ছিয়াশির বিশ্বকাপ ছিল পুরোই ম্যারাডোনাময়।
ছিয়াশিতে ম্যারাডোনাকে পারফর্ম করতে দেখে প্রথমেই সিজার মিনোত্তির ওপর প্রচন্ড রাগ হয়েছিল। বুঝেছিলাম, এই রকম একজন ক্লাস প্লেয়ারকে তিনি ঠিকমত ব্যবহার করতে পারেন নাই। ম্যারাডোনাকে দিয়ে কেবলি মাঠ ব্যাস্ত রাখার যে স্ট্র্যাটেজিটা তিনি নিয়েছিলেন সেটা ভুল ছিল। ম্যারাডোনাকে ব্যবহারে কার্লোস বিলার্দো সেদিক থেকে অনেক বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছিলেন। দুইটা রোলই সে প্লে করতো। যখন দেখতো তাঁকে কড়া মার্কিং-এ রাখা হয়েছে, সে মার্কারদের এমনভাবে ডেস্ট্রাক্ট করতো যেন অন্য কেউ না কেউ গোল দিতে পারে। আর সে যখন মার্কারদের ফাঁকি দিতে পারতো, নিজেই গোল দিয়ে আসতো। মার্কার আবার দের কেন? ম্যারাডোনা এমনই প্লেয়ার যার জন্য একাধিক মার্কার লাগতো।
অসাধারন মেধাবী ফুটবলার ম্যারাডোনা বিলার্দোর এই টেকনিক এতই ইফেক্টিভলি ব্যবহার করলো যে দাপটের সাথে ৮৬ বিশ্বকাপ জিতে নিল।
মনে আছে, মিনোত্তি সারাক্ষন ঠোটে সিগারেট নিয়ে বসে থাকতো। দেখে মনে হতো এক্সট্রা একটা নাক গজিয়েছে। আর বিলার্দোর ছিল বিরাট নাক। কোন কিছু ছাড়াই মনে হত সিগারেট ঝুলছে ঠোটে। 🙂
ঐ বিশ্বকাপে ব্রাজিল আর ফ্রান্সের কিংবদন্তি ফুটবলাররা আরেকটা সুযোগ পেয়েছিল নিজেদের মেলে ধরার। কিন্তু ম্যারাডোনা ফ্লাশে সেইসব আর কেউ সেভাবে মনে রাখে নাই। তাছাড়া তারা যে তাঁদের শ্রেষ্ঠ সময় পিছনে ফেলে এসেছেন, সেটাও বোঝা যাচ্ছিলো।
ম্যারাডোনার দাপট এতটাই প্রবল ছিল যে ফর্মের তুঙ্গে থাকা রুমানিগে, ম্যাথিয়াসও তাতে ম্লান হয়ে গিয়েছিলেন।
এই বিশ্বকাপটা আমি দেখি বিএমএ-র পাসিং-আউট প্রাকটিস মাথায় নিয়ে। কোন কোন খেলা পুরো দেখা হয় নাই। তবে বেশিরভাগই দেখেছিলাম। আর ফাইনালটাতো বাসায় এসে দেখলাম।
তখনো জিতলে দু পয়েন্ট আর টাই-এ এক পয়েন্ট দেয়া হতো বলেই যেন তেন ভাবে টাই করার দিকেই দলগুলির ঝোক ছিল। এমনকি প্রথম রাউন্ডে এক পরাজয় ও দুই টাই নিয়েও কোন কোন দল নক আউটে পৌছে গিয়েছিল।
আউটসাইডারদের মধ্যে একমাত্র মরোক্কোই একটা ভ্যালিয়েন্ট ফাইট দিয়েছিল। তারপরেও প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানের কাছে ৮৭ মিনিটে গোল খেয়েও ছিটকে যায় শেষ পর্যন্ত। সেই মুহুর্তটা খুবই বেদনার ছিল।
অবাক হয়ে একটা জিনিষ লক্ষ্য করলাম। পর পর তিনটা বিশ্বকাপই আমার জীবিনের কোন না কোন মাইলস্টোন ইভেন্টের সাথে ওভারল্যাপ করছে। ৭৮-এ ক্যাডেট কলেজে ঢোকা, ৮২-তে এসএসসি পরীক্ষা আর ৮৬-তে কমিশন।
তবে নব্বুই-এর বিশ্বকাপটা তেমন কোন ইম্পর্টেন্ট লাইফ ইভেন্টের সাথে ঠোকাঠুকি বাধায় নাই। নিরবিচ্ছিন্ন বিশ্বকাপ দেখায় সমস্যা ছিল একটাই। যেহেতু আমি তখন নাইক্ষ্যংছড়িতে, আর ঐ জায়গাটা ভ্যালির মধ্যে, টিভির রিসিপশন ছিল খুবই বাজে। তার মধ্যেও আশার আলো, রেস্ট হাউস। ওটা একটা রীজ লাইনের উপরে তাই চমৎকার ছবি আসে ওখানে। সন্ধ্যায় জেনারেটর সহ রেস্ট হাউজে গিয়ে বসতাম খেলা দেখতে। চারিদিকে শুনশান নিস্তব্ধতার মাঝে একা একা খেলা দেখা। মোটেই আনন্দের না। প্রায় পুরোটা বিশ্বকাপ একা একাই দেখলাম।
ওটাও ছিল আরেকটা ম্যারাডোনা শো কিন্তু ৮৬-র সেই ম্যারাডোনা না। প্রথম খেলায় ক্যামেরুনের কাছে ধরা খাওয়া ম্যারাডোনা। চ্যাম্পিয়ানদের বিরুদ্ধে জয়সুচক গোল করা ওমাম বাইক তখন স্টার। আর তার ভাই কানা বাইক পিছন থেকে ট্যাকেল করার অপরাধে সরাসরি লাল কার্ড খাওয়া প্রথম ওয়ার্ল্ডকাপার। পরে দেখা গেল ৩৮ বছরের রজার মিলা হয়ে উঠলেন ক্যামেরুনের সুপার স্টার। নয়জনের ক্যামেরুনের কাছে ম্যারাডোনার চ্যাম্পিয়ান দলের এই অবস্থা ছিল দুঃখজনক। তারপরেও প্রথম রাউন্ডে বাদ যায় যায় অবস্থা থেকে আর্জেন্টিনা উঠে গেল নক আউট পর্বে। সেখানে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ব্রাজিলকে হারানোটাই ছিল একমাত্র দৃশ্যমান ও আসল কৃতিত্ব। বাকিটা পথ ভাগ্যের টানে ক্যামনে ক্যামনে জানি ফাইনালে উঠে গেল। এক কথায় অবিশ্বাস্য। কাউকে আর তেমন কোন পারফর্ম করতে হয় নাই। কেমন যেন এমনি এমনিই হয়ে যাচ্ছিল সব। আর তাই শিরোপাটা অটোমেটিক পেয়ে যাবে, এরকম একটা ধারনা এসে থাকবে হয়তো। নতুন ফুটবল দেবতা যাঁদের টিমমেট তাঁদের এরকম ধারনা আসাটায় আর কি দোষ? হয়তো তাই ফাইনালে হেরে সবার কি কান্না! কি কান্না!! একটা মাত্র খেলা ছাড়া তাঁদের কোন খেলাতেই কার্যতঃ কোন রকমের উতকর্ষতা চোখে পড়েছিল বলে মনে পড়ে না। এত কান্নার কি ছিল, কে জানে?
ঐসময়ে সৈনিকদের বেতন বিল পাশ করানোর জন্য চট্টগ্রামে যেতে হতো। খেলার মাঝেই এই রকম একটা যাত্রা পড়লো। খুব সম্ভবতঃ কোয়ার্টার ফাইনাল দেখেছিলাম চট্টগামে। আমার এক ইমিডিয়েট সিনিয়রও অন্য কোথাও থেকে এলেন একই উদ্দেশ্যে। সবাই খেলা দেখছি, উনি হঠাৎ বলে উঠলেন, “দেখো, দেখো, শেষবারের মত একা একা খেলা দেখে নাও ওয়ার্ল্ডকাপ। পরেরটাতো তিনজন না হোক অন্ততঃ দুইজনে মিলে দেখবা, তাই না?
সত্যিই চুরানব্বুই এর বিশ্বকাপ যখন দেখছি তখন আমরা আড়াই জন। আমি তখন আইবিএতে এমবিএ করছি। খেলা পড়লো সেমিস্টার ব্রেকে। তাই ইচ্ছামত খেলা দেখায় কোন বাধা নাই। রোমারিও আর বেবেতোর ব্রাজিল ফর্মের তুঙ্গে। গোল হয়, চিল্লা পাল্লা করি আর মায়ের পেটে বসে আনিলা হাত পা ছুটাছুটি করে জানান দেয়, সেও আছে। নিচ্ছে বিশ্বকাপের উত্তাপ। খেলা দেখবো নাকই আনিলার কসরত দেখবো, ভালই ধন্দ সৃষ্টি হয়।
এই বিশ্বকাপের কিছু মুহুর্ত স্মরণিয় হয়ে আছে। এর মধ্যে নাইজেরিয়ার রশিদি ইয়াকেনির গোল উদযাপন একটা। ত্রিশোর্ধ এই খেলোয়ার দুর্দান্ত সংগ্রাম করেছেন নাইজেরিয়াকে চুড়ান্ত পর্বে পৌছাতে। এমন বয়সে তিনি প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে এসেছেন, নিশ্চিতই জানেন যে এটাই তার শেষ বিশ্বকাপ। আর তাতে প্রথম খেলায় তিনি একটা গোল করে বসেন। খুবই ইমোশনাল দৃশ্য। নাইজেরিয়া খেলেছিলও তুখোর। আবার সৌদি আরবের ওয়াইরানের রান আরেকটা চোখে লেগে থাকার মত দৃশ্য। বেবেতোর রক দ্যা চাইল্ড আর ব্যাজিওর পেনাল্টি শ্যুট আউট মিস সবারই মনে আছে। তাই আর দিলাম না। রোমারিও-বেবেতো জুটির অনেকগুলি রিপ্লে টাইপের গোল ছিল। চোখ ধাঁধানো।
আনিলার জন্মের খুব কাছাকাছি সময়ে ব্রাজিল চ্যাম্পিয়ান হলো। আরিয়ানার জন্মের খুব কাছাকাছি সময়য়ে ব্রাজিল আবার চ্যাম্পিয়ান হলো। ভাগ্যিস আদৃতার জন্মের কাছাকাছি সময়টায় ব্রাজিল আর চ্যাম্পিয়ান হয় নাই (স্পেন হয়েছে)। হলে খুব বিপদে পড়ে যেতাম। ব্রাজিলকে চ্যাম্পিয়ান করতে দুই হাজার আঠারোতে আবার একটা জন্মযজ্ঞে নামতে হতো। এই বয়সে কাজটা খুবই কঠিন হয়ে দাড়াতো। আমার জন্যে না হলেও ওদের মায়ের জন্যতো অবশ্যই। 😉
আমার পরম সৌভাগ্য, নিরবিচ্ছিন্ন মগ্নতা নিয়ে দীর্ঘ্যদিন ধরে বিশ্বকাপ দেখে হোক, ফলো করে হোক, যাচ্ছি। যতদিন সাধ্যে কুলবে করে যাবো।
আর এই গল্পগুলি শুনানোর এই সুযোগটাও উপভোগ করলাম রসিয়ে রসিয়ে।
যারা পড়ছেন, ফলো করছেন, মন্তব্য করছেন সবাইকে উৎসাহ দেবার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
আয়োজকদের আরও বেশী ধন্যবাদ। এইভাবে না হলে কিছুই হয়তো লিখা হতো না কোনদিনও।
এইখানে ইতি……
বিশ্বকাপ নিয়ে আরও কিছু লিখা:
আন্তর্জাতিক ফুটবল অনুসরণ: শুরুর স্মৃতি
ভাই, ৭০ থেকে ৯৪ পর্যন্ত ভালো আইডিয়া পেলাম আপনাদের লেখা গুলো পড়ে। পরশু দিন সেই ম্যাচটার হাইলাইটস দেখলাম যেটা আর্জেন্টিনা স্বাগতিক হওয়ার সুবিধা নিয়ে ৬-০ তে জিতে ফাইনালে উঠেছিলো 😀
কি মনে হলো? পাতানো, নাকি জেনুইন? (সম্পাদিত)
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
আমাকে একজন বললো এটা নাকি কূটনৈতিক ভাবে পাতানো ছিলো 😛 (সম্পাদিত)
খুবই সম্ভব।
১৯৩৮-এর ফাইনালটাও অনেকটা তাই ছিল।
ফর্মের তুঙ্গে থাকা হাঙ্গেরির প্লেয়ারদের ইটালিয়ানরা নাকি বলেছিল, জিততে না পারলে মুসোলিনি তাঁদের সবাইকে মেরে ফেলবে। ওদের জীবন বাঁচাতে ম্যাচ ছেড়ে দেয় হাঙ্গেরি।
মুসোলিনি এমনই নিষ্ঠুর ছিল যে কথাটা ওরা অবিশ্বাস করতে পারে নাই।
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কিত পর্যবেক্ষণঃ সেনাবাহিনীতে ছিলেন জানতাম না। কখনো বলেননি যদিও। না দেখা ৭০ ও ৮০ দশকের বিশ্বকাপগুলোর উপর ধারণা পাবার মত লেখা আগে কোথাও পড়া হয় নি। সুযোগ করে দেয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। 🙂 🙂 :hatsoff:
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
প্রোফাইলে আছে কিন্তু ওটা মনেহয় না দেখা যায়।
প্রসঙ্গটা ওঠে নাই।
৮৪-তে এইচএসসি শেষ হবার ৮ দিনের মাথায় আইএসএসবি ফেস করি। দুইমাস পরে বিএমএ-তে যোগদান। ছিলাম ২০০৪ পর্যন্ত। অফিসিয়াল রিটায়ারমেন্ট ২ জুলাই ২০০৫-এ
অবশ্য এখানে উল্লেখ আছে।
ভাল লাগার জন্য 🙂 (সম্পাদিত)
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
যদিও অনেক রাত আপনাদের ওখানে তবুও :teacup: চলুক! 🙂
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
চলুক :teacup:
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
আমিও জানতাম না
২ দিন কমেন্টে ভাই ও ডাকছি
😛
আজকে থাইকা স্যার -----
একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার,সারা বিশ্বের বিস্ময় তুমি আমার অহংকার
আছিলাম ভাই।
আবারো হইয়াছি ভাই
আর স্যার হইতে নাহি চাই
আমার ছাত্র-ছাত্রী বাদে। ঐক্ষেত্রে স্যার না হয়ে কোন উপায় নাই... 🙁
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
😀
একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার,সারা বিশ্বের বিস্ময় তুমি আমার অহংকার
'৯০ এ ম্যারাডোনার জন্য কষ্ট পেয়েছিলাম। '৯৪ এ মায়া হয়েছিল।কী প্রতিভা, কী পরিণতি!
একদম ঠিক
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
এই লেখাটায় মন্তব্য করতে লগিন হলাম।
পুরো সিরিজটা খুব উৎসাহ নিয়ে পড়েছি সেটা জানান দিতেও। নকনোর নাম দেখে প্রথম রিলেট করেছিলাম নিজের অভিজ্ঞতার সাথে (অবশ্যই ৯০ এর নকনো)। আর আগের গুলোর গল্প অল্প অল্প শুনেছি মানুষের মুখে। সেই গুলো আপনার লেখায় পড়ে ফেললাম এক বারে।
নব্বইয়ের বিশ্বকাপ আমার দেখা প্রথম বিশ্বকাপ। বয়সে খুব ছোট ছিলাম বলে ফুটবল গত দিকের চেয়ে অফুটবলীয় স্মৃতিগুলোই বেশি টানে। তখনকার সময়ে ঘরে ঘরে টিভি ছিলো না। এক টিভিতে কয়েক পরিবার মিলে খেলা দেখতাম। রাতের খেলা দেখবার জন্য মুড়ি মেখে ফুটবলীয় আড্ডায় বড় ভাই মামা ফুফা বাবা চাচা সবাই মিলে জমজমাট পরিবেশ। বাড়ির মহিলারাও পিছিয়ে ছিলেন না সেই আয়োজনে। আমাদের ছোটদের জন্য রাত নয়টার খেলা দেখা এলাউড ছিলো। কিন্তু রাতের খেলা দেখবার জন্য দুপুরে ঘুমাতে হতো। দুপুরে কখনো ঘুমাতে পারতাম না বলে খুব কম রাতের খেলারই টিকেট মিলতো। প্রথম দ্বিতীয় খেলার মাঝামাঝি সময়ে নানা অনুষ্ঠান হতো টিভিতে। আর বিশ্বকাপের সময়ের বিজ্ঙাপন মালা গুলো সাধারণের চেয়ে বিচিত্র ছিলো। সেইগুলো মাথায় গেঁথে যেত এমনও মনে করতে পারি।
রাতে কেলা দেখার টিকেট না পেলেও আমাদের জন্য সুযোগ ছিলো পরের দিন বিকালে রাতের খেলাটার রিপ্লে দেখার।খেলা দেখে কতটুকু বুঝতাম সেটা প্রশ্ন সাপেক্ষ। তবে বিশ্বকাপ বিজড়িত স্মৃতি শুধু ফুটবলের টেকনিক্যাল স্কিলে আঁটকে থাকে না। খুব স্পষ্টভাবেই খেলা শুরুর সময়টা মনে পড়ে। থিম সং বাজতো আর বলটা নানা ভাবে নানা জায়গা ঘুরে শেষ পর্যন্ত মাঠের সামনে একটা পোস্ট ঢুকতো আর সেই পোস্টের উপর ভেন্যুর নাম লিখা থাকতো। এই বাইরেও টুকরো টুকরো দৃশ্য বায়োস্কোপের মত ভেসে বেড়ায় নব্বই ইটালিয়ার নাম শুনলে। ম্যারাডোনার কান্না বিজড়িত ফাইনাল, আর্জেন্টিনার উপর ক্যামেরুনের ফিজিক্যাল খেলা অতপর নয়জন নিয়ে ওমাম নিয়িকের গোল, ম্যারাডোনার জাদুকরী পাসে ক্যানিজিয়ার গোলে ব্রাজিলের বিদায়, পাগলা গোলকীপার রেনে হিগুয়িতার খ্যাপাটে ভুল। রজার মিলার ছান্দিক নৃত্য, রাইকার্ড আর ভয়েলারের থুথু গুতা অতপর দুজনেই লাল কার্ড, সালভাদর টোটো সিলাচি নামে জনৈক খেলোয়াড়ের সুযোগ সন্ধানীভাবে তারকা হওয়া, টমাস স্কুরভির হেডে হ্যাটট্রিক, রুমানিয়া আয়ারল্যান্ডের একঘেয়ে ড্রয়ের পরে পেনাল্টি শুট আউট, ইটালিকে কান্নায় ভাসিয়ে একজন গায়োকোচিয়ার হঠাৎ হিরো হয়ে যাওয়া, কিংবা শেষতক জার্মানের শিরোপা তুলে ধরার দৃশ্য ধরা থাকে স্মৃতির পাতায়।
১৯৯৪ নিয়ে বলতে গেলে কমেন্ট আরো লম্বা হবে। আপাতত এইখানে খেমা।
এই সিরিজের সবগুলো পোস্টের জন্য আপনাকে স্যালুট ভাইয়া। এই পোস্ট টা প্রিয়তে যোগ করলাম। ছোট্ট একটা অনুরোধ, আগের পর্বগুলোর লিংক এটার সাথে যোগ করে দিলে ধারাবাহিক ফলো করতে সুবিধা হবে।
অনেক ধন্যবাদ ও শুভকামনা।
কমেন্ট করতে বসে ভালইতো একটা প্রায়-ব্লগ লিখে ফেলেছো। ৯৪-র অভিজ্ঞতা জুড়ে দিলেই তা পুরো হয়। করে, পোস্ট দিয়ে দাও না কেন?
নইলে কিন্তু দাবার সেই দর্শকের কথা মনে করিয়ে দেবো ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে যে দাবা খেলা দেখে যাচ্ছিল, চালের বিশ্লেষন করছিল। তার এই আগ্রহ ও জ্ঞান দেখে অন্য এক ফেলো দর্শক জানতে চাইলো, "ভাই, এত দাবা বোঝেন, নিজে খেলেন না কেন?" 😛
দাবা বোদ্ধা দর্শকের উত্তর: "এত ধৈর্য্য নাই".........
আর হ্যাঁ, লিঙ্ক দিয়ে দিচ্ছি। আগে লাঞ্চ করে আসি। ডাকাডাকির উপরে আছি।
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
না দেখা বিশ্বকাপ গুলো দেখে ফেললাম লেখার ২ পার্ট পড়ে ::salute::
একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার,সারা বিশ্বের বিস্ময় তুমি আমার অহংকার
😀
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
দারুণ পারভেজ ভাই :boss: :boss: :boss:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
😀
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
দারুন একটা জার্নি হলো পারভেজ ভাই (উপরে দেখলাম ভাই বলা জায়েজ করে দিছেন :P) আপনার লেখার মাঝদিয়ে।
গত বিশ্বকাপের ঘটনা শেয়ার করতে ইচ্ছে হলো, বিশ্বকাপের মাঝে পড়লো সামার কালেকটিভ এক্সারসাইজ। আমি এডজুটেন্ট, উপ অধিনায়ক মহোদয় ও ছিলেন দারুন খেলা পাগল। এক্সারসাইজ প্লানিং এর সময় মাথায় ছিল ম্যাচের টাইমিং। খেলার আগে পরে সব এক্সিকিউশন টাইম রেখে মিস করিনি কোন খ। ওর দেখার ব্যবস্থা ছিল অফিসের কম্পিউটার, টিভি কার্ড আর বিটিভির এন্টেনা 🙂 ভালই জমেছিল রাজেন্দপুরের জংগলে গাছ তলায় বসে খেলা দেখা। তবে স্যারের দল ব্রাজিল আমার নেদারল্যান্ড এর কাছে হেরে বাদ পড়ার পর দুই তিন লেগেছিলো মুড ঠিক হতে 😀
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
ফিল্ডে থাকা কালিন ফিল্ড মেস লাইফটা খুবই মিস করি।
এখনও কতটা জমজমাট আছে, ধারনা নাই। তবে মেস লাইফটা যে অনেক বদলে গেছে, আন্দাজ করতে পারি।
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
ফিল্ডেও এখন স্মার্ট ফোন আর থ্রিজি কানেকশন পাওয়া যাচ্ছে, লাইফ এখন অনেকটাই ভার্চুয়াল 🙂
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
সেইটা কেমন ফিল্ড হলো, বুঝতে পারছি না।
ক'টাদিন যদি জগত থেকে বিচ্ছিন্নই হতে না পারা গেল, তাহলে ক্যামনে বুঝবো ব্যাটেল ফিল্ড আইসোলেশন কাহাকে বলে উহা কত প্রকার ও কি কি?
ব্যাথিত......
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
:thumbup:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