সিসিবিয়ানদের আড্ডার ভিডিও ব্লগ

আড্ডার আইডিয়াটা এসেছিল অরূপের সাথে আলাপচারিতার ফাঁকে।

ডিবেট ফোরামের কয়েকজনা একবার একসাথে বসলাম আড্ডায়।
ব্যাক্তি জীবনে সবাই অপরিচিত বা প্রায় অপরিচিত।
অথচ খুব অল্প সময়ের মধ্যেই যে খুব কাছাকাছি চলে এলাম, সে আমাদের একই প্ল্যাটফর্মে চলা ফেরার কারনেই।

অদ্ভুত এক অভিজ্ঞতা!!!
চোখের দিকে তাকালে যাকে অপরিচিত লাগে, পিছন ফিরে বসলেই তাঁকে মনে হয় কত দিনের চেনা!!!

ঐ আড্ডাটা শুরু করতে দেরী করে ফেলেছিলাম। তাই বিষয় ভিত্তিক আলাপের পর উঠতে হলো “অনেক রাত হয়ে গেছে” এই অজুহাতে।
ফিরবার পর অরূপের টেক্সট পেলাম “পারভেজ ভাই, কবিতা শোনা হলো না!!!”

বললাম, “চলো, বিষয় ছাড়াই আড্ডায় বসি। যে যা পারবে করার জন্য। গান-গল্প-কবিতা যার যা খুশি…”
হঠাৎ সাবিনার কথা মনে হলো। ও এলে তো পিয়ানোটাও ঐ লিস্টে দিতে পারতাম। আর নূপুর থাকলে মোহন বীণা।

আবার মনে হলো “এলে” “থাকলে” – এইসব নিরাশাব্যাঞ্জক কথা কেন বলবো এই তৃতীয় সহস্রাব্দে বসেও?
যারা থাকতে চায়, একচুয়ালি না হোক, ভার্চুয়ালি তো তাদের হাজির করাই যায়, তাই না?
আর এই ভাবনা থেকেই “ইন্টারকন্টিনেন্টাল আড্ডার প্রি এনাউন্সমেন্ট”-এর ঘোষণা সম্বলিত ব্লগটা ছেড়ে দিলাম।

তারপর ১৩ই জুন আড্ডাতে বসাটা পর্যন্ত সময়টা কাটলো একটা ঘোরের মধ্যে।

খুব ভোরে উঠে সব রেডি-সেডি করে ক্লাবে যখন পৌছুলাম, তখনও নটা বাজেনি।
ল্যাপটপ, স্পিকার, সব লাগাতে না লাগাতেই পড়লাম বিদ্যুৎ বিভ্রাটের চক্করে।
সেসব কাটিয়ে সাবিনাকে যখন স্ক্রিনে পেলাম, মুখ লুকোনোর জায়গা পাচ্ছি না।
দেখেই বুঝলাম, কি দারুন প্রস্তুতিই না নিয়েছে সে আড্ডার জন্য!
আর পিয়ানোর উপরে হাত মেলে এক্কেবার প্রস্তুত বাজানোর জন্য।

এদিকে ঢাকায় ক্লাবে আমি ছাড়া কাকপক্ষিও নাই। আর কেউ আসবে কিনা জানাচ্ছেও না।
সমানে দুহাতে টেক্সট করে যাচ্ছি ফেবু ইনবক্সে (কারো সেল নাম্বারও যে জানি না, হাঁয়!!!)
শেষে আড্ডাটা কি আমার আর সাবিনার দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় পরিনত হবে?
– ভাবছি আর ঘামছি…
বরাবরই একলা চলো নীতিতে আস্থাশীল আমি। তারপরেও এতটা একলা হয়ে পড়বো, ভাবি নাই।

টেনশন নিয়ে এসব ভাবছি আর আশাবাদের কথা শুনাচ্ছি সাবিনাকে।
এরই মধ্যে একপশলা স্বস্তি নিয়ে দশটার দিকে এসে উপস্থিত হলো সবার প্রিয় মোকাব্বির সরকার।
হাঁপ ছেড়ে বাচলাম, যাক এক্কেবারে একা হবো না তাহলে।

ততক্ষনে বিদ্যুৎ বিভ্রাট কিছুটা নিয়ন্ত্রনে এসে গেছে।
আমি-মোকা-সাবিনা এই ত্রিপক্ষিয় আলাপ শুরু হলো। আর তা জমে উঠতে খুব একটা সময় নিল না।

সাড়ে দশটা বা পৌনে এগারোটার দিকে ইকরামও এসে পড়লো।

পরিচিতি পর্বের পর আরও কারো অপেক্ষা, আরও কিছু আলাপে কাটলো আরও কিছু সময়।
এতক্ষন সাবিনা ঠায় বসে পিয়ানোতে।
ভাবলাম, ঠিক হচ্ছে না ব্যাপারটা। পারফর্মেন্স পর্বটা শুরু করা যাক। আর কতো অপেক্ষা।

মাত্র তিন দর্শকের জন্য সাবিনার প্রথম পারফর্মেন্স “ওগো নিরুপমা” শুরু হলো। ঘড়িতে সময় তখন বারোটা ছুঁই ছুঁই।

সাবিনার পরেই এলো আমার পালা। আর তো কেউ নাই, তাই না? আমি সুনীল গাঙ্গুলির “কেউ কথা রাখেনি” আবৃত্তির দুঃসাহস দেখালাম।

আর্ধেকটাও বলে পারি নাই, এরই মধ্যে খায়রুল আহসান ভাই এসে উপস্থিত হলেন।
আমরা হাউজ ফুল হলাম।

পারফর্মারদের জন্য পারফর্মেন্স জিনিসটা সংক্রামক। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই খায়রুল ভাই স্বরচিত কবিতা পাঠে এগিয়ে এলেন।
অখন্ড মনযোগে সবাই শুনলাম ওনার “তুমি কবি নও” এর পাঠ।
বাসায় ফিরে দেখি কবিতাটা এসে গেছে সিসিবি-তে। তারমানে কি এই যে, কবিমুখে একটা অপ্রকাশিত কবিতা শোনার সৌভাগ্য হলো?

সম্ভাব্য পারফর্মারদের একটা করে করা হলো যা করার কথা ছিল। এরপর তাই বেশ কিছুক্ষণ গল্প-গুজব আড্ডা চললো।
এক সময় মনে হলো, হোক না আরও কিছু পারফর্মেন্স।
নানা কারনে সবেধননীলমনী সাবিনার দিকের তীর গেল তা শুরু করার জন্য।

আর সবার চাহিদা বুঝে নিয়ে জাত শিল্পীর মতই সাবিনার পিয়ানোয় বোল উঠলো কর্তার ক্লাসিক “বাশি শুনে আর কাজ নেই”…

সাবিনার পর যে আমাকেই আবার কিছু একটা করতে হবে, সেতো জানা কথাই, তাই না? এইবার তাই জীবনানন্দ দাস নিয়ে বসলাম। মজার ব্যাপার হলো, দ্বিতীয় কবিতা শেষ হতেই এক অনির্ধারিত আলোচনা হলো সুরঞ্জনার “হৃদয় আজ ঘাস” নিয়ে… 🙂 🙂 🙂

এর পরপরই সাবিনা নিয়ে এল তার ঐদিনের শেষ পারফর্মেন্স “আশা ছিল ভালবাসা ছিল”। মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনে গেলাম সবাই…

মিনিট দশেকের ব্যাবধানে আমার ও সাবিনার তিনখানা পারফর্মেন্স দেখার কারনেই হোক বা অন্য কোন কারনেই হোক, বাকিরা যে সংক্রামিত হবে না – তা কি করে হয়?
প্রথমেই মোকাব্বির রাজি হয়ে গেল স্বরচিত কবিতা পাঠে। এই যে সেই কবিতা, মোকাব্বিরের কন্ঠে

আরেকখানা গদ্য পাঠও করলো মোকাব্বির। কিন্তু কেন যেন ওটা ধারন করা হলো না…

এরপরই খায়রুল ভাই পড়লেন তাঁর আরেকটি স্বরচিত কবিতা “তোমার শখের পসরা”

সবাই যখন কিছু না কিছু করলো, ইকরাম আর বাকি থাকবে কেন?
আর কিছু না হোক কিছু একটা বক্তব্য রাখতে বললাম ওকে।

কলাম লেখক যখন, বিষয়ের ঘাটতি নাই ওর। তাছাড়া বলেও ভাল। দেশের সাংবাদিকতা পরিস্থিতি নিয়ে অভিজ্ঞতার এমন এক বর্ননা দিল যে সেটা আর দেয়া যাচ্ছে না এখানে। তবে পরে পাঁচ বছর আগে লিখা স্বরচিত যে কবিতাটা পড়ে শুনালো, সেটা দিচ্ছি…

এত কিছু হলো, একটা গান হবে না, তা কি হয়?
কিন্তু গানের মানুষ যে কেউ নাই!
ভাঙ্গাকুলোর রোলে তাই নেমে পড়লাম। কিন্তু হায়! ওটা তো রেকর্ড করা হয় নাই।
তবে হ্যাঁ, কিছুদিন আগে বাসায় বসে ট্র্যাকে করেছিলাম গানটা। সেটাই দিচ্ছি। “এক হৃদয়হীনার কাছে হৃদয়ের দাম কি আছে…”

এই হলো সকাল দশটা থেকে দুটো পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সিসিবিয়ান আড্ডার বর্ননা।

এবার কৃতজ্ঞতা স্বীকার।
প্রথমেই ক্লাব অথরিটি বিশেষ করে সেক্রেটারী জেনারেল ইমরোজ ভাই কে অনেক ধন্যবাদ বিনা সার্ভিস চার্জে পরীক্ষামুলক আড্ডা অনুষ্ঠানে অনুমতি দেয়ায় এবং সকল সার্ভিস সরবরাহ করায়।

বিসিসির কাজী মাসুমকে ধন্যবাদ নিরবিচ্ছিন্ন ওয়াইফাই পাবার ব্যবস্থা করার জন্য। ওর মাধ্যনে “আমরা”-কেও ধন্যবাদ।

ইকরামকে ধন্যবাদ খানাপিনার বিল দিয়ে দেবার জন্য।

অংশগ্রহনকারীদের অনেক ধন্যবাদ এই বৃষ্টি মাথায় করেও আসার জন্য।

শুধু মাশরুফের জন্য শোক। বেচারা আড্ডা শুরুর ঘন্টা দুই পর ঢুকতে চেয়েছিল জাপান থেকে। কিন্তু তখন আবিষ্কৃত হলো যে স্কাইপিতে “ভিডিও কনফারেন্স কল” এর ফ্যাসিলিটি আর নাই।
ওকে নিতে হলে সাবিনা নাই হয়ে যাবে জমে ওঠা আড্ডা থেকে। অন্য কোন বিকল্পও পেলাম না মাশরুফকে ঢোকানোর। এবার আর ওকে নেয়া গেল না।

তবে হ্যাঁ, সফট ওয়ারের এই লিমিটেশনটা জানলাম। আগামীতে এমন প্রস্তুতি নেবো যেন এটা কোন সমস্যা না করে।
দেখা যাক কি হয়……

দু ভাবে এটা করা যায় বলে ভেবেছি:
১) হ্যাং আউট ব্যবহার করে।
২) আরও কিছু ল্যাপটপ নিয়ে এসে সেগুলোতে আগ্রহিদের একে একে হাজির করে।
দেখি কি দাঁড়ায়…

এই আড্ডার উপর সাবিনা চৌধুরীর লিখা ব্লগ:

দিনলিপিঃ সিসিবিয়ানদের আড্ডার গল্প

৭০ টি মন্তব্য : “সিসিবিয়ানদের আড্ডার ভিডিও ব্লগ”

  1. সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

    ভাইয়া তোমার ব্লগ পড়ে/দেখে মনে হলো আগামীতে আমি আড্ডাতে না থাকলেও এতোটুকু কিছুও মিস করবো না! কী যে চমৎকার করে লিখেছো, ভিডিও করেছো তাতে যারা আসেনি তারা কিন্তু না এসেও সব দেখতে পেলো। গানা বাজনা তো ব্লগেই আমরা ইচ্ছেমত করি সবাই মিলে, আড্ডার অংশটুকু শুনতে দারুণ লাগছিল। গ্রেট জব, ভাইয়া!

    জবাব দিন
  2. সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

    পারভেজ ভাইয়ার সুরঞ্জনার পর খায়রুল আহসান ভাইয়ার ঘাস বিষয়ক প্রশ্নের উত্তরে পারভেজ ভাইয়ার উত্তর শুনে ভাল লাগলো। আমার মত অকবির এ ব্যাপারে তো কোন মতামত থাকার প্রশ্নই ওঠেনা। আসরের অন্য কবিরা কি ভাবছেন সেটি জানতে মন চাইছে। কেউ কি বলবেন??

    জবাব দিন
  3. সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

    বিশিষ্ট কবি মোকা তো মাতিয়ে দিয়েছিল আড্ডায় তার কাব্য পড়ে। কবিতার সাথে সাথে তার ভাবনাটুকুও চমৎকার।

    মোকাব্বির সরকারকে অবিলম্বে সিসিকব এ যোগ দেবার জন্য ফরমান জারী করা হলো। 😀

    জবাব দিন
  4. সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

    খায়রুল আহসান ভাইয়ার পাঠ শুনলাম আবার এখানে। এক কথায় চমৎকার পাঠ ভাইয়ার। আমাদের প্রতিটি লেখার পেছনে একটি টুকরো গল্প অথবা ভাবনা থাকে। মাঝেমাঝে কবিদের সেই টুকরো ভাবনা অথবা গল্পটির গল্প শুনতে মন চায় আমার।

    জবাব দিন
  5. সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

    আড্ডায় আসার জন্য ইকরাম ভাইয়াকে সবিশেষ ধন্যবাদ দিতেই হয়। তাঁর লেখাটি ভাল লেগেছে। ভাইয়াকে নিয়মিত সিসিবিতে লিখবার জন্য আকুল আবেদন জানানো হলো। 😀

    জবাব দিন
  6. লুৎফুল (৭৮-৮৪)

    দুর্দান্ত ! দুর্দান্ত !
    জমজমাট আড্ডা।
    এতো দেরী পর্যন্ত চলবে যদি জানতাম।
    আফসোসের মাত্রাটা বাড়লো।
    পরবর্তী আড্ডার অপেক্ষায় থাকবো।
    এভরিওয়ান রকস।
    স্পেশাল থ্যাংকস টু পারভেজ ফর বিং দ্য ট্রাবল টেকার ফর দ্য এরেঞ্জমেন্ট।
    আশা করি পরের আড্ডায় ভীড় অনেক বাড়বে।

    জবাব দিন
  7. মোকাব্বির (৯৮-০৪)

    অসাধারণ লাগলো। সেদিন সরাসরি শুনেছিলাম। আজকে আবার শুনে আরো ভাল লাগছে। আড্ডা জমে গেলে কিন্তু আর পিছে ফিরে তাকানো লাগে না। সেটা নিশ্চিত করতে আমার মত বাচাল আরো কয়েকজন দরকার। আশা করি পরেরবার পাওয়া যাবে! 😀 😀


    \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
    অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

    জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      লেসন # ১: নেক্সট আড্ডাটা ওপেন এন্ডেড রাখতে হবে। শনিবার সাড়ে তিনটায় আমার ক্লাস থাকে। তাই শনিবার করলে ওটা শুরু যখনই হোক, সাড়ে তিনটার পরেও যেন চলতে থাকে, সেই প্রস্তুতি রাখতে হবে। এবার দুইটায় জোর করে আড্ডা থামাতে হয়েছে। এটা এড়াতে হবে।
      আরেক কাজ করা যায়। শুরু করা যায় সন্ধ্যায়। ক্লাস শেষ করে এসে আমি তাতে জয়েন করলাম.........

      লেসন # ২: স্কাইপি ব্যবহার করলে, প্রত্যেক এওয়ে পার্টিসিপেন্টের জন্য একজন করে হোম পার্টিসিপেন্টকে হোস্ট হিসাবে নির্ধারন করা যায়। হোস্টের ল্যাপটপে উনি থাকবেন। এতে করে সবার একসাথে থাকাটা, পার্টিসিপেট করাটা সহজ হবে।
      আবার এওয়ে পার্টিসিপেন্ট চাইলে তাঁর পছন্দের কাউকে তাঁর হোস্ট হিসাবে বেছে নিতেও পারবেন। এটা ও ভাল...


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন
  8. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    এবারে এ ব্লগে এসে যাত্রাটা সম্পূর্ণ হলো।
    পরিবেশনাগুলোকে এই এত দূর থেকে (এবং কয়েকদিন পরে) ছুঁতে পারার অভিজ্ঞতা অন্যরকম -- একদম অন্যরকম।
    সাবিনা আপার বাজনা দুর্দান্ত লাগলো। এর পরে প্রত্যেকবার তোমার বাজনা দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু এবং শেষ করার জোর প্রস্তাবনা রাখছি। খায়রুল ভাইয়ের কবিতা তো পড়ছি, উপলব্ধি করছি। আজ ওঁর কণ্ঠ শুনে মুগ্ধতা আরেক দফা বাড়লো। আরেকবার উপলব্ধি করলাম তিনি অক্সিজেনের বদলে কবিতায় শ্বাসগ্রহণ করেন -- কবিতায় বাঁচেন।
    পারভেজ ভাইয়ের কথা নতুন করে বলার নেই। পুরো ব্যাপারটা একলা চলো নীতিতে কি করে যে ঘটিয়ে ফেললেন সেটাই ভাবি - সহজ ব্যাপার নয়! ইকরাম ভাইকে ছবিতে দেখেছি। আজ পড়তে দেখলাম। ওঁকে সিসিবিতে দেখিনা আজকাল -- বহুআগে মুগ্ধ হয়ে কয়েকটা লেখা পড়েছিলাম। এখানে যেটা শুনলাম সেয়াট কি সিসিবিতে দিয়েছিলেন উনি? মনে পড়ছেনা আমার।

    সবশেষে, সর্বকনিষ্ঠ মোকার সেই পছন্দের লেখাটা শুনতে পেলাম। সে লেখার সূত্র ধরে নিজের নামখানি শুনতে পেয়ে মনে হচ্ছিল আকাশে উঠে গেছি। 😀
    পাঠটি এবং তদসংলগ্ন আলোচনাটিও দারুণ উপভোগ করলাম। খায়রুল ভাইয়ের মন্তব্যটি দারুণ ভালো লাগলো। বাংলার জাঁদরেল অধ্যাপক মনে হচ্ছিল ওঁকে, অবশ্য জানিনা উনি সত্যি সত্যি অধ্যাপক কি না।

    জয়তু সিসিবি। আগামী আয়োজনে হামলা করার আগ্রহ জানিয়ে

    জবাব দিন
  9. জিহাদ (৯৯-০৫)

    খুবই চমৎকার হয়েছে! সবগুলো দেখে এখনো শেষ করতে পারিনি। শেষ করে আরেকবার কিছু একটা বলে যাবো।

    আর ভিডিও ব্লগ নামে একটা ক্যাটাগরি করে দিলাম। এই ব্লগ দেয়ার পর নতুন ক্যাটাগরি না করে থাকার উপায় নেই। 🙂


    সাতেও নাই, পাঁচেও নাই

    জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      ইয়া হু!!!
      এক্ষুনি ভিডিও ব্লগ ক্যাটাগরিতে আপগ্রেড করে নিচ্ছি।
      মনে হয় এই পোস্টটা হবে ঐ ক্যাটাগরির প্রথম সদস্য।
      থ্যাংকস জিহাদ...

      আরি আরি আরি...
      আপগ্রেডও করা লাগলো না। এডু স্যার দেখি নিজেই তা করে দিয়েছেন।
      ফিলিং অনারড... (সম্পাদিত)


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন
  10. মোস্তফা (১৯৮০-১৯৮৬)

    অভূতভাবিত ও অসাধারণ। দূর থেকেও বেশ বুঝতে পারছি, কী নিদারুণ পরিশ্রমের সোনালি ফসল এই আয়োজন! সংশ্লিষ্ট সবাইকে সাধুবাদ ও কৃতজ্ঞতা। দূর থেকে দেখে দেখে মোহিত হলাম, আর ভাবলাম,

    সকল লোকের মাঝে বসে
    আমার নিজের মুদ্রাদোষে
    আমি একা হতেছি আলাদা?
    আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
    আমার পথেই শুধু বাধা?


    দেখেছি সবুজ পাতা অঘ্রানের অন্ধকারে হতেছে হলুদ

    জবাব দিন
  11. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    হ্যাং আউট বা ইউ টিউবে করা যায়।
    ইউ টিউবে মনে হয় আবার একটা প্রবলেম আছে অন্তত ১০০০ খানেক সাবস্ক্রাইবার থাকতে হয়।
    বাট হ্যাং আউটে করলেই বেটার।
    বাইরে যারা থাকে তাদের প্রায় সবাই যারা চায় তারা এটেন্ড করতে পারবে।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      ভাল প্রস্তাব...
      হ্যাং আউটে করতে চাইলে, এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করা দরকার।
      আমি pervez840@gmail.com এই ইমেইলে হ্যাং আউটে আছি।
      যারা যারা হ্যাং আউট ব্যবহার করে ভার্চুয়ালি আড্ডায় যুক্ত হতে ইচ্ছুক, আগে আমার সাথে পরীক্ষামূলকভাবে যুক্ত হতে সাদর আহ্ববান জানাচ্ছি।
      কে কে ইচ্ছুক, হাত তোলেন দেখি?


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন
  12. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    আয়োজন টা করেছেন সবাই মিলেই, কিন্তু পারভেজ ভাই কে একটা স্পেশাল থ্যাংকস।

    দুই/তিনমাস পর পর এরকম একটা চাই।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  13. সাইদুল (৭৬-৮২)

    ফেসবুকে আগেই জানিয়েছিলাম থাকা হবে না।
    পারভেজের ব্লগ পড়ে মনে হল, অনেক কিছু মিস করেছি। তবে সেটি পুষিয়ে গেছে, ভিডিও ব্লগ দেখে। অদম্য পারভেজকে আবারও অভিনন্দন।
    পারভেজের একা একা বসে থাকার ব্যাপারটা ভেবে কষ্ট পাচ্ছি। শেষ পর্যন্ত শুরু হলো সাবিনার বাজনা ( এই শব্দটা আজকাল মানুষ সচরাচর ব্যবহার করেনা, কেন করেনা?) দিয়ে।
    পারভেজের কবিতা শুনতে গিয়ে ক্লাশ সেভেনের একটা ছেলের কথা মনে হল, যার মুখে আবুল হাসান নামটা প্রথম শুনি। সে পাঠ করতো
    বন ভূমিকে বল, বন ভূমি ওখানে একটা মানুষ লম্বা লম্বি ভাবে শুয়ে আছে।
    কেউ কথা রাখেনির শেষের দিকে একটু ভুল হয়েছে হবে দূরন্ত ষাঁড়ের চোখে বেঁধেছি লাল কাপড় (লাল রুমাল নয়)। ভেবে ভেবে ব্যথা পাবো আমার মতে সেরা আবৃত্তি। সাবিনার পারফর্মেন্স ভালো । তিনটি সুরই খুব চেনা। শচীন দেবের গান কখনো পিয়ানোয় শুনি নাই। শুনে মুগ্ধ হলাম।
    খায়রূল ভাইএর দু;টি কবিতাঈ ভালো, তুমি কবি নও বেশি প্রাণ বন্ত ছিলো।
    অনেক নোক্তার পর মোকাব্বেরের আবৃত্তি শুরু হল। আমার মনে হল এই অংশটি ছিলো খুবই আকর্ষণীয়। সবার পার্টিসিপেসনে এই সাড়ে তিন মিনিট ছিলো প্রানবাভাবিকেক জন অকবি মানুষের যথার্থ কবি সুলভ আচরণ।

    ইকরাম কবীর একের পর এক বিষ্ময়ের জন্ম দিয়ে যাচ্ছে। এক সকালে বিবসিতে ইকরামের অনুষ্ঠান শুনে এর পর থেকে প্রতিদিনই কান পেতে থাকতাম। আজ ওর কবিতা শুনে একেবারে মুগ্ধ। হ্যা আমি সিসিবির মাধ্যমে বিশ্ব বাসীকে জানিয়ে দিতে চাই। আমি ইকরামের সাথে একরুমে ছিলাম এক সময়।
    পারভেজের গান এই প্রথম শুনলাম।

    শেষ কথা হল, আয়োজনটি ভালো হয়েছে। ধন্যবাদ সবাইকে


    যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান

    জবাব দিন
    • সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

      🙂 🙂 🙂 🙂

      সাইদুল ভাইয়া, আমাদের এই তিন মিনিটের আলোচনা শুনে ভাল লেগেছে জেনে মনে হলো, আমরা তো পুরো সময়টাতেই মুখর ছিলাম। কত কথাই না বলেছিলাম সবাই মিলে। কথা বলেছিলাম দেশ, কবিতা, ধর্ম, মানুষ, আবহাওয়া, রাজনীতি অথবা নীতিহীনতার গল্পও। এরই মাঝেমাঝে গান, কবিতা, বাজনা অথবা পাঠ চলেছে অবিরাম। একবারও মনে হয়নি এই মানুষগুলো আমার অপরিচিত। সব আলোচনা না থাকলেও খানিক যদি আড্ডার ভিডিও হতো ভাল লাগতো। আড্ডার রেশ অথবা সুরভি যা'ই বলো না কেন সেটি রয়ে গেছে এখনো।

      ক্যান্ট ওয়েট টু সি ইউ অল এগেইন!

      জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      আমার প্রতি সাইদুল ভাই এর সেই চিরকালিন পক্ষপাতটা যে এতটুকুও কমে নাই তা বুঝলাম কবির নামসহ "বনভূমি কে বল বনভূমি" এখনো মনে থাকাটা দেখেই।
      ফিলিং লাইক আ বার্ড। যে হাওয়ায় ডানা মেলে উড়ছে...

      কাপড়টা যে ক্যামনে রুমাল হয়ে গেলো, নিজেও বুঝে ঊঠতে পারছি না!!!
      আবৃত্তির এই এক সমস্যা। নিজে নিজেই কিছু ওলট-পালট হয়ে যায়...

      গানের উল্লেখটা যে অন্ততঃ করলেন, এতেই সম্মানিত বোধ করছি।

      সাইদুল ভাই: বরাবরের মতই অসাধারন একটা রিভিউ।
      পরের বার যদি আবার এরকম আয়োজনে যুক্ত থাকার সুযোগ পাই, জানবেন, আমার সেই পুরোটা এফর্টের অনুপ্রেরনাই হবে এই লিখাটা।
      নির্দিধায় সব এফর্ট উৎসর্গ করবো আপনার জন্য তা আপনি থাকুন, আর না থাকুন...


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      মাত্র চার জনের ফিজিকাল এবং একজনের ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে অতক্ষুদ্র এক আয়োজন। অথচ তা সব্বাইকে এতটা ছুঁয়ে যাওয়া সত্যিই ভাবায়! খুবই ভাবায়!!
      আর তা এইরকম যে, আমরা সব্বাই কি আসলে এরকম কিছু একটা ঘটুক আমাদের জন্যেও, তার জন্য সুপ্ত এক অপেক্ষা ধরে রাখি মনে?
      কি জানি, হতেও পারে।
      এর মেটেরিয়াল ভ্যাল্যু হয়তো কিছুই না কিন্তু সাইকোলজিকাল ভ্যালু হয়তো অপরিসিম।
      কি জানি, বুঝি না কিছুই.........
      ভেবে ভেবে খেই হারিয়ে ফেলি!!!


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন
      • সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

        🙂 🙂 🙂 🙂

        আহসান ভাইয়ার কথামতো আমিও তো বলতে চাই, কানেকশন তো আছে বটেই আমাদের মাঝে, নইলে টোটাল স্ট্রেঞ্জারদের সাথে সংযোগ হল কি করে!

        'বনভূমিকে বল' কবিতাটি এবং তার পেছনের গল্পটি বলবার জন্য অনেক ধন্যবাদ পারভেজ ভাইয়া এবং আহসান ভাইয়া কে! :clap: :clap:

        পরবর্তী আড্ডার জন্য আমার কিছু প্রস্তাবনা আছে। ভেবে দেখতে পারেন সবাই মিলে।

        ১ বিষয়ভিত্তিক আড্ডা হতে পারে। যেমন গান বাজনা, গল্প, স্বদেশ, বহির্বিশ্ব, খেলাধূলা, জোকস, সাম্প্রতিক ঘটনা, সমাজ সংসার এমনকি রাজনীতি। নিরাপত্তাজনিত কারণে ধর্মকে এক্সক্লুড করা উচিত। তবে এটাও ঠিক যে বিষয়ভিত্তিক আড্ডাবাজদের ধরে আনা খানিক কষ্টের হতে পারে। আড্ডার ফাঁকে ফাঁকে গান বাজনা চলতে পারে। সিসিবির ছড়াকারেরা কই? তাদের দেখতে চাই।

        ২ একজন মডারেটর থাকলে ভাল হয় প্রতি আড্ডায়। ঢাকার বাইরে থেকে কেউ চাইলে পারটিসিপেট করতে পারেন। হ্যাংআউট এক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে।

        ৩ গান বাজনা অথবার যেকোন পারফরমেন্সের পুরো ভিডিওধারণ দেখতে খানিক বিরক্ত হতে পারেন শ্রোতারা, সেক্ষেত্রে হাইলাইটেড অংশ হলে দেখার সময়ে ধৈর্যচ্যুতি ঘটবে না কারো।

        ৪ 'ডিভিশন অব লেবার' ইজ আ মাস্ট। কেউ হবেন ক্যামেরাম্যান, কেউবা ভিডিও পারসন, কেউ ব্লগ লিখবেন, কেউবা মডারেটরের দায়িত্ব পালন করবেন। কেউ ক্যাফেটেরিয়ায় ছুটোছুটি করবেন। কেউবা টেক্সট করে সবাইকে মনে করিয়ে দেবেন আড্ডার কথা। সবাইকে অথবা কয়েকজন কে তাদের নিজ নিজ ল্যাপ টপ সাথে নিয়ে আসতে অনুরোধ করা যেতে পারে। কেউবা আনবেন স্পীকার।

        পরিশেষে বলতেই হয়, পারভেজ ভাইয়া একাই এতোগুলো দায়িত্ব পালন করেছেন স্বেচ্ছায়। জয়তু, সিসিবির প্রথম ভিডিও ব্লগার পারভেজ ভাইয়া! :hatsoff:

        জবাব দিন
        • পারভেজ (৭৮-৮৪)

          সবগুলো প্রস্তাবই পছন্দ হয়েছে।
          আগ্রহী অংশগ্রহনকারীগণেরও মতামত জানতে চাচ্ছি...

          বাই দ্যা ওয়ে, এবারের স্টিল গুলো যে মোকাব্বিরি নিয়েছিল, তা কিন্তু আগেই বলা হয়েছে।
          আর রিফ্রেশমেন্ট ছিল ইকরামের সৌজন্যে......


          Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

          জবাব দিন
  14. পারভেজ (৭৮-৮৪)

    বাই দ্যা ওয়ে,
    সাইদুল ভাই এর উল্লেখিত, সপ্তম শ্রেনীতে ট্যালেন্ট শো-এ আমার আবৃত্তি করা
    কবি আবুল হাসানের সেই "বনভূমি কে বল" কবিতাটা কি কেউ পড়তে চান?
    এই যে দেখুন.........

    বনভূমিকে বলো, বনভূমি, অইখানে একটি মানুষ
    লম্বালম্বি শুয়ে আছে, অসুস্থ মানুষ
    হেমন্তে হলুদ পাতা যেরকম ঝরে যায়,
    ও এখন সে রকম ঝরে যাবে, ওর চুল, ওর চোখ
    ওর নখ, অমল আঙুল সব ঝরে যাবে,
    বনভূমিকে বলো, বনভূমি অইখানে একটি মানুষ
    লম্বালম্বি শুয়ে আছে, অসুস্থ মানুষ
    ও এখন নদীর জলের স্রোতে ভেসে যেতে চায়
    ও এখন মাটি হতে চায়, শুধু মাটি
    চকের গুঁড়োর মতো ঘরে ফিরে যেতে চায়,
    বনভূমিকে বলো, বনভূমি ওকে আর শুইয়ে রেখো না !

    ওকে ঘরে ফিরে যেতে দাও। যে যাবার
    সে চলে যাক, তাকে আর বসিয়ে রেখো না।

    [আমি যতটা জানি, খুব অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে এটা লিখেছিলেন কবি আবুল হাসান (প্রবাসী কবি সুরাইয়া খানমের তৎকালীন প্রেমিক)। এই কবিতাটা লিখার পর খুব বেশিদিন আর তিনি বেঁচে ছিলেন না...]


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন
  15. খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

    অসম বয়সী মাত্র কয়েকজন মানুষের আলাপচারিতা, এমন প্রাণবন্ত হতে পারে? কোথায় যেন একটা কানেকটিং লিঙ্ক লুকিয়ে আছে বলে মনে হয়!
    বিবিসি'র সদালাপী ইকরাম যেন আজ সিসিবি'তে আড়মোড়া দিয়ে উঠলো। ভালো লাগলো।
    কোন ধন্যবাদই পারভেজ এর জন্য যথেষ্ট নয়। শুধু অনুষ্ঠানটা আয়োজন করেই সে ক্ষান্ত হয়নি, এত সুন্দর একটা শ্রমসাধ্য কাজ করে সে তার অদম্য নিষ্ঠা আর প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেলো। তাই, :hatsoff: পারভেজ।

    জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      শুনতে যেমনই লাগুক, খায়রুল আহসান ভাই, আর অন্যরা যা বলে বলুক, আপনি এইভাবে বললে তো বিব্রত না হয়ে উপায় থাকে না!!!
      আমার উৎসাহ নেয়ার উৎস কিন্তু আপনার এবং অন্যদের উপরে থাকা আস্থার কারনেই।
      বিশেষ করে প্রস্তাবটা রাখার পরেই সাবিনার মধ্যে যে উচ্ছাস দেখেছিলাম, তা দিয়ে সংক্রামিত না হওয়াটাই হতো বিরাট অন্যয়।

      যাহক শেষ পর্যন্ত যে একটা কিছু নেমেছে এবং তা অন্য অনেককেও যে সংক্রামিত করেছে, সেটাই বিরাট স্বস্তি......

      সমান কৃতিত্ব তাই সবারই!!!


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন
  16. খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

    আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর কথা থেকে ধার করে বলছিঃ
    "বনভূমি কে বল" - এ বিখ্যাত কবিতাটি, অসুস্থ ও ক্লান্ত একজন মানুষের হাল ছেড়ে দেয়ার অপূর্ব এক আখ্যান । আবুল হাসান এত সিরিয়াস একটি আবেদন কি অবলীলায় করেছেন "বনভূমির" কাছে! "বনভূমি" শব্দটি রাগের বাদী স্বরের মত বার বার ঘুরে ফিরে এসেছে। এই "বনভূমি" কে এবং কী?
    আমি শুনেছি সুরাইয়া খানমই তার প্রেম-পিয়াসী ছিলেন। আহমেদ ছফার বিচিত্র প্রেমের কাহিনী , "অর্ধেক নারী অর্ধেক ইশ্বরী" র প্রধান এবং জীবন্ত চরিত্রটিই হচ্ছে এই সুরাইয়া খানম। (উদ্ধৃতি শেষ)
    কবি আবুল হাসান পরলোকগত ক্যাপ্টেন মীর ওয়ালিউজ্জামানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। আমরা যখন MCC এর দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র, তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য পাশ করে বের হওয়া সুদর্শন, বোহেমিয়ান জীবনাচারে অভ্যস্ত মীর ওয়ালিউজ্জামান কি জানি কোন খেয়ালে ক্যডেট কলেজ এর মত এক আবদ্ধ ডেরায় এসে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি আমাদের শিক্ষক হলেও, বয়সের ব্যবধান ততটা না থাকায় আমাদের বন্ধুর মতই ছিলেন। আমাদের (F H House) এর House Tutor ছিলেন। আমাদেরই কারো কারো প্ররোচনায় তিনি একদিন সেনাবাহিনীর সেনা শিক্ষা কোরে কমিশনের জন্য আবেদন করেছিলেন এবং নির্বাচিতও হয়েছিলেন। কিন্তু তার মত একজন মুক্তমনা বনের পাখির জন্য সেনাবাহিনীর সোনার খাঁচা উপযুক্ত স্থান ছিলনা। তাই খুব দ্রুতই তিনি সেখান থেকে পরিত্রাণ খুঁজেছিলেন এবং পেয়েছিলেনও। ক্যাপ্টেন পদবীতে তিনি সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি লাভ করেছিলেন। তাঁর .মুখে কবি আবুল হাসান এর অনেক গল্প শুনেছি। প্রয়াত কবি তাঁর একটি বিখ্যাত কবিতার বই মীর ওয়ালিউজ্জামান এর নামে উৎসর্গ করেছিলেন। প্রকৃ্তির অমোঘ নিয়মে তাঁরা উভয়েই আজ বনভূমিতে শায়িত ও ক্ষয়িত।

    জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      সেদিনের সেই ছোট্টো আড্ডাটা কত কত দিকে যে ডাল পালা মেলছে, ভাবতেই গা ছমছমে একটা অনুভুতি এসে হানা দিচ্ছে।

      কিছুক্ষন আগেও যে কবিতাটা অবলিলায় পড়ে যেতাম, বা আউড়ে যেতাম, এই প্রথম দেখলাম সশব্দে পড়ার সময় গলা বুজে আসছে...
      অদ্ভুত এক অভিজ্ঞতা!!!


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন
  17. মাহবুব (৭৮-৮৪)

    অসাধারন এই আয়োজনে যোগ দিতে পারি নাই, আফসোস! পারভেজকে ::salute:: ওর এনার্জী ও আইডিয়ার জন্য। যারা উপ্সথিত ছিলেন সবাইকে শুভেচ্ছা।
    হ্যাঁ- বলতেই হচ্ছে, নিন্দুকের মুখে ঝামা ঘষে দিয়ে- quality shows itself!

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।