ডিস্ক্লেইমারঃ এটা একটা হাবিজাবি প্যাচালের পোষ্ট। দেখলাম আরো দুয়েকজনে ‘ইরাম’ পুষ্ট দিছে। তাই আমিও…… ;;;
এই কোয়ার্টারে একটা ক্লাসে যাচ্ছি- ‘উন্নয়নের সমাজবিজ্ঞান’। শুরু হয়েছে পুঁজিবাদ কি, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে পুঁজিবাদী সমাজের রূপ কি রকম, পুঁজিবাদী সমাজে কি একই সাথে অন্যান্য সামাজিক ব্যবস্থাও (আসলে উতপাদন ব্যবস্থা) সমান্তরালে চলতে পারে কিনা, পারলে তা দেখতে কেমন- ইত্যাদি বিষয়ের আলোচনা দিয়ে। এরপর পড়া এগিয়েছে পুঁজিবাদের উদ্ভবের প্রেক্ষাপট (এডাম স্মিথ, মার্ক্স ও ওয়েবার), ইউরোপে এবং এর বাইরে পুঁজির বিকাশে। এখান থেকেই চলে এসেছে তৃতীয় বিশ্বে পুঁজিবাদের বিকাশ যা সাধারণভাবে ‘উন্নয়ন’ নামে পরিচিত।
উন্নয়ন কিভাবে হয় বা হওয়া উচিত এই বিষয়ে এখন পর্যন্ত ‘হেজেমনিক জ্ঞান’ (নিওলিবারেলিজম) যেসব তত্ত্ব প্রদান করে তা’র বেশিরভাগই আসলে অসম্পূর্ণ বা কল্পিত। যেমন বলা হয় যে, তৃতীয় বিশ্বে উন্নয়ন আসবে উন্নত বিশ্ব থেকে প্রযুক্তি+পুঁজির ডিফিউশনের মাধ্যমে। ইদানিং বলা হয় যে, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের মধ্যমে উন্নয়ন আসবে। বাজার মুক্ত করার (মানে রাষ্ট্রের অধীনতা থেকে) ব্যাপারে ত তাদের অবস্থান মৌলবাদী। এরকম আরো নানান ‘ছবক’ আছে উন্নয়ণের নসিহতমানায়। কিন্তু আসল কথা যেটা তারা বলেনা তা হল, এইসব মুক্তবাজার+প্রযুক্তি+দক্ষ প্রতিষ্ঠান উন্নয়নের কারণ নয়, ফলাফল। পশ্চিমাদের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায়ই এসেছে এইসব অর্জন, উন্নত হওয়ার আগে বা শুরুতে নয়। যখন তারা উন্নয়নশীল ছিল, তখন এইসব মুক্তিবাজার, প্রযুক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনটাই তাদেরও ছিলো না। তাইলে এখন ক্যান আমাদের বলে এইসব আগে অর্জন করার মাধ্যমে উন্নয়ন পরিকল্পনা করার?
আর দেশপ্রেম কি? উন্নয়নে এর ভূমিকাই বা কি? দেশপ্রেমের কথা বলে উন্নয়নের বাজেট প্রনয়ন করা হয় যেখানে রাষ্ট্রের জনসাধারণের প্রয়োজনের উপরে ব্যক্তি-মালিকানার অধীনে শিল্পায়নের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়, সহজ শর্তে ঋন, শুল্ক+কর-মওকুফ, রাষ্ট্রীয় খরচে অবকাঠামো নির্মাণ ইত্যাদির মাধ্যমে। কিন্তু ব্যক্তি-মালিকানার শিল্প ত দেশপ্রেমের নীতিতে চলে না, চলে ব্যক্তিগত মুনাফা অর্জনের নীতিতে। তারমানে হচ্ছে, জাতীয় উন্নয়নের স্বার্থের ধোঁয়া তুলে রাষ্ট্রের সহযোগীতা পেলেও ব্যক্তি-মালিকানার শিল্প কখনোই রাষ্ট্রের বৃহত্তর জন-কল্যাণের জন্য চলে না। তবে কিছু কিছু ব্যক্তি-মালিকানার শিল্পে জনকল্যাণকর কিছু সুবিধা ত তৈরী হয়ই। কিন্তু সেগুলো আসলে বাই-প্রোডাক্ট, তা’কে অবশ্যম্ভাবী ধরে নেওয়ার কোন ভিত্তি নেই। অন্যদিকে ব্যক্তি-মালিকানার শিল্প ছাড়া ত আপাততঃ কোন উপায়ও দেখা যায় না। কারণ, তৃতীয় বিশ্বের