প্রবাস জীবনের ভালো লাগা টুকরো অনুভূতি কিংবা সময়ের গল্প

এক

এক এক করে দিন পার হয়। ল্যাপি ছাড়া কোন ঘড়ি না ব্যবহার না করায় ঘড়ির কাটার টিকটিক শব্দে সময়ের এগিয়ে যাওয়া টের পাই না। তবে প্রতিদিনের শুরুতে আমার ঘরের জানালা দিয়ে দেখা দূরের পাহাড়ের রঙ বদল কিংবা বরফ-রোদের পালাবদল সঙ্গোপনে জানান দিয়ে যায় সময়ের পরিক্রমাকে। এক দুই তিন করে মোটামুটি ভাবে ছাব্বিশটি মাস পার হয়ে গেছে। সময়ের ব্যাপ্তির বিশালত্ব কতটুকু তা বিষয়ভেদে ভিন্ন হতে পারে, তবে এই শহরকে, শহরের মানুকে ভালোবাসার জন্য সময়টা যে নগণ্য নয় সেটা আমি অনুভব করতে পারি নিজের মাঝেই। বছরের এই সময়টাতে অল্প অল্প করে বরফেরা হানা দিতে শুরু করেছে পাহাড়ঘেরা আমার এই ছোট শহরে। বরফের রাজত্ব শুরু হয়ে গেলে আমি অনুভব করি রূপকথায় পড়া তুষার রাজ্যের ভয়ালদর্শী ডাইনীকে। তার কর্কশ থাবায় সে গ্রাস করে নেয় ছোট শহরটিকে। শীতে নিঃসূর্য বিষণ্ণ দিন কিংবা ক্লান্তিকর দীর্ঘ রাতের মাঝে একঘেয়েমির সুর বাজতে থাকবে। আমার ঘরের সামনে আপাতদৃষ্টিতে পাতাহীন মৃতবৎ গাছটিকেই হয়তো সময়ের প্রতিনিধি মনে হয়। বিষণ্ণতায় ডুবে ঝিম মেরে থাকবে সে কয়েকমাস। অথচ তারপরের অল্প অল্প করে বরফ গলে যেতে শুরু করলে একদম হঠাৎ করেই প্রাণ পেতে শুরু করবে এই নগর। অল্প সূর্যের আঁচে আলো আর পানিতে খুব দ্রুত ধূসর নগরী সবুজ হয়। রূপান্তরের সাথে গান থাকে সুর থাকে প্রকৃতির পিছে। আপাতত শান্ত শহরে প্রকৃতির সুরগুলোই প্রবল থাকে সারাবছর জুড়ে। প্রকৃতিকে খুব কাছ থেকে অনুভব করা যায় প্রাণের স্পর্শে।

দুই

প্রবাসে থাকলে মানুষ কেমন থাকে? একা একা থাকলে নিঃসঙ্গতার ছোঁয়া পাওয়া যায়। তবে সেই নিঃসঙ্গতা আড়াল হয়ে গেছে আমার জন্য এখানকার প্রকৃতি আর তার মাঝে যাপিত সময়ের প্রতি ভালোবাসা দিয়ে। সময়ে সময়ে আমি খুব গভীরভাবে অনুভব করি এখানকার রাস্তাগুলোকে। হাইওয়েতে দ্রুতগতিতে গাড়িতে চড়ে যখন এগিয়ে যাই, নিচের সর্পিলাকার রাস্তাকে আপন আপন মনে হয় কেমন যেন। মনে হয় মাইলের পর মাইল সে বয়ে চলে আমার পাশে, আমাদের পাশে। রাস্তা চলতে থাকে আমাদের সাথে তার আপন গতিতে। তবে দ্রুত বদলে যেতে থাকে চারপাশের পটভূমি। কখনও রাস্তা উঠে যায় ধাপে ধাপে একটু একটু করে উপরে। একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলে মনে হবে হবে স্বর্গ থেকে নেমে আসা সিড়ি। যেন আমরা সেই সিড়ি বেয়ে স্বর্গের দিকে চলেছি। কখনও রূপ বদল করে দেখা যায় দুই পাহাড়ের মাঝে টানেল মত জায়গায় চলে যাচ্ছি কেবল। আবার কখনও নিঃসঙ্গ বিশাল আটলান্টিককে পাশে রেখে এগিয়ে যায়। আমি ছবি তোলা পছন্দ করি না। যারা ছবি তোলে, যে কোন সুন্দর দৃশ্যের মুখোমুখি হলেই ছবিকে আটকে ফেলে ক্যামেরার ফ্রেমে নিখুঁত দক্ষতায়। আমার কাছে নিজের চোখই সবচেয়ে বড় ক্যামেরা। ক্যামেরা বন্দী করার সময়টুকুকে আমি অনুভব করতে চাই নিজের জন্য। সৌন্দর্যকে অনুভব করতে পারার অনুভূতি অনির্বচনীয়। রঙ আমার ভালো লাগে। প্রকৃতির রঙ বদলে নীল ধূসর রূপালি কিংবা সোনালির কম্পোজিশনকে মনের ফ্রেমে গেঁথে রাখা যায় সারাজীবন। তার চেয়ে বড় কথা হলো সেই সময়কার অনুভূতি গুলো। সেই অনুভূতিগুলো মাথায় আটকে থাকে ভালোবাসার স্যুভেনির হিসাবে। সময়ে অসময়ে তা বেরিয়ে আসে সেই সময়কে মনে করিয়ে সেই সুন্দরকে মনে করিয়ে। ভালো লাগার মুহূর্তগুলো তাই অল্প অল্প করে গেঁথে যায় চিরস্থায়ী ছাপ ফেলে।

তিন

নিউফাউন্ডল্যান্ডের একটা বড় অংশই আটলান্টিক কোস্টের সাথে যুক্ত বলে এখানে আটলান্টিক দেখা আর বাংলাদেশে নদী দেখা মোটামুটি একই রকম সাধারণ ঘটনা। আটলান্টিকের রূপ রঙ বদলে যায় জায়গা অজায়গায়। আর হাইওয়ে ধরে যাওয়ার পথে যে কোন এক্সিট নিলেই আসলে কিছু না কিছু অনুভব করবার দৃশ্য পাওয়া যাবে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্নভাবে দেখা আটলান্টিকের গল্প বলতে গেলে গল্প দীর্ঘায়িত হয়। তবে আটলান্টিকের অনেক অংশ আলাদা ভাবে মনে জায়গা করে নেয় শুধু দেখবার সময়ের কারণে কিংবা সেই সময়ের অনুভূতির কারণে। এমনি এক জায়গায় কথা মনে করতে পারি। আটলান্টিক খুব সরু হয়ে ঢুকে গেছে সেই পথে। তারপরেই সাগর শেষ হয়ে পাহাড়ের রাজত্ব শুরু হয়ে যায়। পাহাড়ের মাঝে বিশালত্ব আছে; আছে এক ধরণের হারানোর হাহাকার। এমনি ধরণের এক পাহাড়ের পাশেই দাঁড়িয়ে যাই কোন এক সময়ে। সেই পাহাড়ের পাশে স্বচ্ছ টলটল করা পানির হ্রদ তাকিয়ে থাকে আমার দিকে। সেই হ্রদের ওপারে আরেক পাহাড়। সব মিলিয়ে কেমন যেন ছমছমে অনুভূতি হয়। মনে হয় যেন রূপকথার রহস্যপুরী। এপারে ওপারে দুই পাহাড়ের মাঝে হয়তো বড় জনবসতি ছিলো কখনও। কোন এক দানবের আক্রমণে অথবা দেবতার অভিশাপে তারা মিলিয়ে গেছে। আমি যখন দাঁড়াই তখন সন্ধ্যার কাছাকাছি। সেই জন্যই হয়তো রহস্যময়তা প্রবল হয়। রহস্যময় সৌন্দর্য নিয়ে জায়গাটা মায়াময় হয়ে উঠে তার দুর্নিবার আকর্ষণে। রূপকথার দেশে ঢুকে যাওয়ার অনুভূতি হয়তো বা অদ্ভুত। কখনও কখনও মনে হয় স্বপ্নের মতো সুন্দর, মৃত্যুর মত নিঃস্তব্ধ আর নারীর মত রহস্যময়।

চার

ছোটবেলায় ষড়ঋতু রচনা লিখতে গিয়ে বাংলার প্রকৃতিক পালাবদলের বৈচিত্রে মুগ্ধ হয়েছি যারপর নাই। তবে এখানে আসার পরে মনে হয়েছে বাংলাদেশের ঋতুর পালাবদল নিয়ে মুগ্ধতা আসলে বাতুলতার নামান্তর। কারণ এখানে মোটামুটি একদিনেই তিন চার ঋতু দেখে ফেলা যায়। খটখটে শুকনো হয়ে যে দিনটি শুরু হয় হয়তো তাই শেষ হবে ভেজা কুয়াশা কিংবা রুক্ষ্ম তুষারের ছোবলে। ইউনি থেকে হাঁটা পথে পাঁচ মিনিট আমার বাসা। অথচ কুয়াশাচ্ছন্ন রাতে এই চিরচেনা রাস্তা রহস্যময় মনে হয়। এই শহরের প্রতিটা বাড়িই হরর মুভি করার স্যুটিং এর জন্য উপযুক্ত। বিশেষ করে খোলা জায়গায় চলে আসলে হঠাৎ করে এক ধরণের থমথমে অনুভূতি হতো। দেখা গেলো কোন নির্জন মাঠে ঢুকলাম। মোশন ডিটেক্টরের কারসাজিতে একটু দূর আসার পরে বাতি নিজে নিজে বন্ধ হয়ে ভূতের আসার পট তৈরি হয় চট করেই। দিনে দিনে ঋতুবদলের সবচেয়ে চমৎকার অভিজ্ঞতা আসলে হয়েছিলো স্থান বদলের কারণে। আমাদের বাসার সবাই মিলে একবার হাইওয়েতে লং ড্রাইভে বের হলাম। খটখটে শুকনো দিনে শুরু হয় আমাদের যাত্রা। হাইওয়েতে চলতে শুরু করলে অল্প অল্প করে রোদের তেজ কমে। তারপরে শুরু হয় মেঘেদের রাজত্ব। হাইওয়েতে গাড়ি চলতে থাকে পাশে মেঘ গুলো গম্ভীর হতে থাকে। তারপরে, তারও আরো পরে বৃষ্টি হাজির হয়। বাংলাদেশের মত ঝুম বৃষ্টি। পাহাড়ের ফাঁকে ফাঁকে চলা আমরা যখন বৃষ্টির দেশে ঢুকি সেই সময়ের অনুভূতি গুলোকে অদ্ভুত মনে হতে থাকে। আরো কিছুদূর এগিয়ে যেতে রাজত্ব শুরু হয় আলোর। বৃষ্টি ধরে আসে, তবে পুরোপুরি মিলিয়ে যায় না। মেঘ গুলো গম্ভীর থেকে চঞ্চল হয় আর তারপরে মেঘ ভেদ করে আলোর দেবতা হাসতে শুরু করেন। মেঘভেদী আলো রহস্যময়। সেই আলোর মাঝে তেজ নেই, আছে এক ধরণের শান্ত সৌম্য ভাব। হাইওয়েতে অশ্রান্ত চলতে থাকা গাড়িতে রহস্যময় আলো ভরে যায় পাহাড় আর মেঘের রাজ্যে হারিয়ে। স্বর্গ বলে যদি কিছু থাকে তার আলো হয়তো এমনই হবে। প্রশান্ত ও আরামদায়ী; না সে সূর্যের মতো তেজী না সে চাঁদের মত মায়াবী। বরং সে স্নিগ্ধ, সে রহস্যময়। হয়তো এমন কোন আলো দেখেই কখনো আমাদের আদি পুরুষরা স্বর্গ থেকে দেবতা দেবপুরুষদের নামার গল্প কল্পনার এঁকেছে। অনুভূতি গুলো ক্লান্তিনাশী, অনুভূতি গুলো ভালো লাগার, অনুভূতি গুলো পেয়ে হারানোর ভয়ের উৎকণ্ঠার। অথচ সেদিন রাতেই সেই অদ্ভুত অনুভূতি মিলিয়ে যায়। আধো অন্ধকারে হাইওয়েতে চলমান গাড়ি ছুটে চলে আধো আঁধারের পাহাড়ী রাস্তা দিয়ে। আর পাহাড়ের মাথায় মন খারাপ করা দশমীর চাঁদ মনকে বিষণ্ণ করে তোলে কারণ ছাড়াই।

পাঁচ

কিছু কিছু সময় আসে যখন সময়ের অনুভবকে পরাবাস্তব মনে হয়। তীব্র সৌন্দর্যের মাঝে দাঁড়িয়ে অনুভূতি গুলো ভাষা হারায়। সেই অনুভূতির তুলনা নেই। সেই অনুভূতি সারাজীবন মনে ধরে রাখার মত হয়। তেমনি এক সময়ে আমি দাঁড়িয়েছিলাম এই শহরের শেষ মাথায় সিগন্যাল হিলের উপর। সিগন্যাল জায়গাটা ইতিহাসগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। গুয়েলিয়েলমো মার্কনী বেতার বার্তা এখানেই পাঠিয়েছিলেন প্রথম। এখানে মার্কনীর ব্যবহৃত জিনিসের জাদুঘরও আছে। তবে এই জায়গাটা শহরের ইতিহাসগত গুরুত্বের চেয়েও আবেগগত ভাবেই বেশি জড়িয়ে আছে এখানকার অধিবাসীদের সাথে। কোন নারীর কাছে তার প্রথম প্রেমের প্রকাশের জন্য অনেক পুরুষই এই জায়গাকে বেছে নেয়। উঁচু পাহাড়ের নিচে বিস্তীর্ণ আটলান্টিক। এই জায়গায় আসলে হয়তো মানুষের মনোজগতে আন্দোলন ঘটে। সমুদ্রে হারিয়ে যাওয়া টাইটানিকের জন্য দেখানো টাইটানিক পয়েন্ট এখান থেকে মাত্র ৫৯২ কিমি দূরে। যা হোক এত কিছুর চাইতেও, পাহাড় সাগর যেখানে একসাথে মিলে যায় সে জায়গার অনুভবে মিশে থাকে হাহাকার নিঃসঙ্গতা। সেই জায়গায় কোন এক ঘোর লাগানো পূর্ণিমায় আমার যাওয়া হয়েছিলো। চিরচেনা চাঁদ, ভালো লাগা চাঁদ সেদিন হয়তো একটু বেশি মায়াবী ছিলো। নির্মেঘ আকাশে রূপালি আলোকে ছড়ি্যে দিয়েছিলো সে। সেই গলানো রূপা সমুদ্রের পানির সাথে মিশে এক হয়ে গিয়েছিলো। সাগরের মাঝ দিয়ে যেন মায়াবী অশরীরীদের রাস্তা তৈরি হয়।যতবার তাকিয়ে থাকি ঘোর লাগে কেবল। জোছনা ভেজা চন্দ্রালোকের অনিঃশেষ রূপালি ধারা নিঃশোষিত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে চারদিক। এই সুন্দর আকৃষ্ট করে নেশা জাগায়। ঘোর লাগনো সময়ের মাঝে সবধরণের অনুভূতি বোবা হয়ে যায়। ভালোবাসি সেই অনুভূতিকে। মরণের আগে যখন জীবনের ভালো লাগার মুহূর্তকে খুব কাছ থেকে দেখতে থাকবো, আমি জানি সেই রাতের সেই অনুভূতি আমার সামনে দাড়াবে অশরীরীদের পথের মায়ার ডাক সাথে নিয়ে।

ছয়

আমাদের দেশে সী বীচের কথা ভাবলেই কক্সবাজারের বালুকাময় বেলাভূমির কথা মনে হয়। অথচ আটলান্টিককে পাশে নিয়ে বয়ে চলা এত বড় কোস্টে কোন স্যান্ডি বীচ নেই। মাত্র একটাকে এখানকার কক্সবাজার বলে বাঙালিরা। যদিও সেটাকে কক্সবাজার বললে আসলে কক্সবাজারকে অপমান করা হয়। কৃত্রিমভাবে বালু ফেলে করা একটা ছোটখাটো বীচ। সেখানে বন্ধু বান্ধব এবং তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে যাওয়া হয় একবার। সেখানে আমরা যে বাংলোতে ছিলাম তার মালিকের সাথে এক কথায় দু কথায় বেশ খাতির হয়ে যায়। এখানকার মানুষগুলোর মাঝে আমি বাঙালি ফ্লেভার পাই অন্তত অতিথিপরায়ণতার দিক দিয়ে। তারা মিশুক ও কথা বলতে পছন্দ করে। সেই রাতে সেই বুড়োর সাথে আড্ডা বেশ জমে যায়। সে তার স্ত্রীকে নিয়ে থাকে। বাংলোর ব্যবসা করেই চলে যায়। আর হ্যা তাদের সঙ্গী তাদের পোষা কুকুর যাকে সেই বুড়ো তার নিজের মেয়ের মত স্নেহ করে। কুকুর জিনিসটা বরাবরই আমার অপছন্দের। আসলে অতীতে কুকুরের সাথে আমার সখ্যতার চেয়ে দুর্যোগের ঘটনাই বেশি। তাই বুড়োর সাথে কথা বলার সময় তার কুকুর আমার আশেপাশে ঘুরতে থাকলে বেশ ভয় কাজ করে। রাত বাড়তে থাকে। বুড়া বুড়ির সাথে আড্ডা জমতে থাকে নেশার ঘোরে। তাদের আতিথেয়তায় আমার জ্ঞান লোপ পাবার যোগাড় আর কী। সেই সময় আধা নেশাতুর চোখে বুড়া বুড়ির সাথে সেই বাংলোর প্যাটিওতে দাঁড়াই। সেই রাতের আকাশটা অনেকটা বাংলাদেশের শরতের নির্মেঘ আকাশের মত। আর সেই আকাশকে ছেয়ে আছে অসংখ্য তারা। এত তারা একসাথে কোন আকাশে কখনো দেখিনি। কথা প্রসঙ্গে বুড়ো বুড়িকে বাংলাদেশের কুসংস্কারের একটা গল্প বলি। আমাদের দেশের প্রচলিত কুসংস্কার বলে মানুষ মরলে আকাশেরর তারা হয়ে যায়। সেদিন রাতে কথা বলতে বলতে আমিও কুসংস্কারাচ্ছন্ন হই। রাতের আকাশে অসংখ্য তারাদের মাঝে হারিয়ে যাওয়া প্রিয়জনদের খুঁজতে থাকি। সেই তারাদের কেউ হয়তো আমার জন্য কাঁদে কেউবা আমার দিকে তাকিয়ে হাসে। আমি হারিয়ে যাই ঘোরের মাঝে ভাবনার গভীরতায়। কষ্ট আনন্দ মিলন বেদনার অদ্ভুত বৈপরীত্বে ভরা মিশ্র অনুভূতিতে আমি চেয়ে থাকি আকশের পানে, তারাদের দিকে।

পুনশ্চ:

দেশ ছেড়ে প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা বলতে কানাডার অজো পাড়াগাঁ নিউফাউন্ডল্যান্ড। এখানকার শান্ত সৌম্য সময় আমাকে আকৃষ্ট করেছে। এখানকার মানুষ এখানকার প্রকৃতি আমাকে ভালোবেসে কাছে টেনেছে। নিউফাউন্ডল্যান্ডের প্রতি ভালোবাসার দায় থেকে এ জায়গা, জায়গার মানুষ জায়গার সময়কে নিয়ে লিখবার ইচ্ছা আছে। আলস্যের কারণে যদি সেই লেখা নাও হয় কখনো আপাতত এই জায়গার প্রতি ভালোবাসার নিদর্শন হিসাবে এই লেখাটি থাকুক। আর এই জায়গাটি নিয়ে গাওয়া একটি গানও শেয়ার দিলাম। গানটা খুবই ভালো লাগে আমার কাছে। গানটা শুনলে এই দূরদেশের মানুষের মাঝেও এক ধরণের বাংলাদেশি সুলভ আবেগ দেখতে পাই।

১,২০০ বার দেখা হয়েছে

৬ টি মন্তব্য : “প্রবাস জীবনের ভালো লাগা টুকরো অনুভূতি কিংবা সময়ের গল্প”

  1. রাব্বী (৯২-৯৮)

    সেইন্ট জোনস অন্যরকম সুন্দর। বিশেষ করে উঁচু-নিচু ল্যান্ডস্কেপ, বর্ণীল ঘরবাড়ী এবং আটলান্টিকের স্পর্শ। জীবনযাত্রার ধরণটা স্পষ্টত আলাদা - অযান্ত্রিক। একটা ধীর স্থির ব্যাপার আছে - আমার ভাল লেগেছে। সিগন্যাল হিলের সৌম্য সৌন্দর্য কখনো ভোলার না।

    সহমত -

    প্রবাসে থাকলে মানুষ কেমন থাকে? একা একা থাকলে নিঃসঙ্গতার ছোঁয়া পাওয়া যায়


    আমার বন্ধুয়া বিহনে

    জবাব দিন
  2. আমিন (১৯৯৬-২০০২)

    এই পোস্ট যখন লিখা সেটাও প্রায় ছয়মাস আগের। সেইসময়ে কাজের চাপের ফাঁকে লিখা। কমেন্টও চেক করা হয় নি। তারপরে গঙ্গা যমুনায় অনেক জল বয়ে গেছে। প্রবাসী থেকে এখন আবার আমি দেশীও হয়ে গেছি। তবে এই লিখায় যারা কমেন্ট করেছেন তাদের কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী কমেন্ট ফলো আপ না করার জন্য।( কোন পোস্টে কমেন্ট করে রিপ্লাই না পেলে আমার খুবই মেজাজ খারাপ হয়, তাই এপোলজি জানিয়ে যাওয়া।)

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।