ইলেভেনে উঠে আমি প্রথম কলেজের বাইরে যাই। হাতে খড়ি হয় নাজমুল ভাইয়ের (ভাই কারণ টাংগাইলের বেবিস্ট্যান্ড নামক এক বিখ্যাত জায়গায় তিনি যাওয়া মাত্রই নাজমুল ভাই আসছে, নাজমুল ভাই আসছে এই রব উঠে) মাধ্যমে। তখন নব্য প্রেম চলছে আমার। নতুন প্রেমে পড়লে যা হয়, তাহার মুখের বাণী শোনার জন্য পরানটা সর্বদা আনচান করতো। কলেজ থেকে বের হয়ে কিছু দূর হাঁটলেই ফোনের দোকান ছিল। এভাবেই সুচনা। প্রায় প্রতি বৃহঃস্পতিবার বাদ ডিনার এই অভিযান চলতো। ততদিনে ভাইয়ের কল্যাণে অনেকেই অভিযান সম্পর্কে জেনে গেছেন। এবং অনেকেই কলেজ পালানোর স্বাদ গ্রহন করে ফেলেছেন। আমাদের মাথায় তখন ভূত চাপলো বরিশালে যেয়ে বাংলা সিনেমা দেখার। কলেজ থেকে বরিশাল প্রায় ১২ কি.মি। যাতায়াত ব্যবস্থা খুব খারাপ থাকার কারণে যাওটা একটু ঝামেলা ছিল। যাই হোক বাংলা ছিনামার কাছে সেটা নিশ্চই কোন ব্যপার না।
আমাদের দলে ছিলাম আমি, নাজমুল, ফিরোজ, মেহেদি (গাজা গুরু), জহির (মুক্তিযোদ্ধা এবং under ground hero, কারণ দিনের বেলায় সে ছিল আমাদের ব্যাচের সবচেয়ে গোবেচারা। কিন্তু রাত হলেই……) তৎকলীন জুনিয়র প্রিফেক্ট মাসুদ (যিনি সারাজীবন আমাদের মতো বান্দরদের সাথে থাকলেও কোনদিন প্রেপে তার টাইয়ের নট ঢিলা হতে দেখা যায়নি)। আরও মনে হয় কয়েকজন ছিল। যথারীতি ডিনারের পর আমরা হাউসের পিছনের দেয়াল টপকে দেখি- হায় আল্লাহ আরো কিছু মুখ। মনে হচ্ছিল পুরা কলেজই সেরাতে মিশন নিছে। সবাই মিলে রওনা দিলাম। শহরে যাবার জন্য একটা টেম্পো পাওয়া গেলো। টেম্পোতে উঠলাম আমরা মোট ১৪ জন। ১২ জন আমাদের ক্লাস আর ইমিডিয়েট দুইজন। সিয়াম ভাই আর রছি ভাই। বরিশাল যেয়ে আমারা টিকেট কেটে সরাসরি ঢুকে পড়লাম হলে। সিনেমার নামটা এখনো মনে আছে। ‘আব্বাস দারোয়ান’। ছিনামা শুরু হলো। ১০ মি. ২০মি. ৩০মি. পার হয়ে গেলো কিন্তু যেই জন্য আসা সেই সব জিনিসের কোন খোজ নাই। পেপার গুলারে পিটাইতে ইচ্ছা করতেছিল। অশ্লীলতার কোন খোঁজ নাই, নাই ধুম ধারাক্কা গান। উফফফ!
