********************
-তপুউউউউ , উঠলি তুই?
-উমমম…
-এই নিয়ে আমি ১০ বার ডাকলাম । উঠ।
-হুমম এইতো আপু আর একটু।
-নাহ আর একটুও না। তোর না আজ ক্লাস আছে।
-আরে আপু কি কর , বালিশ সরাও কেন। উঠতেছি তো।
উফফ কি যে সমস্যা। এই বৃষ্টির সকালে কি আর কোথাও যেতে ভাল লাগে। আজকে ক্লাস আছে কিন্তু এর থেকে এই বৃষ্টিতে ঘরে বসে ১১টা পর্যন্ত ঘুমানোর উপরে কিছু কি আছে? এর জ্বালায় কি আর হইল।উঠে মুখ ধুতে যেতে যেতে ভাবলাম আমি। সকাল ৭ টার মধ্যে বের হতে হবে। নইলে প্রথম ক্লাসটা পাওয়ার কোন চান্স নাই।
-এইতো লক্ষী ভাই আমার। আয় তাড়াতাড়ি নাস্তা করে ফেল।
-কিরে আপু তুই যে আজ এখনো তৈরী হোস নাই। তুই যাবিনা অফিসে?
আপুর চাকরীটা হয়ে যাওয়ার পর আম্মুর খুব উপকার হইছে। সকালে আম্মুকে এখন আর উঠতে হয় না। আপু উঠে নাস্তা বানায় তারপর আমাকে জাগায়। আমরা ভাই বোন একসাথে খেয়ে বের হয়ে পড়ি। তার আগে ও যখন ভার্সিটিতে ছিল তখন এই কাজ করত আম্মু। আমাদের দুজনকে জাগাতেই আম্মুর আধা ঘন্টা লাগত। রাতে তো আমরা দুজন দুজনের বিছানায় শুয়ে শুয়ে গল্প করতে করতে ঘুমাতাম যখন তখন ঘুমিয়ে নিজে নিজে এত সকালে উঠা অসম্ভব ব্যাপার ছিল। গত ৩-৪ মাস আপুর এই নতুন ডিউটি। বোন গুলা একটা সময় এসে পুরা মায়ের মত হয়ে পড়ে। এই জিনিসটাই আমি ঠিক বুঝিনা। আমার বোনটা একাধারে আমার বোন , বন্ধু , এখন আবার মাঝে মাঝে মায়ের ভূমিকাও নিয়ে নেয়। আমার সব কিছু আমার আপুসোনা।
– ভুলে গেলি? আজ তো আমার অফিসে যাওয়া লাগবে না। কাল রাতে না তোকে বললাম। আমার একটা ট্রেনিং আছে মালয়েশিয়ায় ৭ দিনের জন্য। আজ রাতে ফ্লাইট। এই জন্য আজ অফিস নাই।
-ওহহো, আমি তো ভুলেই গেছি? তাহলে তুই ঘুম থেকে উঠলি কেন?
-এমনি অভ্যাস হয়ে গেছে তো তাই।
ধুর আমার আজ ভার্সিটি যাওয়ার ইচ্ছাটাই চলে গেল। বাদ যাবনা, দেখি কাউকে মেসেজ করে দিব প্রক্সিগুলা দিয়ে দিবে।
-আমি আজ যাব না ক্লাসে। ঘোষণা দিলাম আমি
-যাবিনা মানে? কেন?
-নাহ আমারো আজ শরীর ভাল লাগছে না। আর তুই থাকবিনা আগামী ৭ দিন আমি আজ সারাদিন তোর সাথে থাকি।
-এইটা কোন কথা হইল। আমার তো আজ অনেক কাজ থাকবে। ব্যাগ গুছাতে হবে । আরো কত কি।
-হইল আমি যাবনা ঠিক করছি। আয় আমরা ভাইবোন এখন নাস্তা করে আড্ডা দেই । সকালে উঠলে দিন অনেক বড় হয়ে যায়।
-নাহ , ফাজলামি নাকি। তাড়াতাড়ি নাস্তা কর ক্লাস করে আয় ।
ধুত্তোরি ওকে যে এখন কিভাবে রাজি করাই। বুঝেছি ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করতে হবে। আমার একদমই আজ ওর কাছ থেকে যেতে ইচ্ছে করছে না। আমার বুদ্ধি হবার পর থেকে ওকে ছাড়া আমি খুব বেশি থাকিনি। প্রথম যেদিন ও এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে খালার বাসায় বেড়াতে গেল কয়দিন থাকবে ভেবে। সেই রাতে আমি এয়সা কান্না দিলাম। (কেউ অবশ্য দেখে ফেলেনি এইটাই স্বস্তির কথা) পরেরদিন দুপুরে দেখি ও চলে আসল আবার। কেন আসল আমি আর জিজ্ঞেস করিনি। ও এসেছে তাতেই আমার মজা ১ দিনেই দেখি আমাদের ভাইবোনের কথার পাহাড় জমে গেছিল। তবে আমি কিন্তু ঠিকই আমার পরীক্ষার পর বন্ধুদের সাথে কক্সবাজার গিয়ে ঘুরে এসেছি ৭ দিনের জন্য। প্রতিদিন অবশ্য রাতে ও ফোন করত একগাদা উত্তর দিতে হইত। খাইছি কিনা, হোটেল এর খাবার খেতে পারছি কিনা, সমুদ্রের বেশি দূরে গেছি কিনা আরো কত কি। আমার অবশ্য তখন মনে হইত আমি কি আর ছোট আছি কিন্তু সেটা বলতে পারতাম না ।
হঠাৎ করেই আমার মনটা খারাপ হয়ে গেল। আর তো বেশিদিন নাই। ওর তো বিয়ে হয়ে যাবে। আমি তখন কি করব।ও তো এই বাসা থেকে চলে যাবে । মন খারাপ নিয়েই ব্যাগ গোছাই। খেয়াল করে ও। আমার কোন কিছুই কখনো ওর চোখ এড়ায় না।
-কিরে ভাইয়া কি হইল তোর। ক্লাস তো আজ তোর ২টা মাত্র যাবি আর করে চলে আসবি। তুই আসলে আমি আজ তোকে নিয়ে বের হব আইস্ক্রিম খেতে। লক্ষী ভাইয়া আমার। কাছে এসে মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় ও।
আমি নাস্তা করতে থাকি কিছু বলি না। ও ও আমার কাছ থেকে সরে না।মাথায় হাত বুলিয়ে দিতেই থাকে। আমার খুব কান্না পেয়ে যায় হঠাৎ। ওকে ছাড়া আমি কিভাবে থাকব। কেন ওর বিয়ে হবে।
নাস্তা শেষ করি আমি। আর বেশি দেরী করলে ভার্সিটির বাসটা মিস হবে আমার। ব্যাগটা নিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে বলি আসিরে আপু। তারপর হঠাৎ বলি মালয়েশিয়ায় গিয়ে তোর আমার জন্য খারাপ লাগবে না আপু?
ওতো মনে হয়ে কেঁদেই দিল। আমি তাড়াতাড়ি বের হয়ে পড়ি ।
গেট থেকে বের হতেই আমার মোবাইলে ফোন।
-পিচ্চি, তোর আজ ক্লাস করার দরকার নাই। চলে আয় ভাইবোন মিলে সারাদিন গল্প করব। একদিন ক্লাস না করলে কিছু হয়না। প্রক্সি সার্ভার চালু করে দে।
আমি আর কিছু বলি না।কলটা কেটে শামসকে মেসেজ করে দেই, “দোস্ত আজ ভার্সিটিতে আসতে পারতেছিনা। তুই আমার পার্সেন্টেজটা ব্যবস্তা করে দিস।”
অতি উন্নত
আমারও কোন বোন নাই 🙁
সাব্বির আমার ও তোর মত্ কোন বোন নাই...সবাই এই কষ্টটা বোঝবে না।লেখাটা দারুন হয়েছে কি বলিস...।
গল্প হিসেবে বেশ সুন্দর। কিন্তু বাস্তবের জন্যে টু মাচ্ ইমোশনাল, ন্যাকা ন্যাকা। বাস্তবের বড় বোনরাও তাদের ছোট ভাই-বোনদের ভালবাসে, কিন্তু আবেগগুলো মনে হয় একটু অন্যভাবে আসে। যদিও আমার নিজের বড় বোন নাই, কিন্ত এমন কয়েকজনকে আমি পেয়েছি ক্যাডেট কলেজের বন্ধুদের সুবাদে।
আমার বড়বোন? একজন ছিল, আর একজন আছে...।
শফি ভাইয়ের সাথে একমত।
তবে পড়তে ভালোই লাগছে। চালায়া যান ভাই।
বাস্তবের জন্য আসলে টু মাচ ইমোশনাল না, আবেগগুলা ঠিক এইভাবেই এই রকম তীব্র করেই আসে। যার বড় বোন আছে, ঠিক এইরকম একটা বড় বোন আছে, যে জীবনে উঠতে বসতে বড় বোনের উপর নির্ভর করে, তার এই কথা গুলা মনে হওয়া স্বাভাবিক, কিন্তু তপু ভাই যে কেমনে এই গল্প লিখে ফেলাইলো আমি ঠিক বুঝতেসি না।
বড়াপু অনেক অনেক আদর, তোমাকে চাড়া আমি বড় করুণ অবস্থায় আছি বড়াপু...আজকাল সকালে আমাকে ঘুম থেকে কেউ ডাকতেই চায় না...কত দিন যে প্রথম ক্লাসগুলা করি না... 🙁
তপু ভাই লিখাটা যে আমার কি ভালো লাগল, আপনি কেমনে সত্যি সত্যি ঘটনা গুলা লিখে ফেলেন?
এই লেখাটা পড়ে আমার লেখায় অঝোড় ধারায় অশ্রু ধড়ছিল। কিন্তু আপনার এই লাইনটা পড়ে কাঁদতে কাঁদতেই হেসে ফেললাম......"বড়াপু…আজকাল সকালে আমাকে ঘুম থেকে কেউ ডাকতেই চায় না…কত দিন যে প্রথম ক্লাসগুলা করি না…"
লেখাটা বোনহীন ভাইদের জন্য perfect...........তারপরও ক্যামন যেন ন্যাকামু আছে অনেক্টা.........কারন আমার তিন বোন আছে,আমি তাদের সবার ছোট,আমার মায়ের স্থান তারাই দখল করে আছে...as my mom is in the heaven......।।আমি বিদেশে বিভুইয়ে হওয়া সত্তেও তাদের সবাইকে প্রতিদিন কল করি..................তারাও দুই তিনবার দিনে ফোন করে...............কি জানি হয়ত তপুর বোন নাই বলেই expression ta ektu .............too much emotional mone hocche.............
যার বোন নেই তার expression এমনই হবে, হওয়াটাই স্বাভাবিক
আমি একটা ছোট বোন খুব মিস করি...
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
আর কাউকে মিস করস না?? 😀
ভর্শারে ভুহুত মিস্করে।
আর কাউরে মিস করস না?? 😛
হ, আরো অনেকরেই করি। ক্যান? আপ্নে কি মিস করার মানুষ পাইতেসেন না? লাগবো নাকি কয়েকটা?? 😉
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
হুমমমমমমমমমম.......... 🙁 🙁 🙁 🙁 🙁
tapu excellento hoyeche...tomar lekha ageo valo lagto..ai series tao joss hosse..amaro boro bon nai...shara jibon to baire bairei katailam...life er half time outside family..ei golpo pore abar abeg gula tortaja hosse...thanx...
মানুষের যা থাকেনা তা নিয়েই মনে হয় আফসোসটা বেশি থাকে...যেইটা আছে ওইটার কোনো পাত্তা নাই :d
একদম খাঁটি কথা আমি ১০০% এক মত।
হা হা হা হা............।। 😀 😀 😀
বোন নাই, মায়ের কাছ থেকেও দূরে। আদরেরে ছোট ভাইটাও সেই বান্দরবন ক্যান্টনমেন্ট এ যেখানে মোবাইলেও পাওয়া যায় না। আমি মনে হয় এদিক থেকে সবচেয়ে অভাগা ;(
আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, জীবনে যত বড়ই হই, যত চাওয়াই পূর্ণ হোক, এই একটা আশা সারা জীবন অপূর্ণ থেকে যাবে।
আপুকে কোন দিন দেখতে পাব না। কল্পনাতেই ওর সাথে আমার কথা বলা, কল্পনাতেই পথ চলা...
তাই নাকি ছাছা??????
আমিও ভাই কল্পনা করতাম আগে...............।। ঠিক এই গল্পের কাহিনীর মতই। এখন কল্পনা করলে যন্ত্রণা আরো বেড়ে যায়। অসহ্য!!!! x-(
আমার কোনো বোন নাই, লেখাটা একেবারে মন ছুঁয়ে গেলো………
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
:clap: খুব ভাল লেগেছে।
পুরান ল্যাকাডা আবার আইসা পইড়া গেলাম। :boss: :boss: :boss:
নিজের পুরান লেখায় নিজেই কমেন্ট করি। অনেকদিন পরে নিজের সব লেখা একটা একটা করে পড়ছি। এটা পড়ে চোখে পানি আসল। আমি দেখি অনেক ন্যাকা।
আবার কয়!!! :frontroll:
এই দুষ্ট ছেলে জাননা সিনিয়ররা নিজেদের কিছু বললে এসে বলতে হয় আরে না ভাইয়া কি যে বলেন। নাহ আমরা কত ভদ্র ছিলাম কি যে দিন আইল।
:frontroll: :frontroll: :frontroll:
আরে না, তপু ভাইয়া কি যে বলনা। 😛
শরীফ দিহান ভাবীর কাছে শিখ কিভাবে কি বলতে হয়
হ, আমি স্কুল খুলুম ঠিক করসি ;;)
আমিও হেই স্কুলে পড়ুম ঠিক করছি 😀
লেখাটা পড়ে শুধুই কাঁদতেছি...............। জানিনা কতক্ষণ ধরে কাঁদলাম.........। 🙁 🙁 🙁 🙁
আপুরা এমন হয় কেন??? 🙁 🙁 🙁
সত্যিকারের আপুরা কেমন হয় ভাইয়া আমিও জানিনা পুরাটাই আমার কল্পনা।
কিরে ভাইয়া কি হইল তোর। ক্লাস তো আজ তোর ২টা মাত্র যাবি আর করে চলে আসবি। তুই আসলে আমি আজ তোকে নিয়ে বের হব আইস্ক্রিম খেতে। লক্ষী ভাইয়া আমার। কাছে এসে মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় ও।
আমি নাস্তা করতে থাকি কিছু বলি না। ও ও আমার কাছ থেকে সরে না।মাথায় হাত বুলিয়ে দিতেই থাকে।
আমার মাথায় কেউই কোনদিন হাত বুলিয়ে দিলনা...............।। 🙁 🙁 🙁
ইশ! এত্তোগুলো মানুষের বোন নেই! হা খোদা! 🙁
...... বাস্তবের বোনরাও ভাইবোনদেরকে খুব ভালবাসে, ভালবাসাটা ঠিকই আছে, তবে প্রকাশটা আরেকটু বেশী বাস্তব। আই মিন, যখন ভাইবোনকে বেশী মিস করে তখন বেশী ধমক দেয়, এইরকম আরকি। 😛 আর সামনাসামনি কান্নার তো প্রশ্নই আসেনা, পেটিস পাংচার হয়ে যাবেনা?! :grr:
তবে যখন আরেকটু বেশী মিস করে তখন বার বার একটাই প্রশ্ন করে 'তোর অবস্থা কী?' 'তোর অবস্থা কী' 'তোর কিছু লাগবে?' 'তুই এইরকম ম্যাদা মেরে যাচ্ছিস ক্যান'? ......... 😛
আমার নিজেরও কোনো বড় বোন নেই! উপ্স! তবে আমি নিজেই বড়বোন কিনা!!! 😕
@যাযাবর
হুমম ঠিকই বলেছেন মনে হয়। কিন্তু সেটা তো আমার পক্ষে বুঝা সম্ভব না বোন থাকলে কি হত কেমনে বুঝব বলুন। সব কল্পনা ভেবে ভুল-ত্রুটি মাফ...
তারিক, মাথায় হাত বুলানো না, মাথায় গাট্টা খাইলে বুঝবি, এইরকম হা হুতাশ তখন বাইর হইব কইলাম।
আবার জিগস ;)) ;))
@যাযাবর...............। আপ্পি, মাথায় গাট্টা দেন আর যাই করেন, আমি কিচ্ছু বলবনা। মাথায় হাত বুলিয়ে দেবার আগে ১০০০০০০০ বার গাট্টা মাইরেন। তবুও ১০০০০০০০ বার গাট্টা মারার পর ১টি বার হাত বুলিয়ে দিলে তাই হবে আমার জীবনের পরম পাওয়া............. আর আমার মাথায় আপ্পির নরম হাতের গাট্টা/হাত বুলানো দু'টোর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই 😛
দু'টোই আমার কাছে স্বপ্নের মতন!!!! 😀
দেননা আপ্পি........ কবে মাথায় গাট্টা মারবেন??? কবে মাথায় হাত বুলিয়ে দিবেন??? 🙁 🙁 🙁 🙁 🙁 শুধুই কি স্বপ্নই দেখে যাব??? বাস্তব হবেনা কখনো???? 🙁 🙁 🙁 🙁 🙁
খুব ভাল
কোনটা? লেখা না স্বপ্ন?
আমার বড় বোন নাই
খুব সুন্দর লিখেছেন ভাইয়া