ভারতীয় শিল্পিরা এদেশে এলে কেবলি হিন্দী গান করে কেন?বেশ কিছুদিন আগে আমাদের ক্লাবে মোনালি ঠাকুর এসেছিলেন। মোনালি পশ্চিম বঙ্গের মেয়ে। কোলকাতায় বড় হয়েছেন। ঘোর বাঙ্গালী এবং সম্ভবতঃ জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের সাথে সম্পর্কিত। কর্মসূত্রে মানে পেশাদার সঙ্গীত সংশ্লিষ্টতার কারনে মুম্বাই ও হিন্দি গান কেন্দ্রিক বিচরন। আজকাল মূলতঃ হিন্দী গানই করে। সেটার জনপ্রিয় শিল্পিও বটে।
কিছুদিন আগে নচিকেতা এসেছিলেন। চুটিয়ে বাংলা গান করলেন। আমরাও প্রান ভরে উপভোগ করলাম।
এবার আরেক বাঙ্গালী, মোনালি আসছে জেনে আগ্রহ নিয়ে গেলাম তাঁর কন্ঠে আরও কিছু সুমধুর বাংলা গান শুনবার আশা নিয়ে।
অথচ ক্যামনে কী? অনুষ্ঠান শুরুর পর বেশ কিছুক্ষণ কাটলেও মোনালি ইংলিশে বাতচিত আর একের পর এক হিন্দী গানই গেয়ে চললেন। এক পর্যায়ে ধৈর্য্যচ্যুত হয়ে বাংলায় জানতে চাইলাম, ঝোলার ভিতরে কি বাংলা কিছু নাই? আজ কি শুধুই হিন্দীর উপর দিয়ে যাবে?
মোনালি ভীষণ অবাক হলেন। বললেন, “আপনারা বাংলা গান শুনবেন?”
বুঝলাম কোন এক অত্যুৎসাহির কাছে তিনি শুনেছেন, এদেশের এই স্ট্রাটার মানুষ হিন্দী ছাড়া আর কিছু শোনে না। ইংলিশ ছাড়া কথা বলে না।
দর্শক বুঝতে মোনালি সময় নিলেন না। হিন্দী ছেড়ে বাংলায় গান আর ইংলিশ ছেড়ে বাংলায় কথাবার্তা শুরু করে দিলেন। কি দারুন উৎসাহ আর আবেগ নিয়ে যে এক একটা বাংলা গান গাইছিলেন, শুনে যতটা কান জুড়াচ্ছিলো তা থেকে দেখে অনেক বেশী চোখ জুড়িয়ে যাচ্ছিলো।
দু একবার বললেন, যে বাংলায় গান গেয়ে এখানে যে সাড়া এবং আনন্দ তিনি পাচ্ছেন, তা আগে কখনো কলকাতায়ও পান নাই।
এইবার আসি আসল টুইস্ট-এ।
মোনালির গলায় অপূর্ব কিছু রবীন্দ্র সঙ্গীত শুনেছিলাম। আমার বেলা যে যায়, তুমি রবে নীরবে, ইত্যাদি।
একপর্যায়ে আমরা তাঁকে রবীন্দ্র সঙ্গীত গাইতে বললাম। মোনালি কিছুক্ষণ বুঝতেই পারছিলেন না, আমরা তাঁকে কি গান গাইতে বলছি। যখন টাইটেলসহ বললাম, তিনি বুঝলেন, এবং বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে জানতে চাইলেন, “আপনারা সত্যিই রবীন্দ্র সঙ্গীত শুনতে চাচ্ছেন?”
আমার মনে হলো তিনি যে বুঝতে পারছিলেন না, এটা তাঁর দোষ না। “এখন রবীন্দ্র সঙ্গীত শুরু হোক” – এটা সম্ভবতঃ আসর না জমাতে পারা কোন শিল্পির জন্য ওখানকার কোন বহুল পরিচিত টিটকারি। আমাদের কথায় বাংলা গান ধরে এখন আসর না জমাতে পারের অপবাদ নিতে হচ্ছে, তাঁকে রবীন্দ্র সঙ্গীত ধরতে বলে টিটিকারি দেয়া হচ্ছে, মনতো খারাপ হতেই পারে…
তিনি যখন বুঝলেন, সত্যিই আমরা শুধু তাঁর বাংলা গান না রবীন্দ্র সঙ্গীতেরও অনুরাগী, কি উৎসাহের সাথে যে তিনি সেই গান ধরলেন, হৃদয় ছুঁয়ে গেল।
নির্ধারিত সময়ের পরেও নিজ থেকে আরো কিছু গান গাইলেন।
বার বার বললেন, এখানেই প্রথম তিনি মন ভরে বাংলা গান করলেন। এমন অনেক গানই তিনি করলেন যেগুলো সচরাচর এধরনের পার্টি প্রোগ্রামে করেন না। তাই সেভাবে প্রস্তুতিও ছিল না।
আমি মুগ্ধ হয়ে এক জাত শিল্পির মুগ্ধতাও দেখলাম।যা বলছিলাম। আমি বুঝলাম, ভারতীয় শিল্পীদের এখানকার অনুষ্ঠানে এইসব সস্তা হিন্দী গান গাওয়ার যাবতীয় কৃতিত্ব (বা ব্যার্থতা) বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাঁদের অনুষ্ঠান আয়োজনকারি আয়োজক ও ব্যবস্থাপকগণের, শিল্পিগনের নয়।
অথচ ক্যামনে কী? অনুষ্ঠান শুরুর পর বেশ কিছুক্ষণ কাটলেও মোনালি ইংলিশে বাতচিত আর একের পর এক হিন্দী গানই গেয়ে চললেন। এক পর্যায়ে ধৈর্য্যচ্যুত হয়ে বাংলায় জানতে চাইলাম, ঝোলার ভিতরে কি বাংলা কিছু নাই? আজ কি শুধুই হিন্দীর উপর দিয়ে যাবে?
মোনালি ভীষণ অবাক হলেন। বললেন, “আপনারা বাংলা গান শুনবেন?”
বুঝলাম কোন এক অত্যুৎসাহির কাছে তিনি শুনেছেন, এদেশের এই স্ট্রাটার মানুষ হিন্দী ছাড়া আর কিছু শোনে না। ইংলিশ ছাড়া কথা বলে না।
দর্শক বুঝতে মোনালি সময় নিলেন না। হিন্দী ছেড়ে বাংলায় গান আর ইংলিশ ছেড়ে বাংলায় কথাবার্তা শুরু করে দিলেন। কি দারুন উৎসাহ আর আবেগ নিয়ে যে এক একটা বাংলা গান গাইছিলেন, শুনে যতটা কান জুড়াচ্ছিলো তা থেকে দেখে অনেক বেশী চোখ জুড়িয়ে যাচ্ছিলো।
দু একবার বললেন, যে বাংলায় গান গেয়ে এখানে যে সাড়া এবং আনন্দ তিনি পাচ্ছেন, তা আগে কখনো কলকাতায়ও পান নাই।
এইবার আসি আসল টুইস্ট-এ।
মোনালির গলায় অপূর্ব কিছু রবীন্দ্র সঙ্গীত শুনেছিলাম। আমার বেলা যে যায়, তুমি রবে নীরবে, ইত্যাদি।
একপর্যায়ে আমরা তাঁকে রবীন্দ্র সঙ্গীত গাইতে বললাম। মোনালি কিছুক্ষণ বুঝতেই পারছিলেন না, আমরা তাঁকে কি গান গাইতে বলছি। যখন টাইটেলসহ বললাম, তিনি বুঝলেন, এবং বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে জানতে চাইলেন, “আপনারা সত্যিই রবীন্দ্র সঙ্গীত শুনতে চাচ্ছেন?”
আমার মনে হলো তিনি যে বুঝতে পারছিলেন না, এটা তাঁর দোষ না। “এখন রবীন্দ্র সঙ্গীত শুরু হোক” – এটা সম্ভবতঃ আসর না জমাতে পারা কোন শিল্পির জন্য ওখানকার কোন বহুল পরিচিত টিটকারি। আমাদের কথায় বাংলা গান ধরে এখন আসর না জমাতে পারের অপবাদ নিতে হচ্ছে, তাঁকে রবীন্দ্র সঙ্গীত ধরতে বলে টিটিকারি দেয়া হচ্ছে, মনতো খারাপ হতেই পারে…
তিনি যখন বুঝলেন, সত্যিই আমরা শুধু তাঁর বাংলা গান না রবীন্দ্র সঙ্গীতেরও অনুরাগী, কি উৎসাহের সাথে যে তিনি সেই গান ধরলেন, হৃদয় ছুঁয়ে গেল।
নির্ধারিত সময়ের পরেও নিজ থেকে আরো কিছু গান গাইলেন।
বার বার বললেন, এখানেই প্রথম তিনি মন ভরে বাংলা গান করলেন। এমন অনেক গানই তিনি করলেন যেগুলো সচরাচর এধরনের পার্টি প্রোগ্রামে করেন না। তাই সেভাবে প্রস্তুতিও ছিল না।
আমি মুগ্ধ হয়ে এক জাত শিল্পির মুগ্ধতাও দেখলাম।যা বলছিলাম। আমি বুঝলাম, ভারতীয় শিল্পীদের এখানকার অনুষ্ঠানে এইসব সস্তা হিন্দী গান গাওয়ার যাবতীয় কৃতিত্ব (বা ব্যার্থতা) বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাঁদের অনুষ্ঠান আয়োজনকারি আয়োজক ও ব্যবস্থাপকগণের, শিল্পিগনের নয়।
দর্শক-শ্রোতার চাহিদা বুঝতে শিল্পিগণকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করার একটা ভূমিকা যে তাঁদের থাকতে পারে, এটা হয়তো তাঁরা সবসময় মনে রাখেন না। রাখলে চাহিদা ও প্রাপ্তির মধ্যে এধরনের একটা পার্থক্য সৃষ্টি হতো না।
আর একটা কথা, আমরা বলতে না পারি, বেশির ভাগ মানুষই হিন্দি বুঝি। শিল্পিরা কমুনিকেট করার জন্য: হিন্দি, ইংরেজি যেকোন মাধ্যম চাইলেই ব্যবহার করতে পারেন ঠিক, কিন্তু ভদ্রতা করে শুরুতে বাংলায় দুচার কথা বলে নিলে যে আমরা খুবই খুশি হই, এ কথাটা তাঁদের বলবেন কে? আয়োজকদেরই তো তা বলা উচিৎ। তাই না?
:clap: :clap: :clap:
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
ভাল লেখা ভাই :hatsoff: তবে স্থানীয় অনুষ্ঠানগুলোতে এর উল্টোটাই বেশি হয়, দেশি শিল্পীদের কাছ থেকে বাংলা গান বাদ দিয়ে হিন্দি শুনতে চায় শ্রোতারা।
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
:thumbup:
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
আমার বয়স যখন ১৮ থেকে ২৫ থাকবে তখন আমি হিন্দি, উর্দুতে গান শুনে কনসার্টে নাচবো, গাইবো।
এরপর থেকে বোধটা আসে কি করতেছি, কেনো করতেছি।
তাই আয়োজক দের উপর অনেকটা দায় বর্তায়।
যেমন ক্যাডেট কলেজগুলার রি ইউনিয়নে বড় বড় ব্যান্ড না এনে অন্য লাইনে ভাবা উচিত।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
হিন্দি বা ইংলিশ গানের সাথে আমার কোন বিরোধ নাই। একটি অনুষ্ঠানে সাধারনতঃ সব ধরনের শ্রোতাই থাকেন। সবার জন্যই কিছু না কিছু থাকা উচিৎ যতক্ষন শিল্পির সামর্থ্যে কুলায়। নচিকেতাকে তো তাঁর অনুষ্ঠানে ক্লাসিকাল, গজল, রবীন্দ্র সঙ্গিত এইসব করতেও দেখি।
বেশিরভাগ মঞ্চের শিল্পিকে এতে উতসাহিই দেখি। কিন্তু একটি স্মল সেগমেন্টের দর্শককে "ট্যাগর? ওহ নো!!" "লালন? ওহ নো!!" বলতে শুনে শিল্পি ও আয়োজকদের পিছিয়ে যেতে দেখলে কষ্ট হয়।
শুধু আসর জমানোর বাইরে, শ্রোতার শ্রবন অনুশিলনের দায়িত্বও একজন ভাল শিল্পির থাকে। গুটি কয়েক আউট স্পোকেন দর্শকের কথা মাথায় নিয়ে গোটা অনুষ্ঠান মুন্নী বদনাম আর চিকনি চামালি দিয়ে ভরে ফেলা কারো জন্যই "লং রানে" ভালো না। না দর্শকের, না শিল্পির, না আয়োজকের।
দর্শক বোরড হয়ে যাবেন, শিল্পি উৎসাহ হারাতে থাকবেন, আয়োজকদের অপশন কমে আসবে।
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
আমি নিজে দেখেছি বাংলাদেশি স্টেজ শিল্পীরা নিজেদের দুয়েকটা গান গাওয়ার পরে দর্শকরা 'হিন্দি', 'হিন্দি' বলে চিৎকার করতে শুরু করে। অনেক উৎসাহী হয়ে নির্দিষ্ট গানের নাম (হয়তো সেই সময়ে চালু গান) বলতে শুরু করে।
এটা রিজিয়া থেকে শুরু করে সুবীর নন্দী পর্যন্ত চলে। সিনিয়ররা হয়তো এড়িয়ে যান, তাই তারা হয়ে যান 'বোরিং', 'জমাইতে পারে না' ইত্যাদি। আর যারা দর্শকদের সুবিধা মতো হিন্দি গাইতে শুরু করেন, তারা হন জনপ্রিয়।
ব্লগে একজন ফেনা তুলে ফেলছেন 'গুন্ডে' ছবির প্রতিবাদের সময় কেন ব্লগ এডজুটেন্ট পোস্ট দেয় নি বলে। কিন্তু এই গুন্ডে ছবিটা দেখার পরেই না জানা গেল সেখানে ইতিহাস বিকৃতি হয়েছে। আমাদের না ফেলানির পরে ভারতীয় ছবি বর্জন করার কথা? তাহলে গুন্ডে দেখলো কারা?
চিন্তা করলে ধরা পড়ে যে সমস্যা আসলে আমাদের মধ্যেই...
