……..গত ২৫শে মে,২০১০ আমাদের আর.সি.সি-র ৩৭-তম ইনটেক ওরফে মিলেনিয়াম ব্যাচের দশ বছর পূর্তি হয়ে গেল। সে উপলক্ষে আমরা ১৯জন বন্ধু মিলে ধানমন্ডি কে.এফ.সি-তে মিলিত হয়েছিলাম। ঢাকায় আমরা ৩৩জন থাকি,সবার সময়-সুযোগ মিলে না,তাই ব্যস্ত দিনেও এতজন একসাথে হতে পেরে খুব ভালো লেগেছিল। এক্স-ক্যাডেট মিলিত হলে যা হয় আর কি,একদম কে.এফ.সি.-তে শব্দদূষণ মাত্রা ছাড়িয়েছিল। সেই ১০ বছর আগের স্মৃতিকাতরতা,একেকজনের কাহিনী এসব রোমন্থন করতে গিয়ে বেখেয়ালী হয়ে গিয়েছিলাম সবাই! সবাই কত বড় হয়ে গেছি! যারা ছিল তালপাতার সেপাই,তাদের সামনে ঝুলে মস্ত ভুঁড়ি! আর যারা ছিল মোটা,তারাই এখন স্লিম!সময় মানুষকে কত বদলে দেয়!……
………ফেসবুক বন্ধ হবার কারণে সব থেকে বেশি মিস করছি আমার কলেজমেটদের আর তাঁদের ট্যাগ করা ছবিগুলো। বন্ধুদের অনেকেই ফেসবুকে ঢূকতে পারছে না দেখে এটা শেয়ার করে লাভ হবে না। মনটাই খারাপ হয়ে গেল…..
………আমার এই ব্লগটা আমি ১০ ক্যাডেট কলেজের সকল মিলেনিয়াম ইনটেকের বন্ধুদেরকে উৎসর্গ করছি। দোস্তরা,আশা করি সবাই জীবনে অনেক সম্মান এবং সচ্ছলতা অর্জন করবি,আর বন্ধুর প্রয়োজনে পাশে দাঁড়াবি……..
সপ্তম শ্রেণীর সাতকাহন
সপ্তম শ্রেণীর সাতকাহন-পর্ব ২>>শিক্ষানবিশি কুচকাওয়াজ
………..প্রথম পানিসমেন্ট কে কবে খেয়েছিলেন মনে আছে কারও? আমার খুব মনে পড়ে।কলেজে ঢুকার তিন দিন পরই। এত গাধা ছিলাম যে,কিছুই বুঝতাম না কি করব না করব,না বুঝে ধুম ধাম কিছু একটা করে ফেলতাম,যা হত সিনিয়রদের হাসি বা বিরক্তির খোরাক কিংবা বন্ধুদের বিদ্রূপের বিষয়! তো আমার গাইড ছিলেন ‘সু-১৯২১ ভাই,আমার জন্য উনাকে অতটা ভুগতে হয়নি,যতটা ভুগেছেন আমার টেবিল গাইড ‘আ-১৯২৭’ ভাই। কেননা,আমি যে টেবিলে বসতাম,সেখানে বসতেন ১১শ-এর সব খাইস্টা সিনিয়ররা,আমার কোন ফল্ট ধরা পড়লেই ‘আ’ ভাইকে তাদের চার্জ। ”কি ‘আ’, জুনিয়রকে কিছু শিখাওনাই? নাকি আমার কাছ থেকে এসে শিখে যাবা? লাঞ্চের পর ৭ নাম্বার রুমে আসবা,ওকে?” অত কিছু বুঝতাম না,তবে এইটুক বুঝতাম ভাই এর খবর আছে। তবে আমি এতটাই ভ্যাবদা ছিলাম যে,এরপর যে ‘চেইন অব কমান্ড’ অনুসারে সকল তোপের অনলে আমাকে পুড়তে হবে,সেটা মনে আসত না। তো ঢুকার ৩ দিন পর ড্রায়িং রুমে নিয়ে গিয়ে ভাই আমার গালে কষা কয়েকটা চড় দিলেন,আহ সে কী ঝাঁঝ রে ভাই! বাপ-মা এর চড় খেয়ে অভ্যস্ত ছিলাম,কিন্তু বাইরের কেউ আমার গায়ে হাত তুলতে পারে সেটা তখনও বিশ্বাস হয়নি! যাই হোক,বুঝলাম সামনের দিনগুলি ‘সুন্দর’ কাটবে যদি আমি আমার জীনোম বদলে ‘চালাক’ না হতে পারি!……
. . .নিয়ম-কানুনের গজব নাজিল হল সবার উপর! মোস্ট ফল্টি ক্যাডেট হিসেবে ক্লাস এইটের ভাইদের কাছে কুখ্যাত হয়ে গেলাম ১ম সাত দিনেই। অনেকেই কিন্তু এই সাত দিনেও মার খায়নি! ক্লাস সেভেন আমরা,সূর্য কখন উঠে আর কখন অস্ত যায় তা বুঝি আজান শুনে! আর রুমে রুমলীডারভাই এর তান্ডব তো আছেই। তার নিয়ম কানুনের কিছু নমুনা শেয়ার করিঃ
১। রুমে ক্রসটকিং করা যাবে না। ক্রসটকিং মানে হল নিজের প্লেস থেকে অন্য সাইডের কারো সাথে কথা বলা যাবে না,উঠে গিয়ে কথা বলতে হবে।
২। রুমে জোরে জোরে হাঁটা যাবে না,নিচে যেন কোন শব্দ না যায়,আর কথা এমনভাবে বলতে হবে যে দুইজন কথা বললে তাদের কথা ৩য় জন যেন না শুনে!
৩। প্রতিদিন মাগ্রিবের নামাজ পড়ে এসে ৩মিনিটের মধ্যে রেডী হয়ে রুম থেকে বের হতে হবে। লাইটস অফের পর সবার বেডে থাকতে হবে,এমনকি নামাজও পড়া যাবে না।
৪। প্রতিদিন যে কোন সময় যে কারও প্লেস ইন্সপেকশন হবে,তাই সব কিছু যেন গোছানো থাকে!
৫। মশারি এমনভাবে টাঙ্গাতে হবে যে,মশারির ছাঁদ যেন টানটান থাকে,আর এমনভাবে গূঁজতে হবে যেন মশারির দেয়ালে সু ব্রাশ ছুড়ে মারলে সেটা আবার হাতে ফিরে আসে!
….এসবের অন্যথা হলে ভাই যে কী করবেন তা তার মুখের ভাষায় শোনাতে পারলে মজা হত!…
………৭দিন কোন মতে পার করে বাসায় ফিরলাম। ছুটিতে তো ভাবেই কাটালাম। সবাই এসে জিজ্ঞেস করে,কেমন লাগছে? বললাম,ভালোই,সুন্দর!
যাই হোক,ছুটি শেষে আসার দিন থেকেই শুরু হয়ে গেল আপডেটেড নিয়ম-কানুন। ক্লাস এইটের ভাইদের আগে থেকে নিষেধ করা ছিল,প্রথম ৭ দিনে জুনিয়রদের কিচ্ছু বলা যাবে না। অপেক্ষার প্রহর শেষ করতে পেরে তাদের মনে পাশবিক আনন্দ কাজ করছিল হয়ত! ডিনারের পর ৯নং রুমে লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম মনে আছে। এক পশলা ‘রুলস স্ট্রম’ হল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল,রুম ডিউটি ক্যাডেটশিপ! এটা হল,ক্যাডেট নং সিরিয়াললি প্রতিদিন একজন করে রুম ডিউটি ক্যাডেট থাকবে। যে কোন প্রয়োজনে অমুক রুমের কাউকে ডাকা হলে যা ৭ম শ্রেণীর কাউকে ডাকা হলে রুম ডি.কে. দৌড় দিবে। তো আমরা থাকতাম ১০ আর ১১ নং রুমে। আমরা তখনো ফুল ক্যাডেট না। তা ৮ম শ্রেণীর ভাইরা হাউস ডিউটি ক্যাডেটশপ পালন করতেন। শুনতাম ১১-১২শ এর ভাইরা চিল্লাচ্ছেন, ”হাউস ডিকে! হাউস ডিকে”,টের পেতাম ক্লাস এইটের কেউ দৌড় দিচ্ছে,খুশি হতাম না,কারণ সেই সিনিয়র যে কাজ পেত,তা এসে রুম ডি.কে-এর উপর ন্যস্ত করে ক্ষান্ত হত। রুম ডি.কে কাজ শেষ করে হাউস ডি.কে কে দিত,আর হাউস ডি.কে সেই সিনিয়রকে তা দিয়ে আসত! সেইরাম চেইন অব কমান্ড!
