এক
খসখসে সময়ের মাঝে আমাদের পথচলার মাঝে আকাশ অচেনা হয়। দূরের দিগন্তের শেষবিন্দুর মাঝে চোখ আটকে গেলেও আমাদের পথ চলা থামে না। আমরা সবাই ছুটে চলি। ছুটে চলার ফাঁকে কালগর্ভে বিলীয়মান আমাদের অন্তর্ধান ঘটে আমাদের অজান্তেই। হারিয়ে যাওয়া মানুষ হারিয়ে যাওয়া সময়ের জন্য মন প্রাণ উজার করে কাঁদতে চাই। অথচ দিগন্তের অচেনা আলোকরেখার নিষ্প্রাণ অথচ দুর্নিবার আকর্ষণ আমাদেরকে সব ভুলিয়ে এগিয়ে নিয়ে যায় অচেনা আকাশের নিচে অচেনা আমাদের মাঝে।
দুই
চকচকে রোদ কখনো মলিন মনে হয়। ভাবনার আকাশ বিষণ্ণতার ধূসরে ঢেকে যায় বিনা কারণে। যাপিত জীবনের একঘেয়ে সময়ের মাঝে দিনপঞ্জিকার পাতায় কেটে রাখা বিশেষ দিন গুলোও বিশেষত্ব হারায় সময় সময়। অথচ খুশির কিংবা কষ্টের দিনকে নিয়ম করে উদযাপনের মানসিক প্রস্তুতি কেবলই বাঁধাগ্রস্ত হয় অজানা কোন স্রোতের ধাক্কায়।
তিন
আকাশের কোণে যখন মেঘ জমে তার বিষণ্ণতাকে আমরা স্পর্শ করতে পারি না। আমাদের ঘুমাতুর চোখে যেমন কোন স্বপ্ন থাকে না,তেমনি আবার বেদনার নীলাভ কাজলও সে পরে না। খাঁ খাঁ দুপুরের নিস্তব্ধতার মতোই শূন্যতার অনুভূতি কাজ করে শুধু। হারানোর বেদনা, প্রাপ্তির আক্ষেপ কিংবা ঝলমলে রোদের ঝিলমিলে আনন্দের মতো মানবীয় অনুভূতিকে অচেনা মনে হয়। বর্ণহীন নৈঃশব্দের গান শুনে আমার এগিয়ে যাই আমাদের পথে মহাকলের স্রোতে।
চার
আমাদের পথচলার সময়ে আকাশ লালাভ হয়। আমরা আমাদের গ্রাস করি। গ্রাসিত অস্থি-অবশেষ থেকে ফিনিক্সের মতো আমি জেগে উঠি।সময়ের থাবায় সময় হারায়, সাগরের থাবায় সাগর। নীল আকাশ ম্রিয়মান হয় গোধূলিবেলার বিষণ্ণ লালাভ কষ্ট অথবা লজ্জায়। চলার পথ আমাদের সামনে থাকে, খসখসে অথবা পিচ্ছিল হয়ে। জরাজীর্ণ ধরার কন্টক হানা দেয় আমাদের পথে। আমরা আমাদের খাই, সময় সময়কে খায়।চলার পথের মাঝে আমাদের পদতলে দলিত হয় ঝরা পাতার চূর্ণ কোন অংশ। পথচলা শেষ হয়ে বাড়ি ফিরতে গিয়ে দেখি আমরা আমাদের বিকেলকে হারিয়ে ফেলেছি।
পাঁচ
ডুবন্ত রোদের শেষ চুম্বন গায়ে মেখে ক্লেদাক্ত নগরীর কলুষতা লঘুকরণের করুণ প্রয়াস চলে। আমরা এই প্রয়াসের দিকে বিদ্রুপাত্মক দৃষ্টি হেনে তাকাই আমাদের নিজেদের মাঝে জমা করে রাখা তীক্ষ্ম অতরল কলুষত্বে। নগরীর দূরে অপেক্ষমান সন্ধ্যায় মশাদের দলের সংঘবদ্ধ মৃদু কথোপকথন কিংবা ক্লেদে ভরা নর্দমায় ভেসে উঠা মৃতবৎ ইঁদুরের শেষ অশ্রুত শব্দকে ছাপিয়ে নিজেদের পঙ্কিলতায় অট্টহাস্য করি আমরা। আমরা আমাদের বিদীর্ণ করি, নিজেদের নিঃশেষ করার কোন এক মুহূর্তে আমাদের মাঝেকার আঁধার ছড়িয়ে পড়ে সন্ধ্যার বাতাসে।
ছয়
কখনো কখনো হয়তো নিঃস্তব্ধতার সাথে জড়িয়ে রাত প্রখর হয়। সেই প্রখরতার তীব্রতা থাকে আর থাকে তার পিছনে জড়ো সড়ো হয়ে লুকিয়ে থাকা মায়াময় লাবণ্য। আঁধারকে সাথী করে ক্রমশ বিস্তৃত হওয়া রাতের নিজের মাঝেকার শূন্যতাই তাকে অনেক বেশি পূর্ণ করে তোলে। সেই রাতের বুকে জেগে থাকা কোন প্য্যাঁচা সাক্ষী হয়ে থাকে রাতের বিস্তারের আর সেই সাথে সেই সময়ের মাঝেকার অব্যক্ত স্পর্শের। সবকিছু ছাড়িয়ে সময়ের বুকে আঁচড় কাটা নাগরিক বিষণ্ণতা অথবা সময়ের মাঝে বেঁচে থাকা মানুষগুলোর অনুভূতির সাথে মিশে থাকা হতাশায় সিক্ত হয়ে রাত্রির আঁধার হঠাৎ করেই গাঢ় মনে হয়।
দারুণ জীবনবোধ ফুতে উঠেছে আপনার লেখাটিতে।
পড়ে ভাল লাগল। ও আর একটা কথা আমিন ভাই, আমার কাছে মনে হল অনেক অভিজ্ঞতার বহিঃ প্রকাশ পেলাম । জীবনদর্শন তাই না............ 😛 😛 😛
তানভীর আহমেদ
শেষে জিহবা বাইর করলা কেন? 🙁
যাউকগা পড়স শুনে ভালো লাগলো। তবে এই লেখায় অভিজ্ঞতার ব্যাপার স্যাপার তেমন নাই পুরাই উপলব্ধিগত আড় কি। 🙂
এই বাক্যটারে রিরাইট কর। কেমন খাপছাড়া লাগতেছে। 😕
এটা মনে হয় অস্থি-অবশেষ হবে। সন্ধি হয়?
তুখোড় লাইন একটা!!
এই লাইনটাও দেখিস। একই সর্বনাম বারবার এসে ঝামেলা করে। দুইটাকে বাদ দিতে পারিস কিন্তু।
পুরো একটা দিনকে খণ্ডে খণ্ডে নিয়ে এসেছিস। খুব ভাল পরীক্ষা। আমিও একটা লিখেছিলাম মনে হয়, তবে সকাল-দুপুর-রাত এরকম ভাগে। কোয়ান্টার মত প্যাকেট প্যাকেট। একেকটার একেক আমেজ, আবার সবগুলো মিলে সমসুর। :clap:
অস্থি-অবশেষ হবে। ঠিক করলাম।
বাক্য গঠন নিয়ে হালকা প্যাচ খাইছে ঐ দুইটা বাক্যে। ঠিক করে দিলাম।
যে লাইনটা কোট করছিস সেটা নববর্ষে লেখা, মূলত নিয়ত পরিবর্তনশীল ক্রমশ অগ্রসরমান আমাদের ভাবনা থেকে -- ছোট বেলায় ভাসম্প্রসারণেও এই জাতীয় থিমে কবিতার লাইন থাকতো মনে হয়।
পরীক্ষা মূলক লেখাই। খণ্ড খণ্ড করে যোগ করা বোধ, শেষে লাগিয়ে টের পাই বেশ একটা দিনের অংশ হয়ে যায়।
তোর মন্তব্যে অনুপ্রাণিত। (সম্পাদিত)
ভাই আমাদের মত শিশু পাঠকদের জন্য লেখাটাকে আরেকটু সহজ করে লিখলে ভাল হত বোধহয়।
অনেক কিছুই বুঝি নাই। সেটা নিয়ে দুঃখ নাই অবশ্য, বয়স বাড়লে এমনিতেই সব বুঝে আসবে। 😛
যে টুকু বুঝে অর্থ ধরতে পেরেছি, সেটুকু চমৎকার লেগেছে।
পড়বার জন্য ধন্যবাদ।
কঠিন কইরা কই লিখলাম আমি তো সহজ কইরাই লিখি। ব্যাপার হইলো পরিচিতি কথারে একটু ঘুরায়া প্যাচায়ে বলে মানুষজনরে কনফু খাওয়াইয়া দিছি 😉
আমার জন্য মনে হয় লেখাটা একটু কঠিনই হয়ে গেছে 😛
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
তাইলে কী করা ..আমি তো সহজ ভাষায় লিখি 🙁
আপনার মন্তব্য গুলো আমি সবসময় খুব মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। লেখা এই প্রথম পড়ছি। ভাষার উপর কি অদ্ভুত দখল। ঝরঝরে একটা লেখা। প্রিয়তে নিলাম।
চাঁদ ও আকাশের মতো আমরাও মিশে গিয়েছিলাম সবুজ গহীন অরণ্যে।
লেখা পড়বার জন্য ধন্যবাদ।
ভালো লাগার কথা জেনে প্রীত। 🙂
😛
লেখা পইড়া বুঝলাম তুমি ঢাকার বাইরে। ঢাকায় তো সন্ধ্যা-বিকাল কিছু নাই। আছে জ্যাম।
লেখা হইছে মোটামুটি।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
হ ভাই ঢাকায় নাই তাই মোবাইল থেকে কমেন্ট করাও বন্ধ আর সিসিবিতেও তো ইরেগুলার হয়ে গেছি।
জ্যাম আর লোড শেডিং এই দুইটাই আমার মাথায় ঘুরে ঢাকার নাম মনে পড়লে !!!
এক
বাসা
দুই
জ্যাম
তিন
অফিস
চার
জ্যাম
পাঁচ
বাসা
...
...
...
🙁 🙁 🙁
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
এই না হইলে আর কমেন্ট শিল্পী।
জুনাদা আপনার কমেন্টগুলো সবসময় নতুন ভাবনার খোরাক যোগায় (কপিরাইট : তানভীর ভাই)
আন্দালিব ভাই আর আপনে কয়েকদিনের জন্য কলম বদল করসেন নাকি 😀
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
কিকৈবার্চাস?? 🙁
যদিও আন্দালিব ভাই এন্টেনা ২ ইঞ্চি উঁচু করে দিয়েছে তারপরও আরো ২ ইঞ্চি উঁচু হলে বোধহয় পুরোপুরি বুঝতাম।
আরে আমার লেখায় তো এন্টেনার ব্যাপার স্যাপার নাই। খামাখাই ভুল বুঝতাসো পোলাপান।
পড়ি নাই। ব্লগে আসছিলাম সেইটা জানান দিয়ে গেলাম
আমার বন্ধুয়া বিহনে
পরে পড়ুম 🙂
আমার বন্ধুয়া বিহনে
রাব্বী ভাই, আপনে আসছিলেন দেখেই ভালো লাগছিলো। পড়াটা খুব গুরুত্বপূর্ণ না। 😀