এর সাথে আখ্যায়িকা -১ এর কোন সম্পর্ক নেই।
****উৎসর্গ তাদের যারা বৃষ্টি ভালোবাসেন কিংবা বাসেন না।
কিছুটা বিস্ময় আর কিছুটা বিরক্তি নিয়ে রিক্সাওয়ালা তাকিয়ে আছে তুষারের দিকে।ভরদুপুরে কেউ ঘন্টা হিসাবে রিক্সায় উঠতে পারে তা বোধ করি তার জানা নেই।কিংবা আছে অবশ্যই কিন্তু তা যুগলবন্দী যুবক আর যুবতী। এমনিভাবে একা একা ভর দুপুরে কারো যদি ঘন্টা ধরে রিক্সা ভ্রমনের শখ চাপে তার মস্তিষ্কের সুস্থতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করাও বিচিত্র নয়।রিক্সাওয়ালার বিরক্তির কারণ বুঝেই কিনা তুষার বলল,মামা আপনার যত আস্তে ইচ্ছা চালাবেন।আর দুঘন্টায় আপনার যা রোজকার হত তাই পাবেন।এরপর রিক্সাওয়ালার রাজি না হয়ে উপায় নেই।
দুপুরের রোদ অবশ্য আজ অতটা তীব্র নয়।চলতে থাকে তার রিক্সা ধানমন্ডির মধ্য দিয়ে।এই জায়গাটা খুব ভালো লাগে তুষারের।অভিজাত অথচ কৃত্রিমতা বিবর্জিত।গুলশান বনানীর কথা ভাবলেই তার মন বিরক্তিতে ভরে যায়।রিক্সাওয়ালার দিকে তাকায় সে।জগতের সকল বিরক্তি নিয়ে সে রিক্সা চালিয়ে যাচ্ছে।কিছুটা খারাপও লাগে তুষারের।এই একবিংশ শতাব্দীতে মানুষ হয়েও তাকে টানতে হচ্ছে মানুষকে।যেন সেই মধ্যযুগের গাধা ঘোড়াদের মত।মানবিকতার চরম অবমাননা করেও আমরা মুখে বলে যাচ্ছি বড় বড় বুলি।সভ্যতা সুশীলতা ইত্যাদি।আমরা আসলে কতটুকু সভ্য?মনে এই প্রশ্ন জাগে।একা একা আকাশ কুসুম ভাবতে থাকে।মনে পড়ে ভার্সিটি থাকার সময় রাতের ঢাকা রিক্সায় পরি ভ্রমনে বেরুত ও আর শুভ্র।শুভ্রটা এখন আর নেই দেশে।সে সুদুর বিদেশে।ওর কি মনে এঢেশের কথা।এই সুন্দর দারিদ্র ঢাকা দেশকে।নাকি ভুলে গেছে ঐ দেশের চাকচিক্যের মোহে।
বৃষ্টির ফোটার পরশ তার গায়ে লাগতেই তার ঘোর ভাঙে।নামছে বৃষ্টি।তার মনের দুঃখভাব কেটে যায়।তার জায়গায় মনে জাগে আলোড়ন । উহু। ঝরঝর বদলের অমিয় বর্ষন তার মনকে ভাসিয়ে দেয় এক অপার্থিব আনন্দে।রবিবাবু গান রচনা করেছিলেন যেন তার জন্য এমনই মনে হয় তার।মনের আনন্দে রবীন্দ্রসংগীত ভাজতে থাকে।বৃষ্টির এএক মোহনীয় রূপ যেন।চারদিক সাদা শুভ্র।শ্বেত সুন্দরী বৃষ্টি ভাসিয়ে দিচ্ছে যেন চারপাশকে।রিক্সার হুড ফেলে না সে।আকাশের দিকে তাকিয়ে অবগাহন করতে থাকি ঘন ঘোর বর্ষাকে।বৃষ্টির ধারা তার নরম হাতে তাকে পরশ বুলিয়ে যায় প্রেমিকর মত।আহা ।কী স্বর্গীয় শান্তি।
এমন সময় হঠাৎ, হ্যা হঠাৎই চোখে পড়ে দৃশ্যটি।তার রিক্সার পাশে একটি বস্তি।বৃষ্টির আঘাতে বেড়ার ঘরের দেহটি যেন চালুনির মত শত ছিন্ন হয়ে গেছে।সামনে থেকেও দরজা নেই।আর বৃষ্টি তার করাল গ্রাসে ভিজিয়ে দিচ্ছে ঘরটিকে।এক অসহায় মা সংগ্রাম করে চলেছেন তার কোলের শিশুটিকে বৃষ্টি হতে বাচাতে।কে জানে হয়তো শিশুটি অসুস্থ।বৃষ্টি ভিজলে নিউমোনিয়া হয়তো হয়ে যাবে।মা আপ্রান চেষ্টা করে যাচ্ছেন শিশুটির শরীরকে বৃষ্টি হতে দূরে সরিয়ে রাখতে।তিনি যতই ঢাকছেন ততই বৃষ্টি যেন রূপকথার রাক্ষসীর মত জড়িয়ে ধরছে শিশুটিকে।মা পুরো ভিজে গেছেন।আর তিনি পারছেন না সংগ্রামে।হেরে গেলেন বলে।তবু যেন হাল ছাড়বেন না।
এরপর কী হল জানার সৌভাগ্য কি দুর্ভাগ্য তুষারের হলো না।তার রিক্সার গতি শত ছিন্ন বাড়িটিকে নিয়ে গেছে তার দৃষ্টি সীমার আড়ালে।আর তুষার? সে যেন কেমন বেদনা বোধ করছে তার বুকের বা পাশে।যে বৃষ্টির পরশ কিছুক্ষন আগেও তার কাছে প্রেমিকার কোমল পরশ মনে হচ্ছিল সে যেন এখন তীরের ফলার মত বিদ্ধ করে যাচ্ছে তার সারাটা শরীরকে।
(****আবারো বাসি পোস্ট দিলাম সামু থেকে।)
১ম 😀 😀 😀
লেখাটা বোধহয় দুবার পেষ্ট হয়েছে 😕 😕
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
ঠিক করে দিছি।
মুহূর্তকালের মধ্যে কত চিন্তার হৃদয়ছোঁয়া প্রকাশ!!!!
ভালো লাগছে :clap: :clap: ।
Life is Mad.
অনেক সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
১...
There are 10 kinds of people in this planet, those who understand binary and those who don't. :-B
২...
আগেই পড়ছিলাম। 😀
৩...
খুব ভালো লেগেছিল। এবং আবার লাগলো। প্রতিদিনের আগোছালো চিন্তাগুলো খুব সুন্দরভাবে ব্লগে তুলে এনেছো।
৪...
অসাধারণ। পৃথিবীর সকল মাকে :salute:
৫...
যতিচিহ্নগুলোর পরে একটা স্পেস দিলে পড়তে আরাম লাগে। 🙂
শেষের কথাটাই বেশি তাৎপর্যপূর্ণ।
মেগা কমেন্ট পড়ে টায়ার্ড হয়ে গেছি।
আর লিখতে পারতেসি না। 🙂 🙂 🙂 🙂
প্রথম জোকটা ভালো লাগে নাই? 😛
জোক!? আমি বড়ই ডর খাই ।
আমিন ভাই :boss: :boss: :boss:
ঝটিল হইছে :clap: :clap: :clap:
"আমি খুব ভাল করে জানি, ব্যক্তিগত জীবনে আমার অহংকার করার মত কিছু নেই। কিন্তু আমার ভাষাটা নিয়ে তো আমি অহংকার করতেই পারি।"
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
বুঝতে পারছি, লেখাডা জিহাদের জন্য এবং জিহাদ ছাড়া আর বাকি সবার জন্যেও :-B ;))
😀 😀 😀
এই ব্যাপারটা আমি নিজেও বুঝি নাই আগে!!!!
:khekz: :khekz: :khekz:
এই অংশটার ডিটেইলসে ঘাপলা আছে মনে হয়.........ভরদুপুরের কারণে বিরক্তি জাগতে পারে বিস্ময় জাগবে না। টানা দুঘন্টায় বেশি চাইবে......যুগল দেখলে আরো বেশি........আর টানা খ্যাপে তারা খুশিই হয়.............তবে আস্তে টানতে বললে তাদের বেশি কষ্ট হয়
যাই হোক আমার এই কথাগুলিকে বেশি গুরুত্ব দেয়ার দরকার নেই। কারণ পুরোটা মিলিয়ে চমৎকার অনুভূতির পকাশ ঘটেছে
:hatsoff:
আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই
ভর দুপুরের মাঝে আমাদের বয়েসী কোন ছেলে একা রিকশায় ঘুরছে ঘন্টা হিসাবে,প্রতিবারই রিকশাওয়ালাকে বিস্মিত হতে দেখেছি।
যা হোক ভাইয়া, অআপনার ভালো লেগেছে জেনে ভাল লাগল।
চিন্তায় ফেলে দিলেন...
বেশি চিন্তা করে আসলে লাভ নাই।
এই লেখাগুলি এই কারণেই সামুতে দুঃখবিলাস নাম দিছিলাম।
এই দুঃখ গুলি বিলাসিতার মতই।ভাবি অনেক ভেবে কষ্ট পাই । কিন্তু কিছু করতে পারিনা। সবকিছুর উপরে আমি একেবারেই ছা পোষা সাধারণ মানুষ,
🙁 🙁 🙁
ভাব তো। কজনই বা ভাবে এইভাবে।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
এভাবে ভাবিয়া অভাব তো দূর হয় না।
কী বলেন?
আমিন, সুন্দর লিখছ। :clap: :clap:
লেখা অনেক সাবলীল আর হৃদয়স্পর্শী।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। 🙂
তোমার দেখার চোখ আছে। লিখতেও পার বেশ। :boss:
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
আমার জন্য অনেক বড় কমপ্লিমেন্ট।
সত্যি কথা কী ব্লগে লিখার আগে পুরা নিজের লেখা কিছু কোথাও প্রকাশ করতে পারি নাই।
এই নিয়া আমার পোস্ট আছে একটা ।সময় পাইলে দেইখেন।
ধন্যবাদ ভাইয়া।
:thumbup: :thumbup: :thumbup: :thumbup:
😛 😛
কেন জানি তোমার এবং আন্দালিবের লেখায় আমি অনেক মিল পাই... :-B
(অবশ্যই চিন্তা-ধারা...লেখার স্টাইল নয়... :dreamy: )
লেখাটা ভাল লাগছে... :clap:
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
আমি কিছু বলব না এব্যাপারে। 🙂 🙂
আন্দালিব বরং বলুক।(যদি এই পোস্ট দেখে।)
লেখাটা ভাল লেগেছে :thumbup:
ধন্যবাদ।