জীবনে প্রথম যে আন্তর্জাতিক ফুটবলটা ফলো করেছিলাম, সেটা বিশ্বকাপ না, মিউনিখ অলিম্পিকের ফুটবল।
৭২ সালে ক্লাশ টুতে পড়ি। একটি ক্লাশ টু-এর ছেলে অলিম্পিক ও তার ফুটবল ফলো করেছে, এখনো তা মনে করে রেখেছে, এটা অনেকেই বিশ্বাস করতে চাইবে না। কিন্তু কি করার, আমরা যে স্মৃতিধারী তরুনতম মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম। আমাদেরকে পুরনো অনেক কথা কষ্ট করে মনে রাখতে হয়েছে / হচ্ছে ভবিষ্যতে জীবন্ত ফসিল রোল প্লে করার জন্য।
ইউনিভার্সিটি ল্যাবের ছাত্র ছিলাম এবং বাসায় ইত্তেফাক রাখা হতো এই দুইটা কারনে মিউনিখে যে অলিম্পিক হচ্ছে সেটা জানা কঠিন ছিল না। যেসব খেলার নিউজ উঠত, বেশির ভাগই বুঝতাম না। তবে ফুটবলটা খুবই ভাল বুঝতাম। সহপাঠিদের কল্যানে পেলেকেও চিনতাম। আর ব্রাজিলের নামও জানা ছিল। থাকবেই বা না কেন, তিনবার চ্যাম্পিয়ান হয়ে ওরা যে জুলে রিমে পেয়ে গেছে জন্মের মত, সেটা তো আর অজানা থাকার মত ব্যাপার না?
তবে আমাদের জল্পনা / আশঙ্কা ছিল অন্য একটা ব্যাপারে। ব্রাজিল যে কাপ নিয়ে গেল, তার মানে কি বিশ্বকাপ আর হবে না? আরেকটা কাপ দিয়েও যে বিশ্বকাপ চালিয়ে নেয়া যায়, এটা বোঝার মত পরিপক্কতা কি আর তখন হয়েছে? হয় নাই।
আন্তর্জাতিক ফুটবলের জ্ঞান পত্রিকায় দেখে আর এর ওর মুখে শুনে। হাস্যকর শোনালেও, এটা সত্যি যে আমাদের চোখে তখনো বাংলাদেশই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠদল আর সালাউদ্দীন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ফুটবলার। পেলে কে চেনা ঐ সালাউদ্দিনকে দিয়েই। পেলে মানে হলো ব্রাজিলের সালাহউদ্দিন। আর এই সব জ্ঞানের যোগানদাতা আমারই এক সহপাঠি যে কাজী সালাহউদ্দিনের কাজন বলে নিজেই দাবী করতো।
মাঝে মাঝে ক্লাশে এসে গপ্পো দিত, “কাল সাদেক ভাই (ওর ভাষায় ওটাই নাকই কাজী সালাহউদ্দিনের ডাক নাম) –এর সাথে ডিনার করলাম। সাদেক ভাই বললেন, আগামী ওয়ার্ডকাপে ব্রাজিলকে হারিয়ে আমরা নিশ্চিত চ্যাম্পিয়ান হবো। সাদেক ভাই দুইটা গোল দিবেন। ইত্যাদি! ইত্যাদি!! ইত্যাদি!!!
মিউনিখ অলিম্পিক ফলো করার আরেকটা কারন, অলিম্পিকের লোগো চেনা ও আর্ট ক্লাশে সেটা আঁকার প্রয়োজনে।
যাহোক এত বড় একটা অলিম্পিক হচ্ছে, কিন্তু বুঝি কেবল দুইটা খেলা: ফুটবল আর হকি। দল চিনি তাও মাত্র দুইটা: ব্রাজিল আর সোভিয়েট ইউনিয়ন, আমাদের ভাষায় রাশিয়া। মনে আছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান হলেও ঐ অলিম্পিকে ব্রাজিলের নাস্তানাবুদ অবস্থা আর রাশিয়ার জিতেই চলাটা খুব মনে পড়ে। যে সে জেতা না চ্যাম্পিয়ান প্রায় হয় হয় অবস্থা। আমার সমর্থন পাকা পোক্ত হয়ে গেল: হয় ব্রাজিল নয়তো রাশিয়া (সোভিয়েট ইউনিয়ন)।
প্রথম যে বিশ্বকাপ ফলো করলাম তা ৭৪-এরটা।ততদিনে ক্লাশ ফোরে উঠে গেছি। বানান করে পেপার পড়তে হয় না। আবার বাসার ফিলিপসের ২০ ইঞ্চি একটা টিভিও আছে। খবরের শেষে খেলার খবর শোনায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে দুই একটা দৃশ্যও দেখা যায়। তবে বিশ্বকাপ মূলতঃ ফলো করেছিলাম বিবিসি বাংলায়। ইস্ট জার্মানের কাছে ওয়েস্ট জার্মানের হেরে যাওয়াটা যে অনাকাংখিতই নয়, ইচ্ছা করে (পাতানো) ছিল, এরকম কথাও কানে এসেছিল।
আমি ভোরে উঠে বিবিসিতে এবং সকাল সাতটায় ঢাকা বেতারের খবরে ফলগুলো শুনে একটা খাতায় টুকে রাখতাম। আমার প্রিয় দুইদল রাশিয়া আর ব্রাজিলের নিউজই ছিল মূল আকর্ষন। কিন্তু কি অবাক কান্ড? অলিম্পিকের পুরো উল্টো অবস্থা। ঐখানে নাকানি চুবানি খাওয়া ব্রাজিল জিতে চলেছে তো চলেছেই আর ঐখানের বাঘ সোভিয়েত ইউনিয়নের নাস্তানাবুদ অবস্থা। এর পিছনে যে পেশাদার ও অপেশাদার ফুটবলের একটা ভূমিকা ছিল, সেটা বুঝতে অনেকদিন লেগে গিয়েছিল।
শেষ পর্যন্ত ব্রাজিল ফাইনালে ওঠেনি। তখনকার নিয়মে সেকেন্ড রাউন্ডও রবীন লীগ হতো। আর সেখানকার দুইগ্রুপের চ্যাম্পিয়ান দুটি দল ফাইনালে খেলতো। কোন সেমি ফাইনাল ছিল না। আমার প্রিয় দুইদলের কেউই যখন ফাইনালে নেই আর পাতানো খেলার অভিযোগে পশ্চিম জার্মানের উপরে বিরূপ তাই ঠিক করলাম ফাইনালে আমি হল্যান্ডেরই সাপোর্টার।
যেদিন ফাইনাল, আমি তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে গেলাম সকালে উঠে নিউজ শুনতে হবে কে চ্যাম্পিয়ান হলো সেইজন্য। হঠাৎ মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙ্গল। আম্মা বললেন, এইমাত্র গভীর রাতের খবরে বলেছে হল্যান্ডকে হারিয়ে পশ্চিম জার্মান চ্যাম্পিয়ান হয়েছে। আমি কাঁচা ঘুম ভেঙ্গে জেগে উঠে অবাক হয়ে ভাবতে বসলাম, আম্মা কিকরে জানলো যে এই খবরটার জন্য আমি অপেক্ষা করছি?
প্রায় মাসখানেক ধরে যে আমি সবার অগোচরে ফিফা ওয়ার্ড কাপ ফলো করে যাচ্ছিলাম, আমার মা তা ঠিকই লক্ষ করেছেন। আর সবচেয়ে ক্রুশিয়াল নিউজটা তিনি আমাকে যথাসময়ে জানানোর সুযোগটা হাতছাড়া করলেন না। আমি আবার ঘুমিয়া পড়ার আগে ভাবছিলাম, “আম্মা কি যাদু জানে?” আসলেই, সব মায়েরাই সন্তানের কাছে জগতের সবচেয়ে বড় যাদুকর।
পুনশ্চ-১: বাংলাদেশের ফুটবল নিয়ে ভুল উচ্চ ধারনাটা ভাঙ্গতে বেশী সময় লাগে নাই। ৭৩-এর দিকে সোভিয়েত দল সম্ভবতঃ মস্কো ডায়নামো এসেছিল ঢাকায়। আমার এক খেলা পাগল পুলিশ অফিসার নানার সাথে ঢাকা স্টেডিয়ামে গিয়েছিলাম ওদের সাথে বাংলাদেশ জাতীয় দলের খেলা দেখতে। মূলতঃ গিয়েছিলাম ব্রাজিলকে হারিয়ে পরের বিশ্বকাপ ঘরে তুলবে যে দল, তাঁদের কাছে রাশানরা কেমন নাস্তানাবুদ হয়, সেটা দেখতেই। কিন্তু ফুটবলের নামে যা দেখলাম, তাতে নিজের চোখকেই বিশ্বাস করা কঠিন হচ্ছিল। পনেরো বিশ মিনিটের মধ্যেই তিন চারটা গোল হজম করে বাংলাদেশ। পুরো খেলায় সাত গোল খেয়েছিল কেবলি ওদের দয়ায়। এখন বুঝি, শেষ মুহুর্তে ওরা অনেক গুলো শট গোল করার জন্য মারেনি। ওদের সমর্থনে সদ্য স্বাধীন দেশটিকে খুব বেশী গোলে হারাতে চায়নি। বেশ কয়েকবার তো গোলকিপারকে ডজ দিয়ে গোল লাইন থেকে বল ফিরিয়েও এনেছে, গোলে শট না নিয়ে। ঐদিন ত্রিশ চল্লিশ গোলে হারলেও কিছু করার ছিল না।
সবচেয়ে কষ্ট পেয়েছিলাম আমাদের সুপার হিরো, পেলের চেয়েও বড় ফুটবলার কাজী সালাহউদ্দিনের করুন অবস্থা দেখে। বিশাল দেহি রাশানদের মাঝে একেইতো তাঁকে লাগছিল পুচকে বালক, তার উপরে গোটা খেলায় বলে পা ছোয়ানোর সুযোগ হয়েছিল মাত্র বার দুই। নিজেদের দলের করুন অবস্থা দেখে সেই যে মন ভাঙ্গল, আজও আর তা জোড়া লাগে নাই।
পুনশ্চ-২: ম্যারাডনার স্বর্নযুগ দেখা এবং পেলেকে না দেখা এই আমি কিভাবে আর্জেন্টনাকে ছেড়ে ব্রাজিলের সমর্থক হলাম – অনেকেই সেই প্রশ্ন করে। এতক্ষনে জেনে গিয়েছেন আমার বিশ্বকাপ ফলো করাটা যে সময়য়ে তখন আর্জেন্টিনা ছিল বিশ্বকাপে এক পুচকে দল। একবারো চ্যাম্পিয়ান না হওয়া, এবং সেকেন্ড রাউন্ডে উঠতে পারলেই বর্তে যাওয়া দল। এইরকম একটা দলকে সাপোর্ট করা আর বিশ্বকাপ ফলো না করাটা ছিল সেইসময়ে সমার্থক।
তাছাড়া আটাত্তরের বিশ্বকাপে নিজেদের দেশে শেষ খেলা পিছিয়ে কত গোল করতে হবে দেখে নিয়ে ফাইনালে ওঠাটাও আর্জেন্টিনার ওপর থেকে সহানুভুতি চলে যাবার আরেকটা কারন। ঐকাজের ভক্টিম যে আমার পছন্দের দল ব্রাজিল ছিল।
সেই সময় পেরুর কোন এক মুখপাত্রের ভাষ্য পড়েছিলাম, “ব্রাজিল খামখাই ৩-১ গোলে মানে দুই গোলের ব্যবধানে পোল্যান্ডকে হারালো। এত কষ্টের কোন দরকারই ছিল না। ওরা ৫০ গোলের ব্যবধানেও যদি হারাতো, আমরা আর্জেন্টিনার কাছে ৫২ গোলে হারতাম”।
সেইদিন থেকে জানি, আমি পাতানো খেলা কতটা ঘৃনা করি। ক্যাডেট কলেজেও যখন কোন পাতানো খেলা হতো, আমি ওদেরও কেবলই ঘৃনাই দিয়ে যেতাম। আজও দেই সমানভাবে।
বিশ্বকাপ নিয়ে আরও কিছু লিখা:
এইবার কিছু স্মৃতিচারণ: ১৯৭৪ – ১৯৮২
আগে ইটা পরে মন্তব্য :brick:
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
ফুটবলের ইতিহাস থেকে শুরু করে ছেলেবেলা, মা, মুক্তিযুদ্ধের হালকা আমেজ সবই দিলেন ভাই। আমি আরেক পোস্টে বলেছি পাঠক ভোটিং এর ব্যবস্থা করতে। কারণ আমি এটায় ভোট দিতে চাই। কিছু টাইপো আছে একটু ঠিক করে দিয়েন।
দুটো ঘটনা নাড়া দিলোঃ
১) বিদেশ আসার আগে ব্যাগ গোছাচ্ছি। প্রেমিকার দেয়া একটা ফটো ফ্রেম সুটকেসে রাখসি সবার অগোচরে, কাউকে বলা হয়নি। হঠাৎ দেখি মা এসে বলছে, এটা নিবা না? দেখি হাতে প্রেমিকার দেয়া একটি পুতুল কাম-তিন টুকরো করলে তিনটি কলমদানি। বিড়বিড় করে শুধু বললো, এসব গিফট তো আর যেনতেন বন্ধু দেয় না ফেলে যাবে কেন? লজ্জায় মাথা নিচু করে হাত বাড়িয়েছিলামঃ মায়েরা সব নাও জানতে পারেন কিন্তু অনুভব করেন এবং সঠিক আন্দাজ করেন। ওখানেই উনাদের কেরামতি! 😛
২) সোভিয়েত দলের বাঙলাদেশকে ছাড় দিয়ে খেলা। অনেকে হয়তো বলবেন হ্যা করুণা করেছে। আমি কিন্তু দেখছি ভিন্ন ভাবে। করুণা নয় বরং সদ্য স্বাধীন দেশটিকে গড়তে হবে প্রতিটি ক্ষেত্রে এভাবে ডজনখানেক গোল দিয়ে মনোবল ভেঙ্গে দেয়ার কোন দরকার নেই সেটা তারা ভালই বুঝেছিল। যদিও ফুটবলে হাতিঘোড়া কিছুই করা হয়নি।
চমৎকার লিখা। আমি এরকম কিছু একটা নামানোর চিন্তায় আছি। দেখা যাক!
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
পুতুলের গল্পটা খুবই মজার। 😛
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
:shy: :shy: ধরা খাওয়ার ব্যাপারটা খুবই মধুর ছিল!
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
সব ধরা খাওয়া খারাপ না। কিছু কিছু ধরা সেলিব্রেট করার উপযুক্ত। ঐগুলা নিউজ পাব্লিক হবার সমতুল্য। 😀
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
খেলা দেখি জমে উঠেছে।
আ হা, বিশ্বকাপের ঠিক আগে আগে এমন জমজমাট লেখা! স্বাদই আলাদা।
😀
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
ভবিষ্যতে জীবন্ত ফসিল রোল প্লে করার জন্য ::salute:: :boss:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
এইটা একটা মজার এক্সপেরিয়েন্স। সামান্য আগে জন্ম হওয়ার কারনে এবং কিছু টেকনোলজিকাল ও রিসোর্স এডভান্টেজের কারনে আমি আমার সমসাময়িকদের চেয়ে জানা জানিতে বরাবরই অনেক এগিয়ে থাকতাম।
সুযোগ পেলেই ঐসব গল্প করতে মজাই লাগে।
দুরতম যে স্মৃতিটা মনে গেঁথে আছ তা হলো চন্দ্রবিজয়। ৬৯-এ বাসায় টিভি থাকায়, লাইভ না হলেও খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে সেই দৃশ্যটা দেখেছিলাম। সেটাও মনে আছে। আরও বেশী করে মনে আছে এইজন্য যে ওরা তিনজন যখন ঢাকায় এলেন, আব্বা আমাদের এয়ারপোর্টে নিয়ে গিয়েছিলেন চন্দ্র বিজয়িদের চর্মচোখে দেখার জন্য।
আমি খুব অবাক হয়েছিলাম দেখে যা ওরাও আমাদের মত মানুষ আর আমাদের মতই স্বাভাবিক ভাবেই হাটা চলা করে। টিভিতে কেন ওদের অমন কিম্ভুত সাজে আর লাফিয়ে লাফিয়ে চলতে দেখেছিলাম সেটা বুঝতে বহু বছর লেগে গিয়েছিল।
তবে সবচেয়ে মজার অভিজ্ঞতা ছিল ওদের সাথে আসা কোন একজনের (সম্ভবতঃ এডুইন অলড্রিন) তিন সন্তানের সাথে পরিচিত হতে পেরে। ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইংরেজিতে হ্যালো, হাউ আর ইউ বলে আমার সমবয়সি ঐ শিশুদের সাথে হ্যান্ডশেক করতে পারার অভিজ্ঞতাটা দীর্ঘদিন মনে দাগ কেটে ছিল।
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
তিন চন্দ্রবিজয়ী যে ঢাকা আসছিল এইটাই জানতাম না! :bash:
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
তাইতো কবি গাহিয়াছেন: "কত অজানারে......"
সত্যিই :bash: :bash: :bash:
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
আপনি তো ভাই জীবন্ত ইতিহাস। এতদিন জানতাম না :bash: :bash: :bash:
এক্কেরে :duel:
মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য
অনেক অদ্ভুত অদ্ভুত ঘটনাই কখনো ঘটনা চক্রে কখনো স্বপ্রোনদিত হয়ে দেখেছি, চর্মচোক্ষেই। একটা শেয়ার করি।
৭১-এর মার্চে ভুট্টো যেদিন ঢাকায় এলো, ঐদিন আমার আম্মার নাখাল পাড়ায় কোন এক ডাক্তারের সাথে এপয়েন্টমেন্ট ছিল। আগামসিহলেন থেকে দুপুরের পরপরই রিকশায় রওয়ানা হয়ে গেলাম। রাস্তায় মানুষের ভিড়ভাট্টা থাকলেও তেমন কিছু বুঝি নাই। ফেরার সময়তো দেখি তুলকালাম কান্ড চলছে। একটা কালো গাড়িতে (সম্ভবতঃ মার্সিডিজ) মুখ কালো করে বসে আছে ভুট্টো। আর একদল তরুন/যুবক গাড়িটা ঘিরে শ্লোগান দিচ্ছে। ওদের কয়েকজনের হাতে জুতার মালা। বাকিদের হাতেও জুতা ও স্যান্ডেল। পুলিশ খুব চেষ্টা করছে ওদের সরিয়ে গাড়িটা কে বের করে দিতে। ওরা গাড়ি যেতে দিচ্ছে না।
আমি তো খুব ভয় পেয়ে গেলাম। গাড়িই যেখানে যেতে পারছে না, আমাদের রিকশার কি হবে? কিন্তু কি অবাক কান্ড। আমরা কাছে যেতেই সবাই এক এক করে সরে সরে রিকশা যাবার মত জায়গা করে দিল। আর সেট ফাঁক গলে আমাদের রিকশাটা এঁকে বেঁকে বেড়িয়ে গেল।
ভুট্টো ওখানেই আটকে পড়ে রইল।
ঐ একবারই ভুট্টোকে কাছ থেকে দেখেছিলাম এবং তা বড়ই করুন পরিস্থিতির মধ্যে।
:))
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
:khekz: ভুট্রো সাহেব ভিক্ষা করে শেখ মুজিবের বাড়ি! :awesome:
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
অসাধারন হয়েছে পারভেজ ভাই। আপনাদের কাছ থেকে আমাদের না দেখা না শোনা অজানা গল্প গুলো জানতে পারাই মনে হয় এই আয়োজনের সেরা অর্জন। আরো লেখা চাই 🙂
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
ভাবছি ৭৮ থেকে ৯০ খুব বেশী হলে ৯৪ পর্যন্ত বিশ্বকাপ গুলো নিয়েও আরেক কিস্তি লিখবো। এর পরের গুলো নিয়ে লিখা লিখির কিছু নাই। ঐগুলা সবাই জানে।
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
অপেক্ষায় থাকলাম ভাই 🙂
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
আর বেশী অপেক্ষা করতে হবে না। আ-সি-তে-ছে আলোকিত পর্দায়......
(লিখা শেষ। এডিট করে পোস্ট করছি এখনই)
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
চমৎকার লেখা ভাই। এ পর্যন্ত বিশ্বকাপ নিয়ে যতগুলো পোষ্ট এসেছে তার মধ্যে সবচেয়ে ভালো হয়েছে।
পরের লেখার জন্য আগাম স্যালুট ভাই। ::salute:: ::salute:: ::salute::
মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য
😀
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
পারভেজ ভাই, আপনি তাহলে আমাদের চেয়ে বেশি সিনিয়র না... 😛
আপনি পেলেকে খেলতে দেখেন নি, আমরাও দেখি নি। আপনি ম্যারাডোনার স্বর্ণযুগ দেখেছেন, আমরা দেখেছি ওর রৌপ্য যুগ... B-)
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
একটা বয়সে পৌছুলে সবাই সমান হয়ে যায়। এই ধর, চল্লিশের আসে পাশে।
এখন আমরা সবাই সমান বা প্রায় সমান
😛
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.