তখন কে জানি বলল কাউনিয়াতে একটা মেলা হচ্ছে সেখানে যাত্রা আর ভ্যারাইটিজ শো হয়। ভ্যারাইটিজ শো জিনিসটা কি তখন জানতাম না। কে জানি বুঝাইয়া দিল strip dance টাইপ। সাথে সাথে কইলজাটা লাফায়া উঠলো এইটাই তো চাই। কাউনিয়া বরিশাল থেকে অনেক দূরে কিন্তু কিচ্ছু করার নাই। যেই ভাবা সেই কাজ। রওনা দিয়ে দিলাম। কাউনিয়াতে মেলায় ঢুকে টিকেট কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে হলো কারণ তখন একটা শো চলতেছিল। ৩০ মি. পর শো শেষ। লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। হটাৎ দেখি পুরা মুখ কেলায়া ওখান থেকে বের হচ্ছে সিয়াম ভাই ও রছি ভাই। এবং আবার টিকেট কেটে তারা আমাদের সাথে যোগ দিলেন। আমার তো তখন অবস্থা খারাপ। যাই হোক শো শুরু হলো। শো এর কাহিনী নাই বলি। সারা জীবন মনে থাকবে। (এই বৃষ্টি ভেজা রাতে চলে যেওনা, বৃষ্টিরও ছন্দে নুপুরেও গন্ধে আমায় তুমি ভুলে যেও না…)। শো শেষ হলো ৩টার দিকে। বের হয়ে দেখি হায় হায়। বরিশাল যাওয়ার জন্য কিচ্ছু নাই। শুরু করলাম হাটা…দৌড়…বরিশাল যখন পৌছাইছি তখন বাঁজে প্রায় ৪টা। এবার কলেজ আরও ১২ কিমি। সকল উত্তেজনার পর তখন খালি কলেজ আউট হয়ে বাসায় যাবার কথা মনে পড়ছে। ব্যাগ হাতে কলেজের বাইরে দাঁড়িয়ে আছি। আল্লাহর মেহেরবানীতে রিক্সা পেয়ে গেলাম। শুরু হলো রিক্সা দিয়ে ফর্মুলা ওয়ান। কলেজে নিরাপদেই ভোর হবার আগে অবতরন করতে পারছিলাম। এবং বুঝতেই পারছেন দুনিয়ায় এমন কেউ নাই যাহাকে আমি এই ঘটনা শুনাই নাই।
( ঘটনা সত্য হইলেও নামগুলা পাল্টাইতে বাধ্য হইলাম। কারণ উল্লেখ্য ব্যক্তিদের প্রায় সবাই বর্তমানে হাঁটুবাহিনীতে কর্মরত।)
আমি আমার সব লেখায় নাম পরিবর্তন করে দিলাম...বাকি সবাই একি কাজ করলে খুব ভাল হয়...
fantastic! :boss:
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
খুব জোশ কাহিনী ।
কাহিনীতে ভরপুর আমাদের জীবন...
eikhane ki ami chilam?n as far i remember nobody joined da army from us.
n u knw wut just a few months ago kawa has asked me to go to a same show in dhaka at night.......
হ এইখানে আপনি আর কাওসার ভাই আছিলেন...নামটা বদলাইয়া দিছি। আর আমগো সব গুলা তো আর্মিতে।
এইটা ব্লগে বউনি লেখা নাকি। কমেন্ট কইরা রাখি, ইতিহাস কথা কয়।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
হুম...
ইতিহাস কথা কয়। 🙂 🙂
ইতিহাসে নাম লিখলাম, দিহান। 😀
ইতিহাসে নাম লিখলাম... 😀
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
ইতিহাসে স্বাক্ষী হয়ে রইলাম আমিও :goragori:
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
ইতিহাসে স্বাক্ষী হয়ে রইলাম আমিও B-)
এতো দেখি মেলা স্বাক্ষী। ঠিক আছে আমিও স্বাক্ষীদের স্বাক্ষী হলাম। :clap: :clap: :clap:
=)) =)) =))
valo kahini tobe sheydin duty master ke silo bolle valo hoyto.
আমিও স্বাক্ষী 🙂
=)) =)) :clap: :clap:
খুব মজা পাইলাম ভাইয়া। :thumbup:
খেয়া (২০০৬-২০১১)
=))