অদ্ভুত এক মানসিক অবস্থা, নাম তার “বাই পোলার ডিজঅর্ডার” – (প্রথম পর্ব)
অদ্ভুত এক মানসিক অবস্থা, নাম তার “বাই পোলার ডিজঅর্ডার” – (দ্বিতীয় পর্ব)
দ্বিতীয় পর্বে বলেছিলাম, শেষ পর্বে চিকিতসা নিয়ে আরও কিছু কথা বলবো।
তবে জানিয়ে রাখা দরকার যে। “চিকিৎসা” কথাটা বললেই যেমন তা অসুস্থ্যকে সুস্থ্য করে তোলার একটা প্রক্রিয়া কথা মাথায় ঢোকায়, বাইপোলার ডিসঅর্ডারের চিকিৎসা কিন্তু আক্ষরিক অর্থে ব্যাপারটাকে সেই ভাবে কাজ করায় না।
এর প্রধান কারনই হলো এই যে বাইপোলার ডিসঅর্ডারকে কিন্তু টিপিকালি একটা রোগ বা অসুখ বলে চিহ্নিত করা ঠিক না।
যাঁদের বাইপোলার ডিসঅর্ডার আছে, অন্যদের চেয়ে তাদের ব্রেনের ফাংশান ভিন্নতর, এই হলো অবস্থাটি। ব্রেনের এই ভিন্নতর ফাংশানের কারনে তাঁরা অন্যদের চেয়ে কঠিনতর সময় অতিক্রমন করে, এই যা। “চিকিৎসা”-র নামে তাদের জন্য এমন কিছু কিছু ব্যবস্থা নেয়া হয় যা তাদের জন্য অন্য আর দশটা মানুষের মত স্বাভাবিক জীবনযাত্রার সুযোগ সৃষ্টি করে কেবল।
এখন প্রশ্ন হলো, সেই ব্যবস্থাগুলা কি কি?
এর যেসব মেডিকেশন অপশন আছে তাঁর বেশির ভাগই সিম্পটম সম্পর্কিত। অর্থাৎ –
– ম্যানিক স্টেজটি নিয়ন্ত্রনের জন্য চিকিতসকের পরামর্শ মতো “মুড স্ট্যাবিলাইজিং” ঔষধের প্রয়োগ, এবং
– ডিপ্রেসিভ স্টেজটি নিয়ন্ত্রনের জন্য চিকিতসকের পরামর্শ মতো “এন্টি ডিপ্রেসেন্ট” জাতীয় ঔষধের ব্যবহার
(আবার মনে রাখা দরকার যে মুড স্ট্যাবিলাইজার যেভাবে ম্যানিক থেকে স্বাভাবিকে নিয়ে যায়, এন্টি ডিপ্রেসেন্ট কিন্তু অনেকক্ষেত্রেই তা না করে ডিপ্রেশন থেকে সরাসরি ম্যানিক স্টেজের সুচনা করে দিতে পারে। তাই চিকিতসকের সুনির্দিষ্ট পরামর্শ ছাড়া নিজে নিজে ডিপ্রেশন ট্রিটমেন্টের জন্য এন্টি-ডিপ্রেসিভ গ্রহনে লাভের চেয়ে ক্ষতির সম্ভবনা হতে পারে বেশি)
এইসব মেডিকেশনের মাধ্যমে বাইপোলার ডিসঅর্ডার নিয়ন্ত্রন করার পাশাপাশি আর যা যা করনীয়, তা হলো: সাইকোথ্যারাপি (কাউন্সেলিং বা বিহেভিয়েরিয়াল থ্যারাপি ফর্মে) এবং কথা বলা। বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে থাকা…
পরের গুলার জন্য শুধু আক্রান্ত একা নন, তাঁর ঘনিষ্টজন অর্থাৎ আত্মীয় পরিজন বন্ধু-বান্ধবকেও চিকিৎসা প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে গন্য করাটা জরুরী হয়ে পড়ে। আর এইজন্যই এত কিছু বলা।
এই পর্যায়ে আরও একটা কথা বলে রাখা জরুরী।
যাঁদের বাইপোলার ডিসঅর্ডার আছে, তাদের এক্সট্রিম মুড সুইং-এর ঘটনাগুলো যেমন ইভেন্ট ট্রিগারড হতে পারে, তেমনি হতে পারে এনভায়ারমেন্ট ট্রিগার্ড।
সাধারনতঃ যে সব ইভেন্টে এই এক্সট্রিম মুড-সুইং এর ঘটনাগুলো ঘটে থাকে তা হলো:
১) ভাল বা খারপ ঘটনা বা সংবাদ জনিত স্ট্রেস থেকে। এর মধ্যে নতুন চাকুরি পাওয়া তা ছাড়া থেকে নতুন সম্পর্কে জড়ানো থেকে ও তা ভাঙ্গা পর্যন্ত – সবই ইনক্লুডেড।
২) ঘুমে ব্যাঘাত ঘটা থেকে।
৩) ডেইলি রুটিনের পরিবর্তনের হওয়া, যেমন লম্বা ছুটি পাওয়া বা শক্ত বিধিনিষেধের মধ্যে থাকা অবস্থা থেকে হঠাৎ করে হাত-পা ঝাড়া একটা অবস্থায় পৌছুনো।
৪) নানান অনিয়ম করার কারনে, যেমন বেশি চা-কফি খাওয়া, ধুমপান, হৈ চৈ বা আনন্দ-ফুর্তিতে মেতে থাকায় ইত্যাদি।
৫) মাদক বা অন্য নেশা দ্রব্যের (যেমন এলকোহল, উইড ইত্যাদি) প্রতি ঝুকে পড়া থেকে।
৬) কারো সাথে বাক-বিতন্ডায় বা অন্য কোন ঝামেলায় জড়িয়ে পড়া থেকে।
৭) অন্যকোন অসুস্থ্যতার চিকিৎসা নেয়া থেকে বিরত থাকার কারনে।
৮) হঠাৎ খুব কাছের কারো মৃত্যু বা অন্যকোন দুঃসংবাদ থেকে।
এনভায়ারমেন্টাল যে যে কারনে এক্সট্রিম মুড-সুইং ঘটে তার প্রধানটিই হলো জলবায়ু সম্পর্কিত।
বাইপোলার ডিসঅর্ডার আক্রান্তগনের একটা বিরাট অংশই সেপ্টেম্বর থেকে পরবর্তি মার্চ পর্যন্ত উচ্চ মাত্রায় ম্যানিক বা ডিপ্রেসড হয়ে পড়েন। এই সময়ে শীত যত বাড়তে থাকে সাধারনতঃ তাদের মধ্যে ডিপ্রেসড হওয়াটা তত বাড়ে। আর আবহওয়া যত সহনীয় থাকে, ম্যানিক হওয়াটা তত বেশি হয়।
বছরের বাকি সময়েও তারা মুড সুইং-এর মধ্য দিয়ে যান তবে সে সময়টাতে ওগুলোর মাত্রা থাকে তুলনামূলক ভাবে কম।
এছাড়াও অন্যান্য যেসব এনভায়ারমেন্টাল ফ্যাক্টর এক্সট্রিম মুড-সুইং ট্রিগার করতে পারে তা হলো: চারিদিকের নানান অনিয়ম, অপরিপাট্য, বেহাল ট্রাফিক ব্যবস্থা, জ্যাম, শব্দদুষন, উজ্জ্বল আলো, ভীরভাট্টা, ডেডলাইন, সামাজিকতার নানান চাপ ইত্যাদি…
এক চিকিৎসকের সাথে কথা বলে জানলাম, এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত সময়টাতে তাঁর অনেক রোগীই নাকি কোন রকমের মেডিকেশন ছাড়াই ইউথার্মিক হয়ে ওঠেন।
– স্যার, ইউথার্মিক জিনিষটা আবার কি?
– ও আচ্ছা। দেখো, মুডের দুই এক্সট্রিম এন্ড হলো ম্যানিক আর ডিপ্রেসিভ। বাইপোলাররা সাধারনতঃ এই দুইটায়ই ঘোরাঘুরি করে। আমরা যারা বাইপোলার না, আমরা থাকি এই দুইয়ের মাঝামাঝি। মুডের সেই মাঝামাঝি জায়গাটাকে বলে ইউথার্মিয়া। বাইপোলার ডিসঅর্ডারের ট্রিটমেন্ট গোল (Goal) থাকে হলো ১) একজন বাইপোলার মুডের কোন এন্ডে আছে সেটা বের করা ২) কিভাবে সেখান থেকে তাঁকে মেডিকেশনের মাধ্যমে ইউথার্মিয়ায় নিয়ে আসা যাবে সেটা নির্ধারন করা।
আমার বেশিরভাগ পেশেন্টই সেপ্টেম্বরে হাইলি ম্যানিক থাকে। তখন তাদের মুড স্ট্যাবিলাইজিং ড্রাগ এডমিনিস্টার করে ইউথার্মিক করতে হয়। এর পরে নভেম্বরের দিক থেকেই তারা ডিপ্রেসিভ হয়ে পড়তে শুরু করে। তখন প্রথমে তাদের আগের ড্রাগ কমিয়ে আনার মাধ্যমে ইউথার্মিয়া বজায় রাখার চেষ্টা করি। অনেকের এতেই কাজ হয়। কারো কারো এন্টি-ডিপ্রেসেন্টের ও প্রয়োজন পড়ে। এই অবস্থা চলে মার্চ পর্যন্তই আবার মার্চ-এপ্রিলে তাঁরা কেউ কেউ ম্যানিক হওয়া শুরু করে তবে তা আর ঐ সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মত ভয়াবহ হয় না। তাই মেডিকেশন চলে লো-ডোজে।
মজার ব্যাপার হলো, যাঁদের বাইপোলার ডিসঅর্ডার এই সাইকেলে চলে, তাদের ঘনিষ্ট জনেরা ২-৩ বছরে এটার সাথে এতটাই অভ্যস্ত হয়ে যায় বা খাপ খাইয়ে নেয় যে বাইপোলার ডিসঅর্ডার ম্যানেজমেন্টটা সার্বিকভাবে খুবই সহজ হয়ে দাড়ায়। পেশেন্টের জীবনযাত্রাও এক্কেবারে স্বাভাবিক মানুষের মতই হয়ে যায়।
খুব লক্ষ না করলে অভিজ্ঞ কারো পক্ষেই বোঝা সহজ না যে ঐ ব্যাক্তি একজন বাইপোলার ডিসঅর্ডার আক্রান্ত…
এই পর্যন্ত বর্ননার উদ্দেশ্য ছিল, বাইপোলার ডিসঅর্ডার আক্রান্তগনের ঘনিষ্টজনদেরকে এইমর্মে উৎসাহিত করা যেন তাঁরা বোঝেন যে এটা এমন এক পরিস্থিতি যা আক্রান্তের প্রতি একটু ভালবাসা নিয়ে এগুলেই তাঁকে প্রায় স্বাভাবিক একটি জীবনযাত্রা দিতে সক্ষম হবে।
মনে রাখতে হবে, আমেরিকার জনসংখ্যার মাত্র ৩% বাইপোলারে আক্রান্ত। আর এজন্য তাদের ইকনোমিক যে ক্ষতি হয় (ওয়ার্ক আওয়ার কমে বা অন্যভাবে) তা প্রায় ৪৫ বিলিয়ন ডলারের মত। কাছের মানুষেদের কিছু সহযোগিতা ও সহানুভুতি এই ক্ষতিকে নুন্যতম মাত্রার মধ্যে নামিয়ে আনতে সক্ষম।
এবার শেষ করবো। তবে তার আগে আনট্রিটেড বাইপোলার গনের কিছু ইমিডিয়েট জটিলতার কথা বলে শেষ করি।