……কাজ বাড়লে কাজে ফাঁকি দেয়ার তরিকা খুঁজতে হয়,আমরাও বের করলাম। তা হল ইবাদত-বন্দেগী! হাসবেন না,সত্যিকার অর্থেই এটা একটা মোক্ষম ছুতা! রেস্ট টাইমে মসজিদে জোহরের নামাজ পড়তে গেলে কারো আসার নাম নেই। দেখা যেত,সবাই খুব মন দিয়ে নফল নামাজ পড়ছে! অথবা খুব সুর করে কোরান তেলাওয়াত করছে! নামাজ আর কোরান তেলাওয়াত শুধু করলেই যদি সওয়াব হত,তাহলে মনে হয় ইতোমধ্যে আমাদের বেহেশত কিছুটা নসিব হয়ে গেছে!….আরেকটা তরিকা ছিল টেইলর শপ! ভাইরা কাজ দিতেন,’ যাও এই শার্টের পকেট সেলাই করে আন,এই প্যান্ট লম্বা করে আন।’ এই কাজ পেলে আমরা খুশি হতাম,কেননা টেইলর শপ ছিল একটা ফ্রী জায়গা,যেখানে আড্ডা দেয়া যেত। অন্য দুই হাউস থেকেও আমাদের ক্লাসের ছেলেরা আসত। ডজিং মেরে রেস্ট টাইম শেষের আগে রুমে ফিরতাম। তবে আমার এই সুখ বেশিদিন থাকেনি। কেন থাকেনি পরে বলছি,আগে পানিশ্মেন্ট সংক্রান্ত কয়েকটা বিচ্ছিন্ন ঘটনার বর্ণনা দেইঃ
ক) আমার বন্ধু ‘ব-১৯৪৯’ অতি জেদী ও কনফিডেন্ট,সেই সেভেন থেকেই,তো মার খেয়ে রুমে ফিরলে কখনও ব্যথা পেয়েছে বুঝতে দিতনা। লাল লাল বড় বড় চোখ নিয়ে রাগে ফোঁস ফোঁস করতে করতে নিজের প্লেসের দিকে হাঁটা দিয়ে সোজা আলমারির দুই পাল্লার ফাঁকে ঢুকে পড়ত। তার হাতে থাকত টাওয়েল,সেটা মুখে চোখে চেপে ধরে কাঁদত। এক-দুই মিনিট কাঁদার পর পিছনে ফিরে দেখত,কেউ তাকে দেখছে কিনা! তারপর আবার শুরু করত তাঁর বিখ্যাত ‘চোরা-কান্না’
খ) ভাইদের রুমের সামনে দিয়ে গেলেই এ ডাকে,ও ডাকে। তাই আমাদের কেউ কেউ শান্তিতে টয়লেটও করতে পারত না। তো একদিন সকালে গেট আপের বেল দেয়ার ১০-১৫মিনিট আগে আমাদের মাতলা সাহেব-১৯৫৩ ঘুম থেকে উঠলেন। কিন্তু ওই যে ভয়,টয়লেটে যাওয়া যাবে না!যে যে যার যার কাজ করছিলাম, হঠাৎ তার চিৎকার, ”বয়েজ,কেউ কিছু মনে নিস না,সবই আল্লাহর গজব!” প্রথমে কিছুই বুঝলাম না,পরে তাকিয়ে দেখলাম ওর পায়জামার সামনের দিক ভিজে যাচ্ছে আর ওর পায়ের নিচে ঝরঝর করে পানি জমছে! হায়রে পোড়াকপাইল্লা রে……তবে এতে আমরা সবাই হাসলেও মেজাজ খারাপ হল ‘আ-১৯৫২’ এর,কেননা আগের দিনই সে প্লেসটা স্যাভলন দিয়ে পরিস্কার করেছে।স্যাভলনের গন্ধে ঝাঁঝ আছে,কিন্তু বুঝতেই পারছেন,এই বিশেষ তরলের ঝাঁঝ স্যাভলনের থেকেও বেশি!…….
গ) একদিন ‘মে-১৯৫৬’ কি এক ফল্টে অনেক মার খেয়ে রুমে আসল। এসে চিৎকার করে ভাব নিচ্ছে সে,” আরে ধুর! এইসব মার দিয়ে কি আর আমার পাছা ব্যথা করতে পারবে নাকি! এগুলা আমার গায়ে লাগে না!” তো সে দেখেনি,কখন তার পিছে দুইজন ক্লাস এইটের ভাইও আমাদের রুমে এসছে।ফলাফল,তাকে আবারো ডাকা হল,এবং ফিরে আসার পর তার মুখে কোন কথা নেই,চোখ লাল…..
ঘ) আমাদের ‘ফ’ কলেজের খাওয়া দাওয়ার সাথে কোনভাবেই খাপ খাওয়াতে পারছিল না। প্রায় প্রতিদিনই দেখা যেত,একটা ছেলে মিল চলাকালে হঠাৎ করে উঠে ডাইনিং এর বাইরে দৌড় দিচ্ছে বেসিনের দিকে আর ওর টেবিল লীডার ভাই যাচ্ছেন ডিউটি মাস্টারের কাছে রিপোর্ট করতে! কাহাতক আর এই জ্বালা সহ্য করবেন তিনি! তো তিনি হুমকি দিলেন,এরপর যদি ‘ফ’ এর বমি আসে এবং বমি করে,তাহলে সেই বমিই আবার খেতে হবে! এই হুমকি খেয়ে ‘ফ’ কিছুতেই খেত না,খাওয়া নিয়ে ধানাইপানাই করত। এরজন্যেও সে মার খেল! তো একদিন,তার বমি আসল কিন্তু বার বার সে বমি না করে আবার গিলে ফেলছিল,পরে কোনভাবে সে কন্ট্রোল না করতে পেরে আস্তে আস্তে মুখে হাত দিয়ে একটু একটু করে বমি করে পকেটে ভরতে থাকল! কেউ টের পেল না সে কী করছে! লাঞ্চ শেষে হাউসে ফিরার পর আমরা আবিষ্কার করলাম,তার প্যান্টের কালার ও বদ খুশবু দেখে!….
ঙ) ফল্ট করেও মার কিভাবে কম খাওয়া যায় সেটা নিয়ে সবারই কম বেশি চিন্তা থাকত। তেমনই এক উপায় বের করল,আমাদের ‘হা-১৯৫৯’। তাকে যখন মার খেতে ডাকা হত,যাওয়ার আগে সে তার সকল আন্ডি পরে যেত। অধিকাংশ দিনই সে মার খেয়ে খুশিমনে ফিরত,ভাব নিত,”ধুরু,ব্যথা লাগেনাই,সব বাড়ি জাইঙ্গার উপর দিয়া গ্যাছে।” একদিন সে কাঁদতে কাঁদতে ফিরল। জিজ্ঞেস করলাম,কাহিনী কি? বলে,”ভাই পাছায় মারেনাই,তার একটু নিচে মারছে,সব বাড়ি চামড়ায় পড়ছে রে…..”
….আমি ছিলাম গাধার গাধা। মারও বেশি খেতাম,ফল্টও বেশি করতাম,আর আমাকে ছাড়া মনে হয় ভাইদেরও শান্তি হত না মেরে! তো বেশি বেশি ফল্ট করার কারণে ১৫দিন যেতে না যেতেই আমার উপর আইন জারি হল,পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত আমাকে সেই টার্ম পুরাটা রুম ডিউটি ক্যাডেট থাকতে হবে! এতে আমার আরাম হারাম হল আর আমার রুমমেটদের আরাম হালাল হল! রুম ডিউটি ক্যাডেটের প্রধান কাজ মূলত,সকালে কিংবা দুপুরে ভাই দের ঘুম থেকে তুলে দেয়া। তো দেখা যেত,প্রেপ থেকে এসেই বা লাঞ্চ করে এসেই সিনিয়ররা ডাকছেন। একেকজনের কমান্ড,’আছিব,সকালে গেট আপের ১০ মিনিট আগে ডেকে দিবা।’ ‘আছিব,রাত ৩টার পর থেকে ১৫ মিনিট পর পর ডাকতে থাকবা।’ ‘পিন্টু,কালকে যদি ফজরের আজানের সময় আমারে না ডাকছস,ধরে হাউস থেকে ছুঁড়ে মারমু!’ তো দেখা যেত,প্রতিদিন রুমের ৯জনের ৯টা আলার্ম ঘড়ি নিয়ে ঘুমাতে যাচ্ছি,উঠছি রাত ২-২ঃ৩০ এ,হাতে থাকত টাইমলিস্ট,একেক্টা সিনিয়রকে ডেকে আসতাম,মাঝখানে যে কয়েক মিনিট পেতাম,তাতে খানিকটা ঘুমাতাম। আর রেস্ট টাইমে তো ঘুমই হত না! এভাবে এমন সেন্সিটিভ স্লিপার হয়ে গেলাম,যে রুমের মধ্যে কেউ পা টিপে হাঁটলেও আমার ঘুম ভেঙ্গে যেত। খাওয়া-দাওয়া আর ঘুমের অনিয়মের জন্য ওই টার্মে আমার ওজন ৪৩ কেজি থেকে ৩৪ কেজিতে নেমে গিয়েছিল! রাতে যখন রুম থেকে বের হতাম,শিয়ালের ডাকে ভূতের ভয় পেতাম,ভাইদের কাছে জ্বীন-প্রেতাত্মার গল্প শুনে ভয় পেতাম,কী বাচ্চাটাই না ছিলাম!
নভিসেস প্যারেডে ভালো পার্ফর্মেন্সের পর আমার উপর থেকে কন্টিনিউয়াস রুম ডিকেশিপের খড়গ তুলে নেয়া হল। তাতে কি হবে,ফুল ক্যাডেট হবার বদৌলতে হাউস ডিকেশীপ নাজিল হল! অনেক অনেক কিছু মনে পড়ে,কোন স্মৃতি খুব স্পষ্ট আবার কোনটা আবছা। অনেক বন্ধুর নানা কাহিনী মনে পড়ে।বিস্তারিত লিখতে ইচ্ছে করে।জানি না পারব কিনা……
যাই হোক পাঙ্গা মানে তো সবাই জানেন? এটা নাকি বি এম এ টার্ম? কি জানি,যাই হোক,রগড়া মানে হল,একই সাথে চার্জ আর ফিজিক্যাল পানিশ্মেন্ট। আমাদের কলেজে মাংকীসিটিং চালু ছিল,এটা হল,রুমে মশারি বাঁধার জন্য তাঁর বাধা থাকত,সে তারে আমাদের ঝুলতে হত চেয়ারসীটিং স্টাইলে,আর নিচে ভাইরা কম্পাস ধরত,পা ছেড়ে দিলেই কম্পাসের খোঁচা! আরেকটা ছিল,মুরগী পজিশন,যেটাতে হাত নিয়ে হিপের নিচ দিয়ে বের করে দুই কান ধরতে হত! জীবনে কোন মুরগীকে এই পজিশনে দেখিনি,তারপরও যে কেন এর নাম মুরগী পজিশন হল,আল্লাহই জানেন! আর প্যাঁদানি তো বুঝেনই,পশ্চাতদেশের সাথে দন্ডাকার কাষ্ঠখণ্ড অথবা প্লাস্টিক অথবা ধাতবখন্ডের ইমপ্যাক্ট লোডিংকেই প্যাঁদানি বলে!
পানিশমেন্ট এর সাথে আরও অনেক ফ্যাক্টর জড়িত! মূলত ক্যাডেট কলেজের সকল কাজের সাথেই এটা জড়িত। তাই পাঙ্গা,রগড়া নিয়ে লিখতে গেলে একাডেমিক,কালচারাল,ডিসিপ্লিন এসব ব্যাপারও চলে আসে। তাই এই পর্বে শেষ করতে পারছি না,বেশি বড় করলে অনেকেই বিরক্ত হন।আশা করি পরের পর্বে পাঙ্গা উপাখ্যান শেষ করতে পারব।……
১ম?? :grr: :grr:
আশা ও ইচ্ছে দুইটাই পূরণ হবার জন্য আপনাকে সাধুবাদ জানাচ্ছি B-) :grr:
১ম 😀
আমিতো আগে মোটা ছিলাম, এখন একটা গণ্ডার সাইজ হয়ে গেছি। আমার যে কি হবে :((
হইলো না ~x( ~x(
:)) বস,লেডীস ফার্স্ট 😉
........সাবাশ বস, চালাইয়া যান। গন্ডারেরও বস আছে, হাতি। দেখেন একটু টেরাই চালাইয়া। 😛
হাতির ব্যাসার্ধ অর্জন সম্ভব হতে পারে, উচ্চতা না।
ইয়ে বস,গণ্ডার বিলুপ্ত হলে অন্তত আপনাকে দেখিয়ে বলা যাবে,গন্ডার দেখতে অনেকটা মাইনুল ভাই এর মত :grr: :grr:
ভাই,প্লিজ মাইন্ড কইরেন না :hug: :frontroll: :frontroll: :frontroll: :frontroll: :frontroll: :frontroll:
লেখাটা পড়ে হাজার হাজার স্মৃতি ভীড় করল।কেন জানি অল্প একটু অশ্রু দেখা দিয়েই হারিয়ে গেল চোখের কোনায়।১৯৯৭ সালে ১২ বছর বয়েসি সেই কিশোরটাকে হারিয়ে ফেলার ব্যথাতেই সম্ভবত!
লেখার প্রশংসা আর আলাদা করে করলাম না।আপাতত স্মৃতিকাতরতায় থম মেরে আছি-সেটা কেটে গেলে দুলাইন লিখে যাব।
কেমুন কাটতিছে বস?দেশব্যপী নাকি জ্ঞনের হারিকেন বিতরণ করতিছেন?করেন করেন বস,আপনাদের দিয়েই হবে,ফাঁকে এসে লেখাটা পড়ার জন্য ৩কেজি ধইন্যাপাতা 😀 :boss:
*জ্ঞান :bash:
চুপচাপ টুপটাপ স্মৃতি ঝরে পড়ে। ভালো হচ্ছে পিন্টু ভাই। :clap:
অনটপিকঃ ভাইয়া, কমা বা দাঁড়ির পর একটা স্পেস দিলে পড়তে আরাম লাগবে। :-B
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
আসল কথাই ভুলে গিয়েছিলাম। কলেজের প্রথম পাঙ্গা খাইছিলাম দ্বিতীয় দিন। ক্লাশ টুয়েলভের রাকিব ভাই( B-) ) উনার নামের সাথে নামের মিল আছে দেখে খুশি হয়ে পাঙ্গাইছিলেন ~x( 😐 ।
আবার প্রথম ঝাড়ি খাইছিলাম কলেজে ঢুকার দ্বিতীয় দিন ব্রেকফাষ্টের পরে। টেবিলে তৎকালীন ক্লাশ টেনের নাজমুল জিজ্ঞেস করলেন, হাউ আর ইউ রকিব? আমিও সমান তালে ইংরেজিতে জবাব দিলাম, আই আম ফাইন; থ্যাঙ্কু। হাউ আর ইউ ডুয়িং? উনি দেখি আমার প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে আমার গাইডের দিকে রক্তচক্ষুতে তাকিয়ে আছেন। :no: :no:
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
আমাদের বদর হাউসের রাকিব তো্মারে পাঙ্গাইছিল ? 🙂
😕 প্রথম পাঙ্গানি দিয়েছিলেন রাকিব ভাই ই। ~x( :no:
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
কিরে,স্মৃতিবিভ্রাট নাকি? =))
হুম,স্পেস দিতে হবে,এডিট করি তাইলে 🙂
ভালো হচ্ছে কইয়া উৎসাহ দিলি ;;)
আল্লাহর অশেষ শুকরিয়া, আমাদের ইমিডিয়েট সিনিয়র ভাইয়েরা আমাদের কখনই এতোটা জ্বালান নাই। মাঝে মধ্যে হাল্কার ওপরে পানিশমেন্ট দিতেন, কিন্তু মার ধোর করেছেন বলে মনে পড়ে না। খাওয়া বা ঘুম নিয়া কখনো ঝামেলা করেছেন বলেও মনে পড়ে না। তবে কিছু কিছু ভাই ছিলেন ফল্ট করে ধরা খাইলে, পানিশমেন্টের বদলে বিশাল ওয়াজ করতেন। সে ওয়াজ পানিশমেন্টের চাইতেও ভয়াবহ ব্যাপার ছিলো।
বাহ,আপনাদের ঝড় দেখি পাছার উপর দিয়ে না,মাথার উপর দিয়ে যাইত!!মানে কানের উপর দিয়ে যাইত আর কি 😛 :))
ভাই...সিনিয়র ক্যাডেট কলেজগুলোতে কেন জানি এটা ট্রেডিশন ছিল,আমাদের পরের দুই ব্যাচ পর্যন্ত বিটিং চালু ছিল,এরপর বন্ধ হয়ে গেছে।এখন কিচ্ছু হয় না,কিন্তু ভাই আমরা এখন ফিল করি যে,কিছু কিছু বেয়ারা ক্যাডেট আছে,যাদের জন্য প্যাঁদানির দরকার আছে,এমনিতেই কলেজে অনেক ঘটনা ঘটে......বুঝেনই তো 🙁
বেয়ারা ক্যাডেটদের জন্যে পানিশমেন্ট ঠিক আছে, কিন্তু মার ধোর করা একেবারেই আমার অপছন্দে্র কাজ।
আমিও পছন্দ করিনা বস......কি আর করা... 😕
ক্যাডেট কলেজে পানিশমেন্ট থাকাটা জরুরী, কিন্তু গায়ে হাত তোলা, মার-ধর করা, বেল্ট দিয়ে পিটানো- এই জিনিসগুলো আমি কখনই সমর্থন করি না। তোমার লেখাটা পড়ে এজন্য মন খারাপ হয়ে গেল।
