মেয়েটা আর আমি…

এক বন্ধুর বিয়েতে পরিচয়_

প্রথম দেখাতেই হলো সংশয়।

জানি না, কেন তার ঐ নীলশাড়ি

আমার মনটা নিলো, অচিরেই কাড়ি।

 

আমি শান্তমনা ছেলে_

বন্ধুপাগল মনটি আমার

রাতদিন থাকে তালেতালে।

আর, কী যেন সে খোঁজে

আপন মনেতেই গান বাজে।

দিনদুপুরে নায়ক বেশে

বাইরে যায় কাজে।

 

সেই মেয়েটি সাজে_

লালটিপ পরে নীলশাড়িতে

ভালো লাগে তার লাজে।

আর, তার চোখেতে চোখ পড়লে

কথা যায় থেমে ;

রাজকুমারীর জন্যে আমি

ভেতরে যায় ঘেমে।

 

এমন সময় পথে_

একটি ঘটনা ঘটে,

সত্য সেটা বটে ;

সবার কানে রটে।

 

করেছি আমি সূচনা_

পড়ে শুনিয়েছি তাকে

আমার প্রেমের রচনা।

হয়েছিলো তার জন্য

জীবনে কিছু অনুশোচনা।

 

বলেছিলাম আমি_

হতে চাই তোমার স্বামী,

তুমি অনেক দামি ;

তোমাকে দেখলেই আমি ঘামি।

 

সে আমার দিকে_

এক উদ্ভট দৃষ্টিতে দেখে

আর বলে,

চাই নাকো আমি প্রেমপত্র

হতে পারবে কি ধনী পাত্র?

তুমিতো সবেমাত্র ছাত্র।

 

আমার নেই গাড়ি-বাড়ি_

কিন্তু আছে আমার মায়ের

ভালোবাসা আর দোয়ায় ভরা

রঙ-বেরঙের দামি শাড়ি।

মনে আছে আত্মবিশ্বাস_

আর ভালোবেসে আমি,

তোমার জন্য দিতে রাজি

আমার সেই শেষ নিঃশ্বাস।

 

মেয়ে গেলো পটিয়া,

চারিদিকে গেলো রটিয়া ;

আমি বলি, তুমি আমার টিয়া

সে বলে, আমায় করো বিয়া।

কিন্তু, কী দিয়া?

 

পরিবারে হলো জানাজানি_

না করে কেউ মানামানি।

চারিদিকে শুধু কানাকানি

দুজনেরই টানাটানি।

 

এমন সময়,

এক কাজীবাবা

সে তো বড়পাজি বাবা!

খাতা খুলিয়া বলিলেন,

বলো, কবুল।

শানাই বাজাইয়া, আমার ঘরে

ঝুলিলো ফুল-বকুল।

 

পালিয়ে বিয়ে_

নিয়ে আমার টিয়ে,

পড়িলাম মায়ের পায়ে

বেহেস্তের দায়ে।

 

মা বলিলেন,

ক্ষমা নেই তোর, বৎস

কিনে খা গিয়ে মৎস্য।

বলিলাম আমি,

আমার পকেট ফাঁকা

আর পেটটাও খালি

ভালোবাসার কি এই সেলামি?

 

জীবন আমার চলছে একা

শ্বশুরের সাথে হয়, প্রতিদিন দেখা।

ঘরজামাই, নাই কামাই

ইস্‌, এভাবে বলো না আমায়।

 

টিয়া আমায়, করে বিয়া

বকে শুধু, মন দিয়া।

ও আমার সোনার প্রিয়া

না করে যেন পরকীয়া।

 

অবশেষ এক গগনের চাঁদ_

নামিয়া আসিলো ঘরে,

মুখ বাড়িয়াছে আর পকেট খালি

চিন্তায় আছেন আব্বাজানে।

 

বাবা, আমি চকলেট খাবো

খেলবো পুতুল খেলা

পাশের বাড়ির ছেলেটি আমায়

নিয়ে যাবে দেখতে মেলা।

 

মনে মনে ভাবি_

মা রে আমার

ঘরজামাই রাখার, সামর্থ্য নাই।

যে-ভুল আমি, করেছি মানি

জীবনে তার কোনো অর্থ নাই।

 

যোগ্যতা চাই, নইলে বিদায়।

পালিয়ে নেই সুখ।

আমাদের কথা ভুলিস্‌নে মা রে,

তুই যে আমার মুখ।

 

ভালোবাসারও যোগ্যতা লাগে

কথা বেচে কি আর পেট সাজে

একথা গুরুজনেদের মাঝে

আমার কানে এখন বাজে।

 

রঙিন স্বপ্নে, যাস্‌নে পালিয়ে

কঠিন বাস্তবতাকে দিস্‌নে ভুলিয়ে

থাকিস্‌ মা রে তুই, শিক্ষাকে জড়িয়ে,

দেবে সে তোর, যোগ্য ভালোবাসা মিলিয়ে।

-সমাপ্ত-

মোঃ সাদাত কামাল/ ২৩।৮।২০১২।

মেহেরপুর।

 

 

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।