আইনের শাসন ও আইনের অপব্যবহারের প্রেক্ষিতে সাম্প্রতিক হাসিনা-ইউনূস দ্বৈরথ নিয়ে কিছু আলাপ-সালাপ

ওয়াহিদা নূর আফজা (শান্তা) আপুর ব্লগ মনে হচ্ছে সিসিবি’র সাময়িক ঘুম ভাঙ্গিয়ে দিলে। ব্লগের বিষয়টা হচ্ছে ডঃ ইউনূসকে গ্রামীন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদত্যাগ করার জন্য সরকারী নির্দেশ। সরকারের ভাষ্যমতে, মূল গ্রামীন অধ্যাদেশ’ (১৯৮৩/৮৪ সালে জেনারেল এরশাদের সামরিক সরকারের অর্থমন্ত্রী ডঃ আবুল মাল আব্দুল মুহিতের সময় জারিকৃত) অনুযায়ী গ্রামীন ব্যাংকের ব্যবস্থাপণা পরিচালকের সর্বোচ্চ বয়স সীমা ৬০ বছর যা’ ডঃ ইউনূস ১৯৯৯ সালে অতিক্রম করে গেছেন। কাজেই, সেই সময় থেকে তিনি উক্ত পদে থাকার আইনগত বৈধতা হারিয়েছেন। পরবর্তীতে গ্রামীন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কাঠামোতে পরিবর্তন এনে তাকে বৈধতা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে যা’ সরকারের সংস্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ‘বাংলাদেশ ব্যাংক’ অনুমোদন দেয়নি। সাম্প্রতিক সময়ে নরওয়ের সাংবাদিকের “ক্ষুদ্রঋণের ফাঁদ” শীর্ষক প্রামাণ্যচিত্রে গ্রামীনের দারিদ্র্য উৎপাদনকারী ভূমিকার সাথে সাথে ডঃ ইউনূসের বে-আইনীভাবে বিদেশী অনুদানের অর্থ অন্য সংস্থায় স্থানান্তরের ঘটনায় গ্রামীন ব্যাংক এবং ডঃ ইউনূস আবার আলোচনা+সমালোচনায় চলে আসেন। এই সুযোগে হাসিনা সরকার ডঃ ইউনূসকে একহাত দেখে নেওয়ার চেষ্টায় নামে। এরই ধারাবাহিকতায় ডঃ ইউনূসকে পদত্যাগ করতে বলা। এই বয়ানে সত্য-মিথ্যা যা’ই থাকুক, মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা আপাততঃ এরকমই জানছি।(দেখুনঃ মার্চ ৩, ২০১১ এর ইত্তেফাক আর প্রথম আলো)।

শান্তা আপুর পোষ্টে আমার এক কমেন্টের উত্তরে তিনি বলেছেন “আমি ইউনুস আর হাসিনার ব্যাপারটা এনেছি আইনের শাসন আর ক্ষমতার অপব্যবহার প্রসংগে”। তাইলে আসেন, দেখি ‘আইনের শাসন’ আর ‘ক্ষমতার অপব্যবহারে’ হাসিনা আর ইউনূস কে, কতটা, কেমন। আরেকটা কথা, আমার এই পোষ্টে আইনের শাসন আর ক্ষমতার অপব্যবহার বিষয়ে কোন টেকনিক্যাল আলোচনা হবে না। আমার আলোচনা মূলতঃ সাধারণ বিচারবুদ্ধির উপর ভিত্তি করে।

আইনের শাসন আর আইনের অপব্যবহার নিয়ে শেখ হাসিনার সম্পর্কে কিছু বলার দরকার আছে বলে মনে করি না। কারণ, হাসিনার সমালোচনাযোগ্য কাজ এবং সমালোচকের অভাব নেই। তাদের কাছ থেকেই আমরা জানতে পারি যে তিনি ক্ষমতা লোভী, ক্ষমতার জন্য করতে পারেন না এমন কিছু বোধ হয় নেই। কিন্তু ডঃ ইউনূসের ব্যাপারে আমরা খুব একটা জানি না। তাইলে, আইনের শাসন আর ক্ষমতার অপব্যবহারের আলোকে ডঃ ইউনূস, গ্রামীন ব্যাংক আর ক্ষুদ্রঋণের বিচার করা যাকঃ

এক, গ্রামীন ব্যাংক আর ক্ষুদ্রঋণের জন্ম হয়েছে গণবিরোধী+স্বৈরাচার জেনারেল এরশাদের একটা অধ্যাদেশের মাধ্যমে। তারমানে, গ্রামীন ব্যাংকের জন্মই হয়েছে অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে। (অবশ্য এই দেশের জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সংসদেও এমন বিল আকসার পাশ হচ্ছে যা’ স্বৈরাচারের থেকে কম খারাপ না)। এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে গ্রামীন ব্যাংক দেশে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম চালানোর জন্য দেশে প্রচলিত ব্যাংকিং এর আওতামুক্ত থাকার অধিকার লাভ করে। এই আইনের বলেই গ্রামীন অন্যান্য ব্যাংকের মতো অর্জিত মুনাফার উপর আয়কর থেকে নিষ্কৃতি পায়। আবার এই আইনের বলেই কোন গ্রাহক ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে অন্যান্য ব্যাংকের মতো ঋণখেলাপীর স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করে। তাইলে, একই আইন যখন ৬০ বছরের পর পদ থেকে অবসরে যেতে বলে, তা’ মানতে ডঃ ইউনূসের অনীহা কেন? কেন নিজের অবস্থান ধরে রাখার জন্য তাকে “নিজেদের ইচ্ছামাফিক করা+রাষ্ট্রের অনুমোদনবিহীন” আইনের আশ্রয়ে পদ ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে হয়? প্রতিষ্ঠাতা ব্যক্তি নিজেকে প্রতিষ্ঠানের থেকে বেশি গুরিত্বপূর্ণ মনে করলে বা নিজেকে অপরিহার্য করে রাখলে তা’ তার নিজের এবং সেই প্রতিষ্ঠান উভয়ের জন্যই ভয়াবহ (স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ দূর্ভিক্ষে কয়েক লাখ মানুষের মৃত্যু আর বংগবন্ধুর নির্মম হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে এই অমোঘ সত্য অবলোকন করেছে)।

দুই, বর্তমান সময়ে রাজতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র, অভিজাততন্ত্র, ইত্যাদি কোন তন্ত্রই গ্রহনযোগ্য নয়। একারণে হাসিনাকে আমরা কেউ কখনো সমালোচনা করতে ছাড়ি না। হাসিনার (এবং সকল রাজনীতিকের) এইভাবে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকাটা কিন্তু তার একার কৃতিত্ব নয়, এর বেশির ভাগ কৃতিত্ব বা দায় (দলীয় সুশীলসহ) তার সমর্থকদেরও। এইসব সমর্থকদের মতে, দল হিসেবে আওয়ামী লীগ শক্তিশালী ভাবে টিকে থাকার জন্য শেখ হাসিনার দলীয় প্রধান পদে থাকাটা জরুরী। কিন্তু এটা ত’ বুঝমান সকলেই স্বীকার করবেন যে, হাসিনার এই পদ আঁকড়ে থাকা আওয়ামী লীগে বিকল্প/নতুন নেতৃত্ব তৈরীর প্রকৃয়ায় একটা বাঁধা ছাড়া আর কিছুই নয়, যা’ আওয়ামী লীগকে একটা সবল রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে ওঠার পথে অন্তরায়। একই যুক্তি কি গ্রামীন ব্যাংক আর ডঃ ইউনূসের বেলায় প্রযোজ্য নয়? সেখানেও ত’ নেতৃত্বে শূণ্যতা তৈরী হয়ে আছে বিকল্প নের্তৃত্ব গড়ে না তুলে ডঃ ইউনূস সুদীর্ঘ তিন দশক ধরে নেতৃত্বে থাকায়। (অর্থমন্ত্রীর ভাষ্য অনুযায়ী) সরকারের বারংবার অনুরোধের পরও পদত্যাগ না করার কারণ হিসেবে ডঃ ইউনূস বলেছেন যে, তিনি না থাকলে গ্রামীন ব্যাংক বিপর্যস্ত হয়ে যাবে। এটা বিদ্যমান আইনের প্রতি অনাস্থারই নামান্তর মাত্র; কারণ, আইনের উপরে ব্যক্তিকে স্থান দিয়ে এই ধারণা আইনকেই অগ্রাহ্য করে।

তিন, অনেকের মতে, গ্রামীন ব্যাংকের অস্তিত্বের স্বার্থে আইন অমান্য করে বা পাশ কাটিয়ে হলেও ডঃ ইউনূসকে স্বপদে বহাল রাখা উচিত। মানলাম, ঠিক আছে। তাইলে কোন ঋণ গ্রহীতা যদি প্রাকৃতিক বা মানবিক কোন দূর্যোগের কারণে ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়, তাহলে কেন আইন শিথিল করে রেহাই দেওয়া হয়না, কেন সেই আইনের দোহাই দিয়ে তার ঘরের চালা খুলে নেওয়া হয়? (২০০৭ সালের নভেম্বরে সিডরের সময়ে গ্রামীন ব্যাংক এবং এর অনুসারী অন্যান্য সংস্থাসমূহের ভূমিকা স্মরতব্য)। তখন ত’ সেই মানুষটার সংসারের কথা ভেবে গ্রামীন ব্যাংক দু’দশ হাজার টাকা মাফ করতেই পারে, আফটার অল সেই মানুষটাও নাকি গ্রামীণ ব্যাংকের মালিক!!! কিন্তু আইনের প্রয়োগে তখন ত’ ক্ষুদ্রঋণ-ওয়ালাদের (এখানেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, দরিদ্রদের কল্যাণ নয়, মূখ্য হয়ে দাড়িয়েছে গ্রামীন ব্যাংকের কল্যাণ!) ঠিকই অনড় অবস্থান নিতে দেখা যায়। আইনের সাশন কি তবে শুধুই আম-জনতার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য?

চার, অর্থমন্ত্রীর ভাষ্যমতে, ১৯৯৯ সালের পর থেকে গ্রামীন ব্যাংক তার কার্যকলাপ মনিটরিং/অডিটিং এ সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে সহায়তা না করে বরং পাশ কাটিয়ে যাওয়ার পন্থা অনুসরণ করে। সরকার থেকে বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও গ্রামীন সরকারকে সহায়তা করেনি। শুধু সরকারকেই নয়, ব্যক্তি পর্যায়েও কাউকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেনি গ্রামীন। ডেনিয়েল পার্ল এই কথা ২০০১ বিস্তারিত লিখে গেছেন নিউ ইয়র্ক টাইমসে (গুগুলে সার্স দিলে লিঙ্ক পাওয়া যাবে)। নরওয়ের সেই সাংবাদিকও
একই ভাবে গ্রামীনের অসহযোগীতার কথা বলেছেন। গ্রামীনের এই আচরণ এনজিও/কোম্পানী আইনের পরিপন্থী। কারণ, এজাতীয় যেকোন সংস্থার নিবন্ধনের একটা পূর্বশর্তই হলো স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহীতা, যা’ গ্রামীন ব্যাংক কখনোই মান্য করেনি।

পাঁচ, সর্বশেষ, নরওয়ের সাংবাদিকের সেই আলোচ্য ডকুমেন্টারিতে দেখা গেছে যে, ডঃ ইউনূস বে-আইনী ভাবে দরিদ্র্যদের জন্য আসা বৈদেশিক সাহায্যের টাকা গ্রামীনের সাথে নামমাত্র সম্পর্কযুক্ত অন্যান্য সংস্থায় স্থানান্তর করেছেন, যেমন- গ্রামীন কল্যান। গ্রামীনের নামের সাথে মিল রেখে ডঃ ইউনূস এই রকম আরো ২০/২১টা সংস্থা করেছেন যেগুলো কোম্পানী আইনের আওতায় আলাদা সত্বা হিসেবে নিবন্ধিত। কাজেই, দরিদ্রদের জন্য অনুদান হিসেবে গ্রামীনের কাছে আসা বৈদেশিক অর্থ আইনতঃ পৃথক অন্যান্য সংস্থায় স্থানান্তর করা অবশ্যই আইনের পরিপন্থী।

আলোচ্য ইস্যুতে মিডিয়ায় সাধারণভাবে “খারাপ” হাসিনার (আসলে সকল রাজনীতিকদের সাথেই) “ভালো” ইউনূসের একটা তুলনা চলছে। প্রথম আলো এবং এর প্রভাবাধীন অনেকেই এই ধারায় চিন্তা করছেন। প্রকৃতপক্ষে, এটা একটা পুরানা বুদ্ধিবৃত্তিক ফাঁদ যার মাধ্যমে ধূর্ত লোকজন বিশেষ স্বার্থে জনমতকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে এবং প্রায় সব সময়ই সফল হয়। এডওয়ার্ড সাঈদ এ’ সম্পর্কে বিশদ ব্যাখ্যা করেছেন তার ওরিয়েন্টালিজম বইয়ে। তিনি সমাজে প্রচলিত নারী-পুরুষের পারস্পরিক তুলনা-প্রক্রিয়ার উল্লেখ করে দেখিয়েছেন যে, একাডেমিক অঙ্গনে সাধারণভাবে নারীদের দোষগুলোকে (দায়িত্বজ্ঞানহীন, অনির্ভরযোগ্য, আবেগী, ইত্যাদি) এমনভাবে আলোচনায় আনা হয় যেন এইসব নারীদের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য; কাজেই যারা নারী নয়, অর্থ্যাৎ পুরুষরা এসব থেকে মুক্ত। এভাবে ওরিয়েন্টালিষ্ট স্কলার প্রাচ্য সম্পর্কে এমনভাবে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করে যেন যাবতীয় খারাপ গুণ (গণতন্ত্রহীনতা, বিশ্বাসঘাতকতা, দুর্নীতি, ইত্যাদি) প্রাচ্যের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য; কাজেই প্রাচ্যের বাইরে তথা পাশ্চাত্যে এসব নেই। ব্যাপারটা এরকম যে, একদল ব্যক্তির মধ্যে একজন মাইকটা দখল করে একে একে উপস্থিত সকলকে নানান দোষে দোষী সাব্যস্ত করে চলেছে, যার ফলে মনে হচ্ছে সেখানকার উপস্থিত সকলেই কোন না কোন দোষে দোষী, কিন্তু সে একেবারে নির্দোষ!

আমাদের দেশেও এই প্রতিদন্দ্বীর খারাপ গুণগুলো ব্যাপক ভাবে আলোচনায় নিয়ে এসে পরোক্ষভাবে নিজেকে মহিমান্বিত করার চেষ্টা অহরহ দেখা যায়। যেমন, এখনকার সরকার বিএনপি এবং তারেক রহমানের দূর্নীতির কথা এমন ভাবে ফলাও করে প্রচার করে যে তা’তে সাধারণভাবে এটা মনে হয় যেন সকল দূর্নীতি বিএনপি এবং তারেক করে, তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী তথা আওয়ামীলীগ এবং হাসিনাপুত্র জয় দূর্নীতি করেনা। আবার, তত্বাবধায়ক সরকারের সময় সুশীল আর মিলিটারীরা এসে এমনভাবে রাজনীতিকদের দূর্নীতিবাজ হিসেবে দেখালো যেন দূর্নীতি আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য, কাজেই অরাজনৈতিক তথা তত্বাবধায়ক সরকার দূর্নীতিমুক্ত!- বাস্তব কিন্তু এসবের থেকে অনেকটা আলাদা। আওয়ামীলীগ বা জয় যেমন দূর্নীতিমুক্ত নয়, তেমনি বিগত তত্বাবধায়ক সরকারের অন্তর্গত সুশীল এবং মিলিটারীর অনেকের দূর্নীতির খবর এখন প্রকাশ পাচ্ছে।

হাসিনা-খালেদার সাথে ডঃ ইউনূসের তুলনা করলে তাদের দোষের সাথে দোষ আর গুণের সাথে গুণ তুলনা করতে হবে। একপক্ষের দোষের সাথে আরেকপক্ষের গুণের তুলনা করলে একপক্ষকে যেমন অনায্যভাবে হেয় করা হয়, আরেকপক্ষকে তেমনি অযথা গুরুত্বপূর্ণ করা হয়।

শান্তা আপুর উক্তির সাথে মিলিয়ে শেষ করিঃ তিনি বলেছেন যে, তিনি হাসিনা আর ইউনূসের মধ্যে আইনের শাসন আর আইনের অপব্যবহারের আলোকে তুলনা করতে চেয়েছেন। আমার বক্তব্য হচ্ছে, এদের দুইজনই আইনের শাসনের বিপরীতে অবস্থান নেওয়ার এবং অপব্যবহার করার অসংখ্য নজীর তৈরি করেছেন। কাজেই, আইনের শাসনের কথায় আসলে ডঃ ইউনূসের বিপক্ষেই দাঁড়াতে হয়

আরেকটা কমেন্টের উত্তরে শান্তা আপু বলেছেন যে, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না হলে কারো পক্ষে দেশে স্থায়ীভাবে ভালো কিছু করা সম্ভব না। এক্ষেত্রে আমি সম্পূর্ণ একমত। কিন্তু ডঃ ইউনূসকে নিয়ে দেশি-বিদেশী মিডিয়া এবং আমাদের সুশীলদের বর্তমান অবস্থান ত’ আইনের শাসনের বিপক্ষে; তাদের মতে, ব্যক্তি মহান হলে তাকে আইনের উর্ধ্বে স্থান দিতে হবে অথবা তার স্বার্থে বিদ্যমান আইন বদলাতে হবে! এভাবে চললে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়না, হয় আওয়ামীলীগ+বিএনপি’র মতো ব্যক্তিপুজার প্রতিষ্ঠা যা’কে আবার এই সুশীল এবং তাদের মিডিয়া সারাবছর ধরে গালমন্দ করে থাকে! একবার আইন, আরেকবার ‘ভাবমূর্তি’ নিয়ে ব্যস্ত হলে দেশে আইনের শাসন কখনোই প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। আসলে, ‘ভাবমূর্তি’র দোহাই সর্বদাই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পরিপন্থী।

পুনশ্চঃ একটা লিঙ্ক পাইলাম। এবং সবার সাথে শেয়ার করার জন্য এইখানে জুড়ে দিলাম- http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=4fa0a0925c9527b40fb2353fc03e2bf0

৫,৮৬৫ বার দেখা হয়েছে

৪২ টি মন্তব্য : “আইনের শাসন ও আইনের অপব্যবহারের প্রেক্ষিতে সাম্প্রতিক হাসিনা-ইউনূস দ্বৈরথ নিয়ে কিছু আলাপ-সালাপ”

  1. তৌফিক (৯৬-০২)

    মাহমুদ ভাইকে ধন্যবাদ কথা রাখার জন্য।

    প্রতিষ্ঠাতা ব্যক্তি নিজেকে প্রতিষ্ঠানের থেকে বেশি গুরিত্বপূর্ণ মনে করলে বা নিজেকে অপরিহার্য করে রাখলে তা’ তার নিজের এবং সেই প্রতিষ্ঠান উভয়ের জন্যই ভয়াবহ (স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ দূর্ভিক্ষে কয়েক লাখ মানুষের মৃত্যু আর বংগবন্ধুর নির্মম হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে এই অমোঘ সত্য অবলোকন করেছে)।

    রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠান আর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পার্থক্যটা কোথায় হবে? আমেরিকায় এক প্রেসিডেন্ট দুই টার্মের বেশি থাকতে পারেন না (ব্যক্তির চেয়ে রাষ্ট্র বড়-এর দুর্বল উদাহরণ)। আমেরিকারই কনজিউমার ইলেক্ট্রনিক্স জায়ান্ট Apple-এর CEO স্টিভ জবসের স্বাস্থ্য খারাপ হইলে শেয়ার হোল্ডারদের মধ্যে কান্নাকাটি পড়ে যায়, শেয়ারের দাম কমে যায় (ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের চেয়ে ব্যক্তি বড় হইয়া গেল কি?)। আমার চিন্তায় প্রতিষ্ঠান আর ব্যক্তির মধ্যে কেমন যেন তালগোল পাকাইয়া গেল। মাহমুদ ভাই, একটু ব্যাখ্যা করবেন কি?

    জবাব দিন
    • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

      তৌফিক,
      রাষ্ট্রের সাথে ব্যক্তির তুলনা আসলেই হালকা। কিন্তু হাসিনার সাথে রাষ্ট্রের যে সম্পর্ক তা'র সাথে ডঃ ইউনূসের সাথে গ্রামীনের তুলনা করা হচ্ছে বলেই আমাকে এটা করতে হলো।

      আর গ্রামীন আসলেই শুধুই প্রাইভেট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নয়; কাজেই এর সাথে প্রথাগত অন্যান্য প্রাইভেট ব্যবসার (যেমন apple) তুলনা সম্ভব নয়; গ্রামীন বরং পাবলিক প্রতিষ্ঠানেরই বেশি কাছাকাছি।

      গ্রামীন যে apple-এর থেকে আলাদা তার আরেকটা প্রমাণ হচ্ছে- apple-ব্যক্তি মালিকানার সম্পত্তি, বর্তমান মালিকের পর তার উত্তরাধীকারীই হবে এর মালিক এবং এটা রাষ্ট্রের সম্পত্তি আইন দ্বারা নির্দিষ্ট। গ্রামীনে কিন্তু সেটা হতে পারবে না।


      There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

      জবাব দিন
      • নঈম (৮৭-৯৩)

        মাহমুদের সাথে ব্যাখ্যায় আরেকটু যোগ করি।

        স্টিভ জবসের সমালোচক কয় জন, সে কার কার পাকে ধানে মই দিছে, কতজন দরিদ্রকে শোষণ করেছে? ড: ইউনুসের সাথে এটাও একটা পাথর্ক্য।

        আবার দেখ - স্টিভ জবস অসুস্থ্য হলে তার প্রতিষ্ঠানের শেয়ার হোল্ডারগণ চিন্তিত হয়। ড: ইউনুসের ক্ষেত্রে গ্রামীণের শেয়ার হোল্ডার, তথা মালিকগণ, তথা ঋণ গ্রহীতা সেই সকল দরিদ্র জনগোষ্ঠী, তথা যাদের সিডর বিপর্যস্ত বাড়ীতে লাগা ত্রাণের টিন খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সেইসব লোকেরা কতটা দুঃখ পেয়েছে - বা আলহামদুলিল্লাহ (বলতে চাই না) পড়েছে?

        স্টিভ জবস তার প্রতিষ্ঠানকে প্রতিষ্ঠানের শেয়ার হোল্ডারদের জন্য আকর্ষণীয় করে তুলেছে। ড: ইউনুস গ্রামীণকে এর মালিকগণের, তথা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর, তথা যাদের সহায় কেড়ে নেওয়া হয়েছে, তাদের জন্য কতটা আকর্ষণীয় করে তুলেছে?

        জবাব দিন
  2. ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

    ৬০ বছর বয়সের কথা উল্লেখ করে আইন অমান্য করার কথা বললে এর উত্তরে বলব বিষয়টি বিচারাধীন আছে। অভিজ্ঞ ব্যরিস্টাররা জর্জের সামনে তাদের পয়েন্ট তুলে ধরছেন। পেপারে যে কেউ বিষয়টি চাইলেই পড়ে নিতে পারে। না, আমি কখনই এমন আবেগী হতে পারি না যে যেই বিষয় নিয়ে আইনী লড়াই হতে পারে তা বিচারের আগেই নিজের মত দিয়ে দিব। আমি সত্যিকার অর্থেই আইনী শাসনে বিশ্বাসী - আবেগী শাসনে নয়।

    গ্রামীন ব্যাংক আর ক্ষুদ্রঋণের জন্ম হয়েছে গণবিরোধী+স্বৈরাচার জেনারেল এরশাদের একটা অধ্যাদেশের মাধ্যমে।

    ঢালাওভাবে এরশাদের আমলে হওয়া সব কিছুর সমালোচনা করা একটা কমন কালচার। এরশাদের আমলে হওয়া উপজেলা পদ্ধতি একটা খুব ভাল পদক্ষেপ ছিল। ৯১ এ খালেদা জিয়া এসে আরেক অধ্যাদেশে তা বাদ দিয়ে দিয়েছেন। তার ফলে এখন আমরা কী দেখতে পারছি? সব ঢাকা কেন্দ্রিক হওয়ায় ঢাকা এখন ভেংগে পড়ার উপক্রম। বাংলাদেশের জন্য ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ অতি আবশ্যক হয়ে পড়েছে। কিন্তু সরকার প্রধানগন তাদের ব্যক্তিগত আক্রোশ বাস্তবায়নে বেশি ব্যস্ত থাকলে দেশের কথা ভাববে কখন?
    আর সেই সময়ে বাংলাদেশ একটি নতু্ন রাস্ট্র ছিল। নতুন আইডিয়া ত্বরিৎগতিতে বাস্তবায়ন করার জন্য অধ্যাদেশ করতে হয়েছে। সে সময় বিদেশ থেকে দেশে গিয়ে ইউনুস তাও কিছু একটা করতে পেরেছিলেন। এখন যারা আইডিয়া নিয়ে যাচ্ছে তারা জানাচ্ছে যে স্বয়ং বিধাতা নাকি এই দেশ থেকে চোখ ফিরিয়ে নিয়েছে।

    ক্ষুদ্রঋণের কথা বলতে গেলে চর্বিত চয়ন করা হয় টিনের চাল খুলে ফেলার কথা। এখন আমাকে বোঝাও তাহলে এই ব্যাংকের ৮৩ লাখ গ্রাহক থাকে কিভাবে? ব্যাংকের অসফলতা অক্ষরের বদলে নম্বরে প্রকাশ করলে তা বুঝতে সাহায্য করে।

    অর্থমন্ত্রীর ভাষ্যমতে, ১৯৯৯ সালের পর থেকে গ্রামীন ব্যাংক তার কার্যকলাপ মনিটরিং/অডিটিং এ সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে সহায়তা না করে বরং পাশ কাটিয়ে যাওয়ার পন্থা অনুসরণ করে।

    এখন শুধু সরকার কথা পড়লে তো ভায়া তোমার একপেশে ধারনা আরো জোরদার হবে। গ্রামীন ব্যংক তো আদালতে তাদের প্রতিবছর অডিট করার কথা উত্থাপন করেছে। বাই দ্য ওয়ে আমি এখানে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে আর কিছু বলতে চাচ্ছি না।

    এডওয়ার্ড সাঈদ পড়েছো ভাল কথা নারীদের সাইকোলজী এবং তাদের কার্যকলাপ বুঝতে হলে পার্ল এস বাকের 'To my daughters with love' পড়ে দেখতে পারো। নিজের যোগ্যতায় যে নারী উঠে আসে সে নারী অনেক যুক্তিবাদী হয় কিন্তু স্বামী বা বাপের যোগ্যতায় যে নারী ক্ষমতা পায় তারা অনেক স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠে। হীনমন্যতা এখানে বড় ইস্যু। ইমেলডা মার্কোস, সম্প্রতি তিউনিসিয়ার ক্ষমতাচ্যুত এক্স-ফার্স্ট লেডী এরকম অনেক উদাহরণ দেওয়া যায়। আর উচুঁ পদে নারীদের অযোগ্যতার ভোগান্তি নেমে আসে ্সমাজের নীচু স্তরের নারীদের মধ্যে। উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ের মতো তখন অবচেতন মনের ক্ষোভ পুরুষরা ঝালিয়ে নেয় অসহায় নারীদের উপর। আমি জানি না দেশে সম্প্রতি নারী নির্যাতন বাড়ার পেছনে এটা একটা কারণ কিনা। আমার ' আসন চাই বাসে, সংসদে নয়' লেখায় আমি এই বিষয়টা আলোকপাত করবো।

    তুমি নিজেও এখন পি এইচ ডি করছো - আশা করি এ্টা বুঝবে যে ফ্রী ডক্টরেট ডিগ্রী আর লেখাপড়া করে ডক্টরেট ডিগ্রী পাওয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে।


    “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
    ― Mahatma Gandhi

    জবাব দিন
    • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

      আপু,
      উপজেলা দিয়ে এরশাদের ক্ষমতা-বিকেন্দ্রীকরণের দাবী অন্যায্য। মূলতঃ এরশাদের উপজেলা ব্যবস্থা দিয়ে এরশাদ নিজের ক্ষমতাকে ঢাকার বাইরে সংহত করতে চেয়েছিল, কারণ ঢাকাকেন্দ্রিক রাজনীতিতে সে সুবিধা করতে পারছিলো না। এরশাদ ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরনে সত্যিকারে আন্তরিক হলে কবরে এক পা' দিয়েও পদ আঁকড়ে থাকার কথা না, আর পার্টিকে নিজের সম্পত্তির মতো ব্যবহার করতো না। শুধু এরশাদ কেন, তার আগে পরে সকল নেতাই নিজেদের ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করতে যা' যা' দরকার সব ব্যবস্থা নিয়েছিল। কিন্তু ডঃ ইউনূসও কি তাদের থেকে আলাদা কিছু করেছেন+করছেন? তিনিও ত' নিজের ক্ষমতাই কেন্দ্রীভূত করার চেষ্টা-তদবির করে যাচ্ছেন। তাইলে, রাজনীতিক নেতাদের সাথে তার পার্থক্য কোথায়?- হ্যাঁ, একটা পার্থক্য আছেঃ নেতারা দেশের নামে নিজেদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে, আর ডঃ ইউনূস দরিদ্র্যদের কল্যাণের নামে করেন।

      ক্ষুদ্রঋণের কথা বলতে গেলে চর্বিত চয়ন করা হয় টিনের চাল খুলে ফেলার কথা। এখন আমাকে বোঝাও তাহলে এই ব্যাংকের ৮৩ লাখ গ্রাহক থাকে কিভাবে?

      - আপু, এই যুক্তিটা গ্রহন করতে পারলাম না। টিনের চাল খুলে নেওয়ার পরও ৮৩ লাখ কেন, আরো বেশি গ্রাহকও করা সম্ভব ক্ষুদ্রঋণের ফিল্ডওয়ার্কারদের মাধ্যমে, যাদের চাকুরি+বেতন মূলতঃ টার্গেট-বেজড। আর, ক্ষুদ্রঋণের জন্য কেউ আবেদন করে না, গ্রামীন ব্যাংক নিজেই ঘরে ঘরে গিয়ে ঋণের মার্কেটিং করে।

      তুমি নিজেও এখন পি এইচ ডি করছো – আশা করি এ্টা বুঝবে যে ফ্রী ডক্টরেট ডিগ্রী আর লেখাপড়া করে ডক্টরেট ডিগ্রী পাওয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে।

      আপু, নিজে আমেরিকার একটা পিএইচডি প্রোগ্রামে আছি বলেই বুঝিনা কিভাবে ভ্যান্ডারবিল্ডের মতো ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ে একজন ডঃ তথ্য ছাড়াই শুধুমাত্র 'স্কুল-বিতর্কের যুক্তি' দিয়ে সাফল্য দাবী করে। এখন পর্যন্ত ডঃ ইউনূস কোন তথ্য দিয়ে ক্ষুদ্রঋণের দারিদ্র্য দূর করার মেকানিজমটা দেখাতে পারেননি। তিনি শুধু কথার মারপ্যাচ দিয়ে ধোঁকাবাজী করে যাচ্ছেন যা' ক্যানভাসাররা করে থাকে। এজন্যই আমি তাকে 'ডাহা মিথ্যুক' বলি।

      - পোষ্টের মূল কথা ছিল, আইনের শাসন আর আইনের অপব্যবহারের ক্ষেত্রে হাসিনা ও ডঃ ইউনূসের তুলনা। আমি বলেছি, তারা দুইজনই এক্ষেত্রে একই পথের পথিক, পার্থক্য যা' আছে তা' শুধুমাত্র মাত্রাগত। দুজনেই আইনকে নিজের ইচ্ছেমত ব্যবহার করে, আবার নিজের স্বার্থের প্রয়োজনে সেই আইন পরিবর্তনও করে।


      There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

      জবাব দিন
  3. মাহমুদের ক্ষুদ্রঋণ ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে আগের লেখাগুলো আমার কাছে যথেষ্ট চিন্তাশীল, ভালো ও যুক্তিসম্পর্ন মনে হয়েছে - যদিও অনেক বিষয়েই পক্ষ ও বিপক্ষ বিভিন্ন যুক্তি দেয়া যায়। তবে এই লেখার মধ্যে যুক্তির চাইতে ইউনুসকে ব্যক্তিগত অপছন্দ করার প্রতিফলনই আমি বেশি দেখতে পাচ্ছি।

    ১) এরশাদের সময়ে গ্রামীন ব্যাংক হয়েছে - ঠিক আছে, কিন্তু তাতে কি হয়েছে? গ্রামীনের সাথে এরশাদকে টেনে আনায় লেখাটা খাপছাড়া লাগল। তখন বাংলাদেশে যে সরকার থাকত, তাদেরকেই ইউনুস এপ্রোচ করতেন। গ্রামীন প্রকল্প শুরু হয়েছে ৭০ এর দশকে, কোন সরকার আছে না আছে - এর উপর ত কোনো ব্যাক্তিগত আইডিয়া ডিপেন্ড করতে পারে না। তোমার জানা আছে কিনা, জিয়ার সময়ে 'গ্রাম সরকার' চালু হয়েছিল। সেটা ইউনুসের আইডিয়া ছিল - তাই বলে এখনতো জিয়ার ভাল/খারাপ কিছু ইউনুসের উপর বর্তাবে না। 'তেভাগা খামার' নামেও ইউনুসের আইডিয়া কোন সরকার গ্রহন করেছিলেন। দেশোন্নয়নে ব্যাক্তিগত উদ্যোগ ও ব্রিলিয়ান্স কে সরকারিভাবে নিরুত্সাহিত করা একধরনের বোকামি। বাংলাদেশে অধিকাংশ বড় ইউনিভার্সিটিগুলো ইংরেজ অথবা আইয়ুব খানের আমলে তাদের অধ্যাদেশে হয়েছে। ক্যাডেট কলেজও হয়েছে আইয়ুব খানের অধ্যাদেশে। তাই বলে এসব প্রতিষ্ঠানকে তুমি তাদের নামের সাথে যুক্ত করে ছোট করতে পার না - যেমনটা পারনা গ্রামীন ব্যাংককে বা ইউনুসকে। ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে সমালোচনা করা, আর কোনো সরকারকে টেনে আনা - এরশাদ বা যে কেউ হোক, এক কথা নয়।

    ২) বাংলাদেশে ব্যাক্তি উদ্যোগের অনেক ভাল প্রতিষ্ঠান আছে। যেমন - বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, গনস্বাস্থ্যকেন্দ্র, ব্রাক - এমন আরো অনেক। এখন আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ, ফজলে হাসান আবেদ, বা জাফরুল্লাহ চৌধুরি এরা এদের ব্যক্তিগত ভিশন অনুসারে এগুলো গড়ে তুলেছেন। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে এরা সমার্থক। এটা কোনো পার্টি না যে - আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ তার এক শিষ্য গড়বেন বা গড়তে পারবেন যে কিনা তার ভিশন লালন পালন করবেন। ইউনুস আর গ্রামীনও সমার্থক। "বিকল্প নের্তৃত্ব গড়ে না তুলে ডঃ ইউনূস সুদীর্ঘ তিন দশক ধরে নেতৃত্বে থাকায়" - এ কথা দিয়ে তুমি কি বোঝাতে চাইছ? ইউনুস কি কোনো পার্টি খুলে বসেছেন যে সেখানে একনায়ক থাকবেন বা নেতৃত্ব লালন পালন করবেন? গ্রামীন সম্পুর্ণ রকম ব্যক্তিগত ভিশনের প্রতিষ্ঠান হলেও সরকারী মালিকানা আছে। তবুও ইউনুস তো সরকারি সোনালী বা জনতা ব্যাংকের এমডি নন যে তাকে ও তার গড়া প্রতিষ্ঠানকে সরকারি অন্য প্রতিষ্ঠানের মত গন্য করা হবে। এখানে আইনগত দিকগুলো নিয়ে আলোচনার অবকাশ আছে যেটা এখন হচ্ছে - যেটার আলোচনায় আমি যেতে চাচ্ছিনা। ভ্যালেরি টেইলর তার ব্যাক্তিগত ভিশনে ঢাকার অদুরে সিআরপি গড়ে তুলেছিল। কোনো প্রতিষ্ঠানই সরকারি সাহায্য ছাড়া চালানো যায় না। তাই সিআরপিও সরকারিই ছিল। তাই বলে কোনো ভিশনারি প্রতিষ্ঠাতাকে বাদ দিয়ে দেয়া সেই প্রতিষ্ঠানের জন্য ক্ষতিকর, এ ব্যপারে কি কোনো সন্দেহ আছে? ভ্যালেরি টেইলরকে বাদ দিয়ে দেয়া হয়েছিল আগের সরকারের আমলে। ইউনুস 'মাইনাস টু' তে ছিল বা নতুন পার্টি করেছিল, যে কোনো কারনেই হোক, হাসিনা ব্যক্তিগত ঝাল মেটাতে এগুলো করছেন। এ নিয়ে কি কোনো সন্দেহ আছে? সরকার কোনো প্রতিষ্ঠানের বা দেশের ভালো করার উদ্দেশ্যে ইউনুস নিয়ে এসব করছে না। বিকল্প নের্তৃত্বের কথা যখন বলছো - বাংলাদেশে ক্ষুদ্রঋণের অসংখ্য এক্সপার্ট আছে, যারা ইউনুসের মতাদর্শি ও তার 'শিষ্য' - বিকল্প নের্তৃত্বের আসলে কোনো অভাব নেই। সরকারের ভাল উদ্দেশ্য থাকলে ইউনুসকে সেভাবেই বলা যেত যে দু বছরের মধ্যে সে যেন ট্রানজিশন করার ইনিশিয়েটিভ নেয় বা সে ধরনের কিছু।

    ৩) 'যারে দেখতে নারি তার চলন বাকা' - এই লেখাটা পড়ে আমার তাই মনে হচ্ছে।

    ৪) এটা যে পুরাপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রনোদিত ও ইউনুসকে 'হ্যারাস' করার জন্য, এই লেখা পড়ে মনে হচ্ছে না যে তুমি সেটা মনে কর।

    ৫) তুমি লিখেছো - "কাজেই, দরিদ্রদের জন্য অনুদান হিসেবে গ্রামীনের কাছে আসা বৈদেশিক অর্থ আইনতঃ পৃথক অন্যান্য সংস্থায় স্থানান্তর করা অবশ্যই আইনের পরিপন্থী।" এ ব্যাপার টা আগেই সমাধান হয়ে গেছে। তারপরও তুমি এটা টেনে এনেছ। আমি খুব দুখিত, কিন্তু এটা পড়ে আমার মনে হচ্ছে, তুমি 'বুকিশ' ভাবে বেশি চিন্তা কর - এটা আমি খারাপভাবে বলছি না - তোমার জানা অনেক বেশি বলেই হ্য়ত সেটা পারো। কিন্তু থিওরী দিয়ে বাংলাদেশে হাজার হাজার ইকোনোমিস্ট কিছু করতে পারেনি - যেটা ইউনুস করেছেন প্রাকটিকালিটি দিয়ে। কোনো প্রতিষ্ঠান (দেশে) চালানো নিয়ে তোমার কি কোনো ধারনা আছে? আর ইউনুস কি টাকা পয়সা মেরে দিয়েছেন? 'যারে দেখতে নারি তার চলন বাকা' - তোমার পয়েন্ট 'পাঁচ' এর আলোচনায় আমার তাই মনে হয়েছে।

    ৬) তোমার প্রধান যুক্তি ক্ষুদ্রঋণ কাজ করে কিনা সেটা নিয়ে, তার চেয়েও বড় কথা তুমি এটার কোনো পজিটিভ দিকই দেখতে পাওনা, শুধুই নেগেটিভ - তোমার আগের লেখাগুলো থেকে আমার তাই মনে হয়েছে। এটা আমার ঠিক মনে হয়নি - ভালো, খারাপ দুটো দিকই এর আছে। তোমার অনেক বিশ্লেষন পড়লেও আমি এখনো কিছু পড়িনি যেখানে তুমি ডেফিনিটিভ তথ্য দিয়ে কিছু দেখিয়েছো। ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে তোমার ধারনা কি থিওরী ও থিওরীর বাইরে, দুটাতেই সমান? তুমি কিছু লোন ডিফল্টারদের কথা বলে পুরো প্রতিষ্ঠানকে বাতিলা করবে, কিন্তু সেটা কত পার্সেন্ট বেলায় হয় সেটা বলবে না। আবার থিওরী ঘেটে কোনো কোনো বিষয়ে পার্সেন্ট তথ্য দিবে, যখন সেটা কেবল তোমার যুক্তিকে প্রখর করবে, সেটা হতে পারেনা। আমি তোমার ব্যাক্তিগত অপছন্দের বাইরে উঠে গ্রামীন নিয়ে (নেগেটিভ ও পজিটিভ) একটা ডেফিনিটিভ কিছু পড়ার আশায় রইলাম।

    ৭) আমেরিকাতে ক্রেডিট কার্ড কোম্পানিগুলো বিভিন্ন হারে লোন দেয়। এ হার অনেকে ৫%-১০% দেয়, অনেকে ২৫%-৩০% দেয় (দুর্বল ক্রেডিটের লোকদের)। কিন্তু এটা কোনো ইনকাম জেনারেটিং লোন না - অধিকাংশ বেলায়ই ভোগ্য/বাড়তি ব্যয় বা ফরেন ষ্টুডেন্টদের বেলায় খেয়েদেয়ে বেচে থাকায় কাজে লাগে। যারা ক্রেডিটওয়ার্দি, এ সুবিধাটা কিন্তু শুধু তাদের জন্যই। দু'মাস এদের লোন পরিশোধ না করে কেউ শান্তিতে ঘুমাতে পারে না। তুমি যেহেতু ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে গবেষনা করেছ, তোমার কি ক্রেডিট কার্ড আছে? এটাকে তুমি কিভাবে দেখো? যেকোনো লোনের ব্যাপারকেই?

    ৮) আমেরিকাতেই ২৫০% হারে লোন দেয় - এমন প্রতিষ্ঠানও আছে - লিগ্যালি। এদেরকে বলা হয় 'পে ডে লোন ও চেক ক্যাশিং' - হাজার হাজার দোকান ও কোম্পানি আছে এদের - সব নেইবারহুডে। এরা লোন শার্ক। বাংলাদেশেও গ্রামে মহাজন ছিল ও আছে। অনেক হারে লোন দেয়।

    ৯) গ্রামীনের লোনের হার নিয়ে ডেফিনিটিভ কিছু কেউ কি লিখবে। গ্রামীন কোন পর্যায়ে পরে। তাদের ইন্টারেষ্ট কি কোম্পানির চালানোর জন্যই/সার্ভাইভালেই ব্যবহার করা হয় - নাকি এ নিয়ে কেউ কোটিপতি হচ্ছে? রবীন্দ্রনাথ পতিসরে ক্ষুদ্রঋণ চালু করে চালাতে পারেন নি - সেল্ফ-সাস্টেইন্ড কোনো উপায় তার জানা ছিল না, যেটা ইউনুস পেরেছেন। কিন্তু এতে কি মানুষের উপকার হচ্ছে না তাদের ঘুম হারাম হয়ে যাচ্ছে?

    ১০) "গরিবদের ইনকাম জেনারেটিং লোন দেয়া যায় - এটা থিওরী ও প্রাকিটিকালি দেখানো - এটা ইউনুসের প্রধান কনট্রিবিউশন" - আমার এ কথার সাথে কি তুমি একমত?

    ১১) কোনো কমেন্ট ব্যাক্তিগতভাবে নিও না, প্লিজ। যুক্তির খাতিরেই সব কিছু বলা।

    জবাব দিন
    • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

      সোহেল ভাই,
      আপনার দীর্ঘ মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

      এখন আপনার মন্তব্যের উত্তরে আমার অবস্থানটা আগে পরিষ্কার করি-

      ১। আপনি ঠিকই ধরেছেন যে, এই পোষ্টে আমি ব্যক্তি ডঃ ইউনূসের সমালোচনাই বেশি করেছি। পোষ্টের শিরোনামেই সেটা ষ্পষ্ট। এখানে আমি মূলতঃ বলতে চেয়েছি যে, হাসিনার মত তিনিও আইনকে নিজের জন্য ব্যবহার+অপব্যবহার করেন, দুইজনের লক্ষ্য আলাদা- এই যা'।

      মহৎ কোন উদ্দেশ্যে আইন ভাংলে/সংশোধন করলে আমার কিছু বলার ছিল না। সেক্ষেত্রে ক্ষুদ্রঋণের দারিদ্র্য দূর করার দাবী প্রমাণ করতে পারলেই কেবল আমি ডঃ ইউনূসের পক্ষে যাব। কিন্তু আফসোস, আমার এ' যাবৎ যাপিত জীবনের এবং ১৪ বছরেরও বেশি ইউনিভার্সিটি পড়ার অভিজ্ঞতায় কোথাও কোন তত্ত্বীয় বা বাস্তব প্রমাণ পাইনি ক্ষুদ্রঋণকে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে সফল বলার মত। আর একারণেই যখন শুধুমাত্র চাপাবাজী+ডিগ্রীর জোরে একজন ক্ষুদ্রঋণকে এবং সেইসাথে নিজেকে গরীবের বন্ধু বলে জাহির করে, তখন তা'কে মিথ্যাবাদী না বলে উপায় কি? যে ধরণের যুক্তি দিয়ে ডঃ ইউনূস ক্ষুদ্রঋণকে সফল বলেন, তা' দিয়ে পিএইচডি ত' দূরের কথা, একটা টার্ম-পেপারেও পাস মার্ক পাওয়া যাবে না আমেরিকার কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে।

      ভাইয়া, দুনিয়ায় সবকিছুরই পেজিটিভ নেগেটিভ দুই দিক আছে। কথা হচ্ছে, কোনটা প্রধান হয়ে তা'কে ডিফাইন করে। আমার বিবেচনায় ক্ষুদ্রঋণ মূলতঃ ক্ষতিকর। তাই আমি এর শুধু নেগেটিভটাই দেখি। তাছাড়া এর পজিটিভ দিক নিয়ে বলার লোকের ত' অভাব নাই 🙂

      ক্রেডিট কার্ডের সাথে ক্ষুদ্রঋণ তুলনীয় নয়, মৌলিক কারণেই। একটা পিওর ব্যবসা, আরেকটা সমাজসেবা (অন্ততঃ তানারা সেটাই দাবী করেন, আইনও সেভাবেই দেখে)।

      “গরিবদের ইনকাম জেনারেটিং লোন দেয়া যায় – এটা থিওরী ও প্রাকিটিকালি দেখানো – এটা ইউনুসের প্রধান কনট্রিবিউশন” – আমার এ কথার সাথে কি তুমি একমত?

      ভাইয়া, বিনয়ের সাথে জানাচ্ছি যে আমি একমত না। আমি বাক্যটাকে এইভাবে লিখবোঃ
      "গরীবদের লোন দিয়ে দাতা/ইনভেষ্টরদের জন্য ইনকাম জেনারেটিং লোনের ব্যবসা করা যায়- এটা থিওরী এবং প্র্যাক্টিক্যালী দেখানো- এটা ইউনূসের প্রধান কন্ট্রিবিউশন"।

      ভাইয়া, কোন কথাই ব্যক্তিগত ভাবে নেইনি। সিসিবিতে এসে যদি মন খুলে কথা বলতে না-ই পারলাম, তাইলে কিসের কি...। আপনি কি বলেন? 🙂


      There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

      জবাব দিন
  4. গুলশান (১৯৯৯-২০০৫)

    আমার কিন্তু ভাইয়া এখনও ব্যক্তি ইউনুস নিয়ে কোন আগ্রহ নেই। সে দায়িত্বে থাকুক বা না থাকুক, দারিদ্র বিমোচনে ক্ষুদ্রঋণ বা গ্রামীণ ব্যাঙ্কের ভূমিকাটাই বড় কথা। তারা ব্যর্থ না সফল, কি করলে সিস্টেমটা দারিদ্র বিমোচনের উপযোগী হতে পারে- সেটাই আলোচনায় আসা উচিত। যেটা আপনার আগের আলোচনাগুলোতে আমরা দেখেছি। ইউনুস থাকুন বা না থাকুন, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ভাগ্যের পরিবর্তনই বড় কথা।

    জবাব দিন
  5. নঈম (৮৭-৯৩)

    একটা কথা আপু দারূণ বলেছেন। আমিও একমত, আমাগো এরশাদ চাচাই সকল নেগেটিভের মধ্যে শূণ্যের বা পজিটিভের কাছাকাছি, যাকে বলে মন্দের ভাল। চাচার পড়ে আর কোন বাপের বেটা পাইলাম না। [যারা চাচার কোপানলে পড়ছেন তাদের কাছে ক্ষমা চাইলাম] শত সমালোচনার মধ্যেও এবং অনেক দোষে দুষ্ট হয়েও পর্যায়ক্রমে বঙ্গবন্ধু, জিয়াউর রহমান এবং এরশাদ চাচাই দেশের জন্য কিছু স্বপ্ন দেখিয়েছেন, কিছু করেও দেখিয়েছেন। আর দু'জনের নাম উল্লেখ না করলেই নয়, যারা কিনা স্বপ্ন দেখিয়েছেন, কিন্তু করে দেখাতে পারেন নি- জে: খালেদ মোশাররফ আর ক: তাহের। চারনেতা বেচে থাকলেও হয়তো ভিন্ন কিছু পেতে পারতাম।

    একটা বিষয়, আপু, আপনি নারীদের কথায় হটাৎ এতোবড় মন্তব্য করে ফেললেন। কোন ভুল বুঝাবুঝি নয়তো। যতটুকু বুঝলাম, মিডিয়া কিভাবে একপেশে বক্তব্য দিয়ে কাউকে ভাল বা খারাপ ভাবে উপস্থাপন করে, মাহমুদ সেই উদাহরণ দিয়েছে মাত্র, অন্য কিছুতো নয়।

    জবাব দিন
    • ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

      নঈম - আমাদের স্বঘোষিত লেডিকিলার এক্স-প্রেসিডেন্ট দশ বছরে দুর্নীতিকে জাতির রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করিয়ে দিয়েছে। এরজন্য তার ক্ষমা নেই।
      আর বাকী কী ভুল বুঝতে তা বুঝতে পারলাম না। দেশ ছাড়ছি আমি আমার আত্মার স্বাধীনতা ভোগ করবো বলে। সেই স্বাধীনসত্তা থেকে যা বুঝি তাই বলছি।


      “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
      ― Mahatma Gandhi

      জবাব দিন
  6. Forgive me , for the english . Answer to prof yunus sticking to post is resolved partially in todays 05 march prothom alo . At times person is bigger than organization .in case of jobs ,apple did crumble in 90s when he was removed but now is challenging ms after he returned . And apple is a public ltd co not a private one .it happens when the basis of the organization is ideas not some system based product . I wrote once before that there are definitely very sensitive issues that grameen needs to address .but no alternative in applicable state is there now in socio economic field that addresses poverty in a mass scale . And about resolving dues through force , well even though at an organization of this size micro managing is not possible , i leave it on to the reader to really assess how much is prof yunus responsible for things happening at that level ,but though harsh but at times you have to be cruel only to be kind .being human may cost the future of many other . And also we all are pointing out the issues but none has even by a long shot come up with an alternative .and one thing hasina khaleda vs prof yunus , prof gives us hope , gives us pride ,world wide honors us ,has shown that we can build organizations of humongous size and sustain it , that we are unlike etiopia or somalia . And above all he has done something that i cannot even dream of .my hats of to him .and about ershads regime many roads were constructed during his regime should we break all those ?
    Ever one stay well and forgive me for english . As a cc brother /junior to many i think you will
    Mahrab

    জবাব দিন
    • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

      ভাই,
      বাংলা ব্লগে ইংরেজী পড়া আসলেই কষ্টের। আর পরিচয়টা শুরুতে না পেলে আরেকটা অস্বস্তি থেকে যায়। কারণ, এই ব্লগে আমরা সকলেই একটা সম্পর্কের মধ্যে জড়িয়ে থাকি।

      And about resolving dues through force , well even though at an organization of this size micro managing is not possible

      - মূল বিষয় দারিদ্র্য দূর করা, অরগানাইজেশন প্রতিষ্ঠা তার পরের। বেড়ায় যদি ক্ষেত খেয়ে ফেলে, তাইলে সেই বেড়ার কি দরকার? দারিদ্র্য দূর করতে গিয়ে যে অরগানাইজেশন নিজের অস্তিত্বের জন্য দরিদ্রকেই দূর করে, তা'কে সমর্থন করার মতো করে ভাববার শিক্ষাটা এখনো হয়ে ওঠেনি।

      but at times you have to be cruel only to be kind

      - ডেভেলপমেন্ট ইকোনোমিষ্টরা এই যুক্তিটা নিয়ে আসে শুমপিটারের 'থিওরী অব ক্রিয়েটিভ ডিশট্রাকশন' থেকে। এটা আর জীবিত নাই, এটা এখন শুধুই কঙ্কাল। আশা করি বুঝতে পেরেছে আমি কি বলতে চাই।


      There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

      জবাব দিন
  7. Mahrab (1984-1988) third intake ccc
    Mahmud , i know it is hard to accept english in a bengali blog , and thats why i atarted and.rounded up with apology .
    Your no one point"if someone trying to reduce poverty dwstroys the poor " , i highlighted on the point that this are stray incidents , and i think these doesnt constitute even a single digit percentage ( guess work) , and being at the top prof cannot be held responsible for that .these are issues more related to field force .
    About point two i havent read anyone of the said author . But few things are not theories these are more of management philosophies ,that has lasted forever .you have to be cruel..... Is one such .it has not died and will not . For the betterment of the masses the interest of the few must be given up at times . If you are lenient with one ,going out of the way , than when similar issues arise elsewhere what do you do ? And eventually what happens?
    That is why you follow the system though it may sound harsh at times but it ensures justice upto a level . You may blame the system but not the act .
    I have worked in very big organizations and i have seen that in the long run emotional solutions doesnt work but adherence to the system does . System removes the chances of whimsical behaviour of persons .if anything needs to be changed that is the system .
    Stay well

    জবাব দিন
  8. সাইফ শহীদ (১৯৬১-১৯৬৫)

    মাহমুদ,

    তোমার লেখা এবং মন্তব্য আমি সব সময় আগ্রহ সহকারে পড়ি। তুমি খুব সুন্দর ভাবে যুক্তি-তর্ক দিয়ে তোমার পয়েন্ট বোঝাতে চেষ্টা করো - এটা একটি বিশেষ গুন। তোমার মত আমার আরও কিছু ঘনিষ্ট বন্ধু আছে যারা সকাল-বিকেল প্রফেসর ইউনুসকে নিয়ে তার ত্রুটি গুলি তুলে ধরতে পছন্দ করে।

    তোমার কাছে আমার অনুরোধ - ইউনুসের পিছনে এতটা সময় নষ্ট না করে বরং চেষ্টা করো এখন থেকে যাতে ভবিষ্যতে দেশকে এবং সমগ্র বিশ্বকে বিশেষ কিছু একটা দিয়ে যেতে পার।

    আমার জীবনে প্রফেসর ইউনুস যে সন্মান এনেছেন তাতেই আমি খুশী। তাকে আমি চিনি না, জানি না। আমি হাসিনা বা খালেদা - কারও দলের না। আমার সামান্য বুদ্ধিতে এটুকু বুঝি ইউনুস একটা নতুন পথ দেখিয়েছে তার জীবনের দীর্ঘ ৩৫ বছর ব্যয় করে। ৯৩ লাখের মধ্যে যদি ১০,০০০ মানুষও এর ফলে দারিদ্যের কষাঘাত থেকে বের হয়ে আসতে পারে - তবে সেটাও বা কম কি। তুমি এবং এই প্রজন্মের যারা আছো - আশা করবো তোমরা তার পদ্ধতির আরও উন্নতি করাবে বা নতুন কোন উন্নত পদ্ধতি আবিস্কার করবে।

    আমার জীবনে হয়তো সেই দিন দেখে যেতে পারবো না। তাই আমার জীবনে প্রফেসর ইউনুসের দেওয়া সামান্য গর্বটুকু নিয়েই বাচঁতে দাও না।

    তোমাদের সবার শুভ কামনায়।

    জবাব দিন
    • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)
      ৯৩ লাখের মধ্যে যদি ১০,০০০ মানুষও এর ফলে দারিদ্যের কষাঘাত থেকে বের হয়ে আসতে পারে – তবে সেটাও বা কম কি।

      - সাইফ ভাই, আমার যুক্তি ঠিক আপনার বিপরীত দিক থেকেঃ ৯৩ লাখের মধ্যে যদি ১০,০০০ মানুষের অবস্থা আগের তুলনায় আরো খারাপ হয়, তাহলে আমার ঘোর আপত্তি আছে। আর বাস্তবে এর হারটা কয়েকগুণ বেশি। আমার পড়াশোনায় আর বাস্তব অভিজ্ঞতায় যা দেখেছি, ক্ষুদ্রঋণ নির্দিষ্ট হারে চরম দারিদ্র্য উৎপাদন করে। - আমার জানাটা যখন এমন, তখন ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে গর্ব করার আসলেই উপায় নেই।

      এইবারের নোবেল শান্তি বিজয়ী চীনের জিয়াবাও ঘোষনা করেছে যে, ভিয়েতনাম যুদ্ধ, ইরাক যুদ্ধ, আফগানিস্তানের যুদ্ধ এসবই যথার্থ!!! তা'কে নিয়েও অনেক চাইনিজ গর্বিত হওয়ার বদলে লজ্জিত হচ্ছে। নোবেল শান্তি পুরস্কার মানেই যে গর্বের বিষয়- এইটা বোধ করার মত সৌভাগ্য আমার হলো না।


      There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

      জবাব দিন
    • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)
      আমার জীবনে প্রফেসর ইউনুসের দেওয়া সামান্য গর্বটুকু নিয়েই বাচঁতে দাও না।

      - সাইফ ভাই,
      আমার কথায় এতো কষ্ট পেলেন!!!

      ক্ষুদ্রঋণ আর ডঃ ইউনূসকে নিয়ে আপনাদের আবেগের মাত্রাটা আমি আসলে বুঝতে পারিনি । পারলে কখনোই এসব লিখতাম না। অযথাই আপনাদের মনোকষ্টের কারণ হবো কেন বলেন?

      ভাইয়া, আপনাকে কথা দিচ্ছি, ডঃ ইউনূস বা ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে আর কখনো আমার কাছ থেকে কিছু দেখবেন না সিসিবি'তে।


      There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

      জবাব দিন
      • সাইফ শহীদ (১৯৬১-১৯৬৫)

        মাহমুদ,

        ভাইয়া, আপনাকে কথা দিচ্ছি, ডঃ ইউনূস বা ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে আর কখনো আমার কাছ থেকে কিছু দেখবেন না সিসিবি’তে।

        না, আমাকে এতটা ভালবাসতে হবে না। সত্যি কথা সব সময়ই লিখবে। আমি আগেই বলেছে প্রফেসর ইউনুসকে আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিনিনা এবং আমার বিশেষ কোন ব্যাক্তি পুজায় কখনো আগ্রহ ছিল না এবং এখনো নেই। মূলত 'তুমি' 'আমি'-র মতই এক জন সাধারণ মানুষ তিনি। তিনি যথা সময়ে উত্তরসূরী তৈরী করা আরম্ভ করেননি, ইত্যাদি অনেক কিছুই ত্রুটি আছে তার।

        মুহিত ভাইকেও আমি চিনি। তার বয়স এখন ৮০-র উপরে। ফিনান্স মিনিস্ট্রি চালানো কি একটা ব্যাংক চালাবার চাইতে সহজ কাজ? সুতরাং এই বয়সের অজুহাতে হঠাৎ করে ডঃ ইউনুসকে তার নিজের গড়া প্রতিষ্ঠান থেকে এই ভাবে বাদ দেওয়া কোন ভাবেই স্বাভাবিক নয়। অন্যের কাছ থেকে সন্মান পেতে হলে অন্যকে সন্মান দিতে শিখতে হবে আমাদের।

        আমি নিজে অনেক দিন টেকনলজির 'প্রসেস ইম্প্রুভমেন্টে'-এর উপর কাজ করেছি। আমি অতীব খুশী হবো যদি তুমি নিজে ডঃ ইউনুসের প্রতিষ্টানে 'প্রসেস ইম্প্রুভমেন্টে'-এর মাধ্যমে এমন কিছু সৃষ্টি করতে পারো যার ফলে গরীবরা এখন যে চক্রের মধ্যে আটকে যায় সেখান থেকে বের হয়ে আসতে পারে।

        সেই শুভকামনা রইল ।

        জবাব দিন
        • ফয়েজ (৮৭-৯৩)
          মুহিত ভাইকেও আমি চিনি। তার বয়স এখন ৮০-র উপরে। ফিনান্স মিনিস্ট্রি চালানো কি একটা ব্যাংক চালাবার চাইতে সহজ কাজ?

          এই জিনিস্টা মাথায় ঘুরছে ভাইয়া কয়েকদিন থেকে। ফেসবুকে স্ট্যাটাসও দিলাম একটা। তবে আমার মনে হচ্ছে সবচেয়ে সহজ কাজ হচ্ছে সরকার প্রধান হওয়া। রেকর্ড বলছে এখানে বয়স কোন ব্যাপারই না, দুধের বাচ্চা থেকে শুরু করে বুড়ো হাবরা সবাই রাস্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধান হতে পারেন। অথবা "খড়ম" হলেও আপত্তি নেই।

          মনে হচ্ছে ছোট কাজে যোগ্যতা বেশী লাগে। 😀


          পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

          জবাব দিন
        • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)
          সত্যি কথা সব সময়ই লিখবে।

          - সাইফ ভাই, ঠিকই বলেছেন। কিন্তু 'সত্য' ত' একটা নয়, অনেক (পোষ্টমডার্নিজম এমনটাই প্রমাণ করে দিয়েছে অকাট্যভাবে)। উদাহরণ হিসেবে দেখতে পারেন আমার এই পোষ্টের একদম শেষে মফস্বলের কোন এক অখ্যাত সাংবাদিকের এক লেখার একটা লিঙ্ক । ঐটাও কিন্তু সত্য। কিন্তু সেই সাংবাদিকের না আছে ডিগ্রী, আর না আছে অন্তর্জাতিক পুরস্কার। কাজেই, ক্রেডেনশিয়ালের অভাবে তার বয়ান বিবেচনাতেই আসে না। ডিগ্রীধারীর বয়ানের বিপরীতে তা' মিথ্যা বা অবিশ্বাস্য বা ভুল জ্ঞান হিসেবে গৃহীত হয়। পাওয়ার/নলেজ আমাদের তুখোর বিবেচনাবোধকেও ভোতা করে দেয়।

          আমি অতীব খুশী হবো যদি তুমি নিজে ডঃ ইউনুসের প্রতিষ্টানে ‘প্রসেস ইম্প্রুভমেন্টে’-এর মাধ্যমে এমন কিছু সৃষ্টি করতে পারো যার ফলে গরীবরা এখন যে চক্রের মধ্যে আটকে যায় সেখান থেকে বের হয়ে আসতে পারে।

          দারিদ্র্য দূর করতে ক্ষুদ্রঋণ লাগবেই?!! তাও আবার ডঃ ইউনূসের প্রসেসটাই??- আমি ক্ষুদ্রঋণকে এতোটা আবশ্যক ভাবি না। আমার ধারণায়, ক্ষুদ্রঋণ দরিদ্রদের জন্য প্রধানতঃ খারাপ। এটাই বাস্তব (এবং সত্য)। যথেষ্ট তথ্য এবং যুক্তির আলোকেই আমি এই উপসংহারে পৌঁছেছি। কাজেই, এটাকে আমি ইম্প্রুভ করার কথা ভাবিনা।


          There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

          জবাব দিন
    • নঈম (৮৭-৯৩)
      তোমার কাছে আমার অনুরোধ – ইউনুসের পিছনে এতটা সময় নষ্ট না করে বরং চেষ্টা করো এখন থেকে যাতে ভবিষ্যতে দেশকে এবং সমগ্র বিশ্বকে বিশেষ কিছু একটা দিয়ে যেতে পার।

      আপনার অনুরোধের শেষের অংশটি ভাল লাগলো। আমাদের সবার উচিৎ ভবিষ্যতে দেশকে এবং সমগ্র বিশ্বকে বিশেষ কিছু একটা দিয়ে যেতে চেষ্টা করা। তবে কি দেয়া যায় বা দেবার পদ্ধতিটা কি হবে সেখানে হয়তো দ্বিমত থেকে যাবে। যেমন আমার অনুভূতি হচ্ছে - মাহমুদ ক্ষুদ্র ঋণের মরণগ্রাস হতে দেশ ও বিশ্বকে উদ্ধারে চেষ্টা করে যাচ্ছে। এমন হতে পারে মাহমুদ বা তারই কোন উত্তরসূরী (বাংলাদেশীও হতে পারে) এ কাজের জন্য কোন আন্তর্জাতিক পুরুষ্কার পেল!

      পুরো বিষয়টাই আসলে দৃষ্টিভঙ্গির। কে কিভাবে দেখে।

      জবাব দিন
      • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)
        আমার অনুভূতি হচ্ছে – মাহমুদ ক্ষুদ্র ঋণের মরণগ্রাস হতে দেশ ও বিশ্বকে উদ্ধারে চেষ্টা করে যাচ্ছে।

        - নঈম ভাই, ধন্যবাদ আমার অবস্থানটা বোঝার জন্য।

        অবস্থাটা এমন দাড়িয়েছে যে, ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে সমালোচনামূলক কথা বলতে গেলেই লোকজন সেটাকে ডঃ ইউনূসের মহত্বের প্রতি আঘাত হিসেবে ধরে নেয় এবং তাক মান-ইজ্জত রক্ষার জাতীয় দায়িত্বে নেমে পড়ে। রাজনীতিবিদদের খারাপ দিকগুলোর সাথে তার ভালো দিকগুলো তুলনা করতে যেয়ে অযৌক্তিকভাবে তাকে মহান দেখা+দেখানোর যে চেষ্টা, আমি শুধু সেটারই অসারত্ব আলোচনা করেছি এই পোষ্টে।


        There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

        জবাব দিন
  9. ফয়েজ (৮৭-৯৩)

    মাহমুদ, প্রথমেই বলি, তোমার লেখাটা আমি পড়িনি, দুয়েক্টা কমেন্ট পড়েছি, তাও বিনা মনোযোগে। 🙂

    আমি সমস্যাগুলোকে আলাদা আলাদা করে দেখতে আগ্রহী, হয়ত অনেকের কাছেই এটা একটা ভুল পদ্ধতি মনে হতে পারে।

    আমি ক্ষুদ্র ঋনের একজন সমালোচক, একথা বহুবার বলেছি, সাথে এটাও বলেছি এটা একটা নতুন পদ্ধতি, এবং এখন পর্যন্ত এর চেয়ে ভালো কোন পদ্ধতি নেই, হয়ত এর অনেক ভুল ক্রটি আছে, রেক্টিফিকেশন দরকার। তাই বলে আমার ঘরের যে ছেলেটি আমার আশেপাশের গ্রামে আমার সম্মান বাড়িয়েছে তাকে উলংগ করে ঘর থেকে বের করে দেয়াটা আমার কাছে "নোংরা তৃতীয় শ্রেনীর ইতরামো" একটা কাজ ছাড়া আর কিছু মনে হয়নি।

    আমার রাজনীতিবিদরা যে সরীসৃপ গোত্রীয় ধ্যান-ধারনা নিজেদের মধ্যে পুষে রাখেন, তা বুঝতে খুব একটা মেধা লাগে না।


    পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

    জবাব দিন
  10. রাব্বী (৯২-৯৮)

    আমার মনে হয়, ড. ইউনূসের রাজনৈতিক অভিপ্রায় মানুষ যেমন সমর্থন করেনি ঠিক তেমনি তাকে এখন সরকার যে অসম্মানজনক অবস্থায় ফেলছে সেটাও মানুষ সমর্থন করছে না। ড. ইউনূসকে হেনস্থা করে মাইক্রোক্রেডিট বা গ্রামীণ ব্যাংকের কি কোন উপকার হচ্ছে? বিষয়টি তো আইনের শাষন নয়, এটি হলো একজন ইউনূসকে রাজনৈতিকভাবে হেনস্থা করা। এখানে ড. ইউনূসকে সিঙ্গেল আউট করা হচ্ছে এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে ক্রিমিনালাইজিং প্রক্রিয়ার দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।

    অর্থমন্ত্রীর তথ্যের উপর নির্ভর করলে আমরা দেখবো যে উনি প্রথমে বেশ যুক্তিযুক্ত কথাই বলেছেন। ম্যাডাম প্রাইম মিনিষ্টার যখন ড. ইউনূসকে "গরীবের রক্তচোষা" বলেছেন, তারপরে উনি রাজনৈতিকভাবে নতুন করে একই সুরে কথা বলা শুরু করেছেন। অর্থমন্ত্রী যদি একইভাবে শেয়ার বাজার বা বাজারে সিন্ডিকেট চক্রের বিষয়ে এমন স্বপ্রণোদিত হয়ে আইনের শাষন প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট হতেন তাহলে বুঝতাম উদ্দেশ্য মহৎ। সেখানে তো উনি ফেলটু মেরেছেন। এই যে আইনের দোহাই দেয়া হচ্ছে তাতে মাইক্রোক্রেডিটের রেগুলেটরি যে সমস্যা সেখানে কি সমাধান করা হচ্ছে? এখন পর্যন্ত কোন রেগুলেটরি সমস্যাগুলোতে আলোকপাত করার আগ্রহ তো সরকার দেখায়নি। বরং আগ্রহ বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে ব্যক্তি ইউনূসকে হেনস্থা করার মাঝে। সরকারের এই হাইকোর্ট দেখানোটা আসলে একটা বাহাস ছাড়া কিছু না!

    জামালপুর স্টেশনের মলম বিক্রেতা আর ড. ইউনূস আসলে এক নয়। মানে মোটা দাগে আসলে দু'জনকে একই পর্যায়ে ফেলা যায় না। মলম বিক্রেতা দিন শেষে বাকচাতুরতা দিয়ে আয় করা টাকাগুলো নিজের পকেটেই রাখে। কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত এমন কোন প্রমাণ পাইনি যে ড. ইউনূস মাইক্রোক্রেডিট বা অন্য প্রতিষ্ঠানের আয়ের টাকা নিজের পকেটোস্থ করেছেন। কিংবা ধরুন মলম বিক্রেতা কিন্তু কোন ক্যাপাসিটিতেই স্কয়ার, একমি, ইনসেপটা বা বেক্সিমকোকে আয়ত্ত্বে আনতে পারে না। কিন্তু ড. ইউনূস করে দেখিয়েছেন তিনি সেটা পারেন বিশ্বব্যাপী। হ্যাঁ, বলতে পারেন ফাইনানশিয়াল ক্যাপিটালে তার আগ্রহ ছিল না, গ্রামীণের স্যোশাল ক্যাপিটাল ব্যবহার করে ড. ইউনূস তার আর্ন্তজাতিক ক্রেডিবিলিটি তৈরি করেছেন। সেটা এক অর্থে ঠিক, কিন্তু সেটাটো তিনি তার যোগ্যতাতেই করেছেন। আবার ক্যানভাসার মলম বিক্রেতা এবং ড. ইউনূসকে প্যারালালি দাড় করিয়ে দু’জন বাকপটু একইভাবে মিথ্যাচার করছে বলাটা টেকনিক্যালি সঠিক না, কারণ দুজনের ক্লাস এবং এজেন্সি ভিন্ন মাত্রার। আর ক্যানভাসার বেচারাকে এতো ছোট করে উপস্থাপন করারওতো প্রয়োজন নেই। মারকেটিং প্রফেশনাল, ডিবেটর বা আইনজীবিরাও তো অনেকক্ষেত্রে একই ধরনের কাজ করে থাকেন।

    টম হেইনম্যানের ডকুতে তহবিল স্থানান্তরের কথা বলা হয়েছে। তহবিল স্থানান্তর আর তহবিল তসরুফ এক বিষয় না। কিছু পত্রপত্রিকায় বিষয়টি তহবিল তসরুফ আকারে এসেছে। প্রয়োজনে তহবিল স্থানান্তর কোন মহাভারত অশুদ্ধ কাজ না। আমার ধারণা, নব্বইয়ের এই সময়টা গ্রামীন ব্যাংক তার বিস্তৃতির জন্য কিছু বেশি সুবিধা রাষ্ট্র এবং দাতাদের কাছ থেকে আদায় করে নিয়েছে। সরকারি নিয়ন্ত্রনের বাইরে আসার চেষ্টা করেছে। এটা করেছে প্রতিষ্ঠান হিসেবে গ্রামীনের ব্যপ্তি ঘটাবার জন্য। বাংলাদেশের সব বড় এনজিওর বৈশিষ্ট পাল্টেছে এই সময়টাতে। এখানে গ্রামীণকে এককভাবে দোষ দেওয়া যায় না। কারো সামনেই কোন মডেল ছিল না, সবাই এক্সপেরিমেন্টালি এগিয়েছে। আর এডওয়ার্ড সাইদের ওরিয়েন্টালিজমের আসল প্রতিফলন আমরা ড. ইউনূসের নোবেল প্রাপ্তিতে যেমন দেখি তেমনি আবারো দেখি টম হেইনম্যানের ডকুর প্রতিক্রিয়ায়। যখন আমরা টম হেইনম্যানের পশ্চিমা উপস্থাপনকে অকাট্য বাস্তবতা বলে মেনে নেই। ড. ইউনূস নতুনভাবে নজরে আসেন এবং গুরুত্ব পান রাষ্ট্র, মিডিয়া, পলিটিক্যাল এবং একাডেমিক সোসাইটিতে একসাথে। পশ্চিমা থিথিসকে আমরা আবেগ, বিশ্বাস, যুক্তি এবং স্থানীয় তথ্য দিয়ে জাস্টিফাই করার চেষ্টা করি।

    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এখন পর্যন্ত এমন কোন দারিদ্র বিমোচন টুল কি আবিষ্কৃত হয়েছে যার একেবারেই কোন ক্ষতিকারক দিক নেই? কোন না কোনভাবে প্রতিটি দারিদ্র বিমোচন টুলই কিছু সংখ্যক দরিদ্র মানুষের ক্ষতির কারণ হয়ে থাকে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে, যদিও সবগুলোই বলে এসেছে “ডুইং গুড”। মাইক্রোক্রেডিটও সেই দোষে দুষ্ট। সব ডেভেলপমেন্ট টুলসের প্রবক্তাই শুধু ভাল ভাল কথাগুলোই বলেন। ড. ইউনূসও তাই করে এসেছেন। এখানে তাকে একদাগে যেমন মিথ্যাবাদী বলা যায় না তেমনি তার সবকথাই বেদবাক্য তাও বলা যায় না। মাইক্রোক্রেডিট দারিদ্র বিমোচনের শুধু একটি টুল মাত্র। কিন্তু যে প্রবলেম্যাটিক ইমপ্রেশনটি তৈরি হয়েছে, তাহলো মাইক্রোক্রেডিট দিয়ে সমস্ত দারিদ্র দূর হবে - সেটি হবার না তা বুঝতে খুব একটা অসুবিধা হয় না। মাইক্রোক্রেডিটের ব্যবস্থাপনা এবং ড. ইউনূস - সামগ্রিকভাবে ত্রুটিবিহীন এটা বলবো না। কিন্তু তাকে কি ক্যাপাসিটিতে আইনের অপব্যবহারকারী হিসাবে দাড় করানো যায় এটাতে এখনো নিশ্চিত না। কিছু মানুষকে কিছু দিনের জন্য বোকা বানিয়ে রাখা যায়, কিন্তু সবমানুষকে সারাজীবনের জন্য বোকা বানানো যায় না। ড. ইউনূসের কর্মকান্ডকে জনগণই বিচার করবে। তার যা প্রাপ্য তিনি এমনিতেই পাবেন।

    মাহমুদ ভাই, টম হেইনম্যানের ডকুমেন্টারি প্রচারের অনেক আগেই ২০০৯ সালে বর্তমান সরকার বাংলাদেশের ফরেন মিশনগুলোকে ড. ইউনূস বিষয়ে তাদের অবস্থান এবং কি নীতি গ্রহণ করতে হবে তা জানিয়ে রেখেছিল। ইউনূস বিষয়ক রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত আগেই নেয়া ছিল বলে আমার ধারণা। টম হেইনম্যানের ডকু প্রচারের পর যুতমতো কোপ মারার সুযোগটি সরকারের জন্য চমৎকারভাবে সৃষ্টি হয়েছে। মাইক্রোক্রেডিটে সমস্যা আছে বলে ড. ইউনূসকে সমগ্র পৃথিবীর সামনে লুঙ্গি কেড়ে নিয়ে তাড়া করলে কার কি লাভ হবে?


    আমার বন্ধুয়া বিহনে

    জবাব দিন
    • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)
      মাইক্রোক্রেডিট বা গ্রামীণ ব্যাংকের কি কোন উপকার হচ্ছে?

      - এই জায়গাটা হচ্ছে পয়েন্ট অব ডিপারচার- মানে তুমি আলোচনায় আসছ ক্ষুদ্রঋণ বা গ্রামীন ব্যাংকের লাভ/ক্ষতিকে মূল ফোকাসে রেখে আর আমি আসছি দরিদ্রগ্রাহক এবং দারিদ্র্যবিমোচনকে ফোকাস করে। গ্রামীন ব্যাংককে ধরলে তোমার এবং আরো অনেকের অবস্থানই যথার্থ- সরকারের বর্তমান কার্যকলাপ গ্রামীন ব্যাংক এবং ক্ষুদ্রঋণের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু যদি ফোকাসটা হয় দারিদ্র-বিমোচন, তাইলে দেখবে ক্ষুদ্রঋণের ক্ষতি হলে কষ্টের কোন কারণ নেই। ক্যানসারকে ত আমরা পুষে না রেখে সাড়াতেই চাই, তাই না? তা' যেটা যেভাবেই হোক।

      টম হেইনম্যানের ডকুতে তহবিল স্থানান্তরের কথা বলা হয়েছে।

      - আর কিছু বলা হয় নি? মানে, এই যেমন ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে দরিদ্ররা নিঃস্ব হচ্ছে, ঋণ আদায়ে জোর-জবরদস্তি হচ্ছে, দাতাদের কাছে গরীবের বন্ধু কিন্তু গরীবের কাছে মহাজন, ইত্যাদি?

      আর ঠিকই বলেছো যে, তহবিল স্থানান্তরে আসলেই মহাভারত অশুদ্ধ হয় না। কিন্তু আইন ভংগ হয়েছে ত' ঠিকই। তবে এই ব্যাপারটা সেই ডকুমেন্টারীর খুব গৌন বিষয়, মুখ্য যা' ছিল, তা' মিডিয়ার কল্যানে তোমারও দৃষ্টি এড়িয়ে গেল? অথচ, টাইটেলই ছিল 'ক্ষুদ্রঋণের ফাঁদ' !!!

      গ্রামীণের স্যোশাল ক্যাপিটাল ব্যবহার করে ড. ইউনূস তার আর্ন্তজাতিক ক্রেডিবিলিটি তৈরি করেছেন। সেটা এক অর্থে ঠিক, কিন্তু সেটাটো তিনি তার যোগ্যতাতেই করেছেন।

      তথ্য+তত্ত্ব ছাড়া কিভাবে সাফল্যের কাহিনী বানানো যায়? এযাবৎ ক্ষুদ্রঋণের দারিদ্র্য বিমোচনের পক্ষে কোন তত্ত্ব পেয়েছো? (পাইলে আমাকে রেফারেন্সটা দিও)। এটা ডঃ কেন, কোন মাষ্টারস ডিগ্রীওয়ালাও করতে পারবেনা। কিন্তু আমাদের তিনি সেটাই করেন- নামের আগে ডঃ দিয়ে জাষ্টিফাই করেন যে তার বক্তব্য একাডেমিক এবং সেই কারণে গ্রহনযোগ্য। কিন্তু একাডেমিক মাপকাঠিতে বিচারের জন্য না আছে তার তত্ত্ব আর না আছে তথ্য। অতএব, ক্ষুদ্রঋণের সাফল্যের বয়ান যে যোগ্যতায় হয়েছে, সেটা একজন ডক্টরেটের যোগ্যতায় নয়, ক্যানভাসারের 🙂

      এডওয়ার্ড সাইদের ওরিয়েন্টালিজমের আসল প্রতিফলন আমরা ড. ইউনূসের নোবেল প্রাপ্তিতে যেমন দেখি তেমনি আবারো দেখি টম হেইনম্যানের ডকুর প্রতিক্রিয়ায়। যখন আমরা টম হেইনম্যানের পশ্চিমা উপস্থাপনকে অকাট্য বাস্তবতা বলে মেনে নেই। ড. ইউনূস নতুনভাবে নজরে আসেন এবং গুরুত্ব পান রাষ্ট্র, মিডিয়া, পলিটিক্যাল এবং একাডেমিক সোসাইটিতে একসাথে। পশ্চিমা থিথিসকে আমরা আবেগ, বিশ্বাস, যুক্তি এবং স্থানীয় তথ্য দিয়ে জাস্টিফাই করার চেষ্টা করি

      - ঠিকই ধরেছো। তবে আমি ক্ষুদ্রঋণের সমালোচনা করি ২০০০ সালের আগে থেকেই, ওরিয়েন্টালিজম কি তা' জানারও কয়েক বছর আগে থেকে। পরবর্তীতে মাঠ থেকে পাওয়া সেই বোধটা আরো মজবুত হয়েছে একযুগেরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে।

      ওরিয়েন্টালিজম কি জিনিস তা' হাড়ে হাড়ে টের পাই ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে কথা বলতে গেলে। আর ওরিয়েন্টালিজমের প্রভাব আছে কি না তা' বোঝার খুবই সোজা- হেইনম্যানের ডকুমেন্টারীর কথাই ধর- সেখানে যা' কিছু দেখানো হয়েছে, তা'র সবই আমাদের বাংলাদেশের দৈনন্দিন জীবনের অংশ। অথচ, আমরা নিজেদের ত' দেখিই না, কেউ চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখালেও দেখতে পারিনা। একই ভাবে, আমার এই পোষ্টে শেষে একটা লিঙ্ক আছে, ওটাও একটা অনুরূপ টেষ্ট 🙂 (সম্পাদিত)


      There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

      জবাব দিন
      • রাব্বী (৯২-৯৮)
        যদি ফোকাসটা হয় দারিদ্র-বিমোচন, তাইলে দেখবে ক্ষুদ্রঋণের ক্ষতি হলে কষ্টের কোন কারণ নেই। ক্যানসারকে ত আমরা পুষে না রেখে সাড়াতেই চাই, তাই না? তা’ যেটা যেভাবেই হোক।

        - মাহমুদ ভাই, আপনার কথা মানছি। কিন্তু আমার পয়েন্টটা হচ্ছে, এভাবে ড. ইউনূসকে রাজনৈতিকভাবে হেনস্থা করে দরিদ্র মানুষ, দারিদ্র বিমোচন, গ্রামীণ ব্যাংক, ক্ষুদ্রঋণ কারো তো কোন উপকার হচ্ছে না। যে প্রক্রিয়ায় ব্যাপারগুলো হচ্ছে সেটি নেহায়াত হিংসা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে মাত্র। এতে না হচ্ছে ক্ষুদ্রঋণ বাতিল, না হচ্ছে গ্রামীণ ব্যাংকের রেগুলেটরি স্বচ্ছতা নিরুপন। তাই “যেভাবেই হোক” ব্যাপারটা সমর্থন করতে পারছি না। কারণ আমি এভাবে ভাল কিছু দেখতে পাচ্ছি না।

        আর কিছু বলা হয় নি?

        - জ্বী, আরো অনেক বিষয়েই আলোকপাত করা হয়েছে টম হেইনম্যানের ডকুতে। সেগুলো দৃষ্টি এড়িয়েও যায়নি। এই ডকুর আগেই আমি কিছু আর্টিকেলে এগুলো পড়েছি। আমি তহবিল স্থানান্তরের বিষয়টি এনেছিলাম আপনার লেখা ২/পাঁচ পয়েন্টটা নিয়ে কথা বলতে। এই বিষয়টি আমার জন্য নতুন ছিল ডকু থেকে, বাকিগুলো কমবেশি জানতাম। আমি যতটুকু বুঝি, তহবিল স্থানান্তর করলে শর্ত ভঙ্গ বা পরিবর্তন বলে বিবেচিত হয়। তারপর এটা নিয়ে দাতার সাথে সমঝোতা, দরকষাকষি, প্রভৃতি হয়ে থাকে। এটা সরকার বা এনজিও উভয়ই করে থাকে। কিন্তু তহবিল তসরুফ বা বড় কোন ব্যত্যয় ঘটলে তখন দাতারা অন্যভাবে ডিল করে। যেমনটা হয়েছিল নৌ মন্ত্রনালয় এবং ড্যানিডার মধ্যে। আমার ধারণা, এটা সরাসরি আইনভঙ্গের ব্যাপার নয়। শর্ত ভঙ্গ মানেই আইনভঙ্গ/দুর্নীতি নয়।

        তথ্য+তত্ত্ব ছাড়া কিভাবে সাফল্যের কাহিনী বানানো যায়?

        - ক্ষুদ্রঋণ তো একটি মডেল মাত্র। ড. ইউনূস বলে আসছেন যে উনি প্রথাগত তত্ত্বের বাইরে প্রায়োগিক কিছু করতে চেয়েছেন। উনি সবখানে এটি যে মডেল হিসাবে প্রয়োগযোগ্য এবং গুড প্রাকটিসগুলোর উদাহরণ দিয়ে আসছেন। আমি নিজে যেটা বুঝি তা হলো, ক্ষুদ্রঋণ একটি নব্যউদারবাদী পুজিঁর এজেন্সি, যেটা ইতিবাচক এবং নেতিবাচক - দুই ধরনের পরিবর্তন ঘটাতেই সক্ষম। সফলভাবে ড. ইউনূস যে তথ্যটি প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন, তা হলো গরীব মানুষও প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ পাবার যোগ্য। যে বিষয়টি আগে স্বীকার করা হতো না। এটা একজন ক্যানভাসারের ক্যাপাসিটিতে সম্ভম তা মনে করি না। উনি এটা ধাপে ধাপে করেছেন। তবে, সার্বিকভাবে ক্ষুদ্রঋণের বেজলাইন ডাটার ঘাটতি আছে এটা আমিও মনে করি। শুধু ক্ষুদ্রঋণ কেন তাত্ত্বিকভাবে সফল কোন দারিদ্রবিমোচন কৌশলই তৃতীয় বিশ্বের কোন দেশে থাকার কথা না। এসকোবার যেমনটা বলেছেন ২০ বছর আগেই যে পুরো ডেভেলপমেন্ট এন্টারপ্রাইজটাই একটি বাহাস। তারপরও সেই একই বাস্তবতায় বসবাস করি। দরিদ্রতা যতোদিন থাকবে তা বিমোচনের প্রচেষ্টাও অব্যাহত থাকবে। তবে, পুরোপুরি তথ্য+তত্ত্ব দিয়ে সফল কোন কৌশল আমরা পাবো এমনটা আশা করি না।

        মাহমুদ ভাই, আপনার শক্ত অবস্থানের ভাল দিক যেটা তা হলো এই সিসিবিতে যারা লিখছি এবং পড়ছি তারা সবাই একটা চ্যালেঞ্জের সামনে পড়ছি। বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হচ্ছে এবং নিজের জানাটুকু ঝালিয়ে নিচ্ছি। বাস্তবতা যেহেতু অনেকগুলো সবাই যার যার মতো করে সেটা বিনির্মান করছে।

        [অফটপিক: দেরিতে রিপ্লাইয়ের জন্য দুঃখিত। ব্যস্ত ছিলাম।]


        আমার বন্ধুয়া বিহনে

        জবাব দিন
  11. সায়েম (১৯৯৩ - ১৯৯৯)

    i am from village, i know the practical scenario, গ্রামীন bank থেকে যারা ঋণ নিছে তারা ব্রাক থেকে বা অন্য কোনো ngo থেকে ঋণ নিয়ে গ্রামীন bank এর ঋণ পরিশোধ করসে, বা ঢাকা এসে রিক্সা চালিয়েই ঋণ পরিশোধ করসে, এভাবে তারা ঋণ এর চক্করে ঘুরপাক খাছে, ঐসব হতভাগ্য দরিদ্র দের ভাগ্য কি ফিরেসে? সত্যিকার উন্নয়ন কি এইভাবে সম্ভব? no one is beyond the law.

    জবাব দিন
    • ফয়েজ (৮৭-৯৩)

      লিংক্টা কি আমার জন্য দিয়েছো?

      তুমি একটু লক্ষ্য করলে দেখ, লোন দেয়া বা লোন আদায় করার প্রক্রিয়া নিয়ে কেউ কোন কেস করছে না। কথা বলছে অন্যান্য বিষয় নিয়ে, কত ফান্ড সরলো, কার কার চাকুরী গেল, কে বেশী বয়সে চাকুরী করলো এইসব।

      এখানে কথা কিন্তু হচ্ছে ক্ষুদ্র ঋন নিয়ে, এর প্রায়োগিক দিক এবং এর সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে।

      এর মাঝে নোবলে চলে এসেছে, কারন তিনি নোবেল পেয়েছেন, শান্তিতে যদিও। এইতো


      পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

      জবাব দিন
  12. মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

    বরাবরের মতোই মাহমুদ ভাইয়ের লেখায় যুক্তির ব্যবহার লক্ষ্যণীয়।

    ইউনূসকে দিয়ে যদি বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করতে হয় তাহলে তেমন উজ্জ্বলতার কোন প্রয়োজন নেই আমার। আমার মনে হয় নোবেল কমিটি শান্তি পুরষ্কার এর সাথে সাথে এমন একটা ডিসক্লেমার দিয়ে দিলে খুব ভাল হয়:

    - এই পুরষ্কার কোন চরিত্রের সার্টিফিকেট নয়, এটা নিশ্চিত করে না যে, এই ব্যক্তি যা করবে তাই মহান এবং এর মানে এই নয় যে এই ব্যক্তি যে দেশের সে দেশের মানুষকে আজীবন তাকে নিয়ে গর্ব করে যেতে হবে।

    ইউনুস নোবেল প্রাইজটা পেয়েই পরিস্থিতি বেশি ঘোলাটে করে দিয়েছে। 😀

    জবাব দিন
    • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)
      ইউনূসকে দিয়ে যদি বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করতে হয় তাহলে তেমন উজ্জ্বলতার কোন প্রয়োজন নেই আমার।

      :thumbup: :thumbup:

      পুরো সহমত।

      কিন্তু বিদেশের মাটিতে স্বদেশীদের মাঝে এই মত প্রকাশ করার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বেশ খারাপ।


      There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

      জবাব দিন
      • ফয়েজ (৮৭-৯৩)

        মাহমুদ এবং মুহাম্মদ, তোমরা আমাকে বলতো, ইউনুস যদি রাজনৈতিক দল তৈরী ভুমিকা না নিতেন, তাহলে এগুলো হত কিনা? ডঃ ইউনুস তো এসব করে আসছেন অনেক আগে থেকেই, হঠাৎ করে এই প্রতিক্রিয়া কেন?

        মাহমুদ, তুমি যদি কোন কিছু প্রতিস্টিত করতে চাও ক্ষুদ্র ঋনের ব্যাপারে, তাহলে আমার মনে হয় এখন তা প্রকাশের সঠিক সময় নয়। সঠিক সময় পার হয়ে গিয়েছে, যখন আমরা কিছু করিনি, আর এখন আরেকটা সঠিক সময়ের অপেক্ষায় থাকা উচিৎ তোমার। নতুবা তোমার গবেষনা ভুল তথ্য পৌছাবে মানুষের কাছে। এটুকু তো বুঝ নাকি?


        পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

        জবাব দিন
    • সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

      মুহাম্মদ,

      এক. ভবিষ্যতে তোমাকে এবং তোমার মতো আরো অনেক সম্ভাবনাময়, অঙ্গীকারবদ্ধ তরুণদের দিয়ে দেশে এবং বিশ্বে আমরা নিজেদের মুখ উজ্জল করতে চাই। তখন আমাদের ইউনূস লাগবে না।

      দুই. ইউনূস নোবেল পাওয়ার আগে থেকেই বিশ্বে খ্যাতিমান। আমার জানা মতে, এর আগে কমপক্ষে ৫ বছর তার নাম সম্ভাব্যদের তালিকায় ছিল। আরো আগে থেকেই বিশ্বের অনেক মানুষ তাকে চেনে। তখন থেকেই ইউনূসের বক্তৃতা শোনার জন্য বিদেশের যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের মানুষের ভিড় জমে যায়। তার বক্তৃতা বিরাট কিছু তা না। বক্তৃতার বিষয়বস্তুতে থাকে, বাস্তবতা আর স্বপ্ন। তার বক্তৃতা অনেকেরই অপছন্দ হতে পারে। এটা তো হতেই পারে। আমার সব কথা কি তুমি গ্রহণ করবে, বা তোমার সবটায় আমি মাথা দোলাবো?

      তিন. নোবেল পুরস্কার পাওয়ায় কেউ কি বলেছে এটা তার চরিত্রের সার্টিফিকেট? তাতে কি এমন কিছু লেখা থাকে? তোমার এমন হালকা চটুল মন্তব্য আমাকে হতাশ করেছে। নোবেল পুরস্কার তাকে খ্যাতি দিয়েছে। অনেক বাঙালিকে গর্ব করার জায়গা দিয়েছে। আবার এতে তার শত্রুও জুটেছে নতুন করে অনেক। ইউনূস বিশ্বাস নন, বাস্তব। তুমি-আমি স্বীকার করি আর না করি। তিনি দেবতা নন, মানুষ। স্বপ্নবাজ মানুষ। ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারি শাহ মাজেদ হোসেনের স্ত্রী রওশনারা বেগম গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণে নিজের জীবন বদলাচ্ছেন। দুই ছেলের শিক্ষার জন্য ৯৪ হাজার টাকা শিক্ষাঋণ নিয়েছেন। এরা একজন মাস্টার্স ও অন্যজন অনার্স পড়ছে। এই দম্পতির ৫ ছেলে-মেয়ের সবাই উচ্চশিক্ষিত। এই উদাহরণটা দিলাম তুমি আমি ক্যাডেট বলেই। আর আমরা জানি ক্যাডেট কলেজের চতুর্থ শ্রেনীর একজন কর্মচারির জীবনযাপন কেমন। ইউনূস স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পারেন। প্রয়োগে সমালোচনার জায়গা থাকতে পারে। কাজ করলে ভুল হবেই। তিনি যদি গ্রামীণ ব্যাংক না করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকে যেতেন তাহলে আজ তাকে নিয়ে আমি-তুমি কেউ কোনো কথাই হয়তো বলতাম না, ফেসবুক আর ব্লগে এতো জায়গা ও সময় খরচ করতাম না।

      ভালো থেকো।


      "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

      জবাব দিন
      • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

        সানা ভাই,
        মুহাম্মদ আর আমার বক্তব্য এই যে, ক্ষুদ্রঋণের মতো সিষ্টেমের মাধ্যমে মুখ উজ্জ্বল করেত চাই না।

        আরেকটা কথা, আপনার উল্লিখিত উদাহরণে জেসিসি'র ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী কিন্তু কোনভাবেই নিঃস্ব গরীব নয়। আমি আগেও বলেছি যে, ক্ষুদ্রঋণ যেসব গরীবের নিয়মিত আয়ের অন্যান্য উৎস আছে তাদের জন্য সহায়ক, কিন্তু যাদের নাই তাদের জন্য মরণ ফাঁদ। আপনার উল্লিখিত উদাহরণের খোঁজ আমি জানি, কিন্তু তারা একটা অংশমাত্র, এবং সফল অংশ। আরেকটা অংশের অবস্থা ভয়াবহ, যেটা ডঃ ইউনূস কখনোই বলেন না। সেই অংশের পরিমাণ অংকের হিসাবে শতকরা ২০/২৫ এর বেশি হবে না, কিন্তু ক্ষুদ্রঋণ এদেরকে একেবারে পথ বসিয়ে দেয়।

        ডঃ ইউনূসের নোবেল পাওয়া সম্পর্কে আমিও বিস্তারিত জানি। এর আগে আরো ৪ বার প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়ার কথাও জানি, এমনকি এর জন্য যে লবিষ্ট গ্রুপ ছিল, সেটাও। কিন্তু সেসব অর্থনীতি ক্যাটাগরিতে থাকায় সুবিধে করা যায়নি। কারণ, নোবেলের অন্যান্য ক্যাটাগরির মতো অর্থনীতিও পিওর একাডেমিক, সেখানে তত্ত্ব+তথ্য দিয়ে যোগ্যতার বিচার হয় (যেমন অমর্ত্য সেনের তত্ত্ব এবং পুরস্কার)। ক্ষুদ্রঋণের সাথে তত্ত্ব বা তথ্য কোনটাই না থাকায় সেই প্রচেষ্টা ৪বারই ব্যর্থ হয়। তখন বাকী থাকে একমাত্র "শান্তি" ক্যাটাগরি......... তারপর ইতিহাস ...।

        পুরস্কার দিয়ে নয়, প্রবক্তার ডিগ্রী দিয়েও নয়, মডেলের নিজের মেরিটেই সাফল্য বিচার্য যা ক্ষুদ্রঋণের নেই। তাই আমি এর বিপক্ষে, ব্যক্তি ইউনূস আমার বিবেচ্য নয়, কখনোই নয়। ফয়েজ ভাইই মনে হচ্ছে ঠিক বলেছেন- ক্ষুদ্রঋণের বিরূপ সমালোচনাত জন্য এটা অসময়।

        তবুও মনের কথা মাঝে মাঝে খুলে বলতে ইচ্ছে করে, সিসিবি'তে। আশা করি আপনারা সেটা সেভাবেই দেখবেন এতোদিন যেভাবে দেখে এসেছেন।


        There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

        জবাব দিন
  13. মাহমুদ ভাই একটা বিষয় জানতে চাচ্ছি, আপনি কি ড: ইউনুস কে অব্যাহতি দেয়ার বিষয় টি সমর্থন করছেন? এই পোস্টে মূলত: বেক্তি ড: ইউনুস ও দারিদ্র দূরীকরণে তার উদ্ভাবিত মডেল আর তার বাস্তবায়ন কতটুকু কার্যকর তা নিয়ে যুক্তিমূলক চমত্কার আলোচনা হচ্ছে কিন্তু এই আলোচনা উপরোক্ত প্রশ্নের উত্তরের জন্য কতটুকু সহায়ক তা আমি নিশ্চিত নই / আপনার উত্তর পেলে একটু আলোচনা করা যেত/

    জবাব দিন
  14. #আমার প্রশ্ন হলো ইউনূস কেন ৩৫ বছর আগে চট্টগ্রামের জোবরা গ্রামে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে গেলেন ? তিনি কি নোবেল বা অন্যান্য পুরষ্কার পাওয়ার শতভাগ নিশ্চয়তা পেয়েই ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে ৩৫ বছর আগে কাজ শুরু করেন!! নাকি তার স্বপ্ন ছিলো আসলেই দারিদ্র দূর করা ?

    #গ্রামীণ ব্যাংকের সুদের হার উচ্চ এবং অনেক গরীব আরো গরীব হয়েছে। কিন্তু তা সত্বেও ঋণগ্রহীতার সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে কেন? গ্রামীণ ব্যাংক কি গরীবদের লোন নিতে বাধ্য করছে ? ৮০ লক্ষ গ্রাহক তারা বানালো কিভাবে ?

    #বুঝলাম মাইক্রোক্রেডিটের অপকারিতা বেশি, কিন্তু আমাদের/বিশ্বের কজন জ্ঞানীলোক দারিদ্র দূর করার জন্য এটেম্প্ট নিয়েছেন !! বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞই থিওরী দেয়াতেই ওস্তাদ ! ইউনূস অন্তত বাংলাদেশের মতো একটা দেশ থেকে সেই সাহসটা দেখিয়েছেন। পৃথিবীতে নতুন আবিষ্কারের নেশায় অনেক এক্সপেরিমেন্ট হয়েছে যার বেশিরভাগই ছিলো ব্যর্থ কিনতূ এ ব্যর্থ গবেষনাগুলোই পরবর্তিতে সফল গবেষনার জন্ম দিয়েছে। ড, ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষেত্রেও কি এটা হতে পারে না ???

    #মেনে নিলাম ইউনূসের উদ্ভাবন ৯০% ভূলে ভরা !! কিন্তু তিনি বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মকে বিশ্বনেতা/বিশ্বশ্রেষ্ঠ হওয়ার যে স্বপ্ন দেখিয়েছেন তা আর কে কবে পেরেছে বা পারবে ? হয়তোবা এ তরুণদের মাঝেই কেউ দারিদ্র মুক্তির আরো কার্যকর কৌশল আবিষ্কার করবে। তিনি অন্তত শুরুটা তো করে দিয়েছেন।

    জবাব দিন
    • তৌফিক (৯৬-০২)
      গ্রামীণ ব্যাংকের সুদের হার উচ্চ এবং অনেক গরীব আরো গরীব হয়েছে। কিন্তু তা সত্বেও ঋণগ্রহীতার সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে কেন? গ্রামীণ ব্যাংক কি গরীবদের লোন নিতে বাধ্য করছে ? ৮০ লক্ষ গ্রাহক তারা বানালো কিভাবে ?

      যখন মহাজনী সুদ ব্যবস্থা ছিল তখন নিশ্চয়ই দরিদ্র লোকদের শতকরা শতভাগই তাদের গ্রাহক ছিল। তাতে কি প্রমাণ হয় যে মহাজনী ব্যবস্থা খুব ভালো ছিল? গ্রামের লোকদের সামনে অপশন কয়টা সেই কথাটা ভেবে না দেখলে এই যুক্তি ধোপে টিকে না।

      জবাব দিন
  15. মোস্তফা (১৯৮৮-১৯৯৪)

    মাহমুদ তোমার কাছে আমি একটি লেখা চাই সেটি হচ্ছে ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে একটি লিটেরাচার রিভিউ টাইপের লেখা। ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে পক্ষে/বিপক্ষে পত্রিকা/ব্লগে অনেক লেখাই দেখেছি। সবাই যার যার যুক্তি তুলে ধরেন, নানান গল্প বলে কিংবা আবেগ দিয়ে। আমি তোমার কাছে যেটা চাইছি তা হচ্ছে পুরোপুরি একাডেমিক টাইপের একটি লিটেরাচার রিভিউ যেটা পড়ে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে এ যাবৎ যা যা গবেষণা হয়েছে সেটার একটি ধারণা পাওয়া যায়। এটি একটি ভালো রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। চাইলে তুমি হয়তো ভালো কোন জার্নালে প্রকাশও করতে পারো ভবিষ্যতে। তুমি যেহেতু এই লাইনেরই লোক তাই তোমাকেই অনুরোধ করলাম। অপেক্ষায় থাকলাম।

    জবাব দিন
  16. Wahid

    প্রথমেই আমার মন্তব্য থেকে যদি কেউ কষ্ট পেয়ে থাকেন বা আমার মন্তব্য যদি বেয়াদবির শামিল হয় তাহলে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

    মাহমুদ ভাই, যথোপযুক্ত যুক্তি তর্কের মাধ্যমে আপনার শক্ত অবস্থান সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। কিন্তু আমাদের মত ইউনূস ভক্তদের কথা একটাই, আমাদের জন্য "Noble" নামক দেশের সম্মান বয়ে আনতে হবে, সেটা তথাকথিত জোবরা গ্রাম নামে ভুয়া মডেল বানিয়ে বিশ্বাবাসীকে ধোঁকা দিয়ে হোক, গরিবকে আরো গরিব বানিয়ে হোক, বিশ্ব নেতাদের লেজুড়বৃত্তি করে হোক, "Microcredit" এর উদ্ভাবক হিসেবে মিথ্যা ক্রেডিট নিয়ে হোক, যেভাবেই হোক তাতে আমাদের কোন মাথাব্যথা নেই। হবেই বা কেন, গরিব যদি আরো গরিব হয় তাতে আমাদের কি? গরিবদের নিয়ে খেলে যদি "Noble" পাওয়া যায়, বিশ্বের নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয়ের "Commencement" বক্তা হওয়া যায় সেটাই তো আমাদের মাথাকে উঁচু করে দেয়। বহিরবিশ্বের যদি কেউ আমাদের ভুল ভাঙ্গিয়ে দেয়ার জন্য কোনও কিছু প্রকাশ করে সেটা নির্ঘাত প্রতিহিন্সার শামিল। আবার পচ্ছিমাবিশ্বের কেউ এসে যদি এই দেশেরি একটি ব্যাঙ্কের নির্বাহী পদ নিয়ে খুব নোংরা হস্তক্ষেপ করে, আমাদের গরিব সরকারকে প্রভাবিত করে, আমাদের গরিব মহামান্য আদালতের রায়কে বৄ্দধাঙ্গুলি দেখায় তাতেও কোন সমস্যা নেই, যেভাবেই হোক আমাদের "Noble Piece (sorry for wrong spelling, it should be "Peace") Prize" এর সম্মান বাচাতে হবে।

    তাই মাহমুদ ভাই, আপনি শত যুক্তি দেখিয়েও আমাদের মত দেশপ্রেমিক, সুশীল সমাজ, বিদ্বানদের "ইউনূস" নামক চোখের পর্দা সরাতে পারবেন না।

    ওয়াহিদ, বিসিসি

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।