আল্লাহ ভাই,বিশ্বাস করেন,আরও ডিটেইলস লিখতে চাচ্ছিলাম,কি কি দিয়ে ক্যামনে প্যাঁদানি খাইছি,।কিন্তু লিখতে পারিনি যাস্ট এজন্য যে,অনেকের ভালো নাও লাগতে পারে......স্মৃতিরোমন্থন করতে গিয়ে অনেক কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারিনা,...কষ্ট লাগে।
মন খারাপ কইরেন না বস......মন খারাপ করানোর জন্য লিখিনি,আপনাদের মন খারাপ হলে আমারো ভালো লাগবে না :no: :((
লেখা ভাল লাগল।
অনেক স্মৃতি মনে পড়ে গেল। 🙁
ভাই স্মৃতি মনে পড়া তো ভালা,আন্নের মুখ গুমড়া ক্যালা??দাঁত ক্যালাইয়া হাসুইন 😀 😀
ভাই অনেক কিছু মনে করায়া দিলেন ।তবে আমাদের রুম লিডারের কারনে আমরা অনেক কিছুতে ছাড় পাইছি ।
হায়রে রুম লীডার!কেউ হয় অবতার,কেউ বা অসুর :bash:
মানুষেরই মাঝে স্বর্গ নরক মানুষেতে সুরাসুর।
অসাধারণ লিখসেন ভাই,এই অদ্ভুত নিয়মগুলা ভুইলাই গেসিলাম,আবার মনে পইরা গেল,আগে কষ্ট পাইতাম,আর এখন মজা পাই :khekz:
সুরি,একটু মিসটেক হইসে কোটেশন দিতে
amader room leader vai ei bisoye bolto....'moshari re keu nouka banaba na.....just tan-tan.....
অই,তগো রুম লীডার জানি কে ছিল??বাশার না মুনতাসির?ডাকলাম কিন্তু ওদের :grr: :grr:
কি রে বেয়াদাব,তুই এইসব নিয়ম ভুইলা গেছস?মাইর কম খাইলে এইরামই হয় x-(
তর গাইডরে আমার সাথে দেখা করতে বলবি।তরে কিছু কইলাম না কারণ 'চেইন অফ কমান্ড' আছে না একটা? 😛 :grr:
vai asha kori porer porbe 'gono" mair niya kicu likhben...."cadet no serially 2 jn kore lunch r por 11 no room e asba....smritikator hoiya gelam.....
কিরে নায়ক কাম পরিচালক কাম ক্যামেরাম্যান,ক্যামন আছিস রে?এত ইনএ্যাকটিভ ক্যালা?? 😡
দিমু দিমু 😀
khaice!!!eto kicu..... 🙁 vai ank jhamelai aci.....korean fapor !!!..
apnareo to ankdin khuje paitecilam na.......edaning comment o thikmoto korte pri na....apnar lekha bole miss korlam na.... 🙂
কমেন্ট ফেলাইয়া গেলাম :grr: :grr:
তরে কমেন্ট 'ফালাইতে' কইছে ক্যাডা?!! 😛
অফটপিকঃ হয়ার ইজ আওয়ার কোকো'স স্পাউজ?লং টাইম নো সি 🙁
আমাদের রুমের নেট কানেকশনে একটু ঝামেলা আছে।আলসেমি করে আপুর কাছে যাওয়া হয় না।আমি ওরে কইয়া আসছি আজকে যাওয়ার জন্য,কিন্তু সম্ভাবনা সুদূর পরাহত।ওর নাম যে কোক্তি এইটা কি জানেন?
না জানার কি আছে =)) =))
সম্ভাবনা পরাহত কিল্লাই 🙁
ভাই, আপনের লেখার দিন দিন আরো উন্নতি হইতাসে দেইখা খুশী হইলাম 😉 :boss:
অনেক কিছুই এখন হারায়ে যাচ্ছে কলেজগুলা থেকে 🙁 বিটিং এর প্রয়োজন কলেজে থাকতেই বুচ্ছিলাম, তাও ক্লাস ৮ এ উঠার সাথে সাথেই । তখনই প্রথম বুঝলাম,
প্রয়োজন কারো বাধন মানে না
প্রয়োজন ছাড়া ট্রেডিশন তৈরী হয় না
সেটা ভালোই হোক কিংবা খারাপ :grr:
"Never think that you’re not supposed to be there. Cause you wouldn’t be there if you wasn’t supposed to be there."
- A Concerto Is a Conversation
সহমত অ্যাশ । :thumbup:
জীবনের সবচেয়ে মজার স্মৃতি গুলা মনে হয় বিটিং আর পানিশমেন্ট এর । ব্লাক নাইট খাইতে ইচ্ছা করে ।
অ্যাশাব আর কত বইসা প্যাশাব করবি রে?তাড়াতাড়ি লিখা দে,আমার লিখা ভালো হইলে কি আর তর প্যাট ভরব রে উল্লুক =)) =))
আর সোশাল ইন্সেক্ট (সমাজের কীট) মশা মিয়া,ব্ল্যাক নাইট কি খুইল্লা ক দেহি :-B
ব্লাক নাইট হইলো কাল রাত্রি । যে রাতে সিনিয়র জুনিয়রদের আশীর্বাদ করে সেই রাত্রি । আহা আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম ।
তোরে আমার আশিব্বাদ দিতে মনে চায় মশা.......... :grr: :grr: :grr:
কাইল্কাই আমার লগে দেখা করবি x-( x-( x-(
ছি ছি,মামুন তরা রাত বিরাতে কি করতি রে জুনিয়রগো লগে! :grr: ;))
ফাইট দিতাম :grr: :grr:
আর আমাগোরে পিসিসি ভাবার কোন কারন নাইক্কা........ x-( x-(
ছি ছি ছি ছি আছিব ভাই যার মনে যা ফাল পারে তা । সময় আছে ভালো হন । ভালো হইতে পয়সা লাগেনা । :grr:
🙁 🙁 🙁 🙁
তোর দেখি ব্যাপক ফিলিংস!!
এত কিছু মনে আছে???? 😮
তুই এসব ভুলে গেছস??? x-( 😕
খুবই টিপিক্যাল নস্টালজিক ক্যাডেটীয় টাইপ লেখা। মাঝে মাঝে বহুদিন ভুলেই যাই যে এটা ক্যাডেটদের স্মৃতিচারণের উদ্দেশ্যে খোলা হইছিল। ক্যাডেটীয় লেখা খুব ভাল পাই। মাইরধোরের কথা কলেজ এর ১১ তে উঠার পর থেকেই ভাল লাগে। আমার অবশ্য কম্বাইন্ড পানিশমেন্ট ছাড়া পানিশমেন্ট খাবার কথা মনে পড়ছে না। আর সারা কলেজ লাইফে মাইর খাই নাই । তাই এই টাইপের স্মৃতি রোমন্থন করতে পারি না। দ
ধন্যবাদ আছিব কলেজের কাহিনী লেখার জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকেও ভাই :boss:
কলেজের কাহিনী ছাড়া আমার দ্বারা আর কিছু লিখা হবে না বস।স্মৃতির উপর মাল-মসলা ঢেলে পরিবেশন করতেই আমার ভালো লাগে।দোয়া করবেন 🙂
বস :boss: :boss: :clap: :clap: :thumbup: :thumbup: (সম্পাদিত) (সম্পাদিত)
থ্যাংকু থ্যাংকু ;;)
ভাই থাক আর বিনয়ের অবতার অচো সাজার দরকার নাইক্কা :grr: :grr:
আহারে পিন্টু বাবু 🙁 🙁
আমার ওরে নাকি একবার এমন ভাবে মারছে পর্দা টাঙানোর মোটা লাঠি ভেঙ্গে গেছে,বেচারা নাকি পুরো এক সপ্তাহ ঠিক করে বসতে পারে নাই :(( :((
আপনার ওরে মাইর কমই দিছে x-(
আপনার 'ও' তো,তাই খুব কষ্ট না?আইছে,সেই বাড়ি খাইয়া কি তর লগে ঠিকমত বইসা কথা কইতে পারে না 'উনি'? 😛 :grr:
তোর কাছে এইটা কম মাইর!! x-( x-( x-(
সেই বাড়ির সময় যদি আমি থাকতাম!!!কত সেবা যত্ন করতাম!! O:-) O:-)
পুরা সিরাম :thumbup: :thumbup: