[ডিসক্লেমার – সবাই এখন ক্যাডেট কলেজের স্মৃতিচারণ করছে। আমার ও অনেক কিছু লেখার ছিল কিন্তু অনেকদিন ধরে বেশ ব্যস্ত সময় পার করাতে একটু লেখার সাথে কোন সম্পর্ক নাই। তাই একটা অফটপিক পুরান লেখা দিয়ে দিলাম। কেউ মাইন্ড খাইয়েন না। আগে আমাদের এখানে চাটনি হিসাবে কিছু লেখা দিত তারেক(কনফুসিয়াস) ভাই। উনি বহুদিন চাটনি দেয়া বন্ধ করে দিছেন। আমার এই লেখা তাই সবাই চাটনি হিসাবে নেন। ওহহ এখন এত ভাল ভাল লেখক আমি লেখালেখি করি এইটা বলতে নিজেরই লজ্জা লাগছে। কি যে বলা যায়…]
-আপু , তুমি কি করছ?
– কেনরে, এইত একটু কাজ করছি। কিছু বলবি?
-তোমার সাথে একটু গল্প করি। অনেকদিন কথা হয়না। এত ব্যস্ত তুমি।
-আয় বস তুই। আমি হাতের কাজটা শেষ করে ফেলি।
আমি বসলাম আপুর বিছানায়। শীতকালটা সবে জমে এসেছে। লেপের তলায় ঢুকে গেলাম। কিছুক্ষণ পরে এসে আপুও বসল।
-এত ব্যস্ত থাকি। নতুন চাকরী তো তাই অনেক ঝামেলা থাকেরে পিচ্চি। তোর খবর কি। পড়ালেখা কেমন চলছে?
-এইত রে আপু। তুই চাকরীতে ঢুকার পর আমার একদম ভাল লাগেনা। আগে ভার্সিটিতে ছিলি একসাতে যেতাম কত গল্প করতাম। এখন তো তোকে পাইইনা। অফিস থেকে এসে এত টায়ার্ড থাকিস কথা বলব কি। তোকে আমি অনেক মিস করিরে আপু। সেই ছোটবেলা থেকে তুইই তো আমার সব। আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। বলতে বলতে গলাটা ধরে আসে আমার।
-পাগল, বলে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে আমার আপুসোনা।
-নতুন চাকরী তো দেখ একটু পুরান হয়ে গেলেই ঠিক হয়ে যাবে।
-তাই বলে বন্ধের দিনগুলাতেও এত কাজ করতে হবে।
দুই ভাই-বোন আমরা টুকটুক করে গল্প করতে থাকি। আগের মত যখন একরুমে আমাদের দুজনের বিছানা ছিল। দুটা সিঙ্গেল বিছানায় শুয়ে শুয়ে আমাদের গল্প চলত রাতের পর রাত। মাঝে মাঝেই আম্মুর ঝাড়ি , ” ঘুমাবি না তোরা?”অনেকদিন পরে আজ আবার সেইরকম অনুভব করছি। দূর ছাই কেন যে মানুষ চাকরীতে ঢুকে। আমি কোনদিন চাকরি করবনা।
-আপু তোমরা বিয়ে করবে করবে কবে?
-কেন? এখনই আমাকে তাড়িয়ে দিবি?
-আরে না তা বলেছি নাকি? আপুকে আরেকটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরি আমি। মনে হয় তা না হলে চলে যাবে ও এখনই।
-আরেকটু গুছিয়ে নেই। এরপর।
-তোমাদের খুব মানাবে। ভাইয়াকে আমার খুব পছন্দ।
কিন্তু আপু বিয়ে হলে তুই এই বাসা থেকে চলে যাবি তাইনা?
-তাতো যেতেই হবেরে। মেয়ে যে ।
-আপু আমি খুব একা হয়ে যাব যে। তোর বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর আমাকে এইরকম আদর করবি?
উত্তরে কিছু বলে না আমার আপুসোনা। চুলে হাত বুলানো হাতটা আমার চুলগুলোকে আঁকড়ে ধরে। ওর এই চুলে হাত বুলানোটা যে আমার এত ভাল লাগে।
– তুই ঘুমাবি না?
-ঘুম আসেনা যে আপু। এই জন্যইতো আজ তোকে বিরক্ত করতে আসলাম।
-চল তোর রুমে। তোকে আমি ঘুম পাড়িয়ে দিব।
শুয়ে আছি আমি। আর আমার আপু আমার মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিচ্ছে। ছোটবেলায় ওই আমাকে ঘুম পাড়াত এই ভাবে। আম্মুর কাজ তাই অনেক কমে গিয়েছিল। আমি চোখ বন্ধ করে ওর আদরটুকু উপভোগ করি। অসম্ভব ভাল লাগে আমার সেই সাথে কোথায় যেন একটু কষ্ট। একসময় আমার নড়াচড়া নেই দেখে ও মনে করে আমি ঘুমিয়ে পড়েছি। এরপর আমার কপালে একটা চুমু দেয় ও। তারপর গায়ের কম্বলটা টেনে টুনে চলে যায়। ঘুমাবার ভান করে আমি চোখ মিটিমিটি করে দেখি ওর মায়াবী মুখে অন্যরকম মমতা আর চোখের কোনে চিকচিক করছে পানি। আমার আপুসোনা আমার জাআআন আপ্পি।
[ আমার কোন আপু নেই। আমার কল্পনার আপুসোনা এইভাবেই আমাকে আদর করে সবসময়।]
এই লিখাটা যে আমার কত্ত ভালো লাগে, কত্ত কত্ত কত্ত ভালো লাগে...
অনেকদিন পর লিখলেন ভাইয়া, আমাদের এক সময়ের ফাস্টেস্ট রানার এখন দেখি মাঠেই নামে না...@-)
খুব ভাল হইছে লেখাটা। আমার কোনো বোন নাই। মাঝে মাঝেই এই বিষয়টা আমার মন খারাপ করে দেয়।
ধন্যবাদ সামিয়া আপু। তোমার যে এই সিরিজ ভাল লাগবে তা আমি আগেই বুঝছিলাম। মঞ্জুর ভাই ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
ভাই আপ্নের তো বউও নাই। ভাবীসাব রে নিয়া কি কি ভাবেন সেই সব নিয়া একটা সিরিজ কিংবা প্যারালাল কিছু একটা বাইর করন যায়না?? 😉
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
পিলাচ!! আমিও চাই।
উদ্ধৃতি
"ওহহ এখন এত ভাল ভাল লেখক আমি লেখালেখি করি এইটা বলতে নিজেরই লজ্জা লাগছে। কি যে বলা যায়..."
বলেন যে ব্লগা ব্লগি করি।
কিরে ভাই,ইউনিভার্সিটি তে কোন আপু পাইলানা,এইরকম ভাই থাকলে ত অনেক আপুই জড়ো হওয়ার কথা...............ভাল হইসে...............
@জিহাদ, রায়হান
-তোমাদের ভাবী কে নিয়ে চিন্তা করিনা তো। উল্টাটা হইলে বেশি ভাল। ধর তিনিই আমাকে নিয়ে চিন্তা করল। অনেক বেশি রোমান্টিক হয় না?
@সাইফ
-হ্যা ভাইয়া আমার আপু আছে এখন। কিন্তু এইরকম আদর পাওয়া হয় না আর কি । একেবারে পিচ্চি বেলা থেকেই আমার একটা বড় বোনের খুব শখ।
এত গাঢ় ভাবে ফিলিংস প্রকাশ করতে কিভাবে? আমরাতো কেবল লিখেই যাই। কিন্তু, এ তো লেখা না, ফিলিংসটাই যেন উঠে এসেছে।
আমারও মাঝে মাঝে এরকম ফিলিংসগুলো বের করতে আনতে ইচ্ছা করে। আজ পর্যন্ত পারিনি। আপনার এই লেখা থেকে শিক্ষা নিলাম।
তপু ভাই, এরকম আরও লেখা চাই।
হাঁসের ছানা!!!!!!!!!!তোর তো কোন ভাই বোন নাই............এই গল্পটা পইরা কস্ট পাইস না।
চোখে পানি চলে এল পড়ে। কারণ, আমারও কোন ভাই বোন নেই।
মাঝে মাঝে যখন রাতে ঘুম আসে না, তখন শুয়ে শুয়ে ভাবি আপুর কথা।
আমার কিছু অদ্ভুত চিন্তা আছে। আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, আমার আপু আছে। ওকে ডাকলে ও জবাব দেয়।
কয়েকবার স্বপ্নে আপুকে দেখার পর থেকে এই ব্যাপারটা আমার মাথায় পুরোপুরি গেঁথে গেছে।
এটা মাথা থেকে দূর করার কোন ইচ্ছাই আমার নেই।
থাক না ও আমার মনে... কি হবে এত বিশ্বাস অবিশ্বাস দিয়ে?
অপূর্ব উপস্থাপনা।
"সুখকর" কোনো ফিনিশিংযের অপেক্ষায় রইলাম।
তপু লেখা খুবই ভালো হইসে । যাকে বলে সিরাম তোমারে বড় একটা পিলাচ দিলাম। @জিহাদ আরেকজঙ্কে না গুতিয়ে নিজের টা লিখে ফেলো চান্দু। হংস কেমন আছিস। সবার জন্য শুভকামনা।
ধন্যবাদ সবাইকে।আমার চিন্তাভাবনার অনেক জায়গা জুড়ে আমার কল্পনার আপু। এই বিষয়ে আমার সব চিন্তা গুলা লেখার ইচ্ছা আছে। গিয়ার পাইলাম সবার ভাল লেগেছে শুনে।
তপু ভাই আপনি কি জীবিত না মৃত?এইভাবে উধাও হয়া কি ঠিক?খাড়ান দেশে আইসা নেন......
ভাই রে, বোন যার নাই শুধু সেই বুঝে এই না থাকার বেদনা টা কেমন!!! একটা সুন্দর লেখার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ
ঈশ!!! আমার ভাইদের এই লেখাটা পড়াতে পারতাম। বোন আছেতো তাই বোনের কদর'টা বোঝেনা। 🙁
আমার থাকলেও বুঝতাম। আহারে বোন গুলা সব না বুঝা ভাইদের দখলে ...
চিন্তা করোনা, তোমাদের কাছে ও বোনেরা আসবে। 😀
অনেক দিন ধরেই সিরিজটা পড়ছি। শেষ পর্যন্ত নিজেকে এই বলে সান্তনা দেই..... আমিই এক মাত্র............... নই।