আই, ইন দ্য মেম্বারশীপ অব মাই ডেস
ডিপার্টমেন্টের লাউঞ্জে একটি বুকশেলফ আছে। সেই শেলফে মানুষজন বই রেখে যায়। যার ইচ্ছা ভাল লাগলে যে কোন বই সেখান থেকে নিয়ে নিতে পারে। আমি একদিন গিয়ে সেখান থেকে তিনটি বই নিয়ে আসলাম। ভারতী মুখার্জির ‘দ্য টাইগার্স ডটার’, ডেনিয়েল মেসনের ‘পিয়ানো টিউনার’ এবং রিচার্ড হ্যারিসের ‘আই, ইন দ্য মেম্বারশীপ অব মাই ডেস’। প্রথম দুটি উপন্যাস এবং শেষটি কবিতার বই। আইরিশ কবি রিচার্ড হ্যারিস তার কবিতার বইয়ের মুখবন্ধে/ভূমিকায় লিখেছেন –
“আমি সবার মাঝে এমন একজন মানুষ হিসেবে পরিচিত, যে অতি মদ্যপ, মাত্রাতিরিক্ত নারীলিপ্সু, এবং নরকে যাবার সব ব্যবস্থা পাকাপাকি করতে সিদ্ধহস্ত। কিন্তু এই বইটি বলবে, যারা আমার সম্পর্কে এমন ধারণা পোষণ করে আমি তাদেরকে কি পরিমাণ বোকা বানিয়েছি। আমি জীবনে সবসময় দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করে এসেছি একজন মানুষ হিসেবে – একটি হলো সমাজে মানুষের সামনে এবং অপরটি ব্যক্তিগতভাবে। এই কবিতার বইয়ে বলতে চেয়েছি সেই ব্যক্তি ‘আমি’-টি কে। লিখেছি, কে সত্যিকারের রিচার্ড হ্যারিস”।
কি সাংঘাতিক কথা! রিচার্ড হ্যারিস বেশ নামী কবি এবং অভিনেতা। তার বইয়ের মুখবন্ধের কথাগুলো আমাকে সাংঘাতিক ভাবে স্পর্শ করে। বইটি প্রকাশিত হয় ১৯৭৩ সালে। তাঁর কবিতাগুলো আরো বেশি মুগ্ধতা এনে দেয় মনে। আমার অবাক হওয়া এবং ভালো লাগার পালা এখানেই শেষ হতে পারতো। কিন্তু বইটির ৮৮ পাতাতে এসে দেখি, বইটির নামবিহীন প্রকৃত মালিক ১৯৭৩ সালের কানাডীয় একটি ডলার রেখে পাশে আরেকটি কাগজে নোট লিখে রেখেছে “যে আমার পর বইটির মালিক হবে, ডলারটির মালিক সে”। নোটটিতে রানী এলিজাভেদের তরুণী বয়সের ছবি একপাশে, অপর পাশে রিড্যু নদী এবং কানাডার পার্লামেন্টের পিছনের ছবি – নদী দিয়ে অনেকগুলি কাঠের গুড়ি ভেসে যাচ্ছে বা ভাসিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তারপর থেকে ভাবছি বইটি কতবার হাত বদলালো? আমার পর বইটির মালিক কে হবে? জীবন সত্যি কি ম্যাজিকাল!
একাকী সে বসে
– রিচার্ড হ্যারিস
একাকী করতো আহার
একাকী হাঁটতো এবং ভাবতো
ভালবাসতো কাব্যিক নির্জন সুধা
একাকী পেয়েছিল প্রগাঢ় সুখের খোঁজ
একাকী ঠাসবুনট স্বপ্নে অহর্নিশ নিরলস পরিশ্রম
একাকী বইতো দুঃখের স্পর্শ এবং ক্রন্দন
একাকী তীব্র ভালবাসা এবং একদিন একাকী মৃত্যু
লাইফ লেটলি
ক.
অটোয়ায় যখন প্রথম এলাম এই শহরের কোন মানুষকে চিনতাম না। কেউ না। ব্যাগ-বোচকা নিয়ে অচেনা এক পড়ন্ত গ্রীষ্মের বিকেলে এ শহরে হাজির হয়েছিলাম। একজনকে চিনতাম তিনি তার মাস ছয়েক আগে হ্যালিফ্যাক্স চলে গেলেন। তিনি কারো সাথে মিশতেন না। তাই আমি এক প্রকার নিজের মতো করেই এই শহর এবং শহরের মানুষদেরকে আবিষ্কার করা শুরু করেছিলাম। ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে এসে কার্লটনকে আমার এক রকম বড়সড় একটা ফ্যাক্টরির মতো মনে হতো প্রথম দিকে। ভাল লাগতো না। এখন অনুভব করি, ইউনিভার্সিটিতে মামুর দোকান (মাইক’স প্লেস, গ্রাড পাব), ইউনি সেন্টার অট্রিয়াম, অলিভার্স, রুস্টার্স, রকের পাড় (এস্টেসি বিল্ডিংয়ের পাশে এক বিড়ি খাবার চিপা), বুক-স্টোরের চিপা, গড়াই নদীর পাড় (রিড্যু রিভারের পাড়ে বেঞ্চ দিয়ে সবুজ মনোরম এক চিলতে পার্ক), ডাওস লেক, ল্যোবের সামনের গ্যালারি, লাইব্রেরির কুয়াড, জায়গাগুলো কেমন নেশার মতো। দুষ্টু ছেলের দল এই জায়গাগুলোতে পিপড়ার মতো পিলপিল করে এক হয় দুপুর, বিকেল কিংবা সন্ধ্যায়। ফোন করে বাকিদের আনা হয়। এখানে ঠিক ঢাকার মতোই আমাদের একটি গ্রুপ আছে। সেখানে রাজামশাই, ‘তোর ভাই’, পিছলা পীর, বড় হুজুর তর্কবাগীশ, দরবেশ-খালা-আরজতপাড়া, পীরের চ্যালা, তোতান সোনা, ছোট্ট বন্ধু শামা, টিপনে মোক্তার, বর্গজ্য, ফাপড়বাজ সহ আরো কিছু নিয়মিত চরিত্র আছে। বিদেশে সবচেয়ে যে জিনিসটার অভাব সেটা হলো মেশার মানুষ। মুক্তচিন্তার মানুষ। তিনি মহান, এযাত্রায় আমাকে সেই সংকটে ফেলেন নাই।
খ.
ইউনিভার্সিটিতে সবথেকে নিয়মিত আমাদের ‘রাজামশাই’, যিনি কোনপ্রকার ধূমপান, মদ্যপান জাতীয় দুর্বলতার ঊর্ধ্বে একজন সফল সুখী মানুষ। কিন্তু তাই বলে তার রেহাই নাই, সব রকম আসরেই তার থাকতে হয়। বিনিময়ে, আমরা রাজামশাইকে সবাই মান্য করে চলি। রাজামশাইয়ের মনে দুষ্টু হবার একটি প্রবল চাঁপা বাসনা যে নেই, তা নয়। কিন্তু তার যখন সুযোগ ছিল তখন তিনি ওয়াটারলুতে থাকতেন, সেখানে নাকি গ্রাড সমাজে ব্যাচেলরদের বেইল ছিল না। উনি যুগল হয়ে অটোয়া এসে দেখেন যে এখানে দুষ্টু ব্যাচেলর সমাজের আধিপত্যে টেকাই দায়। এনিয়ে তার প্রচুর আফসুস আর দুনিয়াজোড়া আফসুস ছিল। তাই তিনি বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা দিয়েছেন যে উইকেট পড়লে রাজ্যে বিশেষ শুল্ক সুবিধা দেয়া হবে।
আমাদের মধ্যে দু’জন বুজুর্গ মানুষ আছেন। প্রথম জন ‘পিছলা পীর’, তিনি খুবই কেয়ারফুলি কেয়ারলেস। খানি পিছলায়ে চলেন সবকিছুতে। কখন ইউনিভার্সিটি আসে যায় আমরা খবর বিশেষ জানতে পারিনা ইদানীং। তবু যেদিন আকাশ মেঘলা কিংবা রোদ কড়কড়ে থাকে এই দুদিন সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে শুধু মামুর দোকানে যাবার জন্য টানাটানি করতে থাকে। আজকাল সে খুব ব্যস্ত, কারণ তিনি সমাজ বিজ্ঞানীদের সাথে একমত যে, বিয়ে একটি প্রতিষ্ঠান! পিছলা পীরের সহধর্মিনী দরবেশ-খালা-আরজতপাড়া ইউনিভার্সিটি থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করার পর আড্ডাতে জেন্ডার বৈষম্য তৈরি হয়েছে। সর্বোপরি, পিছলা পীরসাহেবের দল খানিকটা স্টেপ ডাউন করার পর থেকে বিএসএ (বাংলাদেশ স্টুডেন্টস এ্যাসোসিয়েশন] দুর্বল হয়ে পড়ছে। তবে, আমরা অপেক্ষা করে আছি পিছলা পীরের ব্যান্ডের প্রথম এ্যালবামের রিলিজের।
আমাদের একজন ‘ভাই’ আছে। যিনি ‘তোর ভাই’ নামে খুবই পরিচিত। ভাই মানে পীর সাহেবের ভাই না। ছাত্রসমাজে ‘তোর ভাই’ খানিকটা বাকের ভাই টাইপ। ‘তোর ভাই’ গভঃ ল্যাব, ঢাকা কলেজ, ঢাবি, পুরানো ঢাকার এক অনবদ্য ককটেল। ক্যাম্পাসে দেশ থেকে নতুন কেউ আসলে ভাই তাকে নিয়ে একটু নাড়াচাড়া করে, তারপর সব বুঝে ফেলে তার ভিতর কি আছে। ভাইয়ের কাছে মামুর দোকান, এ ক্লাব সে ক্লাব, গান, সিনেমা, সাহিত্য, রাজনীতি, বিজ্ঞান, শিল্পকলা, বশীকরণকলা, সবকিছুতে পাশ করলে তারপর একজনকে আপার-কানাডা দুষ্টু সমাজের সদস্য করা হয়। কথিত আছে, ভাই রাজামশাইয়ের আব্বাকেও ভাঁজ দিয়ে ফেলতে সক্ষম।
আমাদের আরো একজন বুজুর্গ মানুষ আছেন। যিনি ‘বড় হুজুর তর্কবাগীশ’ নামে পরিচিত। বড় হুজুর গত হ্যালুইনে জাকির নায়েক সেজে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি করেছিল। বড় হুজুর আবেগে এবং রুটিনে প্রতীচ্য এবং পাশ্চাত্যের মিশেলে দারুণ এক মিশ্রণ ঘটিয়ে পরিশ্রম করে যায় কিন্তু তারপরও ভাগ্য তার সাথে লুকোচুরি খেলে। বড় হুজুর যখন সেইসব দুঃখসুখের নিত্যদিনের কথা বলে, আমরা উপলব্ধি করি বাংলা স্ল্যাং সম্ভার উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ হচ্ছে।
পীরের চ্যালা এবং ছোট্ট বন্ধু শামা ঘরবাঁধার স্বপ্নে বিভোর। সব ঠিকঠাক। তারিখ, ভেন্যু সব পাকা। এমন সময় ঢাকা দুই ভাগ হলো। তাই তাদের নতুন কার্ড ছাপতে হলো – দুই ঢাকার কেউ যেন তাদের ভুল না বোঝে, তারা আগে জানলে দুই ঢাকার ঠিক মাঝামাঝিতে বিয়ের ভেন্যু ঠিক করতো। ছোট্ট বন্ধু শামা পিয়ারসন এয়ারপোর্ট থেকে ফোন করে বলে, জীবনের সবথেকে অজানা অনিশ্চিত জার্নি শুরু করে একটু ভয় ভয় লাগছে। নাচতে নাচতে যাচ্ছি, জানিনা কপালে কি আছে।
উইকএন্ডে নিয়ম করে তোতান ফোন দেয় সবাইকে টরোন্টো থেকে। তার মন পড়ে আছে অটোয়ায়। সব কথার শেষ কথা, জীবনে সে অনেক ভুল করে ফেলেছে। বয়স থাকতে দুষ্টু হওয়া হলো না তার। হবে কি করে, তোতানের অভিভাবক এখনো দেশ থেকে পোষ্ট করে তোতানের জন্য ‘সাত যুবকের গল্প’ জাতীয় নীতিবাগীশ উপন্যাস/গল্পের বই পাঠায়। সেটা নিযে মামুর দোকানে হাসির রোল পড়ে।
গ.
স্কুল কেন্দ্রিক একটি গ্রুপের সাথেও ওঠাবসা করি। তাদের অনেকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাচ্ছে। অনেকে এখনো অটোয়াতে। এদেরই একজন এলিজাভেথ। এলিজাভেথ খুব বিনয়ী কিন্তু চটপটে মেয়ে। তার ধারণা, গ্রাজুয়েট স্টুডেন্ট হলে একটি বড় সময় একান্ত নিজের মানুষের কাছে কিংবা যারা জীবনে অনুপ্রবেশ করতে পারে এমন মানুষদের কাছে ‘আমি কিন্তু সিরিয়াসলি লেখাপড়া করছি’ জাতীয় অভিনয় করে চলতে হয়। এবং ‘প্রিটেন্ড’ করা ছাড়া নাকি কোনভাবেই ফোকাস করা সম্ভব না। এটা নাকি বাস্তব জীবন এবং একাডেমিক কাজের ‘রাইটস অব প্যাসেজ’।
কেলি ব্ল্যাক গভীরভাবে এনডিপির সমর্থক। নাম মেয়েদের মতো শুনতে হলেও কেলি এক দাঁড়িওয়ালা ছয়ফুটি। পুরো ছাত্রজীবন রাজনীতি করে কাটাচ্ছে। ভ্যাঙ্কুভার আইল্যান্ডের ছেলে। খানিকটা খুঁতখুঁতে। মাঝে মাঝেই তার কথাবার্তা এ্যানথ্রোপলজি অব ট্রি’র দিকে ঘুরে যায়, পার্ক ম্যানেজমেন্টের দৃষ্টিকোণ থেকে সবকিছু কিভাবে দেখা যায় সেটা তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কেলির ধারণা, ছাত্রজীবন হলো নো-ম্যানস ল্যান্ড।
ফিল রবিনসনের মাথায় অনেক বড় বড় চিন্তা – ‘সিটি’ কর্তৃপক্ষকে কিভাবে ছাত্রদের সাবসিডাইজড বাস পাসের মূল্যবৃদ্ধি প্রস্তাব থেকে ঠেকিয়ে রাখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে কিভাবে ডায়ালগ স্থাপন করা যায় যে ক্যাম্পাসে ২৪ঘন্টার ‘সেক্সুয়্যাল এ্যাসোল্ট সেন্টার’ জরুরী এবং সেটি কিভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ফান্ডিংয়ের মাধ্যমে ইন্সটিটিউশনালাইজ করবে। ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট প্রফেসর রান্টি বলেছেন, তিনি সিনেট মোশনে ‘সেক্সুয়াল এ্যাসোল্ট সেন্টার বিল’ আনবেন কিন্তু সেজন্য স্টুডেন্ট এ্যাসোসিয়েশনকে গ্যারান্টি দিতে হবে যেন মিডিয়া কোন নিপীড়ন বিষয়ে ‘ব্যাড নিউজ’ উৎপাদন না করে। ফিল রবিনসন এসবে বিরক্তি প্রকাশ করে বলে, ‘বাঞ্চ অব এ্যাসোলস’।
নিক ফ্যালভো আগ্রহী তার শিক্ষানীতি বিষয়ক লেখালেখি নিয়ে। পশ্চিম ইউরোপে শিক্ষা ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়াতে পূর্ব ইউরোপ থেকে পড়তে আসা ছেলে-মেয়েরা স্কর্ট হিসেবে কিংবা স্ট্রিপ ক্লাবগুলোর কাজে ঢুকে ট্যুইশন খরচ মেটাচ্ছে। অন্টারিওর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বেতন বাড়ানোতে তার কি প্রভাব পড়ছে স্ট্রিপ ক্লাবগুলোর কর্মসংস্থানে। না, কোন বিশেষ পেশা নিয়ে নিকের কোন নৈতিকতা আরোপিত জাজমেন্টাল বক্তব্য নেই। তার আগ্রহ একান্তই ট্যুইশন ফি’স বাড়লে তার প্রভাব ছাত্ররা কিভাবে মোকাবিলা করে। পাশাপাশি ইউকোনের হাউজিং পলিসির উপর তার গবেষণা। নিকের সাথে একটা আলাদা বন্ধুত্ব দিনে দিনে গড়ে উঠেছে।
রেবেকা একবছরের জন্য ভ্যাঙ্কুয়েভারের একটি দ্বীপে একটি আদিবাসী স্কুলে শিক্ষকতা করবে। চলে গেল এ মাসে। এদেশে বিদায় তেমন বিচ্ছেদের বা দুঃখের ব্যাপার না। বরং সবাই যেন খুশিই হয়, কারণ জীবনে বৈচিত্র্য আসছে। রেবেকা মূলত: মঞ্চের অভিনেত্রী। বেশ ক’বছর টরোন্টোর একটি থিয়েটার কোম্পানিতে লেগে ছিল। কিন্তু মঞ্চে ভাল ব্রেক পাওয়া কঠিন, তাছাড়া নানারকম নয়-ছয় ছিল ভিতরে। তাই নামকাওয়াস্তে নাট্যকর্মী হয়ে ফালতু এ্যাড করে জীবন কাটানোর চেয়ে স্কুলে ফেরাই শ্রেয় মনে করেছিল।
ব্যক্তি স্বতন্ত্র সমাজ হলেও এদেরও আমাদের মতন নানা হ্যাপা আছে। ক্রিসমাস পশ্চিমা সমাজে বিশেষ হলিডে সিজন। ক্রিসমাস নাকি নির্লজ্জভাবে জানিয়ে দেয় ছাত্ররা আসলে হত দরিদ্র। বিশ পঁচিশজনের জন্য গিফট কেনা সহজ কথা না তাদের জন্য। নিজের পরিবার, পার্টনার, পার্টনারের পরিবার, দুই পক্ষের হাফ-সিস্টার, হাফ-ব্রাদার এবং তাদের প্রেমিক-প্রেমিকা সব মিলে এক বিশাল লিস্ট। যা সবসময় বাজেট ছাপিয়ে যায়। সারাবছর জমাতে হয় সফল ক্রিসমাস করার জন্য। এটাই একমাত্র সময় যখন পুরো পরিবার একসাথে হয় সাধারণত। এবার বোধহয় হোয়াইট ক্রিসমাস হচ্ছে না। তারপরও ভ্যাটিকানের ঘরে ঘরে আনন্দ!
[দুই গ্রুপেই আরো অনেকে আছে। অন্যদের কথা আর লিখতে ধৈর্য পাচ্ছি না, অন্য কোন দিন, অন্য কোন লেখায় হয়তো তারা আসবে]
টুডে, টুমরো, হোয়েনেভার
আমি একদিন একটি লিস্ট করলাম জীবনে কি কি চাই। আমার মনে হয় – প্রতিটি মানুষেরই মনে সচেতন বা অসচেতনভাবে এমন একটি লিস্ট থাকে। সেখানে নিয়ম করে নতুন নতুন চাওয়া যোগ হয়। আবার পুরানো চাওয়া সময়ের ফেরে পরিবর্তন হয়। আমারটা পুরাই হাবিজাবি লিস্ট। কোথায় কোথায় যেতে চাই। কার কার সাথে দেখা করতে চাই। জীবনে যা চাই না, সেখানে সময়মত “না” শব্দটির যথাযথ প্রয়োগ রপ্ত করা। এইসব টুকিটাকি। সেখানে তেমন কাজের কোন জিনিস স্থান পায় নাই। না পাওয়াটা একদমই অস্বাভাবিক না। আমার বাড়িতে ‘স্ক্রু ঢিলা’ হিসেবে আমার বিশাল সুখ্যাতি। আমার মার সাথে কথা হয় যখন, আমার মা এখনো আমাকে রুটিন করে শোনায়, জীবন অনেক কঠিন, জীবনের প্রতি সচেতন না হলে জীবনে বহুরকম ডিসকমফোর্টনেস তৈরি হয়। ইত্যাদি, ইত্যাদি। তো আমি সবসময় এসব কথা এক কান দিয়ে ঢুকিয়ে আরেক কান দিয়ে ফুড়ুৎ করে বের দেই। আর কত, বুড়া হয়ে যাচ্ছি, তবু এসব শুনতে হয়! তখন বলি, “কথাটা সত্যি” বা “এবিষয়ে আমার কোন দ্বিমত নেই” টাইপের কিছু।
যাইহোক, আমি লক্ষ্য করলাম আমি সেই হাবিজাবির লিস্টে একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস যুক্ত করেছি। তারপর যেটা করলাম, আমার পরিবারের অন্যদের জিজ্ঞেস করলাম, তারা কি চায়। অনেক কিছুতেই অনেক অমিল। কিন্তু একটি জায়গায় মিল। সেই চাওয়াটুকু হলো ‘পিসফুল ডেথ’। আমি দেখলাম এই একটা জিনিস আমরা সবাই অসচেতনভাবে চেয়েছি এবং সবার মিলেও গেল। হয়তো আমার পরিবারের ‘কষ্টের’ মৃত্যুগুলো দেখার কারণেই সবার ভেতর এটা অবচেতনে কাজ করে। চাওয়াটা অনেকটাই অসম্ভব, শুধু প্রত্যাশা হয়তো। কিন্তু আমি সেই অসম্ভবকেই চাই।
উত্তরা
অনেক বছর আগে যাদের হাত ধরে এ্যানথ্রোপলোজি জানা শুরু করেছিলাম। তাদের একজন মিনতি ম্যাডাম। ওনার কাছ থেকেই বুদ্ধদেব দাশ গুপ্তের উত্তরা সিনেমাটার নাম শুনেছিলাম। ছবিটা বেশ ধীর। ভাল লেগেছিল। মনে দাগ কেটেছিল। অন্যরকম এবং গভীর। সেটারই দুটি গান একসাথে –
অতি ক্ষুদে একটি ছোট গল্প
বিংশ শতকের বিশের দশকে একদিন আর্নেষ্ট হেমিংওয়েকে তাঁর এক বন্ধু ছয় শব্দের একটি গল্প বাজি ধরেন। বাজিটি ছিল এরকম যে ছয় শব্দের একটি গল্প বলতে হবে হেমিংওয়েকে। তখন হেমিংওয়ে শোনালেন সেই গল্প –
“বিক্রয় হইবে: শিশুর জুতা, একেবারে অব্যবহৃত।”
– এই ছয়টি শব্দই এতো শক্তিশালী একটি গল্পের জন্ম দিতে পারে! তারপর থেকে এমন ক্ষুদে গল্পের নাকি একটি চল সৃষ্টি হয়েছে। পুরো গল্পটি অব্যক্ত, কিন্তু সব না বলা কথা হৃদয় নিঙরে ভাবনাকে উসকে দিয়েছে। এখানেই হয়তো একজন লেখকের সার্থকতা।
পরপর দুটা লেখা নর্থ আমেরিকার ক্যাম্পাস লাইফ নিয়ে। এরকম লেখা বড় ভাল লাগে। সুমাইয়া ভাবী দিল ইন দ্যা ক্লাস আর আপনি আউট। নিজেরা নিজেরা ঠিক করে নিয়েছেন নাকি ভাইয়া।
ধন্যবাদ। নারে ভাই, কারো সাথে কোন কিছু ঠিক করে না, এমনিই লিখলাম। ঝড়ে বক মিলে গেল 🙂
আমার বন্ধুয়া বিহনে
দূর, পড়াশুনার খ্যাতা পুড়ি :grr:
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
সঠিক পয়েন্টে হাত দিয়েছেন, ফয়েজ ভাই x-(
আমার বন্ধুয়া বিহনে
মাঝের চরিত্রগুলোর অংশটুকু পড়ি নি। মন উচাটন অবস্থা।
শুরুর আর শেষেরটুকু পড়লাম। আমারও চাওয়ার একটা লিস্ট ছিল, গত কয়েক বছরে সেটার কথা তেমন একটা ভাবি নি। ইদানিং ভাবছি। পিসফুল ডেথটা কেমন এটা জানার আগ্রহ হচ্ছে ভাই। আমারও এমন পিসফুল ডেথ চাওয়ার তালিকায় আছে। সেটা হলো অতর্কিতে, আচম্বিতে ঘটবে এমন মৃত্যু। জেনে শুনে মরে যাচ্ছি ভাবনাটা ক্ষয় করে দেয়। তার চেয়ে হুট করে মরে গেলাম। এটা ভাল।
আপনারটা কেমন?
মন উচাটন কেন? ঘটনা কি?
আমি যে পিসফুল ডেথের কথা ভাবি সেটা খুব অল্প সময়ে কোনরকম প্রস্তুতি ছাড়াই। দীর্ঘ রোগভোগ বা অপঘাতে না। হত্যাকান্ড না। আচমকাই। আড়ম্বরহীন এবং করুনাহীন বিদায়। যদিও সেটা আমার হাতে নেই।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
:clap:
5 star
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
থ্যাংকস, বস।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
রাব্বী যথারীতি সরাসরি কিছু বলা আর কিছু অস্পষ্টতা রেখে দেওয়া স্টাইলে একটি অনবদ্য লেখা। ধরে নিলাম সব রূপক নামগুলো দেশি ভাই-বেরাদারদের। তা তোমাদের ওখানে এতো বাংলাদেশি পড়ে? আচ্ছা মিজান রহমানকে চেন? অটোয়ায় থাকেন - লেখালেখি করেন। ম্যাথের প্রফেসর ছিলেন - বোধহয় কার্লটনেই।
মরে যাওয়ার থেকেও মরে যাওয়ার আগে মরে যাওয়াকে আমার ভয়। পিসফুল ডেথ ব্যাপারটা কেমন হবে সে ্সম্পর্কে আমি কোন দৃশ্য কল্পনা করতে পারি না। ধর স্টিফেন হকিং একটা অসম্ভব যন্ত্রণাদায়ক জীবন কাটাচ্ছেন। দূর থেকে দেখে তা মনে হয়। কিন্তু স্টিভেন হকিং নিজে কি তা মনে করেন? আর এখন চিকিৎসা বিজ্ঞান খুব উন্নত হয়েছে। ব্যাথাগুলো কমিয়ে দিচ্ছে। সক্ষম দীর্ঘজীবন আর পিসফুল ডেথের মধ্যে কোনটা বেছে নেবে?
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
ভাই-বেরাদারদের সংখ্যা নেহায়েত কম না। আগে আন্ডারগ্রাড বেশি ছিল, এখন গ্রাড স্টুডেন্ট বাড়ছে। মিজান স্যারের নাম জানি, কার্লটনেই, পরিচয় নেই। ওনার বাংলা পত্রিকার কলাম পড়েছি। আরো দু'জন বাংলাদেশি প্রফেসর আছেন - এহসানুস সালেহ এবং সঞ্জয় সিনহা।
পিসফুল ডেথের একটা কাছাকাছি ছবি দেখি কারণ আমার দাদী আমার সামনে মারা গিয়েছিলেন। সচল অবস্থায় কোন রোগভোগ ছাড়াই রাতে খেয়ে নিজের মশারি নিজে টানিয়ে শোয়ার পাঁচ মিনিটের মাথায়। জীবনের বিভিন্ন কন্ডিশনস থাকতে পারে। তবে আমি পিসফুল ডেথ দেখি ব্রুটাল ডেথের বিপরীতে। ব্যথা কমানোর পরিকল্পিত মৃত্যু সব দেশে নেই। সক্ষম দীর্ঘজীবনের সাথে পিসফুল ডেথ তো সাংর্ঘষিক না। আমি অবশ্য খুব দীর্ঘজীবন চাই না।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
সময়ের সাথে সাথে চাওয়াগুলো বদলে যায়। তবে তোমার দাদির জীবনটা বলতে গেলে আরাধ্য, দীর্ঘ এবং পীসফুল ডেথ। তবে একেবারে মৃত্যযন্ত্রণার সময় কে কিরকম কষ্টের মধ্যে দিয়ে যায় তার তো কোন পরিসংখ্যা্ন নেই। আমার আব্বার ক্যান্সার হয়েছিল। খুব শান্ত স্বাভাবিকভাবে নিজের মৃত্যুটাকে গ্রহণ করে আমাদের প্রস্তুত করছিলেন তার অবর্তমানে আমাদের ভবিষৎ জীবনের জন্য। এখনও যেমন বিভিন্ন ঘটনায়, নিজের মূল্যবোধে তার উপস্থিতি টের পাই। কিন্তু তার চলে যাওয়ার শোকটা কেন জানি অস্পষ্ট।
মিজান চাচা গতকাল ফোন করেছিলেন। এখন ক্যালিফোর্নিয়ায় বেড়াতে এসেছেন। উনার ছেলে আমাদের বাসার খুব কাছে থাকে। কিছুক্ষন পরেই উনার সাথে গল্প করতে যাব। আমি ব্লগে বিভিন্ন রকম লেখা পড়ার আগে উনার লেখার একনিষ্ট ভক্ত ছিলাম। বলতাম যে আপনি লেখালেখিটা চালিয়ে গেলে বাংলা সাহিত্য আরেকজন মুজতবা আলি পেত। ব্লগ পড়ার পর পরে অনেকের লেখাই ভাল লেগেছে। আত্মকথন - সাথে কিছু দর্শন। আমার এখন মনে হয় এই স্টাইলে লেখা সহজ। আমার এখন ফিলসফিক্যাল ফিকশন পড়তে ভাল লাগে। এখন পড়ছি দ্যা এলিগেন্স অব হাজহগ।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
**দ্য হেজহগ
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
শান্তা আপা, আপনার আব্বাকে নিয়ে লিখেন। আব্বা চরিত্রগুলো আমার মনে হয় খুব মজার। বিশেষ করে যারা ওল্ড স্কুল ধাচের ছিলেন। পূর্ন সহমত - সময়ের সাথে সাথে চাওয়াগুলো পাল্টে যায়।
মিজান স্যার তো তাহলে আপনার বেশ পরিচিতজন। আমি অবশ্য ওনার লেখা খুব বেশি পড়িনি। দ্য এলিগেন্স অব হেজহগের প্লটটা ভাল লাগলো, ফরাসি ফিলসফিক্যাল ফিকশন ভাল হবার কথা। জানায়েন কেমন লাগলো।
আপনার নতুন ব্লগ কবে পড়বো?
আমার বন্ধুয়া বিহনে
হেজহগ বেশ খানিকটা পড়া হয়েছে। পড়তে অতো সহজ না। ইউরোপীয় অনুবাদকরা অনেক বেশি কঠিন শব্দ ব্যবহার করে যেটা আমেরিকান লেখকরা অতোটা করে না। তবে একবার শুরু করলে থামা যায় না। অদ্ভুত ভাল লাগছে। অনেকদিন পর একটা মনের মতো ফিকশন পেলাম।
আব্বার থেকেও আমার আম্মা অনেক ইন্টারেস্টিং ক্যারেকটার লেখার জন্য। কিন্তু দুঃখের বিষয় তাদেরকে আমার আবিষ্কার করতে হয়েছে তাদের মৃত্যুর পর। অন্যদের কাছ থেকে বিভিন্ন কাহিনী শুনে। তবে হ্যাঁ কথাটা অনেকটা ঠিক ওল্ড স্কুলের লোকজনের একটা আলাদা বিশেষত্ব আছে।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
বিদেশে দেশী ভাইদের এমন নানাবর্ণের সমাহার সব জায়গায়ই থাকে দেখছি। এঁরা না থাকলেও জমেনা। তোমার এই জার্ণাল আমার খুব ভালো লাগে। একটু রিলাক্স করার সুযোগ মেলে।
হেমিংওয়ের ছোটগল্প পড়ে স্তব্ধ।
দেশি ভাইয়েরা ব্যাপক বর্ণীল বৈচিত্রময়! আমি যাদের সাথে মিশি এরা ব্যাপক বিচ্ছু। কিন্তু কালচারালি এবং মানুষিকতায় বেশ প্রগ্রেসিভ।
হেমিংওয়ের ক্ষুদে গল্পটা আমাকেও স্তব্ধ করেছে। তাই দিলাম।
হ্যাপি হলিডেজ!
আমার বন্ধুয়া বিহনে
দারুন লাগলো জার্নাল, চলুক :thumbup:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
ধন্যবাদ, আশাকরি চলবে।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
সুপাঠ্য ছিল।
কখনো চোখের সামনে কাউকে মারা যেতে দেখিনি; বলা চলে মৃত্যুকে এঁড়িয়ে চলার একটা প্রবণতা কাজ করে, ব্যাপারটা ঠিক মৃত্যুভীতি না, আপাতত ব্যাখ্যায় না যাই।
আপনার দলবল কিন্তু আসলেই সেরকম; ঈর্ষাই হয়। আমারো ছোটখাটো একটা বাহিনী আছে, সমস্যা হলো আন্ডারগ্রাডদের আসর সেভাবে জমিয়ে ওঠা যায় না ছুটিছাটা ছাড়া। তারপরো এরই মাঝে আড্ডা চলে।
আমিও একটা ছোট্ট গল্প বলে বিদায় নেই।
পথ ভুল হয় না, ভুল হয় পথিকের পথচেনা। :-B
আপনারে বড্ড মিস্করি।
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
আমি চোখের সামনে নিজের এবং অপরিচিত বেশ কিছু মানুষের মৃত্যু দেখেছি। স্বাভাবিক জীবনে আমরা মৃত্যুচিন্তা এড়িয়েই চলি। তোদের গ্রুপটাও ভাল! তুই ক্ষুদে গল্প চেষ্টা করলি, এটাতো বাণীর মতো শোনাচ্ছে।
তোরে কে জানি মিস্করে এবং রাস্তায় দেখা হলে তোরে নিয়া তার আক্ষেপের কথা বলে।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
রাব্বী ভাই , পোস্ট প্রিয়তে গেলো । পাঁচতারা।
এই লেখাটা দিয়ে আপনি আমার কী যে উপকার করেছেন ঠিক বলে বুঝাতে পারবো না।খুবই ইনসপায়ার হলাম নিজের ব্যাক্তিগত ব্যাপারগুলো নিয়ে।
কবি হ্যারিসের নাম শুনি নাই (অবশ্য শোনার কথাও না। সাহিত্যে এলেম কম)। তবে কবিতাটা খুব টানলো আর অনুবাদ খুব ঝরঝরে হইছে। পড়ে আরাম পেলাম।
নানান বৈচিত্রময়তায় ভরা মানুষগুলোর গল্প পড়ে খুব ভালো লাগলো। বলতে পারেন ইনসপায়ারও হলাম এই জন্যেই।
হেমিংওয়ের লাইন গুলো দারুণ। একবার ভাবছিলাম মজা কইরা আমি ১০ শব্দের একটা গল্প লিখা ফেলি ইনস্ট্যান্ট। পড়ে মনে হইলো বেয়াদবি করাটা ঠিক হবে না। 🙂
পিসফুল ডেথ কী জানি না, তবে আমি দীর্ঘজীবন চাই না। কারণ বেঁচে থাকলে জীবন জীবনকে খায় রাত রাতকে খায় সময় সময়কে খায়। আর খাওয়া শেষে থেকে যাওয়া হাড়গোড় আড় অবশিষ্ট মাংস নিয়ে সময় চলে। আমার সময় একদম ক্লিষ্ট শীর্ণকায় হয়ে যাবার আগেই চলে যেতে চাই।
মৃত্যু সামনে থেকে দেখিনি ; না ভুল বললাম সি এম এইচের আইসিইউ তে বসে সাতদিন মৃত্যুর গন্ধ শুঁকে মৃত্যুই দেখেছি। যা দেখিনি সেটা হলো কাছ থেকে পরিচিতজনকে মরতে। মৃত্যু দেখতে কেমন আমি জানলেও ওখন বুঝার বয়স ছিলো না।
অনেক আবোল তাবোল কথা বলে ফেললাম। অনেক দিন পরেই সিসিবিতে কোন পোস্ট এতো আরাম নিয়ে পড়লাম।
ভালো থাইকেন ভাই।
ধন্যবাদ আমিন। দুষ্টু কাজে ইন্সপায়ার হলে নিজ দ্বায়িত্বে। রিচার্ড হ্যারিসের কথা আমিও আগে জানতাম না। বইটার সূত্রেই জানা। হেমিংওয়ের এই গল্পের উৎসাহে এমন একটা গল্পের ধারাও নাকি চালু হয়েছে। সুতরাং লেখার চেষ্টা করে দেখতে পারো।
তোমার মন্তব্য আমারো ভাল লাগলো। সুখে থাকো। দেখা হবে একদিন।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
একবার ভাবছিলাম মজা কইরা আমি ১০ শব্দের একটা গল্প লিখা ফেলি ইনস্ট্যান্ট। পড়ে মনে হইলো বেয়াদবি করাটা ঠিক হবে না।
সব ব্যাপারে মজা করা ঠিক না। :thumbup:
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
রাব্নে ভাই আপনার ইস্কুলেতো দেহি এলাহী কারবার চলে!
রামগরুরের ছানা ভাই, ঠিকই বুলেছেন। আপনেদের তো সব এলাহীদের নিয়ে এলাহী কারবার! বুললেই তো বুলবেন বুইলছি 😀
আমার বন্ধুয়া বিহনে
ভালো লাগলো লেখাটা।
পিসফুল ডেথেরও আবার নানা রকমফের আছে...কেউ কেউ চায় পুরো একা একা খুব নির্জনে বিদায় নিতে, কেউ আবার চায় পুরো ফ্যামিলি বিদায়ের সময় তাকে ঘিরে বসে থাকবে। আবার কেউ কেউ দেখলাম চাইছে হুট করে, কিছু বোঝার আগেই বিদায়। কয়দিন ধরেই মৃত্যু জিনিসটা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে, কিন্তু নিজের কথা ভাবতে গেলেই খেই হারিয়ে ফেলছি।
মানুষ খুব বিচিত্র জাত... এমনকি নিজের "পিসফুল" ডেথকেও একেকজন একেকভাবে সংজ্ঞায়িত করে।
আলোর দিকে তাকাও, ভোগ করো এর রূপ। চক্ষু বোজো এবং আবার দ্যাখো। প্রথমেই তুমি যা দেখেছিলে তা আর নেই,এর পর তুমি যা দেখবে, তা এখনও হয়ে ওঠেনি।
ধন্যবাদ নাফিজ। মৃত্যুর আগে পরে জীবনে অনেক কিছু চাওয়া সহজ মনে হয়। কিন্তু ঠিক মৃত্যু চিন্তা করাটা কঠিন। ঠান্ডা মাথায় নিজের ওই সময়টার কথা ভাবতে গেলে তল পাওয়া সহজ না।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
নিচের মন্তব্যটি ১৮ প্লাস। নিজ দায়িত্বে। । ।
পিসফুল ডেথ চাই কিনা জানিনা।
আমি অন্তত ১০০ বছর বাঁচতে চাই; কিছু বোনাস পাইলেও ক্ষতি নাই।
মুসার সাথে আজরাইলের যেই ঘটনা আছে তদ্রুপ আমার সাথে হইলেও মন্দ হইতোনা।
তবে কিনা বুকে মাঝে মাঝে ব্যাথা করে। আর দুঃস্বপ্ন দেখি ভেড়া বা ছাগলের পাজরের হাড় যেভাবে বড় ছুরি দিয়ে কোপানো হয় ঠিক সেভাবে আমার পাজরের হাড় আলাদা করা হচ্ছে। তফাত একটাই আমি বেঁচে থেকে দেখছি আমাকে কিভাবে ছিন্ন ভিন্ন করা হচ্ছে।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
সংশয় থাকলেও সমস্যা নাই, পেইনফুল ডেথ তো আছেই! আপনার আবেদন পরীক্ষা-নিরিক্ষা পূর্বক, বিশেষ ক্ষমতা আইন, ১৯৭৪ এর ৪২০ ধারা অনুযায়ী আপনার মূল জীবন ১০০ বছর প্লাস বোনাস ১৫ বছর সর্বমোট ১১৫ বছর জীবনকাল প্রদানের নিমিত্তে উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের নিকট সুপারিশ করা হইলো। ধন্যবাদ।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
এই লেখাটা রেখে দিয়েছিলাম আয়েস করে পড়ব বলে, ঠকি নাই 😀
পুরনো বইয়ের এই রোমান্টিকতাটা আমারও ভালো লাগে। পুরনো বই পেলে আগের মালিক সম্বন্ধে আজগুবি নানা চিন্তা করতে আমার ভালো লাগে, তাই করি। কখনও টাকা পাইনি অবশ্য 🙁 , তবে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভালোবাসা খুজে পেয়েছি 😀
আমারও একটা লিস্ট করতে হবে, অনেক দিন থেকেই ভাবছি। আপাতত চাওয়া হচ্ছে ফাইনালটা পাশ দিতে পারলে ব্যাগ কাঁধে অন্তত তিনমাসের জন্য নিখোজ হবো।
আমার তো পুরানো বই, গান, আসবাব, বাড়ীসহ পুরানো অনেক কিছুর প্রতি ভাললাগা কাজ করে। বইয়ের ভিতরে টাকাটা একটা টোকেন বলতে পারো, কারণ এখন আর এক ডলারের টাকা ছাঁপে না। কয়েন বানায়।
কোথায় নিখোঁজ হবা? শেষমেষ তুমিও বলতে চাও, হারিয়ে গিয়েছি এইতো জরুরী খবর 🙂
আমার বন্ধুয়া বিহনে
জ্বী 😀