ভালোবাসার বন্ধুত্ব- [১] [২] [৩] [৪] [৫] [৬] [৭] [৮]
৩৮।
সেখানে ওরা কিছুখন ছিলো। তারপর বিদায় নিয়ে চলে এলো।
আসার পথে নীল, সোহেল, অয়ন কেউই কোনো কথা বললো। অদ্ভুত এক নীরবতা ছিলো পুরোটা পথ জুড়ে ছিলো। অয়ন যদিও এতোদিন ফান করেই বলছিলো কিন্তু যখন বাস্তবতা এই ভাবে সামনে এসে দাড়ালো সেও কিছু বলার মতো খুজে পাচ্ছিলো না।
বাসায় এসে অনেক্ষন পর অয়নই নীরবতা ভেংগে বল্লো “এখন কি করবি তুই?”
নীলঃ জানি না।
অয়নঃ জানি না মানে কি? দেখ, আমার কথা অতি সিম্পল। তুই তো হাসানের জন্য একবার পথ ছেড়েই দিয়েছিলি। হাসান পারে নাই এটা তো আর তোর দোষ না। আর ভাগ্য কাকে কখন কার পক্ষে কেউ বলতে পারেনা। দেখ তুই তো নীলিমার কাছ থেকে দূরে সরেই গিয়েছিলি। ভাগ্য আবার তোকে ওর সামনে এনে দাড় করিয়েছে। এটাও এক ধরনের ইশারা বলতে পারিস।
সোহেলঃ নীল, দেখ, তুই ও আমার খুব কাছের ফ্রেন্ড, হাসানও। আমারো মনে হয় ভাগ্য এটাই চাইছে।নীলিমা তো হাসানকে গ্রহন করে নাই। তাহলে প্রব্লেম কোথায়?
নীলঃ জানি না। আমাকে একটু সময় দে চিন্তা করার। তোরা থাক, আমি একটু বাইরে যাচ্ছি।
অয়নঃ কোথায়?
নীলঃ আসতেছি।
নীল বের হয়ে অনেক্ষন একা একা রাস্তায় হাটলো। আসলে সেও কিছু চিন্তা করতে পারতেছে না কি করবে। এটা ঠিক সে এখনো নীলিমাকেই পছন্দ করে। এমনকি এই কয়েক বছরেও তার ভালোবাসা যে বিন্দুমাত্র কমে নাই এটা সে আজকে নীলিমা কে দেখেই অনুভব করতে পেরেছে। এখন সে কি করবে?
নীল গেলো তমালের মেডিকেলের হোস্টেলে। কয়েকদিন দেখা নাই ওর সাথে। ওর সাথে কথা বলা দরকার।তমাল কে রুমেই পাওয়া গেলো।
তমালঃ কিরে খবর কি? হঠাত এই সময়ে? আর চেহারার এই অবস্তা কেনো? কিছু হয়েছে নাকি?
নীলঃ আর বলিস না। কি হইছে আমি নিজেই বুঝতে পারতেছি না।
এই বলে নীল সব খুলে বললো। তমাল তো আগে থেকেই সব জানতো। সেও সব শুনে অনেকক্ষন কিছু বলতে পারলো না।
তমালঃ এখন কি করবি?
নীলঃ দোস্ত, মাই বুঝতেছি না কি করবো।
তমালঃ দেখ, আমিও অয়ন আর সোহেলের সাথে একমত। হয়তো তোর কপালে নীলিমা আছে, হয়তো নাই। কিন্তু যেহেতু একটা সুযোগ এসেছে কেন নয়?
নীলঃ তুই ও এই কথা বলছিস?
তমালঃ দেখ, আমি খালি আমার যা মনে হচ্ছে তা বললাম। সিদ্ধান্ত তো নিবি তুই। যেটাই নিবি ভেবে চিন্তে নিস। আর মনে রাখিস, তুই কিন্তু নীলিমা কে এখনো পছন্দ করিস। এটা তুই জানিস কি না জানি না, কিন্তু আমরা তো তোর অবস্তা দেখেছি, আমরা খুব ভালো করে জানি।
নীলঃ ঠিক বলেছিস, আমি নিজেই জানি না কি করবো। দেখি। এখন যাই রে।
তমালঃ ঠিক আছে। বাসায় গিয়ে চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নে।
৩৯।
রাতে শুয়ে শুয়ে নীল ঘন্টার পর ঘন্টা চিন্তা করতে লাগ্লো। কিন্তু কি করবে বুঝতে পারলো না। ওরা এক অর্থে ঠিক বলেছে। সে নীলিমা কে ছাড়া কাউকে চিন্তাও করতে পারে না। সে আসলেই প্রচন্ড ভালোবাসে। হাহা। ঠিকই তো, ভালোবাসে। সে তো একবার হাসান কে ছেড়েই দিয়েছিলো। নীলিমা ওকে গ্রহন করে নাই। এতো দিন ভুলে ছিলো ভালোই ছিলো। এখন ওকে দেখার পর সে অনুভব করতে পারছে নীলিমাকে সে কতোটা পছন্দ করে।
শেষ পর্যন্ত নীল ঠিক করলো সে এগিয়ে যাবে। অদ্ভুত এক ভালো লাগা নিয়ে সে এরপর ঘুমালো।
৪০।
পরদিন থেকে নীলের নতুন কাজ হলো নীলিমাদের কলেজে যাওয়া। সাথে থাকে অয়ন। ফারিয়া দের ক্লাস শেষ হলে ওরা চার জন বসে আড্ডা দেয়। আসতে আসতে নীল আর নীলিমার মাঝে বেশ ভালো একটা ঘনিষ্টতা হয়ে যেতে লাগলো। এমনকি নীলিমার অনেক পড়াশোনাও নীল বুঝিয়ে দেয়। অবশ্য এই সম্পর্ক করে দেয়াতে ফারিয়াও অনেক হেল্প করছে। আসলে জোর করে তো আর কিছু হয় না। নীলিমাও আসতে আসতে বেশ ভালো বন্ধু হয়ে যাচ্ছে নীলের।
এই ঘটনা এখনো হাসানকে কেউ জানায় নাই। আসলে জানানোর মতো কিছু নাই। হাসান অবশ্য কয়েকদিন আগে জিজ্ঞাসা করেছিল”কিরে নীল, তুই ইদানিং কি নিয়ে ব্যস্ত থাকিস? দেখাই যায় না?”
নীল একথা সেকথা বলে কাটিয়ে দিয়েছে।
এভাবে বেশ কয়েকদিন কেটে গেলো।
একদিন এক রেস্তোরা তে বসে আড্ডা দিচ্ছে নীল আর নীলিমা।
নীলঃ আচ্ছা, তোমার পছন্দের কেউ নাই?
নীলিমাঃ আরে নাহ। থাকলে তো এতোদিনে জেনেই যেতে।
নীলঃ নাই কেনো?
নীলিমাঃ আরে নাই কেনো এটা কেম্নে বলবো। হয় নাই তাই নাই।
নীলঃ কখনো কাউকে পছন্দ হয় নাই?
নীলিমাঃ নাহ।
নীলঃ তোমাকে কয়জন পছন্দ করেছে?
নীলিমাঃ (হেসে) অনেক। গোনা হয় নাই।
নীলঃ বাহ। কি গর্বের কথা।
নীলিমাঃ ধুর বাদ দাও। একটা মজার কথা বলি, একটা ছেলে আছে। অনেক বছর ধরে আমাকে পছন্দ করে। এতোবার মানা করেছি,তার পরেও পছন্দ করে।
নীলঃ নাম কি বলো তো।
নীলিমাঃ আরে আমি কি নাম মনে রেখেছি নাকি?
নীল আন্দাজ করলো হাসানের কথা বলছে।
এমন সময় ফারিয়া আর অয়ন এসে হাজির হলো।
ফারিয়াঃ তোমরা এইখানে। আমি কলেজে খুজতেছিলাম।
নীলঃ নীলিমার ক্লাস একটু আগেই শেষ হলো। তারপর এসে বসেছি।
অয়নঃ ভালো করেছিস। এখন চল।
নীলিমাঃ কোথায়?
ফারিয়াঃ আরে সিনেপ্লেক্সে একটা ভালো মুভি এসেছে। দেখ আসি।
নীলঃ ভালো আইডিয়া চল যাই।
মুভি দেখে বের হয়ে বসে আড্ডা দিচ্ছিলো ওরা একটা ফাস্ট ফুডে। হঠাত নীল দেখলো দোকানে এসে হাসান ঢুকলো।ঢুকেই অবাক হয়ে নীল আর নীলিমাকে দেখলো। নীল ও তাকিয়ে রইলো হাসানের দিকে। মনে হচ্ছে সময় থেকে গেছে। আর ওরা কথা বলা ভুলে গেছে।
(চলবে…)
৩০ টি মন্তব্য : “ভালোবাসার বন্ধুত্ব- ০৯”
মন্তব্য করুন
তুমি তো মিয়া ভালো বাংলা সিরিয়াল লিখতে পারবা, ধামাধাম সব টুইস্ট মেরে দিচ্ছ লিখায়। আমি তো চিন্তা করেছিলাম এর পরের পর্বে হাসান দুইজনকে একসাথে দেখবে। অবশ্য এখনো নীল আর নীলিমার কিছু হয় নাই তাই হবে কিনা তা ঠিক বলা যাচ্ছে না। 😀
রবিন ভাই, আপনি মানুষ খুব খারাপ, কাহিনীতে যেই প্যাচ আনতেছেন :thumbup: :thumbup: ।
গুরু, চালায় যান, এই সিরিজ সুপার হিট!!!!!!!!!
অফটপিকঃ অয়ন পোলাটা আবার না জানি কোন ফান্দে পড়ে :no: :no:
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
oi chaa dite koisi kane jay na? x-( x-(
:just: চা দিয়াসলাম তো 😕 😕 আইচ্ছা এইখানেও এক কাপ :teacup: খান। 😀 😀
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
দোস্ত, লেখা তো জটিল হইতেছে! সাথে কাহিনীতেও জটিল প্যাঁচ। :dreamy: :dreamy:
পরের পর্ব কবে দিবি? প্যাঁচ যে কেমনে ছুটাবি! :dreamy: :dreamy:
আমার জানতে ইচ্ছে হচ্ছে, অয়ন কি ফারিয়াকে নীল এবং নীলিমার পুরাতন ব্যাপারটা সম্পর্কে কিছু বলেছে কিনা। কারন, আমার মতে, বলাটা স্বাভাবিক। অয়ন আর ফারিয়া যখন নিজেদের মধ্যে কথা বলবে, নিজেদের বন্ধুদের প্রসংগ এসে যাওয়া স্বাভাবিক এবং নিঃসন্দেহে নীলের ব্যাপারটা খুব মুখরোচক একটা গসিপ।
এই ব্যাপারটা মজার হওয়াটা একটু দুঃখজনক।
তুমি কাহিনিতে আরোও বিশাল টুইস্ট না আনলে মোটামুটিভাবে ধরে নেয়া যায়, হাসানের সাথে নীলের বন্ধুত্ব শেষ হয়ে যাচ্ছে। অবশ্য তোমার গল্পে সে খুব গুরুত্বপুর্ণ চরিত্র না, তবে কি ধরনের টার্মে হাসানের ব্যাপারটা শেষ হবে সেটা জানতে ইচ্ছে করছে।
অয়নের ফারিয়া কে বলাটাই স্বাভাবিক। এরকম একটা কাহিনি। আর নীলিমার কাছে ব্যাপারটা মজার মনে হতেই পারে। যেহেতু সে বিশেষ একটা গুরুত্ব দেয় নাই।
এখন ফারিয়া জানলে নীলিমারও ব্যাপারটা জানতে পারার কথা, বুঝতেই পারছ, মেয়েরা গসিপ কি রকম পছন্দ করে। তা যাই হোক, ১০ নম্বরটাও নামায়ে দাও তো আজকে।
অফ টপিকঃ গতকাল তুমি যখন আমার মেসেঞ্জারে মেসেজ পাঠিয়েছিলে, আমি তখন ঘুমাচ্ছিলাম। সরি।
কি জানি , বলে নাই হয়তো এখনও। অথবা অয়ন মানা করেছে। অথবা নীলিমা জানে।লিখলে হয়তো আমিও জানতে পারবো।
অঃটঃ আজকে মনে হয় লিখতে পারবো না। একটা ওয়েবের কিছু কাজ করতে হবে। কালকে আশা করি।
ভাই সেইরকমএর প্যাচাইল্ল্যা হইতাসে... টেনশন/হার্টবিট তো নীলের চেয়ে আমার বেশি হয়া গেল গ্যা!!!
চালান চালান... দেখি নীল আবার কোন ট্রাই করে কি না ফ্রেন্ডশিপ অটুট রাখার (সেই ফ্রেন্ডটা নীলিমা নাকি হাসান এটা আপনে ঠিক করবেন)
😉
ভাই কঠিন টুইস্ট দিছেন :clap:
আর কইস না। আমি নিজেই টুইস্ট এ আি
আরে আমার জীবনে সেইম একটা ঘট 😛 না ঘটছিল
*ঘট 😛 না ঘটছিল=ঘটনা ঘটছিল 😛
আমার জীবনে মনে হয় ঘটতে যাচ্ছে 😕
:clap:
কইয়া ফেলা
বলবানি, টাইম আইলেই বলবানি!!!
অনেকক্ষন যাবৎ ঘড়ি দেখতেছি, বস টাইম হয় নাই এখনো?? 😛 😛
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
পাঠকের দিকে তাকাইয়া দ্রুত আগাইতাছো নাকি? 😀 ঘটনা যেভাবে আগাচ্ছে তাতে সেরকম মনে হলো। লেখায় নিজের আগ্রহটা ধরে রেখো। ভালো লাগছে।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
আপনি এই সিরিযে কমেন্ট করছেন, সেই খুশিতে লেখা আগাইতেছে। 😀 আসলে একটু ফ্রি আছি কয়েকদিন, আবার কাজ শুরু করলে টাইম পামু না। আজকে রাতে যেমন একটা ওয়েব সাইট এর কাজ করতে হবে। টাইম পামু না লিখার। কালকে আশা করি লিখবো পরের পর্ব
বিয়াপক প্যাচ লাগাইলি দেখি 😀
আহারে এতগুলা প্রেম পিয়াসী পোলাপাইনরে ঘুরাইতাছোস দেইখা একটু খারাপই লাগতাছে 😛
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
Amaro kharap lagtase sob gula re ghuraite. Ki kormu kar sathe k bujtasi na to
এইটা শেষ হইব কবে? পুরাটা একসাথে পড়ুম দেইখা এখনো পড়তেছি না।
ঐ :thumbup:
পরের পর্ব কবে পামু? :(( :((
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
দেখি আজকে আশা করি টাইম পামু লেখার
next episode er jonno ar kotodin wait korte hobe?? :no:
দিয়া দিছি