২০০১ এর ফেব্রুয়ারিতে গ্যালাপ পোল (gallup poll) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক হাজার তরুনের টেলিফোন সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে। সাক্ষাৎকারে ৪৫ ভাগের বেশি তরুন মত প্রকাশ করেন যে, একজন ঈশ্বর আমাদের সৃষ্টি করেছিলেন আজ থেকে দশ হাজার বছর আগে। এই দশহাজার বছরে মানুষ হয়তো পরিবর্তীত হয়েছে, তবে সেটা খুব সামান্য এবং পরিবর্তনের কারণ কখনই “বিবর্তন” নয়। ৩৭ ভাগ বিবর্তন এবং ঈশ্বরকে একই কক্ষে স্থান দিয়েছেন। তাদের মতে, বিবর্তন জন্মসৃষ্টির একটি স্বর্গীয় প্রক্রিয়া। আর ১২ ভাগের মতে, স্রষ্টার কোন রকম সহায়তা ছাড়াই বিবর্তনের মাধ্যমে মানুষের উৎপত্তি হয়েছে।
এই ভোটাভুটি থেকে দেখা যায়, প্রায় ৫০ভাগের মতো মার্কিনী বিবর্তন তত্ত্বকে একেবারে বাতিল করে দিয়েছেন। তবে সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, প্রায় দুই দশক ধরে এই সংখ্যাটা একদম কমেনি। জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে, ১৯৮২, ১৯৯৭ এবং ১৯৯৯ সালে। সৃষ্টিতত্ত্বঃ- “বিবর্তন নয়- ঈশ্বরই মানুষকে সৃষ্টি করেছেন” এই মতে বিশ্বাসীর সংখ্যা ৪৪ ভাগের নীচে কখনই নামেনি।
বাংলাদেশের মতো দেশে “সৃষ্টিতত্ত্বে” বিশ্বাসীদের পাল্লা আরও অনেক ভারী। কিন্তু এতো মানুষ বিবর্তন বিরোধী কেন?
প্রধান কারণ অবশ্যই আসমানী গ্রন্থ। বিবর্তন তত্ত্ব বলে, ঈশ্বেরর কোনরকম হস্তক্ষেপ ছাড়াই মানুষের এই পর্যায়ে আসা সম্ভব। অর্থাৎ ঈশ্বরেরে ধারণা পুরোপুরি বাতিল করে দেয় বিবর্তন তত্ত্ব। ধার্মিক মানুষের পক্ষে এই ধরণের তত্ত্বকে মেনে নেওয়া প্রায় অসম্ভব। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরুনদের বিবর্তনকে বাতিল করে দেওয়ার প্রধান কারণও এটা। পরোক্ষ আরও কিছু কারণও রয়েছে। যেমন, সৃষ্টিতত্ত্বে বিশ্বাসী মানুষদের বিভিন্ন কর্মকান্ড। বাংলাদেশেই আমরা দেখেছি আমাদের মোল্লারা বা মোল্লা নন কিন্তু সৃষ্টিতত্ত্বে বিশ্বাসী পলিসি মেকারদের হস্তক্ষেপে এইচএসসির “জ়ীববিজ্ঞান” বইয়ের “বিবর্তন” অধ্যায়টি বাতিল হয়েছে। এছাড়াও বেশিরভাগ মানুষের বিবর্তনের জ্ঞান সীমাবদ্ধ হারুন ইয়াহিয়া, জাকির নায়েকের লেকচার ভিডিও। তাদের কেউ বিবর্তন নিয়ে একটি বইও পড়ে দেখেন নি- যেখানে খুব ভালোভাবে বিবর্তন ব্যাখ্যা করা রয়েছে। বিবর্তন সম্পর্কে তাদের ধারণা ছোট খাট কিছু প্রবন্ধ কিংবা বন্ধুবান্ধবের মধ্যে আলোচনা- “ধূর কইলেই হইলো, আমরা বান্দর থেকে আসছি” মধ্যে সীমাবদ্ধ। যার ফলে খুব সহজের উপসংহারে পৌঁছানো যায়, বিবর্তনের বেইল নাই। ফাউল।
“প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে বিবর্তন” চার্লস ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্বের সারকথা। জীবিত সকল প্রাণীকূলের এক পর্যায় থেকে আরেক পর্যায়ে পরিবর্তন, বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যেকার বৈচিত্র ব্যাখ্যা করা হয়েছে এই তত্ত্বের মাধ্যমে। আইইউটি একটি ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়। এখানকার পরিসংখ্যান আমার কাছে আছে। এবং তা হলো, এইসব হবু ইঞ্জিনিয়ারদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি “তত্ত্ব” শব্দটির মর্মার্থ জানে না। যদি জেনেও থাকে তাহলে ধর্ম রক্ষার খাতিরে বিবর্তনের সাথে লাগানো “তত্ত্ব” শব্দটাকে তারা ভিন্নার্থে ব্যবহার করে থাকে। বিবর্তনকে তারা বলে, “জাস্ট” একটা তত্ত্ব, আর কিছু না।
বিবর্তন জাস্ট একটা তত্ত্ব হলে, আইনস্টাইনের “আপেক্ষিকতার তত্ত্ব” ও জাস্ট একটা তত্ত্ব। “সূর্য পৃথিবীকে নয় বরঞ্চ পৃথিবী সূর্যকে আবর্তন করছে”- ১৫৪৩ সালে দেওয়া কোপারনিকাসের এটাও জাস্ট একটা তত্ত্বই। কন্টিনেন্টাল ড্রিফট ও শুধুই একটি তত্ত্ব। এই ধরনের সকল তত্ত্বের ব্যাখ্যাই যথার্থ পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষণের মাধ্যমে দৃঢ়ভাবে সমর্থিত এবং বাস্তব সত্য বলে প্রমানিত। জ্বী!! তত্ত্ব বলতে বিজ্ঞানীরা এটাই বুঝিয়ে থাকেন। আবজাব যে যা ইচ্ছে বললেই, কিংবা স্বপ্নে প্রাপ্ত কোন কিছুই তত্ত্ব হয়ে যায় না, যতক্ষণ না পর্যন্ত সেটার ব্যাখ্যা পর্যাপ্ত প্রমান দ্বারা সমর্থিত হয়।
পরবর্তী পর্যায় গুলোতে বিবর্তনের কয়েকটি মূলনীতি সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। আলোচনা করা হবে, বিভিন্ন বিবর্তন বিরোধীরা বিবর্তন সম্পর্কে যেসব “ডাউট” দিয়ে থাকেন সেগুলো নিয়েও। “কুকুর কিভাবে গরু হয়, বান্দর কিভাবে মানুষ হয়” জাতীয় ব্যাপারগুলোও সহজভাবে ব্যাখ্যা করা হবে। আমাদের চোখের মতো জটিল জিনিস বিবর্তনের মাধ্যমে তৈরী হতে পারেনা, এই ধরণের অনেক প্রশ্নের জবাব পাওয়া যাবে। উদ্দেশ্য একটাই, হারুন ইয়াহিয়া কিংবা জাকির নায়েকের লেকচার নয়, সত্যিকার বিবর্তনতত্ত্ব কী খুব হালকা ভাবে তা সবাইকে জানানো। বিবর্তন বর্তমানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্ব। মানবকল্যাণ, চিকিৎসাবিজ্ঞান, প্রাণীজগত সম্পর্কে যথাযথ ধারণা পাবার জন্য বিবর্তন তত্ত্বের বিকল্প নেই। তবে তত্ত্বের গুরুত্বপূর্ণ ধারণাগুলো কিছুটা জটিল। তবে এতোটা জটিল নয় যে, মনযোগী পাঠক তা বুঝতে পারবেন না। সাথে রয়েছে পাহাড় সমান প্রমাণ, বিভিন্ন দিক থেকে। যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে, সংরক্ষিত হচ্ছে বিভিন্ন জাদুঘরে, টেক্সট হিসেবে আসছে জনপ্রিয় বিভিন্ন বইয়ে, পাঠ্যবইয়ে, কোটি কোটি পিয়ার- রিভিউড বৈজ্ঞানিক পেপারে। সুতরাং বিবর্তনকে “বিশ্বাসের” কোন বস্তু বানানোর দরকার নেই। অনান্য বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব যেমন, বিবর্তনও তাই। যদিও এক শিক্ষকের কাছ থেকেই, “কতল করে ফেলার” সময় এসেছে টাইপ হুমকি মাথার উপর আছে, তারপরও ইচ্ছে আছে নিয়মিত চালিয়ে যেতে।
😕 🙁 🙁
কী ভাবি? কঠিন কিছু নাই তো। 🙂
নারে ভাইয়া, একদম পানির মত সোজা। 😕
'প্রত্যাবর্তন পোস্টে'র বিষয় হিসেবে 'বিবর্তন' নেহায়েৎ মন্দ না। 😉
শুরুটা ভালো ছিলো।
লেখার ব্যাপারে একটা ছোট্ট উপদেশ ছিলো (যদিও বড় লেখককে ছোট পাঠকের উপদেশ দেয়া ঠিক কিনা বুঝতে পারছি না! ) ।
নিজের মতামত কমিয়ে তাত্ত্বিক আলোচনার দিকে জোর দিলে ভাল হবে বলে আমার মনে হয়, সঙ্গে তথ্য, সুত্র উপস্থাপনা জরুরী।
বুঝাতে পারলাম কিনা নিজেই বুঝলাম না! তবে বাকি পর্বগুলো পড়ার অপেক্ষায় রইলাম। :thumbup:
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
ধন্যবাদ কামরুল ভাই।
শুরুতে নিজের মতামতটা একটু বেশিই হলো। তবে সেটার দরকার আছে। ধরেন বিবর্তন তো অনেকেই পড়েছেন। কিন্তু আত্মস্থ কয়জন করেছেন। সেইটার জন্য আশের পাশের বিষয়গুলো নিয়ে আসাও আমার কাছে জরুরী মনে হয়। বিবর্তন জানার পাশাপাশি, কেন আজকের বিজ্ঞানের ছাত্ররাও বিবর্তন জানার জন্য জাকির নায়েকের পেছনে দাঁড়াচ্ছে এই বিষয়েও আলোচনা প্রয়োজন।
বিজ্ঞান জানতে হলে, বিজ্ঞানের বই পড়তে হবে। এইটা না করে জাকির নায়েক আর হারুন ইয়াহিয়ার "ফাইনালি এভালুয়েশন কলাপ্স ইন ইয়োরোপ" টাইপ ফাইলে পিসি ভর্তি করে রাখলে চলবে না। যেটা আমার আশেপাশের সবার মধ্যে বেশ দেখা যায়।
আর একদম তত্ত্বীয় অনেক গভীর ব্যাপার নিয়ে অর্নব ভাই, মুহাম্মদ কিন্তু লিখেছে। আমি একটু অন্যভাবে আগাতে চাচ্ছি। এইটাই কারণ। তবে এই পর্বটা ট্রেইলর, বিস্তারিত পরবর্তীতে লিখবো বলে আশা করি।
আর হ্যাঁ, সূত্র। অবশ্যই থাকবে। তত্ত্বীয় কথা আমি যা লিখবো, সেটা বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির বড় বড় প্রফেসরদের পরীক্ষার মাধ্যমে পাওয়া। লেখার তাদের নাম থাকবে। বেশি সূত্র দিয়ে ভরালে লেখার সৌন্দর্য কমে যাবে। আর আপনার মতো আগ্রহী পাঠকদের জন্য অসংখ্য সূত্রেরও প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। আপনি যদি নিউটনের সূত্র কোথাও লিখেন, তার জন্য কী রেফারেন্স ব্যাবহার করে থাকেন?