রাষ্ট্র এমনিতেই কাঠামোগতভাবে দূর্বল, তার উপর আছে পুঁজি+প্রযুক্তি+অভিজ্ঞতার স্বল্পতা। একারণে উন্নত বিশ্বের পুঁজির সাথে নিজেদের পুঁজির গাটছাড়াটা বাঁধতেই হয়। কিন্তু সেটা নিঃশর্ত নয় কোনমতেই। শর্তগুলো যদি দেশীয় স্বার্থের পরিপন্থী হয় তাহলে উন্নয়নের বদলে অবশ্যম্ভাবীরূপেই আসে অধীনতা যা এখন পর্যন্ত তৃতীয় বিশ্বের দুটো (কোরিয়া আর তাইওয়ান) ছাড়া আর সব দেশের ক্ষেত্রেই ঘটেছে।
কি লিখতে চাই আর কি লিখছি এই নিয়ে বারবার গুলায়ে ফেলছি। উন্নয়ণ নিয়ে লিখার আছে অনেক কিছুই, লিখতে চাইও। কিন্তু ইদানিং একদম সময় করে উঠতে পারছিনা। একটা বিষয় পড়ার পর (আসলে পড়া+আলোচনা) মনে হয় সেটা লিখে ফেলি। কিন্তু পড়া শেষ হওয়ার সাথে সাথেই আরেকটা ঘাড়ে চাপে। তখন ঐটা বেশি গুরুত্বপুর্ণ মনে হয়।- এইভাবে যখন ১৯শতকে চিলির সিভিল ওয়ার পড়ছিলাম, যা চিলির উন্নয়ণ-ভাগ্য নির্ধারণ করে দিয়েছে, মনে হয়েছিল ঐটা লিখে ফেলি। কিন্তু পরের সপ্তাহেই পড়লাম উন্নত বিশ্বের উন্নয়নশীলতার যুগে তাদের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও শিল্প-বানিজ্যনীতির ইতিহাস যা আমাদেরকে বলা গল্পের ঠিক উল্টো। এর পরের সপ্তাহে আবার পড়লাম কোরিয়া কিভাবে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপণার মাধ্যমে উন্নত হয়েছে। কিন্তু তারপরেই আজ পড়লাম দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ভারত কেন কোরিয়ার মত প্রায় একই রকম অবস্থায় থেকেও উন্নত হতে ব্যর্থ হল। সামনে পড়বো কোরিয়া+তাইওয়ানের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপণায় উন্নয়ণের আরো কিছু বিশ্লেষণ।
যতই পড়ছি, ততোই নিজেকে একটা বিরাট গাধা মনে হচ্ছে। উন্নয়ণের নামে এতদিন যা যা ভাসা ভাসা পড়ে এসেছি, তা যে কতোটা ভূল ছিলো সেটা মনে করলে আসলেই খুব বোকা বোকা লাগে। তবে একটা বিষয় ভেবে ভালো লাগে যে, আমাদের রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক পরাধীনতার সুযোগ নিয়ে যেই ‘খবিস’ (আসলে একদল) এই মৌলবাদী ধারণাগুলোর আবাদ করে চলেছে উন্নয়ণ-বিষয়ক আমাদের অবুঝ মনে, তাকে হালকা চিনে নিতে পারছি। আরেকটু প্রস্তুতি নিয়া নেই, তারপর তার আসল রূপটা দেখা+দেখানো দুটোই হবে :grr: ।
😀 মাস্ফ্যু ফার্স্ট হইছে
অভিনন্দন। :clap:
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
যতই পড়ছি, ততোই নিজেকে একটা বিরাট গাধা মনে হচ্ছে
আমিও ইরাম গাধা হপো :((
তোর আর হওয়া বাকি আছে নাকি... 😀
=)) =))
অপেক্ষায় রইলাম।
হুম। বেশিদিন অপেক্ষা করা লাগবো না, মাত্র দুই সপ্তাহের মতো 😀
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
কঠঠিন পোস্ট। মাথার উপর দিয়া গেল।
ইরামই ত হওয়ার কথা। :grr:
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
অপেক্ষাতে থাকলাম বস .........
দোওয়া রাইখো 🙂
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
কিমুন য্যান লাগলো...
ইন্টিনার উফর দিয়া গ্যালো মুনে হইতাচে...
যাউক্কা... ভালা লিখচেন...
😀
সেটাই :grr:
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
শেষ প্যারাটা বুঝছি, আগের প্যারাগুলা আবার পড়া শুরু করতেছি :-B
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
ছুডুভাই,
তোমার মাথায় এত্তো বুদ্ধি!!
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
পূর্বকথা ভাল হয়েছে। মূল লেখা পড়ার জন্য অপেক্ষা করছি।
বিষয়টা যেমন ইন্টারেস্টিং ঠিক তেমনি প্রয়োজনীয়। তাই এ নিয়ে জানার আগ্রহ আছে।
আতিউর রহমানদের "Bangladesh Institute of Development Studies" সম্পর্কেও জানতে চাই। ওরা কি ধরণের গবেষণা করে, সেগুলো আসলেই যুগোপযোগী এবং দেশের জন্য ভাল কি-না এইসব আর কি।
ভারতের বিষয়টা দেখার পর এ নিয়ে আরও জানতে ইচ্ছা করছে। আসলে প্রতিবেশী দেশ হওয়া সত্ত্বেও ভারত ঠিক কতটা উন্নত এবং তাদের উন্নতি কোন সেক্টরে কতটা সে বিষয়ে আমাদের স্পষ্ট কোন ধারণা নেই। উন্নত দেশের কাতারে যেতে না পারলেও অনেক দিক দিয়েই তো ভারত বেশ উন্নতি করে ফেলেছে মনে হয়।
কোরিয়া নিয়ে লিখেন। কিন্তু এরপর অনুরোধ করব কিউবা নিয়েও কিছু লিখতে। আম্রিকার দোড়গোড়ায় বসে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব ঘটানোর পর কিউবার কতটা উন্নতি হয়েছে? বুর্জোয়া বিশ্বের সাথে সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর তারা কি সম্পূর্ণ নিজেদের পলিসি ও সম্পদ দিয়ে যথেষ্ট উন্নতি করতে পেরেছে?
আর অতি অবশ্যই আলোচনায় যেন ভিয়েতনাম থাকে।
উন্নয়ণের সাধারণ মাপকাঠি হচ্ছে জাতীয় আয়, ঐখানে ভারত এখনো কিন্তু কোরিয়া-তাইওয়ানের থেকে অ-নে-ক পেছনে।
কিউবা/ভিয়েতনামকে উন্নত দেশের কাতারে ফেলা হয়না বলে এদের আলোচনাটা ঐভাবে আসে না। উন্নয়ণ-শিক্ষার (Development Studies) এর আলোচনায় ঘুরে ফিরে কোরিয়া আর তাইওয়ানই শুধু আসে, কারণ ওরাই উন্নয়ণশীল থেকে উন্নত দেশে যাওয়ার দুইমাত্র উদাহরণ। আর উন্নত হওয়ার প্রায় সব শর্ত থাকা সত্বেও কেন ব্যর্থ সেই উদাহরণ হিসেবে আসে ভারত আর ব্রাজিল।-
দেখা যাক, ক্লাসগুলো শেষ হলে কি বুঝে আসে। তারপর লিখা যাবে।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
মাহমুদ ভাই আপনার কাছে কয়েকটা প্রশ্ন আছে।
০১।
মাহমুদ ভাই, জাতীয় আয় কে কি সত্যিকার অর্থে উন্নয়ন পরিমাপকের সূচক হিসেবে ধরা যায়??
০২।
আর মাহমুদ আরেকটা প্রশ্ন, এখন যারা উন্নত দেশ মানে নিওলিবারেলিজমের পতকাবাহী তারা কি তাদের উত্তানকালে মার্কেন্টালিজমের ব্যবহার করে নাই?? আর এইটার সাথে সম্পূরক প্রশ্ন- পুঁজির অবাধ চলাচল কি আমাদের জন্য লাভজনক?
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
ভালো লাগল যে প্রশ্নগুলো তুলতে পেরেছো। আমাদের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ত দিনে দিনে নিওলিবারেলিজমের মাদ্রাসায় পরিণত হয়ে চলেছে যেখানে এই প্রশ্নগুলো তোলাই অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
- ঐগুলা আমারো প্রশ্ন। আর সেখান থেকেই বর্তমান পড়াশোনার সূচনা। আমার মূল আলোচনায় এই বিষয়গুলো আসবে।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
চলতে থাকুক... বিতর্কগুলো আপনার চোখ দিয়ে দেখতে চাই।
পড়লাম আর বোঝার চেষ্টা করলাম............।। একটু একটু বুঝেছি মনে হচ্ছে। ভালো লাগতাছে। মাথায় মনে হয় এখনো কিছু অবশিষ্ট আছে......।।
:bash: :bash: :bash:
আমার খুবই ক্রুশিয়াল একটা সময়ে মন্তব্যযোগ্য একটা পোস্ট দিয়ে ফেললেন, এ ব্যাপারে আরো বিস্তারিত আলোকপাত করুণ।
দারুণ পর্যবেক্ষণ, একমত। তবে এটা বোধহয় শুধু আর্থিক উন্নয়ন বলাই উচিত হবে, আরও কিছু ব্যাপার আমি মনে করি যে একটি দেশের প্রথম বিশ্বের দেশ হওয়া নির্ধারণ করে, যেমন- মানবাধিকার, সিভিল লিবার্টি, টর্ট আইনের প্রয়োগ ইত্যাদি।
সম্পুর্ণই একমত, এটা আমার কাছে মনে হয়েছে ভিতীকর যে, আপনি যেটা বললেন যে, এখনও পর্যন্ত আমাদের পর্যাপ্ত তত্বগত জ্ঞান নেই কিভাবে উন্নয়ন অর্জন সম্ভব, আমাদের আছে শুধু উন্নয়নের consequent প্রভাবগুলোর analysis.
ক্যাপিটালিজমের কিছু ব্যাপার সোস্যাল ডেমোক্রেসির কিছু ব্যাপার দ্বারা সবসময়ই ব্যালেন্সড সভ্য বিশ্বে। এটাই কারণ যে, চরমভাবে ব্যাবসা-সফল, লাভজনক এবং সম্বৃদ্ধি নিয়ে আসার যোগ্য হলেও আমরা চাইল্ড পর্নোগ্রাফির ব্যাবসা করতে পারি না, মাদক বেচতে পারি না। আমরা বাস করি একটি সভ্যতায় যেখানে সকলেই নিজের কাজের জন্য কারো না কারো কাছে দায়বদ্ধ, এই দায়বদ্ধতাটাই গনতন্ত্রের প্রাণ। বলছি না যে ভিয়েতনাম যুদ্ধ, ইরাক যুদ্ধ, বুশ, পলপট, স্ট্যালিনের মত বিপর্যয় আসে না; মজার ব্যাপার হচ্ছে এখানের সভ্যতা- আমাদের প্রিয় সভ্যতা একটি অভিনব চাল চেলেছে এদের ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করার মাধ্যমে। যেমন টনি ব্লেয়ারের মত এতটা সফল ও দক্ষ একজন রাজনৈতিক শুধুমাত্র তার একটি ভুলের জন্য ব্রিটেনের একটি রাস্তায় মানুষের সামনে মুখ দেখাতে পারেন না, নিউজে আসেন না, কনফারেন্সে যান না, নিক্সন the cowaedly bastard who got his ass kicked out of the white house ইত্যাদি ইত্যাদি। এটা পর্যবেক্ষণযোগ্য যে কিভাবে আমাদের সভ্যতা কাজ করে, good ideas are preserved and propagated in the collective mind of the super-organism while the bad ones are discarded. ব্যক্তি পর্যায়ে এটা নির্ধারণ করে একটি মুল্যবোধ ব্যাবস্থা বা collective value যে, treat other the way you like to be treated বা এম্প্যাথি। আইন বলে যে, ফ্রিডম অর্জিত হয় কিছু রাইট ত্যাগ করার মাধ্যমে এবং ভাইস-ভার্সা। এগুলোই নির্ধারণ করেছে আমাদের সভ্যতার মেরুদন্ড। বিষয়বস্তুর বাইরে চলে গেলাম বোধহয়। যেটা বলতে চাচ্ছিলাম যে, আপনার এই প্যারাটা পড়ে মনে হলো যে, দুটি conflicting element এর মধ্যে একটা ব্যালেন্স আপনি খোঁজার চেষ্টা করছিলেন। আমি বলতে চেয়েছি সেই ব্যালেন্সের প্রতিরুপ কিরকম হতে পারে।
আমারও জানার বড়ই ইচ্ছা কি কারনে একটি দেশ গরীব থেকেই যায়, কি হতে পারে তাদের এই দারিদ্র-চক্র থেকে বেরিয়ে আসার উপায়। এটা ভিতীকর যা বললেন যে, এই চক্র থেকে বেরিয়ে আসার উদাহারণ এ পর্যন্ত মাত্র দুটি।
এটা অবশ্যম্ভাবী, এটা থেকে কারোই মুক্তি নেই, সভ্যতার অর্জন এতই বিশাল এতই ব্যাপক যে, এর পথে একজন explorer কিছুই করতে পারে না হতবিহ্বল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া। বেশী ভাববেন না আশা করি এই বিষয়ে, এখনও আছে পর্যাপ্ত সময়, উচ্চাকাঙ্খার চুড়ান্ত লক্ষ্য যা হতে পারে একটি ফিল্ডের সবচেয়ে উপরের অ্যাকাডেমিকদের সাথে প্রতিযোগীতা করা, সেটার জন্য আপনার এখনও ২০ থেকে ২৫ বছর সময় আছে। শুভকামনা রইলো।
ভালো লাগল অনেক সময় নিয়ে, সুচিন্তিত মতামত দেওয়ার জন্য। মূল আলোচনায় আমন্ত্রণ রইলো। 🙂
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
একইসঙ্গে খুবই সময়োপযোগী বিষয় আলোচনায় এনেছ মাহমুদ। এ নিয়ে বিতর্ক কোনোদিনও শেষ হবে না। আর উন্নয়ন নিয়ে দুনিয়া জুড়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলতেই থাকবে। আসলে এটাই যথার্থ পথ।
কোনো দেশের উন্নয়নের জন্য নির্দিষ্ট কোনো ফমূর্লা আছে বলে আমি মনে করি না। প্রতিটি দেশকে, সমাজকে তার তার মতো করে সৃজনশীলভাবে নিজের উন্নয়ন কৌশল ঠিক করতে হয়। আর এটা প্রয়োগ করতে গিয়ে "ট্রায়াল অ্যান্ড এরর" পদ্ধতিতে এগোনোটা ঠিক। আমরা যারা দরিদ্র (অর্থে ও মানসিকতায়), পরনির্ভরশীল তারাই শুধু অন্যের ধার করা নীতি নিয়ে চলি।
ভারতের বিষয়টা পাশ্চাত্য উদাহরণ হিসাবে আনে, এর একটা প্রধান কারণ স্বাধীনতার পর নব্বই দশক পর্যন্ত দেশটির অনুসৃত তথাকথিত আধা সমাজতান্ত্রিক-আধা পূঁজিবাদী উন্নয়ন নীতি। একধরণের জগাখিচুড়ির মধ্য দিয়ে গেছে দেশটি। অন্যদিকে কোরিয়া, তাইওয়ান স্পষ্টতই পূঁজিবাদী উন্নয়ন কৌশল নিয়ে এগিয়েছে। পাশ্চাত্যের এক ধরণের অন্ধ অনুকরণ ও আনুকূল্য ছিল দেশ দুটির ক্ষেত্রে। যেটা ভারত করেনি ও পায়নি। পূঁজিবাদী বিশ্ব কোরিয়া ও তাইওয়ানে বিশেষ করে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফের মাধ্যমে যে পরিমাণ ডলার "ইনজেক্ট" করেছে সেটা কিন্তু তারা সেভাবে প্রকাশ করেনা। তবে এটাও ঠিক এই কৌশলে কোরিয়া ও তাইওয়ান এগিয়েছে। তবে বিশ্বের সব দেশে তো এভাবে ডলার "ইনজেক্ট" করা সম্ভব নয়। তাই কোরিয়া আর তাইওয়ান হচ্ছে পূঁজিবাদী বিশ্বের শো-কেস।
আমি বরং চীনের উন্নয়ন কৌশল নিয়ে জানতে আগ্রহী। যদিও দেশটি পুরোপুরি রাষ্ট্র আনুকূল্যে নিজেদের ধরণের পূঁজিবাদী উন্নয়ন কৌশল নিয়ে অগ্রসর হয়েছে বলে আমার মনে হয়। মাহমুদ কিছু জানলে জানিও।
