“এই যে সবসময় নতুন নতুন লেখা প্রকাশ করা, এর ভিত্রে একধরণের ইগো স্যাটিসফেকশনের ব্যাপার আছে, ঔদ্ধত্য আছে। এইটা ইন এ ওয়ে ভালগারও। একসময় মানুষের কিন্তু এত মৌলিক হওয়ার বাতিক ছিলো না। বরং পুরানা মূল্যবান লেখা ভালো কইরা পড়া, আত্মস্থ করা, গ্রহণ করার দিকে ঝোঁক ছিলো তাদের।”
লেখাটা কোটেশন দিয়েই শুরু করতে হলো। কারণ প্রথম পাতায় এই লাইন গুলোর উপলব্ধি এবং সমসাময়িক বাস্তবতার সাথে মিলিয়ে আসলেই ধরা পড়ে অন্য এক ছবি। নার্সিসিজমে ভুগে আমরা মৌলিকত্বের দিকে যেভাবে ঝুকছি, অন্যের লেখা জানা বুঝা আর সেটা নিয়ে আলোচনার জন্য কতটুকু সময় বরাদ্দ রাখছি? উঠতি তরুণ লেখক এবং পাঠকদের জন্যও এটা খুব বড় ধরণের একটা টিপস বলেই মনে হয়। একই সাথে নিজের দেউলিয়ত্ব প্রকাশ হয়ে যায় নিজের কাছে খুব ভালোভাবেই। জীবনানন্দ দাসের কেবল একটি গল্প বুঝা নিয়ে লেখক যেই পরিমাণ সময় ব্যয় করেছেন, তুলনায় সেই গল্প সহ আরো দশটি গল্প বুঝা এবং আলোচনার জন্য আমি নিজে আসলে কতটুকু সময় দিচ্ছি?
পাঠ প্রতিক্রিয়া লিখতে গিয়ে লেখকের প্রতি মোহাবিষ্ট হয়ে গাদা গাদা বিশেষণে তাকে কোণঠাসা করে ফেলাটাকে আমি জ্ঞাতসারেই এড়িয়ে চলি। তবে দেখার চোখ, উপস্থাপনের বৈচিত্র্য আর লেখার জন্য পরিশ্রম আর সততা — এই কয়েকটি বিষয়ের জন্য লেখক শাহাদুজ্জামানের অনন্যতাকে অস্বীকার করবার উপায় নেই। সেই সাথে এই বইয়ের গল্পগুলোর সাথে এগিয়ে চলতে চলতে আগ্রহ জাগে আরো কিছু সময় মানুষ এবং লেখকে জানবারও। হারুকা মুরাকামির কথাই ধরা যাক। এই জাপানি লেখক আমার কাছে একেবারেই অপরিচিত ছিলেন। অথচ একটা গল্পের শিরোনামে তার নাম থাকায় নামটার সম্পর্কে নড়ে চড়ে বসতে হয়। সেই গল্পে মুরাকামির বিড়াল বিষয়ক পরিচিতি আমাকে আরেকজন জন লেখকের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় যিনি স্যুরিয়ালিজম ও নিহিলিজমকে তার লেখার অনুপ্রেরণা হিসাবে দেখেন। শাহাদুজ্জামানের আগের কিছু লেখায় ঐ দুই জিনিসের ছোঁয়া পাই বলেই বুঝতে পারি গল্পে মুরাকামি উপস্থিত না থেকেও থাকবেন আদ্যোপান্ত। তেমনটিই হলো আসলে মুরাকামির বিড়াল গল্পে। তবে পরাবাস্ততার সাথে সমসাময়িক বাস্তবতাকে ব্লেন্ড করা হয়েছে অত্যন্ত দারুণ ভাবেই। জীবনের চাওয়া ও জিজ্ঞাসাকে বিড়ালের পিছনে ছুটে খোঁজার প্রক্রিয়াটি তাই পরাবাস্তবতার উপর চড়ে বাস্তবতার উপলব্ধি। গল্পটি আরো উপভোগ্য হয়ে উঠেছে চমৎকার হিউমার খুব ন্যাচারালি মিলে মিশে যাওয়ায়। গল্পের শেষটি আগে থেকে খুব বেশি প্রেডিক্টেবল হয়ে গেছে। তবে তাতে গল্পের শক্তি আর বক্তব্যের গভীরতা কমেনি এতটুকু।
প্রায় কাছাকাছি ধরণের গল্প ৩০৬ নাম্বার বাস। এটাকে পুরোই পরাবাস্তবতার আশ্রয়ে গড়ে তুলেছেন লেখক। দুটো ভিন্নমাত্রায় চরিত্রগুলো মিশে গেছে একে অপরের সাথে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত। আর এই মিশে যাওয়ার যোগসূত্র হয়ে এসেছে ৩০৬ নাম্বার বাস। বিদেশীনি এবং প্যাট্রিক মিশে গেছে গোবিন্দগঞ্জে গিয়ে, মিশে গেছে শফিক এবং ‘যার হৃদয় ঘাস’ এর মাঝে। পুরো গল্প জুড়েই সমান্তরালে চলে, গল্পের শেষে তারা মিলে গেছে হ্যাজাকের আলোতে। আকারে ছোট অথচ শক্তিতে এবং গভীরতায় অসাধারণ একটি গল্প।
‘মান্না দে’ গল্পটার নামকরণটা আপাতত অদ্ভুত ঠেকবে। তবে এইখানেও মান্না দে হলেন আসলে দুই ডাইমেনশনের লিংক। গল্পটির সবচেয়ে ভালো দিক আমার কাছে লেগেছে চরিত্রগুলোকে নিয়ে লেখকের কাঁটাছেড়া। লেখক বিভিন্ন সময়ে এমনভাবে চরিত্রগুলোকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন সেটা আসলেই দারুণ প্রশংসার দাবি রাখে। গল্পের ‘নানা’ চরিত্রটিকে নিয়ে শুরু হয় গল্প। তারপরে তা বিস্তৃত হয় নানামুখী ঘটনাকে সাথে নিয়ে। গল্পের কোন জায়গায় দাড়িয়ে নানা এবং নানীর রোল আমরা পরবর্তীতে দেখেছি নাতি এবং নানা কে গ্রহণ করতে। অবস্থা আর ঘটনাভেদে আমাদের রোল বদলের এই খেলাটা দারুণ লেগেছে। আমার কাছে সম্রাট আর দরবেশ সাহেব একইভাবে আপাত সম্পর্কহীন হলেও মূলত গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত। শেষ দৃশ্যে মান্না দে আসেন, দরবেশের বর্ণিত স্বপ্নকে নিয়ে। এবং গল্পের শেষে তিনি হয়ে যান ভারতেশ্বরী হোমস আর মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজের সেতুবন্ধন হিসাবে।
শাহাদুজ্জামানের লেখার সবচেয়ে বড় শক্তির দিক হচ্ছে তার লেখার ধরণ। তিনি টিপিক্যাল “এক দেশে ছিলো রাজা” – টাইপ ভঙ্গিতে গল্প বলেন না। বরং লেখা শুরু হয় খুব ছোট কলেবরে। সময়ের সাথে সাথে সে তার বয়াপ্তি তুলে ধরে। এই প্রক্রিয়াকে পাঠক হিসাবে আমার কাছে মনে হয়েছে মাকড়শার জাল বোনার মত। পাঠককে সাথে নিয়ে মাকড়শা জাল বুনে যায় গল্প জুড়ে। আরেকটা উল্লেখযোগ্য শক্তির দিক হলো তার জীবনকে দেখার চোখ। তার নিজের গল্প লিখার দর্শন জীবনানন্দ থেকে ইনসপায়ারড সেটা একেবারে পরিষ্কার হয় তার প্রথম গল্প থেকেই। প্রথম গল্পে, গল্পের আলোচনায় জীবন বাবুর গল্প দর্শনে গভীরভাবে জীবন খোঁজার প্রক্রিয়াকে ব্যাখ্যা করেন তিনি। অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে জীবনানন্দ নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বর্তমান সময়ের দেশপ্রেম এবং লেখালেখি কালচারের মাঝে ঢুকে যান। সামাজিক ত্রুটি গুলো মাইক্রো স্কেলে দেখলেও তার ইনটেনসিটি কমে না, এমন ভাবনা থেকে উঠে এসেছে ‘অপুষ্পক’ এবং ‘গোয়েন্দা ঘরণার গল্প’ দুটি।
প্রান্তিক মানুষদের সমস্যাগুলো নিয়ে আমরা ডকুমেন্টরী দেখি কিংবা গল্প কবিতাও লিখি। সেই হিসাবে থিম হিসাবে সামাজিক কুসংস্কার এবং অবিচার নিয়ে লেখাটা চ্যালেঞ্জিং কাজ। মমতাজের গল্প আমরা শাহাদুজ্জামানের আগের একটা গল্পে জেনেছিলাম। সেই গল্পের শুরুতে লেখক বলেছিলেন, কিছু গল্প বলার মাঝে লেখকের কৃতিত্ব থাকে না কারণ গল্পটি নিজেই কৃতিত্বের দাবিদার। সেই গল্পকে তিনি নতুন ফরম্যাটে নতুন ভাবে বলার চেষ্টা করেছিলেন। এই ক্ষেত্রেও আরও দুইটি অভিবন প্রক্রিয়া আমরা দেখতে পাই অপুষ্পক এবং গোয়েন্দা ঘরণার গল্পের মাঝে। গল্পগুলো প্রান্তিক মানুষের সুখ দুঃখ বেদনার গল্পকে নতুন ফরম্যাটে প্রকাশ করবার অভিনব চেষ্টা। তুলনায়, ‘সাইপ্রাস’ গল্পটি আমার কাছে কমেডি ঘরণার মনে হয়েছে মূলত চরিত্রগুলোর ইন্টারএ্যাকশনের ধরণ, এবং বক্তা চরিত্রের কপট সিরিয়াসনেস দেখে। তবে হাস্যরস আর হিউমারগুলোর জন্য লেখকের পরিশ্রম গুলোও চোখে পরবার মত। হয়তো এই গল্প এই মানুষ আমাদের কাছেও আসে, কিন্তু গল্পের চরিত্র হয়ে ধরা দেওয়া দূরে থাকুক দৃষ্টি আকর্ষণের গুরুত্বও পায় না অনেক সময়। কোথায় তিন থালে কি হয় জাতীয় গল্প গুলো শুনলে হাসি চাপা যেমন কঠিন, তেমনি এই গুলো বিশ্বাস করা লোকদের প্রতি করুণা বোধ করাও অস্বাভাবিক না। একটা শ্লোকের কথা বলি,
“আঙ্গুলের অগ্রভাগ গদার আকার
নিঃসন্দেহে ঐ লোক জানিও গোয়ার”
এই লাইনটা পড়ে সিরিয়াসলি আমার আঙ্গুলের দিকেই তাকি আমি সবিস্ময়ে আবিষ্কার করি আমি আসলে গোয়ার শ্রেণীর লোক। এত হাসি রম্য ভরা গল্প, নঅথচ গল্পের শেষে কুসংস্কারাচ্ছন্ন পণ্ডিতম্মন্য লোকটার পেছনের গভীর বেদনা ঝপ করে বেরিয়ে এসে মনকে আর্দ্র করে তুলে।
ধাচে রকমে আলাদা ক্যাটাগরিটে পড়বে দুটো গল্প। ‘পৃথক পৃথিবী’ গল্পটি আসলে গল্পের চেয়েও বেশি আইডিয়া। আমাদের চোখ এড়িয়ে যাওয়া অনেক বাস্তবতা আর সেই বিষয়ে লেখকের উপলব্ধির কথা আমরা দেখতে পাই। তবে যা হতে পারত একটি প্রবন্ধ, লেখকের মুন্সিয়ানায় চমৎকারভাবেই সে গল্পে সেজে যায়। ‘রফিকের নোট বই’ ও মূলত আসলে অনেকগুলো চমৎকার অণুগল্প আর বোধের মিশেল।
গল্প নিয়ে গল্প লিখার ধরণটা পরিচিত ফরম্যাট। তবে বইয়ের নাম গল্পটি ধারে এবং ভারে এই ধাচের গল্পগুলো থেকে আলাদা। একটি গল্পের মাঝে তিনি খুঁজে বের করেছেন দারুণ কিছু ফাইন্ডিংস। তার কিছু তৎকালীন সময়ের বিম্ব আর কিছু হলো আমাদের সমাজের চিরায়ত বিম্ব। এই পাঠ প্রতিক্রিয়ার শুরুতেই বলেছিলাম, লেখক একটা গল্প বুঝার জন্য আর সেটার বিভিন্ন দিক গুলো খুঁজে বের করবার জন্য দুই বন্দুর আড্ডার যে অবতারণা তা যেমন উপভোগ্য তেমনি অভিনব। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো এই গল্পের মধ্যে আমরা চমকপ্রদ কিছু ইনফরম্যাশনও জানতে পারি। আর শেষ হয় যে লাইন গুলো আত্মস্থ করতে গিয়ে টা হলো
“এমন খেল তো বিধাতা দিনরাত করেন আমাদের সঙ্গে, করেন অনন্তকাল। সুহৎ তো করেছে শুধু একটা দিন। এটা কি আর এমন অন্যায়?”
পুরো গল্প না পড়লে নির্মমতার ব্যাপারটা বুঝা যাবে না। তবে শেষ পর্যন্ত নির্মমতা বা ডার্কনেসটাই গল্পের প্রতিপাদ্য হয়। তবে মূল গল্পটি পড়লে গল্প নিয়ে গল=প আরো বুঝা যাবে এমনটিই মনে হয়।
‘সাড়ে সাতাশ’ গল্পটিও একটি আইডিয়া। এই আইডিয়ার মাঝে লেখক তার আগের সাতাশটি গল্পের চরিত্রগুলোকে নিজের সামেন এবং তাদের পরস্পরের সামনে নিয়ে আসেন। আর লেখকের টেবিলে ভিড় করে গল্পের চরিত্ররা। আর গল্পের শেষে ডোডো পাখি আর কাঁঠাল পাতা এসে হাজির হয় গল্পের পূর্ণটা দিতে। শেষ দৃশ্যের বর্ণনা পড়লে মনে হয়, লেখকের হাত থেকে বের হয়ে যাবার পরে প্রত্যেক চরিত্রই আলাদা জীবনী শক্তি লাভ করে। গল্পের চরিত্রদের যোগ সাজশ করে গল্প কিংবা আইডিয়া তৈরির প্রচেষ্টা মনে করিয়ে দেয় যে আমাদের চারপাশের মানুষের জীবনের ক্রমাগত ঘটে চলা ঘটনাই দিন শেষে গল্প।
বইটি নিয়ে মোটা দাগে কোন মন্তব্য করবার নেই। তবে বইয়ের নাম গল্পটি অনেক ভাবনায় দাগ কেটে গেছে। চিন্তার জগতে আলোড়ন ঘটিয়েছে। অন্য গল্পগুলোও আপন বৈশিষ্ট্যে কম বেশি আবেদন ময়। আগেই বলেছি, লেখক একটি গল্প বুঝতে যেই সময় দিয়েছেন, সেই তুলনায় আমি পুরো বইটি বুঝতে অনেক কম সময় দিয়েছি। তবে গল্প পড়া এবং বুঝার প্রক্রিয়া আরো দীর্ঘায়িত হবে এই গল্প পড়বার পরেই। লেখকের প্রতি অনেক শ্রদ্ধা ভালো লাগা এবং শুভকামনা।
পুনশ্চ: বইটির প্রাপ্তি স্থান — মাওলা ব্রাদার্স
প্রথম, 😀
... কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে!
বইমেলায় যাবো কয়েকদিনের মধ্যেই। এটা কেনার তালিকায় তুলে নিলাম। 🙂
... কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে!
আমি পাঠ প্রতিক্রিয়া লেখি মূলত অন্যান্যদের মতামত শুনতে এবং শেয়ারিং এর জন্য। এই বই কিনলে পড়ার পরে এখানে প্রতিক্রিয়া রেখে গেলে ভালো লাগবে।
এটা তোমার একেবারে নিজস্ব ভূমি : এই পাঠপ্রতিক্রিয়া।
বইটি পড়তে উৎসাহিত হলাম -- হাতের কাছে কে এনে দেবে সেটা একটা প্রশ্ন।
তবে পাঠপ্রতিক্রিয়া একটা শিল্প। সেখানে তোমাকে সচ্ছন্দ মনে হচ্ছে - এটা খুব আশার কথা।
নূপুর দা, আপনার কমেন্ট পড়লে সব সময়েই অনেক উৎসাহিত হই। বইটা রকমারি থেকে অর্ডার করিয়ে রাখতে পারেন। পরে হয়তো সেটা সংগ্রহ করতে পারবেন।
আমিন তোমার এই পাঠ প্রতিক্রিয়াটি একটি খুব উপকারী পদক্ষেপ। এখন পড়তে গিয়ে ফন্ট ভেংগে যাচ্ছে। পরে আবার রিবুট করে পড়তে হবে। শাহাদুজ্জামানের কিছু লেখা পড়েছি। উনার ভাষা আসলেই বেশ সুন্দর। একজন লেখকের লেখা পড়ার সময় আমি সে লেখকের মানসিকতাটুকু বোঝার চেষ্টা করি। লেখাটা তো একটা টুকরো। লেখক আসলে কোন মানসিকতাটুকু পাঠকের মধ্যে সংক্রামক করতে চাচ্ছেন তা বোঝার চেষ্টা করি। উনার লেখা পড়ে মনে হয়েছে পাঠককে এক ধরণের বিষাদগ্রস্ততায় আচ্ছন্ন করতে চাচ্ছেন। আমরা বাংলাদেশীরা এমনিতেই অনেক বিষন্ন (যতই ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেদের সুখী বলি না কেন) - আমি স্বপ্ন দেখায়, মনকে আলোকিত করে এমন লেখা পড়তে চাই। অবশ্য শাহাদুজ্জামান সম্পর্কে মন্তব্য করার জন্য আমাকে এই লেখকের বই আরও পড়তে হবে।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
লজ্জা পেলাম|
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল