ছোটবেলায় নানান প্রবাদ-প্রবচন, খনার বচন, নীতিকথা ইত্যাদি শুনে এসেছি। সেগুলোর একটা ছিল ‘লজ্জা নারীর ভূষণ’। ইদানিং দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের নারীসমাজ এই কথা বেমালুম ভুলে গেছে।
বটে! এই সেদিনই ত’ ১লা বৈশাখে কেমন বেহায়াপনা করার জন্য রাস্তায় নেমে যৌনসন্ত্রাসের মাধ্যমে অগণিত নারীকে শিক্ষা দেওয়া হল। এরপরেও তাদের টনক নড়েনি? এখন শুনছি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষকও বেহায়াদের মত রাস্তা-ঘাটে পর-পুরুষের গায়ে হাত তুলেছে। তা-ও আবার যে সে পুরুষ নয়, ছাত্রলীগের সোনার ছেলের গায়ে, যে কিনা বাংলাদেশে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ বাস্তবায়ণের জন্য, ইসলামী মৌলবাদীদের উচ্ছেদের জন্য নিজের জীবন বাজী রেখেছে, বইখাতা ফেলে অস্ত্র হাতে আরেক মুক্তিযুদ্ধে সামিল হয়েছে।
আসুন, আমরা সকলে প্রকৃত দেশপ্রেমের পরাকাষ্টা প্রদর্শন করার অব্যর্থ উপায় হিসেবে চরম প্রতিবাদ জানিয়ে ফেসবুকে একটা ষ্ট্যাটাস দেই, অথবা ব্লগে একটা বিপ্লবী লেখা পোষ্ট করি। আমার এই ব্লগের মত না, সত্যিকারের প্রতিবাদী পোষ্ট। আর এইটুকুও না পারলে ৭১-টিভির মতো করে জনসমুদ্র থেকে ইতোমধ্যেই যৌনসন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত/পরিচিত ছাত্রলীগের সোনার ছেলেদেরকে বাদ দিয়ে একটা দাড়ি+টুপিওয়ালার খোঁজ করি।
আফটারঅল, দেশের নারীদেরকে ত’ লজ্জাশীলতার শিক্ষা দিতে হবে। আর সেই সাথে যদি দাড়ি+টুপিওয়ালাদেরকেও হালকা সাইজ করা যায়, মন্দ কি? নারী-শিক্ষাও হল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাও বাস্তবায়িত হল।
নববর্ষে টিএসসিতে নারীর প্রতি যৌনসন্ত্রাসের প্রতিকারে পুলিশের ভূমিকা বোঝার অনেকগুলো তথ্যের একটা আজ প্রথম আলো’র বরাতে জানা গেল- যৌন সন্ত্রাস প্রতিকারে বাংলাদেশ পুলিশ (২০১৫ খ্রীষ্টাব্দ)
দাড়ি-টুপি, ছাত্রলীগ, মুক্তিযুদ্ধ এইসব নিয়ে খিচুড়ি ভালো যায়।
কিপ গোয়িং।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
আফসোস,
ডিজিটাল পদ্ধতিতে চিহ্নিত হওয়ার পরেও নানান রকম ডাউট দিয়ে 'সোনার ছেলেদের' রক্ষা করা হয়।
৭১-টিভি জনৈক দাড়ি+টুপিওয়ালাকে অপরাধী হিসেবে সনাক্ত করার জন্য প্রায় ৩০ মিনিট ধরে একটা প্রতিবেদন প্রচার করে চলেছে, অথচ ইতোমধ্যেই চিহ্নিতদের নিয়ে কোন কথা নাই!
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
"অথচ ইতোমধ্যেই চিহ্নিতদের নিয়ে কোন কথা নাই"
কে কোথায় কখন কি পদ্ধতিতে চিহ্নিত করলো, জানা দরকার।
আমি মজা লসের কিছু ভাঙ্গাচোরা ছবি ছাড়া আর কিছুই পাই নাই।
সেই রকম বিশ্বাসযোগ্য (ভাঙ্গা চোরা না) কোন সাক্ষ্যপ্রমান যদি থাকে, দেখতে খুবই আগ্রহী।
লিংক দিলে কৃতজ্ঞ হবো।
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
পারভেজ ভাই,
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। "মজা লস" কি জিনিস, সেটা বুঝতে পারলাম না। তবে সামুতে একতা ষ্টিকিপোষ্ট ছিল এক সপ্তাহেরও বেশি। সেইখানে 'মব ছবি' থেকে জুম করে গোল চিহ্ন দিয়ে স্পষ্ট করে নাম+ঠিকুজি সহ চারজনকে চিহ্নিত করে দেওয়া আছে তারা কারা, ঢাবি'র কোণ হলের কোণ ছাত্রলীগ নেতা, বার তিতুমীর কলেজের কোন নেতা, কোন মন্ত্রীর সাথে কোথায় কবে একসাথে বসেছে, এইসব। লিঙ্কটা দিতে খোঁজ করলাম, কিন্তু অজ্ঞাত (?!) কারণে পেলাম না, অথচ সামুতে অন্যসব ষ্টিকিপোষ্ট বহাল তবিয়তে আছে।
আপনার পরের মন্তব্যের উত্তরও এখানেই দিচ্ছি, আলাপের স্বার্থে-
"আরও রিলায়েবল সোর্স চাই।
যেকারনে একাত্তরের রিপোর্ট পত্রপাঠ ফেলে দেয়া হচ্ছে, সেই একই কারনতো "সামু" আর "মজালস"এর জন্যেও প্রযোজ্য, তাই না?"
আরো রিলায়েবল সোর্স বলতে আপনি কি বোঝালেন সেইটা স্পষ্ট করে বললে আলাপে সুবিধা হয়। যেকারণে ৭১-টিভিকে ফেলে দিচ্ছি, তা'র ভিত্তি হচ্ছে কমন সেন্স। আর এই কমন্সেন্সের ভিত্তি হচ্ছে বর্তমান মেইনষ্ট্রীম মিডিয়ার উপর সরকারের দমননীতি, যৌনসন্ত্রাসে ছাত্রলীগের (এবং প্রায় সব সরকারের সময় ক্ষমতাসীন দলের লেজুড় ছাত্রসংগঠন) লজ্জাকর অতীত, আর ঢাবিতে ছয় বছরের (১৯৯৭-২০০৩) আমার চাক্ষুস অভিজ্ঞতা। কিছু উদাহরণ দিলে হয়ত ক্লিয়ার হবে যে, আমি কেন আমার কমন সেন্স থেকে আসা অনুমানকে আপাততঃ সঠিক মনে করছিঃ
১। মিডিয়া সকারের বিরুদ্ধে যায়, এমন সত্য সংবাদও প্রকাশ করতে পারছেনা/করছেনা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষকের উপর যৌনসন্ত্রাসের ঘটনাকে সব পত্রিকা ছাপিয়েছিল 'ঘটনাক্রমে গায়ে ধাক্কা লাগা'র ফল হিসেবে, অথচ সত্যি হল ছাত্রলীগের অভিযুক্ত সেই নেতা উদ্দেশ্যমূলকভাবে সেটা ঘটিয়েছে নারীশিক্ষককে নতুন ছাত্রী হিসেবে ভুল করে। টিএসসিতে লিটন নন্দী ও তার উদ্ধারকারী দল যে দুইজনকে ধরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছিল, তাদের আর কোন খবরই নাই মিডিয়াতে। এমন ডজনখানেক দৃষ্টান্ত দিয়ে প্রমাণ করা যাবে যে, মেইনষ্ট্রিম মিডিয়া রিলায়েবল খবর দিচ্ছে না।
২। আমি যে সময়ে ঢাবি'তে ছিলাম, তখনই দেখেছি কিভাবে হল-গেটের পাহারায় থাকা পাতি-ক্যাডাররা চার/পাজ জনের দল বেঁধে ক্যাম্পাস এলাকায় ভিড়ের সুযোগে মেয়েদের গায়ে হাত দিতে, আর তা'ই নিয়ে হলগেটে নিজেদের মধ্যে আড্ডায় কে কত বেশি মেয়ের গায়ে হাত দিতে পেরেছে তা' দিয়ে বাহাদুরি দেখাতে। আমি বাজী ধরে বলতে পারি, এখনও ঢাবি'র হলগেটে ক্যাডাররা কে কতটা মেয়ের গায়ে হাত দিয়েছে ১লা বৈশাখের উৎসবে, সেইসব গল্প চলছে। এক্ষেত্রে রিলায়েবল সোর্স হবে হলের কর্মচারীরা আর দোকানদাররা। ওরা না বিএনপি, না আওয়ামীলীগ, না জামাত। ওদের কাছে যে তথ্য পাবেন, সেগুলো মিডিয়াতে পাবেন না। আর আমাদের সময় কোন হলের কোন আপা (হল শাখার ছাত্রনেত্রী) কোন মন্ত্রী বা এম্পি'র বাসায় মেয়ে-সাপ্লাই দেয়, সেইটাও প্রায়শঃই জানা যেত তাদের নিদের মধ্যে ক্ষমতা/টাকা-পয়সার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ঝামেলা হলে।
৩। সাক্ষ্য-প্রমাণ দেওয়ার জন্য যে সামাজিক+রাজনৈতিক বাস্তবতা প্রয়োজন, সেটা যে বর্তমান বাংলাদেশে নেই, তা'ও আমার কমনসেন্স থেকে বুঝি। ইতোমধ্যেই চাপেচুপে যা বাইর হইছে, সেইটাও গায়েব হয়ে যাচ্ছে, যা' আমার কমনসেন্সকেই আরো দৃঢ় করছে। পুলিশে ত' অভিযুক্তকে ধরেনা যদি সেই অভিযোগ সরকারের দলের লোকের বিরুদ্ধে হয়, ধরে অভিযোগকারীকেই। তারপর কি হয় তা' আপনারা সবাই জানেন, পত্রিকায় সে খবর আসুক আর না-আসুক।
"এটা বুঝতে "ছাত্রলীগ থিওরির" বাইরে আরেকটা থিওরি বোঝা জরুরী।
তা হলো "মব ক্যারেকটার"।
শুধু পুলিশ কেন, কোন ল'এনফোর্সিং এজেন্সিই মবের মধ্যে এরেস্ট করে না।
আগে সন্দেহভাজনদের আইসোলেট করে, তারপরে এরেস্ট করে।
ওখানে এটা করা কি আসলেই সম্ভব ছিল?"
পারভেজ ভাই,
"মব" আমার পড়া এবং পড়ানোর মধ্যে একটা বিষয়। তাই ঐটা নিয়ে আমার কনসেপশন পরিস্কার। লিটন নন্দীর বক্তব্য শুনলে দেখবেন, সেটা ঠিক মব নয়, তারথেকে গুণগত ভাবে আলাদা। সেখানে শুধু যৌনসন্ত্রাসীরাই ছিল না, ছিল একদল উদ্ধারকারীও যারা রীতিমত বাঁশ দিয়ে আক্রমণকারীদের পিটিয়েছে, দুজন যৌনসন্ত্রাসীকে হাতেনাতে ধরে পুলিশে দিয়েছে। তাদেরকে পুলিশ ছাড়ল কেনো? পুলিশের চোখের সামনে দেড় ঘণ্টা ধরে যৌনসন্ত্রাস ঘটে যাচ্ছে, পুলিশ নিস্ক্রিয় থাকল কেনো? ঢাবি'র প্রক্টর কেন এই কথা বলল যে, আমি কি করবো?- আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, ঢাবি'র সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের অনেকেই দেখেছে+চিনেছে কারা যৌনসন্ত্রাস করেছে, কিন্তু কিছু বলার সাহস পায় নাই, সহসা পাবেও না। কেন, সেইটা বুঝে নিয়েন।
সবশেষে বলি, মুক্তিযুদ্ধে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সংগ্রামে নামা হাজার-হাজার মানুষগুলোও যদি বর্তমানে চলমান যৌনসন্ত্রাস ও মানবাধিকারক্ষুন্নকারী অপরাধসমূহের বিরেদ্ধে না-দাঁড়ায়, তাহলে বাংলাদেশ সোমালিয়ায় পরিণত হতে আর মাত্র কয়েকটা বছর লাগবে।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
ঐখানে কিছু হয় নাই, তা বলি নাই। যারা করেছে, তাঁরা যে ছাত্রলীগের কেউ না, তাও বলি নাই।
১৯৯৭-২০০১ এ একাধিক ছাত্র সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় দাবড়ে বেরিয়েছে। যা কিছু হয়েছে সেজন্য তাঁরা সবাই দায়ী।
বলতে চাচ্ছি, ঘটনা যা ঘটছে, তার জন্য কিছু ছাত্র, বিশেষ করে ছাত্র সংগঠনে সংশ্লিষ্ট ছাত্রগন দায়ী। আর সরকারি ছত্রছায়ার ছাত্র সংগঠনে সংশ্লিষ্টরা হয়তো বেশী দায়ী। এই ভাবে বললে তো আর কোন সমস্যা থাকে না। আমার মনেহয় তাতে করে ঐ সংগঠনগুলোকেও সাথে পাওয়া যেতে পারে এই ন্যাক্কার জনক ঘটনা প্রতিরোধে।
আমার আপত্তি হলো ঘটনা বিবরনের টোন দেখে। এমন ভাবে ছাত্রলীগ এই এই করেছে বলে একটা ক্লিশে তৈরী করা হচ্ছে যা শুনে মনেহয়, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির এইবারের ডিসিশন ছিল, সর্বত্র নারীদের উত্যাক্ত করার। আর এই রকম একটা আবহওয়া তৈরীর জন্য যেসব সোর্সের এভিডেন্স ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলোও প্রশ্নবিদ্ধ।
আমার কথা হলো, প্রতিকার চাইলে ঘটনার বিবরন আসতে হবে আবেগ বিবর্জিত ভাবে।
অকারনে বা আবেগের বশে এমন কিছ বলা ঠিক হবে না, যা বিচারপ্রার্থিদের মধ্যে বিভাজন তৈরী করে ও দোষিদের জন্য সিমপ্যাথির ক্ষেত্র বানায়।
শাস্তি তো আমরা দেবো না, দেবে ল'এনফোর্সারদের মাধ্যমে বিচার ব্যবস্থা। তাঁদের কাজে বাঁধা সৃষ্টি করে, এরকম কথা যত কম পারা যায় বলা উচিৎ।
আর তাঁদের যত বেশী উৎসাহিত করা যায়, সেধরনের কথাই বলা উচিৎ।
এই জিনিসটা মিসিং দেখলেও আমি আশংকা বোধ করি, তাই আমার এই প্রসঙ্গগুলা উঠানো।
অন্য কোন কিছু প্রমান বা অপ্রমানের জন্য না।
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
পারজেভ ভাই,
বাস্তব উদাহরণ কিন্তু এই অনুমান সমর্থন করে না। বর্তমানে ছাত্রলীগ বা সরকারের লেজুড় অন্যান্য সংগঠনের ছত্রছায়ার থেকে সন্ত্রাস করেছে, আর তা'র প্রতিরোধ/বিচারের জন্য মূল সংগঠন সহায়তা করেছে, এমন একটা দৃষ্টান্ত দেখতে পেলে খুব খুশি হতাম; অথচ এর উল্টোটি দেখে চলেছি প্রায় প্রতিদিন। এজন্য এই আশা করিনা, তাই এই ধারায় আলাপেও আমি নাই।
এখানে দ্বিমত। আইন প্রয়োগকারী সংস্থায় আমাদের সমাজের বাইরের কেউ না, বরং আমাদের মধ্যকার মানুষেরাই আছে। বর্তমানে তারা ক্রমাগতঃহারে সরাসরি রাজনৈতিক দল থেকে আসছে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে ৬ জন পুলিশ অফিসারকে চিনি ২০তম বিসিএস-এ, যারা ঢাবি'র ছাত্রলীগের হলশাখার সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক ছিল। তাদের একজন হারুন-অর-রশীদ, আরেকজন বিপ্লব সরকার- দুজনেই বিএনপি'র চিফহুইপ জয়নাল আবেদীনকে প্রকাশ্য রাস্তায় পিটিয়ে বহুল সমালোচিত। এখনকার অবস্থা আরো ভয়াবহ। আমি ভুল অনুমান করে থাকলে শুধরে দিবেন।
ল'এনফোর্সারদেরকে সহায়তা করার জন্যই ত' লিটন নন্দী দুই যৌন সন্ত্রাসীকে পুলিশের হাতে দিয়েছিল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নারীশিক্ষক অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাকেও পুলিশে দিয়েছিল। ফলাফল কি হয়েছে আমরা ত' সবাই জানি।
মোট কথা হল- গণতন্ত্রে সাফল্য আসে যখন ক্ষমতাসীনের সমালোচনার পথ থাকে, এবং সেই সমালোচনা ক্ষমতাসীনকে বাধ্য করে সঠিক ভাবে সকলের জন্য শাসন পরিচালনা করতে। আর তাই সুশীলসমাজকে ধরা হয় ক্ষমতাসীন আর ক্ষমতার বাইরে থাকা জনতার মধ্যকার যোগসূত্র, যা জনগণের স্বার্থে সরকারের সমালোচনা করবে। আমাদের দেশে এখন কি সুশীল সমাজের একটা ভয়েসও আছে যে/যা' নির্ভয়ে সরকারের দুস্কর্মের সমালোচনা করতে পারে? হয় তারা ব্যক্তি+দলের স্বার্থে দালালী করে, অথবা নির্যাতনের ভয়ে চুপ করে থাকে। দুই অবস্থানই নৈতিকভাবে পতিত।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
আমি কনফিউজড --- সিসিটভিতে যাদের দেখা গেল তারা কি ছাত্রলীগের ছেলেপেলে? নানাজন দেখি নানা কথা বলে। প্রথম দিকে যত জোরালোভাবে ছাত্রলীগের দোষ চাপানো হচ্ছিল পরে সেটা আর শোনা যায়নি।
আমার কাছে সবচেয়ে হতাশ লেগেছে -- প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে একটা আওয়াজ পর্যন্ত করলেন না (যদি কারো জানা থাকে শুধরে দিয়েন)। দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোরো কোন নড়ন চড়ন দেখা গেলনা।
নূপুর ভাই,
সিসিটিভিতে বেশ কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে ছাত্রলীগের পান্ডা হিসেবে এবং তারা ঢাবি'র কোন হলে কোন নেতার সাথে চলে, তিতুমীর কলেজের কোন নেতার সাথে চলে, ইত্যাদি। কমপক্ষে চারজনকে স্পষ্ট ভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে, সামুতে একটা ষ্টিকি পোষ্টে ঝুলে ছিল সপ্তাহখানে। অন্যান্য মাধ্যমের খবর জানিনা। তবে মেইনষ্ট্রীম মিডিয়া (পত্রিকা+টিভি) এদেরকে দ্রুতই আড়ালে যেতে দিয়েছে অন্যান্য আরো গুরুত্বপূর্ণ (?) সংবাদের আড়ালে। (নারীর প্রতি সন্ত্রাস কবেই বা বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ হয়ে উঠেতে পেরেছে?)। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন-সন্ত্রাসের ঘটনাও পত্রিকায় এসেছিল এভাবে যে, আক্রান্ত নারীশিক্ষকের সাথে যৌনসন্ত্রাসী ছাত্রলীগ নেতার গায়ে ধাক্কা লাগার থেকে ঘটনার সূত্রপাত। অথচ সত্য ঘটনা ছিল উক্ত সন্ত্রাসী উদ্দেশ্যমূলকভাবে আক্রান্ত নারীশিক্ষকের পথ রোধ করেছিল, চড় মেরেছিল এবং ওড়না ধরে টান দিয়েছিল। সেই শিক্ষকের ফেসবুকের বয়ান এবং প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের বয়ানও এ-ই। সেই সন্ত্রাসীকে পুলিশের হাতে দেওয়ার পর আবার ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ছাড়িয়ে/ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। টিএসসিতেও লিটন নন্দি এবং তার সহযোগীরা কয়েকজনকে হাতেনাতে ধরে পুলিশে দিলে পরে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আপনার কি বিশ্বাস হয় যে ছাত্রলীগ না-হলে আর কাউকে পুলিশ ঘটনাস্থলে হাতেনাতে ধরার পরও ছেড়ে দেয়?- ঠিক এই কারণেই প্রধানমন্ত্রীর কোন বাণীই শোনা যায়নি। অন্য দলগুলোও যে খুব একটা আলাদা নয় তা'ও দেখেছি বিএনপির আমলে। পার্থক্য শুধু মাত্রাগত।
এবার বিরোধী দল থেকেও আমরা ছাত্রলীগের নারীর প্রতি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে নিন্দা+প্রতিবাদ শুনেছি হালকা। তবে সেটা নিতান্ত রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য, এই অপরাধকে দমন+প্রতিকার করার জন্য নয়।
বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে আপাততঃ কোন কথা বলতে চাই না। কারণ, আইন/নিয়ম/নীতি এইসব আপাততঃ যাদুঘরে যাওয়ার লাইনে আছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে পাড়া/মহল্লার পাতি সমর্থক পর্যন্ত যখন সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থে নির্দ্বিধ্বায় অবিরাম মিথ্যা বলা শুরু করে, তখন আলোচনার কোন মানে হয়না। (সম্পাদিত) (সম্পাদিত)
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
"সামু" আর "মজালস" যখন "ইন্ডিপেন্ডেন্ট সোর্সের" ভুমিকা নেয়, তখন পুরো ব্যাপারটা গ্রেইন অব সল্ট সহ দেখা ছাড়া উপায় থাকে না।
আরও রিলায়েবল সোর্স চাই।
যেকারনে একাত্তরের রিপোর্ট পত্রপাঠ ফেলে দেয়া হচ্ছে, সেই একই কারনতো "সামু" আর "মজালস"এর জন্যেও প্রযোজ্য, তাই না? (বায়াস)
আর মবের মধ্যে যেকোন লোককে ধরে রাখাটা সহজ না।
এটা বুঝতে "ছাত্রলীগ থিওরির" বাইরে আরেকটা থিওরি বোঝা জরুরী।
তা হলো "মব ক্যারেকটার"।
শুধু পুলিশ কেন, কোন ল'এনফোর্সিং এজেন্সিই মবের মধ্যে এরেস্ট করে না।
আগে সন্দেহভাজনদের আইসোলেট করে, তারপরে এরেস্ট করে।
ওখানে এটা করা কি আসলেই সম্ভব ছিল?
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
এসব বিষয়ে কথা বলা মানে মৌচাকে ঢিল ছোঁড়া। একচোখা বিশ্বাস, কি রাজনৈ্তিক কি ধর্মীয়, আমাদেরকে অন্ধ করে তোলে, অমানুষ করে তোলে। সুস্থ বিবেক, সুস্থ চিন্তা, সুস্থ মনন- এতটুকুই কাম্য।
তেইশটা গুলিই গায়ে বিঁধেছে ।
অথচ দ্যাখ ! মুখটা কি সুন্দর অক্ষত আছে ।
মাথার হাইটে নাকি পুরো এক রাউন্ড ব্রাশ ফায়ার হয়েছে ।
তবু কি অবাক কান্ড চোখ দুটো একদম অক্ষত রয়ে গ্যাছে ।
একেই বলে কপাল !
কিছু হলেই খালি বলে ওঠো গোপাল !
যত্তোসব বিচ্ছু পঙ্গপাল !
দুই দলমতের বাইরে আমরা কি কখনোই নিজেদের মগজ দিয়ে ভাবতে পারি না? যিনি বা যারা ঘটনার শিকার তারা তো কখনোই কোন দলের নন। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নিরপেক্ষ বিচার কি আমরা কখনই পাবো না??
- এইটাই ত আমার বুঝে আসেনা যে, আম-জনতা ক্রমাগত সে দুইদলে বিভক্ত হয়ে যাচ্ছে, ক্ষতির মাত্রাও উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে, এরপরেও জনতা কেন দলবাজি করে?
ক্ষমতা সব সময়ই দূর্নীতিগ্রস্ত; নিরঙ্কুশ ক্ষমতাও স্বভাবতঃই চরম দূর্নীতিগ্রস্ত। এইটা ক্ষমতা-সংক্রান্ত ডিসকোর্সে এইটা একটা বহুল পরিচিত অনুমান। বর্তমান ক্ষমতাসীন দল নিরঙ্কুশ ক্ষমতা চর্চা করছে। সুশীল সমাজ, মিডিয়া কোনটাই সরকারকে জওয়াবদিহী করতে বাধ্য করছে না, বরং পা-চেটে যাচ্ছে যা'র অসংখ্য উদাহরণের একটি হলো ৭১-টিভি'র দাড়ি+টুপি খোঁজার প্রতিবেদন। ভাবটা এমন যেন একজন দাড়ি+টুপিওয়ালাকে যৌনসন্ত্রাসী হিসেবে ধরতে পারলেই হাতেনাতে ধরে ফেলা ছাত্রলীগের সোনার ছেলেরা নিস্পাপ হয়ে যাবে। পুলিশ বাহিনীর ভূমিকাও একই রকম। প্রায় সকল সরকারী প্রতিষ্ঠান ক্রমাগতভাবে রাষ্ট্রের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে সরকারের পা-চাটার দলে নাম লিখাচ্ছে। এর পরিণতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে, এখন তা' দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে, হবেই। (সম্পাদিত)
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
চারটা সিসিটিভি ফুটেজ লোপাট হয়ে গেছে গায়েবী ঝড়ে। মাথা খুটেও আর লাভ হবে না।
পরদিন খেলার মাঠে উতসবের পতাকা ওড়াতে যেতে পারেন কিন্তু নারী হয়েও এটা নিয়ে টু শব্দটি করার ফুসরত তার নেই।
রাজসিক আচরণই বটে।
ঐ কমেন্টের লেজ অনেক লম্বা হয়ে গেছে তাই নতুন করে শুরু করি।
সারমর্ম তাহলে কি দাড়ালো?
১) সরকার স্বৈরাচারি।
২) ছাত্রলীগ তাঁদের লাঠিয়াল।
৩) আমলা তন্ত্র তাঁদের তল্পীবাহক।
৪) সুশীল সমাজ প্রতিবাদে অক্ষম বা দমনের শিকার।
তাহলে আমাদের এখন করনীয় কি?
দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া? আর তা না পারলে, গণ- আত্মহত্যা করা?
১) সরকার স্বৈরাচারি হতে পারে, কিন্তু কোন অস্বৈরাচারি বা জনগন-বান্ধব সরকার পাবার জন্য বর্তমান পরিস্থিতিতে আর কোন রেডি বিকল্প কি আছে?
২) সরকার কি ছাত্রলীগকে লাঠিয়াল হিসাবে নিয়োগ দিয়েছে নাকি এটা একটা বহুদিনের লিগেসি টেনে যাওয়ার মত কিছু একটা। আর এর সমাধানটাই বা কি?
৩) সব সরকারেই কিছু হ্যান্ড পিকড কুলাঙ্গার থাকে। তাই বলে গোটা আমলাতন্ত্রকে তল্পিবাহক বলাটা কি কোন সমাধান এনে দেবে?
৪) সুশীল সমাজের পক্ষে যে জাতির বিবেকের স্থান নেয়া সম্ভব হয় নাই, এরই বা সমাধান কি? এটা কি সরকারের একক দায়? তাঁদের কি কোনই দায় নাই?
আমি আসলে আশার আলো দেখতে চাচ্ছি। সমাধান চাচ্ছি।
আমি যেটা বুঝি, আমাদের এই অবক্ষয় একদিনে হয় নাই, হয়েছে ধাপে ধাপে দীর্ঘ্যদিনে। এটার সমাধান তাই হঠাৎ করে আসবে না। ধাপে ধাপে আসতে হবে। আমার মনেহয়, আমরা যদি খালি দোষারোপ করে নিজের দায়িত্ব পালন করেছি না ভেবে, ধাপে ধাপে কিভাবে সমাধান আসতে পারে, তা নিয়ে সবাই আলাপ করি, সেটা কি অনেক বেশী ফ্রুটফুল হবে।
আমি বুঝি, হতাশার অনেক কারন আছে। কিন্তু তার মধ্যে থেকে আশার স্থান গুলোতে ফোকাস করার কোন উপায় কি বের করা সম্ভব না?
আমি অতিতে বিভিন্ন জায়গায় বেশ কিছু লিখা দিয়েছিলাম অবস্থা উন্নয়নে কি কি অপশন আছে তা নিয়ে। এক মাথায় তো সব চিন্তা সম্ভব না। আরও কেউ কেউ যদি ঐরকম ইনক্রিমেন্টাল আইডিয়া দিতে থাকতো সেটা কি এক সময়ে আরও বেশী মানুষকে ভাবাতো না?
আজ একজন, কাল দুইজন এইভাবে করে কি অবস্থার উন্নতি হতে পারে না?
নাকি কেবলই হতাশার কথা বলে বলেই অবস্থা বদলানো যাবে?
আমার প্রশ্ন সেটাই.........
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
পারভেজ ভাই,
আগে আপনার সাথে একমতের বিষয় উল্লেখ করিঃ
আরেকটা বিষয় খোলাসা করার দরকার মনে করছি- এখন আওয়ামীলীগ শাসন ক্ষমতায় বলে বারবার ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী দুস্কর্মে অগ্রভাগে দেখতে পাচ্ছি। যদি সুদূর/অদূর ভবিষ্যতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ছাত্রলীগের স্থানে ছাত্রদলকে দেখা যাবে। কাজেই, টার্গেট বিশেষ কোন দল নয়, বরং শাসকদল আর তার লেজুড়গুলো।
সরকারের সমালোচনা করা আর হতাশা প্রকাশ করা অবশ্যই এক নয়। ভুল ধরতেই হবে, তাহলেই কেবল তা' শোধরানোর কথা ভাবা+করা যাবে।
আমার মতে, বর্তমানে চলমান ক্রমাবনতি থেকে বেড়িয়ে আসার শুরু হতে পারে দল/মত/পথ অনুযায়ী না-দেখে বাস্তবকে অনুধাবন করা, সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলার চর্চা। অপরাধী যে-ই হোক, তাকে প্রতিরোধ করা, আর আক্রান্ত যে-ই তার পাশে দাঁড়ানো। (সম্পাদিত)
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
পারভেজ ভাই,
আজকের প্রত্রিকায় দেখছেন পুলিশ কি কান্ড করেছে? একটা লিঙ্ক এড করে দিছি এই ব্লগের শেষে। আম-জনতার আশা-ভরসার স্থান নিঃশেষ প্রায়।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx