ভালোবাসার বন্ধুত্ব- ১১

ভালোবাসার বন্ধুত্ব- [১] [২] [৩] [৪] [৫] [৬] [৭] [৮] [৯] [১০]
৪৭।
“শেরটা ভালো ছিলো কালকের। কারো অফার দিতে গেলে কাজে লাগবে।“
পরদিন নীলিমা বললো নীলের সাথে দেখা হতেই।
নীলঃ তাই তো তোমাকে দিয়েছি।
নীলিমাঃ মানে?
নীলঃ মানে আশা করি বুঝতেই পারতেছো। তুমিই তো বললে কাউকে অফার দেয়ার জন্য শেরটা ভালো।
নীলিমাঃ তুমি কি সিরিয়াস? নাকি ফান করছো?
নীলঃ এর চেয়ে বেশি সিরিয়াস আমি জীবনে আর কখনো হই নাই।
নীলিমাঃ সেই ক্ষেত্রে মনে হয় আমাদের এই সুন্দর বন্ধুত্ব টা আর থাকা সম্ভব হচ্ছে না।সরি। আমি এখন যাবো।
নীলঃ কিন্তু হ্যা বা না তো বলে যাও। এই উত্তর টা আমার খুব দরকার।
নীলিমা কিছু না বলে হেটে চলে গেলো।
৪৮।
তমালঃ দেখ তোর যা করার দরকার ছিলো তুই তা করেছিস। এখন বাকিটা সময় বলবে কি হবে।
নীলঃ এই সময়ের জন্যই তো এতোটা সময় অপেক্ষা করলাম। আর এই সময়ই তো আমাকে বর্তমান সময়ের মুখোমুখি এনে দাড় করিয়েছে।
নীলিমার চলে যাবার পর নীল সোজা এসেছে তমালের হোস্টেলে। কি করবে বুঝতে পারতেছে না সে। নীলিমার আচরন দেখে সে কিছুই আন্দাজ করতে পারতেছে না।
তমালঃ তোর কি মনে হয়? সে হ্যা বলবে?
নীলঃ আমি কেম্নে বলবো? কিছুই তো বুঝতে পারলাম না। ধুর না বললেই মনে হয় ভালো হতো।অন্তত ভালো ফ্রেন্ড তো থাকতাম।
তমালঃ চুপ থাক, তুই কি ওর ফ্রেন্ড হইতে চাস নাকি ফ্রেন্ড হিসাবেই থাকতে চাস?
নীলঃ তা না।
তমালঃ তাহলে যা হয়েছে ভালোই হয়েছে। পজিটিভ নেগেটিভ একটা কিছু তো হবেই। যেটাই হোক, ভালোই হবে।
নীলঃ দেখা যাক, কি হয়।

৪৯।বাসায় ফিরেই দেখে অয়ন আর ফারিয়া বসে আছে।
অয়নঃ কিরে খবর কি ?
নীলঃ খবর আর কি? গুলি করে আসলাম। এখন বুঝতে পারতেছি না ঠিক জায়গায় লাগলো কি না।
ফারিয়াঃ মানে কি?
নীল সন খুলে বললো। সন শুনে অয়ন তো খুব খুশি।
নীলঃ কিরে আমার খারাপ খবর শুনে তুই দেখি খুব খুশি।
অয়নঃ শোন, যা হয়েছে ভালো হয়েছে। অপেক্ষা তো আর করতে হবে না। হয় কালকে থেকে তুই নীলিমার সাথে ঘুরবি, নাহয় দেবদাস হবি।
এমন সময় সোহেল আসলো।
সেও সব কিছু শুনে অয়নের কথাকেই সমর্থন জানালো।
আরেকটি খবরও জানালো। হাসান ঠিক করেছে আলাদা বাসা নিবে। সোহেলদের সাথে আর থাকবে না।
নীল এই খবর শুনে কিছু বলার পেলো না।
৫০।
রাতে নীল নীলিমাকে ফোন করলো। কিন্তু নীলিমা ফোন ধরলো না। নীল বুঝতে পারলো নীলিমার হয় কোনো ডিসিশন নিতে পারেনি অথবা নেগেটিভ ডিশিসন নিয়ে ফেলেছে। কেমন যেনো একটা অস্তিরতা নীলকে গ্রাস করে ফেললো। কি করবে বুঝতে পারতেছে না। ওর কি করা উচিত।
এমন সময় নীলিমার মেসেজ এলো।
“কাল বিকাল ঠিক চারটায় ফাস্ট ফুডে আমার সাথে দেখা করতে পারবে?”
কি অদ্ভুত। ফোন ধরলোনা, আবার এখন এই মেসেজ।
ওকে মেসজ পাঠিয়ে নীল তার জীবনের দীর্ঘ এক রাত কাটানো শুরু করলো।
৫১।
সকাল হতেই নীল অয়ন কে নিয়ে চলে গেলো তমালের হোস্টেলে।
তমালঃ কিরে এতো সকাল বেলায়?
অয়ন সব খুলে বললো । নীলের চেহারা টেনশনে চেনা যাচ্ছেনা।
তমালঃ আরে তুই দেখি চিন্তায় শেষ। আরে এতো চিন্তা করে কি হবে? যা হবার তা তো হবেই। আর এতো বছরে কখনো টেনশন করিস নাই আর এখন এতো টেনশন।
অয়নঃ ঠিক। শান্ত থাক। নীলিমা এতোখনে যা ডিশিসন নেবার নিয়ে নিয়েছে। হয় তোর আজকে বিকাল টা হবে মধুর অথবা হবে বিষাদময়।
নীলঃ চিন্তা ওইটা নিয়ে না। তারপর কি করবো সেটা ভাবতেছি। দেবদাস হয়ে কি করবো সেটা ঠিক করতে পারতেছি না।
তমালঃ শালা এমন সময়েও মজা যায় না। তুই জীবনেও ঠিক হবি না।
নীলঃ হতে চাই ও না। যা আছি ভালো আছি।

৫২।
“আচ্ছা তুমি আমাকে সেইদিন সেই শেরটা কেনো পাঠিয়েছিলে?”
দেখা হতেই নীলিমার প্রথম প্রশ্ন।
নীলঃ কেনো তুমি বুঝো নাই?
নীলিমাঃ আমি সরাসরি শুনতে চাই।
নীলঃ কি শুনতে চাও?
নীলিমাঃ কেনো মেসেজে যা বলতে চেয়েছো?
নীলঃ ওকে যখন তুমি শুনতেই চাচ্ছো, তাহলে শুনো “আমি তোমাকে ভালোবাসি”।কবে থেকে জানি না, কতোটুকু তাও জানি না। কখনো তা জানতে ও চাই না। শুধু জানি তোমাকে আমার পাশে চাই।
নীলিমাঃ কি রোমান্টিক। এই কথা টুকু বলতে এতোদিন লাগলো? আর ঘুরিয়ে প্যাচিয়ে শের দিয়ে বলতে হলো? নাহ, ছেলেরা আসলেই ভীতু।
নীলঃ মানে? এইবার নীল আসলেই কিছু বুঝতে পারতেছে না।
নীলিমাঃ মানে হলো, বেকুব আমিও তোমাকে ভালোবাসি। অপেক্ষা করছিলাম তুমি কবে বলবে।কিন্তু তুমি এতোদিন লাগালে এই তিনটি শব্দ বলতে।
নীলঃ আমি কি ঠিক শুনছি? অথবা স্বপ্ন দেখছি না তো?
নীলিমাঃ জ্বি না। আপনি বাস্তবে আছেন এবং আমিও স্বজ্ঞানে বলেছি যা বলার।
নীল হঠাত করে এক বিরাট চিতকার দিলো যেনো এই মাত্র হিমালয় জয় করলো। আর নীলিমার এক অদ্ভুত ভালোলাগা চোখে তাকিয়ে রইলো নীলের আনন্দময় চেহারাটার দিকে।
(চাইলে গল্প এখানেই শেষ হয়ে যেতে পারে, সুখী সমাপ্তি যাকে বলে। তাহলে আর মইনুল ভাই বা কাউয়ূম ভাই আমাকে পাঙ্গা দিতে পারবেন না। আর পাঠক রা চাইলে গল্প আরেকটু চলবে। দেখি সবাই কি বলে।)

৪,১০৫ বার দেখা হয়েছে

৫৮ টি মন্তব্য : “ভালোবাসার বন্ধুত্ব- ১১”

  1. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    ধুর মিয়া! এতো জলদি, তাও এতো হ্যাপি অ্যান্ডিং!! আরেকটু প্যাচ লাগানো যাইতো না? আমি আজকা প্যাচ লাগানোর তালে আছি। 😀 😀 😀


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
  2. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    এই পর্ব তো পুরা ২০/২০ হয়ে গেছে... পুরা ডিএলএফ ম্যাক্সিমাম... :gulli2: :gulli2:

    আমার মনে হয় এইটা এখানেই হ্যাপি এন্ডিং হোক, এবার আরেকটা সিরিজ চালু করেন


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  3. হাসান (১৯৯৬-২০০২)

    এহহহহ.. আগে থেকে পছন্দ করত তবুও ভাব ধরে.......বন্ধুত্ব থাকবে না......... :goragori:

    আমি ভাবছিলাম নীলিমার একদিন সেই হাসানের কথাই মনে হবে আর এইদিকে আসবে অনীতা B-)

    জবাব দিন
  4. রকিব (০১-০৭)

    আরেকটু চলুক, চ্রম চ্রম হচ্ছে।

    তমালঃ চুপ থাক, তুই কি ওর ফ্রেন্ড হইতে চাস নাকি ফ্রেন্ড হিসাবেই থাকতে চাস?

    এই লাইনটা ঠিক বুঝলাম না 😕 😕


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন
  5. সামি হক (৯০-৯৬)

    আরেক কাজ করতে পারো এইখানে না শেষ করে ঘটনা আরো পাঁচ ছয় বছর আগায়ে দাও। এতে আরো অনেক বেশী টুইস্ট আসবে। আর একটা কথা বেশী ভাগ সময় দেখছি ভালো বন্ধুরা বন্ধুই থেকে যায়, এর বেশী কিছু হয় না।

    শুভ কামনা সবসময়...

    জবাব দিন
  6. রবিন (৯৪-০০/ককক)

    এই পর্ব নিয়ে লেখকের কথাঃ
    আসলে এই পর্বটা যেদিন লিখতে বসলাম, সেদিন কিছু কারনে মেজাজ খুব খারাপ ছিলো। তাই মনে হয় আসলে খুব তাড়াটাড়ি মিল দেয়া হয়ে গেছে। আমিও এখন পড়ে মনে হইতেছে পর্বটা আসলেই ফাউল হইছে।আর কাহিনিও অসমাপ্ত রয়ে গেছে। কাহিনিতে মনে হয় আরো কিছু টুইস্ট আসা উচিত ছিলো 😀
    দেখি আরো কয়েকটা পর্ব মনে হয় লিখতে হবে।

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।