংরেজী রচনা, কোনটাই মুখস্থ লিখতাম না। কারণ মুখস্থ লিখেছি বুঝতে পারলে শিক্ষক মহোদয় সে রচনায় কম নম্বর দিতেন। নিজে চেষ্টা করে লিখলে, যে রকমই লিখি না কেন, মুখস্থ লেখার চেয়ে ভালো নম্বর পেতাম।
বিস্তারিত»আমার বুকে তোমার বসত
আমি ডাকলেই তুমি সাড়া দাও, কখনো দ্রুত,
কখনো কিছুটা বিলম্বে হলেও, পরে বুঝতে পারি,
সে সময়টাই ছিল উপযুক্ত। এমন ভাবে সাড়া দাও,
যেন চোখের আড়ালেই ছিলে, শুধু ডাকের অপেক্ষায়।
সাড়া পাই তবে কায়া দেখি না, কারণ তুমি কায়াহীন।
আমি তো এতদিনে বিলক্ষণ বুঝে গেছি,
অদৃশ্য কার কাছে চাইতে হয়, তার কায়া না দেখেও!
তোমাকে ছিলাম ভুলে বহুদিন,
বিস্তারিত»ক্ষণিকের দেখা এ মায়াময় ভুবনে-১
গত ২৫ মার্চ ২০২০ তারিখে অস্ট্রেলিয়া-নিউযীল্যান্ড সফর শেষ করে ঢাকা ফিরে এসে দীর্ঘদিন খুবই কঠোরভাবে ‘স্বেচ্ছাবন্দী’ (Self Quarantined) হয়ে ঘরের মাঝে নিজেকে আটকে রেখেছিলাম। যা কিছু ঘোরাঘুরি পায়চারি, ঐ ঘরের মধ্যেই। তিনমাস এভাবেই ছিলাম। তারপর ধীরে ধীরে একটু একটু করে এ নিয়মে শৈথিল্য আসে। এখন মাসে একবার করে ডাক্তারের পরামর্শ/ঔষধ সংগ্রহের জন্য সিএমএইচ এ যাই, ব্যাংকের কাজগুলোও জমিয়ে রাখি একই দিনে করার জন্য। কয়েকমাস পর পর পেনশনও তুলি ঐ একই দিনে,
বিস্তারিত»ফাহিয়ানের গল্প
এ ব্লগটা একটা পাবলিক প্ল্যাটফর্ম। এখানে ব্যক্তিগত কথা না বলাই ভাল, এ আমি ভাল করেই জানি। তবুও এখানে আমার অনেক লেখাই আছে, শুধু ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ নিয়ে। আমার লেখা ভ্রমণ কাহিনীগুলোতেও প্রায় সময় ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথাই বিবৃত হয় বেশী। এটা ব্লগের হয়তো অনেকে পছন্দ করেন না, তবে এর পেছনে আমার একটা লক্ষ্য থেকে থাকে। এসব পাঁচালিতে আমি মানবতার কথা বলতে চাই, আমার চোখে দেখা প্রকৃতির সৌন্দর্যের কথা বলতে চাই,
বিস্তারিত»জাতিসংঘের ‘উন্নয়ন গবেষণা প্রধান’ ড. নজরুল ইসলাম কে যেমন দেখেছিঃ একজন সহপাঠীর দৃষ্টিতে
এটি মূলতঃ একটি স্মৃতিচারণমূলক লেখা। ড. নজরুল ইসলাম বর্তমানে জাতিসংঘে সিনিয়র ইকনমিস্ট হিসেবে কর্মরত আছেন। অতি সম্প্রতি জাতিসংঘ তাকে ‘উন্নয়ন গবেষণা প্রধান’ (চীফ অভ ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ) হিসেবে নিয়োগ দান করেছে। এটা আমাদের জন্য গর্বের একটি বিষয়। আমি স্কুল-কলেজ জীবনে তার সহপাঠী ছিলাম। তাকে খুব ঘনিষ্ঠভাবে চিনি। অর্ধ শতাব্দীরও কিছু বেশি সময় আগের স্মৃতির ঝুলি হাতড়িয়ে এসব কথা আজ মনে হলো। নজরুলের সাম্প্রতিক সাফল্যে আমি এতটাই অভিভূত হয়েছি যে আমার মনের ভেতর থেকে তাগিদ অনুভব করেছি,
বিস্তারিত»স্বাভাবিক সৌজন্যের বৈপরীত্য
অনুকূল ভাবনাঃ
আমাদের জীবনের কিছু অদৃশ্য ছাতার কথা ভেবে গত ০৯ মার্চ ২০১৯ তারিখে একটা কবিতা লিখেছিলাম। সেটা একটি ইংরেজী কবিতার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছিল। গতকাল একজন আমেরিকান গল্পলেখক আমাকে জানালেন যে তিনি একটি গল্প লিখছেন, সে গল্পের জন্য তিনি একটি ‘ছাতা’ বিষয়ক কবিতা খুঁজছিলেন। সার্চে তিনি আমার ‘An Invisible Umbrella’ শীর্ষক কবিতাটির সন্ধান পেয়েছেন, যেটা তার গল্পের সাথে সম্পূর্ণ সাযুজ্যপূর্ণ (তার ভাষায়, ‘it fits perfectly into my story’)।
বিস্তারিত»সমব্যথী
যারা কারো কথা ভেবে নীরবে এখানে ওখানে
দু’এক ফোঁটা অশ্রু ফেলে গোপনে গোপনে,
আবার চকিতে চোখ মুছে মুখে ম্লান হাসি হাসে,
আমি তাদের ব্যথার ভাষাটা বুঝি।
যে নারী রসুইঘরে পঞ্চব্যঞ্জন রাঁধতে রাঁধতে
প্রবাসী সন্তান কিংবা অন্য কারো কথা ভেবে,
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে আবার রান্নায় মনোযোগী হন,
আমি তার দীর্ঘশ্বাসের কারণটার কথা জানি।
যে কিশোরী রাফ খাতায় অঙ্ক কষতে কষতে
হঠাৎ একটি মুখ এঁকে ফেলে,
তখন এই ভালো….
তুমি একটা কিছু বললেই,
আমি চুম্বকের মত আকর্ষিত হই,
অভিভূত হই, আলোড়িত হই।
তোমার অদেখা মুখটা খুঁজতে থাকি,
চোখ দুটো খুঁজি, চোখের তারা খুঁজি।
আমার কান দুটো অতন্দ্র প্রহরীর মত
জেগে থাকে, বৃষ্টির শব্দ শোনার মত
তোমার সুরেলা কন্ঠ শোনার জন্য।
কিন্তু এসব কোন কিছুই যখন হবার নয়,
এ দু’চোখ তোমাকে
খুঁজে পাবে না,
হ্রস্ব জীবন, দীর্ঘ প্রতিবিম্ব
ঝুলে থাকে সে ঝুলে থাকা একটি পাতায়,
কিংবা কখনো নিশ্চুপ বসে থাকে
কোন সবুজ ঘাসের উঁচু করে থাকা মাথায়।
কখনো শিশির বিন্দু হয়ে, ধানের শীষে…
নয়তো জলে ভাসমান কোন পদ্মপাতায়,
কিংবা হিল্লোলিত কোন পুষ্পকোরকে।
যেখানেই সে থাক, যেভাবেই থাক,
তার স্মৃতি রয়ে যায় এক মুগ্ধ কবির নয়নে।
মৃদুমন্দ বাতাসে আন্দোলিত হতে হতে,
একটা সময় সে টুপ করে ঝরে পড়ে,