গ্রহনের কালে দাড়িয়ে আমরা মোহগ্রস্ত হই। আলোকের খোঁজ করে বেড়ানো আমাদের চোখ ক্লান্ত হয় আলোকহীন ঘুটঘুটে অন্ধকারে। সেই সময়ে হায়েনার গর্জন অথবা শূকরের ঘোৎ ঘোৎ শব্দে আমাদের কান বিদীর্ণ হয়। ঘুটঘুটে অন্ধকারেও আলোক সন্ধানী আমাদের চোখে শূকর গুলো ধরা পড়ে। তাদের ঘোৎ ঘোৎ তীব্রতর হয়। অথচ কী আজব! সেই ঘোৎ ঘোতানির মাঝেও অন্ধরা মায়া খুঁজে পায়। অন্ধজনেরা সত্যের খোঁজ করে শূকরের সাথে। তাদের নর্দমাস্নাত নোংরা শরীরের সাথে গা লাগিয়ে অন্ধরা আলিঙ্গন করে। অতঃপর তারাও অন্ধ বরাহ শাবকে পরিণত হয়। নিরীহ বরাহ শাবক গুলো সময়ের সাথে দাঁতাল হয়। সেই দাঁতের স্পর্শ আমরা অবশ্য সহসাই বুঝি না। অন্ধকার ম্লান করা অন্ধ বরাহের তীব্র আঁধারে আমাদের চোখ ধাঁধায়। সেই শূকরের পালের গা গুলানো গন্ধে আমরা নাক কুচকাই। শূকরের পালে আঘাত করবার জন্য অগ্রসর হই। আমাদের আগেই দাঁত খিচিয়ে হায়েনার দল আসে। আমাদের আঘাতে অথবা হায়েনার থাবায় ক্ষত বিক্ষত হয় শুকর। আমরা হায়েনার আগমনের তীব্রতায় উৎফুল্ল হই। আর তখনই আমরা বুঝি শুকরের মত হায়েনাও পরশপাথরের মত। অথবা সেটা শুধু হায়েনা ছিলো না। ছিলো অদ্ভুত কোন জন্তু। তার মাঝে হিংস্রতা ছিলো, তার মাঝে তেজ ছিলো, অথচ তার কালো অবয়বের উপরে আলোক ছিলো। আমাদের অনেকেই আলোকের খুঁজে সেই জন্তুকে ছুঁতে যায়। আর তারপরে আমরা দেখি আমাদের মাঝেকার কয়েকজন আমির চোখ জড়ো হয় সেই জন্তুর মাথার উপরের আলোয়। তাতে সেই আলোরঔজ্জ্বল্য বাড়ে না। শুধু আকারে বড় হয়। সেই আলোয় কিংবা বলা যায় সেই জন্তুর সামষ্টিক চোখে শুধু শূকর ধরা পড়ে। আপন ছায়ার আধারে ঢেকে যাওয়া আমাদের অবয়বকেও তাদের সাধারণ চোখে শূকর মনে হয়। বিভ্রান্ত চোখ নিয়ে আমাদের মাঝেকার লোকগুলো আমাদের উপর ঝাপায়। সেই জন্তুর মাঝে গজানো তাদের থাবায় আমাদের ক্ষতবিক্ষত করে। আমরা ক্ষত বিক্ষত হই। তারপরে আমরা গ্রাসিত হই সেই সময়ের কোন অজানা ধূসর গ্রাসে। সেই গ্রাসকে আমাদের অচেনা মনে হয় না। শুধু বুঝতে পারি সে আমাদের সরিয়ে নিয়ে যায় আলো থেকে আরো দূরে। সেই ধূসর গ্রাসের শেষ প্রান্তে গিয়ে আমরা আমরা বুঝি আমরা ফাঁপা বলয়ে মাঝে আবদ্ধ। আমরা চিৎকার করি, বলয় ভেঙে বেরিয়ে আসতে চাই। আমাদের আওয়াজ কারো কাছে শূকরের গোঙানি মনে হয়, কারো কাছে আহত হায়েনার আর্তনাদ মনে হয়। অথচ আমরা জানি আমরা এর কোনটাই হতে চাই নি। আমাদের বলয়ের উপরে নিঃসীম খোলা আকাশ থাকে, আর বলয়ের চারপাশে জেগে উঠা পাঁচিলের মাঝেকার ছোট জানালায় আমরা ধরণী দেখতে পাই। আমাদের সেই ছোট জানালায় আমাদের দৃষ্টিসীমা ম্রিয়মান হয়। হঠাৎ করেই আমাদের ফাঁপা কুঠুরী কুয়াশার রহস্যে নিমজ্জিত হয়। অথচ সেটা কুয়াশা নয়। কুয়াশার মত শান্ত অথবা ঠান্ডা নয় বরং ধোঁয়ার মত জ্বালা ধরানো। আমাদের আলো গুলোকে আমরা খুঁজে পাই না। কুয়াশার বিভ্রমে আমাদের কুঠুরীর জানালায় কখনো শূকর দাঁত খিচায়। রক্তাক্ত সেই শূকর যারা দলিত হয়েছিল আমাদের ও জন্তুর আঘাতে। অথচ তাদের উপরে দেবতা আছে, রক্তাক্ত শূকরের অন্ধ দেবতার আশীর্বাদে তারা উঠে দাঁড়ায় ক্রমে, তারপরে দাঁত খিঁচায়। আমাদের সত্ত্বাকে ধর্ষণ করে, আমাদের সত্যকে ধর্ষণ করে।সেই শুকরে দৌঁড়ে পালালে আমরা আশান্বিত হতে চাই। অথচ আবার সেই অদ্ভুত জন্তু দেখতে পাই। আমাদের বন্দিত্বকে তারা মুক্তি দেয় না। বরং আমাদেরকে আরো মোহগ্রস্ত করে তুলে। আমরা সত্যকে খুঁজি। সেই জন্তুর পিছনের দেবতার রূপ দেখতে পাই। সেই দেবতা অন্ধ নয়, তবে তার চোখ সেই জন্তুর চোখের চেয়ে প্রখর নয়। তাই তার কাছে আমরা আঁধারের কীট রয়ে যাই শুধু। নিস্ফল আক্রোশে আমরা হাত পা ছুড়ি আলোর জন্য। ফাঁপা কুঠুরীর উপরে আকাশে ঈশ্বরের খোঁজ করি। অথচ ঈশ্বর তখন এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছুর জন্য সকল আলো নিজের মাঝে নিঃশোষিত করে অন্তর্ধানে গিয়েছিলেন অথবা ঈশ্বর বলে কখনো কেউ ছিলো না আমাদের জন্য।
১৮ টি মন্তব্য : “মুক্তগদ্য: মোহাচ্ছন্ন গ্রহনের কালে”
মন্তব্য করুন
😮 😮 😮
বুঝি নাই।
ভাই, অন্তর্নিহিত অর্থ মাথার উপর দিয়া গেছে। তাই হা হইয়া গেছি।।
:-B :-B :-B
যেই লেখা অর্ধেক পইড়াই বুঝবি, সেইটা ৩য় শ্রেণীর, যা পুরা পইড়া বুঝবি তা ২য় শ্রেণীর, আর যা বারংবার পইড়াও বুঝবি না তা অসাধারণ। আর বুঝস যে নাই তা কাউরে বলার দরকার নাই। কয়েকটা প্রণাম ঠুইকা দিবি।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
তাইলে ভাই,
::salute:: ::salute:: ::salute:: 😀
বরাবরের মতই কড়া ব্লগ। ;;;
তোমারও কড়া মন্তব্য বরাবরের মতোই 🙂
হুম :-B
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
মানে কি?? 🙂
দিলিতো বিপদে ফেলে... একটা গুরু গম্ভীর ভাব নিয়ে থাকতে চাইছিলাম, মানে টানে জানতে চাইলে তো বিপদ 😛
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
'আমরা'-র আধিক্য বেশ চোখে লাগছে।
সম্পাদনা করে ৬০% মেদ ঝরিয়ে ফেলো, আরেকটু ঝরঝরে লাগবে।
নূপুরদা, আপনার মন্তব্য এবং সাজেশন সবসময়ই বড় প্রেরণা। আমার লেখাতে মাঝে মাঝেই কিছু জিনিসের রিডানডেন্সি চলে আসে, যেমন আর, অথবা কিংবা জাতীয় অব্যয়, তার সাথে এই আমি ও আমরা নতুন যোগ হইছে। চেষ্টা করছি জিনিসটা ঝেড়ে ফেলার। আপনার পর্যবেক্ষণ ও পরামর্শ সাদরে গৃহীত হলো।
ভালো থাকবেন।
দুটো জায়গায় মনে হলো একটু ধাক্কা খেলাম পড়তে গিয়ে; মানে একটু ছন্দপতন টাইপ। (আতেলীয় ইমো)!!!
পর পর দুবার মত ক্যামন জানি লাগতেছে ভাইয়া।
অফটপিকঃ পুরোটা পড়তে গিয়ে একেবারে প্রথম কিছুক্ষণ কেন জানি বর্তমান দিনের কিছু ব্যাপারের সাথে একটা আবহ পাচ্ছিলাম; পাঠক সম্ভবত নিজের মতো করেই লেখাটার পরিচর্যা করেছে বলা যায়।
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
হুম্ম, লেখা ভালো লেগেছে
তবে একই অব্যয় এর একই বাক্যে অধিক ব্যবহার মাঝে মাঝে খারাপ দেখাচ্ছে।
ধন্যবাদ ।
নাজমুল তুই আসলেই এক্টা মাল।তুই জানস অব্যয় কি???কোনদিন বাংলা ব্যাকরণ হাতে নিছিলি!
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
:clap: :clap: :clap:
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
হায়েনার গরজন বা অট্টহাসি!!?
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
আরেকটা কথা ভুলে গেছি বলতে গ্রহণ না গ্রহন
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