নারীর কোন দেশ নাই – ২ : একটি বিচার ও প্রাসঙ্গিক কিছু প্রশ্ন

নারীর কোন দেশ নাই

এই পৃথিবীতে অদ্ভুত এক দেশ আছে
সেই দেশে অদ্ভুত এক নগর আছে
সেই নগরে অদ্ভুত এক কম্যুনিটি আছে
সেই কমুনিটির অদ্ভুত এক সামাজিক যোগাযোগস্থল আছে
তার নাম ডট ডট ডট ডট…

একদা ডট ডট ডট ডট-এর এক কনিষ্ঠ সদস্য আরেক জেষ্ঠ্যা সদস্যার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন কিছু কটুক্তি করলো যা সেই দেশের আইসিটি এক্টের ৫৭ ধারানুযায়ি শাস্তি যোগ্য অপরাধ।
মোবাইল কোর্টে এর নুন্যতম শাস্তি ছয়মাসের কারাদন্ড।

তাছাড়াও সেইদেশের সুপ্রিম কোর্টের দিকনির্দেশনা অনুযায়ীও তা শাস্তি পাবার উপযুক্ত এমন একটি অন্যয় যার তদন্ত কিভাবে করতে হবে তা দিকনির্দেশনাটির নবম ক্লজে দেয়া আছে।

ভিক্টিম চাইলেই এই ঘটনার জন্য আদালতের শরণাপন্ন হতে পারতেন। তা না করে তিনি ঘটনাটির বিচার চাইলেন ডট ডট ডট ডট কর্তৃপক্ষের কাছে।

এরপরই ঐ কর্তৃপক্ষ আস্তিনের নীচ থেকে একে একে যেসব যাদু বের করে দেখানো শুরু করলেন তার মধ্য দিয়ে “ভিক্টিম ব্লেমিং” থেকে শুরু করে “মেল শোভনিজম”-এর এক চুড়ান্ত ডিসপ্লে ঘটা শুরু হলো – এটা বললেও কম বলা হবে।

প্রথম যে যাদু তারা দেখালেন, তা হলো সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা না মানা।

নারীর প্রতি হয়রানির অভিযোগে সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশনা হলো কমপক্ষে ৫ জন নিয়ে তদন্ত করার যাঁদের সংখ্যাগরিষ্ঠই হবেন নারী ও এর প্রধানও হবেন যথাসম্ভব একজন নারী।
এটা করা হয় নাই।

দ্বিতীয় যাদু হলো, কর্তৃপক্ষ যাঁদেরকে অভিযোগকারিনীর অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিলেন, তারা অভিযোগকারিনীর অভিযোগ তদন্তের চেয়ে বেশি মনযোগি হয়ে উঠলেন অভিযোগকারিনীর দোষ-ত্রুটি অনুসন্ধানে।
যাঁদের কাজ, অভিযোগকারিনীর অভিযোগের সত্যাসত্য বের করা, তারা তা না করে হামলে পড়লেন অভিযোগকারিনীর উপরে আর একে একে আবিষ্কার করলেন,
১) অভিযোগকারিনী নাকি গেস্ট হিসাবে যাঁদের ইন্ট্রোডিউস করেন, তারা আপ-টু-দ্যা মার্ক নয়!
২) যিনি কটুক্তিটির প্রতিবাদ করেছিলেন, তিনি নাকি অভিযোগকারিনীর প্ররোচনায়ই তা করেছিলেন!!
৩) আর তাঁকে দিয়ে এটা করিয়ে তিনি নাকি ঐ সামাজিক যোগাযোগস্থল ব্যবহারকারীদের মনে এমনই গভীর রেখাপাত করেছেন যে তাদের সবার মানসম্মান(?) নাকি আজ ভুলুন্ঠিত!!!

(রেখাপাত বা উৎকন্ঠা একটা হয়েছিল ঠিকই তবে সেটা ঐস্থান ব্যবহারকারী নারীগনের নিরাপত্তার কথা ভেবে নাকি “ডট ডট ডট ডট”-এর ভাবমুর্তির কথা ভেবে, সেটা একটা মিলিয়ন ডলার কোয়েশ্চেন!!! উল্লেখ্য যে ঘটনা পরবর্তি দু’সপ্তাহে ঐস্থান ব্যবহারকারীগনের সংখ্যা একই রকমের থাকলেও ব্যবহারকারী নারীগনের সংখ্যা যে আশংকাজনকভাবে কমে গিয়েছিল, সেটা অন্যত্র বলেছি)

আশ্চর্য কথা হলো, তদন্তের দায়িত্ব পাওয়াগনের ভাষায় উপরের ঐ তিনটিই নাকি অভিযোগকারিনী অপরাধ, আর তিনি তাতে দোষী। তাই তাঁকে এখন শাস্তি পেতে হবে।

তৃতীয় যাদু হলো এমন এক হাস্যকর বিচার যা আর কোনো সামাজিক যোগাযোগস্থলে কষ্মিনকালে হয়েছে বলে মনেহয় না।

প্রিন্সিপালস অব ন্যাচারাল জাস্টিস বলে:
ক) কাউকে শাস্তি দিতে হলে তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে।
খ) কিন্তু তার আগে তাঁকে অভিযোগ জানাতে হবে।
গ) তারও আগে থাকতে হবে ঐ অভিযোগ উত্থাপনকারী এক বা একাধিক অভিযোগকারী।
ঘ) আর হ্যাঁ, অভিযোগকারি ও বিচারক কখনোই এক হতে পারবে না।

এই ক্ষেত্রে হয়রানি অভিযোগ তদন্তে সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনার অমান্য করে নিযুক্ত করা যে তদন্তদলটি নিয়োগ করা হলো, তারা অভিযোগের তদন্তের চেয়ে বেশি মনযোগি হলেন অভিযোগকারিনীর প্রতি। আর তা করতে গিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ উত্থাপন করলেন তারা। সেই অভিযোগ ধর্তব্যে নিলে, তারা সেগুলার বিচারের ক্ষমতা রাখেন না। কারন তারা হয়ে পড়েন অভিযোগকারি। অথচ তারা সেই বিচারও করলেন। রায় শুনালেন। এদিকে আবার, এই অভিযোগের শাস্তি বিধানের আগে অভিযুক্তের আত্মপক্ষ সমর্থনের কোন সুযোগও তারা দিলেন না।

সব শুনে কেউ যদি বলে, “এটা কি মগের মুল্লুক নাকি?” – কি উত্তর দেবেন?

চতুর্থ যাদু ছিল, এমন ভাষায় অভিযুক্তের পক্ষে সাফাই গাওয়া যা শুনে মনে হবে, “বাচ্চা ছেলে, কি বলতে কি বলে ফেলেছে। কিছুক্ষণ পরে আবার মুছেও দিয়েছে। তাহলে আর সমস্যা কি?” মনে হলো অভিযোগ তদন্ত না, আভিযুক্তের পক্ষে ওকালতিতে নেমেছে এক এক জন…
তাছাড়া এটাকে যে অস্ট্রিচ সিনড্রোমও বলে, তাকি জানেন?

যাহোক, অশেষ গুনের অধিকারি ঐ তদন্তদলের আরও কিছু গুনপনার বর্ননা দেই।

আইসিটি এক্ট ও সর্বোচ্চ আদালতের সংজ্ঞানুযায়ি করা অভিযুক্তের অপরাধ তাদের কাছে গুরুত্বহীন বলে মনে হলেও তা প্রকাশ করা তাদের চোখে অপরাধ। – ভুল, মস্তো ভুল। একটি অপরাধ প্রকাশ না করলে বিচার হবে কিভাবে?
তাছাড়া প্রকাশকারী কিন্তু হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনেই তা প্রকাশ করেছেন কারন তিনি কারো নাম প্রকাশ করেন নাই। না অভিযুক্তের, না ভিক্টিমের।
সুতরাং অপরাধটি প্রকাশ করার মাধ্যমে কোন আইন ভাঙ্গা হয় নাই।
যে কাজে কোন আইন ভঙ্গই হয় নাই, সেটায় যদি প্ররোচনা দেয়া হয়ও, কি ভাবে তা একটা অপরাধ হয়, বুঝিয়ে বলেন দেখি?
তাহলে দেখা যাচ্ছে যে দ্বিতীয় অভিযোগটি ভিত্তিহিন, ধার্তব্যের উপযুক্ত নয়।

এটা যদি কোন অভিযোগ হিসাবে ধর্তব্যে নেয়ার মত না হয়, তাহলে তৃতীয় অভিযোগের কি কোন অস্তিত্ব থাকে? থাকে না…

এবার প্রথম অভিযোগ।
একজন মেম্বার যাকে একটি সামাজিক যোগাযোগস্থলের গেস্ট হিসাবে এনেছেন, তিনি সেখানকার গেস্ট হবার উপযুক্ত কিনা, সেটার মাপকাঠি কি? আর তাঁরা যে সেই মাপকাঠিতে উত্তির্ন হন নাই, তথ্য উপাত্ত দিয়ে সেটার যথাযথ প্রমান কি হয়েছে? তা যদি না হয়ে থাকে, কেবলই মনের মাধুরি মিশিয়ে কাউকে যোগ্য বা অযোগ্য বলার কি কোন সুযোগ আছে?
একটি হয়রানি অভিযোগ তদন্তে নিযুক্ত দলের টার্মস অব রেফারেন্স কি পারমিট করে ভিন্ন সময়ে আসা কোন গেস্টের যোগ্যতা নিরূপন করা? তা যদি না করে, তাদেরকে “ইউ আর ড্রাংক, গো হোম,” – না বলে আর কি বলার থাকে হে মাননীয় স্পিকার???

তাহলে দেখা যাচ্ছে যে,
– “সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনার বরখেলাপ করা একটি কমিটি”
– “প্রিন্সিপালস অব ন্যাচারাল জাস্টিস”-এর ধার না ধেরে
– আইসিটি এক্ট ও আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে
– মনগড়া ও কর্তৃত্ব বহির্ভুত অভিযোগ উত্থাপন করে
– নিজে নিজেই তাঁর বিচার কার্য সম্পন্ন করেছেন।

এই রকম একটা ক্যাঙ্গারু বিচার, যে “এব ইনিশিও” অস্তিত্বহীন, ভিত্তিশুন্য, অসার, সেটা বুঝতে কাউকে “রকেট সাইন্টিস্ট” হতে হয় না।

ভিক্টিম যদি নিচের কোন একটি করে, কি হবে তখন হর্তাকর্তাদের মান ইজ্জতের?

১) তাঁকে পাঠানো শাস্তির বে-আইনি আদেশটি আদালতে চ্যালেঞ্জ করা, অযথা হয়রানির জন্য ক্ষতিপুরন দাবী করা। এত সব নিয়ম বহির্ভুত কাজ করার পর, পারবেন সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে? ক্ষতিপুরন এড়াতে?
২) উকিল নোটিশ পাঠিয়ে বে-আইনিভাবে হয়রানি করার জন্য শাস্তি প্রত্যাহার ও ক্ষমা প্রার্থনা করতে আহ্ববান জানানো। উকিলের যুক্তি খন্ডাতে পারবেন তো?
৩) পত্র মারফত ২৪ ঘন্টার মধ্যে বে-আইনি, হয়রানি ও বৈষম্যমূলক শাস্তি প্রত্যাহারের একতরফা আলটিমেটাম দেয়া। যা করতে ব্যার্থ হলে, শাস্তি প্রত্যাহার হয়ে গেছে বলে ধরে নেয়া হবে। পারবেন, এটা সামলাতে? আপনারা যে কতটা প্রতিনিধিত্বশীল, আশাকরি সাম্প্রতিক কিছু মারামারির ঘটনায় ভালই বুঝেছেন। নারীর প্রতি হয়রানীর একটি ঘটনায় মেলসভনিজম দেখাতে গিয়ে, নিজেদেরকে আরও নগ্ন ও কমুনিটিকে আরও বিভক্ত না করলেই কি হচ্ছে না?

আমি জানি না, হয়রানির বিচার চাইতে এসে আরও বেশি হয়রানীর শিকার নারী সদস্যটি কি করবেন, কিন্তু এই কমুনিটিতে নারীরা যে আর নিরাপদ নয়, সেটা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। আর তা পাওয়াচ্ছেন এই কমুনিটির হর্তাকর্তা হয়ে বসা কতিপয় বালখিল্যতায় পরিপুর্ন ব্যক্তিবর্গ। বাই দ্যা ওয়ে, এই অনিরাপদ নারীগণ কিন্তু আমার আপনার স্ত্রী বা কন্য বা বোন, সেইটা মনে রাখবেন…

পরিশেষে মধ্যযুগের কবি আবদুল হাকিমের একটি কবিতার কথা উল্লেখ করছি:

“যে সবে বঙ্গেত জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী।
সে সব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি।”

– প্রকারান্তরে তিনি এসব লোকজনকে বেজন্মাই আখ্যা দিয়েছেন। তাঁর মতো করে আমারও বলতে ইচ্ছা হয়:

“নারীর গর্ভে জন্মি যে করে নারীর সম্মানহানী
সে সব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি।”

– এটা শুনে কারো যদি মনে হয়, আমি তাঁকে বেজন্মা বলেছি, ভেবে দেখুন তো, দায়টা কি আমার?

নাকি আপনার ঐসব তোঘলকি কার্যকলাপের?

৪,৫৪৭ বার দেখা হয়েছে

১১ টি মন্তব্য : “নারীর কোন দেশ নাই – ২ : একটি বিচার ও প্রাসঙ্গিক কিছু প্রশ্ন”

    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      এটাই হলো ব্লগের সুবিধা এবং অসুবিধা দুই ই...

      সুবিধা, কারন তারা পড়বে ঠিকই আর পড়ে গা জ্বালা ধরেও যাবে, কিন্তু প্রিটেন্ড করবে যে কিছুই জানি না।

      আর অসুবিধা হলো এই যে, তথ্য জানানোর এটা কোন অফিশিয়াল চ্যানেল না। যে কেউ এই বলে অস্বীকার করতে পারে, "আমি তো ব্লগ পড়ি না, তাই আমি জানি না।"

      বাই দ্যা ওয়ে, যুদ্ধপোরাধের রায় হবার পরেও তো আপিল হয়, করা যায়, এরকম একটা ক্যাঙ্গারু "কোর্টের" ততাধিক ক্যাঙ্গারু "রায়ের" বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না কোন যুক্তিতে?

      ভিক্টিমকে উৎসাহ দেয়া যেতে পারে এখানে আলোচিত এপ্লিকেবল ক্ষেত্রগুলি উলেখ করে ডিসিশনটা প্রত্যাহার করার জন্য আবেদন করতে।
      কোম্পানী এক্টের আধীনে স্থাপিত ও জয়েন্ট স্টক কোম্পানী হিসাবে নিবন্ধিত কোন প্রতিষ্ঠানই আইনের উর্ধে হয়, তারা খেয়ালখুশি মতো যা ইচ্ছা তাই করতে পারে না, এটা সবার বোঝা উচিৎ......


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন
        • পারভেজ (৭৮-৮৪)

          তাই নাকি?
          জেনে খুবই খুশি হলাম!!!

          এবারের লিখাটা সম্পর্কে যতটা ফিডব্যাক পেলাম, তা এইরকম -
          ১) বুঝি নাই,
          ২) ঘটনা কি?
          ৩) মটিভেটেড লিখা। মটিভে গুরুত্ব দিতে গিয়ে পাঠকের প্রতি অবিচার করা হয়েছে।
          ৪) বরাবরের মত সুখপাঠ্য হয় নাই। হিডেন এজেন্ডা খোজার কারনে পাঠকের মনযোগ বিক্ষিপ্ত হয়ে গেছে।
          ৫) ইত্যাদি...

          এতকিছুর পরেও একজনের কাছে ভাল লাগাটা আমার কাছে একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার!!!


          Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

          জবাব দিন
          • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

            বাস্তবে মেয়েরা কোন বিষয়ে অভিযোগ করলে এবং যদি তা কোন ছেলের বিরুদ্ধে হয় তবে খেলাটা সেভাবেই চলে যার বর্ণনা আপনি দিয়েছেন।

            আর এটা আপনি নগদ অভিজ্ঞতা থেকে লিখেছেন কিনা সেসব ভেবে মাথার উপর অনাহুত চাপ দিতে চাই নি। (সম্পাদিত)


            এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

            জবাব দিন
  1. ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

    বৈষম্য এই অ্যামেরিকাতেও বিদ্যমান। ইন ফ্যাক্ট কিছুদিন আগে আমি নিজেই এর ভূক্তোভোগি। অনেক সময় ফাইট না করে নীরবে প্রস্থান করতে হয়। সমতল ক্ষেত্র এখনও অনেকদূরে।

    লেখাটি দরকারি।


    “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
    ― Mahatma Gandhi

    জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      "বৈষম্য এই অ্যামেরিকাতেও বিদ্যমান।"
      হাজার হাজার বছর ধরে যে বৈষম্যটা গড়ে উঠেছে, যত সচেতনই হই না কেন, সেটা যে খুব শীঘ্রই মাইক্রোলেভেল থেকে দূর করা যাবে না - তা তো বুঝিই।
      প্রথমতঃ দেখার বিষয় হলো, ম্যাক্রোলেভেল কতটা বৈষম্য-নিরসন বান্ধব। এরপরে দেখতে হবে মাইক্রোলেভেলের রেসপন্স ট্রেন্ডটা কি পজেটিভলি স্লোপড নাকি নেভেটিভলি স্লোপড? আর এটাতে যদি পজেটিভ ও (n>1) এক্সপনেনশিয়ালিটি থাকে, তাইলে তো সোনায় সোহাগা...

      এটা বললাম এই জন্য যে, সম্প্রতি একজনের লিখায় পড়লাম, ইওরোপের অনেক জায়গায় নাকি সিচুয়েশন ড্রাসটিকলি ইম্পুভ করছে।
      অবশ্য ইওরোপের পলুলেশন ক্যারেকটারস্টিক্স আমেরিকার চেয়ে ভিন্ন। ওঁদের হোমোজিনিটি অনেক বেশি। আমেরিকার পপুলেশনের "ডাইভার্সিটি" নামে যে সুগারকোটটা দেয়া হয়, এর অপর নাম তো "বারো ভুতের প্যাচালি"।

      আরেকটা বিষয়েও আমেরিকা ও ইওরোপের পপুলেশনের এই ভিন্নতা বেশ চোখে পড়েছিল।
      শিশুদের জন্য কাছাকাছি ধরনের রিপ্রোডাক্টিভ হেলথ এডুকেশন চালু করেও ইওরোপের সফলতা যেখানে পৌছে গেছে ঈর্ষনিয় পর্যায়ে, আমেরিকার সফলতা খুজতে নাকি মাইক্রোস্কোপ লাগছে।
      এটার জন্যেও ঐ অতি ডাভার্সিটিটাই দায়ী বলে আমার ধারনা।

      "অনেক সময় ফাইট না করে নীরবে প্রস্থান করতে হয়"
      এটাও যে সবসময় অসহায়ত্বের জন্য হয়, তা হয়ত না।
      অনেক সময়েই আমার মনে হয়েছে, যারা ব্যাক আউট করছে, তারা এই ভেবে তা করছে যে,
      "এই যুদ্ধটা আসলে কার বিরুদ্ধে করছি? নিজের বাপ-ভাই স্থানীয়দের বিরুদ্ধেও কি?
      বাইরের পুরুষ, স্বামী, প্রেমিক, বয়ফ্রেন্ড আমাকে যে ম্যাল ট্রটমেন্টটার মুখোমুখি দাড় করিয়েছে, যার প্রতিকার চাইছি, চোখে সামনেই তো দেখতে পাচ্ছি নিজের বাপ-ভাই বা ঐ স্থানিয়রাও তাই করে যাচ্ছে তাদের কাউন্টার-পার্টের সাথে। আগে ঘরটাকে বৈষম্য-মুক্ত করতে না পারলে, বাইরে গিয়ে হবেটা কি?"
      অবশ্য এগুলোকেও কারন হিসাবে কম গুরুত্ব দিচ্ছি না কোনভাবেই:
      ১) সারাক্ষন যুদ্ধ করে ক্লান্ত হয়ে পড়া,
      ২) ময়দানে নিজেকে একা হিসাবে আবিষ্কার করা,
      ৩) যাঁদের স্বার্থে যুদ্ধ করাটা - সেই স্বগোত্রীয়দের কাছে এই শুনে হতদ্যম হয়ে পড়া যে "আমরা তো মানিয়ে নিতে পেরেছি, তোর এত পোড়েটা কিসে? নিশ্চয়ই তোরও কিছু সমস্যা আছে..."
      ৪) ইত্যাদি!!!

      "সমতল ক্ষেত্র এখনও অনেকদূরে"
      অস্বীকার করার কোন উপায় নাই। তবে কেউ কেউ (শুনেছি স্ক্যান্ডেনেভিয়াসহ ইওরোপের আরও কোন কোন অংশ) নাকি তাঁর অনেক কাছে পৌছুতে পেরেছে সেটা কিন্তু একটা ইঙ্গিত যে সুদুর ভবিষ্যতে একদিন ক্ষেত্রটা সবার জন্যই সমতল হবে।
      তখন শিশুরা বইএ পড়ে অবাক হবে যে "একসময় এই পৃথিবীতে নারীদের সাব-হিউম্যান হিসাবে ট্রিট করা হতো" - ঠিক যেমন আমরা অবাক হয়েছিলাম সেটা পড়ে যে "...তখন আরব দেশে কন্যা সন্তানদের জীবন্ত কবর দেয়া হতো..." (পরে যদিও জেনেছি আরবের বাইরে অনেক স্থানে কন্যাভ্রুন হত্যার মাধ্যমে প্রকারন্তরে কাজটা এখনো করা হচ্ছে)...

      শেষ কথা হলো, "যত যা ই ঘটুক, একদিনের জন্যেও যুদ্ধের মাঠ ছাড়া যাবে না। ক্রমাগত চেষ্টা করেই যেতে হবে। প্রতিপক্ষকে এটা বুঝতে বাধ্য করতেই হবে যে দে আর নট ডুইং এনি মার্সি। যোগ্যতরের উত্থান গায়ের জোরে রোখা যায় না..."


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।