সবগুলো পর্ব পিডিএফ আকারে পাবার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন।
বিবর্তন তত্ত্বমতে জীবনের সূচনা হয়েছিল একটি অথবা সামান্য কয়েকটি সরল এককোষী জীব থেকে। লক্ষ কোটি বছরে এই ধরণের সরল এককোষী জীবরা বিবর্তিত হয়ে পরিণত হয়েছে ভিন্ন একটি প্রজাতিতে। এভাবে লক্ষ লক্ষ বছর ধরে প্রজাতি থেকে প্রজাতিতে জীবন বিবর্তিত হয়েছে। সময়ের সাথে সাথে প্রজাতির সংখ্যা বেড়েছে, বেড়েছে বৈসাদৃশ্য এবং প্রাণীদের গঠন হয়েছে জটিল থেকে জটিলতর।
অপরদিকে সৃষ্টিতত্ত্বে বিশ্বাসীরা বলে থাকেন, জীবন পরিবর্তীত হয়নি। আমরা বর্তমানে যেভাবে দেখি স্রষ্টা সকল প্রাণীকে ঠিক এভাবেই সৃষ্টি করেছিলেন। সহস্র বছর ধরে তারা অপরিবর্তীত রয়েছে।
সে সঠিক তাহলে?
সেটা প্রমান করার সবচেয়ে সুবিধাজনক উপায় হচ্ছে ফসিল রেকর্ডগুলোকে পরীক্ষা করা। বিশ্বের বিভিন্ন জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে লক্ষাধিক ফসিল। “রেডিওমেট্রি”র সাহায্যে প্রতিটা ফসিলই ঠিক কত বছর আগের তা নির্ভূলভাবে নির্ণয় করা হয়েছে।
এখন ডারউইন যদি সঠিক হয়ে থাকেন তাহলে আমরা আশা করবো, সবচেয়ে পুরাতন ফসিলগুলো হবে সরল এককোষী। এবং যত সামনের দিকে আগাতে থাকবো ফসিলগুলোর মধ্যে তত বৈচিত্র থাকবে, থাকবে জটিলতা।
পৃথিবীতে কোন নির্দিষ্ট সময়ে কোন ধরণের জীবন ছিল সেটা ব্যাখ্যা করার জন্য পৃথিবীর ইতিহাসটাকে আসুন ৯১ তলা বিশিষ্ট এম্পেয়ার স্টেট বিল্ডিং এর সাথে তুলনা করি। যার নীচতলা হলো একেবারে পৃথিবী সৃষ্টির সূচনা। অর্থাৎ আজ থেকে সাড়ে চারশ কোটি বছর আগে। আর ৯১ তলার উপরের ছাঁদ হলো বর্তমান সময়। বিল্ডিং প্রতিটা ফ্লোর উপস্থাপন করে ৫ কোটি বছর।
জীবনের সবচেয়ে পুরাতন ফসিল রেকর্ড পাওয়া যায় সাড়ে তিনশ কোটি বছর আগে। অর্থাৎ বিল্ডিং এর ২২ তলায় এসে আমরা পাই স্ট্রমেটলাইটস। আর কিছু না। স্ট্রমেটলাইটস তৈরী হয়েছিল ব্যাকটেরিয়া দিয়ে। একদম সরল এককোষী জীব। সুতরাং দেখা যাচ্ছে জীবনের শুরুটা হয়েছিল সরল এককোষী জীব থেকেই। ডারউইন যেভাবে বলেছিলেন সেভাবেই।
এবার আমরা ধীরে ধীরে একতলা একতলা করে উপরে উঠতে থাকি। উঠতে উঠতে ৫০ তলার আগ পর্যন্ত যত ফসিল পাওয়া গেছে সবগুলোই সরল এককোষী জীব। অর্থাৎ এই দীর্ঘ সময়ে জীবনের পরিবর্তন হয়েছে খুব সামান্য। ৫০ তলায় এসে অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় দুইশ দশ কোটি বছর আগে আমরা প্রথমবারের একধরণের প্রাণীর সন্ধান পাই যাদের কোষ নিউক্লিয়াস বিশিষ্ট। বর্তমানে বেঁচে থাকা ৯৯% জীবের কোষের মতোই সেই কোষ।
৫০ তলা থেকে আমাদের যেতে হবে একদম ৮০ তলা পর্যন্ত। আজ থেকে ৬০ কোটি বছর আগে। এতলাতেই আমরা পাই প্রথম জীবজন্তুর ফসিল। যাদের বাসস্থান ছিল সমুদ্রের কর্দমাক্ত ফ্লোরে। বর্তমানে সমুদ্রের তলদেশে থাকা প্রাণীদের সাথে যাদের অনেক সাদৃশ্য রয়েছে।
ফাইনালী দু ফ্লোরস লেটার, লাইফ হ্যাজ রিয়েলি টেকেন অফ।
এই প্রাণীগুলো প্রিক্যাম্বরিয়ান যুগের। আজ থেকে ৫০ কোটি বছর। নীচের তলাগুলোয় ফেলে আসা সরল প্রাণীদের থেকে যারা একদম আলাদা। তাদের মাথা আছে, আছে বিভিন্ন অংগ প্রতংগ।
অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে যে, সময়ের সাথে সাথেই জীবনের পরিবর্তন ঘটেছে। সরল এককোষী থেকে তারা পরিবর্তীত হয়েছে, জটিল থেকে জটিলতর হয়েছে।
উপরের “ট্রি অফ লাইফ” এর যে চিত্র দেওয়া আছে আসুন তার দিকে আরও ভালোভাবে তাকানো যাক।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ফসিল রেকর্ডগুলো সম্পূর্ণ নয়। ফাঁকা জায়গায় ভরপুর। যাকে বলা হয়ে থাকে “মিসিং লিংকস”। আর এই মিসিং লিংকগুলোই বিবর্তন তত্ত্বকে সন্দেহের মধ্যে ফেলে দেয়।
এমনতো তো হতেই পারে, এই ধরণের ফসিল রেকর্ড রয়েছে। আমাদের শুধু খুঁজে পাওয়া বাকি। নাকি, ডারউইন ভুল?
বিবর্তন তত্ত্ব মতে প্রাণের সৃষ্টি হয়েছিল সমুদ্রে। সামুদ্রিক বিভিন্ন প্রাণীই পরবর্তীতে স্থলভাগে উঠে এসে ঘাঁটি গাড়ে। সমুদ্রের সেই প্রাণীদের ফসিল রেকর্ড আমাদের হাতে আছে, হাতে আছে পরবর্তীতে স্থলে উঠে আসা প্রাণীদেরও। কিন্তু বিবর্তন তত্ত্বমতে এদের মধ্যবর্তী একধরণের প্রাণী থাকার কথা যাদের মধ্যে একই সঙ্গে সামুদ্রিক এবং স্থলভাগের প্রাণীদের বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। ১৮৫৮ সালে “অরিজিন অফ স্পেসিজ” প্রকাশ করার পরবর্তী দীর্ঘ সময়ে বিজ্ঞানীরা এমন কোন মধ্যবর্তী প্রাণীর ফসিল (ট্রাঞ্জিশনাল ফসিল)/ মিসিং লিংক খুঁজে পাননি যার মাধ্যমে ডারউইনের তত্ত্ব সঠিক প্রমানিত হয়।
১৯৯৯ সাল থেকে ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগো এন্ড ফিল্ড মিউজিয়ামের প্রফেসর নীল স্যুভিন এবং তার দলবল খুঁজে বেরিয়েছেন মাছ থেকে চতুষ্পদী প্রানীতে বিবর্তনের মধ্যবর্তী বৈশিষ্ট্যযুক্ত প্রাণী টিক্টালিকের ফসিল। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর, ২০০৪ সালে এসে তারা প্রথমবারের মতো টিক্টালিকের ফসিলের সন্ধান পান।
ল্যাবরেটিতে টিক্টলিকের ফসিল পরীক্ষা করে দেখা যায়, টিক্টলিক দেখতে অনেকটা পাখনা যুক্ত মাছের মতো, কিন্তু সামনের পাখনাগুলো আর পাখনা নেই, হয়ে গেছে কাঁধ, কনুই আর কবজি নিয়ে গঠিত একটি বাহু। মাছের মতো রয়েছে ধারালো দাঁত। কিন্তু মাছ যেমন তার ঘাড় নাড়াতে পারে না, টিক্টলিকের ক্ষেত্রে দেখা গেলো সে একদম স্বাধীন ভাবে তার ঘাড় নড়াচড়া করতে পারে।
এই গেল, একটি মিসিং লিংকের কথা। কিন্তু বেশিরভাগ সৃষ্টি তত্ত্বে বিশ্বাসী মানুষের মতে মিসিং লিংক নেই বললেই চলে। মিসিং লিংক নেই এটি যেমন ডাহা মিথ্যে কথা তেমনি অনেক বেশি আছে তাও সত্য নয়। অপ্রতুল হলেও প্রচুর মিসিং লিঙ্ক আবিষ্কৃত হয়েছে। **ঘোড়া, হাতী এবং উটের বিবর্তনের পুংখানুপুংখ ফসিল রেকর্ড পাওয়া গেছে। সরিসৃপ থেকে স্তন্যপায়ী জীবে উত্তোরণের সম্পূর্ণ ধাপগুলো খুব ভালভাবে ডকুমেন্টেড (দেখুন : Evoluion, Doglas J. Futuyma, pp 76)। মাছ এবং উভচর প্রাণীর মধ্যবর্তী ফসিলের উদাহরণ তো আছেই কোলাকান্থ এবং লাং ফিশ।
নরবানর (এপ) এবং মানুষের মধ্যবর্তী হারানো সূত্রের জীবাশ্মও কয়েক দশক আগে খুব ভালভাবেই পাওয়া গেছে। Australopithecus এবং Homo -এর কয়েকটি প্রজাতিকে (যেমন, Australopithecus afarensis, Australopithecus africanus, Homo habilis, Homo erectus) তো মানব বিবর্তনের হারানো সূত্র বলা হয়ে থাকে। আমাদের জনপ্রিয় ফসিল ‘লুসি’ Australopithecus afarensis প্রজাতির অন্তর্গত। শ্রোণিচক্র ও উরুর হারের গঠন থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, লুসি সোজা হয়ে দাঁড়তে আর দৌড়াতে পারত। আর লুসির তো কেবল এই দু’ জায়গার হাড় নয়, সেই সাথে পাওয়া গেছে চোয়াল, উরু, হাত, বাহু, বক্ষপিঞ্জর সহ পুরো করোটি। পরে এ ধরনের আরো অনেক ‘লুসির’ সন্ধান পাওয়া যায় ১৯৭৮ সালে তাঞ্জানিয়ার লাটেও-লি তে এবং ১৯৯৫ সালে চাদের করোটো-রোতে। এমনকি লুসির চেয়েও পুরোন ‘বাইপেডাল মানুষের’ ফসিল পাওয়া গেছে ২০০৫ সালে। এদের সবাইকেই নরবানর আর মানুষের মধ্যবর্তী ‘হারানো যোগসূত্র’ হিসেবে ধরা হয় কারণ, এদের করোটির গঠন ছিল অনেকটা শিম্পাঞ্জীর মত (৪০০-৫০০ ঘন সি সি), কিন্তু তাদের দাঁতের গঠন ছিল আধুনিক মানুষের মত। আর তা ছাড়া এরা যে দু’পায়ের উপর ভর করে খাড়া হয়ে চলতে পারত তা তো আগেই বলা হয়েছে। এছাড়া এদের শরীরের সাথে বাহুর অনুপাত মেপে দেখা গেছে ( মানুষের ক্ষেত্রে এই অনুপাত ৭১.৮, শিম্পাঞ্জীর ক্ষেত্রে ৯৭.৮, আর লুসির ক্ষেত্রে ৮৪.৬) লুসির অবস্থান এ দু’প্রজাতির মাঝামাঝি। এরা পৃথিবীতে ছিল ৩ থেকে ৪ মিলিয়ন বছর আগে।