একটু লক্ষ করলে দেখা যাবে, 'বোরিং', 'জমাইতে পারে না' ইত্যাদি কথাগুলা যারা বলে, আসরে সাধারনতঃ তারা মাইনরিটি তবে ভোকাল।
আমাদের যাবতিয় সমস্যার মূলে কম বেশি এই ভোকাল মাইনরিটির একটা ভূমিকা থাকে।
এদের কথায় শিল্পিরা হাল ছেড়ে দিলে তো চলবে না। শ্রোতার শ্রোবন অনুশীলনের একটা দায়িত্ব তাঁদের থাকেই। আমাদেরও দায়িত্ব থাকে শিল্পিকে ঐ দায়িত্ব পালনে উৎসাহিত করার।
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
:boss: :boss: :boss:
বিসিবির উদযাপন জলসা দেখতে আমার দেরীই হয়ে গেছিলো। একের পর এক হিন্দী গান শুনতে শুনতে বিরক্ত হয়ে চ্যানেল পাল্টালাম। কোথায় আর যাব সেই স্টার জলসার পচা গলা সিরিয়াল। বৌ বাচ্চা আবার কাকের মত সেই ভারতীয় ভাগাড় থেকে টম জেরী বেনটেন ওগী ককরোচ আঁচল ... ইত্যাদি ঠুকরে ঠুকরে খায় ~x( । বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলা থাকলে মাঝে মাঝে বিদ্রোহী হয়ে খেলা দেখি। তবে সে দিন দেখলাম বৌটিও ব্যাপক ক্ষুদ্ধ। ও বল্লো সেলিব্রেশন কনসার্ট আসলে কার, কোথায় হচ্ছে ? x-( x-(
আমি ভাবছি মাইলস, সোলস, এলআরবি, জেমস, মিলা এবং আরও অনেক জনপ্রিয় শিল্পীর গান কখন হবে না কি হবেই না :brick: :bash: :chup: 😡 ~x(
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
আমাদের ভারতপ্রীতি এবং বিদ্বেষ দুটোই বাড়াবাড়ি রকমের। সেইসাথে আছে হীনমন্যতা।
হিন্দিগানের কথা বাদই দিলাম -- বাংলাদেশে ভারতীয় বাংলা গানের রমরমা বাজার তো সেই কবে থেকে। অবশ্যই প্রবাদপ্রতিম শিল্পীরা আছেন ছিলেন সেখানে সবসময় -- কিন্তু দেশীয় শিল্পীদের প্রতি একটা নাকসিঁটকানো মনোভাব সবসময়েই ছিলো আমাদের। একই কথা প্রকাশনা শিল্পের ক্ষেত্রেও খাটে -- সুনীল শীর্ষেন্দুর চটি পর্যায়ের বইও দেশের বাজারে দেদারসে বিক্রি হয়েছে।
এর সাথে যুক্ত হয়েছে সেদেশের ফ্যাশনের অন্ধ অনুকরণ এবং আরো নানান অনুষঙ্গ। আমরা শুদ্ধ করে দুলাইন বাংলা লিখতে বা বলতে পারিনা কিন্তু হিন্দি শিখে যাচ্ছি।
ভারতের বিশাল বাজারের চাপে আমাদের নাভিশ্বাস অবস্থার জন্য ওদের দায়ী করার আগে নিজেদের দিকেই আঙুল তোলা উচিত। গত ৩০/৪০ বছর ধরে আমরা নিজেদের অর্জনগুলোকে খুইয়ে ভুলে ক্রমশঃ অনুকরণবাজ একটা জাতিতে পরিণত হয়ে পড়ছি আর সে সুযোগে বিশাল দেশটা আমাদের গিলে খেয়ে নেবে সে আর আশ্চর্য কি।
আমাদের রাজনীতি আর সামরিক নীতি যত উদ্ভট ভারতবিরোধিতার চর্চাই করুক না কেন -- একটা লাগসই মেরুদণ্ডঅলা কৌশলপন্থা আমরা দাঁড় করাতে পারলামনা যেখানে দেয়ার বদলে আমরা নিজেরাও কিছু বুঝে নেবো ওদের কাছ থেকে এ অনুশোচনাবোধেরো সময় পার হয়ে গেছে বহু আগে। এখন শুধু দেখে যাওয়া আর ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়া। শাহরুখ খানদের ছ্যাবলামি দেখার জন্যে লোকে হত্যে দিয়ে মরবে এটা এখন বাংলাদেশের বাস্তবতা। (সম্পাদিত)
হিন্দি গান কেন এতো জনপ্রিয়? আকাশ সংস্কৃতির আগ্রাসনের অনেক আগে থেকে - ভাল এবং সস্তা গান যাইহোক দুভাবেই। আপনার পর্যবেক্ষণ কি?
আপনার লেখার ধরণটা ভাল লাগে।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
সুন্দর প্রশ্ন। আমি এটা নিয়ে কিছুদিন ধরে ভাবছি। ভাবনাটা পুরো পুরি দাঁড়িয়ে গেলে একটা গোটা ব্লগ লিখে ফেলবো। আপাততঃ ছাড়া ছাড়া ভাবনার উপরেই উত্তর দেবার খানিকটা চেষ্টা করি।
অপ্রিয় হলেও সত্যি যে হিন্দি গান ছাড়া আসর জমানো কঠিন।
এর অনেক কারনই থাকতে পারে, তবে আমার কাছে কারন হিসাবে যেটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় তা হলো আপাত নিষিদ্ধের প্রকাশযোগ্যতা সম্পর্কিত স্বাধিনতা।
ব্যাপারটা এরকম -
ছোটবেলা থেকেই দেখছি মধ্যবৃত্ত নিজের বানানো একটা ভদ্রতার ঘেরাটোপে বন্দি। তাঁরা প্রকাশ্যে খারাপ কথা বলে না। বলাটা শোভন না। তবে ইচ্ছা কি নাই?
তাই সুযোগ পেলেই রফিক আজাদের "ভাত দে হারামজাদা" বা শামসুর রাহমানের "ফাইরা ফালামু মাঙ্গের নাতি" অথবা নির্মলেন্দু গুনের "চাবী দিয়ে তালা খোলা শিখিয়েছি, তালা দিয়ে খোল দেখি চাবী" জাতীয় পংক্তি আউড়ায়।
এটা অবদমন থেকে মুক্তির একটা খারাপ কিন্তু জরুরি অনুষঙ্গ হতে পারে।
হিন্দি গানে এইরকম অনেক কথা আছে যা গানের অজুহাতে মুখে আউড়ানো যায় এবং তাঁর মাধ্যমে মধ্যবৃত্তের শিরোধার্য্য অবদমন থেকে সাময়িক মুক্তির পাবার ক্ষেত্র তৈরী করা যায়।
আগে শোনা "দাইয়ারে দাইয়া কাটা চুপা"-র মধ্যে যে ইঙ্গিত, "দম মারো দম" বা "ডিসকো দিওয়ানে আহা, আহা" -র যে আবেদন আর এখনকার মুন্নী বদনাম বা চিকনি চামেলির ইঙ্গিত পূর্ন কথা ও অঙ্গভঙ্গি এই সবই অবদমন থেকে ক্ষনিক মুক্তির স্বাদ দিতে জোলাপের কাজ করে বলেই মনে হয়।
আরও অনেক কারন আছে, থাকতেই পারে কিন্তু এই দিকটাও এড়িয়ে যাবার মত না।
"আপনার লেখার ধরণটা ভাল লাগে" - কম্পিমেন্ট পেলে কে না খুশি হয়? ভাল লাগলো। খুশি হলাম। অনেক ধন্যবাদ।
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
:thumbup: পারভেজ ভাই।
:hatsoff: :hatsoff:
কার কনসার্ট কোন দেশে হলো বুঝলাম না :brick: 🙁
:hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:
মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য
অনুকরণপ্রিয়তা আমাদের মজ্জাগত, তাই এর থেকে সহজে বের হয়ে আসা যাবেনা, যতক্ষণ না তার্যণ্যের মাঝে রুচির পরিশুদ্ধি ঘটছে। আশার কথা, এই যে বিষয়টি নিয়ে এত আলোচনা হলো, এটাও ইতিবাচক।
আমাদের বিয়ের অনুষ্ঠানগুলোতে, যেমন গায়ে হলুদ, মেহেদী সন্ধ্যা, ইত্যাদিতে কদাচিৎ আমাদের ঐতিহ্যবাহী গানগুলো বাজানো হয়ে থাকে। অথচ এদিক দিয়ে আমাদের সংস্কৃতি অনেক ঐশ্বর্যশালী। খুবই বিরক্ত বোধ করি যখন এসব অনুষ্ঠানে হিন্দী সিরিয়ালের প্রতিফলন দেখি।