আই ওয়াজ টাচড বাই এন এঞ্জেল

বান্ধবি পর্ব
========
কথা ছিল, এইরকম এক সন্ধ্যায়
তুমি আসবে।
তোমার ঝোলায় থাকবে
স্মিরনভ অথবা ভদকা এবসলিউট।
কথা ছিলো, আকন্ঠ পান করবো
আমরা দুজন, সারাসন্ধ্যা ধরে……

বিয়ারের পরেই তোমার প্রিয় পানীয়
ব্লাডি মেরি সাজাতে তাই
টমাটো জুস, লেমন জুস,
টাবাস্কু আর সল্ট-পিপার নিয়ে
বসেছিলাম আমি।
আর নিজের জন্য ছিল প্রিয় পানীয়
ভদকা-লাইমের সকল উপকরন,
তোমাকে যা টানে না তেমন একটা…

তুমি এলে, আর বললে,
“রাস্তার বিশ্রি ট্রাফিক। আর তাতে আটকে
জীবন ভাঁজাভাঁজা। আনতে পারিনি,
যা চেয়েছিলাম তা। বিয়ারে চলবে?”

তুমি জানো, বিয়ার রোচে না আমার,
বললাম, “হুম। দেখি…”
ওটুকু ইঙ্গিতই যথেষ্ট ছিল তোমার জন্য।
আর তাই ছুটে বেরিয়ে গেলে।
ভীর ঠেলে, ঘন্টাখানেক পর যখন ফিরলে
হাতে এবসলুটের একখানা
ঝা চকচকে গোটা বোতল।

আমি ততক্ষনে কফি সাজিয়ে
বসে আছি তোমার পথ চেয়ে।
সিডিতে বাজছে সেলিন ডিওনের
“আই হ্যাভ বীন টাচড বাই এন এঞ্জেল…”
তুমি এসে বসলে মুখোমুখি
তোমার পানে বাড়ালাম কফির কাপ
আর তা নিতে গিয়ে অসাবধানতায়
তুমি ছুঁয়ে দিলে আমার হাত –

আমার শিরা-উপশিরায়
সেলিন ডিওন গেয়ে উঠলো আরবার
“আই হ্যাভ বীন টাচড বাই এন অঞ্জেল…”

বন্ধু পর্ব
======
সারা সন্ধ্যা আকন্ঠ পান শেষে
নেশাতুর চোখে তাকালে আমার পানে।
বুঝলাম, “উঠতে হবে এবার”।
মনের পর্দায় যতটা আসে
গভীর মমতায় ব্লাডি মেরী
সাজানোর দৃশ্য, ভদকা-লাইম
ততটা না। আর কফির কাপ
নেবার সময়ের ছোঁয়াছুঁয়িটা?
সেটাও কি মনেপরে?
বুঝি না, ঠিক বুঝি না……

বিদায় জানাতে এলে
সদর দুয়ার অবদি।
আধেক বোজা ঢুলু ঢুলু চোখে
জানালে বিদায় সম্ভাষণ।
আমি বুঝলাম, আজ তুমি নও,
আমাকেও ছুঁয়ে দিলো
কোন এক অপ্সরি
তাঁর অর্ধ-নিমিলিত চোখের
সম্মোহনি দৃষ্টিবানে।

বর্তমান
=====
আজকাল আর ব্লাডিমেরি ছুই না
খুব একটা। বরং
ভদকা-লাইমই টানে অনেক বেশী।
আর কি অবাক কান্ড দেখ,
তোমাকে দেখলাম বিয়ার হাতে বসা!

এসবই কি তবে আপ্সরী আর দেবদুতের
স্পর্শের ফল? আমি জানি না।
জানতে চাইও না………

১,৬৮৫ বার দেখা হয়েছে

১৪ টি মন্তব্য : “আই ওয়াজ টাচড বাই এন এঞ্জেল”

  1. পারভেজ (৭৮-৮৪)

    "দীর্ঘ সময় ধরে ১০ থেকে পনেরো জনের লাগাতার বিরল উপস্থিতি সিসিবিতে।
    দেখে যেমন পুলক জাগে, আশাহতও হই।
    পাঁচ ঘন্টার উপরে হলো, কবিতা দিয়ে বসে আছি, অথচ লিখাচুরি ধরতে এত ব্যস্ত সবাই (আমি সহ), যে কোন পোস্টে ঢোকার, একটু পড়ার ফুরসৎ বের করতে পারছে না কেউ...
    আহারে, এত কষ্টে নামানো কবিতা শেষ পানিতে যাবে?!?!"

    নেভার মাইন্ড, সিসিটার্স অন্ড ব্রাদার্স:
    আগে প্লেজিয়ারিজমের সমাধান হোক তো, তারপরেই না হয় আবার ব্লগ পড়া-পড়ি, কমেন্ট লিখা-লিখি করা যাবে।

    আই এম সো প্রাউড অব মাই সিসিবি "সিসিটার্স অন্ড ব্রাদার্স"

    টুপিখোলা সাধুবাদ জানাচ্ছি সবার জন্য...
    :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন
  2. সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

    :clap: :clap: :clap: :clap:

    নূপুরের ব্লগে তোমার কমেন্ট পড়ে অবশেষে এলাম তোমার কাছে, ভাইয়া! গত দুইদিনে টোকাটুকির আলোচনা ছাড়া অন্য কোন পোস্টে কিছু বলা হয়নি। মেজাজ খিঁচে আছে। গোয়েন্দাগিরি করতে অসহ্য লাগছে। সতি্য তো কতগুলো ভাল ভাল পোস্ট এলো। মুজিব ছাড়া এখন অবধি কারোটাই পড়া হলোনা।

    কবিতা বরাবরের মত জশিলা, ভাইয়া 😀

    জবাব দিন
  3. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    এই নেশাধরানো লেখাটা দিনের বেলা পড়লে কিছু ভাবতেও পারতাম না --- বলাও হতো না।
    বরং এই ভালো হল -- এখন জুত করে পড়তে বসেই দেখি নেশা হয়ে গেল।
    ব্লাডি মেরি ছাড়া বাকী সব অনুষঙ্গ যে আমার খুব প্রিয় তা আর বলে দিতে হবে না বোধ করি। সেইসাথে ছুঁয়ে গেল প্রেমের সতেজ নেশাতুর বর্ণনা।
    এখন, উইকডের রাত সাড়ে দশটায়, যদি বিয়ার বা ভদকা খাবার চিন্তা করি, বউ ঘর থেকে স্ট্রেইট বের করে দিবে। বাইরে আজকের তাপমাত্রা বেশ কম। 🙁

    জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      তোমার এই কমেন্টের একটা উত্তর লিখেছিলাম কিন্তু পাঠানোর আগেই সেটা হারিয়ে গেল।
      দেখি, আবার লিখার চেষ্টা করি তাহলে.........

      কবিতা লিখাটা মরন-নেশা না হলেও দুর্বার একটা নেশা যে, সেই সম্পর্কে এখন আর কোন সন্দেহ নাই আমার।
      কোন পংক্তি একবার মাথায় চেপে বসলে সেটা না নামানো পর্যন্ত মাথা ভার ভার লাগে।
      কবিতা লিখা তাই যতটা অন্যের জন্য, তারচেয়েও বেশী বোধহয় নিজের জন্যই।
      এইরকমের একটা ব্যক্তিগত ব্যাপারে যখন কোন পাঠক উচ্ছ্বাস দেখায়, মন না গলে গিয়ে কি পারে?
      আর তোমার কমেন্ট গুলা বরাবরই সিরিয়াসলি নেই কারন সেগুলা পড়লেই বোঝা যায়, কত যত্নে, মমতায় আর আগ্রহ নিয়ে তুমি কবিতাটা পড়েছো, সেটা শুধু না, সেটার নির্মাতাকেও বুঝতে এফর্ট দিয়েছো।
      এই জিনিষ গুলা বুঝলে, মন ভাল না হয়ে যায় কি করে?

      এই কবিতাটার পিছনে মজার একটা ছোট্ট গল্প আছে। দেখি একসময়ে লিখে জানাবো সেটাও...

      পাদটিকা: শীতের রাতে বের করে দেয়ার ভয়ে পানীয় গ্রহনে বিরত হওয়াটা তো বিরাট লাভজনক কাজ। কোনভাবে ক্রেতার কানে যদি এই ত্যাগ-স্বীকারের কথাটা পৌছানো যায়, তাইলে সেটা ক্যাপিটালাইজ করে রমরমা এক বানিজ্য করা যায় কিন্তু ব্রাদার!!! 😉 😛 😉 😛
      বিক্রেতার এমন ত্যাগ স্বীকারে ক্রেতাকে বকশিশ হিসাবে বাড়তি অনেক কিছু দিতে উদবুদ্ধ যে করবেই, এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
      কথা হলো, ভাবি কি সিসিবির পোস্ট দেখেন? না দেখলে তাঁকে এখন কি করে দেখানো যায় এটা?
      ক্রেতা জানতে না পারলে ঐ বাড়তি বকশিশ তো আর জুটবে না বিক্রেতার কপালে।
      তাই না? 😀 😀 😀 😀 😀 😀 হে হে হে... (সম্পাদিত)


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      এইটা তো ছিল আসলে ফার্স্ট ড্রাফট।
      আরও একটু ইমপ্রুভ করার ইচ্ছা ছিল।
      সুনামি নিয়ে ব্যস্ততার কারনে সেটা হয়ে উঠছে না।
      তবে করতে হবে।

      ভেবে দেখলাম মূল ঘটনাটা নিয়ে জমজমাট এক গদ্যও ফাঁদা যায়।
      সেই চেষ্টাও করার ইচ্ছা আছে। দেখি কতটা কি এগুতে পারি......

      কাব্য করা বা কাব্যরসিক কারো কাছ থেকে উতসাহব্যাঞ্জক মন্তব্য পাওয়াটা, সবসময়েই দারুন উল্লাসের ব্যাপার।
      সেই উল্লাস পুরোটাই চেটে পুটে নিলাম...


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।