শেষকথাঃ-
ট্রাঞ্জিশনাল ফসিল নিয়ে যাদের আরও আগ্রহ রয়েছে তারা উইকিপেডিয়ার ট্রাঞ্জিশনাল ফসিলের তালিকাটি দেখতে পারেন। তবে একটা কথা বলতেই হয়, কোন প্রজাতির কয়টি ফসিল পাওয়া গেল এটি আজ কোন প্রশ্ন নয়, মুল প্রশ্ন হল একটি ফসিলও কি এ পর্যন্ত পাওয়া গেছে যা বিবর্তনের ধারাকে লংঘন করে? এর সোজা সাপ্টা উত্তর – না এখন পর্যন্ত একটিও তেমন ফসিল পাওয়া যায় নি। একবার বিজ্ঞানী জেবি এস হালডেনকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল কিভাবে বিবর্তনকে ভুল প্রমাণ করা যায়? উত্তরে হালডেন বলেছিলেন, কেউ যদি প্রক্যাম্বরিয়ান যুগে খরগোশের ফসিল খুঁজে পায়।
I will give up my belief in evolution if someone finds a fossil rabbit in the Precambrian
বলা বাহুল্য এ ধরনের কোন ফসিলই এ পর্যন্ত আবিস্কৃত হয় নি। না হওয়ারই কথা, কারণ বিজ্ঞানীরা বিবর্তনের যে ধারাটি আমাদের দিয়েছেন তা হল :
মাছ –> উভচর –> সরীসৃপ –> স্তন্যপায়ী প্রানী।
খরগোশ যেহেতু একটি পুরোপুরি স্তন্যপায়ী প্রাণী, সেহেতু সেটি বিবর্তিত হয়েছে অনেক পরে এবং বিভিন্ন ধাপে (মাছ থেকে উভচর, উভচর থেকে সরিসৃপ এবং সরিসৃপ থেকে শেষ পর্যন্ত খরগোশ), তাই এতে সময় লেগেছে বিস্তর। প্রিক্যাম্বরিয়ান যুগে খরগোশের ফসিল পাওয়ার কথা নয়, কারণ বিবর্তন তত্ত্ব অনুযায়ী এ সময় (প্রিক্যাম্বরিয়ান যুগে) থাকার কথা কতকগুলো আদিম সরম প্রাণ – যেমন নিলাভ সবুজ শৈবাল, সায়নোব্যকটেরিয়া ইত্যাদি (ফসিল রেকর্ডও তাই বলছে)। আর স্তন্যপায়ী প্রাণীর উদ্ভব ঘটেছে ট্রায়োসিক যুগে (প্রিক্যাম্বরিয়ান যুগ শেষ হওয়ার ৩০ কোটি বছর পরে)। কাজেই কেউ সেই প্রিক্যাম্বরিয়ান যুগে খরগোশের ফসিল খুঁজে পেলে তা সাথে সাথেই বিবর্তনতত্ত্বকে নস্যাৎ করার জন্য যথেষ্ট হত। সৃষ্টিবাদীদের জন্য দুর্ভাগ্য এখনও তেমন কোন ফসিল পাওয়া যায়নি।
শুধু খরগোশ নয়, বিবর্তনের ধারাটি সকল জীবের জন্যই একইভাবে প্রযোজ্য। যেমন বিবর্তন তাত্ত্বিকদের মতে বিবর্তনের ধারায় মানুষ যেহেতু এসেছে অনেক পরে (সিনোযোয়িক যুগের আগে নয়), তাই তার আগে, যেমন ডায়নোসরের ফসিলের সাথে একই বয়সী কোন মানুষের ফসিল পাওয়া যাওয়ার কথা নয়। সবচেয়ে পুরোনো খাড়া হয়ে হাটা মানুষের ফসিল ইথিওপিয়ায় পাওয়া গেছে যা ৪০ লক্ষ বছরের পুরোনো। আর ডায়নোসারেরা প্রবল প্রতাপে এ পৃথিবীতে রাজত্ব করেছে সেই জুরাসিক যুগে (১৪ কোটি থেকে ২০ কোটি বছর আগে)। ডায়নোসরের বিলুপ্তি ঘটে ক্রেটাসিয়াস যুগে (এখন থেকে সাড়ে ছ কোটি বছর আগে)। সৃষ্টিবাদীরা মাঝে মধ্যে বিভিন্ন ধরনের জালিয়াতি করে ডায়নোসারের আমলে ‘মানুষের ফসিল’ পাওয়ার চেষ্টা করলেও সেগুলো একটিও ধোপে টিকেনি।**
সুতরাং দেখাই গেলো জীবনের বিবর্তন ঘটেছে সরল কোষ থেকে। বহু বছরে তাদের মধ্যে পরিবর্তন এসেছে, গঠন জটিল হয়েছে। হলো ভালো কথা। কিন্তু কীভাবে?
বিবর্তনের সবচেয়ে মাথানষ্ট টার্ম “প্রাকৃতিক নির্বাচন” নিয়ে আলোচনা করা হবে আগামী পর্বে।
** দেওয়া অংশটি বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায়ের লেখা থেকে তার অনুমতিক্রমে উদ্ধৃত হয়েছে।
😀
Life is Mad.
এই পর্বটি অনেক তথ্যবহুল এবং গুছানো হয়েছে। ফসিল দিয়ে বিবর্তনের ধাপগুলকে সুস্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। এমনকি মিসিং লিঙ্কের কথাও এসেছে। তারমানে একপেশে হচ্ছে না।
তবে লেখা পড়ে আরেকটা বিষয় মনে হচ্ছে, তুমি চাইছো বিবর্তনের বিপক্ষে ধর্মীয় মতামতগুলোকে খণ্ডন করতে। বিবর্তনকে সেভাবে না দেখে নিছক আজগুবি বলে উড়িয়ে দিতে দেখেছি মানুষকে। সেটাও জরুরি দৃষ্টিকোণ। (এই পর্ব সেই আশাটা মিটেছে)
যদিও জানি বিবাদটা পুরনো, এবং বিবর্তন নিয়ে কথা উঠলেই কোন না কোনভাবে সেটা শুরু হয়েই যায়, তবু একটা প্রবচন উদ্ধৃত করার লোভ সামলাতে পারছি না।
ড. হুমায়ুন আজাদ
:thumbup:
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
ধন্যবাদ আন্দালিব ভাই, সাথে থাকার জন্য।
বলা হয়ে থাকে ইংরেজি ভাষায় বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় বিতর্কের নাম "বিবর্তন"। সৃষ্টি তত্ত্বে বিশ্বাসীদের নানা ভুল-ভাল প্রপাগন্ডায় আজকে অনেক মানুষ বিবর্তনকে বাতিলের খাতায় ফেলে দিয়েছেন। আমার ইচ্ছে ছিল সহজ ভাবে বিবর্তনকে ব্যাখ্যা করা। যেন বাতিল করার আগে কেউ সামান্য একটু হলেও ভাবনার খোরাক পান।
সেই হিসেবে ডারউইনের প্রধান তিনটি দাবি, সেগুলোর বিপক্ষে যুক্তি এবং দাবীগুলোর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা করাটাই আমার লেখার উদ্দেশ্য। আর একটি দাবী বাকি আছে। সেটা নিয়ে আগামী পর্ব হবে। তারপর আমি মনে করি আমার কাজ শেষ।
তবে আরও অনেক মিসকন্সেপসন রয়েছে। পর্বগুলো দেবার পর আমিও ভেবেছিলাম তিনটি দাবী নিয়ে আলোচনার পর সেগুলো নিয়েও কথা বলবো। কথা বলবো বিবর্তনের চমৎকার কিছু ভিজিবল প্রমান নিয়ে। তবে সেটা নির্ভর করছে সময়ের উপর।
প্রাকৃতিক নির্বাচনটা ব্যাখ্যা করার পর আমার মূল লক্ষ অর্জিত হয়ে যাবে। তারপর আগাবো কীনা নিশ্চিত নই। কারণ মিডের ছুটি শেষ। আইইউটিতে যেয়ে আবার ফ্রেন্ডস দেখা শুরু করতে হবে 😛
ফ্রেণ্ডস নিয়ে কুনু বিতর্খ নাই, হেইডা বিবর্তিতও হইবো না। তার চাইতে এই লেখাডা শ্যাষ কোরো দিকি। 😛
:thumbup: :thumbup:
Life is Mad.
🙂
মাথার উপর দিয়া গেছে গা......জাউগগা, আমি পিউর হিউমিনিটিস 😉
😀
রেজু আরেকবার পড়। আমিও তো মানবিক দোস্ত। মনে আছে আমাদের ISSB গ্রুপে সবাই মানবিক ছিলাম। 😀
ভাল লাগছে পড়তে। এসব নিয়ে এখন আর ঘাটাঘাটি করার সময় পাইনা। তাই কেউ সহজ করে লিখলে পড়ে ফেলি এক নি:শ্বাসে।
লেখা চলুক। পরের পর্বগুলোতে চোখ রাখব।
ধন্যবাদ।
এইপর্বটা আগেরগুলোর চেয়ে ভালো হইছে।
বাকি কথা আমার আগেই আন্দালিব বইলা দিছে।
'মাথানষ্ট টার্ম' পড়ার জন্যে অপেক্ষা করছি।
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
থ্যাঙ্কু। 🙂
নীরব পাঠক :-B
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
- 🙂
valo hoece...khaleq. sorry adeeb
:)) =)) :khekz:
ক্যাজা বাবা কি কয় :khekz: :goragori: :goragori:
দারুণ......এই পর্বটা সবচেয়ে ভালো লেগেছে। :thumbup:
মাথানষ্ট পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। 🙂
চমৎকার লেখা। খুব ভালো লাগল এই পর্ব। চলুক।
এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সহজে বোধগম্য পর্ব :thumbup: :thumbup:
ইন্টারেস্টিংতো বটেই।
একটা ব্যক্তিগত মত দেই, সম্পূর্ণ অফটপিক যদিও। কেন যেন এধরণের বিতর্কগুলোতে (এই পোস্টকে উদ্দেশ্য করে বলছিনা মোটেই) বিবর্তন তত্ত্বের সমর্থনকারী এবং সৃষ্টিতত্ত্বের সমর্থনকারী উভয়কেই অযাচিতভাবে একে অন্যের ভয়ে ভীত দেখতে পাই, মানে আমার অন্তত সেরকম মনে হয়। যেন কোনমতে যদি তাদের একটা ভুল বেরিয়ে যায় তবেতো অপর পক্ষের কাছে ধরা খেয়ে যেতে হবে। বিজ্ঞানের যুক্তিপূর্ণ রাস্তায় বিবর্তন একটি প্রমাণিত জিনিস আমার কাছে। কিন্তু এটিকে সৃষ্টিতত্ত্ববাদে বিশ্বাসীদের বানর থেকে মানুষ আইছে টাইপ সরলীকরণটা কেন জানি আমার মেনে নিতে ইচ্ছা হয়না। আদি কালের মানুষ, কিংবা যদি বলি আদম আঃ এর সাথে এখনকার মানুষেরইতো আকৃতিগত অনেক বৈসাদৃশ্য রয়েছে, এটিও তো বিবর্তনের স্বল্পকালীন সময়ের একটি উদাহরণ হতে পারে। এটি আসলে আমার নিজস্ব চিন্তাধারা, হাস্যকর লাগতে পারে যে কারো কাছেই। বর্তমান সময়েই পৃথিবীর এক অঞ্চলের মানুষের সাথে অন্য ভৌগলিক অঞ্চলের মানুষের আকার আকৃতির ব্যাপক ভিন্নতা চোখে পড়ে। আমি নিজে একজন বিলিভার। পালন করি বা না করি, কুরানে আমার শতভাগ আস্থা। বর্তমান বৈজ্ঞানিক যুগের অনেকেই কুরানকে বিজ্ঞানের সাথে মেলানোকে অজ্ঞতার শামিল মনে করেন, তাতে আমার নিজের বিশ্বাস একচুল ঘাটতিতে পড়েনা। এই ক্ষেত্রে হয়তো আমি 'মূর্খের মতই' কুরানকে বৈজ্ঞানিক আলোকে লেখা বিশ্বাস নিয়ে নিয়ে বেচে থাকবো। কিন্তু সেইসাথে বিজ্ঞানকে তার প্রমাণিত সত্যের সাথে সাদরে গ্রহণ করবো। এখন হয়তো অনেকে বলবেন তবে যেখানে বিজ্ঞান এসে তার প্রমাণিত সত্যের সাথে কুরানকে অসাড় করবে সেখানে আমার স্ট্যান্ড কি হবে? এটি কিছুটা ট্রিকি হয় বিলিভারদের জন্য। উদাহরণ দেই আমার নিজের কনসেপশন দিয়েই (যদিও এটি ইমম্যাচিউর থট হতে পারে অনেকের কাছে) যেমন আমি আদি পিতা আদমের ইনসার্শান সংক্রান্ত আল্লাহর কথায় বিশ্বাসী। এখন আমি নিজে নিজে এটুকু বুঝে নিই চিন্তাভাবনা করে, আদম কে কী ফর্মাটে ইনসার্ট করা হয়েছে তা পরিপূর্ণ ভাবে কুরানে আছে কিনা আমি জানিনা। যেহেতু ধর্মে রূহ একটি ফর্ম, সেখানে বিবর্তনের ধারার সাইকেলে পড়া কোন একটি স্পেশিজ এ যেটি কিনা মনুষ্যাকৃতির পর্যায়ে ছিলো তার মধ্যেও এটিকে ইনসার্ট করা হয়ে থাকতে পারে। হাস্যকর কথা বলছি নিজেই বুঝতে পারছি 🙁 জিনিসটা আমি হাইপোথিটিক্যালি নিজের ভেতরে সাজাচ্ছি যেহেতু কুরান আমার পুরোটা বুঝে পড়া নেই, এবং সাইদী টাইপ কোন তাফসিরে কুরান নামধারীদের ব্যাখ্যায় আমার আস্থা নেই সেজন্যেই। আদি পিতা এবং মাতাকে এরকম কোন প্রজাতিতে বোধসত্ত্বা হিসেবেও হয়তো ইনসার্ট করা হয়েছিলো।
রায়হানের এই তথ্যপ্রমাণ টাইপ লেখায় হাস্যকর এইগুলো তুলে ধরার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। আমার কমেন্ট টা আবার জাকির নায়েক টাইপ হয়ে গেলো কিনা এইটা নিয়া টেনশিত থাকলাম। পড়ালেখা একেবারেই করা নাই ধর্ম কিংবা বিজ্ঞান কোনটা নিয়াই, তাই হয়তো আষাঢ়ে গল্প টাইপ কিছু একটা ফাদলাম। কি বলতে চাইলাম তার ধারে কাছ দিয়াও হয়তো লেইখা ফুটাইতে পারলামনা।
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
কাইয়ূম ভাইয়ের কমেন্টে :thumbup:
এক্ষেত্রে আমার চিন্তাভাবনাও আপনার মতই। কিন্তু আপনার মত গুছিয়ে হয়ত কখনও প্রকাশ করতে পারতাম না।
ঐ :thumbup:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
ঐ :thumbup:
এতো টেনশন কইরা কী হবে কাইয়ূম ভাই!
বিসমিল্লাহ বইলা আসেন শামীমের দোকানে এক্কাপ চা খাই। 😛
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
কাইয়ুম ভাই, আপনার মন্তব্য চিন্তার খোরাক জোগাবে অনেকের মনে। আর অবশ্যই জাকির নায়েক টাইপ কিছু হয় নাই।
অ টোঃ ওয়ারিদ এর মাইয়াটা তো আসলেই সিরাম :awesome: :awesome:
প্রথম ব্যাপার হচ্ছে সৃষ্টিতত্ব নয়, একটি তত্ব বা থিওরিকে প্রেডিকশন মেইক করতে হয় এবং ফলসিফায়েবল হতে হয়, সৃষ্টিতত্ব এই দুটির কোনটি করেনা। সৃষ্টিতত্বকে আসলে তত্ব বলা উচিত নয়। তত্ব বা থিওরি অ্যাকাডেমিয়ার একটি বিষয়, however সৃষ্টিতত্বকে একটি চমতকার ইন্দ্রজাল বলা যেতে পারে।
ক্রিয়েইশনিজম একটি ভিতীকর জিনিষই বটে। তবে, বায়োলজিস্টরা এই কারণে ভীত নয় যে ক্রিয়াশনিস্টদের কাছে তাদের ভুল ধরা পড়ে যাবে। তারা নিজেরাই নিজেদের ভুল ধরে থাকে। science is a self-correcting process. যেমন, পিল্টডাউন ম্যানের ফেইক ফসিল, এটা কি ক্রিয়েইশনিস্টরা ধরেছে নাকি সাইন্টিস্টরা ধরেছে? আমি মনে করি, ক্রিয়েইশনিজম ভিতীকর এই কারনে যে, এটা আমাদের সভ্যতাকে প্রস্তরযুগে ফিরিয়ে নিতে চায়; অসততাকে অ্যাকাডেমিয়ার অন্তর্ভুক্ত করতে চায়; মিথ্যাচার, নির্দয়তা, অধিকার হরণ ইত্যাদি সকল দোষ যেই দোষে ধর্ম দুষ্ট তা দ্বারা আমাদের সভ্যতাকে সমগক্রমিত করতে চায়।
অবশ্যই আপনার সৃষ্টিশীলতাকে আপ্রিশিয়েট করি। কিন্তু, আমার প্রশ্ন এই ফ্যান্টাসী আমাদের সত্যের কতটা কাছাকাছি নিয়ে যাচ্ছে? কি উপকার করছে এই ফ্যান্টাসী? কেন আমরা এটা ফ্যান্টাসাইজ করছি? পৃথিবীতে কি আর কোন গ্রাউন্ডই নেই যেখানে আমাদের সৃষ্টিশীলতাকে নিয়োগ করে আমরা আসলেই উপকারী, মূ্ল্যবান, জীবনরক্ষাকারী কিছু করতে পারি? তবে, সম্পুর্ণ আনপ্রডাক্টিভ একটি খাতে আমাদের সৃষ্টিশীলতাকে আমরা কেন নিয়োগ করছি?
আবীর, প্রতিটি পর্বে তোমার লেখার উন্নতি হচ্ছে। যুক্তি আরো ধারালো এবং সহজবোধ্য হচ্ছে। ভালো চেষ্টা এবং উদ্যোগ। লেগে থাকো। :hatsoff:
একটা প্রস্তাব ধারাবাহিকটা শেষ করার পর আবার প্রথম পর্বটা নিয়ে ধরো। ওটাকে আরেকটু মানুষ করলে পুরো লেখাটা কোথাও ছাপতে দিতে পারো। এমনকি ধর্মের সঙ্গে তর্ক-বিতর্কের অংশ বাদ দিয়ে কোনো পত্রিকার বিজ্ঞান পাতাতেও এটা ছাপা যেতে পারে। চেষ্টা করে দেখতে পারো। প্রথম আলোর মুনীর হাসানের সঙ্গে কথা বলতে পারো। আগ্রহী হলে আমাকে মেইল করো। আমি মুনীরের নাম্বার দিয়ে দেবো।
অফটপিক : এবিসিতে এইমাত্র রোকযানা বাজলো!! ;;;
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
ধন্যবাদ ভাইয়া।
আনন্দে পিরা যাবো কিনা বুঝতেছিনা। এতো বুঝাবুঝির কাম নাই। আগে একটু পিরা যাইয়া নেই। :pira:
ধর্মের দিকে আঙ্গুল তুলে না দেখালে লেখাটা সোফার হয়ে যায়। আমি সেরকম করে, আপনাকে মেইলে পাঠাবো। আশাকরি আজকে রাতেই শেষ পর্বটা লিখে ফেলতে পারবো। তারপর ফরম্যাটিং এর কাজ করবো। আপনাকে ধন্যবাদ।
আর প্রথম লেখার শেষ প্যারা? আমাকে সত্যিই ভাইয়া হুমকি দেওয়া হয়েছিল। অনেক ঘটনা। মনে দুঃখে তাই ব্লগে ঐ লাইনটা লিখেছিলাম। হালকা হবার জন্য। প্রিন্টেড মাধ্যমে ঐভাবে অবশ্যই জাবেনা।
রায়হান, এবছর ডারউইনের জন্মের ২০০ বছর এবং 'অরিজিন অব স্পিশিজ' প্রকাশের ১৫০ বছর পূর্তি হলো। এ উপলক্ষ্যে 'বিজ্ঞান চেতনা পরিষদ' শিগগিরই ডারউইন-স্মারক-সংখ্যা প্রকাশ করবে। তুমি যদি সেখানে লিখতে চাও তাহলে যোগাযোগ করো: saumitra1880@yahoo.com
অভিজিৎ রায়ে মেইল করেছিলেন গতকাল। বললেন এই লেখাটাই দিতে। মুহাম্মদ সেদিন অবশ্য আরেকটা বিষয় দিয়েছিল- স্মারক সংখ্যায় লেখার জন্য।
রায়হান তুমি কি 'বিজ্ঞান চেতনা পরিষদে'র সাথে যুক্ত? তোমার সাথে আমার যোগাযোগ করাটা খুব দরকার। সম্ভব হলে সামনাসামনি, নয়তো ফোনে।
ভাইয়া। আপনি কী ঢাকায়? তাহলে যেকোন উইকএন্ডে দেখা করতে পারবো। আমি সপ্তাহজুড়ে আইইউটিতে থাকি, আর উইকএন্ডে বাসায়। আমার ফোনটা কয়েকদিন ধরে নষ্ট। আপনি যদি মেইল করেন তাহলেই হবে। raihan1079এটgmail.com
আর আমি বিজ্ঞান চেতনা পরিষদের সাথে যুক্ত না। তবে মুক্তমনা'র কয়েকজনের সাথে মেইলের যোগাযোগ হয়। আপনার মেইলের অপেক্ষায় থাকলাম ভাইয়া।
রায়হান, তোমার লেখা ভালো হচ্ছে। তবে একটা কথা বলি, মনোযোগ দিয়ে শোনো। ধর্মকে সরাসরি আঘাত করে কোনোকিছু আপাতত লিখোনা। ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে ধর্মের গুরুত্ব কেবল ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক। তারপরেও আমি এজন্যেই কথাটা বললাম যে, মানুষের মনের একটা অংশ যুক্তি মেনে চলে না। সেখানেই ধর্মের বাস। সেই অংশ যখন হুমকির সম্মুখীন হয় তখন সে যুক্তিবাদী অংশের দরজাটিও বন্ধ করে দেয়। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য আগে যুক্তি গ্রহণের দ্বার উন্মুক্ত করতে হবে। নতুবা বিবর্তন সংক্রান্ত আলোচনা সাধারণ মানুষ মেনে নেওয়া তো দূরে থাক, সহ্যই করবে না। এধরণের আলোচনার উদ্দ্যেশ্যও সফল হবে না। অনেক বামপন্থী, মার্কসের একটা কথা কোট করেন - ধর্ম হলো গরীব মানুষের আফিম। কিন্তু যেটা কোট করতে তাঁরা প্রায়শ ভুলে যান সেটা হলো - Religion is common man's philosophy. ধর্মই সাধারণ মানুষের কাছে অস্ত্বিত্বের শামিল। তাই আলোচনা এমন হওয়া উচিত যাতে সে তার অস্ত্বিত্বকে বিপন্ন মনে না করে সেটা গ্রহণ করতে পারে। তবেই সে যৌক্তিক চিন্তা করে একসময় কুসংস্কারের বেড়াজাল ভেঙে বেরিয়ে আসতে পারবে। ব্যাপারটা বেশ ধীরগতির প্রক্রিয়া, সন্দেহ নেই। তবে এছাড়া অন্য উপায়ও নেই। দ্বান্দিক বস্তুবাদ (Dialectical Materialism) -এ এই পদ্ধতির নাম - The negation of negation. এটা সমাজ পরিবর্তনের তিনটি মার্কসীয় মূলনীতির একটি। পরবর্তী লেখাগুলোতে এই কৌশলগত দিকটি লক্ষ্য রাখবে আশাকরি।
মিসিং লিংক ব্যাপারটা নিয়ে কিছু কথা বলা দরকার মনে করছি।
১. মিসিং লিংক বলতে দুটো প্রজাতির মধ্যবর্তী এমন প্রজাতিকে বোঝায় যেটা বাস্তবে (জীবিত বা ফসিল যা-ই হোক) পাওয়া যায়নি। কিন্তু মনে রাখতে হবে প্রজাতি নিজেও স্থির কিছু নয়। প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হতে হতে যখন তার একটা অংশ আর অন্য অংশের সাথে মিলিত হয়ে বাচ্চা দিতে পারে না তখন বলা হয় যে নতুন প্রজাতির উৎপত্তি (Spaciation) হলো। কিন্তু কখন এই ব্যাপারটা ঘটে সেটা পিনপয়েন্ট করা যায় না। যেমন: ধরা যাক ফটোশপে একটা গ্র্যাডিয়েন্ট নেওয়া হলো যার একপ্রান্তে কালো আর অপর প্রান্তে সাদা। আর মাঝখানটা ধূসর। এখন সাদা আর কালোর মধ্যকার ধূসব অংশটা যদি মিসিং লিংক হয় তবু এটা বলা মুশকিল যে ঠিক কোন্ বিন্দুতে সাদা পাল্টে ধূসর হলো আর কোন্ বিন্দুতে এসে ধূসর পাল্টে কালো হলো।
২. নতুন প্রজাতির উদ্ভব হতে হলে Isolation হতে হয়। সেটা আর কিছুই না, আগের প্রজাতির একটা অংশ 'দলছুট' হয়ে পড়ে। আইসোলেশন বিভিন্ন ধরণের হতে পারে - ভৌগলিক (geographical), সময়চক্র-সংক্রান্ত (time-cycle related), আবহাওয়াগত (meteorological) ইত্যাদি। ধরা যাক, একটা প্রজাতির কোনো অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে মূল দল থেকে কিছু দূরে বেশকয় প্রজন্ম ধরে বাস করতে থাকলো। এই দলছূট অংশ যদি মূল দল থেকে বেশ ছোট হয় তাহলে তাদের মধ্যে নতুন বৈশিষ্টের বিকাশ ঘটবে মূল দল থেকে তুলনামূলকভাবে কম সময়ে (সেটা কেন হবে তার জবাব আশাকরি রায়হান তার প্রাকৃতিক নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনায় ব্যাখ্যা করবে)। আবার দলছূট অংশের ফসিল পাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে কেননা মূল দল থেকে তার সদস্য-সংখ্যা কম। এজন্যেই ফসিল রেকর্ডে দেখা যায় যেন হঠাৎ করেই একটা নতুন প্রজাতি চলে এসেছে। এখানে আইসোলেশনের যে প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করা হলো সেটাও মিসিং লিংক এর একটা কারণ।
খুবই ঝরঝরে একটা লেখা। রায়হান দোস্ত অনেক অভিনন্দন তোকে। আমার মত খাঁটি মানবিক ছেলেকে তুই মনে হয় বিবর্তন কিছুটা হলেও বোঝাতে পারছিস। :clap: :clap:
সৌমিত্রের মন্তব্য দুইটা চমৎকার হয়েছে। বিশেষ করে প্রথমটা আমি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি। মানুষ (আমি নিজেও) নিজস্ব মতামতের উপরে আঘাত নিতে পারে না, তা সেটা যতই ভুল/ভুয়া/মিথ্যা মতামত হউক না কেন। কুইনাইন খাওয়াতে হলে চিনির প্রলেপ দিতেই হয়!
কুইনাইনের চাইতেও কমন একটা ওষুধ আছে, যেটায় চিনির প্রলেপ দেওয়া থাকে - ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ট্যাবলেট। বাবা চিকিৎসক হওয়ার সুবাদে সেটার দেদার ফ্রি স্যাম্পল বাসায় থাকে। মনে আছে, ছোটবেলায় সেগুলোর শুগার-কোটিং টুকু চেটে খেয়ে আসল ট্যাবলেটটা ফেলে দিতাম! শুগার-কোটিং করতে গিয়ে ঘটনা যেন সেরকম না দাঁড়ায়।
অনেক ডিটেইল লেখা। প্রিক্যাম্ব্রিয়ান যুগে খরগোশের উপমাটা আমার ফেভারিট।
স্কপস ট্রায়াল নিয়া লিখবি না? বিজ্ঞান চেতনার স্মারক সংখ্যা আর অনন্ত বিজয় যে স্মারক বের করতে চাচ্ছেন দুইটা মনে হয় এক না। এই লেখার একটা অখণ্ড সংস্করণ তৈরী করেও দিতে পারস।