আনট্রিটেড বাইপোলার ডিসঅর্ডার আক্রান্তরা সবচেয়ে বড় সমস্যায় পড়ে সম্পর্ক স্থাপন করতে গিয়ে। সাধারনত ম্যানিক স্টেজে (ধরা যাক সেপ্টেম্বরে) তাঁরা কোনো একজনের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে সম্পর্কে জড়ায়। তখনকার হাই মুডের কারনে তাঁরা সম্পর্কের মানুষটিকে এতটা তুলে ধরে যে খুব দ্রুত তাদের সম্পর্কটা গভীর এক পর্যায়ে পৌছে যায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো এর পরে একটা সময়ে যখন তাঁরা ডিপ্রেসিভ স্টেজে প্রবেশ করে (ধরা যাক সেটা নভেম্বর বা ডিসেম্বরে), হঠাৎ করেই মাত্র সেদিন আবেগে ঢুবে থাকা মানুষটার প্রতি সকল আগ্রহ হারিয়ে ফেলা শুরু করে তাঁরা।
এর পরে ডিপ্রেশনের পিকে যখন গিয়ে তাঁরা পৌছে (ধরা যাক জানুয়ারিতে), কখনো কখনো তারা ঐ ভালবাসার মানুষটির সাথে এমন চরম দুর্ব্যবহারও করে ফেলে যে তাঁর সাথে সম্পর্ক তো ভাঙ্গেই, সারা জীবনেও আর কোন সম্পর্ক স্থাপনের সম্ভবনা লোপ পায়।
এই পরিস্থিতিটি একজন বাইপোলারের জন্য বাড়তি স্ট্রেস হিসাবে আবির্ভুত হয়ে তাঁর জীবন আরও কঠিন করে ফেলতে থাকে।
আর, কি হয় তখন বাইপোলারের ঐ সঙ্গির অবস্থা?
যাকে মাত্র সেদিনই সে তাঁর প্রতি সীমাহীন ভালোবাসায় সিক্ত দেখেছে, তাঁর এই অকস্মাৎ পরিবর্তন (যদিও তা বাইপোলার ডিসঅর্ডার জনিত, কিন্তু তা তো আর সে জানে না) তাঁকে হতাশ করে। দুর্ব্যবহারের শিকার হয়ে কেউ কেউ মুখ ফিরিয়ে নেয় চিরটাকালের জন্য। আবার কেউ কেউ এতই হতদ্যম হয়ে পরে যে পরে নিজেরাও অন্য কারো সাথে সম্পর্কে জড়াতে গিয়ে মনবলের অভাবে ভোগে।
অথচ একজন বাইপোলার যদি ট্রিটমেন্টের মধ্যে থাকতো, ইউথার্মিক অবস্থাটা চালু থাকার জন্য তাঁকে এসব কিছুর মধ্য দিয়েই যেতে হতো না।
আর সঙ্গি নির্বাচনের পর যদি তাঁকে পুরো ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলতে পারতো, সব জেনেশুনে যে তাঁর সঙ্গি হতো, সে হতে পারতো এক্কেবারে মানিকজোড় বা পারফেক্ট ম্যাচ।
আমার এই পুরো লিখাটার উদ্দেশ্য ছিল, বন্ধু বা আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে কেউ যদি বাইপোলার থেকে থাকেন, তাঁকে স্বাভাবিক জীবন-যাত্রা দিতে অন্যরা কিভাবে এগিয়ে আসতে পারেন, সেই সম্পর্কে উৎসাহ দেবার উদ্দেশ্যে।
তাছাড়া এসম্পর্কিত কোন রমকের সোশাল স্টিগমায়ে যেন তাঁরা কেউ না ভোগেন, সে জন্যেও।
এই লিখাটি যদি আপনাদের সেরকম কোন পরিস্থিতি হ্যান্ডেল করতে উৎসাহিত করতে পেরে থাকে তো আপনাদের আরও জানার সুবিধার্থে এখানে একটা লিংক দিচ্ছি। এই লিংক থেকে পিডিএফ ফাইলটি নামিয়ে পড়ে নিলে আপনি আপনার বাইপোলার ডিসঅর্ডার আক্রান্ত প্রিয়জনের কেয়ার গিভার রোলটি খুব ভালভাবে পালন করতে পারবেন।
পিডিএফ ফাইলটি দেখুন এই লিংক-এ…
:clap: :clap: :clap: :clap:
হিউম্যান সাইকলজি নিয়ে আমার বরাবরের আগ্রহ। পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি আশেপাশের মানুষগুলোর মনস্তত্ত্ব নিয়েও ভাবি মাঝেমধ্যে। যেকোন একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে আমি ভাবি সে কেন এরকম আচরণ করলো; অনেকক্ষেত্রেই যোগফলে মেলেনা হয়তো তবুত্ত অনুসন্ধিৎসু মন জানতে চায় পেছনের ভাবনাগুলো। আমার প্রিয় এক আন্টির মানসিক সমস্যা আছে। তিনি চার সপ্তাহ নামাজ রোজায় ব্যস্ত থাকলে পরবর্তী দুই সপ্তাহ তুমুল গান বাজনায় বিভোর থাকেন। নামাজ রোজাকালীন সময়ে তিনি ঘরের বাইরে যাবেন না। পুত্র কন্যাদের জন্য চিন্তানিমগ্ন থাকবেন তখন। আবার গান বাজনার এরাতে তিনি পুরোদস্তুর হিপহপ ঘরাবদ্ধ হয়ে পড়েন। ঘুম নেই চোখে; স্বস্তিও নেই। তিনি ডাক্তারের কাছে যাবেন না। তাছাড়া তাঁর ওসিডির সমস্যাও রয়েছে।
বাইপোলার ডিজঅর্ডার নিয়ে বাংলায় কখনো কিছু পড়েছি বলে মনে করতে পারিনা। সহজ সরল ভাষায় তোমার এই লেখাটি সিসিবির সম্পদ হয়ে থাকবে।
:hatsoff: :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:
যেই ঘটনাটা অবলীলায় বলে গেলে, এদেশের অনেক বাইপোলারই এইরকম অস্বাভাবিকভাবে তাদের সিচুয়েশনগুলো আনট্রিটেড রেখেই সামাল দিচ্ছে।
একটু ভেবে দেখো দেখি, কি ভিষন স্ট্রেসফুল আর নিরানন্দভাবে তাঁরা তাদের জীবনটা বয়ে বেড়াচ্ছে?
একই অবস্থা তাদের ঘনিষ্টজনদেরও।
আরও সমস্যা হলো, আনট্রিটেড থাকলে, দিন দিন তাদের কষ্টটা বেড়েই চলে।
আবার নারীদের ক্ষেত্রে বাড়তি জটিলতা হলো কোন রকমের শারীরিক সমস্যা ছাড়াই প্রতি মাসে অস্বাভাবিক যন্ত্রণাদায়ক পিএমএস-এ আক্রান্ত হওয়া যা সাধারন পেইন কিলারে উপশম হয় না।
আর তাই জীবন-যাপন হয়ে পড়ে অসহনীয় রকমের কষ্টের।
অথচ সামান্য সচেতনতা ও সহযোগিতা এঁদের কোয়ালিটি অব লিভিং প্রায় স্বাভাবিক করে তোলার জন্য যথেষ্ট।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ.........
*পিএমএস = প্রিমিনুস্ট্রাল সিনড্রোমা
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
পারভেজ ভাই, খুবই উপযোগী লেখা। ব্যাপারগুলো বোঝাতে পেরেছেন সহজ ভাষায়।
Pride kills a man...
অনেক ধন্যবাদ ওমর।
একজনও যদি ব্যাপারটা বুঝতে পারে, এবং সেইজন্য একজন আনট্রিটেড বাইপোলারও যদি চিকিৎসার আওতায় আসে, এই এফর্টটা সফল বলে ধরে নেবো।
তাই "ব্যাপারগুলো বোঝাতে পেরেছেন সহজ ভাষায়" - এই কথাটাকে আমি একটা হিউজ কমপ্লিমেন্ট হিসাবেই নিচ্ছি।
অনেক ধন্যবাদ, সাথে থাকার জন্য...
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
পুরা সিরিজটা শেষ করলাম।
মাথার ভেতর ঘুরপাক খাচ্ছে।
***চারিদিকের নানান অনিয়ম, অপরিপাট্য, বেহাল ট্রাফিক ব্যবস্থা, জ্যাম, শব্দদুষন, উজ্জ্বল আলো, ভীরভাট্টা, ডেডলাইন, সামাজিকতার নানান চাপ ইত্যাদি…***
উপরের এই কয়টা বিষয়ে তো আমারো মাঝে মাঝে বেশ বিরিক্ত লাগে। এটাও ভাবাচ্ছে।
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
তেলাপোকা দেখে সবাই কম বেশি বিরক্ত হয় তবে "Katsaridaphobia" হলো সেই অবস্থা যা একজনকে তেলাপোকা দেখে দোতালা থেকে লাফিয়ে পড়ার মত পরিস্থিতিতে নিয়ে যেতে পারে (ঘটনাটা নিজের চোখে দেখা। এবং তা কলেজেই)।
ঘটনাটা বললাম এজন্য যে, বিরক্ত হওয়া আর ম্যানিক স্টেজ বা ডিপ্রেসিভ স্টেজে পৌছে যাওয়া এক কথা না।
তাই "মাথার ভেতর ঘুরপাক ........." খাওয়ার কিছু নাই।
তবে পরিচিতদের মধ্যে কারো এধরনের সিম্পটম দেখলে, তাঁকে সচেতন করার চেষ্টা করে দেখতে পারো...
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
চমৎকার লেখা, পারভেজ ভাই। ধন্যবাদ। :boss: :boss:
আচ্ছা, এই বাই-পোলার ডিজঅর্ডারের আরও অধিক সরলীকরণ করা যেতে পারে কি? মানে, মাল্টি-পোলার ডিজঅর্ডার (অথবা মাল্টি-পোলার মনস্তত্ত্ব) জাতীয় কিছু? আমার যেমন হয়, কিছুদিন হয়তো মাতালের মত কোন এক ঘরানার গান গিলতে থাকি। কিছুদিন পরে আবার অন্য কোন ঘরানার গান সারাদিন মাথার মাঝে ঘুরপাক খায়। এভাবে চক্রাকারে ঘুরতে ঘুরতে এক সময়ে হয়তো আবার সেই প্রথম ঘরানাতে ফিরে আসি। যদিও নির্দিষ্ট কোন প্যাটার্ন অনুসরণ করে এই চক্র আবর্তিত হয় না। তবুও মাঝে মাঝে মনে হয়, এটা কি বাই-পোলারের কোন জেনারালাইজড ফর্ম? মাত্রার বিচারে এটি হয়তো ডিজঅর্ডার নয়, নেহায়েত প্রবণতা মাত্র। :-/ :-/ :no:
গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।
মানুষ যখন, মাঝে মধ্যে খেয়ালি আচরন করবা, এতে আর অবাক হবার কি আছে।
বাইপোলার নিয়ে পড়াশুনা করতে গিয়ে লক্ষ করলাম, তাদের সুইসাইডাল বা সেলফ-হার্মিং হবার ইস্যুটা না থাকলে বাইপোলার হওয়া না হওয়ায় অন্যদের কিন্তু খুব একটা কোনো সমস্যা ছিল না।
সেই অর্থে বললে, যথেষ্ট জটিল হলেও "একটা ট্রিটেবল মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা" হিসাবে বাইপোলার ডিজঅর্ডার যে অনেক পরে চিহ্নিত হয়েছে, সেটাই হয়তো এর কারন।
এক সময় নাকি বাইপলারদের স্কিৎজোফ্রেনিয়ার একটি শাখা ভেবেই চিকিৎসা দেয়া হতো। অদ্ভুত না?
"সুইসাইডাল বা সেলফ-হার্মিং" না হলে, তিলকে তাল ভেবে কে কি কষ্ট পাচ্ছে, আসলেই কি তা নিয়ে কারো ভাবার কিছু ছিল?
ছিল না।
যখন থেকে এই কো-রিলেশনগুলো আবিষ্কৃত হওয়া শুরু হলো, ব্যাপারটা সিরিয়াসলি না নিয়ে আর কোন উপায় থাকলো না।
ভেবেছিলাম, এই সিরিজটার এখানেই ইতি টানবো।
কিন্তু যতই মন্তব্য পড়ছি, অন্যদের আগ্রহ দেখছি, নিজে নতুন নতুন তথ্য জানছি, মনে হচ্ছে, আরও কিছু ফলো-আপ লিখালিখি করা যেতেই পারে।
কি বলো???
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
Parvez
I want to talk to you 01747580000. Zaherul
স্বাভাবিক অবস্থাকে যদি একটা সমান্তরাল ইকুইলিব্রিয়াম লাইন ধরি। তবে কখনো মানুষটি তার ঊপরে চলে যায়, যেতে থাকে, হাইপার একটিভ থাকে। আর কখনো আবার সে সি লাইনের নীচে নেমে যায়, নামতে থাকে, ডিপ্রেসড হয়ে থাকে, কিছুতেই যেনো তার আগ্রহ জন্মায় না।
মেডিকেশনে এই উপরে যাওয়াকে নীচে নামানো আর নীচে নামাকে উপরে ওঠানো। এই দুই কাজ কখনো কখনো একই রোগীর ক্ষেত্রে নিকট সময়ের ব্যবধানেই প্রযোজ্য হয়ে পড়ে।
এখানে চিকিতসকের নিয়মিত পরিসেবা প্রয়োজন। ওষুধের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ ও প্রয়োজনে পরিবর্তনের জন্য।
এর যেটা এ লেখায় বলা হয়েছে, যে, কয়েক বছরের মধ্যে এটা একটা চেনা ও স্বাভাবিক ব্যাপারে এসে দাঁড়ায় পরিবার ও নিকট জনদের কাছে।
অনেক অভিনন্দন এমন লেখাটা সিসিবিকে দেবার জন্য।
যেটা বুঝলাম, সবাই মিলে কো-অপারেট করলে বাইপোলার ডিজ-অর্ডারের এই জটিল পরিস্থিতিটা ভালই সামাল দেয়া সম্ভব।
আক্রান্তকে বেশ ভাল রকমের একটা স্বাভাবিক জীবন যাপনের পরিস্থিতিও তৈরী করা সম্ভব।
কিন্তু সমস্যা হলো - চিকিৎসার শুরুটা হবে কি ভাবে?
এদেশে মানসিক যেকোন সমস্যা নিয়ে আলাপ করাটাকেই যেখানে ট্যাবুর পর্যায়ে ফেলে দেয়া হয়, এন্টিসাইকোটিক ড্রাগের সিডেশন ইফেক্টের কারনে সাইকিয়াটিস্টদের ঢালাওভাবে "ঘুমের ঔষধ দাতা" নামে ডাকা হয়, সেখানে শত সদিচ্ছার পরেও সহজে যে কাউকে চিকিৎসার আওতায় আনা যাবে না, এ তো বলার অপেক্ষা রাখে না।
তবুও এই লিখালিখি, সচেতনতা বাড়াতে।
ট্যাবু এবং স্টিগমা কমাতে।
কমলো কিনা, জানি না। তবে আমি আশাবাদি।
আর এই আশাবাদটাও একটা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা নির্ভর।
সে গল্পও শুনাবো একদিন...
🙂 🙂 🙂 🙂 🙂 🙂 🙂
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
ঠিক আছে। জমা থাকলো দেখা হবার আগ পর্যন্ত।
বাইপোলার ডিজ-অর্ডার ও এর ডায়াগনোসিস সম্পর্কে জানতে এটা একটা হেলপফুল লিংক বলেই মনে হলো।
এখানে দিয়ে দিলাম...
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
পর্বের উল্লেখ দেখে সচেতনভাবে ক্লাইম্যাক্সের ভয়ে এই ব্লগ এড়িয়ে গেছি।
শেষ পর্বের উল্লেখ দেখে জানান দিয়ে গেলাম। এবার সময় নিয়ে পড়ব। 🙂
এমন মানব জনম, আর কি হবে? মন যা কর, ত্বরায় কর এ ভবে...