১।
প্রথম পাকিস্থানিদের সাথে ব্যক্তিগত পরিচয় হয়েছিল ২০০২ সালের ডিসেম্বর মাসে, আই ইউ টি-তে। তখন ভব্যতা জ্ঞান একটু কম ছিল। পরিচয়ের দুই মিনিটের মাথায়ই সাংবাদিকদের স্টাইলে জিজ্ঞাসা করে বসলাম ১৯৭১ নিয়ে তোমরা কি জান? তোমদের ভাবনাটাই বা কি? সেই ব্যাটা বলে, আমরা এইসব ব্যাপারে কিছুই জানি না। বোঝাই যাচ্ছিল, সাজানো উত্তর, আসলে কি ভাবে শেয়ার করবে না। পাকিস্থানি পোলাগুলা এমনি খুব খারাপ ছিল না। দেখা হইলে হাই, হ্যালো বলতাম। মাঝেমধ্যে ক্লাসনোট শেয়ার করতাম। আজাদ কাশ্মীরের ওয়াকার ভালো ক্রিকেটার ছিল, সে আমাদের সাথে ক্রিকেট খেলত। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ওদের সাথে আলাপ হয় নাই এরপর ওদের সাথে। তবে, শোনাকথা শুনেছিলাম একজনের কাছে। এক পাকিস্থানির সাথে তর্ক বেঁধে গিয়েছিল, তার দাবী মালাউন ভারত নাকি ভাই-ভাইয়ের মধ্যে ফাটল ধরাইছে। ওখানে উপস্থিতরা প্রতিবাদ করছিল, কিন্তু বান্দা তার তালগাছ ছাড়বে না। যাহোক, এইগুলা নিয়া ওইব্যাটার সাথে কথা বলার সুযোগ হয় নাই, সে অস্ট্রেলিয়া চলে গেছিল।
২।
কানাডায় আসার পর কিছু পাকিস্থানির সাথে পরিচয় হইছে, তারমধ্যে একটা হলো এখানকার ডাক্তার। টেকনিক্যালি তারে ঠিক পাকিস্থানি বলা যায় না, কানাডিয়ান হয়ে গেছে সে এতোদিনে। তো একদিন তার গাড়িতে চেপে কিছু ধর্মপ্রাণ মুসলমান আসল আমাদের বাসায়। তাবলীগের দাওয়াত দিতে। আমি বাইরে যাচ্ছিলাম, কাছেই একটা সুপারস্টোরে। তাবলীগ পার্টি জুরাজুরি করে আমাকে গাড়িতে তুলে নিল। গাড়িতে উঠেই পাকিস্থানি ব্যাটা বলে বসল, আমরা তো একদেশ ছিলাম একসময়। আলাপ জমানোর নির্দোষ চেষ্টা। আমার কিন্তু ব্যাপারটা পছন্দ হইল না, তারে খালি বললাম, আমরা যে একসাথে নাই তার জন্য বাংলাদেশের মানুষের কোন রিগ্রেট নাই।
এর পরের ঘটনা এক পাকিস্থানি ডক্টরাল স্টুডেন্টের সাথে। আমি মাসে ছয়মাসে, কারো মৃত্যুবার্ষিকী থাকলে মসজিদে যাই। গিয়ে দোয়া করি, বিশ্বাসটা নড়বড়ে হইলেও ভাবতে ভালো লাগে চলে যাওয়ারা আমার করা পুণ্যের ভাগ পাবে। তো একদিন শুক্রবারে সেই ছাত্র মসজিদ থেকে এসে দেখল আমি কম্পিউটার ল্যাবে বইসা আছি। গায়ে পড়েই সে নামাজের দাওয়াত দিতে চাইল। কথায় কথায় ১৯৪৭ এর দেশভাগের কথা উঠে গেল। আমি বললাম, ধর্মকে ভিত্তি করে রাষ্ট্র ভাগ করাটা একটা স্টুপিড কাজ ছিল। সে তীব্র প্রতিবাদ করল। আমি তখন পাকিস্থানি বাহিনীর গণহত্যার কথা বললাম, ১৯৫২ তে বাংলাভাষা দাবায়ে রাখার কথা বললাম। ব্যাটা বলে, ১৯৫২ তে নাকি আমাদের দাবী ছিল উর্দুর পরিবর্তে বাংলাকে সমগ্র পাকিস্থানের রাষ্টুভাষা করার অন্যায্য দাবী নাকি আমরা করছি। তারে ভুল ধরায়ে দিলাম, মানল কি মানল না আল্লায় জানে। গণহত্যার কথা বলাতে বলল, আচ্ছা যদি একজন সৈন্য যুদ্ধক্ষেত্রে অপরপক্ষকে হত্যা করে, তাইলে সেটা অপরাধ হয়? আমি কইলাম, আমার বাপে মুক্তিযোদ্ধা ছিল, সে যুদ্ধে মইরা গেলে আমার আফসোস থাকত না। কিন্তু নিরীহ লোকজনরে মারছ যে, তার কি বিচার? দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এতবড় গণহত্যা আর কখনো হয় নাই। ৭০ মিলিয়ন মানুষের মধ্যে ৩ মিলিয়নরে মাইরা ফেলছিলা তোমরা, আবার বলো সেইটা অপরাধ হয় না? ততোক্ষণে আমার চেহরায় পাশবিক ক্রোধ খেলা করতেছে, হাতের কাপুঁনি দেখে বুঝতে পারলাম। ব্যাটা বুদ্ধিমান আছে, আমারে আর ঘাঁটাইল না। বলে, ব্রাদার আমার কাজ আছে, আমি গেলাম। তবে যাওয়ার আগে একটা জিনিস স্বীকার করে গেল, রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলার মধ্যে পাকিস্থানি বাহিনীরই মুসলিম বডি কাউন্ট সবচেয়ে বেশি।
আমার মেজাজ তখনো ঠান্ডা হয় নাই, সোজাসুজি লাইব্রেরিতে চইলা গেলাম। উদ্দেশ্য মুক্তিযুদ্ধের গণহত্যার উপর তথ্য সংগ্রহ করে ব্যাটাকে দেখায়ে দিব। এতবড় বিল্ডিংটা যেখানে নীতি হইল, একবইয়ের একটার বেশি কপি রাখবে না, জায়গা বাঁচানোর জন্য; সেইখানে বই পাইলাম দুইটা। একটাতে কোন উপাত্ত দেয় নাই। আরেকটায় বলছে, মৃতের সংখ্যাটা ৩০০ হাজার থেকে তিরিশ লাখ যেকোনটা হতে পারে। সবার কাছে এই সুযোগে একটা প্রশ্ন আছে, কোন নির্ভরযোগ্য সূত্র কি আছে যেখানে মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার সঠিক উপাত্ত পাওয়া যাবে?
স্যাম্পল সাইজ হিসাবে একটা দেশ থেকে দুইজন খুব কম হয়ে যায়। তবু এই দুই অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, ওরা ওদের ইতিহাস ভালোমত জানে না।
৩।
বাংলাদেশ আর পাকিস্থানের কথা হইল, এখন ভারতের কথা। ভারতীয়রা চান্স পাইলেই হিন্দিতে কথা বলতে চায়, অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি। ওদের অবশ্য দোষ দেয়া যায় না, নিজের ভাষায় সবাই কথা বলতে চাইবে এইটাই স্বাভাবিক। ছোটবেলায় সালমান আর মাধুরীকে দেইখা দেইখা কিছু হিন্দি বুঝতে পারি, কিন্তু আমি নিজে ওদের সাথে ইংরেজি ছাড়া কথা বলি না। কোন বাংগালি যদি হিন্দিতে কথা বলে, আমার গা জ্বলে। মাশরাফি মনে হয় ভারতে গিয়ে এই কাজ করেছিল, বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার এই কাজ করেছিল পাকিস্থানে গিয়ে।
নিজের রাগটা টের পেতাম, কিন্তু এইটারে কখনো যুক্তির দৃষ্টিতে দেখি নাই। প্রথম চিন্তাটা মাথায় আসল যেদিন দেখলাম লেকারসের কোবি ব্রায়ান্ট স্প্যানিশে কথা বলছে সাংবাদিকদের সাথে। তখন মাথায় যুক্তির কথা আসল, আরেকটা ভাষা জানলে সেটা ব্যবহার করা তো দোষের কিছু না। কিন্তু এইটা হইল যুক্তির কথা, আমি তালগাছ ছাড়তাম না। ভারতীয় কি পাকিস্থানি, হয় ইংরেজিতে কথা বল, নাইলে বাংলা।
৪।
নিজ দায়িত্বে যখন পড়েই ফেলছেন, এই ছাড়াছাড়া লেখাটা জোড়া লাগানোর দায়িত্ব আপনারই। অনেক আগে বিশেষ একটা চিন্তা মাথায় রেখে লেখা শুরু করছিলাম, সেই চিন্তার সুতাটা হারায়ে গেছে। তবু প্রকাশ করে দিলাম, অনেকদিন কিছু লেখা হয় না।
নোটঃ উপরে ভুলে “৩০০ হাজার থেকে তিন লাখ” লিখেছিলাম। সঠিকটা হবে “৩০০ হাজার থেকে তিরিশ লাখ।”
🙂
পড়লাম, সুন্দর লিখেছো।
মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখা একটা 'মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস' আছে। ওটা পড়ে দেখো। খুব ছোট করে অনেক বড় একটা ইতিহাস।
ভাষার ব্যপারে আমিও তোমার মতই, বুয়েটে পাকিস্তানী একজনের সাথে পরিচয় ছিলো, কোনো একদিন লিখবো হয়তো।
[রেশাদ ভাই, প্রবল দ্বিমত। কিন্তু কেন সেটা বলার আগে :frontroll: দিয়া নেই।]
হা ইশ্বর!
- এভাবেই ইতিহাস বদলায়, ইতিহাসে ঘুণ ধরে, ইতিহাস পঁচে যায়।
জাফর ইকবাল স্যারের "ঐ" বইটা নিয়ে ফয়েজ ভাইয়ের পোষ্ট এবং সেইখানে তার সাথে আমার কিছু বাতচিৎ আছে। ইচ্ছে+সময় হলে দেখার আমন্ত্রন রইলো।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
ফয়েজ় ভাইয়ের ঠিক কোন ব্লগটা??
লিঙ্ক দিলে ভালো হয়...খুজে পাচ্ছিনা।
//cadetcollegeblog.com/foyezur/7419 - এইখানে দেখো (আমি লিংক সরাসরি দিতে পারি না)। এখান থেকে মূল রচনা নামিয়ে নিয়ে পড়ে দেখো কিন্তু।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
সহমত 🙂
রেশাদ আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে ১৯৭১ সালে যুদ্ধে যাওয়ার বয়স থাকতেও কেন যুদ্ধে না গিয়ে মুহাম্মদ জাফর ইকবাল ইয়াহিয়ার আদেশ মেনে ভার্সিটির হলে ছিলো? বয়স থাকা সত্ত্বেও যে সে সময়টায় অস্ত্র হাতে সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেয়নি - স্বাধীন দেশে সে হয়ে যায় সবচেয়ে বড় দেশপ্রেমিক। তারাই তত্ব দিয়ে বেড়ায় যুদ্ধে যারা গেছে চাপে পড়ে গেছে। কী আর বলার আছে!
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
খুব ভালো অবজারভেশন শান্তাপা। রুমীর মতো কয়জন পারবে নিশ্চিত সুখের জীবন ছাড়তে?
ভারতীয়দের নিয়ে আমার অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখকর না।এক ভারতীয় কাপলের সাথে কথা হচ্ছিল থাইল্যান্ডের একটা সাফারি পার্কে যাবার পথে- আমি ভারতের অর্থনীতির প্রশংসা করছিলাম যে কিভাবে তারা আর চায়না মন্দায় বড় ধরণের ধরা খায়নাই-অনেকক্ষণ শোনার পর মহিলাটা(নির্দোষ ভঙ্গিতেই) বলল- তোমাদের দেশে তো নারী অধিকারের অবস্থা খুব খারাপ তাইনা?তসলিমা নাসরীনের লেখায় পড়লাম...
মেজাজটা এমন খারাপ হইল তা আর বলার মত না।আমি আন্ধা না,বাংলাদেশে নারীদের অবস্থা খুব ভাল তাও না।কিন্তু যেই ভারতে এখনো সতিদাহ হয় কোন কোন জায়গায়, লক্ষ লক্ষ নারী শিশু জন্মের আগেই মেরে ফেলা হয়, মন্দিরে সেবাদাসী প্রথা এখনো প্রচলিত- সেই হাজার ছিদ্রবিশিষ্ট চালুনী ভারতের একজন নাগরিক হিসেবে সুঁই বাংলাদেশের একজন আমি এইটা শুনতে রাজি না যে আমার একটা ফুটা-বাংলাদেশের নারী অধিকার ভয়াবহ।তারে জ্ঞান দিতে বাধ্য হইলাম যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী,বিরধিদলীয় নেত্রী,স্বরাষ্ট্র এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মত গুরুত্বপুর্ণ পদগুলো নারীদেরই দখলে।
আর পাকিস্তানিদের সাথে ইন্টারএকশন থিকা আমি মোটামুটি সচেতনভাবেই দূরে থাকি।এদের কথাবার্তার যেসব গল্প শুনছি তাতে মুখের বদলে হাত-পা চালায় দিয়া জেল খাটার সম্ভাবনা আছে আমার।
অফ টপিক- আমি গোঁড়া রেসিস্ট না, ভারত আর পাকিস্তানে বহু মানবতাবাদীর অস্তিত্ব সম্পর্কে আমি ওয়াকিফহাল,তাঁদের প্রতি আমি শ্রদ্ধাও পোষণ করি।আসলে আমার দুর্ভাগ্য যে ১০ তা অভিজ্ঞতার ৬ টাই খারাপ হইছে আমার।আশা করি ভবিষ্যতে পাল্লাটা উল্টায় যাবে।মানুষের ক্ষুদ্রতা বিশ্বাস করতে আমার খুব খারাপ লাগে।
:boss: :boss: :boss:
ঐ
আমাদের সাথে ভারতীয় যারা আছে তারা যৌতুক ছাড়া বিয়ে করবে না। একটা ভারতীয় কাপলকে দেখছি, স্বামী যেন একটু বেশিই ডমিনেন্ট। হয়তো তাদের রিলেশনশিপের ডায়নামিক্সটাই এইরকম। জেনারেলাইজেশন করা ঠিক হবে না।
*WHPSI: 307,013 deaths by pol.viol. in Pakistan, 1971.
* D.Smith says 500,000
* S&S: 500,000 (Civil War, Mar.-Dec. 1971)
* 1984 World Almanac: up to 1,000,000 civilians were killed.
* Hartman: 1,000,000 Bengalis
* B&J: 1,000,000 Bengalis
* Kuper cites a study by Chaudhuri which counted 1,247,000 dead, and mentions the possibility that it may be as many as 3,000,000.
* MEDIAN: 1,000,000-1,250,000
* Porter: 1M-2M
* Rummel: 1,500,000.
* Eckhardt: 1,000,000 civ. + 500,000 mil. = 1,500,000 (Bangladesh)
* Harff & Gurr: 1,250,000 to 3,000,000
* The official estimate in Bangladesh is 3 million dead. [AP 30 Dec. 2000; Agence France Presse 3 Oct. 2000;
* Rounaq Johan: 3,000,000 (in Century of Genocide: Eyewitness Accounts and Critical Views, Samuel Totten, ed., (1997))
* Compton's Encyclopedia, "Genocide": 3,000,000
* Encyclopedia Americana (2003), "Bangladesh": 3,000,000
অনেক ধন্যবাদ মাহবুব। তবে একটা কথা বুঝলাম, স্বাধীনতা যুদ্ধে কত মানুষ মারা গেছে তার সঠিক কোন উপাত্ত নাই। এখনো সময় আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেপেলে যদি ছুটিতে ইউনিয়ন ইউনিয়নে গিয়ে একটা ডেটাবেজ করে ফেলত। সবাই মিলে চেষ্টা করলে ব্যাপারটা হয়তো খুব কঠিন হবে না।
ড: হুমায়ুন আজাদের একটা কথা আমার খুব প্রিয়-
'পাকিস্থানিদের আমি অবিশ্বাস করি, যখন তারা হাতে গোলাপ নিয়ে আসে, তখনও।'
তৌফিক, কেমন আছিস?
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
:thumbup:
সালাম কামরুল ভাই। আছি একরকম, ব্যস্ততা বাড়ছে। আগের মতো সিসিবিতে লিখতে পারি না। এইদিকে সিসিবিও যেন একটু ঝিমায়ে গেছে। এখন থেকে কনশাস এফোর্ট দিব যাতে লেখা নামাইতে পারি।
একাত্তরে যিনি পাকিস্থানি বাহিনীর হাতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তার পক্ষে পাকিস্থান শব্দটাই ঘৃনার উদ্রেক করবে। বেড়ে উঠার সময় পাকিস্থানের প্রতি আমারও বিবমিষা ছিল অনেকটা। তবে ইদানীং উদারনৈতিক হওয়ার চেষ্টা করতেছি। মাহমুদ ভাইয়ের মতো আমিও বলি, পুরো একটা দেশকে, তার সব মানুষকে এক দাঁড়িপাল্লায় মাপা হয়তো ঠিক হবে না।
থিউরিটিক্যালি তুই আর মাহমুদ ভাই কিংবা এমন উদারনৈতিক সবাই খুবই সঠিক। এটাই হওয়া উচিত। আমি এমন ভাবনা সম্মান করি। অন্য সবার বেলায় আমিও এমন।
কিন্তু পাকিস্তানিদের বেলায় আমি এইসব উদারনৈতিকতা দূরে সরিয়ে রাখি। এইখানে আমি প্রতিক্রিয়াশীলদের চেয়েও খারাপ, ধর্মান্ধদের চেয়েও গোড়া।
এই সীমাবদ্ধতাটুকু মেনে নিয়েই আমি জীবনযাপন করি।
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
আমি এইখানে বেশ কয়েকটা পাকিস্তানিরে চিনি। ছাত্রগুলা এই বিষয়ে তেমন কিছু জানে না, তাদের ইতিহাস টাইপ পড়ালেখায় নাকি বলতে গেলে কিছুই নাই এইসব ব্যাপার (বুঝা গেলো পাঠ্যবইয়ে ইতিহাস বদলানোর পেটেন্ট বান্গালীর না), আর বড়রা নাকি এই বিষয়ে কথাবার্তা বলে না তেমন। যারা বেশ বয়স্ক, তাদের কয়েকজনকে বাংলাদেশ সাপোর্ট করতেই দেখেছি, রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাওয়ার পক্ষপাতি। ২-১ যারা করে নাই, একটার সাথে মসজিদে হাতাহাতি লেগে গিয়েছিলো এই বিষয়ে। ২৫শে মার্চের গনহত্যা সে অস্বীকার করছে, ৩ মিলিয়ন মানুষ তার কাছে দেশের স্বাধীনতা রক্ষার কোলাটেরাল ডেমেজ, ইন্ডিয়া নাকি নিজের স্বার্থে বান্গালীদের ফুসলিয়ে দিয়েছে (কোন নাকি চুক্তিও আছে যে যুদ্ধ শেষে বাংলাদেশ ইন্ডিয়ার রাজ্য হিসেবে যোগ দিতে রাজনীতিবিদরা জনগন কে চাপ দিবে !!) রাশিয়া বিরোধিতা করেছে আমেরিকার বিরোধিতা করার জন্য, ১৪ই ডিসেম্বর নাকি বান্গালী নিজেরাই ধনী দের হত্যা করেছে বাসায় ডাকাতির জন্য টাইপ .... এসব শুনে হাতাহাতি শুরু করে দিয়েছিলাম (মসজিদে এ কাজ করার পরেও আমি যে খুব একটা দু:খিত তা বলা যাবে না)। তারপর থেকে সে আমাকে এড়িয়েই চলে (স্বাভাবিক)।
ইন্ডিয়ানরা সবজায়গাতেই এক, হিন্দিতে কথা বলবেই। আমিও সোজা জানিয়ে দেই- হয় বাংলা বল, না হয় ইংরেজি। অনেক বাংলাদেশিকেই দেখেছি ইন্ডিয়ান দেখলেই ক্যায়সি হু টাইপ হিন্দি শুরু করে দেয় কাজেই ইন্ডিয়ানদের খুব যে একটা দোষ ও দেয়া যায় না (তাছাড়া তারা তো জানেই বাংলাভাষী হিন্দির অনেকটাই বোঝে)। আমার এক কাজিন (সেও ইন্ডিয়ানদের সাথে হিন্দিতে কথা বলে, পড়তেও শিখেছে ইন্ডিয়াদের সাথে কাজ করে বলে) তার বক্তব্য হলো তারা (ইন্ডিয়ানরা) যেই ভান্গাচোরা ইংরেজি বলে, এর চেয়ে এদের কথা হিন্দিতেই বোঝা সহজ। বান্গালীর মধ্যেই এমন থাকলে আমাদেরও একই মনে করে নিলে তাদের দোষ ও দেয়া যায় না তেমন।
কিরে তৌফিক, আছিস ক্যামন?
এখন পর্যন্ত কোন পাকিস্তানি বা ভারতীয়র সাথে সেভাবে ইন্টারাকশন হয়নি, তাদের সম্পর্কে কোন মন্তব্য করতে পারছি না। তবে পাকিস্তানিদের সম্পর্কে আমার মনোভাব মোটামোটি রেসিস্টের মতই। বাবার গড়ে তোলা এক অভ্যাসের কারনে আজ পর্যন্ত কোন সজ্ঞানে পাকিস্তানি প্রোডাক্ট ব্যবহার করিনি।
ভারতের প্রতি আমার বিদ্দেষের মূল কারন বলা যায় বিএসএফ এর কার্যক্রম।প্রায় প্রতিদিনই কোন না কোন সীমান্তে এরা গুলি চালাচ্ছে, মারা পড়ছে নীরিহ মানুষেরা। আর সরকারী বেসরকারী কোন পর্যায়েই এর জোরালো কোন প্রতিবাদ না দেখে মেজাজ আরো বেশি বিগড়ে যায়।
এখন পর্যন্ত দুটো কোর্স করেছি যেখানে নেপালিরা ছিল, ওদের ইংরেজি বেশ দূর্বল, তবে হিন্দিতে অনেক সাচ্ছন্দে কথা বলতে পারে। যার কারনে আমাদের অনেকেই ওদেরকে ইংরেজি বোঝানোর কষ্ট না করে হিন্দিতেই কাজ চালাতো, আমি নিজে কখনো ওদের সাথে হিন্দি ব্যবহার করিনি। আর পরের কোর্সে আমি সিনিয়র মোস্ট হবার সুযোগে চেষ্টা করেছি কেউই যাতে হিন্দি ব্যবহার না করে সেটা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছি। আইসিএল এ গিয়ে আমাদের সোনার ছেলেরা যেভাবে হিন্দিতে খই ফুটিয়েছিল, এর কারনে এখন পর্যন্ত আমি এদেরকে সহ্য করতে পারি না।
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
ভারত,পাকিস্তান দুইটার মুখেই থুতু
:clap: :clap:
পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে হাস্যকর রাষ্ট্র হল পাকিস্তান। ক্লাস সিক্সে পড়ার সময় আমার এক আত্মীয়ের সাথে তর্ক লেগেছিল কেন পাকিস্তান ভেঙে দুই টুকরো হয়েছিল এজন্য। আমি অর্থনৈতিক বৈষম্যের কথা উল্লেখ করলে উনি বিভিন্ন জিনিসের দাম তুলে ধরে বোঝানোর চেষ্টা করেন পাকিস্তান পিরিয়ডটাই নাকি ভাল ছিল। কিন্তু এখন পাকিস্তানে যা চলছে তাতে আমি নিশ্চিত তিনি নিজেই সেখানে থাকতেন চাইতেন না।
প্রথম আলোর সাংবাদিক মশিউল আলমের লেখায় পাকিস্তানি জার্নালিস্টদের মনোভাব আরো ভাল ভাবে জানা যাবে। তার সেই লেখাটার হেডিং এ মুহূর্তে আমার মনে পড়ছে না।
ভাষার বিচারে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি মিডল ঈস্টে। সেখানে নাকি হিন্দী সেকেন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ। ইচ্ছা থাকলেও ইংরেজীতে কথা বলার উপায় নেই।
আমার সাথে একটা পাকি ছেলের ভালো বন্ধুত্ব আছে এক সাথে কাজ করি বলে। বয়সে আমার চাইতে ৮ বছরের সিনিয়র হলেও সম্পর্ক সমবয়সির মতই। ওর মতে ১৯৭১ এ যা হয়েছে তা একমাত্র জেনারেল ইয়াহিয়ার কারণে এবং ও সেটাকে পছন্দ করেনা এবং ওর মতে ৯০% পাকিস্তানিরা নাকি এটকে সাপোর্ট করেনাই। তারা বিস্বাস করে এটা জেনারেল ইয়াহিয়ার ভুল যদিও ওর ইতিহাস সম্পর্কে ধারণা খুব কম।
আমাদের ক্লাসে কিছু বাঙ্গালী ছেলে ইন্ডিয়ান ২টা মেয়ে আছে তাদের সাথে হিন্দীতে কথা বলে। এখানে ওই ইন্ডিয়ান মেয়ে গুলোর থেকে বাঙ্গালী ছেলেগুলার দোষ বেসি ওরাই হিন্দীতে কথা বলে বেশি।
আর আমাদের কিছু বাঙ্গালী ভদ্রলোক আছেন যারা ইন্ডিয়ান্দের সাথে হিন্দী পাকিদের সাথে উর্দু আর আমাদের সাথে ইংলিশে কথা বলে 🙁 x-( x-(
নাজমুল কোন ছাড় দিবিনা হয় বাংলা নয় কথা নাই।। x-( x-( x-( x-( x-(
এই কথাটা নিয়ে অনেক মতভেদ আছে,সঠিক ইতিহাস কি কারো কাছে আছে?
আমি ইউ এস এ আসার পর বেশ কয়েকজন পাকিস্তানির সাথে দেখা। অবাক করা ব্যাপার হল তারাই আমার কাছে ৭১ নিয়ে জানতে চাইল এবং তারাও অবাক হল যখন শুনল আমি নাকি উর্দু পারি না 😮 😮 । পরে বলল আমাদের দেশ থেকে নাকি অনেকেই ট্রেনিং এ পাকিস্তান এ যায় এবং উর্দুতে কথা বলে। x-( x-( মেজাজটা এতোই খারাপ ছিল আমি চুপ করে ছিলাম। তোমরা ইংরেজী পারোনা তাই আমাদের উর্দু ব্যাবহার করতে হয় এই কথাটা কেনো মাথায় আসে নাই???? 😡 😡 😡 😡 (সম্পাদিত)
ব্যাপার না, নেক্সট টাইম বাচ্চু 🙂
এখন পর্যন্ত কোনো পাকিস্তানিকে ১৯৭১ নিয়ে জিজ্ঞেষ করি নাই...কিন্তু দুইজন পাকিস্তানি (একজন ডেন্টিস্ট, একজন খাবার দোকানের মালিক) নিজে থেকেই বলছে...১৯৭১ এ তারা ঠিক কাজ করে নাই...
এইখানে মানুষের একটা মতামত জানতে চাই...আমি যতদুর জানি...১৯৭১ এর অনেক আগে থেকেই ভারতে সাথে শেখ মুজিবের যোগাযোগ ছিল...বাংলাদেশ কে আলাদা করার জন্য...এমতাবস্থায় উনাকে যদি ক্ষমতা দেয়া হত ১৯৭০ এর নির্বাচনের পর...তাইলে পাক-বাংলা এর ইতিহাস কেমন হইতে পারত বলে মানুষের ধারনা...যানতে চাই...
😀 😀 😀 😀 তুই কি বলতে চাচ্ছিস পুরা বিষয়টা আসলে ইন্ডিয়ার প্ল্যান? শেখ মুজিবকে তারা ব্যবহার করছে পাকিস্তান ভাঙ্গার জন্য? 😀 😀 😀 আশা করি আমার অনুমান ভুল।
১৯৭০ এর নির্বাচন কেন, আরো অনেকগুলা কাজ করলেই পাকিস্তান ভাংতো না।বাঙ্গালিদের ন্যায্য অধিকার প্রদান, বৈষম্য দূরীকরণ, অর্থনৈতিক শোষণ না করা-বাঙ্গালিদের ক্ষমতার হিস্যা প্রদান- এই কাজগুলা করলে আমাদের ক্ষোভেরও কোন কারণ থাকতনা,আবার পাকিস্তানও টিকে থাকত।আর এরকম সমতাপূর্ণ দেশে পাকিস্তানিদের সাথে এক দেশে বসবাস করতেও মনে হয়না কেউ আপত্তি করত।
১৯৭০ এ শেখ সাহেবকে ক্ষমতা দিলে তৎক্ষণাতভাবে পাকিস্তান ভাংতোনা বলেই আমার ধারণা।তবে শেখ সাহেব ক্ষমতায় গিয়ে তাঁর নির্বাচনী অঙ্গীকার ৬ দফা দাবী বাস্তবায়ন করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতেন।সেইটা পাকিস্তানিরা জীবনেও হইতে দিতো না।ফলে ১৯৭১ এর বদলে হয়তো আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধটা ১৯৮১ সালে হইতো-কিন্তু পাকিস্তানিরা যেহেতু আমাদের ন্যায্য দাবী জীবনেও মানতোনা- বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় ছিলোনা।
আমার এক জিগরি দোস্ত "জিগর সে নিকাল গিয়া" কাছাকাছি একটা বক্তব্য দিয়া, মুসলমান ভাইদের ছেড়ে নাকি আমরা "মালাউন"-দের তোষামদি করি। (হিন্দু সম্প্রদায়ের নিকট ক্ষমা প্রার্থনাপূর্বক।) তাই দেশ স্বাধীন হয়ে কি লাভ হইছে? আমি কি বলছিলাম সেইটা পাবলিক ফোরামে আর নাই বা বলি।
১৯৭০ এর নির্বাচনে আমার দাদা ভোট দিছিল ছাতিতে, আমার বাপ তখন প্রো-আওয়ামী লীগ। দাদাকে নাকি কে যেন বোঝাইছিল, নৌকায় ভোট দিলে নাকি দেশ ভারতের কাছে বিক্রি করে দেয়া হবে। আমার অশিক্ষিত, গন্ডমূর্খ পিতামহ যে জিনিস বুঝছিলেন, সেইটা এখনো প্রচলিত আছে দেইখা একটু কিংকং হইয়া গেলাম। 🙂
তোমার তথ্যসূত্রটা জানতে পারি কি?
আমি কোনভাবেই শেখ মুজিবের ডিফেন্ডার না, কারণ উনার ডিফেন্ডার হওয়ার মতো কনভিন্সিং আমি ইতিহাস পড়ে আর মুরুব্বিদের কথা শুনে পাই নাই। আমি উনার ব্যাপারে একটু রক্ষণশীল থাকতে চাই আরো কিছুদিন পর্যন্ত।
তৌফিক ভাই, শেখ সাহেবের নিঃসন্দেহে অনেক সীমাবদ্ধতা ছিল-বিশেষ করে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে।কিন্তু বাঙ্গালির স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্বে তাঁর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলাটা মনে হয় নিতান্তই বাতুলতা।বুঝলা্ম তিনি পুরো একাত্তর কারাগারে অন্তরীন ছিলেন কিন্তু তাতেও তাঁর ভূমিকা একবিন্দু ম্লান হয়না।পাকবাহিনী হাজার চেষ্টা করেও কিন্তু তাঁর মুখ দিয়ে তাদের পছন্দমত একটা কথা বের করতে পারেনাই।আপনি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান-আপনার কাছে এইসব বলা মানে মায়ের কাছে মাসীর গল্প করার মতই-মাপ করে দিয়েন।কিন্তু দুঃখ পাই এইসব বস্তাপচা প্রোপাগান্ডা এখনো অনেকের কাছে(আপনেরে বলিনাই বস) পাত্তা পায় দেখে।বঙ্গবন্ধুর সমালোচনা করার মত অনেক বিষয়ই আছে-কিন্তু স্বাধীনতা সংগ্রামে উনার নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়া প্রশ্ন করাটা মনে হয় অন্য কিছু নির্দেশ করে যেইটা পাবলিক ফোরামে বলতে চাইতেছিনা-বুইঝা গেছেন নিশ্চয়ই।
আরে নাহ, হুদাই টেনশেন নিস না। আমি তাঁর বিচার করি সার্বিকভাবে, শুধু স্বাধীনতাযুদ্ধ দিয়া না। সেইকারণেই আমার রক্ষণশীলতা, জমিদারগোছের নেতা আমার পছন্দ হয় না। সেইটা যতো ভালো নেতাই হোক না কেন।
পাকি স্যাম্পল আমারো কম। দুইচাইরটা যা দেখছি, তাদের বাংলাদেশ সম্পর্কে জ্ঞান ভারত-পাকিস্থান ষড়যন্ত্রতত্ত্বের আলোকে। আর তারা আগে মুসলমান, তারপর পাকি। কিন্তু মুসলমান মানে হালাল-হারাম খাওয়া, নামাজ পড়া বা এইটারে ইস্যু করা আর কথায় কথায় ইনশাআল্লাহ, মাশাল্লাহ, আল্লাহ-কি-হিফাজত বলা। বাদবাকি অনৈসলামিক কাজের ব্যাপারে বেশ উদার। আমার আগের কলকাতার রুমমেট দুই পাকি সুন্দরীকে কেমেস্ট্রি প্রাইভেট পড়াতো, তারা পড়া শেষে টাকা মেরে দিসে। ফোন, ইমেইল কোনভাবেই আর তাদের রিচ করতে পারেনাই। ভারতীয় ছাত্রদেরও আমাদের সম্পর্কে ধারণা অস্পষ্ট, তবে তারা বেশ স্মার্ট ও ডিপলোম্যাটিক, তাই ব্যাপারটা বের হয়ে পড়ে না সহজে। আর ভারতীয় ছাত্ররা পাকি অরিজিনদের মতো ঘ্যানর ঘ্যানর কম করে এবং যে মাত্রায় খাতির সেই মাত্রায় মেশে, তবে পজিটিভ ব্যবহার। দুই গ্রুপই যথাক্রমে উর্দু এবং হিন্দিতে কথা বলতে চায়। আমি উত্তরে ইংরেজিতেই বলি। যদিও ভারতে যখন গেছি দুই-তিন দিনের মধ্যেই কাজ চালানোর হিন্দি অটোমেটিক বাইর হইছে। খোদ ভারতে ভাল-খারাপ দুই অভিজ্ঞতাই হইছে। আর বাঙ্গালি? সেইটা বুঝে নাও।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
রাব্বি ভাই, লেখা চাই 🙂
এখন পর্যন্ত দুই টাইপের পাকি দেখেছি খালি। এক গ্রুপ একটু পাত্তিওয়ালা এবং ইয়ো ক্যাটেগরির। তবে উইকএন্ডগুলোতে মদ খেয়ে টাল হয়ে থাকে দেখে এদের সাথে মেশা হয় না। আরেক গ্রুপ লেবার শ্রেনীর, এই লোকগুলা আবার তুলনামুলক ভালো। বিভিন্ন ব্যাপারে অনেক সময় আমাকে এরা বেশ আন্তরিকভাবেই সাহায্য করেছে, আমিও যতটা পেরেছি এদের কাজের জন্যে এদেরকে বখশিস দিয়ে খুশি করেছি।
ইন্ডিয়ান কলিগরা যারা আছে, এরা লোক হিসেবে মোটামুটি সবাই ভালো। তবে একবার একজন এক আড্ডার সময় আমাদের ফিলিপিনো নারী কলিগদের কাছে পার্ট নিতে বলে বসেছিলো, আরে, আমরাই তো বাংলাদেশের জন্যে স্বাধীনতা এনে দিসি, ওদের জন্যে যুদ্ধ করসি। মেজাজ খারাপ হয়ে গেলেও মোটামুটি শান্ত ভাবে বললাম, আরে তোমরা যুদ্ধ করছো ১৩ দিন আর আমরা করছি ৯ মাস। আর তোমরা আমাদের ল্যান্ডে এসে ইন্টারফেয়ার না করলে, হয়তো আমাদের আরেকটূ সময় লাগতো, কিন্তু সেই দীর্ঘ যুদ্ধ আমাদের জন্যে ভালো হতো।
ফখরুলের একটা লাইন দেখলাম মিডল ইস্টের ভাষার ব্যাপারে। দুবাইতে গিয়ে ব্যাপারটার সত্যতা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি। লিফটে লম্বা লাইনে দাড়ায়ে লোকজনের কথা বার্তা শুনে আন্দাজ করা যায় না এরা আরবের নাকি ইন্ডিয়ার। আরবী আর হিন্দির একটা খিচুড়ী দিয়ে এরা কথা বলে। ওইখানে বাঙ্গালীরাও দেখলাম হিন্দি ভালোই পারে। যে হোটেলে ছিলাম সেখানকার এক বাঙ্গালী ক্লীনারকে এই ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে সে মন্তব্য করলো আরবীতে কথা বলার চাইতে হিন্দিতে বলা তার জন্যে সহজ। তবে আমার মেজাজ খারাপ হয়েছিলো ইমিগ্রেশনের সময়। ওইখানকার অফিসার আমার আগের কানাডিয়ার ভদ্রলোকের সাথে সুন্দর ইংরেজীতে কথা বললেও, আমার বাংলাদেশী পাসপোর্ট দেখেই হিন্দিতে কথা বলা শুরু করলো। যেন বাই ডিফল্ট সব বাংলাদেশী হিন্দি জানে।
এইটাই মেজাজ খারাপ হয়
আজকে বাংলাদেশ হয়েছে বলে আমরা যার যার অবস্থানে থাকতে পারছি। যদি ১৯৪৭ কোন দেশ ভাগ না হতো তাহলে কোন দলিত মলিত অবস্থায় থাকতাম কে জানে আর ১৯৭১ ভাগ না হলে এখন হয়তো কোন দুঃস্বপ্নের নগরীতে ভংগুর জীবনযাপন হতো।
তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে নয় পর্যবেক্ষণ থেকে মনে হয় বাংলাদেশ পাকিস্থানের থেকে অনেক ভালো অবস্থায় আছে। এই এলাকায় মসজিদে গেলে ভূড়ি ভূড়ি পাকিস্থানী দেখা যায়। অথচ কর্মক্ষেত্রে, বাচ্চাদের স্কুলে বা আবাসিক এলাকাগুলোতে এদের তেমন দেখা পাওয়া যায় না। তবে যতোটুকু দেখেছি মনে হয়েছে এরা খুবই মাথা গরম জাতি, পেছনে বাংগালিদের নিয়ে উপহাস করে আর সামনা সামনি হলে ভাইভাই করে। তবে এদের কোন প্রভাব না থাকায় এদেরকে এখন কিছুটা ঢোড়া সাপের মতো মনে হয়।
ভারতীয়দের সংখ্যা, প্রভাব, আধিক্য এতো বেশি যে প্রায় প্রতিটা বাংগালির সাথেই এদের প্রতিটা জায়গাতেই সাক্ষাত হয়। এরা খুবই ডিপ্লোমেটিক। অনেক এতো ভালো যে মনে হয়েছে এদেরকে নিয়ে তেমন কোন সমস্যা নেই। কিন্তু এখন একটা নতুন দিক উন্মোচিত হচ্ছে। আমার ছেলে রাসীন বেশ কিছুদিন ধরেই বলছিলো ওদের ক্লাসের কিছু ছেলে এবং আর পাড়ার একজন ভারতীয় (২য় জেনেরেশনের) বন্ধু ওকে বলে যে বাংলাদেশ বলে আলাদা কোন দেশ নেই। এটা ভারতের অংশ। আজকে স্কুল থেকে বাসায় এসে বললো যে ওর এক বন্ধু উইলিয়াম (চায়নীজ অরিজিন) বলেছে যে, মোহিতের (ভারতীয়) কাছে সে শুনেছে যে বাংলাদেশিরা নাকি ভারত আর চীনে গিয়ে বোমা ফাটিয়ে আসে। আমি এখন পর্যন্ত বুঝতে পারছি না কী করবো। সবচেয়ে শিক্ষিত, আপাত ভদ্র ভারতীয় অধুয়সিত এলাকাতেই যদি এই অবস্থা হয় তাহলে সারা আমেরিকাতে কী অবস্থা তা সহজেই আন্দাজ করা যায়।
এর আগে কিছু আন্তর্জাতিক ফোরামে গিয়ে অভিজ্ঞতা হয়েছে যা খুব উচ্চপর্যায় ্থেকেই বাংলাদেশ পানিতে ডুবে যাবে, দেশটার কোন আশা নাই এই রকম প্রচার চালানো হয়। এতোদিনে ইন্টেল, মাইক্রোসফটের মতো কোম্পানি ঠিকই বাংলাদেশে ওদের অফিস খুলতো - শুধুমাত্র ভারতীয় প্রচারনা আর পলিটিকসের কারনে তা হতে পারেনি। আমি ব্যক্তিগতভাবে যাচাই বাছাই করে চলতে পারি - ভারতীয়দের ব্যাপারে আমার কোন সমস্যা নেই। কিন্তু দেশের প্রেক্ষিতে যথেস্ট সন্দেহ জাগে। মনে হয় অজগর। বাংলাদেশ যদি আরেকটা নেপাল হয়ে যায় যেখানে সবাই হিন্দিতে কথা বলবে, কোন প্রশ্ন ছাড়াই ভারতীয় প্রোডাক্ট কিনবে তাহলে তো ভারত সহজেই তার ভেতরে স্বাধীন হওয়া দেশগুলোকে বলতে পারবে - স্বাধীন হয়ে কী হবে আরেকটা তো বাংলাদেশ হবে? ঠিক এই একই কারনে পাকিস্থানও আমাদের উন্নতি চায় না। অথচ প্রায় এক ভাষাভাষীর এই দেশের কিন্তু সম্ভাবনা খুব উজ্জ্বল। অন্য দু দেশের তুলনায় আমাদের জাতিগত দ্বন্ধ তেমন প্রকট নয়।
মুক্তিযুদ্ধে আমার আত্মীয়দের মধ্যে শহিদ আছে, সংগঠক আছে, ১৪ই ডিসেম্বর রাতে ধরে নিতে এসেছিলো এমন বুদ্ধিজীবিও ছিলো। বাংগালি হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ আমার কাছে গর্বের। কিন্তু কস্ট লাগে যখন দেখি দেশের মানুষের কপালে যুদ্ধের সুফলটা জোটে না।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
পাকিস্থানিদের চেয়ে আমরা অবশ্যই ভালো আছি। ওদের দেশের অবস্থা দেখেন আর আমাদের দেশের অবস্থা দেখেন, আল্লার কাছে শোকরান এদের সাথে আমরা নাই এখন আর।
ভারতীয়দের ব্যাপারে যা বললেন আপা, ওইটা নিয়া একটা বিস্তারিত পোস্ট দাবী করলাম।
আমরা যে একসাথে নাই তার জন্য বাংলাদেশের মানুষের কোন রিগ্রেট নাই। 😀
খুব ভালো উত্তর
আমার কি সমস্ত কিছুই হলো ভুল
ভুল কথা, ভুল সম্মোধন
ভুল পথ, ভুল বাড়ি, ভুল ঘোরাফেরা
সারাটা জীবন ভুল চিঠি লেখা হলো শুধু,
ভুল দরজায় হলো ব্যর্থ করাঘাত
আমার কেবল হলো সমস্ত জীবন শুধু ভুল বই পড়া ।
অনেক ধন্যবাদ রুম্মান ভাই, ফর দ্য ভোট অব কনফিডেন্স।
আমি প্রবাসে থাকার কল্যানে অনেক পাকিস্তানি এবং ইন্ডিয়ান দের সাথে মেশার সুযোগ হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় আমি বাংলাদেশিদের বেশ কনফিউজড অবস্থা পেয়েছি। একটা উদাহরন দেই... একটা অনুষ্ঠানে যার যার দেশের জাতিয় ড্রেস পরে আসতে বলা হল... পাকিস্তানি, ইন্ডিয়ান, এরাবিয়ান এবং অন্যান্যরা তাদের দেশের জাতিয় ড্রেস পরে আসল, কিন্ত বাংলাদেশিরা কনফিউজড, তাদের জাতিয় ড্রেস কি? কেউ বলে পায়জামা পাঞ্জাবি; কেউ বলে লুংগি পাঞ্জাবি ... একজন বলল লুংগি আর গেঞ্জি... আমার মনে হতে লাগল, আমরা তো আমাদের ব্যাপারেই আমরা ভাল মত জানি না, এখন পাকিস্তানিদের দোষ দিয়ে কি লাভ যে তারা বাংলাদেশের আসল ইতিহাস জানে না। আমি বিদেশে খুব কম বাংলাদেশিদের দেখেছি যারা তৌফিক এর মত জোড় গলায় বলে "আমরা যে একসাথে নাই তার জন্য বাংলাদেশের মানুষের কোন রিগ্রেট নাই।" আসলে দেশপ্রেমের দিক দিয়ে বিচার করা হলে, বিদেশে বাংলাদেশিদের ওভারঅল আচরন দেখে মনে হয়েছে, বাংলাদেশিরা ইন্ডিয়া, পাকিস্তানিদের থেকে অনেক পিছিয়ে। আমাদের নিজেদের আগে ঠিক হতে হবে, তা না হলে ওরা আঙ্গুল তুলে এমন কিছু উদাহরন দেখিয়ে দেয়, যে লজ্জায় মাথা হেট হয়ে যায়।
আমি স্টিরিওটাইপিং করতে চাই না, তবে পরিচয়সংকটটা আমি যেন ইংলিশ মিডিয়ামের ছেলেপেলের মধ্যেই বেশি দেখছি।
😀 সেইসাথে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের(নসু) পোলাপাইনের কথাও ভুলে যাইয়েন না।
আমি উপরের কাহিনিটায় সাধারন এক টিপিক্যাল বাংগালির কথা বলছি। অবাক লাগে, অনেক টিপিক্যাল বাংগালিদের দেখেছি যারা পাকিস্তানিদের পক্ষে কথা বলে, অনেকে ইন্ডিয়ানদের পক্ষে। কিন্ত কোন ইন্ডিয়ান বা পাকিস্তানিদের খুব কমই দেখেছি বাংগালিদের পক্ষে কথা বলতে। আমার অবজার্ভেশনে বাংগালিদের দেশপ্রেম ছন্নছাড়া কিছু মানুষের মধ্যে সিমাবদ্ধ, বেশিরভাগ মানুষের "যেখানে যেমন সেখানে তেমন" টাইপের আচরন লক্ষ্য করা যায়। খারাপ লাগে, এত উদাসিন কেন আমরা। অন্যদিকে ইন্ডিয়ান বা পাকিস্তানিদের প্রত্যেকের রগে রগে যেন দেশপ্রেম ঢুকে আছে।
পাকিস্তানী কারো সাথে কখনো নিজ থেকে কথা বলার ইচ্ছে হয়নি। প্রায় সবাই এসেই উর্দুতে কথা বলা শুরু করে আর একই কথা আমরা একই দেশ ছিলাম। ওদের মত পশুদের সাথে ছিলাম এটা আমি ভুলে যেতে চাই মনে হয় কারণ সেটা শুনলেই গা জ্বলে উঠে। শেষ পর্যন্ত একজন পাকিস্তানির সাথে পরিচয় হল সে আসলেই মানুষ হিসেবে ভাল । নিয়মিত আমাকে কেমন আছেন (বাংলাতেই) জিজ্ঞেস করে। ছেলে হিসেবেও খুবই ভাল ছেলেটা।
ইন্ডিয়ানদের কেন যেন দেখলেই কি একটা মনে হয় ভাল লাগে না। মনে হয় ঈর্ষা আছে কোন কারণে। ওরা উঠে যাচ্ছে , আমরা নিজেদেরকে ওদের থেকে ছোট বলে কখনো ভাবতে পারি নাই। হিন্দি উর্দু কোনটাতেই কথা বলতে ইচ্ছা করে না তবে অন্য কোন জায়গায় যদি আমার সাথে কোন জাপানীর দেখা হয় তাহলে আমি জাপানিতে কথা বলতেই কমফোর্ট ফিল করব । এই ব্যাপারটা কিভাবে দেখব ঠিক বুঝিনা।
আমিও বুঝি না, শেষমেষ তালগাছ আমার থিওরেমে গেছি। 😀
একবার আমাদের হলে ভারত থেকে তাবলীগের কয়েকজন এসেছিল। বিকেল বেলা আমাকে দাওয়াত দেয়ার উদ্দেশ্যে এসে হিন্দীতে বয়ান দেয়া শুরু করল। হিন্দী মুভি দেখার বদৌলতে কিছুটা হিন্দী বুঝলেও বাংলা নিয়ে আত্মগরিমা থাকায় সেদিন বলেছিলাম,"Sorry, I don't understand Hindi."
এই কথাটা বলার সময় প্রত্যেকবারই একটা আত্নতৃপ্তি লাগে। কোন যুক্তি নাই, হয়তো স্বাস্থ্যকরও না ব্যাপারটা, তবুও লাগে। 🙂
আমরা তখন নবযাত্রার কাজে মোহামম্মদপুরে,২০০৮ এর সেপ্টেম্বর এর দিকে। তকন বিহারীরাও এসেছে জাতীয় পরিচয়পত্র বানানোর জন্য। ব্যাটারা এমন বজ্জাত, বাংলা জানে তারপরও স্বাক্ষর করবে উর্দুতে।আমরা বাধা দিতে গেলে কোন কথাই শুনলো না, উল্টা ঘুরে চলে গেলো।
রঞ্জনা আমি আর আসবো না...
ওরা উর্দুতে স্বাক্ষর করবে ভালো কথা, করতে দিতা। আমরা তো আর ওদের মতো না।
কিংবদন্তী অনুযায়ী, চট্টগ্রামে ফরেস্ট হিলের কাছে একটা ইউরোপীয়ান ক্লাবে ইংরেজরা লিখেছিলঃ কুকুর ও ভারতীয়দের প্রবেশ নিষেধ।এর উত্তরে এক বাঙ্গালী বিপ্লবী আরেকটা ক্লাব তৈরি করে বলেন-"আমাদের ক্লাবে ইউরোপীয়রাও আসতে পারবে"।
অনেকটা "তুমি-অধম-তা-বলিয়া-আমি-উত্তম-হইবোনা-কেন" এর মত।তৌফিক ভাই,আপনের কমেন্ট পইড়া হঠাৎ এই কাহিনী মনে পইড়া গেল 😀
এক্ষেত্রে আমার আরেকটি কাহিনি মনে পড়ল, আমার ইউনিভার্সিটির এক বাংগালি টিচার এক কনফারেন্সে গিয়েছিলেন। তো ওখানে এক ব্রিটিশ এক বাংগালির কোন এক আচরন দেখে মন্তব্য করেছিল These colored people should still to be ruled. মন্তব্য শুনে আমাদের দেশের সোনার ছেলেরা চুপচাপ চলে এসছিল।
আমার এক সিনিওর সার একটা জটিল কথা বলসে সেদিন...।পাকিস্তানিরা যখন ৪ জনে কথা বলে তখন কেউ কেউরে বিলিভ করে না...।৪ টায় এ ৪ টারে চিটিং করে :grr: :grr:
ফেলুদাও কিন্তু বলত আমার হিন্দী আসে না।
😉 😉 😉 মজার ঘটনা হইলো,দেশের বাইরে আবস্থানরত বাঙ্গালী মাইয়ারা...পাকিস্তানী বয়ফ্রেন্ড বানাইতে বেশি লাইক করে...পরিচিত এক ছোট্ট বন্ধুর ভাষায় - "ওরা দেখতে একটু সাদা তো,তাই এখন বয়ফ্রেন্ড নিয়া এনজয় করি,দেশে গিয়ে বাঙ্গালী ছেলে বিয়া করবোনে"...আমি বললাম " হুম...কোবাও কোবাও"... :duel: কিছুই বলার নাই...আশেপাশের সিসিবি ছোট্ট বন্ধু/ভাবীরা / আপিরা মাইন্ড খাইয়েন না আবার,আমি যা বললাম এরকম কয়েকটা রিয়েল ঘটনা রয়েছে।এমন কি বাঙ্গালী বয়ফ্রেন্ড ছেড়ে পাক বয়ফ্রেন্ড তালিকায় যোগ করার ঘটনাও আছে,চোক্ষের সামনে ঘটে যাওয়া লাস্ট জানুয়ারী তে :gulli2:
বাহ বাহ বেশ উন্নতি হচ্ছে আমাদের দেশী মেয়েদের তাহলে...আগে তো জানতাম আমার স্বজাতি পুরুষগোত্রীয়দের কিছু কিছু "জিনিসের" ভেতরেই এই "গুণ" সীমাবদ্ধ...
ব্যক্তিগত চয়েজ, সমালোচনা না করলেও চলে। 🙂
"ব্যক্তিগত চয়েজ, সমালোচনা না করলেও চলে'
-সহমত। :thumbup: (সম্পাদিত) (সম্পাদিত)
এই চয়েজ নিয়ে যদি সমালোচনা নাই করলাম, তাহলে তো আমরা যা নিয়ে গর্ব করি তা আস্তে আস্তে বিলিন হয়ে যাবে। অবস্যই সকল কুরুচিপূর্ণ চয়েজ অলয়েজ কুরুচিপূর্ণ। সেটা ব্যাক্তিগত হোক আর সমষ্টিগত।
লেখার অকপট ভঙ্গিমাটা ভালো লাগলো.......
সবার কাছে এই সুযোগে একটা প্রশ্ন আছে, কোন নির্ভরযোগ্য সূত্র কি আছে যেখানে মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার সঠিক উপাত্ত পাওয়া যাবে? নিচের লিংটাট একটু ঢুঁ মএরে দেখতে পারো
http://www.somewhereinblog.net/blog/Lighthousebdblog/28751887
শান্তা আপা: মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার সামর্থ থাকলেই যে সবাই যুদ্ধে গিয়েছিলো তা কিন্তু নয়।ওভাবে দেখতে গেলে বেশিরভাগ লোক দেশপ্রেমিকের আওতার বাইরে পড়বে।যে যার নিজের যায়গা থেকে সঠিক কাজটা করতে পারলেই হয়।সবাই যোদ্ধা না, কেউ কেউ বুদ্ধিজীবি।
১৯৪৮ সালের শুরুতে পূর্ববাংলার দাবী ছিল খুব সামান্য। কাজের ভাষা হিসেবে বাংলা ব্যবহারের প্রস্তাব দেন ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত।কিন্তু জিন্নাহ তো বটেই, লিয়াকত খান ও সেটার বিরোধিতা করেন। পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীন ছাত্রদের সাথে একটা সমঝোতায় পৌছান । পূর্ব বাংলায় সরকারী কাজে বাংলা ব্যবহার করা হবে, শিক্ষার মাধ্যম ও হবে বাংলা। পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা কি হবে সে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে গনপরিষদে এবং সেখানে তিনি বাংলার দাবি তুলে ধরবেন। কিন্তু উর্দুভাষী নবাব পরিবারের সন্তান হিসেবে বাংলার প্রতি তার ভালোবাসা ছিল সামান্যই। তাই কাজের কাজ তিনি কিছুই করতে পারলেন না, উল্টো ১৯৫২ সালের জানুয়ারি মাসে ঢাকার এক জনসভায় নিজেই বল্লেন, দেশের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু।
এর জের ধরেই আসে মহান একুশে ফেব্রুয়ারি। এবং সেই সাথে রচিত হয়ে যায় পাকিস্তানের পতনের ভিত্তিও। ভাষা যে কতবড় শক্তি হতে পারে, বাংলাদেশের ইতিহাস তার বড় প্রমান। এ কারনেই যখন কোন বাংলাদেশীকে দেখি বাংলা ভাষাকে অবমাননা করতে তখন খুব ই খারাপ লাগে।
ভাই ভালো লাগলো ।আমার এখানেও কিছু পাকি ও ইন্ডিয়ান বন্ধু আছে ।আমার বাঙালি ফ্রেন্ড গুলা অতি মাত্রায় হিন্দী ছবি দেখার কারণে তাগো লগে হিন্দিতে কথা কয়, তখন সত্যি বলতে আমার মেজাজ অনেক খারাপ হইয়া যায় ।এক দিন এক ইন্ডিয়ান ক্লোস ফ্রেন্ড জিগায় সবাই হিন্দী পারে তুমি পার না ? আমি কইলাম পারি, কিন্তু কইতে ইচ্ছা করে না ।আমার কথা হইলো আমি কেন হিন্দী বলবো, পারলে ও বাংলা বলবে । নইলে উনিভের্সল ইংলিশ 😛
মজার কথা হইলো অরে বেশ কিছু বাংলা শিখাইছি । 😀 (সম্পাদিত)