সেমিস্টার কথোপকথন

১.
ভর্তি হয়েছি সবে মাত্র
পরিচিত নয় কেউ
কিন্তু তোমায় এক দেখাতেই
মনে জাগে ঢেউ।
প্রথম দিনই ভাল লাগে
বলতে পারিনি তখন,
আজ বলব কাল বলব
ভাবি বসে এখন।
২.
তুমি থাকতে ছাত্রী হলে
আমি শেরে বাংলায়,
প্রতি বিকেলে দেখা হত
সেই ক্যাফেটারিয়ায়।
সকাল বেলা ল্যাবের আগে
দাড়াতাম হলের গেটে
চুপিচুপি দেখতাম তোমায়
যখন যেতে হেটে।
৩.
সবাই এখন চিনি সবাইকে
তবু যেন তুমি অচেনা
ক্যাম্পাস ছেড়ে রুমে গেলে
কিছুই আর ভাল লাগেনা।
বন্ধুরা সবাই বুঝে গেছে
আমার মনের কথা,
তাড়াতাড়ি জানাতে বলে
পরে যদি পাই ব্যাথা।
৪.
সাহস করে বলেই দিলাম
তোমায় ভালবাসি
লজ্জা পেয়ে চলে গেলে
দিয়ে মুচকি হাসি।
পরের দিন চিঠি পেলাম
তুমিও আমায় চাও
তবে একটা শর্ত ছিল-
“তোমার সিজিপিটা একটু বাড়াও ।”
৫.
তোমার কথায় বেশ কাজ হল
টিউশনি দিলাম ছেড়ে
সারাদিন থাকি লাইব্রেরীতে
আতলামি দিলাম বেড়ে।
বন্ধের দিন অল্পের জন্য
দেখা দিতে তুমি
সেই দেখাতেই যারপরনাই
খুশি হতাম আমি।
৬.
গত টার্মে ভাল করেছি
এবার তুমি রাজি
প্রেমের যুদ্ধে জিতে গিয়ে
আমি হলাম গাজি।
রোজ বিকেলে বসি দুজনে
আম গাছটার তলায়
বাদাম-ফুচকা খাও তুমি
আর যাযা মনে চায়।
৭.
আর মাত্র কয়েকটা দিন
তারপরেই বিয়ে
সুখের ঘর বাধব আমি
তোমায় সাথে নিয়ে।
হানিমুনে থাইল্যাণ্ড যাবে
তোমার শখ খুব
স্টারে বিরানি না খাওয়াইলে
আমি নাকি বেকুব!
৮.
টার্মের শুরুতেই দেখি
তোমার পাত্তা নাই
এঙ্গেজমেন্ট নাকি করে ফেলেছ
বর খালাতো ভাই।
বিদেশ থাকে অনেক টাকা
নিয়ে যাবে তোমায়
সবাই দেখি মুচকি হাসে
গাধা বলে আমায়।

………………………..

ছয়মাস হল চলে গেছ
একবারো নাওনি খোজ
আমি এখন এম.এস.সি. করি
ক্লাসে যাই রোজ।
তোমার কথা ভাবতে গেলেই
অশ্রু আসে বেয়ে
তুমি বড়ই ছলনাময়ী
হায়রে বুয়েট মেয়ে।

৪,১১৮ বার দেখা হয়েছে

৫০ টি মন্তব্য : “সেমিস্টার কথোপকথন”

  1. আয়েশা ( মগকক) আয়েশা

    আমার তো খুব হাসি পাচ্ছে তোমার ছ্যাকা খাওযার গল্প শুনে!

    দু:খ ক'রনা আরিফ আমিন
    যদিও খেয়েছ ছ্যাকা,
    অতি শীঘ্রই লেজ জুটে যাবে,
    রইবে না কো একা I

    অনেক দেখেছি প্রেমিক-প্রেমিকা
    হিট জুড়ি বুএট,
    বাঁশ দিয়ে গেছে বুএট বান্ধবী
    করছে ইউ এস এ তে Duet ,

    হতাশ হয়না ভাইটি আমার
    মেয়ে রয়েছে অঢেল,
    CGP টা ঠিক rakhlei
    pabe shoroshi model.

    তাকে নিয়ে তুমিও দিও
    ইউ এস এ তে পাড়ি,
    ex বন্ধুর বাসায় যেও,
    হাকিয়ে BMW গাড়ি I

    জবাব দিন
  2. সাবিহা জিতু (১৯৯৩-১৯৯৯)

    শ্যামল মিত্রের গাওয়া আমার খুব প্রিয় একটা গান, লিঙ্ক ও দিলাম, দেখা না গেলে মান্যুয়াল দেখতে পারেন। সুবিধার জন্য লিরিক্সটা দিয়ে দিলাম।

    http://www.youtube.com/watch?v=jesgeHbrZSo
    "দূর নয় বেশী দূর ঐ সাজানো সাজানো বকুল বনের ধারে
    ঐ বাধানো ঘাটের পারে,
    যেথা অবহেলা সয়ে সয়ে কিছু ফুল শুকানো শুকানো হয়ে
    পড়ে পড়ে আছে তার কিছু দূরে ঘাটের চাতাল ছাড়িয়ে
    সেখানে আমার মাতাল হৃদয় সেদিন গিয়েছে হাড়িয়ে... ... ...
    যাক, যা গ্যাছে তা যাক... ... ...

    সূকশারিরা যেখানে কুজনে কুজনে দুজনে গাহিয়া যেত
    ঐ নদীটি বহিয়া যেত
    বনহরিনী চকিত চপল চরণে চমক লাগায়ে দিয়ে
    তার চেয়ে ভালো চোখ দুটি দেখে যেখানে যেত সে দাঁড়িয়ে
    সেখানে আমার করুণ হৃদয় সেদিন যেত হাড়িয়ে
    যাক, যা গ্যাছে তা যাক... ... ...

    মোর মানষী কলসী কাঁখেতে লইয়া ওখানে দাড়াত এসে,
    মুখে মধুর মধুর হেসে
    তার তনুর তীরথে ডুবিয়া মরিতে নদীও উতলা হত
    তার ঢেউয়ে ঢেউয়ে আরো দুটি ঢেউ যেখানে দিত সে বাড়ীয়ে
    সেখানে আমার উতল হৃদয় সেদিন গিয়েছে হাড়িয়ে
    যাক, যা গ্যাছে তা যাক... ... ...

    মোর দিবস রজনী হায় গো সজনী জাগিয়া জাগিয়া যেত
    তবু স্বপ্ন যে মনে হত
    সেই মগন স্বপন সহসা কখন ভাঙ্গিয়া ভাঙ্গিয়া গেল,
    এই পথ দিয়ে বঁধু বেশে সেজে হায় যেদিন গেল হাড়িয়ে
    সেদিন আমার সজল হৃদয় দুপায়ে গিয়েছে মারিয়ে
    যাক, যা গ্যাছে তা যাক... ... ... ।।"


    You cannot hangout with negative people and expect a positive life.

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।