ফেসবুকের কল্যাণে আজ আমাদের দেশে লক্ষ লক্ষ দার্শনিক ! আমি না হয় দর্শক হয়ে এভাবেই দার্শনিকদের কাছ থেকে ক-খ শিখলাম ।
প্রবাদবিশ্বকোষকে ছাড়িয়ে যাওয়া আমার গুরুবিশেষ এহসান ভাই অশ্রুতপূর্ব একটি বিশেষ উক্তি দিয়েছিলেন যা আমার মনে মহামন্ত্র হয়ে আছে । সেটা না বললে সামনের এত কথা পাঠকের মাথার বহু ওপর দিয়ে উড়োজাহাজ হয়ে উড়ে যাবে ।
কথাটা মনের বুকপকেটে রেখে দিয়েন –
জীবন মানুষকে নানা সময়ে নানানরকম জিনিস শেখায়। আমার এই ১৯বছরের জীবনে হয়ত অনেক বেশীই দেখা হয়ে গেল। প্রথমে হয়ত কিছুই মনে হত না। কিন্তু আসতে আসতে বয়স বাড়ল দেখলাম এইসব জিনিস এ বুকের মধ্যে চিন চিন করে ব্যাথা করে। খুবই অসস্তিকর ব্যাথা।এসব ব্যাথা শুরু হলে খুব ভাঙতে ইচ্ছা করে। সামনে যা পাই তাই ভাঙতে মন চায়। আরেকটা কষ্টকর কাজ করা যায় তা হল কাটাকুটি। সুন্দর দেখে বেশ কয়েকখানা সার্জিক্যাল ব্লেড আছে আমার।
#
“স্যার, বাইরে একজন মহিলা বসে আছেন। উনাকে কি ভেতরে আসতে বলব?” এই নিয়ে তিনবার তার বস, সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব জাহিদুল হাসানকে বলল । প্রায় দুই ঘণ্টা হয় প্রৌঢ়া মহিলাটি বসে আছেন। বস জাহিদুল হাসান ভাল মনের একজন মানুষ । গতানুগতিক উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের মত ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাউকে বসিয়ে রেখে নিজের পদের ভার বুঝানোর চেষ্টা করেন না। আজকে বসের রুমে কেউ নেই তারপরেও বস কেন যে মহিলাকে ভেতরে ডাকছেন না কে জানে।
এক.
রাজশাহী। নতুন জায়গা এবং বিরক্তিজনকভাবে প্রচণ্ড গ্রীষ্মপীড়ীত এলাকা। আমার এখানকার কর্মস্থলের প্রথম দিন। প্রচন্ড গরম আর এখানকার অফিসের যাচ্ছেতাই অবস্থা আমার মেজাজটা এমনিতেই অনেক গরম করে রেখেছে। মানুষ হিসেবে আমি যথেষ্ট রূঢ় প্রকৃতির বিশেষত যখন আমার মেজাজ অনেকটা চড়ে থাকে। হয়ত আজকে একটু বেশিই হয়ে গেছে। অফিসের কম্পিউটার সেকশনের মেয়েটা নাকি আমার ঝাড়ি জাতীয় কথাগুলো শুনে তার টেবিলে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিল। খুব একটা খারাপ হয়েছে ব্যাপারটা তা আমার মনে হচ্ছে না।
সেই মেয়েটির গল্প বলি। রাশনা। বাবা মা ডাকে রাশু বলে,আমরা কখনো রাশনা কখনো ওর নামটা একটু পরিবর্তন করে বাসনা। আমাদের কথা শুনেই ওর হাসির বেগ বেড়ে যায়। বন্ধুত্বের দাবী নিয়ে বন্ধুকে অনেক কিছুই বলতে পারি বলা যায়। অনেক সন্ধ্যাবেলা জানালা দিয়ে রাশনা আকাশ দেখতো। ক্যাডেট কলেজের চারদেয়ালের মধ্যে বন্দী হয়ে সীমাহীন মুক্ত আকাশ। কখনো সখনো ওর খুব কাছে চলে যেতাম। পেছন থেকে চোখ চেপে বলতাম,রাশনা একটু তুই হাসনা।
বশির কাকার সাথে গুটিগুটি পায় একটা পুরনো দোতলা বাড়ির গেটে এসে দাঁড়ায় লাচি।ওর হাতের স্বচ্ছ পলিথিনের ব্যাগে একটা ফ্রক আর একটা প্যান্টের অস্তিত্ব টের পাওয়া যায়।কাকা কলবেল বাজায়।কারও সাড়াশব্দ মেলে না।৪-৫ বার অনবরত বাজিয়ে যাওয়ার পর লাচির বয়সী একটা মেয়ে গেট খুলে দেয়।লাচির দিকে তাকিয়ে তার মুখে হাসি ফোটে।
‘বশির আংকেল,কাজের মেয়ে পেয়ে গেছেন ! বাঁচলাম ! গেট খুলতে খুলতে আমার অবস্থা শেষ !’
ক্লাস শেষে নায়লাকে ঘিরে একটা ছোটখাট জটলা হল । আমাদের ক্লাসেরই একটি ছেলে ওকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছে ।নায়লা রসিয়ে রসিয়ে সে গল্প শোনাচ্ছে।এরকম জটলা প্রায়ই হয়।ক্লাসের বেশির ভাগ মেয়েই বেশ সুন্দর।একেকজন ইতোমধ্যে গড়ে ৬-৭ টা প্রস্তাব পেয়ে গেছে! আমি এধরণের জটলার নিয়মিত শ্রোতা।মন দিয়ে গল্পগুলো শুনি।ওদের মধ্যে আমিই বোধহয় একমাত্র ব্যাতিক্রম।কখনো প্রস্তাব পাইনি।ভবিষ্যতে পাওয়ার সম্ভাবনাও দেখিনা।আমি দেখতে ভাল নই।গায়ের রংটি কাল।চোখে-মুখে সুশ্রীতা আছে কি না জানি না,তবে লোকে আমাকে সুন্দর বলে না।একবার একটা ছেলে পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ‘কালী’ বলে মন্তব্য করেছিল।আমি স্রষ্টার দানকে মেনে নিয়েছি।তবে ইদানীং একটা দানা বাঁধতে যাওয়া অশোভন অনুভূতিকে কিছুতেই তাড়াতে পারছিনা।আমাদের দু’বছরের সিনিয়র এক ভাইকে মনে গেঁথে ফেলেছি।অনুভূতিটা অশোভন এ জন্য যে তাকে চাওয়াটা আমার মোটেই সাজে না।অসাধারণ সুদর্শন একটা মানুষ ফয়সাল ভাই।এমন সুদর্শন পুরুষ বাংলাদেশে খুব কমই দেখা যায়।নিজেই নিজেকে বকাঝাকা করি,তাকে তুমি সেভাবে চেনো না।মানুষ কেমন তা জানো না।শুধুমাত্র রূপ দেখে পাগল হলে হবে?
শীতের নরম রোদ্দুর । উঠোনে পাটি পেতে লাল রঙা লেপটা শুকোতে দিয়েছেন মা । সোনালী রোদ ছলকে যাওয়া মোটাসোটা লাল লেপটা দেখে খুশির ঝিলিক খেলে গেল নিশির মনে। গুটিসুটি মেরে বসে পড়ল লেপের ওপর।হাতে সুনীলের ‘প্রথম আলো।’ মা ওকে এ অবস্থায় দেখলে চিলচিৎকার জুড়ে দেবেন,এত বড় ধিঙ্গি মেয়ে কাজকর্ম বাদ দিয়ে রোদ পোহাচ্ছে বলে। কিছুক্ষণ আগে মা-মেয়ের এক দফা যুদ্ধ হয়ে গেছে।সকাল থেকে মা নিশিকে ঘরের কাজে হাত লাগাতে বলছেন।কিন্তু নিশি মার কথা গায়ে মাখছেই না।সে বরাবরই অলস স্বভাবের।তার ওপর এখন কলেজে শীতের ছুটি চলছে।
ক’দিন আগেও এ ঘরটা বেশ খোলামেলা ছিল। লোকে তেমনটিই বলত । ক’দিন হল এ ঘরটাকে আমার গুমোট ঘুপচি মনে হচ্ছে। যেন চারপাশটা আমাকে ঠেসে ধরবে।শ্বাস রোধ হয়ে যাবে।ঘর নিয়ে গবেষণার পরিবর্তে এখন আমার অফিসের কাজ-কর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা ছিল। আর কথা ছিল ছ’টায় বাসায় ফেরার।ততক্ষণে বেলী – আমার স্ত্রীও অফিস থেকে ফিরবে ।ছোট মেয়ে ঝিনুক আরও আগেই স্কুল থেকে ফেরে।সারা দিনের খাটা-খাটুনির পর স্ত্রী-কন্যার সাহচর্যে সব ক্লান্তি-শ্রান্তি মুছে যা্বে।
১ম পর্ব
মাগরিবের নামাজের আযান হয়ে গেছে অনেকক্ষণ আগেই । হতদন্ত হয়ে অজু করে মসজিদে ঢুকেই দেখি মুসুল্লীরা ততক্ষণে রুকুতে চলে গেছেন । আমি যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি শরীক হলাম জামাআতে । সিজদায় গিয়ে হঠাৎ মনে হল “মোবাইলটা কি সুইচ অফ করেছি?”
আমি ঘামতে শুরু করলাম কারণ রিংটোন দেয়া ছিল হাই ভলিয়ম “তেরে নাম”
ব্লগের শুরুতেই ডিসক্লেইমার দেওয়ার স্টাইলটা জমে উঠেছে আর তাই আমিও লোভ সামলাতে পারলাম না সতর্কীকরণঃ ক্যাডেট কলেজ লাইফে কেউ যদি কোন দিন এক্সট্রা ড্রিল না খেয়ে থাকেন তাহলে ক্রেডিট নেওয়ার জন্য বলার দরকার নাই কেননা তাতে প্রোপার ক্যাডেট হিসেবে টিজ খাওয়ার সম্ভাবনা আছে
আমি তখন সবেমাত্র ক্লাস টেনে উঠেছি :-B
শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকেই আকাশ যথেষ্ঠ মেঘলা ছিল ।
“ক্যাডেট কলেজে ছয় বছর থেকে যারা পাক্ষিকে ফেল করে নাই এই পোস্টটি তাদের জন্য নয়”
আমি সেই ক্যাডেট, যে প্রথম পাক্ষিকে অংকে ডাবল জিরো পেয়েও পরের পাক্ষিকে ২৪ পেয়েছিলাম :just:
ক্যাডেট কলেজে চান্স পাওয়ার আগে আমি মোটেই খারাপ ছাত্র ছিলাম না । তাই বলে কিন্তু আমি কলেজকে দোষারুপ করছি না 😛 😛
আসলে সবসময় মজা করতে গিয়ে পড়াশুনা থেকে খানিকটা ছিটকে পড়েছিলাম ~x(
ছয় বছরে সেভেন ছাড়া প্রত্যেক ক্লাসের ফার্স্ট টার্ম ইন্ডে আমার ফেল করার বিরল রেকর্ড রয়েছে :just:
নতুন ক্লাসে উঠে আমি খুব ফুর্তিতে থাকতাম :tuski:
মনে হত সারা বছর কষ্ট করে কেবল নতুন ক্লাসে উঠলাম,
আমার অনেকদিনের ইচ্ছা ছিল স্টেডিয়ামে গিয়ে লাইভ ক্রিকেট খেলা দেখব :dreamy:
কলেজ থেকে ভ্যাকেশনে বাসায় এলে সাধারণত খেলা থাকত না, আর থাকলেও সময় সুযোগ বের করা কিছুটা কষ্টকর ছিল :bash:
ছয় বছরে ক্যাডেটের আইডি কার্ড দিয়ে কোন ফায়দা লুটতে পারি নাই, না সিএমএইচ, না ছাত্র ভাড়া, না অন্য কোন ডিসকাউন্ট :frontroll:
অথচ ক্লাস সেভেনে যখন আমাদের প্রথম আইডি কার্ড দেয়া হল তখন কার না মনে হয়েছিল এই কার্ড দিয়ে বিশ্ব জয় করা যাবে :just:
১১ অক্টোবর ২০০৮
বিভিন্ন ক্যাডেট কলেজের ১০-১২ জন বন্ধু মিলে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে উপস্থিত হলাম বাংলাদেশ বনাম নিউজিল্যান্ডের ২য় ওয়ানডে ম্যাচ দেখার জন্য :-B
তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ জয় পেয়েছিল আর সেজন্যই সিরিজ জয়ের স্বপ্ন ছিল সবার চোখে :gulti:
স্টেডিয়ামে দর্শকদের একটা বাড়তি চাপও ছিল চোখে পড়ার মতো কারণ এই ম্যাচ জিতলেই সিরিজ আমাদের :clap:
যেহেতু ঢাকায় ছিলাম সেহেতু ম্যাচটি দেখার লোভ সামলাতে পারি নাই :no:
অগ্রিম টিকিটের জন্য অনেক চেষ্টা করলাম কিন্তু কাজ হল না ।