নার্স এসে যখন কাপড়ের পুঁটলিতে মোড়ানো ছেলেটাকে দিয়ে গেল তাসলিমের কোলে, ওর বিশ্বাসই হচ্ছিল না বাবা হয়ে গেছে সে এখন। কাপড় সরিয়ে ছেলের মুখের দিকে তাকাল তাসলিম, ঘুমন্ত ছোট একটা মুখ। পাশ থেকে মা বললেন, একদম তোর মতো হয়েছে। তাসলিম অবশ্য কোন মিল খুঁজে পেল না। আনমনে ছেলের মুখ থেকে চোখ না সরিয়েই বলল, হুঁ।
এরপরের কয়টা দিন যে কিভাবে কেটে গেল বুঝতেই পারেনি তাসলিম। হাসপাতালের বিল মেটানো, রিক্তার সেলাই কাটা, ছেলের জন্য জামাকাপড় কেনা, আত্নীয়-স্বজনের দেখতে আসা- দম ফেলার সময় হয়নি ওর। অবশেষে ডাক্তারের কথামত, মাসের শেষ সোমবারে ভাড়া করা একটা মাইক্রোবাসে করে ছেলে আর ছেলের মাকে নিয়ে বাসায় ফেরা হয়।
অনভিজ্ঞ বাবা-মা ছেলেকে নিয়ে খাবি খায়, কি করতে হবে অনেক সময়ই বুঝতে পারে না। একবার মাকে, পরেরবার শ্বাশুড়িকে ফোন দিয়ে পরামর্শ করতে হয়। তবে মাসখানেকের মধ্যে সবকিছু আয়ত্ত্ব করে ফেলে ঠিকই। ছেলেটাকে নিয়ে ব্যস্ততা থাকলেও জীবনটা একটা রুটিনের মধ্যে বাঁধা হয়ে যায়। সকালে উঠে অফিসে যাও, অফিস থেকে তাড়াতাড়ি বাসায় ফেরো, ছেলে আর মাকে সময় দাও। ভালোই লাগে তাসলিমের। তবে, অনেক দিনের করা পরিকল্পনাটা ঠিক বাস্তবায়ন করা হয়ে ওঠে না। আজ কাল করতে করতে আরো এক মাস কেটে যায়। ছেলে এখন অনেক এলার্ট, মাকে চিনতে পারে, বাবাকেও। তাসলিম ভাবে, আর দেরি করা ঠিক হবে না। কালই সব করে ফেলবে, ঠিক করে ও।
পরের দিন অফিস থেকে একটু আগেই ফেরে তাসলিম। ফ্রেশ হয়ে দুপুরের খাবারটা অবেলায় খেয়ে নেয়। তারপর ছেলেকে কোলে নিয়ে রকিং চেয়ারটাতে বসে। ওর মা ফুসরৎ পেয়ে ঘুমাতে যায়। ঘুমন্ত ছেলেটা একটু পর হাই তুলতে তুলতে জেগে ওঠে। তাসলিম ভাবে, এরকম একটা চান্স মিস করা যাবে না। এই ছেলেটা তার রক্তমাংস, নিজের বাবা মা যেমন করে ওকে বড় করেছে তেমনি করে এই ছেলেটাকে বড় করবে। না না, নিজের বাবা মায়ের চেয়েও ভালোভাবে করবে কাজটা- নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করে তাসলিম।
ছেলের জন্য বানানো গ্লুকোজ পানিটা একটা বাটিতে ঢেলে নেয় তাসলিম। একহাতে ওকে সামলাতে সামলাতে অন্য হাতে অফিসের ব্যাগটা খোলে। ব্যাগের সাইড পকেট থেকে দুটো জিনিস বের করে, ছোট একটা রঙিন চশমা আর একটা ছোট সোনার চামচ। রঙিন চশমাটা আলতো করে ছেলের চোখে পরিয়ে দেয়, একটু মোড়ামুড়ি করলেও চুপচাপ শুয়ে থাকে ও। সোনার চামচ দিয়ে একটু গ্লুকোজ পানি তুলে ছেলের মুখে দিয়ে গলা খাকড়ি দেয় তাসলিম। অবশেষে তার দিন এসেছে, এতোদিন নিজে শুনেছে, এবার সে অন্য কাউকে শোনাতে পারবে। দরাজ গলায় আবেগ ঢেলে সে ছেলেকে বলা শুরু করে, “তোর চোখে এখন রঙিন চশমা। সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মাইছিস, তাই বুঝিস না, দুনিয়াটা কত কঠিন…”
তাসলিমের মুখটা আনন্দে ঝলমল করতে থাকে।
খালি মাঠে গোল দিয়ে দিলাম মনে হয় 😀
হ, খালি মাঠ..সিসিবি খাঁ খাঁ করতেছে...
খাইছে! গল্প এই লাইনে যাইব বুঝি নাই... :clap:
কানাডায় সোনার দাম কেমন? ;;;
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
এইখানের পোলাপাইনরে এই ডায়লগ দিলে পরের দিন চাইল্ড সার্ভিস এসে পোলাপান নিয়া যাবে... 😛
কানাডায় সোনার দাম কেমন জানি না, ডায়পারের দাম অনেক...
:khekz: :khekz: :khekz:
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
তুই এখনও ডায়াপার পরিস ?? 😮
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
:khekz: :khekz: :khekz:
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
:thumbup: :thumbup:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
:))
;;)
কেস কি তৌফিক, হঠাৎ ক্ষেপলা মনে হইতেছে? খবর-টবর আছে নাকি কিছু? 😀
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
=)) =))
:-B
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
তৌফিক,
ভালো লাগল , আমিও নতুন বাবা - মাত্র ২ মাস হয়েছে | ঘটনাটা খুব বেশি মিলে গেল নিজের সাথে, শুধু সোনার চামচ টুকু ছাড়া | শীতরাত এ জলদস্যুর ভয় নিয়ে স্ত্রী সন্তান ছাড়া আবার সমুদ্র পাড়ি দেবার কথা ভাবতে থাকি |
মিলা আপাকে কিছু বলতে চাচ্ছেন মনে হল? :-B
তাও ভাল, শেষের দিকে আমি খানিকটা ভয় পেয়ে গেছিলাম।
......আমিও ।
🙂
জন্মানোর মাসখানেক পর সোনার চামচ মুখে নিছিস ... 😀
(নিজের পোলা/মাইয়া নিয়া আমারও ম্যালা প্ল্যান আছে ... :grr: )
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
গল্পের প্লট এই লাইনে আগাবে ভাবি নাই তাই টুইস্টা ভাল পাইছি 🙂
আর "অপত্য" শব্দের মানে কী তৌফিক ভাই :-B
অনেকদিন ব্লগরোল পড়ি না 🙂
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
হে হে হে
Saleh