শেকড়ের সন্ধানেঃ বাঙালি মুসলমানের আত্মপরিচয়-৩

পর্ব-১

পর্ব-২

প্রথম পর্বে পর্যালোচনা করে দেখেছি যে, বাইরে থেকে মুসলমানদের ভারতবর্ষে মাইগ্রেশন, মুসলিম শাসকদের তলোয়ারের মাধ্যমে জোরপূর্বক হিন্দুদেরকে ইসলামে ধর্মান্তর অথবা সুফিদের মাধ্যমে সাম্যবাদী ইসলামে হিন্দুদের স্বেচ্ছায় ধর্মান্তর কোন তত্ত্বই ঐতিহাসিক তথ্য এবং যুক্তির বিচারে টেকেনা, বিশেষ করে যখন আমরা ভারতবর্ষের কেন্দ্রে নয়, বরং প্রান্তিক অঞ্চলে মুসলমানদের সংখ্যাধিক্য দেখি, যেমন পূর্ববঙ্গ তথা আজকের বাংলাদেশ। দ্বিতীয় পর্বে ঐতিহাসিক তথ্য ও যুক্তির বিশ্লেষণের মাধ্যমে দেখেছি যে, পূর্ববঙ্গের গ্রামীণ, কৃষিজীবি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট জনগোষ্ঠীর অবির্ভাব হয়েছে এই অঞ্চল মুঘল সাম্রাজ্যে অন্তর্ভূক্ত হওয়ার পরে। তাহলে কি মুঘলরা পূর্ববঙ্গে ইসলামাইজেশন করেছিল?

এই অনুমান যদি সত্য ধরে নিই যে, মুঘলরা বাংলায় ইসলামাইজেশন করেছিল, তাহলে একই ঘটনা তথা মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ট জনগোষ্ঠী ত পশ্চিমবঙ্গেও থাকার কথা। কিন্তু দ্বিতীয় পর্বে বাংলার প্রথম সেনশাসের ভিত্তিতে মুসলিম জনসংখ্যার যে মানচিত্র আছে, সেখানে দেখেছি পশ্চিমবঙ্গে মুসলমানদের সংখ্যা (সর্বোচ্চ ৪০%- ৫০%) পূর্ব থেকে কমতে কমতে পশ্চিমে গিয়ে একেবারে শূন্যে ঠেকেছে। অর্থ্যাৎ, পশ্চিমবঙ্গে ইসলামাইজেশন হয়নি। আরও মজার ব্যাপার হলো, মুঘলদের সময়ে পশ্চিমবঙ্গে হিন্দু ধর্মের প্রসার ঘটেছিল। নিচের টেবিলে সমগ্র বাংলায় মন্দির প্রতিষ্ঠার সময়কাল ও মন্দিরের ভৌগলিক অবস্থানও এই অনুমানকে সমর্থন করে।

মুঘল আমলে ১৫৭০ থেকে ১৭৬০ সাল পর্যন্ত বাংলায় নির্মিত হিন্দু মন্দিরের সংখ্যা

মুঘল আমলে ১৫৭০ থেকে ১৭৬০ সাল পর্যন্ত বাংলায় নির্মিত হিন্দু মন্দিরের সংখ্যা

এখানে লক্ষ্যনীয় যে, এইসব মন্দির নির্মাণ শুরু হয়েছে মুঘল শাসনের শুরুর দিকে এবং ক্রমশ এদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার ভৌগলিক অবস্থানভেদেও এখানে আরেকটা প্যার্টান লক্ষ্যনীয়- এই সময়কার মন্দিরগুলোর মোট সংখ্যা ছিল ২৩০টি, যার মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি (১২৭টি) ছিল বর্ধমান, হুগলী ও বাঁকুড়া জেলায় এবং এক-চতুর্থাংশের কিছু বেশি (৬০টি) ছিল হাওড়া, মেদিনীপুর, বীরভূম ও যশোর জেলায়। পক্ষান্তরে, পুর্ববঙ্গের বগুড়া, ঢাকা ও বাকেরগঞ্জ (বরিশাল) জেলায় হিন্দু মন্দির পাওয়া গেছে মাত্র একটি করে, আর চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কুমিল্লা, ফরিদপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট জেলায় কোন হিন্দু মন্দির পাওয়া যায়নি।

আমরা ধারণা করি যে, বাংলা প্রাচীনকাল থেকেই সংস্কৃত-ভাষী আর্য সভ্যতার অন্তর্গত ছিল। কিন্তু রামায়ণ, মহাভাতর থেকে শুরু করে প্রাচীন যুগের প্রায় সব ঐতিহাসিক তথ্যসূত্র বাংলাকে আর্য সভ্যতার পূর্বপ্রান্তে মগধ রাজ্যের (তথা বর্তমান বিহারের পূর্বাংশ) পরের অঞ্চল হিসেবে উল্লেখ করেছে। ভৌগলিকভাবেও বাংলার এই আঞ্চলিক পার্থক্য দৃশ্যমানঃ উত্তরভারত থেকে বিহার পর্যন্ত স্থলভাগে বাঁধাহীন যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকলেও বাংলা উত্তরভারত থেকে রাজমহলের পাহাড় আর ঘন জঙ্গলের দ্বারা বিচ্ছিন্ন ছিল। উত্তরভারত থেকে বাংলায় প্রবেশের একমাত্র পথ ছিল গঙ্গা নদী ধরে দ্বারভাঙ্গার গিরিপথ দিয়ে, যা’ স্থানীয় শাসকরা সামান্যসংখ্যক সৈন্য দিয়েই পাহারা দিতে সক্ষম হতো।

বাংলায় হিন্দু রাজত্বের ভিত্তিতে আমরা ধরে নিই যে, বঙ্গের আমজনতাও প্রধানতঃ হিন্দু ছিল। কিন্তু এটিও বর্তমানকে দিয়ে অতীত বিচার করার মত, যা’র কোন ঐতিহাসিক তথ্যগত ভিত্তি নেই। আসলে, রাজবংশের দিকে লক্ষ্য করে সাধারণ জনগোষ্ঠীকে ধর্মের ভিত্তিতে হিন্দু/বৌদ্ধ/মুসলমান হিসেবে চিহ্নিত করার পুরো প্রক্রিয়াটিই ভ্রান্ত।

প্রকৃতপক্ষে, পশ্চিমবঙ্গের সমাজব্যবস্থায় হিন্দু ধর্মের প্রধান্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে, তথা হিন্দুয়াইজেশনও হয়েছে মুঘল আমলে! উপরে উল্লিখিত হিন্দু মন্দিরের প্রতিষ্ঠাকাল ও ভৌগলিক অবস্থান লক্ষ্য করলেই এটা পরিষ্কার বোঝা যায়। উপরন্তু, কুমকুম চ্যাটার্জি এক প্রবন্ধে ১৬ শতক থেকে ১৮ শতকের মধ্যে মঙ্গলকাব্যের বয়ানের (ন্যারাটিভ) পর্যায়ক্রমিক পরিবর্তন বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন যে, বর্তমানের বঙ্গীয় হিন্দুসমাজের প্রধান পূজা উৎসবগুলো (বিশেষ করে, দূর্গাপূজা) মুঘল আমলেই সাধারণ সমাজে প্রাধান্য লাভ করে (সূত্রঃ Modern Asian Studies / Volume 47 / Issue 05, 2013)।

অতএব, বিদেশী পর্যটক, খ্রিষ্টান পাদ্রী আর বণিকদের ভ্রমণবৃত্তান্ত, জনসংখ্যাভিত্তিক ম্যাপ আর মন্দির নির্মাণের সময় ও ভৌগলিক অবস্থানের ভিত্তিতে এই দাবী করা যায় যে, মুঘল আমলে বাংলার পশ্চিমাংশে হিন্দুধর্ম আর পূর্বাংশে ইসলামধর্ম প্রসার লাভ করেছে।

আমরা সাধারণতঃ পশ্চিমবঙ্গসহ পুরো বাংলাকেই মুসলমান শাসনের পূর্বে পর্যায়ক্রমে হিন্দু (মৌর্য ও গুপ্ত রাজবংশ) ->বৌদ্ধ (পালবংশ)->হিন্দু (সেনবংশ) শাসনকাল হিসেবে জেনে আসছি। আর আমাদের জানা ইতিহাসের সেই বাংলার ভৌগলিক অবয়ব অনেকটাই বঙ্গীয় ব-দ্বীপের বর্তমান আকারে। উদাহরণস্বরূপ প্রচলিত পাঠ্যপুস্তকে সুলতানী আমলের তথা বখতিয়ার খিলজী থেকে শামসুদ্দীন ফিরোজ শাহের সময়কার (১২০৪-১৩৪২) বাংলার মানচিত্রটি দেখুন-

আমাদের পাঠ্যপুস্তকসমূহে ব্যবহৃত মধ্যযুগে সুলতানি আমলের বাংলার মানচিত্র

আমাদের পাঠ্যপুস্তকসমূহে ব্যবহৃত মধ্যযুগে সুলতানি আমলের বাংলার মানচিত্র

উপরের মানচিত্রে দুটো বিষয়ে আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবো- প্রথমতঃ মুদ্রা ও শিলালিপি প্রাপ্তিস্থান এবং প্রধান নদীগুলোর গতিপথ। মানচিত্রে দেখা যাচ্ছে সেসময়কার মুদ্রা ও শিলালিপিগুলো এখনকার দিনাজপুর ও রাজশাহি জেলায় এবং এরও পশ্চিমে (অর্থ্যাৎ পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাংশে), কয়েকটা পাওয়া গেছে বিচ্ছিন্নভাবে সাতগাঁয়ে (কলিকাতা’র আগে এটি ছিল বাংলার প্রধান সমুদ্রবন্দর), চট্টগ্রামে (সমুদ্রবন্দর), সোনারগাঁয়ে (নদীবন্দর) আর সিলেটে। একই শাসনাধীনে থাকায় আর সব অঞ্চলেও কি দু’একটা এমন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন থাকার কথা নয়? সারা বাংলার অন্যান্য আরও কিছু এলাকায় কোন প্রকার প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শণ না-থাকার ব্যাপারটাকে কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন?

সমগ্র বাংলায় প্রাচীন ও মধ্যযুগের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শর না-পাওয়ার কারণ সেসময়কার বাংলা আমরা যেভাবে মানচিত্রে দেখি, তেমনটি ছিলই না! নিচে পর্যায়ক্রমে ১৫৪৮ সালের, ১৬১৫ সালের, ১৬৬০ সালের এবং ১৭৭৯ সালের বাংলার মানচিত্রগুলো লক্ষ্য করুন।

১৫৪৮ সালে বাংলার ভৌগলিক মানচিত্র

১৫৪৮ সালে বাংলার ভৌগলিক মানচিত্র

এখানে দেখা যাচ্ছে যে, বিহার থেকে গঙ্গানদী রাজমহলের পাহাড়গুলোর মধ্য দিয়ে বাংলায় প্রবেশ করে এখনকার মত আড়াআড়ি পূবে না-গিয়ে বরং দক্ষিণে বেঁকে সাতগাঁও বন্দরের বাঁ’পাশ তথা পশ্চিম দিয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। প্রায় কাছাকাছি জায়গায় উত্তর থেকে ব্রহ্মপুত্র সরাসরি দক্ষিনে প্রবাহিত হয়ে সাগরে মিশেছে।

১৬১৫ সালে বাংলার ভৌলিক মানচিত্রে গঙ্গার পরবর্তিত গতিপথ

১৬১৫ সালে বাংলার ভৌলিক মানচিত্রে গঙ্গার পরবর্তিত গতিপথ

প্রায় ৭০ বছর পরে দেখা যাচ্ছে গঙ্গানদীর গতিপথ অনেকখানি বদলে গেছে। এসময় গঙ্গা পূর্বদিকে অনেকটা সড়ে গেছে যা’ সাতগাঁও বন্দরের অবস্থান (নিচের বৃত্তের মধ্যে) থেকেই দেখা যায়। উপরের দিকে বৃত্তের মধ্যে ছিল গৌড়। আগের মানচিত্রে যেখানে সাতগাঁয়ের নিচে ছিল সাগর, এখন তার পুবদিকে একটা ব-দ্বীপের গঠন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আর গঙ্গার মূলস্রোতটাও পূর্বপ্রান্তে প্রধান বলে দেখা যাচ্ছে। উল্লেখ্য যে, ব্রহ্মপুত্রনদ তখনও উত্তর থেকে সরাসরি দক্ষিণে গিয়ে সাগরে প্রবাহিত হত গঙ্গার (এখন পদ্মার) সাথে না-মিলেই। (বাংলাদেশে বর্তমান যমুনার উৎপত্তি হয়েছে ১৮০০ সালের পরে)। যদিও এই মানচিত্রে নাই, তবু মনে করিয়ে দিতে চাই যে, গঙ্গা আর ব্রহ্মপুত্রের মাঝে যে “ভি-আকৃতির” অঞ্চল দেখছেন, তার মধ্য এবং পশ্চিম অংশে রয়েছে উত্তরবঙ্গের বরেন্দ্রভূমি (পুরো দিনাজপুর ও রাজশাহী জেলার উত্তরাংশ)। এর ঠিক পশ্চিম পাশেই গৌড়, লক্ষনণাবতী, দেবকোট যেগুলো ছিল সেনবংশ এবং স্বাধীন সুলতানী আমলে বাংলার শাসনকেন্দ্র।

১৬৬০ সালে বাংলার ভৌগলিক মানচিত্র

১৬৬০ সালে বাংলার ভৌগলিক মানচিত্র

প্রায় ৬০ বছর পরে দেখা যাচ্ছে গঙ্গা আরও পূর্বে সড়ে গেছে। ব-দ্বীপটি ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে পূর্বদিকে। এই ব-দ্বীপের পশ্চিম প্রান্তে দেখা যাচ্ছে কলিকাতা বন্দর, যার থেকে বেশ খানিকটা উত্তরে অবস্থিত আগের প্রধান বন্দর সাতগাঁও। আগের মানচিত্রে দেখুন গৌড় ও সাতগাঁও (এবং পরবর্তিতে কলিকাতা) গড়ে উঠেছিল গঙ্গার মূলস্রোতের পাশে, যা’ বাংলার মধ্যে উত্তর থেকে প্রায় সোজাসুজি দক্ষিণে প্রবাহিত হত। কিন্তু ১৬৬০ সালের এই মানচিত্রে দেখি গঙ্গার মূলস্রোত (এখনকার পদ্মা) অনেকখানি পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে ঢাকার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। আর ১৫৪৮ সালের মানচিত্রে যেখানে ব-দ্বীপ প্রায় ছিলই না, এখানে ১৬৬০ সালের মানচিত্রে দেখি পাবনা, ফরিদপুর, খুলনা, বরিশাল, কুমিল্লা ও নোয়াখালী জেলার অধিকাংশ এলাকাই গঠিত হয়েছে গঙ্গানদীবাহিত পলি সঞ্চিত হয়ে। এই ব-দ্বীপ ঢাকা থেকে উত্তরে ময়মনসিংহ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায়।

১৭৭৯ সালে বাংলার ভৌগলিক মানচিত্র

১৭৭৯ সালে বাংলার ভৌগলিক মানচিত্র

এই মানচিত্রে দেখা যাচ্ছে পরবর্তী ১শ বছরে গঙ্গা পশ্চিমবঙ্গকে পুরোপুরি ত্যাগ করে পূর্ববঙ্গের উপর দিয়ে পদ্মা নামে প্রবাহিত হয়ে মেঘনার সাথে মিলে সাগরে পড়ছে। আরও পরে ব্রহ্মপুত্রের উল্লিখিত ধারা থেকে যমুনার আলাদা হয়ে যাওয়া ছাড়া মোটামুটিভাবে এই মানচিত্রে আর কোন বড় ধরণের পরিবর্তন হয়নি।

এবার মানচিত্রগুলোতে নদীর গতিপথের পাশাপাশি ভূপ্রকৃতির দিকেও দৃষ্টি দিতে বলি। সেই সাথে প্রথমোক্ত মানচিত্রে চিহ্নিত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলোর প্রাপ্তিস্থানগুলো লক্ষ্য করুন। কোন সূত্র কি পাওয়া যাচ্ছে কেন সারা বাংলায় প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন না-পেয়ে শুধুমাত্র উত্তরবঙ্গে এবং আর কয়েকটা প্রধান বন্দরে সেগুলো পাওয়া গেছে?

আমরা আজকে যে পাললিক বাংলাদেশ দেখি, ১৬৬০ সালের আগে তার বেশিরভাগ ছিলইনা। আর যতটুকুও ছিল, তা’ ছিল ঘন বনভূমিতে আচ্ছাদিত। নদীর গতি পরিবর্তনের সাথে সাথে দক্ষিণ ও পূর্ববঙ্গের যে ব-দ্বীপ গড়ে উঠছিল, তা’ ছিল গহীন বনের অধিকারে। (যারা দেশের দক্ষিণে ভ্রমণ করেছেন, তারা দেখে থাকবেন কিভাবে কত দ্রুত নতুন জেগে ওঠা চরে বনভূমি ছড়িয়ে পড়ে)।

গঙ্গানদীর মূল স্রোতধারা পূর্বদিকে সড়ে যাওয়ার সাথে সাথে ক্রমশঃ গড়ে ওঠা বঙ্গীয় পাললিক বনাঞ্চলে মুঘল আমলের প্রায় ১৫০ বছর ধরে কৃষিভিত্তিক বাঙ্গাল সমাজের গোড়াপত্তন হয়। অর্থাৎ, হাজার বছরের বাংলা বলে আমরা যার কথা বলি, বর্তমান বাংলাদেশের অধিকাংশই তা’র অন্তর্ভুক্ত নয়। আমাদের বাংলাদেশের বর্তমান কৃষকসমাজের উদ্ভব ঘটেছে তিনশ’ বছর আগে। ইংরেজদের আমলে করা ১৮৭২ সালের প্রথম সেনশাসে বাংলার যেসমস্ত এলাকায় ৭০% ভাগেরও অধিক মুসলমান পাওয়া গেছে, সেগুলো এ’ই নবগঠিত পাললিক ব-দ্বীপেরই কৃষিসমাজ। অতএব, এই সমাজের গোড়াপত্তনের ইতিহাসের মধ্যেই খুঁজে দেখতে হবে বাঙালি মুসলমান সমাজের উৎপত্তি ও বিকাশ।

১০ টি মন্তব্য : “শেকড়ের সন্ধানেঃ বাঙালি মুসলমানের আত্মপরিচয়-৩”

  1. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

    মন্তব্যে প্রথম হওয়ার জন্য অভিনন্দন 🙂

    জেনে খুশি হলাম যে, আগ্রহ নিয়ে পড়ছো।

    লেখা পাঠকের মধ্যে আগ্রহ জাগাতে পারছে জানলে উৎসাহ বাড়ে।


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
  2. পারভেজ (৭৮-৮৪)

    দু'তিনশো বছরে কোটি কোটি মানুষের একটা জনপদ গড়ে ওঠার চেয়ে ঐ ম্যাপগুলায় ভুল ছিল, এই ধারনাটাই বেশি গুরুত্ব পাবে বলে আমার ধারনা।
    এত বিপুল সংখ্যক মানুষকে জোর করে ধর্মান্তরিত করাটা সম্ভব না। ধর্মান্তর যদি হয়েই থাকে তো তা স্বেচ্ছায়ই ঘটেছে।
    আর তা ঘটার পিছনে একটা কারন হতে পারে, তাদের আগেকার ধর্মটা হয়তো রিচুয়ালি খুব একটা সমৃদ্ধ ছিল না।
    এটার একটা ইঙ্গিত আগেও দিয়েছিলাম।
    তাছাড়া নতুন ধর্ম গ্রহনের কারনে বাড়তি সুবিধা পাবার একটা ব্যাপারও যে থাকতে পারে, সেটাও মাথায় রাখছি।
    এত লোক অন্য কোথাও থেকে এসে থাকলে তার পিছনে স্ট্রং এভিডেন্স পাওয়া যেতই।
    সেরকম কিছু যখন পাওয়া যায় না, ব্যাপারটা ইন্টারনালি ও গ্রাজুয়ালি ঘটে থাকার সম্ভবনাই আমার দৃষ্টিতে বেশি......


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন
  3. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

    ধন্যবাদ ভাইয়া।

    কিছুটা পেশাগত আর কিছুটা পারিবারিক ব্যস্ততার জন্য সময় কয়রে উঠতে পারছিলাম না। এখন ব্যস্ততা খানিকটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে এসেছে। পরের পর্ব চলে আসবে শীগগিরি।


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।