সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ পোস্টটি কিন্তু বি শা ল বড়। একাধিক পর্বে দিলে ধারাবাহিকতা নষ্ট হয়ে যাবে বলে একবারেই দিলাম। বিরক্তির উদ্রেক করে থাকলে আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি!
————-
১ ডিসেম্বর, ১৯৭৯।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দল অস্ট্রেলিয়া সফরে যায়। দুটো কারণে এই সফরটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল- কেরি প্যাকার ওয়ার্ল্ড সিরিজের পর এই দুই ক্রিকেট পরাশক্তি পূর্ণ শক্তিতে ফিরেছে এবং প্রথমবারের মতন ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের আক্রমণভাগে বিখ্যাত চারজন ত্রাস পেসারের সমন্বয় ঘটেছে, তাঁরা হলেন- এন্ডি রবার্টস, মাইকেল হোল্ডিং, জোয়েল গার্নার এবং কলিন ক্রফট। ততদিনে রবার্টস ২৭ টি টেস্ট খেলেছেন এবং তাঁর গড় ছিল ২৪.৬১, কিন্তু অন্যান্যরা ছিলেন তুলনামূলক ভাবে নবাগত। হোল্ডিং খেলেছেন মাত্র ১৩ টি টেস্ট, যদিও এই স্বল্প সময়েই ৫৭ উইকেট নিয়ে বেশ নাম করে ফেলেছেন। গার্নার এবং ক্রফট খেলেছেন ৭টি করে এবং তাঁদের ঝুলিতে উইকেট রয়েছে যথাক্রমে ৩৮ ও ৪২ টি। ক্রিকেট দুনিয়া এর আগেও এই অঞ্চল থেকে আসা ওয়েস হল এর মতন গ্রেট ফাস্ট বোলারকে মোকাবেলা করেছে। কিন্তু পরবর্তী দেড় যুগ ধরে এক ঝাঁক ক্যারিবিয় ফাস্ট বোলার তাঁদের ভয়াবহ গতি, দক্ষতা এবং অদম্য আগ্রাসন নিয়ে বিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের যেভাবে শাসন করবে, তা ক্রিকেটের ইতিহাসে আগে কখনো দেখা যায় নি!
সিরিজের প্রথম টেস্টটি গ্যাবায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সফরকারীরা টসে জিতে অসিদের ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল। অস্ট্রেলিয়াকে ২৬৮ রানে অল আউট করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তাদের প্রথম ইনিংসে করে ৪৪১ রান। অবশ্য, দ্বিতীয় ইনিংসে অসি ব্যাটসম্যানরা দারুণ প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ১৬৬ ওভার ব্যাট করে ৪৪৮ রান সংগ্রহ করে ডিক্লেয়ার করে। গ্রেগ চ্যাপেল এবং কিম হিউজ চমৎকার সেঞ্চুরি করেন। খেলাটি শেষ পর্যন্ত ড্র হয়, তবে পরবর্তী ৭ বছরের মধ্যে অস্ট্রেলিয়াই সর্বশেষ দল যারা কি না ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে এত বেশি ওভার ব্যাট করতে সমর্থ হয়!
প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যর্থতা ঝেড়ে ক্যারিবিয় বোলাররা দ্রুতই নিজেদের সেরাটা দেয়া শুরু করে। ফলস্বরুপ, দ্বিতীয় ও তৃতীয় টেস্ট তাঁরা জিতে নেয় খুব সহজেই- যথাক্রমে ১০ উইকেট ও ৪০৮ রানের বিশাল ব্যবধানে! এই চার ইনিংসে অসিদের চার ইনিংসের সংগ্রহ ছিল ১৫৬, ২৫৯, ২০৩ এবং ১৬৫! ক্যারি প্যাকার সিরিজের কারণে যাঁদের উত্থান বিলম্বিত হয়েছিল (আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে), অবশেষে তাঁরা স্বমূর্তিতে আবির্ভূত হওয়া শুরু করলেন। পরবর্তী দেড় যুগে ক্যারিবিয়রা ৩১ টি সিরিজ খেলেছে (অসিদের বিরুদ্ধে খেলা সিরিজটা সহ ), জিতেছে ২১ টি, ড্র করেছে ৯ টি এবং হেরেছে মাত্র ১ টি! (১৯৮০ সালে নিউজিল্যান্ডের কাছে হারা এই সিরিজটি নানা কারণে বিতর্কিত ছিল!)
ক্যারিবিয় এই স্বর্ণযুগে তারা জিতেছে ৬১ টি টেস্ট এবং হেরে যাওয়া ম্যাচের সংখ্যা মাত্র ১৬। ক্যারি প্যাকার সিরিজ পূর্ববর্তী কয়েক বছরের (যে সময় থেকে ফাস্ট বোলারদের দাপট শুরু হয়) পরিসংখ্যান গণনায় ধরলে হার-জিতের অনুপাত হয় ৭০-১৮, অর্থাৎ প্রায় ৩.৮৯ গুণ! যা কিনা সে সময় দ্বিতীয় স্থানে থাকা পাকিস্তানের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ (পাকিস্তানের অনুপাত ছিল ১.৭৬ গুণ)। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলাররা পরিষ্কার ব্যবধানে সবার চেয়ে এগিয়ে ছিল, গড় ছিল ২৫.৮৯। শুধু পেস বোলারদের কথা হিসেবে করলে এই গড় আরও নেমে আসে, ২৩.৮৭! এসময়ে মোট উইকেটের প্রায় ৯১.৬৩% ক্যারিবিয় পেসারগণ নিয়েছিলেন (২২৮৪ উইকেটের মধ্যে ২০৭০ টি!)
এখানে একটি ব্যাপার উল্লেখ্য, অন্যদের তুলনায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলারদের ইনিংসে ৫ উইকেট বা ম্যাচে ১০ উইকেট নেবার কৃতিত্ব কমই ছিল। হবেই বা কি করে? এতজন গ্রেট বোলার এক দলে থাকলে শুধু একজনের বেশি উইকেট পাবার সম্ভাবনা তো অনেক কমে যায়! ম্যাচে ১০ উইকেট নেবার ঘটনা ঘটেছে মাত্র ১২ বার, যা কি না অস্ট্রেলিয়ান বোলারদের অর্ধেক এবং পাকিস্তানী বোলারদের চেয়ে নয়বার কম!
অবাক করা বিষয় এই যে এই সময়ের মধ্যে মোট সাত জন ফাস্ট বোলার ৫০ এর অধিক উইকেট পেয়েছেন এবং সবার গড় ছিল ২৫ এর নিচে! ইয়ান বিশপ মাত্র ১৮ টি টেস্ট খেলেছিলেন তবে তাঁর পরিসংখ্যান ছিল সবচেয়ে চমকপ্রদ। তাঁর গড় ছিল ২০ এর সামান্য উপরে এবং প্রতিটি উইকেটের জন্য মাত্র ৪৭ টি বল খরচ করতে হয়েছিল। ম্যালকম মার্শালের গড় এবং স্ট্রাইক রেট প্রায় বিশপের কাছাকাছি ছিল, তবে তাঁর ম্যাচ সংখ্যা ছিল চার গুণেরও বেশি! এ থেকেই বোঝা যায় কত বড় মাপের বোলার ছিলেন ম্যালকম। জোয়েল গার্নার এই সময়ের মধ্যেই সর্বমোট ৫৮ টি টেস্ট খেলেছেন এবং একবারও ম্যাচে ১০ উইকেট নিতে পারেন নি, ইনিংসে ৫ উইকেট পেয়েছেন মাত্র ৭ বার। এ থেকেই বোঝা যায় ঐ আমলের ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলিং এটাক কতটা ভয়ংকর ছিল! গার্নার শেষ পর্যন্ত ২৫৯ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ার শেষ করেছেন এবং তাঁর গড় ছিল মাত্র ২০.৯৭! সত্যি কথা বলতে কি মার্শাল, গার্নার এবং অ্যামব্রোস শুধুমাত্র এই তিনজনই ২০০ এর বেশি টেস্ট উইকেট শিকারি বোলার যাদের গড় ২১ এর নিচে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেস আক্রমণের সবচেয়ে বড় দিকটি ছিল যে তারা যে দেশেই গেছে সেখানেই আধিপত্য করেছে। কোন দেশেই তাদের বোলিং গড় ২৬ এর উপরে যায় নি। ইন্ডিয়ার মত মন্থর গতির উইকেটেও তাদের গড় ছিল ২৫.৪১। ক্যারিবিয় বোলারদের স্ট্রাইক রেটও ছিল অন্য যে কোন দেশের চেয়ে সেরা!
১৯৭০ এর শেষ থেকে ১৯৮০ এর দশকজুড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজে এত বেশি প্রতিভাবান এবং যোগ্য ফাস্ট বোলার ছিল যে মাত্র একটি দলের একাদশে তাদের সবার স্থান সংকুলান করা সম্ভব হয় নি। সাহিত্যের ভাষায়, এই সময়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের জন্য ছিল এক মধুর সমস্যা!
এবার এক নজরে ক্যারিবিয় লিজেন্ডদের কয়েকটি কম্বিনেশনের উপর চোখ বোলানো যাক। চারজনের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ১০ টি টেস্ট খেলেছেন এবং তিনজনের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ২০ টি টেস্ট খেলেছেন- শুধুমাত্র এরকম খেলোয়াড়দের পরিসংখ্যান এখানে উল্লেখ করা হল।
রবার্টস, হোল্ডিং, গার্নার, ক্রফট
এঁদের হাত ধরেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেস আক্রমণ নতুন মাত্রা পেয়েছে। এই চারজন একসাথে খেলেছেন এরকম ম্যাচের সংখ্যা ১১ টি। এর মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতেছে ৫ টি, ড্র করেছে ৫ টি, যাদের মধ্যে কুখ্যাত ১৯৮০ সালের নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলা ২ টি ম্যাচ রয়েছে এবং বাজে আবহাওয়ার প্রভাব ছিল এরকম ২ টি ম্যাচ রয়েছে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। চারজন একসাথে খেলেছেন অথচ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ হেরেছে এরকম মাত্র একবারই হয়েছে, ১৯৮১ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলা বক্সিং ডে ম্যাচ। সেই ম্যাচে অসিরা ৫৮ রানে জিতেছিল। হোল্ডিং দুর্দান্ত বল করে ১০৭ রানে ১১ উইকেট নিয়েছিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে জেতার জন্য টার্গেট ছিল ২২০, কিন্তু মাত্র ১৬১ রানেই তারা অল আউট হয়ে গিয়েছিল!
যাই হোক, ঐ ১১ ম্যাচে গার্নার এবং হোল্ডিং অন্য দুজনের চেয়ে একটু বেশি সফল ছিলেন, দুজনেরই গড় ছিল ২০ এর আশেপাশে। সবচেয়ে হতাশাজনক পারফরমেন্স ছিল রবার্টস এর, নিজের নামের প্রতি তেমন সুবিচার করতে পারেন নি, মাত্র ২৮ টি উইকেট শিকার করেছেন। ১৯৮৩ সালে বোর্ডের নির্দেশ অমান্য করে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করার জন্য কলিন ক্রফট জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েন। ফলে, এই চার জনের ভয়ঙ্কর সমন্বয় কিছুটা অকালেই শেষ হয়ে যায়।
মার্শাল, রবার্টস, গার্নার এবং হোল্ডিং একত্রে টেস্ট খেলেছেন মাত্র ৬ টি। এই ম্যাচগুলিতে রবার্টস এর পারফরমেন্স সবচেয়ে উজ্জ্বল-১৭.৪৮ গড়ে নিয়েছেন ৩৩ উইকেট। ৬ টি ম্যাচের মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতেছে ৩ টি এবং বাকি ৩ টি ড্র হয়েছে।
মার্শাল, গার্নার এবং হোল্ডিং
তিনজন একত্রে মোট ২৬ টি টেস্ট খেলেছেন, যার মধ্যে জিতেছে ১৬ টি এবং ৯ টি ম্যাচ ড্র হয়েছে! যে ১ টি ম্যাচে পরাজিত হয়েছেন সেটি হয়েছিল ১৯৮৫ সালে সিডনি’র নিষ্প্রাণ পিচে। এপ্রিল ১৯৮৩ থেকে ডিসেম্বর ১৯৮৪ পর্যন্ত টানা ১০ টি টেস্ট জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ যার ৭ টি-ই ছিল ইনিংস ব্যবধানের জয়! এই তিন গ্রেট সব ক’টি টেস্টই খেলেছিলেন এবং দুর্দান্ত বল করেছিলেন। তাঁরা যে ২৬ টি টেস্ট খেলেছেন সেগুলোতে তাঁদের সম্মিলিত গড় ২৩ এর কম এবং সবাই মিলে ম্যাচ প্রতি উইকেট শিকার করেছেন প্রায় ১৩ টি!
মার্শাল, অ্যামব্রোস এবং ওয়ালশ
এই তিনজন মোট ২৮ টি টেস্ট খেলেছেন এবং তাঁদের সেরা সময় ছিল ১৯৮৮ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বরের মধ্য। এ সময় খেলা ১০ টির মধ্যে তারা ৮ টি-ই জিতেছিলেন! এরমধ্যে ৪ টি ম্যাচ ছিল ইংল্যান্ডের সাথে এবং ৩ টি ছিল অস্ট্রেলিয়ার সাথে। এই ত্রিরত্নের সবমিলিয়ে জয়-পরাজয়ের রেকর্ড ১৬-৫। অবশ্য এঁদের শেষটা তেমন ভাল হয়ে নি। ১৯৯১ সালের ইংল্যান্ড সফরে টেস্ট সিরিজটি ২-২ এ অমীমাংসিত রয়ে যায়, ৬ বছরের মধ্যে প্রথমবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইংল্যান্ড সফরে গিয়ে টেস্ট সিরিজ জিততে ব্যর্থ হয়।
এই ২৮ ম্যাচে মার্শাল দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন। ২০ এর কম গড়ে উইকেট শিকার করেছে ১৩৩ টি, স্ট্রাইক রেট ছিল ৪৪.৭! সম্মিলিতভাবে তাঁরা প্রতি ম্যাচে ১২ উইকেট নিয়েছেন। এ সময় তাঁরা উইকেট প্রতি রান দিয়েছেন ২৩ এর চেয়ে সামান্য একটি বেশি।
অ্যামব্রোস, ওয়ালশ এবং বিশপ
ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্বর্ণযুগের সর্বশেষ ত্রয়ী ছিলেন এই তিনজন। সর্বমোট ৩৭ টি টেস্টে তাঁরা ম্যাচ প্রতি উইকেট দখল করেছে ১১ টিরও বেশি এবং তাঁদের গড় ২৪ এরও কম! যদিও দলগত ফলাফল ততদিনে বেশ পড়তে শুরু করেছে! সম্মিলিতভাবে তাঁরা ম্যাচ জিতিয়ে ছিলেন ১৬ টি এবং পরাজিত হয়েছিলেন ৮ টি ম্যাচে।
উপরে তিনটি কম্বিনেশনের ক্ষেত্রেই তাঁদের খেলা ম্যাচের সংখ্যা ২০ এর অধিক ছিল। এর বাইরেও কিছু দুর্দান্ত কম্বিনেশন ছিল, এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যঃ ক্রফট, গার্নার ও রবার্টস ত্রয়ী, মোট ১৮ টি টেস্ট খেলেছে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৯ টি জিতেছে এবং হেরেছে মাত্র ২ টি। রবার্টস, হোল্ডিং এবং গার্নার ত্রয়ী খেলেছেন ১৭ টি টেস্ট, যার মধ্যে ৮ টি জিতেছেন এবং মাত্র ১ টি হেরেছেন। হোল্ডিং, গার্নার এবং ক্রফট ত্রয়ী খেলেছে ১৬ টি টেস্ট, জিতেছেন ৫ টি এবং হেরেছেন ২ টি ম্যাচে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই দুর্দান্ত পেস এটাক শুধু টেস্টেই সফল ছিল তা কিন্তু নয়। তাঁরা ক্যারি প্যাকার ওয়ার্ল্ড সিরিজে ভাল খেলেছেন এবং একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচেও ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। সত্যি কথা বলতে কি ১৯৮০ এর শেষ ভাগ পর্যন্ত একদিনের ম্যাচেও তাঁরা ছিলেন বিশ্বের সফলতম দল। গড় এবং স্ট্রাইক রেট হিসেব করলে বিশ্বের প্রথম সারির প্রায় সবগুলো স্থানই ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফাস্ট বোলারদের দখলে।
মোদ্দা কথা, অত্যন্ত বিশেষ শ্রেণির এই ফাস্ট বোলারগণ যখন বল হাতে নিতেন তখন ক্রিকেটের ফরম্যাট, ভেন্যু, কন্ডিশন কিংবা ব্যাটসম্যান- এগুলোর কোন কিছুই তেমন কোন গুরুত্ব বহন করত না!
বিঃ দ্রঃ একই সাথে খেলাধুলা ডট কমে প্রকাশিত।
:brick:
"এখন আর কেউ ইটা ফালায় না" এই কথাটা বইলা একটা কমেন্ট করতে আইসিলাম। আইসা দেখি এই অবস্থা! 😡
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
মুহাহাহাহা.........
এত্তকাল পর যখন অনলাইন এ আসলাম ই, ২/১ টা ইটা না ফালায়া তো যাইতেসি ই না :grr:
স্টপ থ্রোয়িং ইটা রেজু, চাকিং এর জন্য ব্যান খাওয়ায় দিব কিন্তু 😉
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
আর ব্যান........ যুগ বদলাইসে :bash:
দারুন লেখা জুনাদা, সব তথ্য এভাবে তৈরী করে যে খাটুনী করলেন তার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
ক্রিকেট দেখা প্রায় ছেড়েই দিয়েছি, বাংলাদেশের খেলা বাদে ওডিআই, টি২০ দেখা হয় না, শুধু টেস্ট গুলো দেখার চেষ্টা করি। সেখানেও এরকম দূর্ধর্ষ পেস বোলিং দারুন ভাবে মিস করি।
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
খেলা দেখা আমারও অনেক কমে গেছে।
নিজেদের খেলা ছাড়া শুধু শেষবার এসেজ দেখেছি...
মাঝে মাঝে ভাল আর্টিকেল পেলে বঙ্গানুবাদ করে ফেলি।
বেশ শান্তি লাগে! 😀
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
বেশ লাগল জুনা দা :clap:
ছোটবেলায় যখন খেলা দেখতাম তখন ফাস্ট বোলার বলতে তো শুধু ওয়েষ্ট ইন্ডিজ এর খেলোয়ারদেরকেই বুঝতাম ...... ওয়ালশ/ এমব্রস এদেরকে দেখলেই তো মনে হত ব্যাটসম্যান উড়েই যাবে এখন 😛
ঠিক মত পড়েছিস নাকি ফাঁকি মেরেছিস?
সাডেন কুইজ নিলে পারবি?? 😛
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
সেটা প্রশ্ন ফাঁসের উপর নির্ভর করবে :grr:
দারুণ লেখা ভাই। :thumbup:
একসাথে এত এত মহারথী এক দলে খেলার পরেও একেকজনের ক্যারিয়ার স্ট্রাইক রেট আর গড় দেখলে বিস্মিত হতে হয়।
অর্ধপ্রাসঙ্গিকভাবে মুরালিধরণ আর শেন ওয়ার্নের টেস্ট পরিসংখ্যানের কথা মনে পড়ল। ওয়ার্নের দলে ম্যাকগ্রা, গিলেস্পি, ব্রেট লিরা না থাকলে হয়ত মুরালির সাথে তার পরিসংখ্যানগত পার্থক্য আরও কম হত।
ক্রিকেট বিষয়ক আরও লেখা দাবী করছি। (সম্পাদিত)
কথাটা গিলেস্পি, ব্রেট লি'র ক্ষেত্রে কিছুটা প্রযোজ্য হলেও ম্যাকগ্রা'র জন্য আমার মতে হবে না।
কেননা, ওয়ার্ন-ম্যাকগ্রা একে-অপরের পরিপূরক ছিল।
ম্যাকগ্রা'র টাইট বোলিং এর কারণে ওয়ার্নের উইকেট শিকার সহজ হয়ে যেত।
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
তুখোর পর্যবেক্ষণ। একমত।
১। :thumbup:
২। হায়। প্রথম আলো পাঠকেরা কখনো জানবে না- মোঃ আমের+ওহাব রিয়াজ ছাড়াও দুনিয়াতে কত্ত পেসার ছিল/আছে!
৩। শেষের "বিদেশী আর্টিকেল অবলম্বনে" ডিসক্লেইমারটা দেখে রাত-দুপুরে হঠাৎ সেবা প্রকাশনীর কথা মনে পড়ে গেল...
এমন মানব জনম, আর কি হবে? মন যা কর, ত্বরায় কর এ ভবে...
😀
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
১৯৯২ সালে যখন ক্রিকেট বিশ্বকাপ শুরু হয় তার আগে বাংলাদেশি কোন পত্রিকা (সম্ভবত ইত্তেফাক) বিশ্বকাপ নিয়ে আলাদা ক্রোড়পত্র করেছিল। সেখানে বিভিন্ন দলের তারকা খেলোয়াড়দের ছবি এবং দুই তিন কথা ছিল। সেখানেই ম্যালকম মার্শালকে নিয়ে জানা। ইনজুরির কারণে সেভাবে খেলতে পারেন নি। আর খেলার ব্যাপারে তখন ডিটেইলস বুঝতাম না বলে মাকো'র সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝাও সম্ভব হয় নি। ক্যান্সারের কাছে পরাজিত হয়ে তিনি পৃথিবী ছেড়েছেন অনেকদিনই। তবে ক্রিকেট রোমান্টিকদের স্মৃতিচারণেই এবং পরিসংখ্যানে অনুমান করে নিতে পারি তুলনামূলক খর্বকায় (!!) এই পেসারকে।
মাইকেল হোল্ডিংয়ের বোলার রূপ দেখিনি। তার কমেন্টেটর রূপেটাই চোখে পড়েচিল প্রথম খেলা দেখা শুরু করার সময়েই। পরে জানতে পারি তার বিধ্বসংসী বোলিয়ের কথা। কিছুটা দেখাও হয় মাস্টার্স কাচে (রিটায়ার্ড খেলোয়ারদের নিয়ে আয়োজিত প্রতিযোগিতা )। সেই মাস্টার্স কাপ থেকেই গার্নারকে চিনি। যেই লোকটি সবার চেয়ে লম্বা মাঠের মাঝে।
রবার্টসের ব্যাপারে তেমন কিছু জানতাম না আগে মাশরাফিকে কোচিং করানোর আগে। তবে সেসময় তআর ক্যারিয়ারের খোঁজ করেও চোখ আকাশে তোলার মত অবস্থা। তবে আমার সৌভাগ্য হয়েছিলো এমব্রোস ওয়ালশ আর বিশপের খেলা দেখার। বিশপ ইনজুরির কারণে খুব সম্ভবত সেভাবে পরে আড় নিজেকে মেলে ধরতে পারেন নি। তবে ছোটবেলায় আসলে ফাস্ট বোলিং বলতে আসলে বুঝতাম এমব্রোস আর ওয়াসিম আকরাম। এলডব্লু আপিলের আগে হাততালি দেয়া এমব্রোসের মাঝে একধরণের মাদকতা ছিলো। জেন্টল জায়ান্ট ওয়ালশ কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে সেটা তার ১ রানে ৫ উইকেট নেয়া ইনিংসের হাইলাইটস দেখলে বুঝা যায়। তবে তুলনায় অন্যন্যদের চেয়ে ওয়াশই হয়তো একটু পিছিয়ে থাকবে।
এমব্রোস ওয়ালশের পরে উইন্ডিজের সেই ফাস্ট বোলিংয়ের ঐতিহ্য আর নেই। কিছুকাল ডিলন, রোজরা ছিলেন। তারা কুড়িতেই ঝরে পড়েছেন। ম্যাকলিন, ব্ল্যাকরাও ঝরে পড়েছেন আগেই। কলিমোর কিছুদিন টিকলেও কখনোই তাকে মানসম্পন্ন মনে হয় নি। পেড্রো কলিন্সের দৌড় হান্নাকে আউট করা পর্যন্তই। তবে তারপরে যারা এসেছেন এডওয়ার্ডস, টেইলর, পাওয়েল তাদের পটেনশিয়াল ছিল। কিন্তু টি টোয়েন্টি্ আগ্রাসন আর ক্যারিোবীয়দের ক্ষয়িষ্ণু অবস্থা, ম্যানেজমেন্টের বেহাল দশা সব মিলিয়ে সেই ক্যারিবীয় সোনালি দিন এখন রূপকথা।
পোস্ট টা অনেক ভালো লাগলো জুনা ভাই। প্রিয়তে গেল।
এরকম ডিটেইল মন্তব্য পেলে পোস্ট লেখাটা স্বার্থক লাগে।
ভাল থাকিস।
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
তোমার মন্তব্য ও পর্যবেক্ষণ দারুণ হয়েছে, আমিন।
ক্রিকেটের বিন্দু বিসর্গ জানি না, কোন আগ্রহও নাই। কিন্তু চোখ বুলিয়েই বুঝতে পারছি অনেক যত্ন করে লিখেছ। :thumbup:
অনেক ধন্যবাদ, সাদিক ভাই। 😀
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
আ হা, প্রিয় দল নিয়ে, স্বপ্নের দল নিয়ে লেখা!
আফসোসটা আরেকটু বাড়িয়ে দিলাম আর কি... 🙁
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
ক্রিকেট দেখা শুরু করেছিলাম ১৯৮৩ বিশ্বকাপের হাইলাইটস দিয়ে। ১৯৮৩ সালে। সহানুভুতি দিয়ে শুরু। তারপর মুগ্ধতা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সমর্থক ছিলাম ব্রায়ান লারা পর্যন্ত। এখন মাঝে মাঝে গেইলের ব্যাটিং দেখি। স্বপ্নের ওয়েস্ট ইন্ডিজ শুধু গেইলের মধ্যেই দেখি।
ভাল লিখেছিস কিন্তু অনেক দেরিতে।
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
চমৎকার তথ্য ও পরিসংখ্যান সমৃদ্ধ পোস্ট।
"মোদ্দা কথা, অত্যন্ত বিশেষ শ্রেণির এই ফাস্ট বোলারগণ যখন বল হাতে নিতেন তখন ক্রিকেটের ফরম্যাট, ভেন্যু, কন্ডিশন কিংবা ব্যাটসম্যান- এগুলোর কোন কিছুই তেমন কোন গুরুত্ব বহন করত না!" - লেখাটার সার্থক পরিসমাপ্তি ঘটেছে এই বিচক্ষণ মন্তব্যে।
:clap: :clap: :clap: