কাদের মোল্লার হাইকোর্টের রায়ের সময়ও একটা বিশাল জনগোষ্ঠী ও জনমত ফাসীর দাবির পক্ষে ছিলো। কিন্তু সে জনমতটা রাজপথে দৃশ্যমান ছিলোনা। সরকার ঠিক যে প্রক্রিয়াতে সেই জনমতটা প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছিলো , কাজ শেষে অন্য এক প্রক্রিয়াতে আবার সেই জিনিস টা কে ভেঙ্গে দিয়েছিলো (যদিও আমি ভেঙ্গে দেয়ার ব্যাপারটার বিরোধী ব্যক্তিগতভাবে)।
সুপ্রীমকোর্টের ভাস্কর্য সরানোর আগেও সেইরকম প্রক্রিয়া অবলম্বন করা যেতে পারতো। একটা বিশাল জনগোষ্ঠী ও জনমত ভাস্কর্য সরানোর বিপক্ষে। কিন্তু সেই জনমতটা রাজপথে দৃশ্যমান নয়। সরকারীদল জানে যে তাদের সাময়িক আদর্শচ্যুতি হলেও এতে তার ভোট কমবে না (বরং বাড়ার কিছু সম্ভাবনা থাকলেও থাকতে পারে, যদিও নিশ্চিত নয়)। কারণ যারা ধর্ম নিরেপক্ষতার আদর্শে বিশ্বাস করে (ধর্ম নিরেপক্ষতা মানে ধর্ম বিরোধিতা নয়), তারা ভোট দিবে কাদের? আদর্শের অপরপক্ষের দলগুলোতো আরও বেশি ডানপন্থী, আরোও বেশি extremist.
যারা আজ ভাস্কর্য সরানোর বিরোধিতায় নেমেছেন, তারা কি পারবেন আওয়ামীলীগকে ভোট না দিয়ে অন্যকোন ধর্ম নিরেপক্ষতায় বিশ্বাসী দলকে ভোট দিতে? আমরা জাতিগত ভাবেই স্ববিরোধী। এই অপ-রাজনীতিটাই জাতির জনক করতে পারেননি ৭২ পরবর্তী সময়ে, তাই তাকে জীবন দিয়ে সেই মূল্য শোধ করতে হয়েছিলো। তার কন্যা তাই সেই ভুল হয়ত করতে চাননা। টিকে থাকতে হলে যে এই অপ-রাজনীতিটা করতেই হবে।
তবে কেনো যেনো ভাবতে ইচ্ছে করছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আদর্শচ্যুতি ঘটেনি। কেনো যেনো ভাবতে ইচ্ছে করছে এটা সাময়িক। তিনি সাময়িকভাবে হয়ত অপঃরাজনীতিতে রাজনীতি করে নিজের অস্তিত্ব নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন নির্বাচন কে সামনে রেখে। একটা ইস্যু রাজপথে রেখে অন্য রাজনৈতিক ইস্যুগুলো দমিয়ে রাখতে। এমন একটা ইস্যু যেটার বিরোধীতায় বিএনপিও নামতে পারছে না, আর জোটবদ্ধ হওয়ায় বামদল গুলোও না। মতিঝিল চত্বরে সেদিনের সেই ঘটনায় বিএনপি জামাত যার সুফল নেয়ার চেষ্টা করেছিলো, সেই শিক্ষা মনে রেখে তিনি আর তাদের কোন সুযোগ দিতে রাজী নন এই সময়ে। হয়তো সাময়িক, কি জানি? সাময়িক না ও হতে পারে। সময়ই বলে দিবে।
বুদ্ধিমানকে বিশ্বাস করা উচিত। ধুরন্ধরকে নয়। আওয়ামী লীগ ধুরন্ধর প্রকৃতির দল হিসেবে আত্নপ্রকাশ করেছে।
মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য