আর ভারত বরং আমার কাছে এখন বেশ আগ্রহ তৈরি করেছে। নব্বইয়ের পর দেশটি মুক্তবাজার অর্থনীতির পথ নিলেও নিজস্ব শর্তে সেটা করছে। তার বড় বাজার একটা বিশাল সুবিধা। ফলে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের মাতব্বরি তারা উপেক্ষা করতে পারছে। পারমানবিক অস্ত্রের বিষয়টি দেখো। ভারত নিয়ে আমেরিকা কিন্তু বিন্দুমাত্র উদ্বেগ দেখানোর সাহস করে না।
বাংলাদেশ প্রসঙ্গ। আমার মনে হয়, সমস্যা গোড়ায়। নিজেদের অর্থ নেই, মেধা নেই, সম্পদ স্বল্প আর রাজনীতি দুষিত এবং প্রচণ্ডভাবে বিভক্ত। পুরো দেশটাকে ভারত ঘিরে রাখায় জুজুর ভয় আমাদের সহজাত। অথচ ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক ও সহযোগিতা ছাড়া আমাদের এগোনো অসম্ভব প্রায়। আমাদের অর্থনীতি ভারতনির্ভর হয়ে পড়ছে স্বাভাবিক কারণেই। আমাদের জন্য ভারত, নেপাল, ভুটান এবং চীনকে নিয়ে একটা আঞ্চলিক উন্নয়ন কৌশল মনে হয় অনেক ভালো এবং দ্রুত কাজে দেবে। একে ইতিবাচকভাবে নিয়ে আমরা যদি কাজে লাগাতে পারি, হয়তো এক, দেড় দশক পর পরিস্থিতির উন্নতি দেখতে পাবো।
বাংলাদেশ নিয়ে এটা আমার ভাবনা। আমার সঙ্গে একমত হতেই হবে এমন নয়। তোমরা তোমাদের মত জানাও। নানা মত পেলে ও জানলে সবার জন্যই ভালো হবে।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
একশত ভাগ সহমত।
- সেটাই। এই কারণেই যখন অমুক দেশের রাষ্ট্রদূত কিংবা তমুক সংস্থার বাংলাদেশ ডিরেক্টর আমাদের উন্নয়ণ-বিষয়ক ওয়াজ-ফর্মান আর আমাদের ক্ষমতাবানদের কেউ কেউ সেই মাহফিলে সামিল হয়েই মনে করে যে উন্নয়ণের কাফেলা-যাত্রা শুরু করা ফরজে-আইন হয়ে পড়েছে, তখন খুব খারাপ লাগে।
এই বিষয়ে আমি পুরা একটা ধোঁয়াশার মধ্যে আছি। কেউই স্পষ্ট করে বলেনা কিভাবে নিজেদের স্বার্থ ঠিক রেখেও ভারতের সাথে সুসম্পর্ক রেখে চলা যায়। আমিও মনে করি, কোন একটা সমাধানে পৌঁছা সম্ভব। আপনি এই বিষয়ে আপনার মতামতের আলোকে একটা বিশ্লেষণ পোষ্ট করলে খুব ভালো হতো।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
ভাল লাগলো মাহমুদ ভাই।
" ইদানিং বলা হয় যে, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের মধ্যমে উন্নয়ন আসবে। বাজার মুক্ত করার (মানে রাষ্ট্রের অধীনতা থেকে) ব্যাপারে ত তাদের অবস্থান মৌলবাদী। এরকম আরো নানান ‘ছবক’ আছে উন্নয়ণের নসিহতমানায়। কিন্তু আসল কথা যেটা তারা বলেনা তা হল, এইসব মুক্তবাজার+প্রযুক্তি+দক্ষ প্রতিষ্ঠান উন্নয়নের কারণ নয়, ফলাফল। পশ্চিমাদের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায়ই এসেছে এইসব অর্জন, উন্নত হওয়ার আগে বা শুরুতে নয়। যখন তারা উন্নয়নশীল ছিল, তখন এইসব মুক্তিবাজার, প্রযুক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনটাই তাদেরও ছিলো না। তাইলে এখন ক্যান আমাদের বলে এইসব আগে ?অর্জন করার মাধ্যমে উন্নয়ন পরিকল্পনা করার?"
কইলেই আমরা শুনব কেন?? এখানেই আসে তারা কেন বলে। অর্থনীতিতে Dominant Strategy বলে একটা কথা আছে। এর ধারনাটা খুব সাধারণ কিন্ত অনেক শক্তিশালী। যার হাতে ক্ষমতা
যত বেশি সে তত বেশি নিজের ইছছামতো সব সাজাতে পারবে। তাই সবার আগে দরকার আমাদের
দরাদরি করার মতো একটা অবস্থায় যাওয়া।
" কোনো দেশের উন্নয়নের জন্য নির্দিষ্ট কোনো ফমূর্লা আছে বলে আমি মনে করি না। প্রতিটি দেশকে, সমাজকে তার তার মতো করে সৃজনশীলভাবে নিজের উন্নয়ন কৌশল ঠিক করতে হয়।"
একমত।
মাহমুদ
আমার খুব প্রিয় বিষয়ে লেখা শুরু করেছো। কিছু তথ্য দিতে পারবে? মার্ক্স এর ইকোনোমিক মডেল এর ধারণার মূল বিষয় কি? "ক্যাপিটাল" আর "থিউরি অফ সার্প্লাস ভ্যালু" বইয়ের সাইজ দেখে আর পড়ার সাহস পাইনা। তুমি যদি একটু সহজ ভাষায় মূল বিষয়টা বলো আমার উপকার হয়। এই ধরো আসলেই তিনি কি কোন তত্ব দিয়েছেন যা দিয়ে সমাজতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা সম্ভব। নাকি তিনি শুধু পূজিবাদী ব্যবস্থার ব্যবচ্ছেদ করতেই ব্যস্ত ছিলেন? একটি সমাজতান্ত্রিক সমাজের অর্থনীতি কেমন হবে সে সম্পর্কে কিছু লিখেছেন? তুমি যদি তোমার ক্লাসে কিছু পাও জানিও।
পড়ার ফাঁকে ফাঁকে চেষ্টা করো চিন্তা করতে যে বাংলাদেশের মত দেশগুলোতে উন্নয়ন আসলেই কিভাবে সম্ভব।
ভাইয়া, বলবো। তবে কয়েকদিন পরে। এখন টার্ম শেষের দিকে, তাই দৌড়ের উপরে আছি।
মার্ক্সের পুঁজিবাদের ব্যাখ্যা আর সমাজতন্ত্র দুইটা আলাদা বিষয় বলে মনে হয়। আমার আলোচনায় এইদিকে খেয়াল রাখার চেষ্টা করবো।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
সেটা আমারও মনে হয়। আমি সমাজতন্ত্র বিষয়টি নিয়েই মূলত লিখবো। তবে পূঁজিবাদের উপর তার দীর্ঘ আলোচনার মূল তত্বটা জানা থাকলে ভাল হতো লিখার জন্য। সময় নাও। আমার এই সিরিজটা চলবে বেশ কিছুদিন ধরে।
ভাবতেছি, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজে মাস্টার্সটা কইরাই ফেলামু নাকি!! 😀
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
ঢাবি'র ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজে আমাদের ব্যাচের বিসিসি'র ফারুক আছে, লেকচারার। B-) আর তোমার কপাল ভালো হলে ২/৩ বছর পরে এই অধমরেও দেখতে পারো, যদিও সেই সম্ভাবনা অতি সুক্ষ্ণ।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
চলে আসেন তাইলে আমরা আপনার ছাত্র হওয়ার একটা ট্রাই নিতাম 😀
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
আমিও মাহমুদ ভাইয়ের ছাত্র হপো :(( :(( :((
প্রিয়তে নিলাম।
পোস্ট টা পড়ছি। কমেন্ট সবগুলো পড়া হয় নাই।
আমার মত গাধা গরুরা যে যেটা বলবে তার সাথেই শুধু মাথা নেড়ে হা হু বলে।
আপাতত এটুকু বলি এ বিষয়টা মনে হয় একটু বুঝছি। তাই মূল আলোচনার অপেক্ষায় থাকলাম।
আমার কথা গুলা আমিন বলে দিল, সহজভাবে লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ ।