“যাবৎ জীবন সুখং জীবেত
ঋণাং কৃতা ঘৃতং পীবেত”
-চার্বাকের এই শ্লোকের অর্থ হলো- সারা জীবন সুখেই কাটাও, ঋণ করে হলেও ঘী খাও।
১
সুখ কি? এ’ তো দেখা যায় না, ধরা যায় না, ছোঁয়া যায় না। এটা পুরোপুরি অনুভূতির বিষয়। সুখের কোন পরিমাপক (scale) নেই যা’ দিয়ে ব্যক্তির সুখের মাত্রা নির্ণয় করা যায়। কিন্তু সুখ কি, আমি সুখী কিনা তা’ জানতেই হয়। সেটা কিভাবে সম্ভব?- আমার মনে হয় সুখ কি বা আমি সুখী কিনা তা’ বোঝার একটা সহজ উপায় হলো এর সাথে ‘অসুখ’ এর তুলনা করা।
আমরা যখন শারীরিক বা মানসিকভাবে অসুস্থ বোধ করি, তখন বলি আমাদের ‘অসুখ’ করেছে। অর্থ্যাৎ, আমরা সুখে নেই। যেমন, জ্বর-সর্দি-কাশী ইত্যাদি ছোটখাটো রোগব্যাধী থেকে শুরু করে ক্যান্সারের মতো দূরারোগ্য ব্যাধী হলে আমরা শারীরিক ভাবে অসুখে পড়ি। একইভাবে নানা কারণে মানসিক চাপের মধ্যে পড়লেও আমরা অসুস্থ তথা অসুখী বোধ করি।
মানসিক অসুখ বা অসুস্থতার আরেকটা কারণ হলো আমাদের আকাঙ্খার অতৃপ্তি যা’ আমরা প্রায়শঃই আমলে নেই না। অর্থ্যাৎ, কোন একটা বিশেষ মুহূর্তে আমাদের বিশেষ কোন আকাঙ্ক্ষার পরিতৃপ্তি না হলে আমরা অসুখী বোধ করি। তারমানে, অতৃপ্ত আকাঙ্ক্ষা বা কামনা-বাসনা থেকেও আমাদের ‘অসুখ’ করে। এইখানে একটা বিষয় উল্লেখ্য যে, আকাঙ্ক্ষা দুই প্রকারঃ ব্যক্তিগত পর্যায়ে ইন্দ্রিয়সুখের আকাঙ্ক্ষা আর সামাজিক পরিমন্ডলে পরিচয়ের (Identity) আকাঙ্ক্ষা। আমরা শুধু নিজে নিজেই সুখ অনুভব করে পূর্ণ তৃপ্তি পাই না, সেইজন্য অন্যদেরকেও দেখাতে হয় যে আমরা সুখী। তারমানে, সমাজের কাছে সুখী মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি লাভের মাধ্যমে আসে আমাদের সুখী হওয়ার আকাঙ্ক্ষার পরিপূর্ণতা।
এখন দেখা যাক ‘অসুখ’ কি? সাধারণভাবে অসুখ বলতে আমরা বুঝি এমন একটা শারীরিক/মানসিক অবস্থা যা’ থেকে যত দ্রুত সম্ভব আমরা পরিত্রাণ চাই। আর ‘সুখ’ হচ্ছে এর ঠিক বিপরীত, অর্থ্যাৎ এমন একটা অবস্থা যা’ আমরা উপভোগ করি, যা’কে দীর্ঘক্ষণ আমাদের উপলব্ধির মধ্যে পেতে চাই। মুহূর্তের জন্যও আমরা অসুখের মধ্যে থাকতে চাইনা, আর প্রতি মুহূর্তেই সুখী থাকতে চাই; অসুখ থেকে আমরা সর্বদা পরিত্রাণ চাই, আর সুখের অনুভবকে যথাসম্ভব দীর্ঘায়িত করতে চাই। আমরা সারা জীবন সুখে কাটাতে চাই। চার্বাকও সেই পরামর্শই দিয়েছেন। কিন্তু সুখী হওয়ার উপায় কি?- চার্বাকের উদ্ধৃত শ্লোকে সেটার সমাধানও আছে- ঘী খাও, এমনকি সেজন্য ঋণ নিতে হলেও! সোজা কথায়, সবথেকে আকর্ষনীয়+সুস্বাদু জিনিসগুলো ভোগ কর।
ভোগ মানে কি?- সাধারণভাবে আমরা ভোগ বলতে বুঝি খাদ্যদ্রব্য হলে তা’ খাওয়া, পোষাক হলে তা’ পরিধান করা, খেলার সরঞ্জাম হলে তা’ দিয়ে খেলা- তথা যে নিমিত্তে যে বস্তু তা’ দিয়ে ব্যক্তির উক্ত আকাঙ্ক্ষা (Desire) পূর্ণ করা। ভোগের আরেকটা অর্থ হলো ধ্বংস করা। কারণ, কোন কিছু ভোগ করলে তা’ নিঃশেষ হয়ে যায়, আক্ষরিক অর্থে বা প্রতীকি অর্থে। যেমন, খাদ্যদ্রব্য খেলে তা’ নিঃশেষ হয়ে যায় (অন্য কথায়, আকাঙ্ক্ষা পূরণের ক্ষমতা নিঃশেষ হয়)। একইভাবে, কোন গানের সিডি বারবার বাজাতে থাকলে তা’র আকর্ষন ক্রমাগত কমতে কমতে শেষ হয়ে যায় (তথা, আকাঙ্ক্ষা পূরণের ক্ষমতা নিঃশেষ হয়); অর্থ্যাৎ তা’ প্রতীকি অর্থে নিঃশেষ হয়ে যায়।
২
চার্বাক কয়েক শতাব্দী আগে এই শ্লোকটি বর্ণনা করে গেছেন, কিন্তু এটি বর্তমান যুগেই সবথেকে বেশি যথার্থ বলে আমার মনে হয়। চার্বাকের আলোচ্য দার্শনিক দিকটিতে না গিয়ে বরং দেখা যাক কেনো আমার এই উক্তিকে বর্তমান সময়ে যথার্থ মনে হচ্ছে সেই প্রসঙ্গে।
বর্তমান সমাজটা কেমন? তুলনামূলকভাবে অধিক গুরুত্ব দেওয়ায় ‘ভোগ’কে অনেকেই এই সমাজের মূল বৈশিষ্ট্য হিসেবে ধরে নিয়ে একে বলে থাকেন ‘ভোগবাদী সমাজ’ (Consumer Society) যেখানে প্রধানতঃ ভোগের মাধ্যমে নির্ধারিত হয় সমাজে ব্যক্তির অবস্থান, তথা সামাজিক পরিচিতি (Social Identity)। এই সমাজে ভোগই তাই মূখ্য, তা’ সে পণ্যই হোক আর সেবাই হোক। সর্বাধূনিক বাড়ি, গাড়ী, পোষাক-আষাক, মাঝে-মধ্যেই দামী রেষ্টুরেন্টে লাঞ্চ/ডিনার, দেশের বাইরে বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্রে বেড়ানো, ইত্যাদি এখন আবশ্যক হয়ে পড়েছে পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে সমাজে ‘মুখ দেখানো’র জন্য। এসব আকাঙ্ক্ষার তৃপ্তি নিজেকে সুখী করার জন্য অপরিহার্য হয়ে পড়েছে, সমাজের অন্যদের কাছে নিজেকে সুখী দেখানোর জন্যও।
এই সমাজের একটা বিশেষ লক্ষ্যনীয় দিক হলো এইসব আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য যেসব অনুষঙ্গ/উপকরণ প্রয়োজন তা’ কিভাবে আহরণ করা হয় তা’ বিবেচনায় আসে না। এই বিষয়টি বোঝা যায় আমাদের মূল্যবোধের পরিবর্তনের মধ্যে। এখন চাকুরীতে ঘুষ নেওয়া, ব্যবসায়ে দুই নম্বরী করা, লোক ঠকানো, ইত্যাদি আর খারাপ কিছু নয় যতক্ষন পর্যন্ত তা’ থেকে আয়-রোজগার হচ্ছে (এটা আমার একান্তই ব্যক্তিগত মত; আসলে পুরো লেখাটাই)। আর তাই ঘুষ হয়ে উঠেছে চাকুরীর স্বাভাবিক বেতনের অংশ; কালোবাজারী করা, পণ্যে ভেজাল দেওয়া, বিজ্ঞাপণে মিথ্যা তথ্য দেওয়া বা ক্ষতিকর জেনেও তা’ গোপন করা, ইত্যাদি হয়ে পড়েছে ব্যবসায়ে সাফল্যের উপায়; দালালী ত’ রীতিমত লাভ+সম্মানজনক পেশা!- কিছুকাল আগেও এইসব কাজ সমাজে সাধারণভাবে ঘৃনার চোখে দেখা হতো, আজ এগুলো স্বাভাবিক। আমাদের মূল্যবোধে এই যে পরিবর্তন, তা’র প্রধান কারণ- এইসব কাজের মাধ্যমে আয়-রোজগার হচ্ছে যা’ দিয়ে ইপ্সিত ভোগ> আকাঙ্ক্ষার তৃপ্তি> কাংখিত সামাজিক পরিচয় সম্ভব।
ভোগের আরেকটি দিক হলো, এটি একান্তই ব্যক্তিগত। কারণ, ইন্দ্রিয়জাত যে তৃপ্তির অনুভূতি, তা’ স্বভাবতঃই ব্যক্তিগত, এমনকি অত্যন্ত কাছের মানুষের সাথেও তা’ ভাগাভাগি করে নেওয়া যায় না। আর ভোগের মাধ্যমে অর্জিত যে সামাজিক পরিচয় বা স্বীকৃতি, তা-ও একারণেই ব্যক্তিগত। এই প্রক্রিয়ায় যে সুখ লাভ হয়, তা’ সঙ্গতঃ কারণেই ব্যক্তিগত। তাহলে সুখ কি শুধুই ব্যক্তিগত ভাবে অনুভব করার কোন বিষয়?- না, সুখের সমষ্টিগত রূপও আছে।
ভোগবাদী সমাজের পূর্বের সমাজেও মানুষ সুখী হতো, তবে তা’ ভিন্ন উপায়ে। সেখানে সুখ লাভের উপায় হিসেবে প্রধানতঃ দেখা যায় অবদানকে (Contribution) যা’ ব্যক্তিগত এবং সমষ্টিগত উভয় ভাবেই সম্ভব। মানুষ নিজেদের সামর্থ অনুযায়ী অবদান রাখে সমাজের জন্য, আর তা’ থেকে আসে মানসিক তৃপ্তি, তথা সুখ। যার অবদান যত বেশি, তার ততো বেশি তৃপ্তি, ততো বেশি সামাজিক স্বীকৃতি, ততো বেশি সুখ।
সমাজের জন্য তথা মানুষের অবদানের মাধ্যমে সুখ লাভের প্রক্রিয়ার একটা বৈশিষ্ট্য হলো সুখানুভূতির স্থায়ীত্ব। যেকোন বিষয়ে উল্লেখযোগ্য কোন অবদান রাখতে হলে দীর্ঘদিনের সাধনার প্রযোজন, তা’ সে ব্যক্তিগতই হোক আর সমষ্টিগতই হোক। আর সেই অবদানের সুফলও সাধারণতঃ দীর্ঘস্থায়ী, যেমন সমাজ সংস্কারের কর্মসূচী, বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার, ইত্যাদি। কিন্তু ভোগের মধ্য দিয়ে যে সুখ, তা’ ক্ষণস্থায়ী।
আসলে ভোগবাদী সমাজের মূল ভিত্তিই হলো সুখের ক্ষণস্থায়ীত্বে। কারণ, ভোগের মাধ্যমে প্রাপ্ত সুখ দীর্ঘস্থায়ী হলে মানুষের ভোগের স্পৃহা কমে যাবে। মানুষ ভোগে (সাময়িকভাবে) নিস্পৃহ হলে ভোগ কমিয়ে দিবে যা’ ভোগবাদী সমাজের ভিত্তি দূর্বল করে দিবে। ফলে সমাজ যতই ভোগবাদী হবে, সুখের স্থায়ীত্ব ততোই হ্রাস পাবে। কিন্তু আমরা তো চাই স্থায়ী সুখ, প্রতি মহূর্তে সুখের অনুভূতি। তাই ভোগবাদী সমাজে ভোগের মাধ্যমে সুখ পাওয়ার জন্য আমাদের অবিরাম ভোগ করে যেতেই হয়। সুখের আশায় আমরা যত বেশি ভোগ করি (frequency of the act of consumption), ততো স্বল্প হয়ে আসে আমাদের সুখানুভূতি (magnitude of happiness)।
৩
তৃপ্তি তথা সুখের আশায় আমরা ভোগ করি। জীবনের বেশির ভাগ সময় আমরা সুখে কাটাতে চাই। আর তা’র জন্য বিদ্যমান সমাজে ভোগই প্রধান উপায়। কিন্তু ভোগের মাধ্যমে প্রাপ্ত সুখ ক্ষণস্থায়ী। আর তাই আমরা যেহেতু বেশি বেশি সুখ চাই, তাই আমাদেরকে ক্রমাগত ভোগ করে যেতেই হয়। এই অবিরাম ভোগের ফলাফল কিন্তু আমাদের ইপ্সিত ফলাফলের ঠিক উলটো। অর্থ্যাৎ, স্থায়ী সুখের জন্য আমাদের এই অবিরাম ভোগ আমাদের সুখানুভূতিকে ক্রমাগত স্বল্পস্থায়ী করে। আর এই প্রক্রিয়ার অবশ্যম্ভাবী ফলাফল হচ্ছে ধ্বংস- শারীরিক ভাবে, মানসিক ভাবেও; ব্যক্তি পর্যায়ে, সামাজিক পরিমন্ডলেও।
ক্রমাগত ভোগের অনিবার্য ফলাফল অতৃপ্তি তথা ধ্বংস। বুফে লাঞ্চ বা ডিনারের কথা ভাবলে এই বিষয়টা বোঝা সহজ হবে। বুফে’তে নানা ধরণের উপাদেয় খাবার থাকে; সংখ্যায় তা’ এতো বেশি যে একজনের পক্ষে একবেলায় অর্ধেকও চেখে দেখা সম্ভব নয়, খাওয়া ত’ দূরের কথা। কিন্তু রেষ্টুরেন্টে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকায় ক্রেতাদেরকে সবগুলো খাবারই পরিবেশন করা হয়। ক্রেতা্রা ইচ্ছেমত যেকোনটা যেকোন পরিমাণে প্লেটে তুলে নিতে পারে। ব্যক্তি-স্বাধীনতার কি অবাধ স্বীকৃতি! আপাতঃ দৃষ্টিতে মনে হয় খাবার পছন্দের এই অবাধ স্বাধীনতার চর্চার মধ্য দিয়েই পাওয়া যাবে অপরিমিত সুখ। কিন্তু তাই কি? অন্যরা কি মনে করে জানি না, কিন্তু বুফে থেকে বের হয়ে আমার সব সময়ই মনে হয়েছে আরো কয়েকটা আইটেম যদি চেখে দেখা যেতো, কোন বিশেষ একটা সুস্বাদু আইটেম যতি আরেকটু খাওয়া যেতো! খাওয়ার তৃপ্তির পাশাপাশি ‘না-খাওয়া’র অতৃপ্তিটাই বেশি মনে লাগে।
অনুভবের স্তরে মানসিক অতৃপ্তি ছাড়াও বুফে-ষ্টাইলের অবিরাম ভোগের বাস্তব ফলাফলও সুবিধাজনক মনে হয়না আমার কাছে। শারীরিক ভাবে স্থূলতা (Obesity) হচ্ছে এর অনিবার্য পরিণতি (যা’ এখন বিশেষ করে উন্নত দেশেগুলোতে এমন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে যে একে এখন একটা রোগ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে)। আর সামষ্টিক পর্যায়েও নানা অনাকাংখিত ফলাফল নিয়ে আসে পরিবেশ বিপর্যয় যা’র মধ্যে অন্যতম। ভোগের মাধ্যমে জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে আমরা আরো উন্নত বাড়ি বানাই, গাড়িতে চড়ি, শপিং মলে ঘুরাঘুরি করি। আর এর ফলে পরিবেশের কি অবস্থা ঘটে তা’ ঢাকা শহরে বাস করার অভিজ্ঞতা যাদের আছে, তারা বেশ ভালো করে টের পেয়েছেন+পাচ্ছেন+পেতেই থাকবেন (আর যারা ঢাকায় থাকেন নাই, একবার এসে ঘুইরা যান)।
৪
ভোগের মাধ্যমে এই সুখের অন্বেষণ যদি ধ্বংসাত্মকই হয়, তাহলে ত’ সেটা না করলেই হয়। কিন্তু ব্যক্তি চাইলেই এই ভোগ থেকে নিজেকে সড়িয়ে নিতে পারে না। কারণ, ভোগবাদী সমাজ (Consumer Society) ব্যক্তিকে বাধ্য করে এক আকর্ষন থেকে আরেক আকর্ষনে, temptation (বাংলাটা মনে আসছে না) থেকে temptation-এ, এক টোপ থেকে আরেক টোপের দিকে অবিরাম ধাবিত হতে। কিন্তু সমাজ ব্যক্তির উপর এই বাধ্যকতা (compulsion) আরোপ করে এমন ভাবে যে, এটাকে বাইরে থেকে চাপিয়ে দেওয়া মনে হয় না, বরং মনে হয় ব্যক্তি নিজেই নিজের উপর এই বাধ্যকতা আরোপ করে; অর্থ্যাৎ ব্যক্তি নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী অবিরাম ভোগের অনুগামী হয়। ব্যক্তি মনে করে সে নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী অবিরাম ভোগের রাস্তা ধরেছে। আর যেহেতু সে ইচ্ছে মত ভোগ করতে পারে, তারমানে ভোগের মধ্য দিয়ে সে ব্যক্তি-স্বাধীনতার স্বাদ আস্বাদন করে, যা’ মানুষ হিসেবে তার স্বাধীন ভাবে বাঁচার আকাংখা পূর্ণ করে (ভোগের সুখানুভূতির সাথে এই উপলব্ধি আরো সুখের অনুভব যোগ করে)।
ভোগবাদী সমাজ আমাদের মধ্যে ভোগের মধ্য দিয়ে সুখ লাভের এই যে তরিকা উপস্থাপন করে- যা আমাদের সবাইকে মেনে নিতেই হয়, তা ব্যক্তি হিসেবে আমাদের পক্ষে এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই এই কারণে যে, আমরা একটা ‘মাইনক্যা চিপা’র (situation of no choice) মধ্যে থাকি; সমাজ আমাদেরকে এমন একটা অবস্থার মধ্যে ফেলে দিয়েছে যেখানে সমাজের ইচ্ছের (ভোগবাদ) বাইরে যাওয়া প্রায় অসম্ভব।(সমাজ ক্যামনে এটা করে সেই গল্প আরেকদিন করবো)।
কাজেই, বর্তমান সময়ে আমাদেরকে ভোগী হতেই হবে, ঘী খেতেই হবে। কিন্তু ভোগ করার জন্য ত’ টাকা খরচ করা লাগবে; সেই টাকা যদি না থাকে, তাইলে?- কেন, ঋণ করুন, বিলিয়নিয়ার ইউনূস-মহাজন আছেন না?
দাত ভান্গার আগে ১ম হয়ে নেই।
:bash: :bash: আগে পড়বো না আগে ১ম হব এই চিন্তা করতে করতে :bash: :bash:
🙂 এইবার আরাম করে পড়ি...।
🙁
😀
"‘মাইনক্যা চিপা’র (situation of no choice)"......... :khekz: :khekz: :khekz:
আসলে সুখ বিষয়টাকে খুজতে হয়। সুখী হওয়াকে যে যেভাবে নেক না কেন,এটাকে ভাল থাকার সঙ্গা হিসাবে খুজে বের করতে সারাটা জীবনকে ছুটাছুটিতে লাগিয়ে দিলে,যদি কোন প্রাপ্তি হয় তবে এটা ভেবে সামনের দিকে যাওয়াটাই কি শ্রেয় নয়।
ভাবী,
শ্রেয়বোধ নিয়ে আমি আপাততঃ একটু কম চিন্তিত 😛 ।
এখন সুখ কি তা'ই নিয়ে ভাবতে ভালো লাগছে। অনেকটা আজাইর্যা চিন্তা-ভাবনা আর কি......
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
:-/
দারুন! আপনার লাইন অব আরগুমেন্টটা খুব ঝরঝরে। প্রথম থেকেই পড়ে আসছি। এটার বিষয়বস্তুও খুবই উপাদেয়। আমার ব্যক্তিগত ধারণা, ভোগের পরিমিতি বোধটা অনেকাংশে ব্যক্তির ওপরও নির্ভরশীল অন্য অনুঘটকগুলো একই থাকলেও। কিন্তু সমস্যা হলো ব্যক্তি বেশিরভাগ সময় জানতেই পারেনা বা প্রয়োজন বোধ করে না সে কিসের দ্বারা তাড়িত বা প্রভাবিত হচ্ছে। হয়তো দরকারও হয়না।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
ধন্যবাদ।
-পরের পোষ্টে এই নিয়ে কথা হবে।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
পোস্টটা একটু কঠিন হইয়া গেসে।
তারপরেও ভাল লাগসে।
:clap:
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
আহমদ ভাই,
কঠিন লাগার পরেও ভালো লাগার জন্য ধন্যবা্দ 😉 ।
(অনেক দিন লিখি না ত', তাই মনে হয় কঠিন হইছে। নেক্সট টাইম)।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
শেষের লাইনে এসে তো... :khekz: :khekz: :khekz:
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
আহমদ ভাইয়ের সাথে একমত।
তয় লেখার মধ্যে মাল আছে :boss:
মাহমুদ ভাই :thumbup:
সাব্বির, তোমার কাছেও 🙁 ।
(নাহ, আমার ত' দেহি নড়েচড়ে বসা লাগে!)
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
চার্বাকের শ্লোকের সাথে একমত নই।
সুখে থাকতে চাই অবশ্যই কিন্তু ঋণ করে নয়।ঋণ করলেই বরং আরও অসুখী হয়ে যাব।
পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম মাহমুদ ভাই। :dreamy:
সুখ..হুমম :dreamy: :dreamy:
এক্কেবারে আসল জায়গায় হাত দিছেন।
এইটা কি ইংরেজ দের সেই চা খাওয়ানোর কনসেপ্ট?
হাঁসের বাচ্চা,
তোর অনুমান ঠিক, ইংরেজদের চা' খাওয়ানোর মতোই অনেকটা। মনে পড়ে, আমাদের সময় ঢাবি'তে যেকোন অনুষ্ঠানে খবর দিলে নেসক্যাফে এসে মাগনা কফি খাইয়ে যেতো।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
চমৎকার বিশ্লেষণ। সুখ যে দিনদিন ক্ষণস্থায়ী হয়ে আসছে এতে কোনই সন্দেহ নেই। করপোরেট হাই অফিশিয়ালদের গবেষণার মূল বিষয়ই মনে হয় মানুষকে কিভাবে বেশি ভোগ করানো যায় সেটা। প্রথমে মনে হয় বিষয়টা এমনভাবে শুরু হয়েছিল: একটা এলাকা ও সেখানকার স্থানীয় দোকানপাট সার্ভে করে দেখা মানুষ কি চায়, তারপর সে অনুযায়ী পণ্য উৎপাদন। পরে মানুষ বুঝতে পেরেছে, মানুষ কি চায় সেটার চেয়ে মুখ্য হতে পারে মানুষকে কি চাওয়াতে হবে। বর্তমান যুগের সবচেয়ে রমরমা ব্যবসার স্থান বিজ্ঞাপন, বিজ্ঞাপনের জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে সবকিছু, এমনকি আমাদের সংস্কৃতিও।
প্রশ্ন:
আপনি বলেছেন ভোগবাদী সমাজ হওয়ার আগে মানুষ সুখ পেতো অবদানের মাধ্যমে। কিন্তু সেটা কি ভোগবাদী সমাজেও উপস্থিত নেই? এখন তো লোক দেখানো অবদানের মাধ্যমে খ্যাতি অর্জনও একটা মুখ্য বিষয়। খ্যাতির এই সুখ সম্পর্কে আপনার কি মত? এটা কি আগের চেয়ে ভিন্ন হয়েছে , বেড়েছে বা কমেছে?
বার্ট্রান্ড রাসেল এর "সুখ" বইটা সম্পর্কে আপনার মতামত জানতে চাচ্ছি। আমার পড়ে খুব ভাল লেগেছিল। যদ্দূর জানি রাসেল বইটা ইন্টেলেজেনশিয়া-র জন্য লিখেননি, লিখেছিলেন সাধারণ মানুষের জন্য। এই বইয়ে পড়েছিলাম, "বড় সুখ সেটাই যেটা একবার অর্জন করলে আর কোনদিন হারানোর ভয় থাকে না"। ভোগবাদী সমাজে থেকে মানুষের পক্ষে এমন সুখের অন্বষেণ সম্ভব। তবে সেক্ষেত্রে মনে হয় বোহেমিয়ান হয়ে যেতে হবে। যাহোক, রাসেল এর সুখ বইটা খুব ভাল লেগেছিল, বঙ্গানুবাদ পড়ে।
আরেকটা বিষয়:
আপনি কখনও আর্ট নিয়ে কিছু লিখেন না বা বলেন না। আপনি আর্ট কে কিভাবে দেখেন? আপনার কি মনে হয় ভোগবাদী সমাজের উত্তরোত্তর উন্নতির কারণে আর্ট এর অবক্ষয় ঘটেছে? ভোগবাদী সমাজ স্বল্পতম কষ্টে, ক্ষণস্থায়ী তাৎক্ষণিক সুখের লোভ দেখায়। আর আর্ট ভয়াবহ কষ্টের মাধ্যমে চিরস্থায়ী সুখ লাভের কথা বলে। কি মনে করেন? আর্ট বলতে আমি অবশ্যই উচ্চবিত্তের আর্ট গেম বুঝাচ্ছি না। আরেকটা বিষয় মনে হয়, ভোগবাদী সমাজের সবচেয়ে সফল ভোগীরা মানুষকে বুঝিয়ে দিয়েছে, আর্ট তোমাদের জন্য না। যাদের অঢেল বিত্ত আছে তাদের পার্টির জন্যই আর্ট বরাদ্দ। আধুনিক যুগে যথার্থ শিল্পীদের দুর্দশাও কি সেদিকে ইঙ্গিত করে না?
মুহম্মদের কমেন্টটা বেশ পছন্দ হল । আপাতত আমি ট্রাফিক জ্যামের সুখে ডুবে আছি । পরে কমেন্ট করছি ।
ক্লিক করে ইমো দেয়ার মত ক্লিক করে এই ডিফল্ট কমেন্ট করার বাটন চাই আমিন ভাইয়ের জন্য ।
:)) :)) :))
x-( x-(
মুহাম্মদ,
.........দীর্ঘ+সুচিন্তিত মন্তব্য। ভালো লাগল।
প্রশ্নের উত্তরঃ "লোক দেখানো অবদানের মাধ্যমে খ্যাতি অর্জন"- আগেও ছিলো। (কিন্তু সেসব সাধারণ মানুষ খুব সহজেই ধরে ফেলে; এখনও তা'ই। কাজেই সেইসব অবদানের কথা মানুষের মনে খুব বেশি দিন থাকেনা)। আমরা আগের দিনের প্রকৃত অবদানগুলোই শুধু মনে রেখেছি, যেমন ঈশ্বরচন্দ্র, রামমোহন, হাজী মুহসীন, প্রমূখের অবদান। এখনো প্রকৃত অবদান রেখে চলেছেন অনেকেই, কিন্তু খ্যাতির ধান্দায় 'লোক দেখানো' অবদানগুলোর প্রচার বেড়েছে, যেমন কর্পোরেটগুলোর সমাজকল্যাণ (!!!)।
বার্ট্রান্ড রাসেল এর “সুখ” বইটা পড়া হয়নি। বর্তমানের এই ভোগবাদী সমাজে দীর্ঘস্থায়ী সুখ খুঁজতে হলে অবশ্যই এই সমাজের চক্করের বাইরে যেতে হবে, অর্থ্যাৎ প্রান্তিক জীবন বেছে নিতে হবে (তুমি যা'কে বোহেমিয়ান বলছো)। কেন এমন মনে করছি তা' পরের পর্বে বলার চেষ্টা করবো।
-পুরো একমত।
আর্ট আমার কাছে উপাসনার মতো; শিল্পী হিসেবে এবং/অথবা শিল্পের সমঝদার হিসেবে আমাদের নিজ নিজ ব্যক্তি-স্বত্ত্বার উপাসনা। স্রষ্টার উপাসনা করে যদি পরকালে চিরস্থায়ী সুখ পাওয়া যায়, তাহলে আর্টের মাধ্যমে ইহকালের দীর্ঘস্থায়ী সুখ পাওয়া যায় বলে আমার ধারণা।
টাকা দিয়ে লোক ভাড়া করে (অর্থ্যাৎ কমার্সিয়াল) দোয়া-দরুদ পড়িয়ে যেমন স্রষ্টার উপাসনা হয়না, তেমনি কমার্সিয়াল আর্ট দিয়েও সুখ পাওয়া সম্ভব নয়, তা' সে যত টাকাই ব্যয় করা হোক।
প্রকৃতপক্ষে, ভোগের ক্ষণস্থায়ীত্বই সুখের অনুভূতিকে নষ্ট করে দেয়। তাই, ভোগের মাধ্যমে সুখের গন্ধ পেলেও তা'র সাথে বসবাস করা হয়ে ওঠে না।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
খাঁটি কথা। এজন্যই আব্বাস কিয়ারোস্তামির উক্তিটা আমার এতো ভালো লেগেছিল: "ধর্ম ভিন্ন একটি জগতের স্বপ্ন দেখায়, কিন্তু আর্ট এই জগতেই ভিন্ন একটি অস্তিত্বের স্বপ্ন দেখায়"। আমার মনে হয় নিদারুণ শূন্যতা ও অসীমত্বে অতীষ্ট হয়ে মানুষ চিৎকার করে। সেই চিৎকার থেকেই কখনও বেরিয়ে আসে আধ্যাত্মিক ধর্ম (প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম নয়, প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম মাত্রই সুকৌশলে প্রভাব বিস্তারের নীল নকশা), কখনও বেরিয়ে আসে আর্ট।
ঘটনা সত্য।
আমার কিন্তু একই ধারণা প্রাতিষ্ঠানিক বিজ্ঞানের ব্যাপারেও 😉
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
প্রাতিষ্ঠানিক বিজ্ঞান নিয়ে আমার ধারণা হুবহু ঐরকম না হলেও কাছাকাছি। প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করাই বোধহয় হয় প্রভাব খাটানোর তাগিদে। তাই প্রতিষ্ঠান ত্যাগী এবং একসময় প্রতিষ্ঠানবিরোধী হতে চাই। তবে প্রতিষ্ঠানবিরোধী হয়েও আবার আরেক প্রতিষ্ঠানের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে। বেশ দুষ্টচক্র...
ঠিকই। এটাই ত ম্যাক্স ওয়েবার (Max Weber) তার The Irone Cage of Oligarchy ধারণার মধ্য দিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
এই জায়গাতে ব্যাপারটা কনফিউজিং হয়ে যায়। লোক দেখানো অবদানের একটা বড় উদাহরণ আমাদের প্রথম আলো। তারা যৎসামান্য অবদান রাখে তার চেয়ে বেশি প্রতিফলিত হয় তাদের মুখপত্রে। এখন প্রকৃত অবদানকারী কথাটা ঠিক কিনা এটা আমি শিউর না। যদি ঠিক হয় প্রকৃত অবদানকারীরা কিভাবে চিহ্নিত হবেন । কিংবা আপনি যাদের নাম বললেন তারা ছাড়া প্রচারবিমুখ মানুষ কি ছিলেন না যারা অবদান রেখেছেন নিজেদের আত্মিক শান্তির জন্য। হাজী মুহম্মদ মুহসীন কে আমার কাছে ঠিক অবদানকারী মনে হয় না। নিজে কিছু না করে যে পরের থেকে প্রাপ্ত অর্থ বিলি করে (নামের খাতিরে না আত্মতুষ্টির মোহে সেটা প্রশ্ন থেকে যায়) ।
আর্ট নিয়ে যখন কথা এলো তখন আমি এই রিলেটেড আরো কিছু কথা বলি। এখনকার ভোগবাদী গুরুরা আর্টের শ্বাশ্বত সৌন্দর্যকেও কর্পোরেট বৃ্তে আবদ্ধ করে ফেলেছেন মনে হয় আমার কাছে। তার উদাহরণ সংগীত অভিনয় নিয়ে ভোগবাদী কর্পোরেট নষ্টামির অনুষ্ঠান, ক্লোজ আপ ওয়ান কিংবা লাক্স চ্যানেল আই তারকা... আড়ো কি কি জানি। ইদানিং সচ বেসরকারি টিভি চ্যানেলেই এই ব্যাপার ঘটছে। আর এতে পালিত হচ্ছে শোষনের আদি অকৃত্রিম মন্ত্র তুমি পাচ্ছ কারণ আরেকজন পাচ্ছে না। যেমন এসব অনুষ্ঠানের কারণে ধরে নেই দশ জন সুপ্ত অথচ অমিত প্রতিভাবান ( যথেষ্ট সন্দেহ আছে এবং এর পেছনেও কিছু কাহিনী আছএ) স্বীকৃ্তি পাচ্ছে। কিন্তু কিসের বিনিময়ে পাচ্ছে?? এখটু ভাবলে দেখা যাবে এই বিন ইময় টা হচ্ছে অন্য হাজার হাজার প্রতিযোগীর জীবন থেকে এক বছর নষ্ট করে কিংবা অনেকের ক্ষেত্রে সারাজীবন নষ্ট করে........।
এই ব্যাপারে আপনার মতামত জানার প্রত্যাশায় রইলাম।
আমিন,
ভালো লাগল তোমার ডিফল্ট কমেন্টের পর পোষ্ট-সম্পর্কিত কমেণ্ট দেখে 😉 ।
প্রথম আলো'র দিকে তোমার সমালোচকের দৃষ্টি দেখে ভালো লাগল এই কারণে যে, প্রচারের মাধ্যমে তোমাকে বিভ্রান্ত করা কঠিন হবে (যদিও এটা আগে থেকেই জানি)। আমি কিন্তু প্রথম আলো'র সমাজসেবামূলক (!?) কাজগুলোকে তাদের ব্যাপক প্রচারের জন্য বিশ্বাস করি নাই। আর তাই এ'কে উদাহরণ হিসেবে আনি নাই। কিন্তু আমাদের অনেককেই দেখবে সমাজসেবায় প্রথম আলো, বসুন্ধরা, স্কয়ার, ইউনিলিভার ইত্যাদি কর্পোরেট গ্রুপের 'অবদানের' কথা জানে, কিন্তু ব্যক্তি-পর্যায়ের কারো অবদানের কথা জানেনা। কারণ, গ্রুপগুলোর টাকা আছে, তাই ৫০,০০০ টাকা দান করলে তা'র জন্য ১০০,০০০ টাকা খরচ করে প্রচার-অনুষ্ঠান করে। কাজেই,......।
ঐ x-(
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
লেখা এবং সাথে মন্তব্যগুলো পড়ে ভালো লাগলো।
আমার কাছে সক্রেটিসের 'নো দাইসেলফ' কথাটা খুব ভালো লাগে। লোক দেখানোর থেকেও অধিকাংশ মানুষের সুখটা লোক/সমাজ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকে। অর্থাত আরেকজনের মন্তব্যের ভিত্তিতে কেউ কারো সুখের প্যারামিটারটা নির্ধারন করে থাকে। ঠিক যেমন লোক দেখিয়ে আমরা সমাজের সবার কাছ থেকে নিজের সম্পর্কে ভালো কথা বের করে আনতে চাই।
নিজেকে জানার প্রক্রিয়াটা যদি অব্যাহত থাকে এবং খুব ভালোভাবে যদি নিজেকে চেনা যায় তাহলে বোধহয় মানুষ সমাজ দ্বারা অতো প্রভাবিত হয় না।
তুমি যেহেতু সমাজবিজ্ঞানের ছাত্র তাই একটা প্রশ্ন রাখছি।
প্রাগৌতিহাসিক থেকে আজ পর্যন্ত ঠিক কোন সময়টায় মানব সভ্যতা সবচেয়ে ভালো অবস্থানে ছিল?
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
আপু, এই কথাটাই বলতে চেয়েছিলাম। পরের পোষ্টে চেষ্টা করবো সেই মেকানিজমটা দেখতে কি রকম তা' বলতে।
আমার মনে হয়, এখন। কারণ, নানা ভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে যে। অতীতের যেকোন সময়ের থেকে আমরা কোন না কোন দিকে থেকে এখন ভালো আছি (অবশ্য যারা ক্ষমতা-কাঠামো'র উপর তলা থেকে পতনোম্মুখ, তাদের কথা আলাদা)।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
মোবাইল থেকে ছোটখাট মন্তব্য না এইবার সিরিয়াস মন্তব্য করি।
এই পোস্টের মূল সুরের সাথে আমি মাহমুদ ভাইয়ের সাথে মোটামুটি একমত। তবে কিছু কিছু জায়গায় আমার মত একটু ভিন্ন। সেটাকে দ্বিমত না বলে ভিন্ন মত বলা যায়। জেনারালাইজ করে সুখ বিষয়ে আমার ভাবনাটা গুছিয়ে বলার চেষ্টা করি।
মানুষের সুখ সমাজ দ্বারা আরোপিত হয় এটা আমি মানে তবে সুখের মাপকাঠি কিন্তু মানুষের নিজের সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত। ভোগবাদ নিয়ে যেটা বললেন সেটা হয়তো সঠিক তবে ভোগের মাঝেই সব সুখ পেতে শেখায় এটা একটু বেশি সরলীকীকরণ মনে হলো। আমার কাছে মনে হয় ভোগের ব্যাপারটা শুধু বস্তুগত ভোগের মাঝে সীমাবদ্ধ নয় বরং ক্ষমতা খ্যাতি এই ব্যাপারগুলো অঙ্গাঙ্গি ভাবে জড়িত। পেটের অভাব পূরণ করেই মানুষ থেমে থাকতে চায় না বরং তারপরে সে বেছে নেয় বেঁচে থাকার কোন এক অবলম্বন যার মোহে সে ছুটে যায়। সেই মোহকে মোটা দাগে ভালো বা খারাপের মাঝে ফেলে দেয়াটা মনে হয় কঠিন। কারণ একজনের কাছে যেটা ভালো বলে সংজ্ঞায়িত তা অন্যজনের কাছে ভালো মনে নাও হতে পারে। আর আমার নিজের ব্যাক্তিগত বিশ্বাস মানুষের ব্যাক্তিগত ভালোলাগা নিজের দ্বারা সঙজ্ঞা্যিত হয়ে পরিচালিত হয়। ছোট উদাহরণ দিয়ে বলি, রাস্তায় ভিক্ষুক দেখে এখজন লোক তার জন্য কিছু করার তাগিদ বোধ করলো না, আরেকজন তার হাতে টাকা তুলে দিয়ে সজ্ঞানে মা অজ্ঞানে ভিক্ষুকের হাত শক্ত করলো, আরেকজন ইউনুসি কায়দায় সেই ব্যাক্তিকে ব্যবহার করে নিজে বড় হলো, আরেকজন তাকে সাহায্য করলো দানবীর হিসাবে নিজেকে জাহির করতে, আরেকজন ষেই লোকের জন্য কিছু করে নিজের আত্মিক শান্তি লাভ করলো --- এদের কাউকেই আপনি আলাদা করতে পারবেন না। আমি বা আপনি এমন অবস্থায় পড়লে এই পথগুলোর কোনটিতে ধাবিত হব কিংবা কোন নতুন দিকে যাব সেটা নির্ভর করে ণিজের ব্যাক্তিক চিন্তা চেতনা মূল্যবোধের উপর।
ব্যাক্তিগত ভাবে আপনার মূল্যবোধের অবক্ষয়ের উপর গুরুত্ব আরোপের ব্যাপারটা খুব ভালো লেগেছে। তবে সত্যি হচ্ছে সমাজ যদি কোন অন্যায় ( ণিজের মূল্যবোধ থেকে মনে হওয়া) কে প্রতিষ্ঠা দেয় কিংবা যেভাবে দিচ্ছে তাতে ণিজেদের নৈতিকতা আর অনৈতিকতার দেয়াল ভেঙে যাচ্ছে।
আপাতত এইটুকু পরে এসে আরো কিছু বলে যাবো। তবে যেহেতু আড়ো পর্ব আসবে সেখানেও আলোচনা হতে পারে।
হুম, মানছি যে অতি-সরলীকরণ হয়ে গেছে। কিন্তু ঘটনা এটাই 😛 । পরের পোষ্টে এই ব্যাপারে বিস্তারিত আলাপ থাকবে।
-দ্বিমত করছি; কেন তা'র উত্তর পরের পোষ্টে দেবার আশা রাখি।
ঠিকাছে। কিন্তু মূল্যবোধের 'অবক্ষয়' কথাটা আমি মানিনা। কারণ, মূল্যবোধ যেহেতু গড়ে ওঠে, তা' ভেঙ্গে পড়তেও পারে। তাই নতুন মূল্যবোধ গড়ে ওঠা যদি স্বাভাবিক বলে মানি, তা'কে সময়ের প্রয়োজনে ভেঙ্গে পড়তেও দিতে হয়, তাই না?- এ'কারণেই আমি বেশিরভাগ মূল্যবোধ ভেঙ্গে পড়াকে খারাপ চোখে দেখি না। তবে একটা মূল্যবোধের ব্যাপারে আমি "মৌলবাদী", জেনেশুনেই 😛 ; সেটা হলো- মানুষ সত্য আর সব মিথ্যা। (এখানে মানুষ বলতে আমি শুধু শিক্ষিত-আধূনিক-মধ্যবিত্ত-পুরুষ'কে বুঝিনা, আমার এই মানুষ হল পৃথিবীর সমস্ত মানুষ)
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
আমার কমেন্টের কোট করা অংশের বোল্ড অংশটুকু দেখে অনুমান করতে পারি পরের পোস্টের বিষয় কিছুটা। তবে আপাতত পরের পোস্টের জন্য অপেক্ষা করাটাই মনে হয় ভালো। কারণ ঘটনা এবং তার প্রভাব যতটুকু বুঝি তার রুট কস বা মেকানিজম একটু কম বুঝি। পোস্ট পড়েই আলোচনাটা আরেকটু করা যাবে।
মূল্যবোধ ভেঙে পড়ে আবার গঠিত হয় এ কথাতে আমার সমস্যা নেই। আমি সেটা মানিও। কিন্তু আমার নিজের কাছে মনে হয় মূল্যবোধ ভাঙবে গড়বে সমাজের প্রয়োজনে কোন বিশেষ শ্রেণীর স্বার্থ উদ্ধারে নয়। এই কারণে ডিজুস কালচারের আগ্রাসনে তাদের সংজ্ঞায়িত অনেক নির্দোষ কাজও আমাকে বিরক্ত করে তুলে।
পরের পোস্টের জন্য আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি।
তোমার সাথে একমত হতে চাই। কিন্তু ঘটনা ত' এমন যে, বিশেষ শ্রেণীই মূল্যবোধের অদল-বদল ঘটায়, তাদের স্বার্থেই।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
সম্ভবত ঠিক।
আমরা ছোট বেলায় কেমিস্ট্রিতে আদর্শ গ্যাস নামক জিনিস নিয়ে পড়তাম। সেটা নিয়ে অনেক প্যাচাল ক্যাচালের পর পড়ানো হতো আদর্শ গ্যাস বাস্তবে সম্ভব না। আদর্শ গ্যাস আর বাস্তব গ্যাসের মাঝেকার বিচ্যুতি বের করতে হতো। সম্ভবত সেটা কি একটা গুনাংকও ছিল।
ইদানিং সব কিছুই মনে হয় সেই আদলে আদর্শ আর বাস্তব তার মাঝে বিচ্যুতি -- সেটাই সত্য হয়ে গেছে। এখন বিচ্যুতির মান কিভাবে নিরুপিত হবে, সেটা নির্ধারণ করে দেবে কারা??? এটার উত্তর জানা থাকলেও মানা কষ্টকর। আদর্শিক দিকটাই টানে বেশি।
আপনার পরের পোস্টে নিশ্চয় এই বিষয়গুলোও আসবে। অতএব অপেক্ষায় থাকলাম।
~x( ~x( ~x(
যাই মাথায় এক বালতি পানি ঢাইলা আসি
:(( :(( :((
temptation = প্রলোভন হতে পারে