প্রসঙ্গ : পরকীয়া – ষষ্ঠ (শেষ) পর্ব

প্রসঙ্গ : পরকীয়া – প্রথম পর্ব
প্রসঙ্গ : পরকীয়া – দ্বিতীয় পর্ব
প্রসঙ্গ : পরকীয়া – তৃতীয় পর্ব
প্রসঙ্গ : পরকীয়া – চতুর্থ পর্ব
প্রসঙ্গ : পরকীয়া – পঞ্চম পর্ব

পনেরো
আসুন এবার দেখে নেয়া যাক, শিশুরা ছাড়াও অন্য আর কোন পক্ষ কি কি ক্ষতির সম্মুখিন হতে পারে।
একটি পরকীয়ায় শিশুরা দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতির সম্মুখিন হলেও, অনেক বেশী তাৎক্ষণিক ক্ষতির সম্মুখিন হতে পারে এর সাথে সংশ্লিষ্ট এক বা একাধিক পক্ষ।
একটি পরকীয়ায় ক্ষতির ঝুকিতে থাকা পক্ষ থাকে কমপক্ষে তিনটা:
পক্ষ#১ : পরকীয়াটির ইনিশিয়েটর বিবাহিত ব্যক্তি
পক্ষ#২ : তাঁর পরকীয়ার আহ্ববানে সাড়া দিয়ে তাতে অংশ নেয়া ব্যক্তি (ইনি যদি আবার বিবাহিত কেউ হন, তাহলে পক্ষর সংখ্যা চার-এ গিয়ে দাঁড়ায়)
পক্ষ#৩ : বিবাহিত ব্যাক্তি (বা ব্যক্তিবর্গের) স্পাউস (বা স্পাউসগন)

একটি পরকীয়ার ফলাফল যা ই হোক, সেটার কোনো না কোনো এক পর্যায়ে এই পক্ষগুলির এক বা একাধিককে একটা ট্রমাটিক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়ই।
প্রায় সময়েই দেখা যায়, তা থেকে তিনি (বা তাঁরা) “পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজ-অর্ডার (PTSD)” নামের এমন একটি মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন, সিস্টেমেটিক মনঃচিকিৎসা ছাড়া যা থেকে সহজে মুক্তি মেলে না…
PTSD নিয়ে বিস্তারিত পরে লিখছি, তাঁর আগে কোন পক্ষ কখন কিভাবে এতে আক্রান্ত হন, সেটা জানিয়ে যাই।

সাধারনতঃ একটি পরকীয়ার ঘটনা হঠাৎ করেই উদঘটিত হয় আর এর প্রথম কোপটা গিয়ে পড়ে পক্ষ#৩-এর উপরে।
এদের কাছে নিজেকে ততবেশি ওয়ার্থলেস বলে মনেহয়, স্পাউসের অনুগত্য, বিশ্বস্ততা, ভালবাসা ইত্যাদির ব্যাপারে যাঁদের যতবেশি আস্থা থাকে। আর তাই ট্রমার পরিমানটাও হয় ততবেশি। আর এই ট্রমা থেকেই এঁরা ভ্যারিং ডিগ্রিতে PTSD -তে আক্রান্ত হয়ে পড়তে পারেন।

একটি পরকীয়ার ঘটনা স্পাউসের কাছে উদঘটিত হবার সাথে সাথে প্রথমেই যে ড্যামেজ কন্ট্রোল মেজার বেশিরভাগ ইনিশিয়েটর মানে পক্ষ#১ নিয়ে থাকেন, তা হলো, সম্পর্কটা ডিসকন্টিনিউ করার।
হঠাৎ করে এরকম একটা সঙ্গি হারানো পরিস্থিতিতে পড়ে পক্ষ#২ একটা শক পান, ট্রমাটাইজডও হন। কিন্তু সেটার ষোলকলা পুর্ন হয় যখন তাঁকে পক্ষ#৩ বা তাঁদের সিমপ্যাথাইজাররা তো বটেই, কখনো কখনো অন্য পক্ষগুলো ও তাঁদের সিমপ্যাথাইজাররাও সবাই মিলে পাবলিক শেইমিং-এর মুখোমুখি করে, সব দোষ তাঁর উপরে চাপায়।
পক্ষ#২-এর জন্যেও এই পরিস্থিতিতে তাই PTSD-তে আক্রান্ত হবার সম্ভবনা থাকে অতি উচ্চ!!!

বিরল হলেও, আবার এমন ঘটনাও ঘটে, যেখানে পক্ষ#১-কেও পরকীয়ার কারনে PTSD-তে আক্রান্ত হতে হয়।
তা কি করে?
সম্পর্কটা কোনো পরিনতির দিকে যাচ্ছে না, অথবা, অবিবাহিত এবং আরও প্রমিজিং বা এট্রাক্টিভ কোনো প্রেমাষ্পদ পাওয়া গেছে – এরকম পরিস্থিতি গুলোতে পক্ষ#২ যদি হঠাৎ করে উত্তপ্ত একটা সম্পর্ক থেকে পক্ষ#১-কে বের করে দেন, দেখা যায় সেটাও তাঁর জন্য PTSD-তে আক্রান্ত হবার উপলক্ষ তৈরী করে দিতে পারে। বিশেষ করে পক্ষ#১ যখন সম্পর্কটাকে খুব সিরিয়াসলি নেন, এবং ইমোশনালি খুব গভীরভাবে জড়িয়ে যান…

পরের অধ্যায়ে PTSD-র স্বরূপ ও তা থেকে মুক্তির উপায় নিয়ে লিখবো……

ষোলো
পরকীয়ার কারনে বিশ্বাসভঙ্গের শিকার হয়ে যারা পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজ-অর্ডার (PTSD)-এ আক্রান্ত হন, তাঁদের অবস্থাটার আরেকটা নামও আছে।
আর তা হলো “পোস্ট ইনফিড্যালিটি স্ট্রেস ডিজ-অর্ডার (PISD)
এই নামে ডাকার কারন: অন্যান্য ধরনের ট্রমা জনিত স্ট্রেসড পেশেন্টেদের চেয়ে এদের সিম্পটমগুলি অনেক বেশী কন্সিস্ট্যান্ট, রিকারিং, প্রেডিকটেবল।
এইজন্য লাইন অব ট্রিটমেন্টও বেশ স্ট্রেইট ফরোয়ার্ড।
তবে কথা হলো, সঠিক ও দ্রুত চিকিৎসা পেতে হলে, লজ্জা-শরমের মাথা খেয়ে রোগিকে সুনির্দিষ্ট করে বলতে হবে পরকীয়ার কি ধরনের রোলের কারনে সে এই PTSD-তে সে আক্রান্ত হয়েছে।
তারমানে এই দাড়ালো যে, যত গোপনিয়তার সাথেই আপনি পরকীয়াটা করেন না কেন, সেইজন্য এতগুলা পক্ষের কেউ একজন PTSD-তে আক্রান্ত হলেই আপনার সব গোপনিয়তারই পি তে বি মারা যাবে!!!
আর আগেই তো বলেছি, পরকীয়া এমনই খবিশ জিনিস, যা আজ হোক বা কাল, প্রকাশিত হবেই হবে।
আর তা যখন হবেই, কেউ না কেউ সেটার কারনে PTSD-তেও আক্রান্ত হবেই হবে…

আসুন জেনে নেয়া যাক, কি হয় যখন কেউ PTSD-তে আক্রান্ত হন:
১) এদের মধ্যে হঠাৎ হঠাৎ আতকে ওঠার প্রবণতা দেখা দেয় এবং যা থেকে দীর্ঘ্যস্থায়ী বুকে ধুকপুকানি সম্বলিত উৎকন্ঠার সৃষ্টি হয়।
২) তাঁদের মধ্যে “ঘর পোড়া গরু” প্রবণতা কাজ করে বলে পরবর্তিতে যে কারো সাথে যে কোনো সম্পর্ক স্থাপনে এঁরা সংশয়ে ভোগে।
৩) শুধু নিজেরই না, অন্যদের ক্ষেত্রেও এঁরা যেকোনো ব্যাপারে তুচ্ছাতিতুচ্ছ ছিদ্রান্বেষণ করতে থাকে সেই ব্যাপারটাতে না বলার জন্য। এসব বারবার করতে থাকলে এঁরা দিনে দিনে একা হয়ে পড়তে শুরু করে।
৪) সবচেয়ে বিশ্বস্ত মানুষ দ্বারা বিশ্বাস ভঙ্গের শিকার হওয়ায় আর কখনো কাউকে সহজে বিশ্বাস করতে পারে না। করলেও সেই আস্থার জায়গাটা খুব বেশিদিন টিকিয়ে রাখতে পারে না।
৫) সররাচর যেসব বিষয়ে তাঁদের আগ্রহ থাকে, দেখা যায়, দিনে দিনে সে সবের উপর আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে শুরু করে।
৬) “তাঁর কি হয়েছিল, কিভাবে হয়েছিল” – নিজের মনেই নিজেকে এসব প্রশ্ন করে করে নিজেকেই উত্যক্ত করে ফেলে।
৭) এমন সব পরিবেশ, পরিস্থিতি, স্থান, অনুষ্ঠান, দিবস, ইত্যাদি তাঁরা এড়িয়ে চলা শুরু করে – যা তাঁদের পুরনো স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে পারে। একারনেই তাঁদের পৃথিবীটা দিনে দিনে ছোট হয়ে আসতে থাকে তাঁদেরই জন্য।
৮) প্রায় প্রায়ই হতাশ ও অসহয় বোধ করে তাঁরা।
৯) এঁরা উচ্চহারে মনোনিবেশ করার সমস্যায় ও নিদ্রাহীনতায় ভোগে।
১০) যাদের সাথে একসময় তাঁরা ঘনিষ্ট সংশ্রাবে ছিল, তাঁদের দেখা মাত্রই এঁরা নানাবিধ অস্বাভাবিক আচরন করা শুরু করে দেয়।
১১) ছোট-খাটো সব ব্যাপারেও এঁরা আবেগ ধরে রাখতে পারে না। কান্না কাটি করে বা চিৎকার চ্যাচামেচি করে সব মাথায় করে ফেলে।
১২) শারীরিক যেসব পরিবর্তন এসব ঘটনায় ঘটে, তা হলো:
– দ্রুত হৃদস্পন্দন
– হঠাৎ রক্তচাপ বৃদ্ধি
– দমবন্ধ হয়ে আসা
– হতবুদ্ধি হয়ে যাওয়া বা শকে চলে যাওয়া
– বুকে ব্যাথা বোধ করা
– বুক ধড়ফড় করা
– মাংশপেশি আড়ষ্ট হয়ে আসা ও সেই কারনে ব্যাথায় আক্রান্ত হওয়া
– ক্লান্তিতে তে ভোগা
– জ্ঞান হারানো বা অজ্ঞান হয়ে পড়া
– চোখ-মুখ, চেহারা হঠাৎ হঠাৎ লাল অথবা ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া
– ত্বক মলিন ও নিস্তেজ হয়ে যাওয়া
– অতিরিক্ত ঘামা ও তৃষ্ণা পাওয়া
– মাথা ধরা, মাথা ঝিমঝিম করা, মাথা ঘোরা, ঝিমুনি এসে যাওয়া ইত্যাদি
– শ্বাস-প্রশ্বাসের দ্রুততায় আক্রান্ত হওয়া
– কেপে কেপে ওঠা, দাত কিড়মিড় করা, এমন কি
– পেটের পীড়া বা লুজ মোশনে আক্রান্ত হওয়া।
১৩) এর পাশাপাশি এদের যৌনাকাঙ্ক্ষা ও যৌন আচরনেও বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটে যায়।

এত সব অস্বাভাবিকতা আবিষ্কার করার পরেও কিন্তু হতাশ হবার কিছু নাই।
PTSD হোক বা PISD, সঠিক ভাবে চিকিৎসক নির্বাচন ও তাঁদের সাথে অসুখের কারন, আক্রান্ত হবার ধরন, ইত্যাদি শেয়ার করলে খুবই উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্ভব, যা দিয়ে রোগিকে দ্রুত স্বাভাবিক করে আনা যায়।

সতেরো
এই আলোচনার শেষ পর্যায়ে পৌছে গেছি। এবার সামারাইজ ও কনক্লুড করি।
কে পরকীয়া করবে আর কে করবে না, এটা সম্পর্ন তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার।
এটা ভাল নাকি খারাপ, সেটা নিয়ে আমার কোনো মতামত নাই।
এটুকু বলতে পারি, ব্যাপারটা খুবই চ্যালেঞ্জিং।
এ থেকে যা যা অর্জনের সম্ভবনা থাকে, হারানোর সম্ভবনা থাকে তা থেকে অনেক বেশী।
বিবাহিত কারো সাথে সম্পর্কে জড়ানোর অদম্য ইচ্ছা যদি হয়ও, শুরু থেকেই কিছু ড্যামেজ কন্ট্রোল মেজার সেখানে অন্তর্ভুক্ত না রাখলে পরবর্তিতে ক্ষতির আশঙ্কা থাকে অনেক বেশী।
আসুন জেনে নেয়া যাক, কি কি ড্যামেজ কন্ট্রোল মেজার একটি পরকীয়ায় অন্তর্ভুক্ত থাকা উচিৎ:
১) ইমোশনালি একেবারেই ইনভলভড না হতে চেষ্টা করা, একান্তই যদি তা না যায়, সেটাকে যথা সম্ভব নুন্যমত পর্যায়ে রাখা।
২) সন্তান থাকলে, তাঁদের সাথে প্রেমাষ্পদের পরিচয় করানো, যেকোনো ভাবেই হোক একটা সম্পর্ক যে আছে, ব্যাপারটা তাদেরকে জানানো ও এই ব্যাপারে তাঁদের কে ইজি করে নেয়া। তাঁদেরকে সাথে নিয়ে একত্রে ঘুরতে বের হওয়া বা বাসায় বা অন্যত্র তাঁদের সাথে সময় কাটিয়ে তাঁদের কাছে বিবাহিত প্রেমিক বা প্রেমিকাকে গ্রহনযোগ্য করা। তাঁরা যদি কোনো কারনে প্রেমিক বা প্রেমিকাকে অপছন্দ বা রিজেক্ট করে, সম্পর্কটা নিয়ে না এগুনো বা তা বেশিদিন চালানো ঠিক হবে না।
৩) যেকোনো সময়ে পরকীয়ার ব্যাপারটা জানাজানি হয়ে যাবে, এটা মনে রেখে পরবর্তি পদক্ষেপ সম্পর্কে দুজনেরই ঐক্যমতে থাকা। ধরা খাওয়ার পর সেটা অস্বীকার না করা এবং একটা কমপ্লিট ডিসকানেকশন, পুরনো সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে পারে। কিন্তু তা না করে অন্য কোনো পথ নেবার মানেই হলো আগের সম্পর্ক থেকে ঝামেলা করে বের হওয়া। বের যদি হতেই হয়, ঝামেলা করার দরকার কি? অন্য কোনো সমস্যা যদি না থাকে, শান্তিপুর্ন উপায়ে যেকোনো একটা সম্পর্ক (আগেরটা বা পরেরটা) থেকে পৃথক হয়ে গেলে অথবা সব পক্ষের সম্মতিতে টাইম শেয়ারিং-এর মাধ্যমে একটা ইনক্লুসিভ রিলেশনে ঢুকে গেলেও কিন্তু শান্তিপুর্ন সমাধান হতে পারে।
৪) যদি জটিলতাপূর্ন কোনো পরকীয়া সম্পর্ক হয়, অর্থাৎ বয়সের বিরাট ফারাক, বস-সাবর্ডিনেট, টিচার-স্টুডেন্ট, নিষিদ্ধ নয় এমন নিকটাত্মীয় বা ঘনিষ্টজনের সাথে – যেখানে জানাজানির সাথে সম্মানহানীর বিশাল সম্পর্ক থাকে। এসব ক্ষেত্রে সম্পর্কটা যথাসম্ভব নুন্যতম সময়ে টার্মিনেট করা বা বিরতিতে যাওয়া উচিৎ। মনে রাখতে হবে, এসব ক্ষেত্রে জানাজানি হলে তা উভয়ের রেপুটেশনে এতটাই ক্ষতি করে যে সহজে তা মেরামত করা যায় না। সারা জীবনেও না।
৫) বিচ্ছেদোত্তর PTSD থেকে বাচবার জন্য আগে থেকেই ঠিক করে রাখা দরকার, বিচ্ছেদের পরে (বা বিরতি কালে) তাঁদের আচরন কেমন হবে। যার মধ্যে থাকবে: সে সময়ে দুজনেই কতটা ফ্রি থাকবে, অন্য কারো সাথে প্রকাশ্য সম্পর্ক স্থাপন করা যাবে কিনা, নিজেদের মধ্যে কতটা যোগাযোগ থাকবে – এইসব ব্যাপারগুলা। তাছাড়া একপক্ষের অনীহা জনিত কারনে বিচ্ছিন্নতার আগে অন্য পক্ষকে ধাতস্ত হবার জন্য পর্যাপ্ত সময় ও কারন দেয়া দরকার।
যার সাথে এত এত সুন্দর সময় কাটালেন, তাঁকে ঠেলে PTSD-তে ঢোকানোর মধ্যে কোনো কৃতিত্ব নাই। বরং সবার জন্য সহনীয় একটা পরিবেশ তৈরী করতে পারাটাই হলো কৃতিত্বের।
৬) মনে রাখতে হবে, একটি পরকীয়ায় সবচেয়ে বেশী ঝুঁকির মধ্যে থাকে নারীরা, তা তিনি ইনিশিয়েটর হন কিংবা প্রস্তাব গ্রহনকারী। তাঁদের মূল উদ্দেশ্যই থাকে একটা স্থায়ী পরিনতির দিকে এগুনো। কিন্তু পুরষদের মূল আগ্রহ থাকে সম্পর্কটা অস্থায়ী ভিত্তিতে চালিয়ে যাওয়ার। এই যখন অবস্থা, দুপক্ষকে সাটিসফাই করে এমন কিছু চাইলে একজনের অবস্থান পরিবর্তন হতেই হবে।
পুরুষকে অস্থায়ী থেকে স্থায়ীতে বললানো যত কঠিন, নারীকে স্থায়ী থেকে অস্থায়ীতে আনা ততটা কঠিন না। এই জন্যই বললাম, নারীর উদ্দেশ্য পুরনের ঝুঁকি অনেক বেশী। অন্যান্য ঝুঁকি, যেমন: পরিবারে ফিরে যাওয়ায় অগ্রহনযোগ্যতা, শেইমিং, ইমোশনাল ব্রেকডাউন, শারীরিক ঝুঁকি (প্রেগন্যান্সি, এম আর, আই পিল ইত্যাদি) – এসবতো আছেই। যারা বেশী ঝুকিতে থাকে, এবং ফলাফলগুলি ইর-রিভার্সেবল, তাঁদের জন্য একটা নীতি আছে যেটাকে বলে “কেভিয়েৎ এম্পটর” (buyer be aware) এটা নারীদের জন্য একটি সম্পর্কের শুরুতেই খুবই কনশাসলি এপ্ল্যাই করা উচিৎ। পরে ভিন্ন ফল হলে, তাঁর জন্য কাউকে দায়ি করে পরিস্থিতি বদলানো যাবে না…

দেখা যাচ্ছে, ক্ষতি এড়িয়ে একটি পরকীয়া চালানো আসলে খুবই কঠিন কাজ।
সবদিক সামলে দীর্ঘদিন এটা চালিয়ে যাওয়াটা নেয়ারলি ইম্পসিবলই বলা যায়।
তবুও যদি কেউ সবকিছু অনুকুলে নিয়ে, নির্লিপ্ত থেকে চালাতে পারেন, চালান।
আর না পারলে ফিরে যান।
তবে সাবধান থাকবেন, উল্টা পাল্টা চেষ্টা করতে গিয়ে নিজসহ কাছের অনেকগুলি জীবনের বর্তমান-ভবিষ্যত ঝুঁকির মধ্যে যেন না পড়ে।
(সমাপ্ত)

৬,০৭৬ বার দেখা হয়েছে

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।