হৃদয়ক্ষরিত রক্তাশ্রু যাঁদের জন্য

ক্যাপ্টেন মাজহারুল হায়দারঃ কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজ

২,৩৬২ বার দেখা হয়েছে

৩৩ টি মন্তব্য : “হৃদয়ক্ষরিত রক্তাশ্রু যাঁদের জন্য”

  1. তৌফিক

    যুবরাজ বলেছেনঃ
    ফেব্রুয়ারী ২৬, ২০০৯ @ ৮:৪২ অপরাহ্ন

    পিতার কাঁধে সন্তানের লাশ যেমন ভারি, আমার কাছে আমার কোর্সমেট, আমার সিনিয়ারের লাশ সমান ভারি।আর্মি আমাকে আর কিছু শিখাক বা না শিখাক, সিনিয়রকে প্রানের চেয়ে বেশি শ্রদ্ধা করতে আমি শিখেছি। সহযোদ্ধাকে নিজের ভাইয়ের চেয়ে বেশি ভালবাসতে শিখেছি। আজ আমার সব চেয়ে বড় কষ্টের দিন। আজ আর কিছু লিখতে পারছি না, আমার আবেগ কষ্ট সব ভেঙ্গে চূরে আসছে। এত দূর থেকে অসহায় এর মত শিউরানো, হৃদয় বিদারক, মর্মান্তিক যে খবর গুলা পাচ্ছি, মনে হছে কেন নিজে মরে গেলাম না তার আগে? এসব কেন শুনতে হচ্ছে আমাকে? ক্যাপ্টেন মাজহার - এডিসি টু ডিজ়ি বিডিআর, কুমিল্রা ক্যাডেট কলেজের এক্স-ক্যাডেট।
    মিলিটারী একাডেমীতে কত কত স্মৃতি। আমাকে পানিশমেণ্ট দেওয়ার নাম করে গান শুনতেন। কত দিন স্যার এর রুমের সামনে দাঁড়িয়ে রবীন্দ্র সঙ্গীত শুনিয়েছি। মাত্র ডিসেম্বরে হল স্যার বিয়ে করেছেন, তার বয়স মাত্র ২৮/২৯। টগবগে, প্রানবন্ত তরুন অফিসার। এই গরিব দেশের কত কষ্টের টাকায় আমরা ট্রেনিং নেই, অফিসার হই, দেশের জন্য প্রাণ দেব বলে হাসি মুখে রাস্ট্রপতির কাছে শপথ নেই, মরে যাব কিন্তু দেশের স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্ব রক্ষা করব। আর আজ লাশ হয়ে বের হয়ে এল এই তাজা প্রাণ সুয়ারেজের লাইন দিয়ে। এই দুঃখ, এই কষ্ট আমি কোথায় রাখি? তাঁর পরিবার, ভাবিকে শান্তনা দেওয়ার ভাষা আমার নেই, আমার নেই, কারোরই নেই। ঢাকা সিএমএইচ এ আজ লাশের পর লাশ আসছে। শুধু অফিসার কেন, আমার এক সৈনিকের ভাইকে নাকি মেরে ফেলেছে জোয়ানরা তাদের সাথে যোগ না দেওয়ায়। অফিসার, সৈনিক, জোয়ান সবাই এই দেশের সন্তান। কেন এই নিশংসতা? এই প্রশ্নের জবাব আজ কারো কাছে নেই।
    স্রষ্টা আমাদের সবাইকে, আমাদের দেশকে এই মহা বিপদ থেকে উদ্ধার করুন। গরিব দেশটার জন্য বড় মায়া লাগে, বার বার উঠে দাঁড়াতে গিয়ে কে যেন ভেঙ্গে ফেলে কোমড়টা। হোঁচট খেতে খেতে আমরা কি আর দাঁড়াতে পারবনা কখনো?

    জবাব দিন
  2. কামরুলতপু (৯৬-০২)

    প্রায় ১০-১২ বার আসলাম এখানে কিছু লেখার জন্য। কিন্তু আমি আসলে কিছুই খুঁজে পাচ্ছিনা। সারাদিন অফিসে বসে খালি মোবাইলের দিকে তাকিয়ে ছিলাম মাজহার ভাই আর সামিয়ার আব্বুর একটা ভাল খবর পাব এই জন্য। অনেক পরে সাকেব ভাইর থেকে মাজহার ভাইর খবরটা পেয়ে কেমন লেগেছে বলে বুঝাতে পারছিনা। আল্লাহ ওনাকে শান্তিতে রাখুন।

    জবাব দিন
  3. শার্লী (১৯৯৯-২০০৫)

    সারাদিন অতিথি হিসেবে থেকেছি সিসিবির সাথে। স্যামের বাবার কথা মনে করে সারাদিন উৎকন্ঠার মধ্যে ছিলাম, এমন সময় মাজহার ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ। বড় বড় দীর্ঘশ্বাস আর মুষ্ঠিবদ্ধ হাতই আমার সঙ্গী।

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।