এইবার দুই এক্সক্যাডেটের “প্রয়াস” নিয়ে পুর্নাঙ্গ ব্লগ……

১৪ মার্চ ইভেন্ট নটিফিকেশন পেলাম, প্রয়াস নামে একটা যৌথ আর্ট এগজিবিশন হবে দুই এক্সক্যাডেটের।
একজনকে চিনি, সাবিহা জিতু – কিন্তু দীর্ঘ্যদিন যোগাযোগ নাই। অন্যজন ম্যাক্স মাজেদ চিনি তো না ই, চেনার কোন সুযোগও ছিল না।

তারপরেও এই নটিফিকেশনটা আমাকে ছুঁয়ে গেল।
দারুন ছুঁয়ে গেল।
মুহুর্তের মধ্যে আমি আমার ক্যাডেট কলেজ জীবনে ফিরে গেলাম। চোখে ভেসে উঠলো কত কত অসাধারন গুনি আঁকিয়ের মুখ। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে তাঁদের তেমন কেউই আর আঁকাআঁকির সাথে নাই। আমার সবচেয়ে গুনি চার আঁকিয়ে বন্ধুদের একজন পেট্রিলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার, একজন সেনা কর্মকর্তা, একজন মাস্টার মেরিনার আর একজন আর্কিটেক্ট।
আর্কিটেক্ট ছাড়া বাকি তিনজনই তাঁদের অপার প্রতিভার প্রতি বিন্দুমাত্র সুবিচার করার কোন সুযোগ পায়নি সারা জীবনেও।
ইচ্ছা কি জাগে নাই?
হয়তো জেগেছে। কিন্তু ভেবেছে, কি হবে এঁকে? কে দেখবে এসব?
তখন যদি এরকম উদ্দোগ থাকতো, আরও কিছু শিল্পী হয়তো আমারা পেতাম।

আমি শুধু যেতেই চেয়েই ক্ষান্ত হলাম না, মনে মনে ঠিক করলাম, দেখি না কি ভাবে কি হয় এ জাতীয় প্রদর্শনিতে? কিছু কি ভূমিকা রাখা যাবে ভবিষ্যতে? যা হোক, সেটা ভিন্ন আলোচনা, পরে একসময় করবো।

এতদিনে সবার জানা হয়ে গেছে যে দুবার পিছিয়েছিল অনুষ্ঠানটি। প্রথমবার কারন জানা না থাকলেও অনুমান করি প্রস্তুতি শেষ না হওয়ায় শিল্পিরা তা করতে বাধ্য হয়। তখন যে ডেইটটি নির্ধারিত হয়, আমি জানালাম যে ঐ সময়টা কালবোশেখি-বান্ধব, তাই তা মাথায় রাখতে।
দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আশংকা মিলে গেল। প্রদর্শনির আগেই কালবোশেখিতে ক্ষতিগ্রস্থ হলো ভেন্যু।
ব্যাপারটা জানার পর থেকেই অপেক্ষায় আছি বিকল্প ঘোষনার। সেটা আসছে না দেখে উৎকণ্ঠা হচ্ছে। এর মধ্যে ভেন্যুর প্রধানের মুখেও অনিশ্চয়তার কথা জানলাম। হঠাত খুব মন খারাপ হলো, তরুন দুই শিল্পীর জন্য।
নিশ্চয়ই কত প্রত্যাশা নিয়ে এগুচ্ছে দুজনে অথচ বারবার কি সব বাঁধা!!
জানতে চাইলাম, কোন কাজে আসতে পারি কিনা? চক্ষুলজ্জায় পড়ে রাজি হয় না। কিন্তু আমি শুনি না। বললাম, তোমরা তোমাদের দিকে দেখো, আমি ধানমন্ডির খবর জেনে জানাচ্ছি।
শুনলাম সোবাহানবাগ মসিজিদের কাছে কি একটা গ্যালারী আছে, এইটুকুই। আর কিছু না। সাইকেলে বেড়িয়ে পড়লাম বাড়ি বাড়ি জনে জনে জিজ্ঞাসা করে দুই তিনবার একই রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে বের করলাম “শিল্পাঙ্গন” ১৩ নং রোডের ৭ নং বাড়িতে তৃতীয় তালায়। প্রাথমিক কথাবার্তা বলে তা জানালাম শিল্পিদের। এটাই শ্রেষ্ঠ অপশন কিনা, তা নিশ্চিত হতে খোঁজ লাগালাম দৃক-এ। দেখা গেল, ভাড়া রিজিনেবল হলেও ওটা মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের আগে পাওয়া যাবে না।
৬ নং রোডে “গ্যালারি চিত্রকে” গেলাম। ওরা প্রফেশনাল ছাড়া দেয় না। আর অক্টোবরের আগে খালি নাই। অলিয়াস ফ্রাঁসিসে গেলাম। দু’সপ্তাহের জন্য পাওয়া যায় তবে খরচ ৪৫ হাজার। আর ৮০% আর্ট ওয়ার্ক সহ ছ’মাস আগে আবেদন করা লাগবে।
সব জানালাম শিল্পিদের। চুড়ান্ত বিব্রত হলো কিন্তু ইনফর্মেশন তো পেলো। আর খুব কনফিডেন্টলি শিল্পাঙ্গন ভাড়া করে ফেললো শ্রেষ্ঠ এভেলেবেল অপশন হিসাবে।
আমার লাভ হলো, ধানমন্ডি একালায় থাকা যাবতিয় গ্যালারী সম্পর্কে পরিষ্কার ধারনা পেলাম।

মেলা যতই ঘনিয়ে আসছে, ওদের বলে রেখেছি কোন সমস্যা হলে যেন জানায়। জানতাম জানাবে না। জানায়ও নি। কিন্তু যেদিন মেলা শুরু হলো, মনে হলো, এত অস্থানীয় মানুষের সাথে একজন হলেও স্থানীয় কেউ একজন থাকা উচিত। কোন জরুরী পরিস্থিতি মোকাবেলায় সেটা সুবিধা দেবে। আর কাকে বলবো? নিজেই ঠিক করলাম, ফাঁক পেলেই চলে আসবো আর কিছুটা সময় কাটাবো এখানে।
সেটা নিয়েও মজার অভিজ্ঞতা হয়ে গেছে। পরে শুনাবো তা, কোন একদিন……

এবার কিছু অভিজ্ঞতা / টুকরো গল্প শুনাই

১) প্রথম পছন্দ
============
IMG_20150424_124736
প্রথম দেখাতেই “ডিসট্যান্স” বা “দূরত্ব” নামের এই ছবিটার প্রেমে পড়ে গেলাম।
প্রথম কারন হলো, এর জিওম্যাট্রিক ফরমেটটি।
যেদিন থেকে পিকাসোর ছবি দেখা শিখেছি, সেদিন থেকেই জিওমেট্রিক ফরম্যাট আমাকে ভিষন আকৃষ্ট করে। যে কোন জিওমেট্রিক ফরমেটের ছবিই খুব আগ্রহ নিয়ে দেখি। হয়তো আমার গনিতের প্রতি দুর্বলতাও তার একটি কারন হতে পারে।
ভাল করে দেখতে গিয়ে ছবিটার মধ্যে আরও অনেক কিছু আবিষ্কার করলাম।
১) নারীবাদের বিষয়টি তার একটি। দূরত্ব নিজ থেকেও হতে পারে, তবে একজনের সুত্রপাতেই দূরত্ব জিনিষটার জন্ম হয় বেশী। এই ক্ষেত্রে মেয়েটিই যে দূরত্ব সুত্রপাতকারী, তা তার ভাবলেশহীন তাকিয়ে থাকা থেকে বেশ বোঝা যায়। পুরুষটির বেদানার্ত চোখ বুজে থাকা তার অসহায়ত্বকেই ফুটিয়ে তুলছে। নারীটিকেই যেহেতু ইন-কন্ট্রোল দেখছি, তাই ছবিটার মধ্যে নারীবাদও খুজে পাচ্ছি।
২) জিওমেট্রিক ছবির আরেকটা ভাল দিক হলো, শেইপ দিয়ে অনেক কিছু বুঝানো। ছেলেটির ওভাল শেইপের মুখমন্ডল অথবা মেয়েটির চুলের লাল রঙ ও বড় বড় চোখ কি বাস্তবে থাকা ও শিল্পীর জানাশোনা নির্দিষ্ট কোন চরিত্রের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করছে? হতেও পারে……
৩) মেয়েটির জন্য উজ্জলতর আর ছেলেটির জন্য মলিন রঙ ব্যবহৃত হয়েছে। হতে পারে, এটা তাঁদের প্রকৃত গাত্রবর্ন, যদি ঘটনাটা বাস্তব হয়ে থাকে। তবে এটা কেবলই শিল্পীর ভাবনা হলে এর অন্য ব্যাখ্যাও করা যায়। দুরত্বের এই রায় দিতে পারার আনন্দে মেয়েটি উজ্জলতর অর্থাৎ উচ্ছলতায় ভরপুর হয়ে উঠেছে। আবার রায়টি পেয়ে অনিশ্চিত অর্থাৎ ধুসর ভবিষ্যতের কথা ভেবে ছেলেটি মলিন হয়ে গেছে।
৪) একটি বিচ্ছেদ হয়তো অনেককে নির্ভার করে কিন্তু তার মধ্যেও বেদনা থাকে। তাই বেদনা ঢাকার অনুষঙ্গ আসাটাও স্বাভাবিক। হয়তো উজ্জলতর রঙের ব্যবহার সেই নির্ভারতা প্রকাশে আর হয়তো বেদনা ঢাকাতে ব্যবহার করা হয়েছে রঙিন চুল, ঠোট আর উজ্জ্বল রঙ।

দীর্ঘ্য সময় ধরে একটি ছবি দেখার এই এক মজা। কত কত নতুন ভাবনা, যে মাথায় খেলে যায়, বলার না। আর তাই এমন একটি ছবি সংগ্রহের ইচ্ছা জাগাটা খুবই সঙ্গত।
বলাইবাহুল্য যে, “প্রয়াস” থেকে আমার কেনা প্রথম ছবি এটিই………

Me_Kaktal0

Me_Kaktal1

২) একটি কাকতাল
===========
মিক্সড মিডিয়ায় করা “সভ্যতা” নামের ছবিটি দেখে প্রথম দিন থেকেই বিশেষ আকৃষ্ট হয়েছিলাম। কিন্তু দাম একটু বেশী হওয়ায় (ছবির নীচে লিখা আছে) কেনার সাহস হয় নাই।
একসময় ছবিরটার নীচের দিকে একটা জায়গায় চোখ আটকে গেল।
দেখলাম, ছবিটি নির্মান করতে গিয়ে শিল্পী কাকতালিয় ভাবে আমার নামের অংশবিশেষ (প্রায় ৬০% ই) ফুটিয়ে তুলেছেন এক অংশে।
কি তাজ্জব ব্যাপার!
কি তাজ্জব ব্যাপার!!
এটা দেখে খুব ইচ্ছা হলো ছবিটা নেবার। কিন্তু হায়!! দেখলাম, ততক্ষনে “তানিম” নামক জনৈক ক্রেতা তা কিনে নিয়েছেন।
কি আর করার?
এখন ঘটনাটা জানিয়েই উপভোগ করি বিষয়টা…………

৩) এক্সটার্নাল পারফর্মেন্স নট এলাউড
============================
– এইবার যে ছবিটা দেখা যাচ্ছে, এক অর্থে সেটা একটা নিষিদ্ধ কাজের ছবি।
– সে কি? এটা তো দেখছি একটা আবৃত্তির দৃশ্য। আবৃত্তি কি করে নিষিদ্ধ কাজ হয়?
– আরে হয় হয়। পুরো ঘটনাটা শুনলে বুঝবেন, আবৃত্তিও কখনো কখনো নিষিদ্ধ কাজ হতে পারে।

সুরঞ্জনা ঐখানে যেও নাকো তুমি...

সুরঞ্জনা ঐখানে যেও নাকো তুমি…

পূর্বকথা:
প্রথম যখন প্রয়াসের এনাউন্সমেন্ট এলো, এটার ভেন্যু ছিল “পথিক বিরতিঘর”। আর ব্যাপ্তি ছিল ২৭-২৮ মার্চ শুক্র-শনিবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।
বলা ছিল, শনিবার সন্ধ্যায় একুইস্টিক মিউজিক হবে ক্লোজিং-এর সময়ে।
পথিক যেহেতু দুরের পথ, আমি “গোয়িং” অপশন সিলেক্ট করার পর প্ল্যান করলাম এইভাবে:
১) শুক্রবার সকালে বন্ধুদের সাথে যে হাটাহাটিটা করি, সেটা পিঙ্কসিটিতে করে পথিকে ব্রেকফাস্ট করবো।
২) ততক্ষনে ১০টা বেজে গেলে পরে ওদের নিয়েই এগজিবিশন দেখবো।
৩) কিছু ছবি পছন্দ করে এডভান্স করে আসবো।
৪) শনিবার সন্ধ্যায় গিয়ে বাকি টাকা দিয়ে ডেলিভারি নেবো।
৫) ততক্ষনে গানের আসর শুরু হয়ে গেলে সেটা দেখে আসবো…
এই পর্যন্ত ভাবার পর মনে হলো, ৩২ বছর পর আবার যখন আবৃত্তি চর্চ্চা শুরু করেছিই, একটা চেষ্টা করে দেখি না, ওখানে পারফর্ম করার?
যেই ভাবা, সেই কাজ।
আয়োজকদের একজনকে ইনবক্সে জানালাম, “তোমাদের সান্ধ্যকালীন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করতে চাই। সুযোগ হবে? উত্তর পেলাম, “অবশ্যই, কেন নয়”।
আমি একাধিক কবিতা রেডী করা শুরু করে দিলাম।
ডেভেলাপমেন্ট:
২৭ তারিখে ইভেন্ট শিফট হয়ে ১০ এপ্রিলে-এ এলো। পথিক কালবোশেখিতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ভেন্যু বদলে শিল্পাঙ্গন করা হলো। ২ দিনের ইভেন্ট বাড়িয়ে ৫ দিন করা হলো। ব্যাপ্তিও বদলালো।
কিন্তু ঐ একুইস্টিক মিউজিক সেশন যে হবে, সেটা কিন্তু বদলালো না।
আমি তাই ধরে নিলাম, আমার পারফর্মেন্সটা থাকছেই।
পারফর্মেন্স:
মেলার তৃতীয় দিনে একটা খালি গলায় গান চলছিল। এক পর্যায়ে আমি এগিয়ে গিয়ে একটা আবৃত্তি করার ইচ্ছা পোষন করলাম। উপস্থিত অতিথিগন শুনতে রাজি হলেন। পারফর্ম করলাম। খুব যে ভাল হয়েছিল, তা না, তবে কেউ কেউ পছন্দ করে থাকবে হয়তো।
যেটা হয়েছে ঐ ডে থ্রীতে, তা সেই প্রমিজড “একুইস্টিক মিউজিক সেশন” কিনা, বুঝতে স্ট্যাটাস দিয়ে জানতে চাইলাম, ওটা (একুইস্টিক মিউজিক সেশন) হয়ে গেছে কিনা? না হয়ে থাকলে শেষ দিনে হবে কিনা?
উত্তর পেলাম: একটা সেশন হয়েছে। শেষদিন আরেকটা হবে। তবে “নো এক্সটার্নাল পারফর্মার উইল বি এলাউড………”
বুঝলাম, আর কোন আবৃত্তি করার সুযোগ জুটবে না কপালে।
মনের দুঃখে আমার আবৃত্তির একটি ইউটিউব লিঙ্ক দিয়ে অফ হয়ে গেলাম।
হঠাৎ আলোর ঝলকানি:
শেষ দিন সন্ধ্যায় ছবি দেখছি, ছবি তুলছি, এর মধ্যে এক ছোটভাই এসে বললো, “ভাইয়া আপনার ইউটিউবের আবৃত্তি দেখলাম। আজ হবে নাকি একটা, এখানে?”
আমি কিছু বলি না।
আরেকজন বললো, “ভাইয়া, সেদিনের ‘পুরুষ’ কবিতাটা দারুন করলেন তো। আজ আবার কিছু করবেন নাকি?”
এবার বললাম, আমি তো রেডি কিন্তু আয়োজকরা যে বিধিনিষেধে বেঁধে রেখেছেন। ক্যামনে করি?
এক্সক্যাডেট যখন, বিধিনিষেধের কথায় উৎসাহ বরং চেগিয়ে উঠলো।
বললো, “এখানে তো এখন কেউ নাই। হয়ে যাক একটা।”
আমিও তরুন হয়ে গেলাম। আশেপাশে তাকিয়ে যখন দেখলাম, আয়োজকদের কাউকে সত্যিই দেখা যাচ্ছে না, শুরু করলাম জীবনানন্দ দাসের “আকাশলীনা”।
শেষ হতেই দর্শক চাহিদায় ধরলাম “ভেবে ভেবে ব্যাথা পাবো……”
এর মধ্যে দেখি আয়োজকদের আনাগোনা আবার দেখা যাচ্ছে।
দ্রুত থামাতে হলো এই “নিষিদ্ধ আবৃত্তি অনুষ্ঠান”টি।
যদিও সুনীলের “কেউ কথা রাখেনি” করার খুব ইচ্ছে হচ্ছিলো। কি আর করার, সব সময়ে সব ইচ্ছে পুরোনের সুযোগ তো আর কপালে জটে না? থামতেই হলো।
তো, এই ছিল “একটি নিষিদ্ধ আবৃত্তি সেশনের গল্প………”

"সত্বা" বাই জিতু

“সত্বা” বাই জিতু

৪) একটি ফিঙ্গার পেইন্ট
===================
মোটামুটি ভয়ঙ্কর-দর্শন এই ছবিটা কেনার কারন কি হতে পারে?
অথবা অন্যভাবে বললে, এই ছবিটার বিশেষত্বটা কি?
এই ছবিটা আঁকতে শিল্পী কোন রং-তুলি ব্যবহার করেন নাই।
আঙ্গুলে রঙ লাগিয়ে ছবিটা তিনি একেছেন।
যাকে বলে, “ফিঙ্গার পেইন্ট”।
আমার কাছে মনে হয়েছে এই ছবিটার সাথে শিল্পীর ঘনিষ্টতা তাই অনেক বেশী।
এই ছবিটা অন্য যেকোন ছবির চেয়ে তার স্রষ্টার বেশী স্পর্শ লাভ করেছে।
শিল্পীর কাছ থেকে বেশী আদর পাওয়া এরকম একটা ছবি কিনতে পারা তো পরম সৌভাগ্যেরই ব্যাপার, তাই না??

৫) “যান, সব নিয়ে যান”
================
IMG_20150424_183650

যতই ছবি কিনছিলাম, শিল্পিদের জন্য একটা ভাবনাও মাথায় খেলে যাচ্ছিলো যে কেমন লাগবে ওদের প্রিয় এই ছবিগুলো ক্রেতাদের হাতে তুলে দিতে? আফটার অল, সৌখিন শিল্পী যখন, মনের আনন্দেই এঁকেছে ছবিগুলো। কোন ব্যবসাহিক উদ্দেশ্যে না।
উত্তর পেলাম শেষ দিন।
ঐদিন ছটার দিকে মেলায় গেলাম কারন ঘন্টা দুয়েক পর মেলা ভাঙ্গলে ছবি ডেলিভারী দেবে, এরকমই কথা হয়ে আছে।
গিয়ে শুনি ঐদিন তখনও কোন ছবি বিক্রি হয় নাই।
বললাম, সেকি সারাদিন কেটে যাচ্ছে আর মাত্র দুঘন্টা বাকি এখনও বৌনি হয় নাই।? চলো একটা ছবি কিনে এক্ষুনি বৌনি করে দিচ্ছি।
উপরের ছবিটা নেবো বলে জানালাম। মনে হলো, কেউ তেমন খুশি না। দামটা যাকে দিলাম, সে যেন আরও অখুশি হয়ে বলে উঠলো “যান, সব নিয়ে যান…”
মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে উঠলো। আরেকটা ছবি কেনার যে মৃদু ইচ্ছা জাগছিলো, সেটা দমন না করে আর কোন উপায় থাকলো না।

কিনি কিনি করেও যে ছবিটা কেনা হয় নি...

কিনি কিনি করেও যে ছবিটা কেনা হয় নি…

প্র্য়াসের অভিজ্ঞতা কি ভাবে কাজে লাগানো যায় তা নিয়ে পরে লিখার ইচ্ছা রইল।

১,৮৬৩ বার দেখা হয়েছে

৬ টি মন্তব্য : “এইবার দুই এক্সক্যাডেটের “প্রয়াস” নিয়ে পুর্নাঙ্গ ব্লগ……”

    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      কি যে বলো?
      ওরা অতি ভদ্র। শেষদিন ক্যাওস কমাতেই হয়ত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
      চুপিচুপি করা আবৃত্তিতে তো আর কোন হাঙ্গামা নাই।
      ওদেরও তাই কোন আপত্তি থাকার কথা না।
      তাই ন্য? কি বলো?


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।