কতিপয় ডায়ালগ। পার্ট-১, সিন-১

কলেজের অনেক ডায়লগ ভুলে গেছি। যেগুলো মনে আছে তার অনেকগুলোর জন্য অডিও ভিডিও ফাইল আপলোড করা দরকার (নাইলে ব্যপারটা ঠিক আসে না)। আর অনেকগুলোই অন্তর্জালের পরিবেশ দুষিত করার জন্য যথেষ্ট। তাই ভাবলাম শুধু কলেজের ডায়ালগ না দিয়ে এরকম আরও যত ডায়লগ জানি সব জড় করে ফেলি। তবে অবশ্যই ক্যাডেটদের।কুয়াকাটা যাচ্ছি। বাসের ভিতরে স্থান সংকুলানের অভাবে আমরা কয়েকজন বাসের ছাদে অবস্থান নিয়েছি। রাস্তা মোটামুটি থ্রিলিং। তখন আমাদের এক ক্লাস মেট (নাম বলবনা) গার্ল ফ্রেন্ডকে sms করছে…” কুয়াকাটা যাচ্ছি। বাসের ছাদে। রাস্তা প্রচন্ড খারাপ। যে কোন সময় পড়ে মরে যেতে পারি। কিন্তু এখন মরতেও আমার কোন দুঃখ নেই। কারণ আমি পেয়েছি তোমার লভ্‌ (love)।

নাম না বলার ব্যপারটা যখন এসেই পড়লো তখন এক স্যারের (নাম বলছিনা…) কথা না বললেই নয়। তার একটা স্বভাব ছিল তিনি এক জায়গার কথা আরেক জায়গায় লাগাতেন। এরকমই একদিন সিনিয়ার এক ভাইয়া নিয়ে…”তোমাদের ৩ ব্যাচ সিনিয়র এক ভাই ISSB তে । নাম বলবনা। ভাইভা বোর্ডে ঢোকার পর তারে বলল নাইম, ইউ আর এ ক্যাডেট লাইক এ ডার্টি…”।

আমাদের জনৈক পদার্থ বিজ্ঞান ব্যবহারিক শিক্ষক। তিনি রাফ ছাড়া প্রাক্টিক্যাল খাতা সাইন করারতে গেলে কু*র বাচ্চা বলে আর্তচিৎকার খাতা ছুড়ে ফেলে দেন। একদা তারই নিজস্ব গ্যাদা (যে কিনা আমাদেরি ক্লাস মেট)। রাফ খাতা সহ সাইন এর জন্য গেলো। কিন্তু কাটাকাটির জন্য আবারো সেই আর্তচিৎকার। আমাদের সবার মুখে হাসি। যাক স্যার এতো দিনে সত্য কথাটা বললেন।

বাংলা মিডিয়ামে সারাজীবন পড়াতে ইংলিশ বলতে নিশ্চয়ই আপনার খুব কষ্ট হয়। নিশ্চয়ই মনে হয় আহারে ইংলিশটা মনে হয় আমারে দিয়া আর হইলোনা। মন খারাপ করবেন না। BMA তে এক সিনিয়ার জুনিয়ারকে শাস্তি স্বরূপ ৫ গোণার মধ্যে ২০টি front roll দিবার হুকুম করলেন। কিন্তু বেয়াদব জুনিয়ারটি তা করতে ব্যর্থ হওয়ায়…”I five, u two; What can i do?”

এবার বড়া স্যার। শিক্ষকদের উপর জোরপূর্বক ইংরেজিকে মাতৃভাষা হিসাবে চাপিয়ে দেয়ার কিছুদিন পর অষ্টম শ্রেণীর ক্লাস রুমে। কোন একটা বাক্য ভুল করে pardon me বলতে যেয়ে বুকে হাত দিয়ে চিৎকার করে উঠলেন…”Pron0unciation”…..

সেই বড়া স্যারই একদিন দ্বাদশ শ্রেণীর ফর্মে এডজুটেন্টের উপর কোন কারণে বিরক্ত হয়ে পার্ট নেয়ার জন্য বললেন- “তোমরা জানো আমি সেনাবাহিনীর লিখিত পরীক্ষায় চান্স পেয়েছিলাম। সেসময় যদি আমি ঢুকতাম তাহলে আজ আমি কি হতাম জানো?”। সাথে সাথে তাওসিফ ভাইয়ের নির্বিকার জবাব। জানি স্যার, “হাবিলদার ……”।

এবারে নাজমুল ভাই (ভুল বুঝবেন না, তিনি আমাদের ক্লাসের নাজমুল)। ক্লাসে ঘুমানোর কারণে ওকে আর আশরাফ কে স্যার চোখ ধুয়ে আসতে বললেন। আশরাফ জায়গা থেকে উঠলেও ভাইয়ের উঠার লক্ষণ না দেখে স্যার আবার তাড়া দিলেন। তখন নাজমুল আশরাফের উদ্দেশ্য । “আশরাফ আমার চোখ দুইটা নে তো। ধুইয়া নিয়া আয়।”

দুই ব্যাচ সিনিয়র ডাইনিং হল প্রিফেক্ট। পরপর দুই দিন ডাইনিং হলে- “Dont limit the cross”. আহারে, বেচারা খুব নার্ভাস মনে হয়।

আমাদের আসিফের টিজ নাম ছিল problem আসিফ। নামটা তার সাথে কলেজে ঢোকার কয়েকদিন পরই যোগদান করেছিল। বেঁচে আছে এখনো। কিন্তু কেন? ক্লাস সেভেনে প্রথম দিকে হাউস লীডারের ফলইন এ- “ক্লাস সেভেন কারো কোন সমস্যা আছে?” সবাই চুপ। শুধু আসিফ হাত তুলে জানালো তার জানালার স্টপার ঢিলা। তার কিছুদিন পর আবারও রিফাত ভাইয়ের একি প্রশ্নের জবাবে আসিফ, “ভাইয়া আমার ওয়াশিং পাউডার শেষ হয়ে গিয়েছে।” আহারে বেচারা…

আমাদের হাউস মাস্টারের একটা দারুন স্বভাব ছিল। 3rd প্রেপের শেষের দিকে (এই ধরুন ৯টা ৪৫) হঠাৎ ফর্মে ঢুকে ঘুমন্ত সাইফকে গায়ে ধাক্কা দিয়ে। “সাইফ, ওই সাইফ!” ধড়মড় করে সোজা হয়ে সাইফের উত্তর, “জি স্যার?”।”ঘুমাচ্ছিস বাবা, ঘুমা”

…………চলবে। <p

ডিসক্লেইমার……

সকল নাম কাল্পনিক…

১,৪২০ বার দেখা হয়েছে

১৭ টি মন্তব্য : “কতিপয় ডায়ালগ। পার্ট-১, সিন-১”

  1. ভাল হইতাছে.... জোস্....যা দেখতেছি....ক্যাডেট কলেজের পোলাপান এর সামনে একটাই সমস্যা। এরা কি না পারে! আবীর সাহেব, আপসি কি হবেন সেটা কথা না, কোনটা হবেন না সেটা বলেন তো? বস বলগার, পুটবলার, ডিবেটার, প্রেমিক, প্রাইভেট টিউটর...থাক খাক, বেশি হয়া যাইতাছে।

    আপনারে নিয়া একটা কবিতা লিখছি,
    "চল চল চল,
    আবীর সাহেব বস।"

    জবাব দিন
  2. মেহেদী ভাই, দুস্কটা বুঝতে পারছি। আমার সব পোস্টেই আমি ক্ষমা না চেয়ে স্যারদের আসল নাম ব্যাবহার করেছিলাম। কিন্তু পরে দেখা যায় গুগোল সার্চে ঐ নাম লিখলে ব্লগটা চলে আসে। তাই তাদের ব্যক্তিগত জীবণ নিয়ে ছিলিমিলি না খেলে নাম কেটে দিয়েছি। 😉

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।