বিশাল ধন্যবাদ কষ্ট করে পড়ার জন্য। নিয়মিত ফিডব্যাকের আশায় থাকলাম।
নাহ! মতামত বেশি হয়নায়, ঠিকই আছে।
আসলে আমি বুঝাতে পারি নাই। মতামত বলতে বুঝাতে চাইছিলাম নিজের বিশ্বাস-অবিশ্বাসের কথা বেশি না বলে বিবর্তনবাদের পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি তর্ক যা আছে তা বেশি করে উপস্থাপন করা। তাতে বেশিরভাগ পাঠকের অংশগ্রহন করার সম্ভাবনা তৈরি হয়।সিসিবিতে অতীত অভিজ্ঞতা থেকে যা দেখেছি, নিজের বিশ্বাসের কথা প্রতিষ্ঠিত করতে গেলেই একটু উতপ্ত পরিবেশ হয়ে যায়। সেটা সচেতনভাবে এড়িয়ে যাওয়ার কথা বলতে চাইছিলাম।
তারচেয়ে বরং পক্ষে-বিপক্ষে যা মতামত আছে, বিভিন্ন জায়গায় পাওয়া যায় , জানা যায়, সেগুলি নিয়ে তুই তোর নিজের মত করে লিখ, আমরা আগ্রহ নিয়ে পড়বো, আমাদের মতামত দেবো।
বিজ্ঞান জানার ব্যাপারে যা বললি, সেটা নতুন কিছু নয়, চারপাশে অহরহ দেখছি। আমি নিজে এদের জ্ঞান দেয়ার দায়িত্ব নিতে নারাজ, অনেক সময় এটা চাপিয়ে দেয়ার মতো হয়ে যায়।
লেখা ভালো হবে জানি। চলুক।
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
বিবর্তন নিয়ে সিরিয়াস পোষ্টে একটা নন-সিরিয়াস মজাক করিঃ (গুরু ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন)।
বিবর্তনের প্রমাণঃ রায়হান --> সামি... (প্রমাণিত)
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
😀
=))
সামি নামের জঙ্ক-মাস্ফ্যুউইন :shy: :shy:
😀 😛
পরের পর্ব পড়ার অপেক্ষায় রইলাম !
khub valo lekha hoise... poroborti post er opokhkhay roilam.. tobe porobortite pokhkhe ebong bipokhkhe 2 dhoroner jukti uposthapon koro... shudhu tai noy bipokhkher onek jukti te amar jana mote "missing link" gulo ke bhul vabe explain kora hoy..amar mote shegulo bipokhkher jukti noy borong "still unexplained" phenomenon...
পক্ষে বিপক্ষের যুক্তি নয়। পরবর্তীতে উপস্থাপন করা হবে সৃষ্টি তত্ত্বের সীমাবদ্ধতা, সাথে সাথে সৃষ্টি তত্ত্বের বিশ্বাসীরা বিবর্তনকে বাদ দেবার জন্য যে ধরণের যুক্তি ব্যবহার করে থাকেন সেগুলোও যে ধোপে টিকেনা তার প্রমাণ।
আর মিসিং লিংক নিয়েও লেখা আসবে। মূলতঃ এই সময়ের মধ্যেই অনেক মিসিং লিংক আবিষ্কৃত হয়েছে। প্রথম তিন পর্বের পর মিসিং লিংক নিয়ে একটা পর্ব থাকবে। সাথে থাকবে বিবর্তনের আরও অকাট্য কিছু প্রমান।
সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
বিবর্তনবাদ নিয়ে এরকম আলোচনার দরকার আছে। এটি কেবল একটি বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব নয়, রীতিমতো একটি জীবন-দর্শন। কারো কোনো জিজ্ঞাসা থাকলে নির্দ্বিধায় বলুন। কারণ কে কি ভাবলো এসব ভেবে যদি মনের সন্দেহ না মেটান তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন কিন্তু আপনি নিজেই। আমি নিজেও বিবর্তনবাদ নিয়ে ‘অ্যামেচার-একাডেমিক’ ধাঁচের পড়াশোনা চালাচ্ছি। তাই আশা করছি এটা আমারও কাজে আসবে।
অ:ট: পাঠকদের বলছি- ইন্টারনেট হলো বিবর্তন সংক্রান্ত তথ্য-বিকৃতির উত্তম সংকলন, তাই সতর্ক থাকুন। অথেনটিক লেখকের বই পড়ুন।
রায়হান ভাই,আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।আমরা বেশির ভাগ সময় একটা বিষয়ে জানার চেষ্টা না করেই সিদ্ধান্তে পৌছতে চাই।বছর বছর গন্ডায় গন্ডায় ছাত্র সাইন্স গ্রুপ থেকে পাশ করলেও সায়েন্টিফিক ভিশন সম্পন্ন ছাত্র খুঁজে পাওয়া ভার।ঘর থেকে পাঠশালা কোথাও,কারও এ নিয়ে মাথা ব্যাথাও নেই।আমি অবশ্য একটা লিংক দিতে পারি...।।যেখানে ধারাবাহিকভাবে বিবত্ন নিয়ে লেখা ছেপেছিল...।।
www.spb.org.bd
লিংকে কিছু পেলাম না। যাই হোক সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
আছে। আমি দেখলাম।
'বিবর্তনবাদের বিজ্ঞান' নামে আর্দিয়া স্কাইব্রেকের একটা ধারাবাহিক প্রবন্ধের লিঙ্ক আছে।
প্রতি সংখ্যায় একটা করে পর্ব ছাপা হচ্ছে। আগের মাসগুলিতে গেলে আগের পর্বগুলিও পড়া যাচ্ছে।
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
:thumbup: :thumbup:
মানুষ যে বান্দর থেকে আইছে এই ভিডিওটা দেখলেই বুঝা যায়।
মানুষ – নরবানর – পুরোন পৃথিবীর বানর – লেমুর
http://www.youtube.com/watch?v=O4HMDDLyxvI
http://www.youtube.com/watch?v=RBYtDbholmg
বিবর্তনবাদ তত্ত্ব নিয়ে আমার জ্ঞান খুব সীমিত, কিছু জানি না বললেই চলে। তোমার পরের পর্বগুলোর অপেক্ষায় থাকলাম। আশা করি ওখানে পক্ষে-বিপক্ষের যুক্তিগুলোর সুন্দর একটা উপস্থাপনা পাব।
আর পরের পর্ব দিতে বেশী দেরি করোনা, তাহলে বুঝতে একটু সমস্যা হয়ে যেতে পারে।
ধন্যবাদ। খুব কঠিন কিছু আসবে না। যা আসবে দিবালোকের মতো স্পষ্ট।
আচ্ছা, বানর থেকে কেমনে মানুষ আসছে এই জবাবটা একেবারে শর্টকাটে "জলবৎ তরলং" করে দিতে পারবা? আমি মানুষরে বুঝাইতে গেলে যেই ডিএনএ'র কথা বলি, সেই সবতে ঘুমায়ে পড়ে। 😕 :bash:
এই পর্বের কথাগুলো ভালো লেগেছে। আমিও মানি যে জাকির নায়েকের ভিড্যু ফাইল দেখে বিজ্ঞানের লোমটাও শেখা যাবে না। পড়লে তত্ত্বীয় বিজ্ঞান পড়ো, পেপার পড়ো, আর্টিকেল, জার্নাল, রিভিউ পড়ো। শিখো। এই শেখায় কোন শর্টকাট নাই। তবে আলাপচারিতার জন্য একটা সহজ ব্যাখ্যা দাঁড়া করায় রাখতে চাই।
ডিএনএ টা সহজসাধ্য না? আমি তো আমার পর্বে ডিএনএ এর কথাই লিখতাম। যাই হোক, এই ব্যাখ্যাটা সোজা লাগে কী না দেখেন তো।
রক্তকে জমাটবদ্ধ হতে দিলে যে তরল পদার্থ পৃথক হয়ে আসে তার নাম সিরাম। এতে থাকে এন্টিজেন। এ সিরাম এক প্রাণী থেকে অন্য প্রাণীতে প্রবেশ করালে উৎপন্ন হয় এন্টিবডি। যেমন মানুষের সিরাম খরগোশের দেহে প্রবেশ করালে উৎপন্ন হয় এন্টি হিউম্যান সিরাম। এতে থাকে এন্টি হিউম্যান এন্টিজেন। এ এন্টিহিউম্যান সিরাম অন্য মানুষের সিরামের সাথে মেশালে এন্টিজেন এবং এন্টিবডি বিক্রিয়া করে অধঃক্ষেপ বা তলানি উৎপন্ন হয়। এই অ্যান্টি হিউম্যান সিরাম মানুষ, নরবানর, ‘পুরোন পৃথিবীর’ বানর, লেমুর প্রভৃতির সিরামের সাথে বিক্রিয়া করালে দেখা যাবে, যে প্রাণীগুলোর সাথে মানুষের সম্পর্কের নৈকট্য যত বেশি তলানির পরিমান তত বেশি হয়। প্রাণীগুলোর মধ্যে বিক্রিয়ার অনুক্রম হল :
মানুষ –> নরবানর –>পুরোন পৃথিবীর বানর –> লেমুর
অঙ্গসংস্থানবিদদের মতে উল্লিখিত প্রাণীদের মধ্যে সর্বাধিক আদিম হচ্ছে লেমুর, আর সবচেয়ে নতুন প্রজাতি হচ্ছে মানুষ। তাই মানুষের ক্ষেত্রে তলানির পরিমাণ পাওয়া যায় সবচেয়ে বেশি আর লেমুরের ক্ষেত্রে সবচেয়ে কম। দেখা যাচ্ছে বিবর্তন যে অনুক্রমে ঘটেছে বলে ধারণা করা হয়েছে রক্তরস বিজ্ঞানের ‘অ্যান্টিজেন এন্টিবডি’ বিক্রিয়াও সে ধারাবাহিকতাকেই সমর্থন করে।
আচ্ছা, এইটা নতুন জানতে পারলাম। ভালো ব্যাখ্যা। :thumbup:
তবে পরে তোমার পোস্টে ডিএনএ ব্যাখ্যাটাও রাইখো। 🙂
"রক্তকে জমাটবদ্ধ হতে দিলে যে তরল পদার্থ পৃথক হয়ে আসে তার নাম সিরাম"
লিখাটা সিরাম হইতাসে 🙂
কিন্তু কঠিন কঠিন লাগে 🙁
ধন্যবাদ ভাইয়া।
খাইছে তাইলে বান্দর আইল কেম্নে?????
আমি-ত মনে করছিলাম মানূষ থেইকা বান্দর আইছে। 😛
তয় এই দুইন্নায় যা ঘটতেছে তাতে মানুষ আর বান্দরের মধ্যে বেশি ব্যবধান নাই।।
ঐ সেইম সেইম।
এই লেখাগুলা খালি এই সাইটে দিস না।...। অন্যান্য সাইটেও দে। এই সাইটে তুই খেলার সাথী পাবিনা... মজাও পাবি না। 🙁
এই ছেলে, তুমি কোথায় হারায়ে গেছ? কাহিনী কি তোমার? এখানে দেখা যায় না কেন নিয়মিত? x-(
বস ভয়ে আছি।... :frontroll: :frontroll:
ফন্ট্রোল দিয়া প্যারেডে জয়েন করছি। 😕
সিসিবি ছাইড়া কখনো যাই নাই, যাবও না। :ahem:
আর ফ্রন্টরোল দেয়া লাগবে না......
তাড়াতাড়ি লেখালেখি শুরু করে দাও আবার। 🙂
পরের পর্ব পড়ব 😀
পরের পর্ব যে আসবে এই ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। 😀
সব গুলো মন্তব্য পড়ার পর আর ডাউট দিতে ইচ্ছা হল না। তবে, পরের পর্বের অপেক্ষায় আছি। ভাল লাগছে...
কেন? ডাউট থাকলে অবশ্যই দিবেন। পরিষ্কার ধারণা দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য।
আবীর, ভালো বিষয় নিয়ে লেখা শুরু করেছ। তোমার শুরুটা ভালো হয়েছে। কিন্তু পরে তুমি কিছুটা হালকা করে ফেলেছ বলে আমার মনে হয়েছে। আবার পড়ো। অবশ্য এটা আমার মত। লেখার ব্যাপারে আমি তোমাকে প্রভাবিত করতে চাইছি না।
কামরুলের মন্তব্যের সঙ্গে আমার মত মিলে যাচ্ছে।
লিখতে থাকো। পাঠক হিসাবে আমাকে অবশ্যই পাবে।
মুহাম্মদকে অনেকদিন দেখি না। ও কোথায়?
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
এই ধরণের লেখায় অভ্যাস নাই। তবে চেষ্টা করছি। আশা করি সীমাবদ্ধতাগুলো খুব দ্রুত ওভার কাম করতে পারবো। কোন প্যারা থেকে হালকা লেগেছে ভাইয়া?
হ্যা!! বিশ্বাস অবিশ্বাস, দ্বন্দ সব আসবে। তার আগে আমি চাচ্ছি একটু তত্ত্বটা সম্পর্কে আলোচনা করে যেতে। পরের দুইটা পর্বে তাই থাকবে। এরপর আসবো সংশয়ের জবাবে। বিবর্তনের প্রমাণে।
এই কথাটায় আমি সকাল থেকেই একটু কনফিউজড। আমার লেখাটা কী জ্ঞান দেওয়া টাইপ কিছু হয়ে যাচ্ছে? বা আমার এপ্রোচ? তাহলে সেটাই সবচেয়ে দুঃখজনক হবে। আমার একটাই ইচ্ছে, আমি যেইভাবে সহজে এই জিনিসটা বুঝতে পারি সেটা সবাইকে বোঝানো।
মুহাম্মদের তো নেট আছে। এখন ময়মনসিংহ এ। এইজন্য মনে হয় দেখা যাচ্ছে না। আর ও একটা বই লিখছে মনে হয়। ঐদিকে ব্যাস্ত।
না, জ্ঞান দেয়া টাইপ হচ্ছে না।
এটা বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে যারা জাকির নায়েকের কাছ থেকে বিবর্তনবাদের জ্ঞান নিতে চায় তাদের বিজ্ঞানের পথে আনার চেষ্টা বৃথা হয় প্রায় সময়।
আমি সেই চেষ্টা করি না। 😀
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
পুরাই পান্খা :boss: :boss: :boss:
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
সাহস পাইলাম। এই লেখা কাদের জন্য লিখছি? আমার মনে হয়েছে, কামরুল ভাই পড়বে, লাবলু ভাই পড়বে, আরও দুই একজন পড়লেও সই। সুতরাং আমারও জাকির নায়েক ও তার দলের দিকে যাওয়ার কোন ইচ্ছে নেই। 😀
হুম
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
বিবর্তনবাদ সম্পর্কে বিজ্ঞানসম্মত বোধ গড়ে তুলতে হলে এরকম চর্চা খুবই দরকার। এজন্য লেখককে সাধুবাদ জানাচ্ছি। চিকিৎসাশাস্ত্রের ছাত্র হওয়ার সুবাদে এই ব্যাপারটা সম্পর্কে একাডেমিকভাবে আত্মস্থ করার সুযোগ আমার হয়েছে। অবশ্য মেডিকেলের সিলেবাসে বিবর্তনবাদ সরাসরি নেই তবে মেডিকেলের জীববিজ্ঞান-সংক্রান্ত একাডেমিক দৃষ্টিভঙ্গি ব্যবহার করে বিবর্তনবাদের দিকে দৃষ্টিপাত করার প্রয়াস পেয়েছি - সেটাই বোঝাতে চাইছি। আসলে আমি বিবর্তনবাদের প্রাথমিক পর্যায়ের ছাত্র। তারপরও যেটুকু জেনেছি এবং জানছি তা সবার সাথে ভাগাভাগি করে নিতে চাই। কেননা Sharing knowledge is power এবং Nothing in biology make sense except in the light of evolution - Dobjhansky
বিবর্তনবাদ সম্পর্কে সবার জানার ইচ্ছা অব্যাহত থাকুক।
প্রিয় সৌমিত্র দা, ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। তবে একটা জিনিস খুব চোখে লাগছে। তা হলো, বিবর্তন কোন "বাদ" নয়। নিউটনের সূত্রকে আপনার নিউটনবাদ বলি না, আপেক্ষিকতার তত্ত্বকেও আমরা আইস্টাইনবাদ বলি না। বিজ্ঞান নয়, এমন জিনিস যেমন ধরেন আমরা বলতে পারি "মার্ক্স বাদ"।
:thumbup:
এই বিষয়ে আমার কোন ধারনা নেই। তবুও মনোযোগ দিয়ে পড়ার চেষ্টা করছি। এই পর্বে কঠিন কিছু পাই। কঠিন কিছু পেলে লেখককে ব্যাখ্যার জন্য যন্ত্রনা করব। আগের লেখাগুলা অতিরিক্ত একাডেমিক হওয়ায় আমার মত মানবিক ছাত্রের বুঝতে সমস্যা হয়ে গিয়েছিল। এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পারব।
না মাথার উপর দিয়ে কিচ্ছু যাবে না। কারণ আমার নিজেরই এন্টেনা নাই। 😀
টেকনিক্যাল সমস্যার জন্য আমার মন্তব্য repeat হইছে। সরি!!! 🙁
:thumbup: :thumbup: আছি 🙂 ।
Life is Mad.
দারুণ লেখাটা। ভালো লাগল।
বাসায় থাকায় এই সিরিজের কিছুই সময়মতো পড়তে পারি নাই। এখন শুরু করলাম। প্রথম পর্ব শেষ। যাই পরেরটা পড়ি গিয়া।
সূচনা খুব ভাল হয়েছে।