আমার পরিচয়

প্রথমবার দেখেই আমি পাগল হয়ে গিয়েছিলাম। আমার ওকে অনেক সুন্দর মনে হতো। কেমন ঠোট বাঁকা করে কথা বলত। মাই গড সহ্য করাটা অসম্ভব ছিল। আর কেমন যেন পাত্তা দিত কম কম। আমি এত দেশে ঘুরলাম, সিনিয়ার, ক্লাস-মেট কাউকে সেরকম এ্যাফেয়ার করার জন্য পছন্দ হয় নাই। হঠাৎ ওর জন্য অস্থির হয়ে গেলাম। ও যতই বুঝতো আমি ইমোশনাল হচিছ ততই বেশী আমাকে ঘুরাতো। একবার দেখা করার জন্য ফোর্স করে ক্যাম্প থেকে বের করলাম। আমাকে মুখের উপরে বলে দিলো এত এডভান্সড মেয়ে আমি একদমই পছন্দ করিনা। ক্লাস ৬/৭ পড়ার সময় থেকেই কত ছেলে পিছন পিছন ঘুরতো, পাত্তা দিতাম না। আর এই ছেলে আমাকেই পাত্তাই দেয়না। আমি প্রপোজ করলাম সে সরাসরি রিফিউজ করলো। ফোন করলে ব্যাটম্যানকে দিয়ে বলাতো বিজি আছে। পরে যখন ইংল্যান্ডে চলে যাবো ওর একটা সৈনিককে বললাম, তাও দেখি কাজ হয় না। তারপর পরীক্ষা দিতে দারজিলিং চলে আসি। তারপর ১২০ দিন পর ফিরত আসি। ও তখনও ভাব ধরেই ছিল। তারপর ইংল্যান্ডে যাবার সব ঠিক হয়ে গেল, যেদিন চলে যাবো সেদিন রাতে আড়াইটায় ফ্লাইট। সেদিন মুভির নায়কের মত সে বিকালে তিনটার দিকে ব্যাটম্যানকে পাঠিয়ে দিল বাসার সামনে। গার্ড খবর দিল আমাকে। ভ্রু প্লাক করতে রবীন্দ্র সরণীতে যাবো বলে বের হলাম, উত্তরা লেকের উপর যে ব্রীজ আছে তার উপরে সে ওয়েট করছিল। তখন তার রাজ্যের এক্সকিউজ শুরু হল। বাধ্য হয়ে বুঝিয়ে ইংল্যান্ড চলে গেলাম ঠিকই। পাঁচ মাসের মধ্যে ব্যাক করার ব্যবস্থা করে সেই যে আসলাম,একেবারে ওর জন্য, ওর কাছে এক মাসের ভিতর বিয়ে করে নতুন পরিচয়ে পরিচিত হলাম দুইজন। সেই পরিচয় যেন সারাজীবন ধরে রাখতে পারি,আল্লাহ যেন সেই শক্তিটুকু আমাকে দেয়। আত্মীয়স্বজন,পরিচিত জনেরা অনেক কথা বুঝায়, অনেক উদাহরণ দেয়, কেও ভালো সেন্সে কেও অড সেন্সে। বলে এভাবে তুমি বাঁচতে পারবা না, সমাজ তোমাকে এভাবে ভাল থাকতে দিবেনা। অযথা বাজে কথা বলে দিবে। তোমাকে অন্য কোন অপশন বাছতে হবে,খুঁজতে হবে। আচ্ছা আমি দুই বেবীর মা কি অপশন খুজে বেড়াবো? আমি কি কারো মধ্যে ওকে পাবো, আমার বেবীরা কি ওদের সেই বাবাকে পাবে? আমার কি ওর পরিচয় নিয়ে বেচেঁ থাকার কোন অধিকার নাই? আমি যা পেয়েছি ওর কাছে থেকে আমার তো কারো সাথে শেয়ার করার মনমানসিকতা আর একটুকও নাই। আমাকে কি কেও কোন ভাবে সাহায্য করবেন এদেশ ছেড়ে চলে যেতে। কেউ কি আমাকে পি এম এর একটা এপোয়েনমেন্ট নিয়ে দিতে পারবেন। এইসমাজ যদি কোনভাবে সন্মান নিয়ে বাচঁতে না দেয় মরে যেতে তো পারবো, এই যে অধিকার ও ক্ষমতা দুইটাই তো আমার নিশ্চয়ই আছে।

৪,৩৪৫ বার দেখা হয়েছে

৪১ টি মন্তব্য : “আমার পরিচয়”

  1. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    ভাবী, দেশের বাইরে চলে যাবার ব্যাপারটা অনেক বড় ডিসিশন...আশা করি সব কিছু চিন্তা করে ডিসিশন নিচ্ছেন...

    পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকুন না কেন, সিসিবি'র সবাই আপনার সাথে আছি...


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন
  2. মো. তারিক মাহমুদ (২০০১-০৭)

    ভাবী, আপনার পোস্টগুলো পড়ে কোনদিনই আমার কমেন্ট করার সাহস হয় না। আজ শুধু এতটুকুই বলব, আল্লাহ শুধু পরীক্ষাই নিও না; যার পরীক্ষা নাও তাকে শক্তি আর সাহস দিও ... ...

    জবাব দিন
  3. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

    তানভীর ভাইকে আমার খুব হিংসা হচ্ছে ভাবী-উনার জীবনটা হয়ত ক্ষুদ্র ছিল কিন্তু এই ক্ষুদ্র জীবনে আপনার মত সঙ্গিনী উনি পেয়েছিলেন...

    কোথায় যেন পড়েছিলাম-মানুষের জীবন কত দীর্ঘ সেটা দিয়ে নয় বরং হিসেব করতে হবে সে কতটুকু ভালবাসা পেল তা দিয়ে...

    সে হিসেবে তানভীর ভাই অনন্যসাধারণ।

    স্যালুট জানাই তাঁকে,আপনাকেও।

    জবাব দিন
  4. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

    ভাবী,
    আপনার পোষ্টগুলো সব সময়ই পড়ি, কিন্তু কি বলবো তা' ঠিক বুঝে উঠতে পারিনা, তীব্র ক্ষোভ আর হতাশার কারণে।

    দেশ ছেড়ে চলে যাওয়াই সমাধান নয়। কারণ, সেখানেও আপনাকে সমাজেই মধ্যেই থাকতে হবে যা' একজন একাকী মায়ের জন্য প্রায় একই রকম। আপনাকে লড়ে যেতে হবে, সবখানেই।

    সিসিবি'র অন্যান্যদের মতোই বলি, কখনো সাহায্য করতে পারবো মনে হলে সাহায্য চাইতে দ্বিধা করবেন না।


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
  5. শাহরিয়ার (২০০৪-২০১০)

    আমার মনে হয় বাইরে যাওয়াটাই ভালো!

    পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকুন না কেন, সিসিবি’র সবাই আপনার সাথে আছি…


    People sleep peaceably in their beds at night only because rough men stand ready to do violence on their behalf.

    জবাব দিন
  6. ভাবী, আপনাকে কোন সান্ত্বনা অথবা পরামর্শ দেবার মত সাহস ও শক্তি কোনটাই আমার নেই। তবে আমার মনে হয়- এই বিবেকহীন সমাজে থাকার চেয়ে দেশের বাইরে চলে যাবার সিদ্ধান্তটা মনে হয় ভুল নয়। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, আপনি আর বাচ্চারা যেন অনেক ভাল থাকেন, আর আপনি যেন নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকতে পারেন।

    জবাব দিন
  7. এ্যাই দিহান ভাবীপ্পু, তোমার ফেসবুকের এ্যাড্রেসটা দাও তো। আর প্রেরণা ভাবীকে কি তুমি ফেসবুকে এ্যাড করেছ? তাহলে তোমার এ্যাড্রেস থেকে ভাবীকে এ্যাড করব।

    জবাব দিন
  8. মোস্তফা (১৯৮৮-১৯৯৪)

    ভাবি
    আপনাকে স্বান্তনা দেবার মত শক্তি আমার নেই। তবে যদি কোন সাহায্যে আসতে পারি নিজের ভাল লাগবে। দেশের বাহিরের জীবনটি কঠিন কিন্ত মানসিক ভাবে শান্তিতে থাকবেন। আপনার মত পরিস্থিতিতে আমি বলবো দেশের বাহিরে চলে যাওয়ার চিন্তাটুকু ভাল একটি চিন্তা। তবে বাহিরে চলে যাওয়াটুকু হুট করে হয় না।

    আপনি কানাডায় ইমিগ্রেশনের কথা চিন্তা করতে পারেন। এখানে দেখতে পারেন। আপনার পয়েন্ট হয় কিনা চেক করে দেখতে পারেন। যদি পয়েন্ট হয় তবে এপ্লাই করলে সময় লাগে, কিন্তু ইমিগ্রেশন হয়ে যায়। সময় পাঁচ বছরের মত লাগে বাংলাদেশ হতে।

    আমি জানি না আপনার পড়ালেখার কি অবস্থা। যদি আন্ডারগ্রেড করা হয়ে থাকে তবে উচ্চতর পড়াশুনার জন্য বিদেশে আসতে চাইলে সেটা ইমিগ্রেশনের তুলনায় কম সময় সাপেক্ষ। কিন্তু আপনার দু'বাচ্চা নিয়ে পড়াশুনা করে বিদেশে জীবন যাপন বলা যায় এক প্রকার অসম্ভব। তাছাড়া বিদেশী ছাত্র হিসেবে বিদেশ গেলে সে দেশ হতে সুযোগ সুবিধে কম পাওয়া যায়, অনেক ক্ষেত্রে পাওয়া যায় না। আমার পরামর্শ হবে ইমিগ্রেশনের জন্য চেষ্টা করা। সে সময় পর্যন্ত ধৈর্য ধরা।

    অস্ট্রেলিয়ার ইমিগ্রেশন দেখতে পারেন। সেখানে কতটুকু সময় লাগে দেখতে পারেন। সেখানে ঠান্ডা কম সেটাও একটি ব্যাপার। আমার সেখানকার ইমিগ্রেশন সম্পর্কে ধারণা কম। কিন্তু আপনি অনলাইনেই সব তথ্য পাবেন। তবে শুধু সরকারি ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য বিশ্বাস করবেন, অন্য কোন ওয়েবসাইটের তথ্য নয়। কানাডার ইমিগ্রেশনের তথ্যের জন্য বিস্তারিত জানতে চাইলে ইমেল করবেন mmali এট ualberta.ca এই ঠিকানায়।

    আপনার বাচ্চাদের জন্য অনেক আদর রইল।

    জবাব দিন
  9. শাওন (৯৫-০১)

    ভাবী যেখানে ই থাকেননা কেনো আপনি আমাদের সবসময়ের ই প্রেরণা...আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুক...


    ধন্যবাদান্তে,
    মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান শাওন
    প্রাক্তন ক্যাডেট , সিলেট ক্যাডেট কলেজ, ১৯৯৫-২০০১

    ["যে আমারে দেখিবারে পায় অসীম ক্ষমায় ভালো মন্দ মিলায়ে সকলি"]

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।