ফয়েজ ভাই সচলের মাহবুব লীলেনের বরাতে একবার আমার এক পোষ্টে কইছিলেন যে, ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস মধ্যপ্রাচ্যে জন্মাইলে নবী হওয়ার চান্স আছিলো। কিন্তু আমার ত মনে হচ্ছে, উনি অলরেডী নবী হয়ায় গেছেন। তা না হলে তানা’র কাছা টানাটানি করার পাপে আমার মাথায় ঠাডা পড়লো ক্যান?-
গত সপ্তাহ থেকে বিদ্ঘুটে এক রোগে ভুগছি- সময় সময় মাথা টালমাটাল করে, মনে হয় মাথা ঘুরে পড়ে যাবো। ডাঃ অসীমরে কইলাম, কয় চিন্তার কিছু নাই, অসুখ সামান্য, এমনিই সেরে যাবে। ভরসা পাইলাম না, ডাঃ ধীমানরে কল দিলাম; সেও একই কথা বলে। কিন্তু আমার ত খবর হয়ে যায়। সেদিন একটা ক্লাস পর্যন্তু বাতিল করে বাসায় দৌড় দিতে হলো। কলেজ লাইফে আমার প্রথম রুমমেট ডাঃ মতিউলরে কল দিলাম। তারও ঐ একই কথা।- রোগের নাম benign postural vertigo. কয়েকদিন থেকে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এমনি এমনিই নাকি চলে যাবে। যাহোক, বন্ধুদের কথা মেনে নিয়ে বেশ হালকা মেজাজে চলছিলাম। কিন্তু আমার অসুখ নিয়ে বউ এর চিন্তা উত্তরোত্তর বেড়েই চলল। তার এক কথা ‘ছাও ডাক্তারে বিশ্বাস নাই। মেডিসিনের প্রফেসরের কাছে যেতেই হবে’। বন্ধু সামি’র (১৯৯০-৯৬) বান্ধা গরুদের জন্য উপদেশ ‘বউ সঠিক, আমিই ভুল’ শিরোধার্য করে ঠিক করলাম প্রফেসরের কাছেই যাবো। আবার অসীমকে কল করলাম। সমস্যা খুলে বলতেই সে পপুলারে মেডিসিনের প্রফেসরের চেম্বারে সিরিয়াল দিয়ে দিল।
প্রফেসর সাহেব বড় ডাক্তার। আমার মাথা ধরে এদিক ঘুরান, ওদিক ঘুরান। চোখের মধ্যে লাইট ফেলে কি সব দেখেন। হাতুরি বের করে দুই হাটুতে ঠুকঠাক বাড়ি মেরে অবশেষে নিজের চেয়ারে বসে যে কথা বললেন, তা হুবহু আমার বন্ধু সেই ছাও-ডাক্তারদের মতোই। ওষুধও একই! শুধু একটা তথ্য যোগ করলেন যে, এই রোগের সঠিক কারণ এখনো অজানা। তবে সঠিক চিকিৎসা জানা, সহজেই নিরাময় হবে। তারমানে ‘গায়েবী’ অসুখ, অন্ততঃ এপর্যায়ে এটা ধরে নেওয়া যায়, যেহেতু বড় ডাক্তারেও এর কারণ জানেননা। কারণ যা-খুশী হোক গে, সহজেই এটা সেরে যাবে; আপাততঃ এই শুনে বউ মহা খুশী। সাথে সাথেই বাসায় এসে ব্যাগ গুছানো শুরু করলো, নিশ্চিন্তে বাপের বাড়ি যাবে বলে।
কিন্তু আমার মাথায় তখন অন্য চিন্তাঃ এই রকম গায়েবী অসুখ আমার মত এক নাদান বান্দার উপর ভর করলো কেনো? নিকট অতীতে কোন বড় ধরণের গুনাহ করেছি বলে ত মনে পড়েনা? উপরন্তু শাদী মোবারকের মাধ্যমে পূর্বের সব গুনাহ-খাতা মাফ করিয়ে নিয়েছি (কাবিন শেষে হুজুর এই দোয়াটা বেশ জোর দিয়ে করেছিলেন, আমি নিশ্চিত)। অনেকক্ষণ চিন্তাভাবনা শেষে মনে পড়লো, যে ভোরে প্রথম আমার মাথা চক্কর দিয়েছিলো তার আগের দিন ক্লাসে আমি ডঃ ইউনুসের ‘সোস্যাল বিজনেস’ নিয়ে আলাপ করেছিলাম। হু, ঘটনা মনে হচ্ছে এখান থেকেই শুরু।
আমার মাথা চক্কর দিয়ে ওঠারও আগের সপ্তাহ। এক সকালে ক্লাসে যাবার আগে নেটে ঢুকছি। পেপারের টাইটেলে দেখি ডঃ ইউনুস এইবার এডিডাসের সাথে মিলে ‘গরীবের জন্য স্বল্পমূল্যের জুতা’ তৈরীর প্রকল্প শুরু করতে যাচ্ছেন। ডানোন-গ্রামীনের শক্তি দৈ এর মতো এটাও একটা সোস্যাল বিজনেস এবং এটাও গরীবদের প্রভূত উপকার করবে বলে গভীর আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন আমাদের নোবেল বিজয়ী। মাথায় আইডিয়া এলো ছাত্রদের কাছে শুনতে সোস্যাল বিজনেস কিভাবে সাধারণ বিজনেস থেকে আলাদা, আর শক্তি দৈ বা জুতা (এখনো জুতার নাম ঠিক করা হয়নি) সম্পর্কে ধারণা কি; আফটারঅল, ওরা সব একটা প্রথম সারির বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেসের ছাত্র। যথারীতি ক্লাসে গিয়ে এসাইনমেন্ট দিলাম সোস্যাল বিজনেসের উপর, আর উদাহরণ শক্তি দৈ।
প্রথমবারের মতো আমার মাথা চক্কর মেরে ওঠা ভোরের আগের দিন। ক্লাসে ‘ইকোনোমিক সিস্টেম’ পড়ানো শেষে দলগত আলোচনা অংশে ওদেরকে প্রশ্ন করলাম সোস্যাল বিজনেস সম্পর্কে ওরা কি কি জেনেছে। ওদের উত্তরগুলো ওদের এসাইনমেন্ট পড়ে আমি আগে থেকেই জানি। তারপরও জিজ্ঞাসা করলাম। ওরা যা’ বললঃ সোস্যাল বিজনেস হচ্ছে এমন একধরনের ব্যাবসা যার ‘লক্ষ্য মুনাফা নয়, গরীবের কল্যাণ’। আর যারা এই ব্যবসায় বিনিয়োগ করবে, তারা কোন ডিভিডেন্ট পাবে না। তাদের পুঁজি ক্রমান্বয়ে পরিশোধ করা হবে। সব শোধ হয়ে গেলে সেই ব্যবসায়ের পূর্ণ মালিকানা থাকবে দরিদ্রদের হাতে। – এর সাথে উদাহরণ হিসেবে শক্তি দৈ এর ব্যবসা মিলিয়ে নিতে বললাম। এইবার প্যাচ লাগল! শক্তি দৈ এর ব্যবসা থেকে ত ডানোন বছরে ১% ডিভিডেন্ট পাবে। তাইলে এইটা কি? ছাত্রদের চোখ ছানাবড়া। ডঃ ইউনুস কি তাইলে মিথ্যা বলেন? একজন বলেই বসল, স্যার, উনি ত ডাহা মিথ্যুক! এরপর শুরু হলো আরো নানা কথা- কেউ বলে শক্তি দৈ গরীবের কথা বলে বাজারে আসলেও সুপার মার্কেট ছাড়া কোথাও পাওয়া যায় না। আর সুপার মার্কেটে যারা যায়, তাদেরকে আর যা-ই বলা যাক গরীব বলা যায়না। একইভাবে গ্রামীন-এডিডাস জুতাও গরীবের নামে বাজারে আসবে, কিন্তু পড়বে ঐ উচ্চবিত্ত আর মধ্যবিত্তই। কিন্তু গরীবের জন্য না-হলেও ডঃ ইউনুস এইসব পণ্য গরীবের নামে কেন বাজারে নিয়ে আসছেন?
আমি পড়াচ্ছিলাম যে, বর্তমানে আমরা পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় বাস করছি যা’ অন্যসব অর্থনৈতিক ব্যবস্থা থেকে সভ্য হিসেবে বিবেচিত। কারণ, এখানে দাসপ্রথা নাই, জমিদারীও নাই, আর তাই কোন মানুষকে জোরপূর্বক শক্তিমানের জন্য কাজ করতে বাধ্য করার বিধিও নাই। কিন্তু আমি বললাম যে, আগের দাসপ্রথা বা জমিদারীর জবরদস্তিমূলক শ্রম এখনও আছে। কিন্তু সেটা সিস্টেমের চিপা দিয়ে করা হয় বলে সরাসরি বোঝা যায় না। ওরা জানতে চাইল, সেটা কি রকম? এই পর্যায়ে আমি ব্যক্তিগত একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম।
আমি প্রতিদিন সকাল ৭টায় উত্তরার আজমপুর থেকে বাসে উঠে বনানী যাই। সেখানে ওভারব্রিজের পাশে প্রতিদিন দেখি আনুমানিক ৫০০/৬০০ জন পুরুষ ও মহিলা কাজ পাওয়ার জন্য জমায়েত হয়। যাদের শ্রমিক দরকার, তারা ওদের মধ্য থেকে দরদাম করে, বাছাই করে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শ্রমিক নিয়ে যায়। একটু দাঁড়িয়ে দেখলেই মনে হবে যেন মানুষ কেনাবেচার হাট বসেছে। প্রাচীন দাসবাজারের থেকে পার্থক্য হলো- এই মানুষগুলো শিকলে বাঁধা নেই, আর তারা নিজেরাই গ্রাহকের সাথে নিজেদের মূল্য নিয়ে দরাদরি করে! কিন্তু স্বাধীনতা শুধু ঐ দরাদরি করার মধ্যেই। দাসদের মতো তারাও কাজ করতে বাধ্য। কারণ, কাজ না করলে দিন শেষে নিজে খাবে কি, আর সন্তান-সন্ততির মুখেই বা দিবে কি?
– এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তাদের ত কেউ এখানে আসতে বলেনি, পছন্দ না হলে তারা না আসলেই পারে! না, তারা না এসে পারে না। তারা পুঁজিবাদী সিষ্টেমের চিপায় পড়ে এই ধরণের শ্রমের বাজারে নিজেদেরকে শ্রমদাস হিসেবে উপস্থাপন করতে বাধ্য। কারণ, অন্যের জন্য দৈনিক মজুরীর বিনিময়ে কাজ করা ছাড়া তাদের জীবিকা অর্জনের আর সব পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সিষ্টেম্যাটিক উপায়ে। আর গরীবরা যাতে আগে থেকেই টের না পেয়ে যায়, তাই নতুন নতুন সিষ্টেম্যাটিক চিপা সমাজে চাপিয়ে দেওয়ার আগে তার একটা ‘গরীবের বন্ধু’ টাইপের নাম দেওয়া লাগে। ‘গরীবের জন্য শক্তি দৈ’ আর ‘গরীবের জন্য এডিডাস জুতা’ হচ্ছে এই রকম ‘সিষ্টেম্যাটিক চিপা’ যা’ প্রধানতঃ খেঁটে খাওয়া প্রান্তিক পেশাজীবিদেরকে নিঃস্ব করে ‘মুক্ত শ্রমিক’ বানায় যারা আজমপুর, মিরপুর-১ গোলচক্কর, অথবা রাতের কাওরান বাজারের শ্রমবাজারে যেতে বাধ্য করে।
কিন্তু শক্তি দৈ কিভাবে প্রান্তিক পেশাজীবিদের নিঃস্ব করে? খুব সহজ উত্তরঃ ডানোনের শক্তি দৈ কারখানা হচ্ছে ক্যাপিটাল-ইন্টেনসিভ তথা মূলতঃ পুঁজিনির্ভর। এখানে বিশাল পুঁজির মাধ্যমে কলকারখানা বসিয়ে দৈ উৎপাদন হয়। ফলে গুটিকয়েক শ্রমিকেই পুরো উৎপাদন কাজ সম্পন্ন করে। কিন্তু আমাদের দেশে প্রথাগত ভাবে গোয়ালারা দুধ উৎপাদন করে আর তা’ থেকে ঘোষরা দৈ তৈরী করে। এদের ব্যবসা পুরোটাই লেবার-ইন্টেন্সিভ বা শ্রমনির্ভর। এই পেশায় দেশ জুড়ে কয়েক লক্ষ মানুষ নিয়োজিত। পুঁজিনির্ভর ব্যবস্থায় উৎপাদন খরচ সব সময় শ্রমনির্ভর ব্যবস্থার চেয়ে কম হয়। ফলে, মিল-কারখানায় উৎপাদিত পণ্যের দাম কম রাখা সম্ভব হয়। ফলশ্রুতিতে, পুঁজিনির্ভর ব্যবস্থার পণ্য বাজার দখলে নিয়ে নেয় এবং শ্রমনির্ভর ব্যবস্থার পণ্য বাজার হারিয়ে বিলুপ্ত হয়ে যায়। এমতাবস্থায়, শক্তি দৈ বাজারে আসলে কি হবে তা’ সহজেই অনুমেয়- ঘোষদের শ্রমনির্ভর দেশীয় দৈ বাজার হারাবে (ইতোমধ্যেই তা’ শুরুও হয়েছে)। এর ফলে ঘোষদের দৈ উৎপাদন দেউলিয়া হয়ে পথে বসবে। এখানকার শ্রমিকরা পেশা হারিয়ে অনন্যোপায় হয়ে আজমপুর, কি কাওরান বাজারে এসে লাইনে দাঁড়াবে আর সব নিঃস্ব শ্রমিকের পাশে যারা ক্ষুদ্রঋণ বা অন্যকোন ‘সিষ্টেম্যাটিক চিপা’র বলি হয়ে ভেসে চলেছে শ্রমের এক বাজার থেকে আরেক বাজারে, আধূনিক শ্রমদাস হয়ে।
এই পর্যায়ে আমার মনে এই আশংকা জন্মে যে, আমি শক্তি দৈ বা গ্রামীন-এডিডাস জুতা নিয়ে কইতে গিয়ে বিশ্বখ্যাত গরীবের বন্ধু, নোবেল বিজয়ী, শান্তির দেবদূতের ‘ভাবমূর্তি’র ধূতির কাছায় হালকা টান দিছি বলেই কি ঠিক পরদিন ভোরেই আমার মাথা চক্কর দিয়া উঠল? আমি কি আসলেই মহাযোগী এই সিদ্ধপুরুষের প্রতি অযথা বিদ্বেষের বিষবাষ্প ছড়িয়ে মহাপাতকে পরিণত হলাম?- নাদান আমার এই আশংকাই যদি সত্যি হয়, তবে ব্লগের ভাই ও বোন সকল, মহাপাপী এই আমার জন্য আপনাদের অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে দোওয়া করবেন যেন এই নালায়েক আমার পাপ শীঘ্রই মোচন হয়।
পড়েই ১ম 😀
"গরীবের জন্য এডিডাস জুতা" !!!!!!
আসলে ড. ইউনূসকে "গরীব নিয়া ব্যবসার" পথিকৃত বলা উচিত।
তিনি ইতোমধ্যেই এই উপাধী অর্জন করে ফেলেছেন।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
১ম
:(( :((
ব্যাপার না বস। :))
নেক্সট টাইম 😉
এটা আমার কথা নয়, সচল (যতদূর মনে হয় মাহবুব লীলেন) থেকে কপি করা।
কথাটা ঠিকই বলেছো, আমাদের ফোকাস হওয়া উচিৎ লেবার-ইনটেন্সিভ। ফিনিশড প্রডাক্ট গরীবদের হাতে দেয়া কোন সমাধান নয়, সমাধান হচ্ছে প্রডাকশনে তাদের সম্পৃক্ত করে নেয়া।
কিন্তু একজন ব্যাংকার এর কাছ থেকে তুমি এরচেয়ে ভালো আর কি আশা করতে পার।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
-হুম, ঠিকই বলেছেন। আপনি মাহবুব লেলিনের নামও উল্লেখ করেছিলেন ঐ মন্তব্যে।
- উনি ব্যবসা করুক আর সব ব্যবসায়ীদের মতো, আমার কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু যখন দেখি গরীর+গরীবী নিয়াও ব্যবসা করে, আবার মহাপরুষের ভড়ং ধরে, তখন মেজাজ ঠিক থাকেনা। (সম্পাদিত)
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
- বস, ঠিক করে দিছি।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
:boss: :boss: :boss: :boss: :boss: :boss: :boss:
সহমত মাহমুদ ভাই ।
ভাল্লাগল...... :clap:
কেমন আছেন ?
এখন বেশ খানিকটা ভালো আছি।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
এই ডাঃ মতিউল ভাই ই কি সেই মতিউল ভাই??
মান্নাস স্যার তথা মন্টু মিয়ার সাথে কথোপকথন।আমরা কলেজে থাকতে এই ডায়লগগুলা খুব বিখ্যাত ছিল।
হুম, এ'ই সেই মতিউল ভাই :))
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
আরো আছেঃ
"মতিউল, আবার কথা...
ডেস্কের নীচে মাথা..."
ক্যাডেট মহান
ও-৭০২
সিসিআর
সুন্দর বিশ্লেষন 😀
মিরপুরে হুজুরের দরবারে গিয়ে খাস দিলে মাফ চেয়ে নিলে গায়েবি রোগের রিকাভারি আরো তাড়াতাড়ি হবে।
গুরুত্ত্বপূর্ন বিষয় মজা করে পড়লাম। লেখা যথারীতি ভাল লাগলো।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
মাহমুদ, ভালো লাগলো লেখার ধরণ এবং বিশ্লেষণ। সামাজিক ব্যবসা নিয়ে আরো লেখা চাই। আসলে এ নিয়ে একেবারে মুর্খ আমি।
ডানোন ১% ডিভিডেন্ট নিয়ে যাক, তাতে খুব একটা আপত্তি করছি না। কিন্তু শ্রমঘন শিল্পকে পুঁজিনির্ভর শিল্পে রূপান্তরের বিপদ নিয়ে তোমার আশঙ্কার সঙ্গে একমত হয়েও কয়েকটি প্রশ্ন মাথায় এলো। এ নিয়ে তোমার ভাবনা জানতে চাচ্ছি।
এক. প্রতিযোগিতার এই বিশ্বব্যবস্থায় উৎপাদন খরচের কারণে শ্রমঘন শিল্প মার খেতেই থাকবে। এটা তো ঠেকানো যাবে না। ডানোন-গ্রামীণ না হলেও অন্য কোনো কারখানা ঘোষদের ব্যবসা কেড়ে নিবেই।
দুই. একইভাবে কৃষিতে যে বাণিজ্যিকিকরণ হচ্ছে, তাতেও প্রতিদিন প্রচুর মানুষ কৃষিশ্রম থেকে উচ্ছেদ হচ্ছে।
তিন. পুরনো ধাঁচের শিল্পের আধুনিকায়নের কারণে প্রচুর শ্রমিক প্রতিদিন কাজ হারাচ্ছে এবং স্বাধীন শ্রমদাসে রূপান্তর ঘটছে।
চার. পাশাপাশি বিশ্বায়নও আমাদের মতো দেশে এই সমস্যাকে আরো প্রকট করছে। সস্তা দরের চীনা পণ্যের কারণে বাংলাদেশে তো বটেই যুক্তরাষ্ট্রেও স্থানীয় শিল্প মার খাচ্ছে।
তাহলে উপায় কি?
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
- সানা ভাই, ধন্যবাদ আপনার সুচিন্তিত মতামত এবং অতি প্রাসঙ্গিক প্রশ্নমালার জন্য। আমি ধারণা করেছিলাম যে, আপনি এই প্রশ্নগুলো করতে পারেন 🙂 ।
আপনি শ্রমঘন শিল্পের পুঁজিঘন শিল্পে রূপান্তরে শ্রমিকদের বিপদটা ভালো ভাবেই উপলব্ধি করেছেন। এই বিপদে শুধু তৃতীয় বিশ্বে নয়, খোদ আমেরিকাতেও শ্রমিকরা রিস্কে আছে। এর কারণটা পুঁজিবাদের কাঠামোগত; পুঁজিবাদে ব্যক্তিগত পুঁজি শুধুই মুনাফা খোঁজে, তাই সস্তা শ্রম সে যেখানে পাবে সেখানেই যাবে, যেখানেই অটোমেশন করা সম্ভব সেখানেই তা করবে যা'তে মুনাফা বৃদ্ধি পায়। সাধারণভাবে শ্রমিক-কল্যাণের দায়টা ব্যক্তিগত পুঁজির নয়, এটা রাষ্ট্রের। একারণেই আমরা ইতিহাসের নানা পর্যায়ে কেইনসীয় কল্যাণরাষ্ট্র দেখি যা' ব্যক্তিপুঁজির উপর নানারূপ নিয়ন্ত্রন আরোপের মাধ্যমে শ্রমিকসহ অন্যান্য সামাজিক গোষ্ঠির স্বার্থ সংরক্ষন করে। কিন্তু মুক্তবাজার অর্থনীতির এই কালে রাষ্ট্রকে ক্রমাগত গুটিয়ে ফেলে ব্যক্তিপুঁজি পরাক্রমের সাথে মুনাফা-দৌড়ে এগিয়ে চলেছে আর শ্রমিকসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীগুলোর জীবনযাত্রা ক্রমাগত নিচে নামছে।
- এ' থেকে পরিত্রানের উপায় কি? আমার মতে, রাষ্ট্রকেই এগয়ে আসতে হবে জনগণের স্বার্থে। রাষ্ট্রকে শুধু ব্যক্তিপুঁজির লাভের দিক দেখলেই চলবে না। কারণ, রাষ্ট্র সকলের, শুধু পুঁজিপতির নয়। অর্থ্যাৎ, আমি বলতে চাইছি কল্যাণরাষ্ট্রের কথা। তবে এই ধরণের সমাধান অবশ্যম্ভাবীরূপেই সাময়িক হবে। স্থায়ী সমাধান আপাততঃ আমি এক সাম্যবাদেই দেখি। (সম্পাদিত)
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
রাষ্ট্র এগিয়ে আসার ব্যাপারটায় একমত হতে পারলাম না মাহমুদ। বরং রাষ্ট্রের সম্পৃক্ততায় বিপরীত ফল বনে আনার সম্ভবনা প্রবল, লাভজনক প্রতিষ্টান পরিনত হবে অলাভজনক প্রতিষ্টানে, মানুষের প্রোডাক্টিভি কমে যাবে। ইন-ফ্যাক্ট রাষ্ট্র এগিয়ে আসা মানেই ধরে নেয়া হচ্ছে এখানে ভর্তুকি দিতে হবে। এভাবে সাময়িক সমাধান হতে পারে, এর বেশী কিছু নয়।
এর থেকে উত্তরনের উপায় দুটি ধাপে। প্রথম ধাপে শ্রম-ঘন শিল্পে বিনিয়োগ, এবং এর পাশাপাশি দক্ষ শ্রমিক বৃদ্ধি। পুজি এবং শ্রম-দক্ষতা পাশাপাশি দাঁড়িয়ে যাবে একটা সময়, এবং শ্রম-দক্ষতা লাভজনক হওয়ায় শিল্পে এর কদর বাড়বে।
উদাহরন হিসেবে ফিশিং বা অবকাঠামো উন্নয়ন কে ধরতে পার। আমাদের দেশে ফিশিং শ্রম-ঘন শিল্প কিন্তু আমেরিকায় তা পুজি-ঘন। আমাদের দেশে পুজি-ঘন হচ্ছে না কারন শ্রম তার চেয়ে সস্তায় পাওয়া যাচ্ছে, আবার উন্নত আমেরিকায় এটা পুজি-ঘন হচ্ছে কারন শ্রম-ঘন করতে গেলে খরচ বেশি পরে যাচ্ছে।
দরকার পড়লে আরও ব্যাখ্যা করা যেতে পারে।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
- ফয়েজ ভাই, আপনার সাথে আরো অনেককেই পাবেন, বিশেষ করে অর্থনীতি জানাশোনা লোকেদের। কিন্তু রাষ্ট্রীয় মালিকানার প্রতিষ্ঠান অলাভজনক হয় না, "অলাভজনক করে ফেলা হয়" এবং কিভাবে তা' করা হয় সেই বিশ্লেষণও বেশ খানিকটা করা হয়েছে; শুধু সেইটা সিলেবাসে+মূলধারার মিডিয়াতে আসে না। আর এই 'অলাভজনক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানই' যখন নামমাত্র মূল্যে ব্যক্তিমালিকানায় ছেড়ে দেওয়া হয়, তখনই আবার তারা লাভজনক হয়ে পড়ে। কি অবাক কান্ড, তাই না?
বস, আমাদের দেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানার পাটকলগুলোর দিকে তাকান, মিডিয়া+সরকারী ভাষ্যে অবিশ্বাস আর নিজের বুদ্ধির উপর ভরসা করে। তারপর না হয় আবার আমাদের আলাপ হবে এই বিষয়ে 😉 (সম্পাদিত) (সম্পাদিত)
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
রাষ্ট্রীয় মালিকানার প্রতিষ্টান কিভাবে অলাভজনক হয়, তা আমি জানি, নতুন করে তাকানোর দরকার নেই। তুমি বরং কিভাবে তা সফল করা যায় সেদিকে আলোকপাত করলে আলোচনা আগানো যায়।
তুমি কি তোমার সমাধানের ব্যাপারে নিশ্চিত করে বলতে পারবে? আবার বলে বসিও না, এর জন্য আমাদের অমুক এবং তমুক জিনিসগুলো বদলাতে হবে 😉
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
তাইলে আমাকে চট্টগ্রাম যাওয়ার দাওয়াত দেন, এইবার বউসহ যামু। পতেঙ্গা বীচের ধারে খোলা হাওয়ায় বসে দুইজনে আলাপ করা যাবে এই বিষয়ে। (আমি সিরিয়াসলীই বলছি কিন্তু)। (সম্পাদিত)
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
চলে আস। এপ্রিলের ২৫-২৯ ব্যস্ত থাকবো। মেতে আসতে পার। কিন্তু মে-জুন-জুলাই বেড়ানোর সময় নয়। চিটাগাং এর ওয়েদার ভালো থাকে না। তুমি যদি আরাম করে বেড়াতে চাও তাহলে বেস্ট টাইম হচ্ছে সেপটেম্বর এর পরে।
আর যদি আমাকেই দেখতে আস শুধু তাহলে এনিটাইম 🙂 আসার আগে শুধু ফোন দিবা একখান।
তুমি আছো কতদিন?
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
- আফসুস, সেপ্টেম্বরের শুরুতেই চলে যেতে হবে :(( (সম্পাদিত) (সম্পাদিত)
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
বিয়ের পর তো দেখি তোমার লেখার স্টাইলে ব্যাপক পরিবর্তন। হিউমার মিশিয়ে বিষয়টাকে সহজবোধ্য করে দিয়েছো।
সানা ভাইয়ের মতো আমারও মনে এসব প্রশ্ন জেগেছে। কম্পিউটার আসার আগে সবাই ভাবতো এতে মানুষের কাজ কমে যাবে। কম্পিউটার তেরীতে অনেক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হলেও ব্যবহারিক পর্যায়ে এটা অনেকের কাজ কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় কম্পিউটার বিহীন সমাজের কথা ভাবা যায় না তাতে সমাজ হবে অদক্ষ।
মানুষ বাড়ছে সেই সাথে এগিয়ে যাচ্ছে প্রযুক্তি। ঘোষদের এখন তাদের টিকে থাকার স্বার্থেই গ্রামাঞ্ছলে ডানোনের এজেন্ট হতে, বিপনণ ব্যবস্থায় অংশগ্রহন করতে হবে যতোক্ষণ পর্যন্ত না অন্যকোন কার্যোকরী কর্মসংস্থান তেরী হচ্ছে।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
আপু, কম্পিউটার আসার পর কাজ কমেনি ঠিকই, কিন্তু কাজের নিশ্চয়তা, তথা পুঁজির সাথে শ্রমের (ইঞ্জিনিয়ার+প্রোগ্রামার) বার্গেইনের ক্ষমতা অনেকাংশেই কমে গেছে।
এই বিষয়ে দুর্দান্ত একটা বই পড়েছিলাম 'Global Bodyshopping'- ব্যাঙ্গালোর থেকে সিলিকনভ্যালী আর সিডনীতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার+প্রোগ্রামার যাওয়ার চ্যালেনগুলো নিয়ে একটা কম্প্রিহেন্সিভ গবেষনা। সিস্টেমিক পর্যায়ে ভারত, অস্ট্রেলিয়া আর আমেরিকার মধ্যে কে কোথায় কত বিনিয়োগ করে, কে কতটা রিটার্ণ পায়, ব্যক্তি পর্যায়ে পুঁজিপতি কতটা বিনিয়োগ করে আর কতটা মুনাফা করে, শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা কতটুকু আর তারা পাচ্ছে কত, তাদের ভবিষ্যত কি, ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা। আমার ধারণা, বইটা আপনার ভালো লাগবে।
- আপু, বর্তমানে পুঁজির যে প্রবণতা চোখে পড়ছে, তা'তে বিকল্প কর্মসংস্থান ত' কেবল আরো টেম্পরারী এজেন্সী আর নির্মাণশমিকের কাজ। আর পুঁজি ব্যাতীত আর কে কর্মসংস্থা তৈরী করবে? কাজেই, ক্রমাগত ক্ষয়ে যেতে যেতে মিলিয়ে (নিশ্চিহ্ন হয়ে) যাওয়াই ত মনে হচ্ছে শ্রমিকদের নিয়তি!
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
মাহমুদ ভাই, লেখাটা খুব ভাল লাগল। আপনার লেখা থেকে সবসময়ই অনেক কিছু জানা যায়। অর্থনীতি বা ব্যবসা বিষয়ে আমি একেবারেই আনাড়ী, তাই কিছু আনাড়ী প্রশ্ন…
শ্রমনির্ভর প্রক্রিয়া অপেক্ষাকৃত কম উৎপাদনশীল জেনেও আমরা কেন একে নিয়ে বসে থাকব? বরং আমাদের তো প্রতিনিয়ত কাজ করা উচিৎ যাতে করে আমরা ভাল মানের পণ্য আগের চেয়ে কম খরচে উৎপাদন করতে পারি। আপাত দৃষ্টিতে মনে হয় এতে অনেক শ্রমিক কাজ হারাবে, কিন্তু আমার কাছে উল্টোটাই মনে হয়। আমরা যদি কম খরচে ভাল মানের পণ্য সরবরাহ করতে না পারি, তাহলে কোন না কোন সময়ে, কোন না কোন দেশের পণ্যের কাছে আমাদের টা মার খাবেই। আর তখন শ্রমিকরা স্থায়ীভাবে কর্মহীন হবে। অন্যদিকে আমরা যদি অন্যদের চেয়ে কম খরচে ভাল পণ্য দিতে পারি, তবে আমাদের বাজার সম্প্রসারিত হবে। এতে প্রাথমিক ভাবে অনেক শ্রমিক কর্মহীন হলেও পরবর্তিতে তাদেরকে আবার কাজে লাগাতে হবে।
আমি অবশ্য মনে করি না শক্তি দই অথবা “গরীবের জুতা” এ ধরনের কোন উদ্যেশ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে। কিন্তু সামগ্রিক ভাবে, প্রতিযোগিতার এই বাজারে পণ্যের উৎপাদন খরচ কমানো এবং মান বাড়ানোর জন্য নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে কাজ করাটাই কি শ্রেয় হবে না? (সম্পাদিত)
- এখানেই প্রয়োজন নবী-রাসুল টাইপের কাউকে দিয়ে বিনিয়োগ প্রস্তাব উত্থাপন করা যা'তে কেউ তা'র "উদ্দেশ্য" নিয়ে সংশয় প্রকাশ না করে।
জাতীয় অর্থনীতি যখন বিবেচ্য, তখন দেশ থেকে একটা টাকাও যদি দেশের বাইরে যায়, সেটা লস। সেটা পুষিয়ে নেওয়া যায় যদি সেখান থেকে ব্যাকওয়ার্ড/ফরওয়ার্ড লিংকেজের মাধ্যমে আরো বেশ কিছু শিল্প দাড়িয়ে যায় যেখানে মোট রেভিনিউ প্রথমোক্ত শিল্পের রেভিনিউ থেকে বেশি আসে। ডানোন যে ১% ডিভিডেন্ট নিয়ে যাবে, সেটা প্রকৃত অঙ্কে কয়েক শ' মিলিয়ন, যা আমাদের জাতীয় অর্থনীতির নেট লস। এমন যদি হতো যে, আমরা দৈ আমদানী করি, আর ডানোন সেই দৈ এর চেয়ে কম দামে আমাদের দৈ খাওয়াচ্ছে, তাহলেই কেবল ডানোনকে আমাদের জন্য লাভজনক বলা যেতো, কারণ সেক্ষেত্রে ডানোন আমাদের কিছু বৈদেশিক মুদ্রা বাঁচিয়ে দিতো। উলটো ডানোন আমাদের একান্তই দেশীয় বাজারকে টার্গেট করেছে যেখানে দেশীয় শ্রমিকরা স্বল্পমূল্যের দৈ স্বল্প আয়ের মানুষদের মাঝে বাজারজাত করে। একইভাবে এডিডাস টার্গেট করেছে স্বল্পমূল্যের জুতার বাজারটা, যেখানে কয়েক লাখ শ্রমিক নিয়োজিত আছে এবং তারাও অবশ্যম্ভাবীরূপেই কর্মহারা হয়ে নিঃস্ব হবে তাদের ত্রাণকর্তা ডঃ ইউনুসের কারণেই!!! (সম্পাদিত)
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
কিরে মাহমুদ,
বিয়ের কয়েকদিন পরেই তোর মাথা ঘুরে! ঘটনাটা কি? :khekz:
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
বিশ্লেষণধর্মী লেখা ভাল লাগল। তবে কেন যেন আমার কাছে লেখাটা অসম্পূর্ন মনে হচ্ছে। আমি অর্থনীতির বলতে গেলে কিছুই বুঝি না। তবে তোর লেখার কনক্লুশনটা আরেকটু জোরালো বা আরেকটু সাজেশন ওরিয়েন্টেড হলে ভাল হত বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। একান্ত ব্যক্তিগত পরামর্শ।
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
- যথার্থ মূল্যায়ন। আমি শুধু সমস্যার সূত্রটা ধরিয়ে দিতে চাই। আমার মতে, সমস্যা উপলব্ধি করা গেলে সমাধান আসবেই, এবং একটা নয়, একাধিক সমাধান। এদের মধ্যে সময়+সুযোগ+অবস্থা বুঝে সবথেকে উপযুক্তটা বেছে নিতে হবে সংশ্লিষ্ট সকল জনগোষ্ঠির পারস্পারিক আলোচনার মাধ্যমে। কেউ একজন এসে একটা সমাধান দিয়ে যাবে আর বাকিরা সেটা ফলো করবে- এ' আমার মত নয়। তাই, আমার বেশিরভাগ পোষ্টে আপনি সরাসরি কোন সমাধান পাবেন না; পাবেন সমস্যাটা আর সমাধানের কিছু ইঙ্গিত যা' থেকে আলোচনাটা শুরু হতে পারে। (বোঝাতে পারলাম কি?)
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
বুঝছি। :-B
ভাবানুবাদঃ ওরে, তোরা কেউ আমারে কেউ একটা ডিজিটাল বেল্ট দিয়া যা রে।
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
বদ্দা,এই লন বেল্ট।
ভাবলাম মাসরুফ, বিএ অনার্স (অর্থনীতি) মন্তব্য করেছে, না-জানি কত ভারী ভারী কথা লিখেছে সোস্যাল বিজনেস নিয়ে। কিন্তু কিসের কি- পুরা ফাঁকিবাজী কমেন্ট x-(
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
🙁 বস সত্যি কথা কই- অর্থনীতিএ "অ" ও শিখি নাই এখনো। 🙁 বিছিএস ভাইভায় এম রবিন্সের ইকোনমিক্সের সংজ্ঞা জিগাইছে আমি হাবলার মত কইছি যে স্যার আমি ইকোনমিক্সের সংজ্ঞা জানি কিন্তু রবিন স্যারের সংজ্ঞাটা মনে নাই।ইন্টারভিউয়ার ভদ্রলোক যা একখান লুক দিলো-তাতে আমার কনফিডেন্স ভাইঙ্গা চুরমার :((
অফ টপিক-ঘাঁটাঘাঁটি কইরা এইটা নিয়া একটা লেখা দিমুনে।
- আমার এইচএসসি'র অর্থনীতি কয় ঐটা 'এল' রবিন্স 😛
তোমার পোষ্টের অপেক্ষায় থাকলাম। দেখি 'ছাও-অর্থনীতিবিদ' সোস্যাল বিজনেসরে ক্যামনে দেখে।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
এল ই হইবো-ভদ্রলোক এম কইছিলেন।তয় আমার কুনোটাই মনে ছিলনা তাই সবই সমান।খালি কইছিলাম,"ইকোনমিক্স ইজ দা সায়েন্স দ্যাট ডিলস উইথ মেকিং এ ব্রিজ বিটুইন আনলিমিটেড ওয়ান্টস এন্ড লিমিটেড রিসোর্সেস।"
🙁 🙁 🙁 🙁 🙁
আহমদ ভাই খুব খ্রাপ। রোগের নাম ত বড ডাক্তারের বরাতে কয়াই দিছি, দেখেন নাই?
- প্রফেসর সাব, পোষ্টের মূল বক্তব্যে আসেন। ঐটা আপনের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। পরবর্তী পোষ্টে বুদ্ধিজীবিদের বিষয় নিয়ে আসতেছি :grr:
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
:grr:
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
সময়োপযোগী লেখা। সোশাল বিজনেস জিনিসটা নিয়ে অনেক কনফিউশন ছিল। কিছু ক্লিয়ার হয়ে গেছে, থ্যাংকস মাহমুদ ভাই।
একবার গেম থিওরীর কিছু লেকচার শুনছিলাম, মনে হইছিল শ্রম মুনাফা সোশাল ওয়েলফেয়ার সবকিছুই আসলে কমপ্লেক্স একটা গেম যার আদৌ কোনো ইকুইলিব্রিয়াম আছে কিনা কেউ জানেনা। তবে গেম যেহেতু কিছু প্লেয়ার হারবেই, এখন যেমন অদক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজনীয়তা ফুরায়ে আসতেছে। শর্ট টার্মে হিউম্যান ক্রাইসিস আমাদের দুঃক্ষ দিবে কিন্তু আমরা যারা উইনার তারা সহজে স্ট্র্যাটেজী বদলাবোনা unless there's some kind of revolution ।
[আমি অর্থনীতির কিছু বুঝিনা, বোকার মতো কিছু কথা বললাম 😀 ]
পাভেল,
তুমি মোটেও বোকার মতো কোন কথা বলোনি। তবে অর্থনীতির ক্লাসে যখন রক্তমাংসের মানুষগুলোকে (শ্রমিক) দক্ষ/অদক্ষ শ্রমিক-টাইপের টেকনিক্যাল টার্ম দিয়ে রেফার করে, তখন মন থেকে মেনে নিতে পারিনা। কিন্তু কিছুই করার নেই, যুদ্ধে বিজয়ীই ঠিক করে বিজীতদের সে কি নামে ডাকবে।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
মাহমুদ ভাই,
আপনার অসুখ সারাবার জন্য দৈনিক তিনবেলা শক্তি দৈ খেতে হবে, আর 'গরীবের এডিডাস' জুতা আসলে ঐটা পড়ে জগিং করতে হবে...সবচেয়ে বড় কথা, বসের নাম লেখা তাবিজ হাতে বাঁধতে হবে... 😀
নাইলে কিন্তু আজ মাথা ঘুরছে- কাল হাত পা-ও ঘোরা শুরু হবে... :grr:
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
জুনা,
কি সব অলক্ষুণে কইতাছো ভাই! শক্তি দৈ ত আমার আশেপাশে স্বল্প-আয়ের মানুষদের বাজারে নাই, আর এডিডাস জুতা এখনো বাজারেই আসে নাই। এরমধ্যেই আবার হাত-পা'ও ঘোরা শুরু হইলে ত আমি শ্যাষ! (সম্পাদিত)
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
আজ এই লিংকটা এক বন্ধু দিল:
http://www.countercurrents.org/dsharma080410.htm
আমার বন্ধুয়া বিহনে
খুব ভালো করেছো লিঙ্কটা দিয়ে। ওখান থেকে খানিকটা এখান দেওয়ার লোভ সাম্লাতে পারলামনাঃ
I admire Muhammed Yunus for his ability to use the poor so effectively in promoting the commercial ventures of internationally known brands, which are faced with a serious economic crisis. Adidas is one such company, which recently faced a money-laundering probe, and has had its net profits falling by a whopping 97 per cent to just US $ 6.7 million. According to news reports, "Adidas has announced a major restructuring of its operations that would include the elimination of regional headquarters in Europe and Asia and was expected to generate more than €100 million in annual savings."
Adidas would remain eternally grateful to Muhammed Yunus for providing it an assured market that it was desperately looking for. Any shoe company would grab an opportunity where it can sell its shoes continuously for years, in bulk. In other words, Grameen Bank will end up bailing out Adidas from its present crisis of survival. Even if the market was for cheaper shoes (in any case, these shoes have often been allegedly manufactured in 'sweat-shops'), Adidas ends up making enough money to keep it afloat.
- একই কাহিনী ডানোন এর বেলাতেও। ডানোন তার ইউরোপীয় মার্কেটে ব্যাপক ধরা খাবার পরই কেবল এদিকে এসেছে আর ডঃ ইউনুসও তাদের উদ্ধারে ঝাপায়া পড়ছেন তার 'গরীবের বন্ধু' ইমেজ নিয়ে। সাহায্য করতাছে মাল্টিবিলিয়োনারগো আর দেহাইতাছে গরীবগো। x-( x-( (সম্পাদিত)
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
এটা তো মনে হলো ভারতীয় লেখক।
ভারতীয় লেখকদের লেখাতে বিশেষ গন্ধ পাই।
হাসমু না কানমু বুঝতাছি না।
হাসো হাসের বাচ্চা, হাসো; চাইলে দুএক চক্কর নেচেও নিতে পারো। কেননা, ঐ জুতা পড়েই ত আমাদের গরীবরা লেফট-রাইট করতে করতে দারিদ্র্যসহ নিজেরা জাদুঘরে প্রবেশ করপে :grr:
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
আমার পোষ্টে একটা সংশোধন আছেঃ এক বন্ধু বলল আজমপুর ওভারব্রিজের পাশে আরো অ-নে-ক বেশি শ্রমিক অপেক্ষা করে প্রতি সকালে। তাই আজ একটু দেরী করে সকাল ৮টার সময় গেলাম। দেখি, আসলেই অনেক শ্রমিক, নারী-পুরুষ মিলিয়ে ৫/৬শ'র বেশি ছাড়া কম নয়। (পোষ্টের ভিতরে এই নাম্বারটা তাই সংশোধন করে দিলাম)।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
ভাই এই কারণেই রিসার্চ হইবো আপনেরে দিয়া-ব্লগের একটা ডাটা কারেকশন করতে সরাসরি ভেন্যুতে গিয়া উপস্থিত হইছেন... :boss: :boss:
আমি চিন্তা করতেছি, 'গরিব রে নিয়া বিজনেস' হলো বিজনেস এর দুনিয়াতে প্রতিযোগিতা বাড়ার একটা ফল। মার্কেট কে আরো নতুন উপায়ে খাওয়ানো আর কি। ডেফিনিটলি ডঃ ইউনুস এর আইডিয়া টা ইনোভেটিভ। 'গরিব' শব্দের ব্যবহার হচ্ছে একটা কৌশল মাত্র। গরিব আসলে নিয়্যতের মধ্যে না। বোতল নতুন, মদ সেই একই।
মাহমুদ কে ধন্যবাদ এই সুন্দর লেখার জন্যে...
মাহমুদ এর প্রোডাক্টিভিটি আরো বাড়ুক এই কামনা করি...
ক্যাডেট মহান
ও-৭০২
সিসিআর
আররর...রে, মহান আইস্যা পড়ছে!!!
সিসিবিতে ক্রমশঃ নিজের ব্যাচের (কলেজেরও) সংখ্যা বাড়ছে।
লিখা শুরু করো পন্ডিত। আর প্রোফাইলে 'এখন যা করছি' অংশে বানান ঠিক করে দিও।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
থ্যাকস... বানান ঠিক করলাম... একটু দেখ তো আর কোন প্রবলেম আছে নাকি।
মাহমুদ, আমার লেখার হাত মোটেও ভাল না। তবে মাঝে মধ্যে মন্তব্য করব। অবশ্যই কিছু থাকবে উলটাপালটা... 😉
২৮ তারিখ দেখা হবে ইনশাল্লাহ...
ক্যাডেট মহান
ও-৭০২
সিসিআর
ডানোনের ১% ডিভিডেন্ট তারা প্রত্যাহার করে নিয়েছে, এটা ডঃ ইউনূসের বই হতে পাই। তৃতীয় কোন মাধ্যমের রেফারেন্স আমার কাছে নেই, তাই সেটার সত্যতা নিশ্চিত করতে পারছি না।
সামাজিক ব্যবসা নিয়ে তোমার বিশ্লেষণ পড়লাম। কিন্তু আমার বক্তব্য সানা ভাইয়ের কাছাকাছি। যদি বর্তমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থা (পূঁজিবাদ) ধরে চিন্তা করি তবে যেখানে শ্রম সস্তায় পাওয়া যাবে সেখানেই ব্যবসা অথবা পূঁজি যাবে। সেই হিসেবে আমাদের দেশে গার্মেন্টস হচ্ছে, চীন, ইন্ডিয়াতে প্রচুর বিনিয়োগ হচ্ছে। আমেরিকা হতে প্রচুর কাজ বাহিরে চলে যাচ্ছে। এর বিনিময়ে পন্যের মূল্য কমছে। প্রতিযোগীতার ফলে মানুষ কম মূল্যে বেশি সেবা বা পণ্য পাচ্ছে। তাই ডানোন/এডিডাস না আসলেও দেশীয় শিল্পকে অন্য প্রতিযোগীর সাথে প্রতিযোগীতা করেই টিকে থাকতে হবে।
এখন মুক্তবাজার অর্থনীতি হিসেবে যদি এডিডাস কিংবা ডানোন আমাদের দেশের বাজারে প্রবেশ করে, বিনিয়োগ করে আমি সমস্যা দেখি না। আমরা যদি কম মূল্যে জুতা পাই অথবা দই পাই তবে আমি সমস্যা দেখি না। তার মধ্য দিয়ে যদি তারা মুনাফা করে তাতেও সমস্যা দেখি না। আজ ডানোন বা এডিডাস না এসে যদি রাম/শ্যাম এসে আরো বেশি দামে আমাদেরকে পণ্য দিতো আমাদেরকে সেটাও মেনে নিতে হতো। প্রতিযোগীতার বাজারে দুর্বল ব্যবসা বন্ধ হবে সেটাও স্বাভাবিক। সানা ভাই তাই প্রশ্ন করেছেন এর সমাধান কি? তুমি সমাধান হিসেবে বললে রাষ্ট্রীয় পরিচালনা কিংবা সাম্যবাদের কথা। আমার মতে সেটা ইউনূস সাহেবের তত্বের চেয়েও ভুল এবং ইউটোপিয় চিন্তা। বরং সেই তলনায় ইউনূসের সামাজিক ব্যবসা অথবা নন-প্রফিটেবেল ব্যবসা একটি সমাধান হতে পারে। একজন মন্তব্যে বলেছেন এটাকে ক্যাপিটালিজম এবং সমাজতন্ত্রের মিশ্রন হিসেবে দেখা যেতে পারে। তুমি সে দিকে যেতে চাইলে না। কিন্তু আমার মতে সেটাই এই আলোচনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি যুক্তি সঙ্গত। কারণ টিপিক্যাল ক্যাপিটালিজমের ধারণা হচ্ছে প্রফিট ম্যক্সিমাইজেশন আর সোস্যাল বিজনেসে হচ্ছে পরোপকারের মাধ্যমে আনন্দের/সুখের ম্যক্সিমাইজেশন। আমি তোমার কাছে থেকে লেখা আশা করছিলাম যে সোজাল বিজনেস আসলে কতটা বাস্তব সম্মত সেটা নিয়ে কিছু বক্তব্য। প্রফিট ছাড়া কেনো কেউ ব্যবসায় আসবে সেটা নিয়ে। তবে সমস্যা হচ্ছে ইউনূস সাহেবে কখনো শুধু তত্ব দেননা। তিনি হাতে নাতে করিয়ে দেখান। ডানোন, এডিডাস, ইন্টেল, জিই এর মত অনেক প্রতিষ্ঠানই সোস্যাল বিজনেসে এসেছে। একটি প্রশ্ন হচ্ছে এখানে কে কাকে ব্যবহার করছে? এই বিদেশী প্রতিষ্ঠাঙ্গুলো ইউনূসকে নাকি ইউনূস এদেরকে। এখানেই মজাটা। দু'দলই দ'দলকে ব্যবহার করছে। এই বিদেশী প্রতিষ্ঠান গুলো ইউনূসের ব্রান্ডকে ব্যবহার করছে নিজেদের ব্রান্ডকে উন্নত করার, বাংলাদেশের মার্কেটে ঢুকার জন্য। আবার ইউনূসও এই সব প্রতিষ্ঠানের ব্রান্ড, পূঁজি, অভিজ্ঞতা ব্যবহার করছেন। এর বিনিময়ে যদি মানুষ কম মূল্যে সেবা পায় আমি কোন আপত্তি দেখি না।
এছাড়া এডিডাস কিংবা ডানোনের পণ্য সরাসরি আমদানী করে আমাদের বাজারে প্রবেশের তুলনায় আমি মনে করি বিনিয়োগের মাধ্যমে করা হলে দেশীয় অর্থনীতি লাভবান হয়। অবকাঠামো হয়, শ্রম বাজার তৈরী হয়। চাইলে দেশীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে বাহিরে রপ্তানী করা সম্ভব। তাই আমদানী ভিক্তিক অর্থনীতির তুলনায় বিদেশি বিনিয়োগ মূলক অর্থনীতি দেশের জন্য লাভবান হবে বলে মনে করি। আপাতত এই। তোমার মন্তব্যের আলোকে পরে আলোচনা চালানো যাবে।
লেখাগুলো আগে চোখে পড়েনি, তাই এই বিলম্বিত মন্তব্য। নুতন লেখা দিলে, বা মন্তব্যের জবাব দিলে জানিও। সিসিবিতে সব সময় চোখ রাখা হয় না।
(সম্পাদিত)
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
- ভাইয়া, এটা মিথ্যা হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। ডানোনের মতো কর্পোরেট লাভ ছাড়াই এতোগুলো টাকা গ্রামীনকে দিবে 'দেশসেবা'র জন্য, তাও আবার এমন একটা সময়ে যখন ডানোন ইউরোপে বিশাল লোকশানে পড়েছে- ভাবনাটা কিছুতেই বিশ্বাসযোগ্য নয়।
- ভাইয়া, দেশের উন্নয়ণের কথা ভাবলে সমস্যা না দেখে ত উপায় নেই। আমরা শুধু পণ্য কিনি না, আমাদের আয় উপার্জনও করতে হয়। তাই, অন্যদেশ থেকে কেউ এসে এমন একটা ব্যবসা খুলবে যা’ আমাদের দেশের কয়েক লাখ শ্রমিককে বেকার করে দিবে তা’তে সমস্যা আছে। আর একারণেই সকল রাষ্ট্র পুঁজির চলাচলে নজরদারী করে। তাই, পুঁজিপতি তার ইচ্ছেমত যেকোন দেশে গিয়ে যেকোন ব্যবসা খুলে বসতে পারেনা। এগুলো উন্নয়ন-পাঠে বেসিক ধারণা।
- উল্লিখিতদের মধ্যে প্রফিট ছাড়া কে বিনিয়োগ করছে?
ভাইয়া,
ডঃ ইউনুসের বইয়ে তিনি কি লিখেছেন সেইটা বিশ্বাস করে বসে না থেকে তিনি আসলে “হাতে নাতে” কি কি করছেন সেইদিকে তাকান, তাইলে আমার কথা বুঝতে পারবেন, দেখবেন আসলে তিনি কত বড় মিথ্যাবাদী। তার মুখে এক আর বাস্তবে আরেক। বলছেন, সামাজিক ব্যবসা মুনাফা ছাড়া, আবার কারবার করছেন বিশ্বের সব বড় বড় মুনাফাখোর কর্পোরেটের সাথে!
সাম্যবাদ, পুঁজিবাদ আর সমাজতন্ত্র নিয়ে এই ব্লগে এখনই আলাপ করবো না। তবে শুধু এইটুকু বলি, এসব সম্পর্কে আমাদের ব্যাপক ভুল ধারণা আছে।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
ভুল ধারণাগুলো জানা এবং বুঝার জন্য আপনার কাছ থেকে লেখা আশা করছি। আর সোসিও ক্যাপিটালিজম জাতীয় কিছুর আইডিয়া এখানে এসে দেখছি। এ সম্পর্কে আপনার মতামত শোনার আগ্রহ জানিয়ে গেলাম।
সম্ভাবনা নিয়ে তো কথা বলা যাবে না। সেটা যদি মিথ্যে হয় তিনি কি একটি বই লিখে সেটাকে সবার কাছে বলে বেরাবে? সে ক্ষেত্রে ডানোনই বা সেই মিথ্যেকে কি প্রশ্রয় দিবে? ইউনূস তার শেষ বই (২০১০ এ প্রকাশিত) সোস্যাল বিজনেস নিয়ে , সেখানে স্পষ্টই এই ঘটনা উল্লেখ করেছেন। তোমার উপরের প্রশ্নের জবাব হলো যে উপরের সব কয়টি প্রতিষ্ঠানই মুনাফা ছাড়া ব্যবসায় এসেছেন (যদিও রেফারেন্স উনার বই, তৃতীয় পক্ষের রেফারেন্স আমার কাছে নেই তা স্বীকার্য)। তুমি হয়তো মুনাফাকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছো। আমার কাছে মনে হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানগুলো মুনাফা করবে ভিন্ন উপায়ে। যেমন সোস্যাল বিজনেস অথবা ডঃ ইউনূসের সাথে ব্যবসা করে তারা তাঁদের ব্রান্ডের ফ্রি বিজ্ঞাপন পেয়ে যাচ্ছে। ডঃ ইউনূস যেখানেই বক্তৃতা দিচ্ছেন সেখানেই এই প্রতিষ্ঠানের নাম উচ্চারিত করছেন। এই দেখে ভবিষ্যতে আরো অনেক প্রতিষ্ঠান মুনাফা ছাড়া ইউনূসের সাথে ব্যবসাতে আসলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। বিদেশি এই প্রতিষ্ঠানগুলো আগেও নানান সময় অর্থ ডোনেট করতো। এখন বরং ডোনেট না করেও, শুধু বিনিয়োগ করেও (কোন মুনাফা না নিয়ে) সেই দায়িত্ব পালন করতে পারছে। খুব স্বাভাবিকই যে এই প্রতিষ্ঠানগুলো মুনাফা ছাড়াও বিনিয়োগ করতে পারে। তুমি প্রশ্ন তুলতে পারো এই সমাজিক ব্যবসার ভবিষ্যতে কি হবে সেটা নিয়ে। আমি সে বিষয়ে দ্বিমত করবো না। কিন্তু তার কথাগুলোকে সরাসরি মিথ্যে বলাটা কষ্টকর। তাও যদি হতো শুধু মুখে বলা। রীতিমত বই লিখে তিনি তার কথা বলে যাচ্ছেন। সেখানে মিথ্যে বললে তার পরিণতি কি সেটা বুঝার মতো বুদ্ধি নিশ্চয়ই তিনি ধারন করেন। আমি জানিনা তুমি তার মূল বইগুলো পড়েছো কিনা। আলোচনার সুবিধার্তে মূল বইগুলো পড়া থাকা দরকার। আমিও তার এই সোস্যাল বিজনেসের আইডিয়াটা নিয়ে যুক্তি/তর্ক শুনতে আগ্রহী। তবে সরাসরি উড়িয়ে দিয়ে নয়, বরং ক্রিটিক্সের দৃষ্টিতে দেখে। আমি খুঁজে দেখার চেষ্টা করেছি সোস্যাল বিজনেস নিয়ে একাডেমিয়াতে কোন আলোচানা কিছু আছে কিনা। আমি পাইনি। বিষয়টি যেহেতু একদম নবীন তাই মনে হয় এখনো সেরকম বিশ্লেষণ আসেনি। দেখা যাক। সময় তো আছেই।
মোস্তফা ভাই,
তিনি মিথ্যা শুধু বইয়ে লিখছেন না, বক্তৃতায়ও বলেছেন, এমনকি নোবেল পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে যে বিখ্যাত বক্তৃতা, সেইখানেও বলেছেন! সেখানে বলেছেন যে তিনি ক্ষুদ্রঋণ দিয়ে দারিদ্র্যকে যাদুঘরে পাঠাবেন। আর আজ দেখা যাচ্ছে তার ক্ষুদ্রঋণ গ্রহিতাদেরই অনেকে চরম দারিদ্র্যে নিপতিত হচ্ছে!
আমার 'ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে আমার মূল্যায়ন' ব্লগে তাকে সচেতন মিথ্যাবাদী বলেছি, এর কারণও উল্লেখ করেছি। কাজেই, সামাজিক ব্যবসা নিয়ে তিনি আরও কিছু নতুন মিথ্যা বলেছেন- এতে আমি অবাক হইনি।
ভাইয়া, আপনার এই এপ্রোচটা ভালো লাগল। ক্ষুদ্রঋণের বিপক্ষে কোন রকম কথা বলতে+শুনতেই আগ্রহী নয় বেশির ভাগ মানুষ যারা ডঃ ইউনুসের মুখের কথা বিশ্বাস করে। আপনি কি শুরু করবেন সেই আলোচনাটা? (সম্পাদিত)
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
ঠিক আছে, তোমার সেই লেখার অপেক্ষায় থাকলাম। হয়তো তোমার শ্রমের মূল্য নিয়ে বর্তমান সিরিজেই বিষয়গুলো চলে আসবে। তখন সেখানেই আলোচনা করা যাবে।