আজ সকাল থেকেই মনটা বেশ খারাপ। কারন, স্প্রিং সেমিষ্টার শুরু হয়া গেল। ক্লাস নিচ্ছি তিনটা। আগের সেমিষ্টারে চারটা নিয়া বিরাট দৌড়ের উপরে আছিলাম। কিন্তু আজ তিন ক্লাসের সিলেবাস দেখে আমি পুরাই আউলায়া গেছি। কোনটার রিডিং এসাইনমেন্টই সপ্তাহে ৩০০ পৃষ্ঠার কম না :grr: । তার উপরে আছে প্র্যাক্টিস এথনোগ্রাফী, সপ্তাহে পুরা একদিন। :((
আগামী কয়েকদিনের জন্য হাইবারনেশনে যেতে হবে। তাই একটা ব্লগ দিয়ে যেতে চাই। ভাবলাম লাস ভেগাসে আমার তিনদিন দুই রাত্রির হজ্জ্বের ছবিগুলা পোষ্ট করমু। কিন্তু আমার নেট-বিষয়ক স্বল্প জ্ঞানে কুলিয়ে উঠতে পারলাম না ~x( । তাই “ভালো-মানুষ” এই আমার ক্যাডেট লাইফের দুইটা বাটপাড়ির ঘটনা শেয়ার করছি।-
আমি কলেজে বরাবরই “ভালো ছেলে” ছিলাম B-) । ডিসিপ্লিন, পড়ালেখা, গেমস এন্ড স্পোর্টস, ইত্যাদি, ইত্যাদি। (নিজের ঢোলটা পিটায়া নিলাম একটু 😀 ) । মকরামির ইতিহাস খুব একটা নাই আমার। চুরির ত নাই-ই। কিন্তু চোরের উপর বাটপাড়ির কাহিনী আছে। 😛
এক, জাহাঙ্গীর হাউসে হাউসপ্রিফেক্টের রুমটা এমন জায়গায় যে, সেখান থেকে পুরা হাউসটাই দেখা যায়। তাছাড়া, একাডেমিক ব্লকের দিকেও নজরদারী করা যায়। হাউস থেকে একাডেমিক ব্লকের দিকে যাবার পথে বেশ বড় একটা আমলকি গাছ ছিলো। একবার হয়েছে কি, এক ছুটির দিনে যখন সবাই সিনেমা দেখতে ব্যস্ত, সেসময় ক্লাস নাইনের পোলাপাইন দেখি সেই গাছ থেকে আমলকি পাড়তাছে। আমি রুমেই ছিলাম। আগের দিন থেকেই ওদের উপরে খানিকটা রাগ জমেছিল কতগুলা বিটলামির জন্য। ভাবলাম, এইবার পাইছি 😡 । আমি চুপ কইরা রুমে অপেক্ষা করলাম কখন নামে গাছ থেকে। একটু পরে দেখি প্রায় কেজি খানেক আমলকি হাতে নিয়ে দুই বান্ধা হাসতে হাসতে হাউসে আসতাছে। আমি গিয়ে যথারীতি সামনে হাজির। তারপর…..? যা হবার, তাই হলো। আমলকি গুলা বাজেয়াপ্ত করে বায়তুল মালে জমা করলাম :khekz: । তবে ওদেরকে খালি হাতে ফিরায়া দেই নাই, কয়েক ডজন :frontroll: দিয়ে বিদেয় করেছিলাম।
দুই, কলেজে আন্তঃহাউস ফুটবল কম্পিটিশনের সময়কার ঘটনা। তখন আমি ক্লাস ইলেভেনে। কেমিষ্ট্রির এক স্যার ছিলেন ‘ব’ অদ্যাক্ষরের নাম+আরসিসি’র এক্স-ক্যাডেট। আমাদের ব্যাচের সাথে বিরাট ঝামেলা তার। সিনিয়র গ্রুপে ফেরারিং করেন। ম্যাচ শুরুর আগেই কয়েক বন্ধু কইলো তারে “হালকা ডোজ” দিতে ;;; । জোড়ালো কিকের জন্য বেশ ভালো নাম করে ফেলেছিলাম আমি B-) । বন্ধুদের আবদার ফেলতে পারলাম না। কইলাম, ঠিক আছে।- যথারীতি বল মাঠে গড়ালো। আমি ডিফেন্সে, স্টপারব্যাক। তক্কে তক্কে আছি কখন তারে বাগে পাই। বিরতির কয়েক মিনিট আগে পেয়েও গেলাম। একটা বল আসল আমার কাছে, ঠিক সামনেই “তিনি”। আমি বলটা ফিনিস করার উছিলায় পা চালায়া দিলাম সপাটে। “তিনি” কিভাবে যেন টের পেয়ে গেলেন আমার মতলব। চট করে ঘুরে গেলেন। আর সেই সুযোগে টর্নেডো গতিতে বল গিয়ে আঘাত হানল “তার” পশ্চাতদেশে :)) । তার অবস্থা হয়েছিলো দেখার মতো; না পারেন বসে পড়তে, না পারেন দাড়ায়া থাকতে :khekz: । পোলাপাইন ত মহা খুশী। আমিও……পারিশ্রমিক বাবদ তারপর দিন স্পেশাল ডিনারে বেশ কিছু কাবাব পেলাম বন্ধুদের কাছ থেকে।
১ম
হাফ সত্য কথা কইছো। টিভি রুম আর তার আশপাশ আর টিভি রুমের পাশের ওপেন ক্রিকেট খেলার জায়গা মোটেই দেখা যায় না।
এই আমলকি নিয়া আমিও ধরা খাইছি। আমি আর আখতার, মাগরিবের আগে আগে শুক্কুরবার। আখতার গাছে উঠছে আর আমি নিচে কুড়াই। ধরা খাইছি মেডিকেল অফিসার স্যারের কাছে।
এরপর কইছি স্যার আমল্কিতে নাকি অনেক ভিটামিন তাই টেষ্ট করার জন্য পাড়তেছি 😀
আমরা একটা কথা কইতাম বিডি স্যাররে নিয়া "বিডি নোওজ এভরিথিং একসেপ্ট ক্যামিষ্ট্রি", গান, হারমোনিয়াম বাজানো, ভলিবলের রেফারী, ফুটবলের রেফারী, ষ্টেজ সাজানো, ফটোগ্রাফি, কোথায় নাই উনি।
উনি নাই শুধু কেমিষ্ট্রি ক্লাসে। 😀
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
জুতসই জবাব। হিহিহি!!!!
ঠিকই কইছেন, বস। কিন্তু আমাদের সময় ঐ এলাকাটা আসলে 'মাফিয়া'দের ছেড়ে দিয়েছিলাম 😀 । ওটা 'তারা' ক্রিকেট খেলা থেকে শুরু করে ধোঁয়াটানা পর্যন্ত সব আন্ডারগ্রাউন্ড কাজেই ব্যবহার করত। কন্ট্রোলও করত ঐ লাইনের সিনিয়ররা। তারমানে, ঐ এলাকায় ইন্ডিসিপ্লিন কাজকর্ম মোটামুটি বৈধ ছিল। সেই কারনে ওটা আমার হিসাবে ধরিনি।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
:khekz: ব্যাপক মিজাক পিলাম :khekz:
:pira:
জাহাঙ্গীর হাউসের প্রিফেক্টরা সম্ভবত ঐতিহাসিকভাবেই কলেজের ফল-ফলাদি রক্ষার দায়িত্বপালন করে আসছে। আমি এইট নাইনে যেই কয়বার পেয়ারা-কাঁঠাল পেড়ে ধরা খেয়েছি, প্রতিবারই জাহাঙ্গীর হাউসের প্রিফেক্টের কাছে। একবার মনে আছে হাউস পর্যন্ত উঠে গেছি ঐখান থেকে নামায় আনছে পাইপ বাইয়ে।
ছবিগুলা ফ্লিকার কিংবা ফেসবুকে আপলোড করুন। আপলোড শেষে ছবিটার উপর মাউসের রাইট বাটন ক্লিক করে "কপি লিংক লোকেশন" সিলেক্ট করুন। তারপর সিসিবিতে এসে ছবিতে ক্লিক করুন। সেখানে আগের "লিংক লোকেশন" থেকে পাওয়া লিংক পেস্ট করুন। ব্যাস হয়ে গেলো।
আমিও ছবি দেখপো :((
নেক্সট উইকে ছবি আপলোড করার চেষ্টা নিমুনে...... 🙂
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
হায় বিডি। আমাদের কলেজে পরে আসছিলেন স্যার/ভাই। বিভিন্ন প্রতিযোগিতার সময় ওনার বানানো বোমা গুলা খুব হিট করছিল। কিন্তু লোকটার সাথে আমাদের ঝামেলা লাগতো প্রায়ই।
আমরাও বিডি বস্রে অনেকদিন পাইসি, এবং সত্য হইলো উনার লগে আমাদেরও লাইগা গ্যাছিলো
উনার ফটোগ্রাফিতেও ব্যাপক আগ্রহ ছিলো
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
আমি কিন্তু কোন স্যারের নাম কই নাই। এই পোষ্টের কোন ঘটনার সাথে বিডি স্যারের সম্পর্ক পাওয়া গেলে তা অবশ্যই কাকতালিয়। :)) :))
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
এতদিনে? আমাদের স্প্রিংতো প্রায় শেষ, ৪ সপ্তাহ বাকি মাত্র।
এই ব্লগটা আপনের আগে দেয়া উছিৎ ছিলো, তাইলে ওয়ার্নিং পাইতে পারতাম, আমি ক্লাস নিসি ৫ টা, বুইঝেন...
আমাদের কোয়ার্টার সিষ্টেম, তাই একাডেমিক ক্যালেন্ডার একটু আলাদা।
তোমার ৫টা ক্লাস নেওয়া কঠিনই হবে মনে হচ্ছে।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
মিজা পিলিম। শীতনিদ্রা ছেড়ে তাড়াতাড়ি ফিরে আসুন। এরকম আরো পোস্ট চাই।
ঐ মিয়া, নিদ্রা ত শুরুই করলাম না। এখনই ফিরে আসমু ক্যামনে? :grr:
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
বি ডি এর পচানি আর কি বলবো!! সে তো কেমিস্ট্রি বাদে বাকি সব এই পারে। :)) :)) :))
আপনার কষ্ট কমুক এই আশা করতাছি...
কিন্তু বিভিন্ন ছুতা দেখিয়ে লাস ভেগাস এড়িয়ে যাওয়ার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। ভেগাস ভ্রমণের সচিত্র প্রতিবেদন চাই :((
ভাইরে,
ছুতা-টুতা কিছুই না। আসলেই মাইনকা চিপায় পড়ছি। ভাবছিলাম, তিনটা ক্লাস, ব্যাপার না। আজ খোঁজ নিয়া দেখি, এই তিনটার সিলেবাসই সবথেকে বড়। ~x(
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
দারুন মিজা পিলাম বস
হাইবারনেশনে যাইবার আগে লাস ভেগাসের ছবিগুলা দয়া কইরা দিয়া যান। 😀
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
ঐ 😀 😀
দারুন মজা পাইলাম =))
ছবি দেখতে চাই 🙁
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
ঐ.. :-B
কলেজ নিয়ে কাহিনীগুলো সবসময়ই ভালো লাগে এইটাও ব্যাতিক্রম নয়। বেশ ভালো লাগলো লিখাটা
মাহমুদ ভাই, দারুন হইছে!
আপনার হজ্বের ছবি দেখতে মন চায়! :dreamy: :dreamy:
ভেগাসের হজ্বের ছবিগুলার স্বাদ কি কলেজের নির্দোষ বাটপাড়ির ঘটনা দিয়ে মিটে? :no:
এই ব্লগের অভাগাদেরকেও একটু 'লাব্বাইক' বলার সুযোগ দেন,বস 😀
"আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"
=)) =)) =)) =))