আগে এমনটা হয়েছে কিনা, চোখে পড়ে নাই।
তবে হলে মনেহয় মন্দ হবে না ব্যাপারটা।
ধরা যাক দল বেঁধে কোথাও গেলাম বেড়াতে বা অভিজ্ঞতা অর্জনে। তারপরে পুরো ট্রিপটা ভাগ করে নিয়ে এক এক অংশের উপরে এক এক জন তাঁদের অভিজ্ঞতা / মতামত লিখলো।
একজন যাওয়াটা কভার করলো তো আরেকজন ফেরা। মাঝের টুকরো অভিজ্ঞতা/ইভেন্টগুলো অন্যরা ভাগ করে নিলো কে কোনটার উপরে লিখবে। লিখার পাশাপাশি ছবিব্লগও হতে পারে প্রায় প্রতিটা বিষয় নিয়েই।
ছোট ছোট অনেক লিখা মিলে দারুন এক ট্রাভেলগ তো দাঁড়াবেই সাথে পাঠকের জন্যেও থাকবে ভ্রমনজনিত নানান টিপস।
কেমন হয়, ব্যাপারটা?
আগামি ১, ২, ৩ মে টানা ছুটি আছে তিনদিন। সেই সময়ে নীচের কোন একটা ট্রিপের কথা কি ভাবা যায়?
সম্ভাব্যতা নিয়েও খোঁজ-খবর নিয়েছি। নীচে দিলাম।
***************************
প্রথম ট্রিপ প্ল্যান: (সুন্দরবন)
==========
যদিও এই সময়টাতে গরমের কারনে রেগুলার প্যাকেজ খুব একটা থাকে না, তবে ২০-২৫ জন বা কাছাকাছি সংখ্যক যাত্রির জন্য ট্যুর অপারেটর একটি প্যাকেজ অফার করতে রাজি হবে।
ইটিনিয়ারি হতে পারে নিম্নরূপ:
৩০ এপ্রিল রাত – নাইট কোচে ঢাকা থেকে খুলনার উদ্দেশ্যে যাত্রা।
১ মে – ভোরে খুলনায় পৌছুনো। সুন্দরবনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়া।
১ মে, ২ মে – বোটে ভ্রমন ও রাত্রিযাপন
৩ মে – সুন্দরবন থেকে খুলনার উদ্দেশ্যে যাত্রা। রাত নয়টা নাগাদ খুলনায় পৌছুনো। খুলনা থেকে নাইট কোচে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা
৪ মে – সকালে ঢাকায় পৌছুনো।
এইবার সবচেয়ে ইম্পর্টেন্ট বিষয়: “কস্ট” অর্থাৎ খরচ কেমন পড়তে পারে?
খুলনা – সুন্দরবন – খুলনা বোটর ফেয়ার (থাকা খাওয়াসহ) জনপ্রতি ১১,০০০/=
ঢাকা-খুলনা ও খুলনা-ঢাকা নাইট কোচ ১২০০/= করে জনপ্রতি প্রতিবার। মোট ২,৪০০/=
যদি পর্যাপ্ত সংখ্যক যাত্রি হয় তাহলে বিকল্প হলো, একটা গোটা বাস ভাড়া নিয়ে নেয়া। এতে খরচ পড়বে ৪৫,০০০/= করে প্রতিবার। অর্থাৎ মোট নব্বুই হাজার।
নোট-১: ৩ মে তারিখটি পুর্নিমা। তারমানে গোটা ট্রিপেই প্রচুর জোৎস্না পাওয়া যাবে চাঁদের আলোয় বন-দর্শনের জন্য। আবার ফেরার সময় নদীতে পুর্নিমার দেখা মিলবে।
নোট-২: যারা প্লেনে খুলনায় পৌছুতে চান, তাঁদেরকে ৩০ এপ্রিল লাস্ট ফ্লাইটে খুলনা পৌছে নিজ ব্যবস্থ্যপনায় হোটেলে রাত্রিযাপন করতে হবে। হোটেল বুকিং-এর জন্য এসিস্ট্যান্স পাওয়া যাবে। প্লেনে ফিরতে চাইলে, খুলনায় আবার রাত্রিযাপন করে পরদিন ফার্স্ট ফ্লাইট ধরতে হবে।
নোট-৩: নাইট কোচের টিকেট কেনার জন্যেও এসিস্ট্যান্স পাওয়া যাবে।
নোট-৪: বোটের রুমগুলি এসি নয়। তবে ফ্যান আছে। ২টা ফোর-বেড ও বাকি ৯টা টু-বেড। ৪৬ সিটের আরেকটি লঞ্চও আছে। যাত্রী ২৬-এর বেশী হলে সেটিও পাওয়া সম্ভব।
আরও জানতে চাইলে দেখুন এইখানে
দ্বিতীয় ট্রিপ প্ল্যান: (কুয়াকাটা)
===========
যাওয়া: ঢাকা-পটুয়াখালি (লঞ্চে) – পটুয়াখালি-কুয়াকাটা (বাসে)
ফেরা: কুয়াকাটা-পটুয়াখালি (বাসে) – পটুয়াখালি-ঢাকা (লঞ্চে)
ইটিনিয়ারি:
৩০ এপ্রিল সন্ধ্যা: সদরঘাট থেকে লঞ্চে পটুয়াখালির উদ্দেশ্যে যাত্রা। কিছু এসি কিছু নন এসি রুম।
১ মে: সকালে পটুয়াখালিতে পৌছুনো, ব্রেকফাস্ট, কুয়াকাটার উদ্দেশ্যে যাত্রা
১ ও ২ মে: কুয়াকাটায় অবস্থান। সাইট সিইং। এসি রুম।
৩ মে: হাফ ডে সাইট সিইং। লাঞ্চের পর পটুয়াখালির উদ্দেশ্যে যাত্রা। সন্ধ্যায় লঞ্চ ধরা, ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা।
৪ মে: সকালে ঢাকা সদরঘাটে নামা।
শর্ত:
১) দশজনের কম হলে নাকি প্যাকেজ চালানো হয় না। সেইক্ষেত্রে প্যাকেজ ক্যান্সেল করতে হবে অথবা দশ জনের কস্ট দিতে হবে।
২) বেশী জন হলে, জনপ্রতি খরচ কমে আসবে। উদাহরন : ১০ জনের গ্রুপের জন্য জনপ্রতি খরচ যেখানে ১২,৫০০/= টাকা করে, সেখানে ২০ জন হলে তা জনপ্রতি ১০,৫০০/= তে নেমে আসবে
৩) এই খরচের মধ্যে টু ওয়ে লঞ্চভাড়া-বাসভাড়া, একমোডেশন, সাইট-সিইং ও সকল মিল ইনক্লুডেড।
নোট:
ক) ৩ মে রাতে ফেরার সময় সারারাত লঞ্চের ডেকে বসে পূর্নিমা উপভোগ করা যাবে।
খ) লঞ্চ জার্নি তেমন একটা টায়ারিং না। তাই ৪ তারিখে ঢাকা পৌছে কমফোর্টেবলি অফিস করাতে পারার কথা।
**************************
আমার তো মনেহয় এ জাতীয় বৃন্দ-ব্লগিং এর জন্য স্পন্সার পাওয়াও সম্ভব। সেই ক্ষেত্রে ভ্রমনকারীরা স্পন্সরের ভেস্ট লোগো সম্বলিত পোষাক পরবে পুরো ট্রিপটাতে।
ছবিব্লগগুলো স্পন্সারের ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়াতে বা রি-ইনফোর্সমেন্ট এড-এর কাজ করতে পারে।
কেমন হয় ব্যাপারটা?
ভালো প্রস্তাব 🙂
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
🙂 🙂 🙂
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
:boss: :boss: :boss:
For most of history, Anonymous was a woman. [Woolf, Virginia]
ব্যাপারটাতো খুব ভালো হয়। প্রস্তাবনার জন্য ধন্যবাদ। আমার কাছে প্রথম প্ল্যানটা বেশী আকর্ষণীয়।
প্রথম প্ল্যানের দুইটা দুর্বলতা আছে।
এক, নাইটকোচ জার্নি ইনভলভড বলে দুটো রাত হেকটিক কাটবে। লঞ্চ জার্নির কারনে দ্বিতীয় প্ল্যানে লঞ্চের দুরাতে আড্ডার সময় অনেক বেশী পাওয়া যাবে।
দুই, সারারাত জার্নি করে সকালে অফিস ধরা হয়তো যাবে কিন্তু স্বাভাবিক কাজকর্ম করা কতটা সম্ভবপর হবে, সেটা একটা প্রশ্ন...
তবে সাইট সিইং-এর জন্য প্রথম অপশনটা অবশ্যই অনেক আকর্ষনিয়। কিন্তু যাতায়তের কনভিনিয়েন্স-এর কথা ভাবলে, দ্বিতীয়টা অদ্বিতীয়।
বিশেষ করে, পটুয়াখালি-কুয়াকাটা-পটুয়াখালি লেগের বাস জার্নি অংশটা ট্যুর অপারেটরের নিজেস্ব বাসে হবে বলে সেটাও অনেক নিরাপদ ও সুস্থির হওয়ারই কথা।
আরেকটা কথা বলি নাই। কুয়াকাটা ট্রিপেও সুন্দরবনের নিকটস্থ একটি অংশ টাচ-এন্ড-ব্যাকের একটা ইভেন্ট কিন্তু থাকবে। 🙂 🙂
তাই ওটা যে পুরোপুরি বন-বিবর্জিত, তা কিন্তু নয়...
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
দারুন প্রস্তাব পারভেজ ভাই, সুযোগ থাকলে অবশ্যই যোগ দিতাম কিন্তু এ বছর হচ্ছে না। সামনের কোন বছরে হয়তো ... 🙁
আমার দ্বিতীয় অপশনটা বেশি ভাল লেগেছে, অবশ্য সেটা লঞ্চ জার্নির প্রতি পক্ষপাত্তিতের কারনে। পূর্নিমার আশেপাশে বরিশাল বা পটুয়াখালী কোথাও ঘোরার দরকার নেই, আমার জন্য শুধু পরপর দুরাত যাওয়া আসা হলেই যথেষ্ঠ 😛
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
একানব্বুই-এর এক পুর্নিমায় আমি সেন্টমার্টিনে রাত কাটিয়েছিলাম।
তখনকার সেন্টমার্টিন ছিল ভার্জিন এক আইল্যান্ড। বন্য এক পরিবেশ। সাইক্লোন সেল্টারই ছিল একমাত্র দালান।
সেটার ছাদে দাঁড়িয়ে মনে হয়েছিল চাঁদের আলোয় চারপাশের সাগরে আগুন ধরে গেছে।
আর সাগরের ঢেউ-এ ভেসে বেড়াচ্ছে লক্ষ চাঁদের টুকরো।
অপার্থিব এক দৃশ্য।
ভাবলে এখনও গায়ে কাঁটা দেয়...
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
কল্পনা করতে গিয়েই খেই হারিয়ে ফেলছি। পূর্নিমা উপভোগ করার আমার সেরা তিন অপশন হলো সেন্ট মার্টিন, নীলগিরি আর লঞ্চ ভ্রমন। সিলেটের হাওরে নৌকায় পূর্নিমা উপভোগের কথা শুনেছি তবে এখনো সেটার সুযোগ হয়নি।
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
দেশ ছেড়ে এসেছি হাজার বছর আগে, ভাইয়া! আটলান্টিক পাড়ি দেবার আগে এইসব সুযোগ সুবিধা কিছুই ছিল না। সেন্টমার্টিনে যাওয়া হয় নাই, পূর্ণিমা দেখার প্রশ্নই আসে না। আমার বাংলাদেশ দেখা এখন তোমাদের চোখে চোখে, সেটাই বা কম কিসে, বলো? এক সময়ে তো সেটিও সম্ভব ছিল না।
"সেটার ছাদে দাঁড়িয়ে মনে হয়েছিল চাঁদের আলোয় চারপাশের সাগরে আগুন ধরে গেছে।
আর সাগরের ঢেউ-এ ভেসে বেড়াচ্ছে লক্ষ চাঁদের টুকরো।
অপার্থিব এক দৃশ্য।" - চমৎকার অভিব্যক্তি! খুব ভালো লেগেছে কথাগুলো।
আর হ্যাঁ, সেকেন্ড অপশন অনেক বেশী কনভিনিয়েন্ট। লজিস্টিক সাপোর্ট অনেক ভাল। এরেঞ্জমেন্টের জন্য ইনভলভমেন্টও অনেক কম।
সদরঘাট টু সদরঘাট শুধু নিজ দায়িত্বে যেতে হবে। বাকি সব ট্যুর অপারেটরের ওপর।
আমাদের মূল লক্ষ যেহেতু আড্ডাবাজী, সেটার জন্য এরচেয়ে ভাল অপশন হয়ই না!!!
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
পারভেজ ভাই, আপনার প্রথম যে আইডিয়া টা দিলেন, সেটা কয়েক বছর আগে আমরা কয়েকজন করেছিলাম। অবশ্য আমাদের উদ্দেশ্য ছিলো অন্য। সবাই ডজার ছিলাম। তাই একটা ভ্রমন এর কাহিনি কয়েকজন মিলে লিখেছিলাম।
//cadetcollegeblog.com/prince47/19528
"সবাই ডজার ছিলাম।"
🙂
কোনো একদিন , কোনো একদিন। বাংলাদেশের কিছুই দেখা হয় নাই এখনো ঠিক মতন 🙁 (সম্পাদিত)
গ্রেট আইডিয়া। শেষবার সুন্দরবন গিয়েছিলাম ২০০৯এ। ১৯৮১তে এক্সকারশনে যা দেখেছিলাম তার চেয়ে খুব বেশি কিছু চোখে পড়েনি। কটকায় মজা লেগেছিলো। আর বোটের ইঞ্জিন বন্ধ করে আস্ত চাঁদ দেখতে দেখতে স্রোতের টানে ভেসে নীল ডুমুর ফেরার কথা ভাবলে এখনও যেতে ইচ্ছে করে। তবে এইবার যাওয়া হবেনা অন্য ব্যস্ততায়।অভিযাত্রীদের জন্যে শুভ যাত্রা
যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান