স্বপ্নেরা সুন্দর হয়,ভালোবাসা বিষণ্ণ হয় , জন্ম হয় শুভ্র অথবা শীতল। আগমনে চঞ্চল হয় এক অথবা দুফোটা জলকণা। আর নিশ্চলতার মাঝে শুরু হয় গতির। সেই গতির টানেই শুরু হয় তার অথবা তাদের যাত্রা।শুভ্রতার বুক হতে সে নেমে আসে কেবল। আঁধার অরণ্য তাকে আলো দেখিয়ে শোনায় একটানা একঘেয়ে নৈঃশব্দ্যের গান। সেই গানে তারা সঞ্চারিত হয় ক্রমশ। পাথরের বুক চিড়ে বের হয়ে আসে যেন।জন্ম হয় শুভ্র, শুভ্রতা বিলীয়মান হয় জীবনের গতিতে।তপ্ত রৌদ্র বেগবান করে তার স্রোতকে।নিশ্চল পাথুরে ভালোবাসায় বেড়ে উঠে সে ক্রমাগত বিদীর্ণ করে তার জননীর বুক অথবা সে জননী যেন হাসিমুখে বরণ করে নেয় জন্মের বেদনা। সে অথবা তারা ছুটে চলে বারিধারা হয়ে ক্রমাগত জীবনের স্রোতে।
তারপরে , তারপরে গান শুনে সে। শব্দের গান ক্রমাগত তার কানকে বিদীর্ণ করে। তার বেড়ে উঠার পথ ক্রমাগত পঙ্কিল হয়।সে তাদেরকে দেখতে পায় না কিছুদূর গিয়েই। পথ আলাদা হয়ে যায় তাদের– অথবা তারাই আলাদা করে নেয় তাদের চলার পরিধিকে।চলার পরিধি বড় হয়, বড় হয় জন্মের মত কষ্ট নিয়ে।ভালোবাসার নীল আকাশ ক্রমাগত দূরে সরে যায় ধূসর বিষণ্ণতা নিয়ে।তবু সে ছুটে চলে দূরের আকশের সাথে কথা বলে। তাদের মনে জাগে জন্মের কথা, পাহাড়ের কথা নৈঃশব্দ্যের কথা।এগিয়ে যায় সে সময় অথবা জীবনের স্রোত বেয়ে।তার পথ বেয়ে হয়তো নতুন বারিরা আসে। আসতেই থাকে তারা ক্রমাগত….. কখনো চেনা কখনো অচেনারূপে।সেইসব বারিদেরও থাকে জন্মের গল্প অথবা ভালোবাসার গল্প অথবা দুটোই। কখনো সে টের পায় বিষণ্ন কোন নিস্তরঙ্গ গল্পের। যা বয়ে নিয়ে আসে কিছু তার মতো করেই তাদের মাঝে।
তার অথবা আমার অথবা আমাদের পরিসর বিস্তৃত হয়। আমরা জাগিয়ে যাই আমাদের পাশের কোন সত্তাকে অথবা আমরা দেই নতুন জন্মের। সেই জন্ম লাভ করে হয়তো শুভ্র বিষণ্ণতায়। আমাদের মাঝ হতেই জন্ম নেয় নতুন স্রোতের নতুন সময়ের নতুন জীবনের। আমরা এগিয়ে যাই “আমরা” হয়ে। কেউ কেউ হয়তো “আমরা” হতে চলে যায় আবার কেউ “আমরা”র মাঝে যুক্ত হয়। আমরা যেন দিগভ্রান্ত কোন এক তরীর মত ইতস্তত ছুটে বেড়াই……কখনো নোঙর করি কোন এক অজানাতে। তারপরে “অজানা” পুরোপুরি জানা হবার আগেই আমরা জন্ম দেই বিরহের।বিরহের বিষাদ আমাদের কাছে বিদায়ী সূর্যের রক্তিম আভা মনে হয়। আমাদের ভালোবাসার আকাশের কষ্টে আমরা মুষড়ে যাই যেন।
আমি অথবা সে অথবা আমাদের গল্প এগিয়ে চলে।আমি অথবা সে আমাদের জন্য অথবা “আমরা” তার জন্য অথবা আমার জন্য।বিরহ বিষাদ স্বপ্ন জন্ম ভালোবাসা নিয়ে আমরা ক্রমেই ছুটে যাই। আমাদের চলার পথ আর আগের মত পাষাণ বিদীর্ণকারী গতি নিয়ে যায় না। পিছনের স্রোত আমাদের ক্রমে এগিয়ে নিয়ে যায়। জোছনার গল্প স্বপ্নের গল্প হয় না আগের মতো।ভালোবাসা নিয়ে আকাশ আমাদের কাছে আসে কান্না অথবা বৃষ্টির ন্যায় আমাদের রূপ নিয়ে। আমরা জোছনার গল্প নৈঃশব্দ্যের গল্প পাহাড়ের গল্প বলে চলি কেবল।ভালোবাসার আকাশ স্বপ্নকে মেলে ধরে কোন এক জোছনা ভেজা রাতে।
কান্নারা কষ্ট হয় না ……. আকাশের ভালোবাসা হয়ে সে মিশে যায় আমাদের মাঝে। আমরা এগিয়ে যাই। তারপরে আবার যেন আমরা অথবা তারা থেকে আমি অথবা সে হয়ে যায়। তার পথ ধরে এগি্যে যেতে থাকে। হঠাৎ করেই তার সামনে শূন্যতা অথবা অসীমত্ব দেখতে পায় সে। অসীম নীলের মাঝে সে ছড়িয়ে যায় মৃত্যুর নীলে নীল হয়ে।জন্মের মতো বিষণ্ণতা নিয়ে তা হয় না। বরং সে চলে যায় জোছনার স্বপ্ন সবার মাঝে ছড়িয়ে। সেসময় আকাশ লাল থাকে বিরহ বিষাদে।
😀
এরিক মারিয়া রেমার্কের স্বপ্ন-মৃত্যু-ভালোবাসা আমার খুব প্রিয় একটি বই।ব্লগের নামের সাথে মিল দেখে অনেক ভালো লাগলো 🙂
:thumbup:
এরিক মারিয়া রেমার্কের বইটার নাম তো 'আ টাইম টু লাভ এন্ড আ টাইম টু ডাই' (অরিজিনাল জার্মান নাম অবশ্য উচ্চারণ করতে পারি না :P)। সেবা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত জাহিদ হাসানের অনুবাদটার নাম 'স্বপ্ন মৃত্যু ভালোবাসা'। 😀
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
প্রথম প্যারাটাই সবচেয়ে ভালো লাগছে।
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
ধন্যবাদ ভাইয়া। আসলে লেখার শেষে একটা ছোট ডিসক্লেইমার দিতে চেয়েছিলাম, পরে দেইনি। ব্যাক্তিগত বিষণ্ণতা বোধে আক্রান্ত হয়ে কিছু ভাবনার সমষ্টি এই ব্লগ।পাঠকের ভালোলাগা লেখকের তৃপ্তি।
এই লাইনটা খুব পছন্দ হইছে। অনুমতি দিলে পরে কপিরাইট সহ ব্যবহার করতে চাই 🙂
আর এই নামের এরিক মারিয়া রেমার্কের বইটা খুব খুব পছন্দ 🙂
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
কপিরাইট ছাড়াই ব্যবহার করা যাবে। আমার সব লেখাই ওপেন সোর্স। কপিরাইট নাই। 🙂
ভালো লাগলো।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
🙂
হেভি গদ্য দিলা দেখি!
বিষাদে ভরা গদ্য।
আজকে দেখি সবাই মন খারাপ করা লেখা দিচ্ছে...
এই লেখার ফিলসফিটা ভালো লাগলো...
আপনার কম্প্লিমেন্ট প্রেরণাদায়ী।
বিষাদ অবশ্য আছে লেখায়। আসলে ঐ যে বললাম, ব্যাক্তিগত বিষাদবোধে আক্রান্ত হয়ে লেখা। ব্যাক্তিগত ভাবনা খুব প্রভাবিত করেছে।
ফিলসফিটা আসলে সহজকে ঘুরিয়ে কঠিন করে দেখার চেষ্টা 🙂