১
এবছরের মে মাসে আমেরিকার একাডেমিয়াতে বেশ একটা ঝড় বয়ে গেছে University of California Los Angeles (ইউসিএলএ) থেকে সদ্য পলিটিক্যাল সায়েন্স এ পিএইচডি সমাপ্ত করে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদানের অপেক্ষায় থাকা মাইকেল লা’ক (Michael LaCour) এর লেখাচুরি বা প্লাজিয়ারিজম এর কাহিনী উম্মোচিত হলে। গত ডিসেম্বরে সুপ্রসিদ্ধ একাডেমিক জার্নাল ‘Science’ মাইকেলের একটা আর্টিকেল প্রকাশ হয়েছিল কিভাবে সংখ্যাগুরু এবং সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর মধ্যে ক্রমবর্ধমান কন্টাক্ট মাইনরিটিদের প্রতি কুসংস্কার (prejudice) হ্রাস করে এই বিষয়ে। কিন্তু কয়েক মাস পরেই জানা গেলো যে, এই আর্টিকেলের বেশ কিছু তথ্য আরেকটা স্টাডির তথ্যের সাথে হুবহু মিলে যায়!- যথারীতি মাইকেলকে প্রশ্ন করা হয় এ সম্পর্কে এবং সে সদুত্তর দিতে ব্যর্থ হয়। ফলশ্রুতিতে Science জার্নাল থেকে আর্টিকেলটা প্রত্যাহার করা হয়, প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ও মাইকেলকে অধ্যাপনার পদে যোগদানের প্রস্তাব ফিরিয়ে নেয়। মাইকেল লা’ক স্ক্যান্ডাল
২০১৪ সালের মাঝামাঝি লেখাচুরির আরেকটা বিশাল ঘটনা উম্মোচিত হয় জাপানে। সেখানে হার্ভার্ড থেকে গবেষণা করা হারুকো ওবোকাতা (Haruko Obokata) নামের এক বিজ্ঞানী স্টেমসেল নিয়ে সাড়া জাগানো দুটো আর্টিকেল প্রকাশ করে সবথেকে বিখ্যাত একাডেমিক জার্নাল ‘nature’ এ, যা’ তাকে রাতারাতি সেলিব্রিটি বিজ্ঞানীর মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করে। পরে দেখা যায় যে, তার আর্টিক্যালগুলো লেখাচুরিসহ আরও অন্যান্য একাডেমিক অসততার দোষে দুষ্ট। ধূমকেতুর মত আবির্ভূত হওয়া এই তারকার পতনও হয় একই রকম দ্রুততায়। হারুকো ওবোতাকা স্ক্যান্ডাল
সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে গবেষণা করে সুপ্রসিদ্ধ একাডেমিক জার্নালে পাবলিশ করা আর্টিকেলে যদি লেখাচুরির বিষ পাওয়া যায়, তাহলে অন্যগুলোতে কি অবস্থা তা’ সহজেই অনুমেয়। লেখাচুরির ব্যাপকতা বোঝানোর জন্য আরও কিছু তথ্য উল্লেখ করলে বোঝা সহজ হবে। Cunninghum (2011) আমেরিকার হাইস্কুল পর্যায়ের বিজ্ঞানমেলায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে এক গবেষণায় পেয়েছেন যে, তাদের ৬০% লেখাচুরিসহ আরও কয়েক ধরণের প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিল। Sperber (2000) এর গবেষণার ফলাফল আরও ভয়াবহ- আমেরিকার কলেজ ছাত্রদের (আন্ডারগ্র্যাড) মধ্যে ৯০% এরও অধিক একাডেমিক প্রতারণার আশ্রয় নেয়। আরেক গবেষণা এই দোষ অর্ধেকের বেশি গ্র্যাজুয়েট ছাত্রদের মধ্যে খুঁজে পেয়েছিল (McCabe, Butterfield, and TRevino, 2006)। একাডেমিক প্রতারণার সমস্যা কিন্তু আজকের না, অনেক আগে থেকেই ছিল। ঐতিহাসিক হেলেন হরোউইজ (Helen Horowitz, 1987) দাবী করেন যে, শতবছর আগে আমেরিকার প্রসিদ্ধ কলেজ+বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও ছাত্ররা এসব কুকাম করত। উদাহরণস্বরূপ, ১৮৬০-এর দশকে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধেকেরও বেশি ছাত্র তাদের এসাইনমেন্ট অন্যদের দিয়ে লিখিয়ে নিত।
একাডেমিক প্রতারণায় অন্যান্য দেশের কীর্তিমানেরাও খুব একটা পিছিয়ে নেই। যেমন, Vogel (2011) নেদারল্যান্ডের এক বিজ্ঞানীর ডজনখানেকেরও বেশি আর্টিকেলে প্রতারণা খুঁজে পেয়েছিলেন। আর কেউ যদি মনে করে থাকেন যে, এক্ষেত্রে আমরা বাংলাদেশীরা পিছিয়ে আছি, তাইলে সেই ভুল ভাঙ্গানোর জন্য এমন একটা কাহিনী মনে করায়ে দেই- ২০১৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক মোহাম্মদ নূরুদ্দীন তার পিএইচডি ডিগ্রী হারান এইজন্য যে, তিনি ১৩ লাখ মানুষের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন বলে দাবী করেছিলেন। (তার চাকরী গেছে না আছে তা’ অবশ্য জানিনা) ঢাবি’র শিক্ষকের গবেষণায় প্রতারণা
২
একাডেমিক প্রতারণাগুলোর মধ্যে সবথেকে বেশি হচ্ছে লেখাচুরি। লেখাচুরি বা plagiarism শব্দটার উৎপত্তি হয়েছে ল্যাটিন শব্দ plagium যার অর্থ হল ‘kidnapping a man’। সহজ কথায়, লেখাচুরি হচ্ছে অন্যের গবেষণা/লেখা থেকে নিয়ে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়া। World Association of Medical Editors (WAME) এর মতে, যদি কোন একটি লেখায় অন্য লেখা থেকে ছয়টি (০৬) শব্দ পরপর মিলে যায়, বা যদি ৩০টি শব্দের সেট হতে ৭ থেকে ১১ টি শব্দ মিলে যায়, তাহলে প্রথম লেখাটি লেখাচুরি বা প্লাজিয়ারিজমের দোষে দুষ্ট। তবে শুধুমাত্র সরাসরি টুকলিফাই না-করেও যদি কেউ অন্যের গবেষণা ফল বা আইডিয়া এদিক-সেদিক খানিকটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে লিখে নিজের বলে চালিয়ে দেয়, সেটাও কিন্তু প্লাজিয়ারিজম। এমনকি কেউ নিজের গবেষণা ফল বা আইডিয়াও আগে কোথাও প্রকাশ করার পর আবার অন্যকোথাও ‘নতুন’ হিসেবে প্রকাশ করলে সেটাও প্লাজিয়ারিজম (Masic, 2012)। সম্প্রতি শেষোক্ত প্রকারের লেখাচুরির অভিযোগ উঠেছে বর্তমানে প্রখ্যাত সমাজবিজ্ঞানী বাউম্যানের বিরুদ্ধে। এখানে ।
তাহলে কি ইতোমধ্যেই প্রকাশিত অন্যের/নিজের লেখা থেকে কাট/কপি+পেস্ট করা যাবেনা? এমনকি অন্যের কথাকে হুবহু না-নিয়ে একই বক্তব্যকে নিজের ভাষাতেও লিখা যাবেনা? অবশ্যই এটা করা যাবে। ইনফ্যাক্ট, একাডেমিক আর্টিকেলে পূর্বে প্রকাশিত বিষয় সংশ্লিষ্ট লেখা থেকে তথ্য বা বক্তব্য নিয়ে নিজের লেখার বক্তব্যকে শানিত করাই প্রচলিত রীতি। তবে তা করতে সুনির্দিষ্ট রীতি আছে। সেই রীতি মেনেই অন্যের লেখা থেকে নেওয়া যাবে। যেমন, অন্য লেখা থেকে হুবহু কোন বাক্য বা বাক্যাংশ নিলে সেটাকে “” বা ” এর মধ্যে রেখে সাথে সাথেই লেখকের নাম+প্রকাশের সাল+পৃষ্ঠা নম্বর উল্লেখ করতে হয়। আবার অন্য লেখা থেকে সরাসরি কপি/কাট+পেষ্ট না করে মূল বক্তব্য/ভাবটাকে নিয়ে নিজের মতো করে লিখলে (অর্থ্যাৎ, যাকে আমরা বলি প্যারাফ্রেজিং) সেই বাক্যের শেষে লেখকের নাম+প্রকাশের সাল উল্লেখ করতে হয়। (কিছু কিছু জার্নাল খানিকটা আলাদা রীতিও অনুসরণ করে, তবে সেটাও সুনির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই)। এই রীতি না মেনে, যথাযথভাবে রেফারেন্স না দিয়ে অন্যের লেখার অংশবিশেষকে নিজের লেখায় অন্তর্ভুক্ত করলেই তাকে বলা হয় প্লাজিয়ারিজম বা লেখাচুরি। (আমিন এবং হায়দারের প্রশ্ন থেকে মনে হল এই প্যারাটা সংযোগ করাটা জরুরি)।
লেখাচুরি ইচ্ছাকৃত এবং অনিচ্ছাকৃত- দুইই হতে পারে। কিন্তু ইনটেনশন যা’ই হোক, লেখাচুরি একটা প্রতারণা, এবং এজন্য একে একাডেমিক অসততা হিসেবেই দেখা হয়। আর অসততার জন্য যেমন প্রাপ্য, তা’ই দেওয়া হয় এই দোষে দুষ্টদেরকে। ধরা পড়লে কারোই রেহাই নেই, আমেরিকাতেই হোক আর ইউরোপেই হোক। তবে বাংলাদেশে দুএকটা লেখাচুরির আকাম ধরা পড়লেও অধিকাংশই অনুৎঘাটিত থেকে যায়। আমি নিশ্চিত করে জানি ঢাবি’র একাডেমিক পত্রিকায় ডজনখানেক আর্টিকেলের প্লাজিয়ারিজমের কাহিনী- এরমধ্যে এমনও আর্টিকেল আছে যেগুলো শিক্ষকের নামে প্রকাশিত হলেও আসলে সেগুলো ছাত্রদের করা এসাইনমেন্ট! আর ছাত্রদের এমএ থিসিস থেকে আর্টিকেলে শিক্ষক নিজে কোন কিছু না-করেও প্রথম-অথোর হিসেবে প্রকাশ করার ঘটনা ত অহরহই ঘটছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কি অবস্থা জানিনা, তবে অনুমান করি সেখানে আশাহত হওয়ার মতই হবে লেখাচুরি এবং অন্যান্য একাডেমিক অসততার ব্যাপ্তি।
বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তুলনায় ব্লগে লেখাচুরি এবং এর প্রতিরোধে মনোযোগ কম থাকা অস্বাভাবিক নয়। ফলে ব্লগগুলোতে এই সমস্যার মাত্রা অধিক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সিসিবিতে প্রকাশিত এই এবং এই ব্লগগুলো আমার এই অনুমানকেই সমর্থন করে। এই দুইটা লেখা সামহোয়্যারইন ব্লগেও প্রকাশিত এবং বেশ সমাদৃত হয়েছে। ব্লগের পাঠকরা লেখাচুরি নিয়ে ততোটা সচেতন নয়, যতটা পেশাদার একাডেমিকরা। তবে সিসিবি এক্ষেত্রে অবশ্যই ব্যতিক্রম। এখানে উল্লিখিত ব্লগদুটোতে লেখাচুরি খুঁজে পাওয়া এবং সাথে সাথে এর প্রতিবাদ করায় সিসিবিয়ানদের মধ্যে যে ঐক্য দেখা গেছে, তা’ বাংলা ব্লগের জগতে একটা উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। ব্লগের মডারেশন প্যানেলও নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা নিয়ে সেই প্রতিবাদকে প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে। আশা করি, এরপর থেকে সকলেই লেখাচুরি থেকে বিরত থাকবে, অন্তত সিসিবিতে।
৩
খুঁজলে হয়তো আরও দু’একজনকে পাওয়া যেতে পারে, তবে আমার জানামতে সিসিবি’তে ডঃ রমিত আজাদ ভাই’ই লেখাচুরির অপরাধে সনাক্ত প্রথম ব্যক্তি। লেখাচুরির অভিযোগের জবাবে তিনি উল্লিখিত একটা পোস্টে একাধিকবার অভিযোগ খণ্ডানোর প্রয়াস পেয়েছেন এই বলে যে, তিনি ইচ্ছে করেই উদ্ধৃতি দেননি পাঠকদের পড়ার সুবিধার্থে, চাইলেই সেগুলো দিতে পারবেন অনুসন্ধিৎসু পাঠকদের। কিন্তু উপরে উল্লেখ করেছি যে, অন্যের গবেষণা ফল/ধারণা/লেখার অংশবিশেষ নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে ইনটেনশন যা’ই হোক, সেটা লেখাচুরি। আর লেখাচুরি হচ্ছে একাডেমিক অসততা, অর্থ্যাৎ অপরাধ।
রমিত ভাই,
কোথাও আপনি লেখাচুরির এই অপরাধ স্বীকার করেছেন চোখে পড়েনি- না সিসিবিতে, না সামহোয়্যারইন এ। আপনি লেখাচুরি কি সেটা জানেননা মনে করা কঠিন। আর যদি ধরেও নিই যে আপনি এ’ নিয়ে যথেষ্ট সচেতন ছিলেন না, এক্ষণে এই অনুমান বাতিল হয়েছে। কারণ, ইতোমধ্যেই আপনার জানা হয়ে যাওয়ার কথা লেখাচুরি কি আর এর পরিণামই বা কি। একজন পিএইচডিধারী গবেষক হিসেবে+বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক হিসেবে নিজের একাডেমিক ইন্টেগ্রিটির পরিচয় দিতে হলে কৃত অপকর্মের দায় স্বীকার করে যথাযথ বিবেচনার পরিচয় দিন।
তথ্যসূত্রঃ
Cunninghum, Sara (2011) Manual High students’ projects raises issue of fair play in science, Louisville Courier-Journal (April 4).
Horowitz, Helen (1987). Campus Life: Undergraduate cultures from the eighteenth century to the present. New York: Knopf.
Masic, Izet (2012). Plagiarism in Scientific Publishing. Acta Informatica Medica, 20(4): 208-213.
McCabe, Butterfield, and Trevino (2006). Academic Dishonesty in Graduate Business Programs: Prevalence, causes and proposed action. Academy of Management Learning and Education, 5:294-305.
Sperber, M. (2000). Beer and Circus: How big-time college sport is crippling undergraduate education. New York: Henry Holt.
Vogel, Lise (2011). Psychologist Accused of Fraud on “Astonishing Scale”. Science, 344(4):579.
নিঃসন্দেহে একটি জরুরী পাঠ......
অনেক ধন্যবাদ লিখাটির জন্য...
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
ভাইয়া,
আপনাকেও ধন্যবাদ পড়ার জন্য, এবং উৎসাহ দেওয়ার জন্য।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
তোমার লেখার জন্য অপেক্ষা করছিলাম, মাহমুদ। গ্রেট জব :clap:
আপা,
অনেক ধন্যবাদ 🙂
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
মাহমুদ ভাই, খুবই চমৎকার এবং নির্মেদ ভাষায় প্লাজিয়ারিজমের ব্যখ্যা এসেছে। আমার মত আম-পাঠকদের জন্য খুবই জরুরি। তবে আপনার দ্বিতীয় শর্তের কথা শুনে ডরাই গেলাম। ৩০ শব্দের মাঝে ৭ থেকে ১১টা শব্দ মিলতেই পারে, অন্তত বাজ ওয়ার্ডই থাকে চার পাঁচটা। জার্নালে লিটারেচার রিভিউ লেখার সময় কি এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে ? বিষয়টা কনফিজিং কারণ ধরেণ আমি যদি আগার কাজের এক্সেটেনশন করে নতুন কাজ করি, আগের কাজের অনেক কথাই হয়তো বলতে হবে। যেহেতু লেখক একই ব্যাক্তি লেখার ধরণ বাক্যগঠন মিলে যেতেই পারে।এমনকি পাবলিশ জার্নালের অনেক গুলোই এই সংজ্ঞায় প্ল্যাজিয়ারিজম হিসাবে কোয়ালিফাই করে।
=======
তবে যে বিষয়ে উপসংহারে পৌছেছেন তাতে দ্বিমতের প্রশ্নই উঠে না। হয়তো রমিত ভাইয়ের লেখায় ধরা পড়েছে, তবে বাংলা অনলাইন জগতে লেখা চুরির (একেবারে পুকুর চুরি) ঘটনা খুবই হরহামেশা হয়। এমনকি রমিত ভাইয়ের ঘটনা দেখার পরে আমার নিজের কয়েকটা লেখার প্রথম লািন লিখে গুগল সার্চ করে তাজ্জব বনে গেছি। একটি ফেসবুক পেজ ('যে গুলো কিনা নিছক মজার জন্য' (ইনফোতে তাই লেখা)) আমার লেখা একটি প্যারা দাঁড়ি কমা সহ প্রকাশ করেছে, কোথাও আমার নাম পরিচয় ছাড়া (এমনকি কালেক্টেডও বলে নাই)। এখন আমি নিতান্তই সামান্য ব্যাক্তি। ফুল পাখি লতা পাতা টাইপ হাবিজাবি লিখি, সেখানে আমার লেখা যদি আরেকজন লেখতে পারে এমন ব্লান্টভাবে, সেখানে তুলনামূলক গভীর আখোচনা বিষয়ক পোস্ট গুলো কী পরিমাণ চুরি হবে সহজেই অনুমেয়। নন একাডেমিক কথা বলে ফেলি, সাধারণত এই সব লেখা চোরেরা এরোগেন্ট ধরণের হয়। অভিযোগ করা হলে গলা উঁচু করেই অভিযোগ ধামা চাপা দিয়ে দেয়। বাংলা অনলাইনে মুরীদেরও অভাব হয় না। পীর চেচামেচি করলে যাচাই বাছাই না করেই পীরের সাথে গলা মিলাবে এমন মুরীদান নেহায়েত কম না।
=======
লেখা চুরি বিষয়ক একটা মজার ঘটনা শেয়ার করি। কলেজ থেকে বের হয়েছি তখন সবে। আমার মা তখন ঢাকার একটি কলেজের বাংলার হেড। তো সেখানে বার্ষিকীর জন্য আমার আম্মা কাজ করছিলেন, ছাত্রদের লেখা যাচাই বাছাই করছিলেন। চট করেই একটা লেখা দেখিয়ে আমার আম্মা বললেন, এই লেখাটাতো বেশ। শুনে আগি আগ্রহ নিয়ে পড়তে গিয়ে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকি। কারণ আগি লেখাটি চিনি। এই লেখাটি এক বছর আগেই আমাদের দেয়াল পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। পত্রিকার সহ সম্পাদক থাকায় প্রত্যেকটি লেখার অ আ ক খ আমি জানতাম। লেখা চুরির মাজেজা ধরতে পারলেও আসল ঘটনা না বলে আম্মাকে শুধু কপিক্যাট বলে লেখাটা বাদ দিয়ে দিতে বলি। আমি জানি কাজটা আগি ভুল করি নি। তবে আজকালকার যুগে বড় বড় ডিগ্রীধারীদের পুকুরচুরি দেখলে মাঝে মাঝে মনে হয় কলেজ পড়ুয়া একটি ছেলের বার্ষিকীতে ছাপার অক্ষরে নিজের নাম দেখতে চাওয়ার বাসনা একেবারেই ইনোসেন্ট এটেম্পট ছিল।
আমিন,
তোমার বিশাল মন্তব্য এবং এর স্টাইল ভালো লেগেছে 🙂 । এবার অন-টপিকে আসি-
আমার ব্লগে একটা বিষয় উল্লেখ করতে ভুলে গেছি- অন্যের (এবং নিজের) লেখা থেকে ধার করার প্রচলন আছে, এমনকি হুবহু কপি/কাট+পেষ্ট করাও জায়েজ। তবে সেটা যথাযথভাবে উদ্ধৃতিসহকারে; এই উদ্ধৃতির আবার স্বীকৃত নিয়মও আছে। অন্য লেখা থেকে হুবহু কোন বাক্য বা বাক্যাংশ নিলে সেটাকে "" বা '' এর মধ্যে রেখে সাথে সাথেই লেখকের নাম+প্রকাশের সাল+পৃষ্ঠা নম্রব উল্লেখ কড়তে হয়। আবার অন্য লেখা থেকে সরাসরি কপি/কাট+পেষ্ট না করে মূল বক্তব্য/ভাবটাকে নিয়ে নিজের মতো করে লিখলে (অর্থ্যাৎ, যাকে আমরা বলি প্যারাফ্রেজিং) সেই বাক্যের শেষে লেখকের নাম+প্রকাশের সাল উল্লেখ করতে হয়। যেকোন একাডেমিক জার্নালের আর্টিকেল খুলে দেখো, এইসব উপায় অবলম্বন করে অন্যের+নিজের লেখা থেকে হবহু তুলে দেওয়ার এবং প্যারাফ্রেজ করার বহু উদাহরণ পাবে। কাজেই, কনফিউশনের কিছু নাই। বেবাকই এক্কেবারে ফকফকা 😀
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
হুম। এখন আর কনফিউশনের কিছু নাই। রেফারেন্স উল্লেখ না থাকলে আপনার দেয়া নিয়মটা ঠিক হবে এই বিষয়ে আমি নিজেও শিউর ছিলাম। হুবহু তোলার ব্যাপারটা জায়েজ থাকলেও ব্যাক্তিগতভাবে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি (একাডেমিক জার্নালে)।
খুব সম্ভবত এখনকার প্ল্যাজিয়ারিজম সফটওয়ার গুলো এই সব স্ট্যান্ডার্ড মেইটেইন করেই তৈরি। তাই প্ল্যাজিরিজম করে পার পাওয়া খুব কঠিনই হবার কথা। তারপরেও 'ন্যাচার'এর মত জায়গায় পাবলিশড পেপারের ক্ষেত্রে এর ব্যত্যয় দেখাটা কিছুটা বিস্ময়করই বটে। কনফিউশন ক্লিয়ারের জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাই।
কোন কোন সময় হুবহু তোলা লেখার বক্তব্যকে শানিত করার জন্য বেশ সহায়ক। এজন্য আমি প্রায় সব আর্টিকেলে এইটা করে থাকি, নিয়ম মেনেই 🙂
সর্বোচ্চ পর্যায়ের লোকজনের দক্ষতাও কিন্তু সর্বোচ্চ পর্যায়েরই, সেটা চুরিতেই হোক বা সাধুগিরিতে। তবে সেরের উপরেও সোয়া সের আছে :grr:
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
মাহমুদ ভাই,
অনেক রিভিউ জার্নালে অথবা বইয়ে হুবহু কপিপেস্ট থাকে।
তবে অবশ্যই লেখক বা এডিটররা তাদের রেফারেন্স দেয়।
তাহলে ঠিকমত রেফারেন্স দেয়া থাকলেই কি সেটা প্ল্যাজিয়ারিজম হবেনা?
হায়দার,
জার্নালের অন্যদের (এবং নিজেরও) পূর্বে প্রকাশিত লেখার থেকে নেওয়া অবশ্যম্ভাবী। প্রকৃতপক্ষে, একাডেমিক আর্টিকেল সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অন্যান্যদের গবেষণা+তথ্য+উপসংহারের সাথে সম্পর্কিত করে উপস্থাপন না করলে প্রকাশিতই হয়না। কিন্তু আমিনের উত্তরে যেমন বলেছি, হুবহু কপিপেষ্ট বা পারাফ্রেজ করার স্বীকৃত রীতি আছে। সেই রীতি মেনে চললে, ঠিকঠাক মতো রেফারেন্স দিলে এসবকে লেখাচুরি বলা হবে না।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
প্রথমেই একটা ::salute:: এই লেখাটার জন্য। দ্বিতীয় স্যালুট ইচ্ছা কিংবা অনিচ্ছাকৃত ধোঁয়াশা করে রাখা এই বিষয়টিকে এত সহজে পাঠযোগ্য করে উপস্থাপন করার জন্য। অন্যদেশের খবর জানি না তবে এই দেশে চুরি করাটা অনেকেই অধিকার হিসেবে নেয়। ধরার মেকানিজম নাই দেখেই হয়তো এমনটা হয়ে গিয়েছে। যাই হোক আমি সবাইকে অনুরোধ করবো এই লেখাটি আপনারা নিজ নিজ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে শেয়ার করবেন এবং সবাইকে জানানোর চেষ্টা করবেন। আমজনতাকে জ্ঞান বিতরণ করলে আমজনতার মুখ তেতো হয়ে যায় তারপরেও সবার উচিৎ অন্তত এই ব্যাপারে আরো একবার চেষ্টা করা।
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
মোকা,
লেখাটি পছন্দ করেছো জেনে খুশি হলাম। অন্যান্যদেরকে এইটা শেয়ার করার মাধ্যমে লেখাচুরির প্রবণতাকে প্রতিরোধে আহ্বান করেছো দেখে আরও প্রীত হলাম। তবে আমি এইটা নিয়ে খুব একটা আশাবাদী না। কারণ, অনলাইনে বিচরণশীল অনেকেই জানে যে লেখাচুরির বিরুদ্ধে নামলে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেড়িয়ে পড়বে, পড়বেই। এই লেখায় ঢাবিতে একাডেমিক লেখাচুরির প্রবণতার প্রতি আমি সুস্পষ্ট অভিযোগ তুলেছি। এইটা খুবই রিস্কি কাজ, আমি জানি। কিন্তু আমি এটাও অনুমান যে, ঢাবি'র কেউ এতোবড় একটা অভিযোগের জন্য আমার কাছে প্রমাণ দাবি করবে না। কারণ, ঐ সাপ বেড়িয়ে পড়ার ভয়। একইভাবে, অন্তর্জাল দাপিয়ে বেড়ানো মুক্তমনারাও আসবেনা বলে মনে করি। তার কারণও কতিপয় গুরুদের নিয়ে তাদের একই রকম ভীতি। উদাহরণস্বরূপ হুমায়ুন আজাদের লেখাচুরি নিয়ে এইটা দেখো।
এতকিছুর পরেও লিখলাম। কারণ, সিসিবিতে ডঃ রমিত আজাদের লেখাচুরি নিয়ে আমরা সে মাত্রায় প্রতিবাদ করতে পেরেছি, তাতে হতাশাজনক শত দৃষ্টান্ত সত্যেও আশাবাদী হতে মন চায়। (সম্পাদিত)
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
গুরুদের মাটিতে না নামিয়ে আনার ব্যাপারটা সম্ভবত কিছুটা হলেও সার্বজনীন। দেবতা যদি মাটিতে লুটায় তবে আমরা তো নগন্য পিঁপড়ে--এরকম একটি ধারণা থেকেই হয়তো সবাই সেই রাস্তায় হাঁটতে ভয় পায়। হুমায়ুন আজাদ সাহেবের লেখা নিয়ে আরো কিছু সমালোচনা পড়েছি। যতদূর বুঝি উনাকে নিয়ে কটু কথা বললে (তা সে সত্যই হোক আর গালমন্দই হোক আর সমালোচনাই হোক) আপনি বিশেষ একটি ট্যাগ খেয়ে যাবেন। অনেকে আবার সেই ট্যাগ খাবার ভয়েও ও পথে হাঁটে না। বাঙলাদেশে বস্তুনিষ্ঠ গবেষণা আসলে হয়ও না ঠিক মত। অন্তত আমি যেই লাইনে চলাফেরা করি সে লাইনে তো নয়ই। তাই কে চুরি করছে কতটুকু করছে সেটা ভেবে উদ্বিগ্ন হবার মতও তথ্যও আমার নাই। রমিত ভাইয়ের এই ঘটনার পর থেকে অন্তত কমের মাঝে চোখকান খুলে গেল, এবং উনার ব্যাপারে সবাই যেভাবে অংশগ্রহণ করলো অন্তত সেটা আশা জাগানিয়া ছিল।
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
এইটা আমাদের একটা জাতীয় বৈশিষ্ট্যের মতোই। হাতেগোনা দু'চারজন ছাড়া প্রায় আর সবাই ট্যাগিং বাগিয়ে নিয়ে এগিয়ে আসে যদি তাদের নিজ নিজ পছন্দের লোকজন বাটে পড়ে। ট্যাগের ভয় ত আছেই, তবে যেই ট্যাগের দিকে তুমি ইংগিত করেছো, ঐটার ভয় খুব একটা পাইনা। সিসিবিতেই ত একবার প্রকাশ্যে এবং কয়েকবার অনুচ্চারে সেই ট্যাগ দেওয়া হয়েছিল 🙂
ট্যাগের ভয় দিন দিন কমছে, পাওয়ার+নলেজ বৃদ্ধির সাথে সমানুপাতিক হারে B-) । ঝুলিতে আর কিছু যোগ করে নিই। তারপর মাঠে নামা যাবে পুরোদমে 🙂 (সম্পাদিত)
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
:thumbup:
সত্যের জয় হোক এটাই কাম্য।
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
ঐ
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
... ::salute:: ভাই।
ঢাবিতে একাডেমিক লেখাচুরি প্রকাশ্য এবং আইনত মনে হয়। ভুক্তভূগী আমি নিজে। শিক্ষকদের প্রশ্ন করলে বেয়াদপ আর সহপাঠীদের কাছে খারাপ ছাত্রের আজাইরা ভাব নেয়া হয়। উভয় দোষে দন্ডিত আমি, মোকাব্বিরের বিশেষ ট্যাগ না খেলেও কিছু তকমা এখনও লেগে আছে ...।
শ্রান্ত পথিক আমি, বেলাশেষে-
চারপাশে অভেদ্য-দুর্গম পাঁচিল তুলে
বসে থাকি নষ্ট ঘরে
হিসাবের খাতা মেলে খুঁজি কতোটা অপচয় হলো।
ঐ :grr:
লেখাচুরির সাথে জড়িত বা লেখাচোরের সুহৃদ কাউকে লেখাচুরি নিয়ে বললে কি তোমাকে আপ্যায়ন করবে, না কি যেকোন ভাবে তোমার মুখ বন্ধ করার ব্যবস্থা নিবে? 😀
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
খুব দরকারী লেখা। সেলাম তোমায় :salute:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
ভাইয়া,
অনেক ধন্যবাদ।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
আপনার লেখা দেখে অনেক দিন পর সিসিবিতে আসলাম। রমিত ভাইয়ের ঘটনার কথা দেখেছিলাম, বিস্তারিত ফলো করিনি। লেখালিখির ক্ষেত্রে এই রেফারেন্সে এসে আমি দুর্বল হয়ে যাই। হুবুহু কপি করি এমন না। তবে আমার পড়াশোনা খুবই অনিয়মিত এবং এলোমেলো। এজন্য কোন একটা কথা কোথাও হয়ত পড়েছি, কিন্তু সেটা কোথায় পড়েছি আর খেয়াল না থাকায় রেফারেন্সে ছাড়াই কথাটা নিজের মত করে বলে দিই। এবিষয়টা কয়েকজন আমাকে বলেছেও। যাহোক। এসব অবশ্য অ্যাকাডেমিক লেখা না। এই মনে না থাকায় রেফারেন্স না দেয়ার ব্যাপারটা লেখাচুরির মধ্যে ফেলা যায় কিনা জানার ইচ্ছা থাকল ভাইয়া। লেখাটা ভাল হয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ত আমরা গুরুত্ব দিয়েই পড়ি। ফলে তা মনেও থাকে। হতে পারে তুমি যেগুলো মনে রাখতে পারনা সেগুলো আসলে তোমার কাছেই তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। তাহলে অন্যদের কাছে সেগুলো গুরুত্বপূর্ণ হবে কি করে? আর গুরুত্বহীন লেখায় কেই বা প্লাজিয়ারিজম খুঁজতে যাবে? তবে গুরুত্বপূর্ণ লেখায় কোন ছাড় নেই। রেফারেন্স মনে রাখতেই হবে।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
মাহমুদ, অনেক ধন্যবাদ লেখাটার জন্য । :thumbup: :thumbup:
নিজে কানা পথ চেনে না
পরকে ডাকে বার বার
ভাইয়া, আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হয়েছি।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
'Science' এর এই ব্যাপারটার কথা জানতাম না। তবে Biology তে হামেশাই এমন সংবাদ শুনতে/দেখতে পাই। অর্টিকেল retraction এর ঘটনা প্রচুর। রথী-মহারথীদের মাটিতে পড়ে যাবার এবং প্রায় সাথে সাথেই মাটিচাপা পড়ার ঘটনা বহু। সব অবশ্য লেখাচুরি নয়, fraudulence ও প্রচুর। বছরখানেক আগেও দীপক দাস নামে এক নামকরা প্রফেসর এমনভাবে ধরা পড়েন। বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাপক তদন্ত করেছিল দু'বছরেরো বেশি সময় ধরে। চাকরি, নামকরা জার্নালের চিফ এডিটর পদ সব মুহুর্তে শেষ। উনার কাজ নিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতেও অনেক আগ্রহ ছিল। ফলে প্রতিক্রিয়া খুব নির্মম ছিল। তিনি ১০০০ পৃষ্ঠার বেশি লম্বা জবাব দিয়েছিলেন --- একটি প্রধান যুক্তি ছিল জাতিগতকারণে তিনি বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার হয়েছেন। পুলিশি ঝামেলা এড়াতে ভারতে পালিয়ে যান তিনি, কয়েকমাসের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
এতসব দেখে দেখে এবং নিজের বুদ্ধিমত্তা (বলা ভালো বুদ্ধুমত্তা)-র লেভেল দেখে পিএইচডিদের প্রতি আলগা মুগ্ধতা কাজ করেনা। আমি জানি তারা অন্য সবার মতই সাধারণ আর ভালনারেবল। কষ্ট লাগে আর কি এতসব দেখলে। কত প্রতিভা শেষ হয়ে যায়!
তোমার তথ্যসমৃদ্ধ লেখা ভালো লাগল। আমাদের সবার কাজে আসবে। আলোচনা চলুক।
ভাইয়া, লেখাচুরিসহ অন্যান্য একাডেমিক প্রতারণা বেড়েছে অনেক। আর এইজন্য প্রতিরোধ+প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা বেড়েছে। অনেকটা এইডস এর মতো- রোগের প্রকোপ বাড়ছে, সেই সাথে বাড়ছে ওষূধ+পথ্য+প্রতিকারমূলক নানান ব্যবহারবিধি। এজন্যই এসব বিষয়ে আমাদের সচেতনতাও বাড়াতে হবে।
লেখা আপনার ভালো লেগেছে জেনে বিশেষ প্রীত হলাম 🙂
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
অল্প কথায় খুব ভালো লিখেছো মাহমুদ। নজির দিয়ে স্পষ্ট করে দিয়েছো। আর মন্তব্য-জবাবে সেটা আরো পরিস্কার হয়েছে। চমৎকার লাগলো। গতকালই পড়েছিলাম। আজ সেটা জানাতে এলাম।
সাংবাদিকতায় লেখাচুরি, প্রতারণা তো সাধারণ ঘটনা। বিশেষত এদেশে। কেউ গুরুত্ব দেয়না।
যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রতি ফরিদ জাকারিয়ার ঘটনা নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল। তার ঘটনাটা শেষ পর্যন্ত কি হলো? সিএনএনে তো আছে দেখছি! এরও আগে প্রতারণার ঘটনায় নিউইয়র্ক টাইমসের একজনের চাকরি গিয়েছিল মনে হয়।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
ভাইয়া,
আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। আমাদের দেশের অন্যের লেখা নিজের নামে চালানোর চল ইদানীং ভয়াবহ মাত্রায় চলে গেছে। শুনেছি ঢাকায় এখন চুক্তিতে থিসিস লিখে দেওয়ার জমজমাট ব্যবসা চলছে- মাস্টার্স থিসিস ৫০ থেকে ১০০ হাজার, আর পিএইচডি ২ থেকে ৪ লাখ। নিজের চোখে দেখা কিছু ঘটনার জন্য এই তথ্য বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়েছে।
যতদূর মনে আছে, ফরিদ জাকারিয়ার কেসটা তার নামে প্রকাশিত লেখার জন্য হলেও প্রকৃত লেখক ছিল একজন ইন্টার্ণ, যার অনভিজ্ঞতার উপর ভর দিয়ে সবপক্ষ পার পেয়ে গেছে।
লেখাচুরির সমস্যা যত বাড়বে, আশা করি আমাদের সচেতনতা এবং সেখান থেকে প্রতিরোধও ক্রমাগত বেড়েই চলবে।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
মাস্টার সাহেবের মাস্টার স্ট্রোক! 😀
দারুণ কাজের কাজ হয়েছে, মাহমুদ ভাই। :clap:
এরপর আর কেউ ধানাই-পানাই করার সুযোগ পাবে না। :gulli:
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
জুনা,
ধন্যবাদ যে তোমার পছন্দ হয়েছে। লেখাচুরি নিয়ে মূল বিষয়গুলো এখানে থাকলেও লেখাচুরি নিয়ে আরও বেশ আলোচনার সুযোগ এবং প্রয়োজন আছে। অন্য যেকোণ আইনের মতো লেখাচুরি বিষয়কও আইনের ব্যাখ্যা+প্রয়োগে বেশ কিছু জটিলতা আছে যা আমি ইচ্ছে কয়রে এড়িয়ে গেছি এই ব্লগে। আমি মূলত; ফোকাস করেছি লেখাচুরির সরল সংজ্ঞা, এর ব্যাপ্তি, এর প্রতি একাডেমিয়াতে সাধারণ প্রতিক্রিয়ার উপর। এখানে থেকে যে কেউ চাইলে প্রাথমিক ধারণা লাভ করতে পারবে। আঃরও জানতে আগ্রহী হলে ইন্টারনেট ত আছেই 🙂
ডেসেম্বরে দেশে যাওয়ার প্ল্যান আছে। সময় বুঝে দেশের একাডেমিয়াতে লেখাচুরি নিয়ে খানিকটা সিরিয়াস খোঁজখবর নেয়াড় ইচ্ছে আছে। তার আগে বুঝে নিতে চাই কতটা মাইর খাওয়ার আশংকা আছে 😀
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
আসলে ব্লগের ব্যাপারটা আমি অতোটা গুরুত্ব দিই না। আমরা কথা বলার সময়ও কিন্তু রেফারেন্স ব্যবহার করি খুব সহজভাবে। কিন্তু কেউ যখন লাগাতারভাবে সৌজন্যতা না দেখিয়ে কাজটা করতে থাকেন এবং নিজেকে জাহির করেন তখন একটু অসহনীয় লাগে।
আপনি কি হ্যারল্ড গারফিঙ্কেল কে পাইছিলেন ডিপার্টমেন্টে?
আমার বন্ধুয়া বিহনে
রাব্বী,
দুঃখিত যে তোমার মন্তব্য চোখ এড়িয়ে গেছিল।
ব্লগর ব্লগর, স্মৃতিকথা জাতীয় লেখায় রেফারেন্স এর দরকার না থাকলেও ইতিহাস বা অন্যনায় প্রবন্ধ বা আলোচনায় রেফারেন্স থাকা বাঞ্ছনীয়। আঃর জাহির করার ব্যপারটা সব সময়ই অসহনীয়।
গারফিঙ্কেলকে পাইনি। আমি যাওয়ার দু বছর আগেই এমেরিটাস হয়য়ে গেছিলেন। তবে তার সরাসরি শিষ্য আছে কয়েকজন, সমাজবিজ্ঞান এবং অন্যান্য দুই/তিনটা প্রোগ্রামে, অন্যান্য কিছু ইউনিভার্সিটিতেও। আর তার এথনোমেথোডলজী থেকে আরেকটা নতুন স্পেশালাইজেশনের জন্ম হয়েছে- কনভারসেশন এনালিসিস।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
এই "দরকারি কথা"গুলো খুব সহজ করে, যুক্তির সাথে তুলে ধরার জন্য তোমাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
যতবেশী ধীমান, তত সূক্ষ্ম তার চাল। কিন্তু আখেরে সবকিছুই হয়তো একদিন ধরা পড়ে। কেবলমাত্র মান সম্মানের ভয়ই বোধহয় বৌদ্ধিকদের কুম্ভীলকবৃত্তি থেকে দূরে রাখতে পারে।
তবে বেপরোয়া তস্করেরা বড় অসময়ে ধরা খাবেই।
ভাইয়া,
আপনাকেও ধন্যবাদ।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
কঠিন কথাগুলোকে খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার জন্য ধন্যবাদ। jessore board JSC result 2018 full MarkSheet Download