শিরোনামহীন দিনলিপি

অনেকদিন ধরেই কিছুই লেখা হচ্ছে না। আমার সামনে দিয়ে কত ঘটনা ঘটে যায় কত গল্প উড়ে বেড়ায়- কিন্তু তা ধরার ফুরসত মেলে না। অলসতা আর সাথে কিঞ্চিত প্রতিকূলতায় ব্লগে আসা কমে যাচ্ছে। এই পোস্ট টি নিজের অস্তিত্বের জানা দিতে লেখা। আমার কেটে যাওয়া সময়ের গল্প। লিখতে গেলে অবশ্য আমার বরাবরই খাপছাড়া লাগে । গত কয়েকদিনে অনেক ঘটনাই ঘটে গেল। এত দ্রুত পরপর যে আমি নিজেই একটার ধাক্কা সামলাতে না সামলাতে আরেকটা ঘটে যায়।

প্রথম ভাবনায় আমার মনে যে বোধ আপাতত জন্মাচ্ছে তা হলো শূন্যতার। আমার কাছের মানুষগুলো সব একে একে পাড়ি জমাচ্ছে। কিছু কিছু অনুভূতি প্রকাশ করা কঠিন। তেমন একটা ব্যাপার হয়ে গেলো মর্তুজা শামসদের বিদায় দিতে গিয়ে। হারাধনের দশটি ছেলের হারিয়ে যাওয়ার মত ঘটনাগুলো খুব অদ্ভুত শু্ভ্র বিষে আক্রান্ত করছে অনুভূতিকে । খুব করে নস্টালজিক করে দিচ্ছে — আমার , আমাদের বুয়েটে ফেলে আসা সময় গুলো — আরো পরিষ্কার করে বললে আমাদের নিজেদের মাঝে কাটানো সময়গুলো– এখানে ওখানে অর্থহীন আড্ডাগুলোকে শেষ বলে দেয়া যাচ্ছে বেশ করেই । আবার এমন করে এক হওয়া হবে না হয়তো কখনও। বেশি ইমোশনাল হওয়া যাচ্ছে না লেখাটাতে আমার মাঝে আবেগের নিদারুণ অভাবে ।

বিসিএস নামক পরীক্ষা দেবার সৌভাগ্য হয়ে গেলো গত সপ্তাহে। অনেকদিন পর ছোটবেলার স্বাদ নিয়ে একটা পরীক্ষা দিলাম। বেশ লাগল দিতে। সারা জীবনে বিভিন্ন জায়গায় পরীক্ষা দিলেও পাশের সিটে ললনার সাক্ষাত এইবারই প্রথম। বুয়েটের গেঞ্জি লাগায়া যাওয়াতে নিজের প্রতিভা জাহির করার প্রয়োজন পড়ে নাই বরং সেই নারী নিজ আগ্রহেই আমার সাথে কথা বলল। খুব সম্ভবত এই অভিজ্ঞতাও প্রথম। ২০ থেকে ২৫ টি বলে দিয়ে নিজের মধ্যে বেশ একটা হিরোইক ভাব চলে আসছিল। ভাবলাম পরীক্ষা শেষে মেয়ের থেকে খাওয়া না হোক অন্তত ফোন নম্বর পাওয়া যাবে। কিন্তু সবকিছুর শেষ কথা হলো সেই রমনীর নাম খানা ও জানা হলো না। পরীক্ষা শেষের কলেবরে কোথায় যেনো হারিয়ে গেলো। এক ঘন্টার আলাপ চারিতাই শেষ হয়ে থাকলো অদ্ভুত। এ জিনিসটার মাঝেই এক ধরণের অদ্ভুত মাধুর্য খুঁজে পেলাম।

ব্লগে না থাকলেও ফ্যান্টাসী প্রিমিয়ার লিগে বেশ হিসেব কষেই আছি গত কয়েকদিন। এই সপ্তাহে সব লিডারদের আগাম হূমকি দিয়ে রাখলাম। ( দেখি হুমকির চোটেই যদি আলোচনায় আসা যায়। ) বাংলাদেশের ক্রিকেটে জয় দেখেও ভালো লাগলো। প্রতিদিনের শত ঝামেলা বিরক্তি যানজট লোডশেডিং নিয়ে গালি দিতে দিতে তেতো হয়ে যাওয়া মুখে একটু মিষ্টতার ছোঁয়া পাচ্ছি। বাংলাদেশের ফুটবল আবার জেগে উঠছে দেখে ভালো লাগছে। আর ভালো লাগছে আমাদের বুয়েটের মারুফ ভাইয়ের মোহামেডানের কোচ হওয়ার খবরে। এমিলির মোহামেডানে আসার খবরটাও খুব মজা দিলো। যদিও ইন্টারন্যাশনাল ক্লাব ফুটবলে বিপদে আছি। আমার ম্যানইউ র বিপদ আর তা দেইখ্যা এন্টি ম্যানইউদের লাফালাফিতে জীবন অতিষ্ট।

সামনে মাস্টার্স পরীক্ষা আর তারপরে জিআরই। দুই মাসের মাঝে এমন অদ্ভুত কম্বিনেশনের তিনটা পরীক্ষা আর কেউ দিছে কিনা সন্দেহ। ও হ্যা, আরেকটা ব্যাপার দেখলাম তিন বা চার দিন আগে সিসিবিতে আমার অবস্থানের এক বছর হইছে। এই টা নিয়া একটা আজাইরা পোস্ট দিমু ভাবতেসিলাম, সময়ের অভাবে হইলো না। তয় যেটা বাইর হইলো সেটা রবি বাবুর সমাপ্তি গল্পের নায়িকার চিঠির সাথে যথেষ্ট মিল পাইতাসি।

১,৪৪৯ বার দেখা হয়েছে

৩২ টি মন্তব্য : “শিরোনামহীন দিনলিপি”

  1. এহসান (৮৯-৯৫)
    আমার ম্যানইউ র বিপদ আর তা দেইখ্যা এন্টি ম্যানইউদের লাফালাফিতে জীবন অতিষ্ট

    :grr: :))

    সামনে মাস্টার্স পরীক্ষা আর তারপরে জিআরই। দুই মাসের মাঝে এমন অদ্ভুত কম্বিনেশনের তিনটা পরীক্ষা আর কেউ দিছে কিনা সন্দেহ।

    শুভকামনা রইলো

    জবাব দিন
  2. মেহেদী হাসান (১৯৯৬-২০০২)

    হা হা হা হা......... ফ্যান্টাসি লীগে তুই তো ২য় সপ্তাহে পিছিয়ে গেছিস... আমি তোর উপরে আছি... :awesome: :awesome:

    সকল পরীক্ষার জন্য শুভ কামনা রইলো।

    ঐ মেয়ের সাথে তোর আবার দেখা হলেও হতে পারে... :dreamy: :dreamy:

    জবাব দিন
  3. বুয়েটের গেঞ্জি লাগায়া যাওয়াতে নিজের প্রতিভা জাহির করার প্রয়োজন পড়ে নাই বরং সেই নারী নিজ আগ্রহেই আমার সাথে কথা বলল।

    তারপর

    ভাবলাম পরীক্ষা শেষে মেয়ের থেকে খাওয়া না হোক অন্তত ফোন নম্বর পাওয়া যাবে। কিন্তু সবকিছুর শেষ কথা হলো সেই রমনীর নাম খানা ও জানা হলো না। পরীক্ষা শেষের কলেবরে কোথায় যেনো হারিয়ে গেলো।

    ব্যাপার না আমিন ভাই,নেক্সট টাইম

    জবাব দিন
  4. রকিব (০১-০৭)
    তয় যেটা বাইর হইলো সেটা রবি বাবুর সমাপ্তি গল্পের নায়িকার চিঠির সাথে যথেষ্ট মিল পাইতাসি।

    নায়িকা!!! 😛 😛 😛
    ভাইয়া বিসিএস সাফল্যের পোষ্টের জন্য প্রতীক্ষায় রইলাম।


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন
  5. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    অনেক দিন পর তোর লেখা পেলাম...

    মারুফ গতবারো মোহামেডানের কোচ ছিল... এমিলি আবাহনী ছেড়ে মোহামেডানে যাওয়ায় বেশ চিন্তিত ছিলাম, তবে আবাহনী ওর জায়গা পূরনে রবিন, আর এনামুল দুইজনকে দলে টানছে বলে এখন মোটামুটি নিশ্চিত। আর মোহামেডান ওয়ালী ফয়সালকে দলে টানতে গিয়ে রজনীরে হারাইলো 😀 আবাহনীর দলবদল দেখে এবার বেশ মজা পাইছি। মোহামেডান আবাহনীর যেখানেই হাত দিছে আবাহনী সেইখানে দুইটা করে রিপ্লেস্মেন্ট নিছে(অর্ধেকই মোহামেডান থেকে 🙂 )


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।