১.
গ্রামের মেঠো পথ। খালের উপর বাঁশের সাকো। আলো আর কৌশিক হাত ধরে পার হল। পার হয়ে খালের পাড়ে সবুজ ঘসের উপর বসলো তারা। যেন কত দিনের চেনা! আসলে বাস্তবটা সেরকম না।
পরিচয় মাত্র ১৩/১৪ দিনের হবে হয়ত। আলো এই এলাকার মেয়ে নয়। বেরাতে এসেছে তার খালার বাসায়। আর কৌশিক আলোর ছোট খালাত বোনের টিউটর। পড়াতে গিয়েই পরিচয়। সেদিন পড়াচ্ছিল কৌশিক। এমন সময় একটা মেয়ে চা নিয়ে আসে, ”সুতপা, তোমার স্যারের চা”। কণ্ঠ শুনে তো স্যারের মাথা ঘুরে যাবার অবস্থা। এমন সুরেলা কণ্ঠ যেন সে কোন দিন শোনেনি! মেয়েটি কিছু না দেখার ভান করে দাঁড়িয়ে থাকে হাতে চা নিয়ে। কৌশিক মেয়ের চোখের দিকে তাকালো। মানুষের চোখ এত মায়াবী হতে পারে তার জানা ছিল না। সে পলক ফেলতে পারেনি তখন। সেখানেই শেষ, আবার সেখানেই শুরু।
সুতপা চা নিয়ে মেয়েটিকে ভেতরে যেতে বলে। কৌশিক চা এমনিতে চা খায় না। কিন্তু সেদিন খেল। সুতপাকে জিজ্ঞেস করে নাম শুনলো, ”আলো”।
দুজনে মুখোমুখি বসে আছে। মাত্র অল্প কয়েকটা দিনের পরিচয়েই আজ দুজনের চোখে হাজারো স্বপ্ন খেলা করে।
“আচ্ছা শোনো”, ডাক দেয় কৌশিক। আলো যেন সম্বিত ফিরে পায়। “বল”, জবাব দেয় সে। “যেদিন খুব জ্যোতস্না হবে সেদিন তুমি আমাকে চাঁদের রঙ দেখে চাঁদ বুড়ির গল্প বলবে, কেমন?”
“আচ্ছা বলব। কিন্তু চাঁদ বুড়িটা কেমন আমি জানি না তো!”
“তখন দেখেই বল।“
“ঠিক আছে।“
কি সুন্দর গোধুলী। কিন্তু চারদিকে কেন জানি একটা মন খারাপ করা পরিবেশ। তারপরেও আলোকে খুব অপরুপা লাগছে। কৌশিক ভাবলো একবার বলবে। আরেকবার ভাবলো, এইতো আর মাত্র কয়টা দিন, তার পরেই না হয় বলি।
২.
আজ কৌশিক তাদের বাড়িতে আ্লোকে নিয়ে আসছে। কৌশিকের মা আলোর জন্য খুব মজা করে রান্না করেছে। সবাই খেতে বসেছে। আলো মাছের কাটা বেছে খেতে পারছে না দেখে কৌশিক নিজেই কাটা বেছে দিতে লাগলো। ফিসফিস করে একবার বললো,”আমাকেও কাঁটা বেছে দেবে তো??”
আলো লজ্জায় লাল হয়ে যায়, কিছু বলে না মুখে।
৩.
তারা দুজনেই বুঝতে পারে যে তারা একে অপরকে ভালবেসে ফেলেছে। কেন জানি দু পরিবার থেকে সায়ও দিলো সবাই।
আজ আলোদের বাড়িতে এসেছে তারা। আলোর মায়ের সাথে কৌশিকের কিছু কথা হল আড়ালে। আলো কিছু জানলোও না। পরে তার মায়ের কাছ থেকে শুনে বলেছিলো, ”তুমি এত টাকা কোথায় পাবে কৌশিক?”
উত্তরে সে বলেছিল, ”তোমার জন্য আমি সব করতে পারি কারন তোমায় আমি ভালবাসি।“
জবাবে আলো কিছু বলতে পারেনি।
৪.
সকাল বেলাতেই আলোর অপারেশন হয়ে গেলো। ডাক্তার বললেন যে বিকেলেই সবাই দেখা করতে পারবেন। কৌশিক অধির আগ্রহে অপেক্ষা করতে লাগলো কখন বিকেল হয়!!!!
অবশেষে বিকেল হল। সবাই আলোর সাথে দেখা করতে গেলো।আলো সবার আগে তার কৌশিককে দেখতে চাইলো। কৌশিক সামনে গিয়ে দাড়ালো।
“তোমার চোখে চশমা কেন কৌশিক? চশমা খোলো। আমি তোমায় দেখব।“
কৌশিক চশমা খোলে না। আলোর বুঝতে কিছু বাকি থাকে না। “তার মানে তুমি অন্ধ, আমি এত দিন একটা অন্ধ ছেলের সাথে প্রেম করেছি?”
আলো মুখ ফিরিয়ে নেয়।
কৌশিক চোখে না দেখলেও খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারে আলো তার থেকে মুখ সরিয়ে নিয়েছে। সে চুপিচুপি হাতরে হাতরে বাইরে চলে আসে। তার মনে আজ কোন কষ্ট নেই এই জন্য যে তার আলো আজ তার চোখেই বিশ্ব দেখে।
এর চেয়ে মহৎ ভালবাসা আর কে দিতে পারবে আলোকে?কেউ না।
ভালো লিখছ ভাইয়া
কিছুদিন আগে বাংলালিঙ্ক ফ্রী এস.এম.এস চলাকালীন সময়ে একটা ম্যাসেজ পেয়েছিলাম।সেখান থেকেই গলের থিমটা পাওয়া।তাই অনেকের কমন অড়ে যেতে পারে।সেজন্য আগেই বলে দিলাম।
মামু, গল্পটার থিমটা বোধহয় বেশ পরিচিত লাগলো। একই থিমের গল্প সম্ভবত আগে পড়েছি। নিচের বানানগুলো বদলে দিস দোস্তঃ
জ্যোতস্না- জ্যোৎস্না
গোধুলী- গোধূলী
অপরুপা- অপরূপা
কারন- কারণ
দাড়ালো- দাঁড়ালো
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
দোস্ত, এই মিউজিক ভিডিওটা দেখেছিস? এখানেও চোখ নিয়ে কিছু ব্যাপার স্যাপার আছে। তবে একটু ভিন্নধাচের এন্ডিং।
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
দেখলাম দোস্ত।সুন্দর থিম!!
সুন্দর লাগলো গল্পটা, আরিফ আমীঈঈঈঈন। খুব ভালো লাগল।
You cannot hangout with negative people and expect a positive life.
আপনারে আমার একটা প্রশ্ন আছে, "আমীন উচ্চারণে কয় আলিফ টানতে হয়??"
এইটার সাথেও মিল আসে ।
সত্যি কষ্টের।
সকল মায়েদেরকে ::salute::
এই থিমটা শোনার পর থেকে আমার মনে একটা প্রশ্নই আসে... ছেলেটা কেন দুটো চোখই দিতে গেল... একটা দেয়া কি বেশি যুক্তিসঙ্গত না ?
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
প্রশ্নটা আমিও ভাবছি।
আমীন ভাই, ভাল। :clap: কিন্তু আকাশ ভাই এর শাথে আমি ও একমত|
তুইও ব্লগ পড়িস নাকি?? :khekz:
সাবাস মামা। চালাই জা
চিনবার পারলাম না! 🙁
খারাপ লাগে নাই। অন্তত বর্ণাভঙ্গি খুবই ভালো লেগেছে। তবে আরেকটু ডিটেইলিং করা যেতো মনে হয়।
পরেরবার লেখার সময় খেয়াল রাখব।
লেখার ঢংটা খুব সুন্দর।
এই ভালোবাসাকে নিঃস্বার্থ বলা যায় কিনা আমি সিওর না।সুতপার জন্য বা অন্য যে কোন মানুষের জন্যেও কি সে চোখদুটি দিত?
হয়ত আমি বোকার মত প্রশ্ন করছি!
নিঃস্বার্থ ভালোবাসা কি মানুষ বাসতে পারে?
আপনার সাথে সহমত।