গরম মশল্লা ( গুড়া)

ছোট ক্লাসে পড়া রসগোল্লা গল্পটির কথা হয়ত আমাদের অনেকেরই মনে আছে, মুজতবা আলীর এ গল্পটি আক্ষরিক অর্থেই একটি রসগল্প।
ইতালির এক কাস্টমস অফিসার বাঙালি ব্রাহ্মণ সন্তান ঝাণ্ডুদার মিষ্টান্নের প্যাকেট খুলতে বলায় এবং ঝাণ্ডুদা তার বন্ধুর মেয়ের জন্য তা লন্ডনে নিয়ে যাচ্ছে বলে খুলতে রাজি না হওয়ায় চুঙ্গিওয়ালা কোনো যুক্তি না মেনে তা খোলাতে বাধ্য করল। ঝাণ্ডুদা তাতে ক্ষেপে গিয়ে একটি রসগোল্লা চুঙ্গিওয়ালার নাকে-মুখে প্রবিষ্ট করিয়ে দিয়েছিল। ফরাসি উকিলের বড় কর্তা ভারতীয় রসগোল্লা খেয়ে তো আড়াই মিনিট চোখ বন্ধ করে রাখলেন সুস্বাদের বিহ্বলতায়। সে অফিসার চোখ বন্ধ অবস্থাতেই আরও রসগোল্লা চাচ্ছিল। কিন্তু রসগোল্লা এরই মধ্যে শেষ হয়ে গেছে। এ প্রসঙ্গে রসিকতা করে ইতালি কবি ফিলিকাজার একটি কবিতা পঙিক্তর প্যারোডির মাধ্যমে মুজতবা লিখেছেন—
‘রসের গোলক এত রস তুমি কেন ধরেছিলে হায়!
ইতালির দেশ ধর্ম ভুলিয়া লুটাইল তব পায়।

গল্পটি সেদিন আবার পরলাম, হুট করে মনে হল, ঝান্ডুদা খাইয়েছিলেন রসগোল্লা আর জামাত আমাদের খাইয়ে দিয়েছে ধর্মবড়ি। জামাত মুসলমানের দল, আল্লাহ তালার দল এই বিশ্বাস শিক্ষিত, অশিক্ষিত, কুশিক্ষিত, অতিশিক্ষিত সবার মধ্যেই কিছু নয়তো কিছু বিদ্যমান। একজন বন্ধু সেদিন বলেই বসলেন- রাজাকারের বিচার আমিও চাই, আসলে সেই সাথে বিচার চাইছি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া আলেম মানুষগুলোর, আল্লাহ তালাই জানেন এর পরিনাম কি হবে!!
হতভম্ব আমি তখন মনে মনে আউড়ে গেলাম-

জামাতে ইসলামী তুমি মিথ্যার বেশে এত ধর্ম কেন ধরেছিলে হায়!
ধর্মবড়ি সেবন করিয়া উহাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বেমালুল লোপ পায়।

সেবার হুট করে মিটিং, কল পেলাম- ঘটনা আর্জেন্ট। বিকালেই বসতে হবে এবং সমাধান করতে হবে। প্রবাসে বড়দের মধ্যে অনেক গ্রুপিং থাকে, গ্রুপে গ্রুপে ঝগড়া হয়, গালাগালি হয়, সামান্য কিলাকিলিও হয়। কয়েকজন বড় ভাই আরেক ভাইয়ের উপর চরম খেপেছেন।
সন্ধ্যা বেলা মিটিং এ পৌঁছে দেখলাম আমিই সময়মত উপস্থিত হয়েছি, বাকিদের কোন খবর নেই। ঘন্টা দুয়েক পর সবাই এসে পৌঁছুলেন এরপর। পরিবেশ খুবই উতপ্ত কেউ বলছেন ” ও একটা বেয়াদপ” কেউ বলছেন ” নীচু ফ্যামিলির ছেলে”
কেউ বললেন ” ডেকে এনে একটা চড় দেওয়া হউক” কেউ বললেন ” দল বেঁধে গিয়ে মার দিয়ে আসা উচিত”

এক বড় ভাই অনেকখন চুপ করে ছিলেন, হুট করে তিনি খেপে গেলেন। বললেন- শালাকে নিয়ে এত কথা বলার কি আছে? আমি দেখতেছি ব্যপারটা, ওর হোগা মেরে ভোতায়ে দিবো, খালি মেয়ে মানুষের মারি মনে করেছেন? ব্যাডাগো হোগাও বহুত মারছি, আমি চিটাগাইঙ্গা পুয়া।

পিন পতন নীরবতা নেমে এল, সবাই সবার দিকে মুখ চাওয়া চাওয়ি করছে। আমি খুক করে কাশি দিয়ে বললাম ভাই জুসের বোতলটা একটু এইদিনে দিবেন প্লিজ?

যাই হোক বেলাইনে চলে যাচ্ছি, ইহা রাজনৈতিক পোস্ট, লাইনে ফিরি। কাদের মোল্লার ফাঁসির পর রনি এমপির লেজ ধরে সবাই বলাবলি শুরু করল এই কাদের মোল্লা তো সেই কাদের মোল্লা নয়, এই কাদের মোল্লা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, রবীন্দ্রসঙ্গীত পছন্দ করেন এবং ম্যা ম্যা ম্যা
কেক তখন সুশীলদের প্লেটে, বড় বড় মানবতাবাদী পোস্ট চলছে, এর মধ্যেই পাকিস্তানের পার্লামেন্টে গৃহীত হল নিন্দা প্রস্তাব, পাকিস্তান জামায়াতে ইসলাম কাদের মোল্লা নিস্পাপ বলে বড় মিছিল বের করল।
যাহ ব্যটারা দিলো সব কেচে, এই কাদের সেই কাদের না হইলে পাকিস্তানের এত লাগে কেন? ফুটুস করে সত্যি বের হয়ে গেল, সুশীলদের প্লেটের কেকের পুটু পাকিস্তানই মেরে দিল।

ককেশাস অঞ্চলে তখন ঘুরছি, উঠেছি এক ইউনিভার্সিটির হোস্টেলে, পকেটে টাকা নেই, হোটেলে থাকার প্রশ্নই ওঠে না, সারারাত টো টো করে ঘুরি, ভোর রাতে পাইপ বেয়ে জানালা দিয়ে হোস্টেলে ঢুকি আর সারাদিন এক চেচনিয়ান বন্ধুর রুমে ঘুমাই। সেখানে এক বড় ভাই ছিলেন, চরম সুদর্শন, যেমন ফিগার তেমন ড্রেস আপ, ভাই বান্ধবী নিয়ে একরুমে থাকেন, বান্ধবী রাশিয়ান। ভাইয়ের রুমে নক করা নিষেধ সন্ধ্যা আটটার পর, একদিন ভাই ফোন দিলেন বললেন- চলে আসো। আমি গিয়ে দেখি রুম এলোমেলো, জানতে পারলাম ভাইয়ের সকালে ব্রেকাপ হয়ে গেছে, রাশিয়ান বান্ধবী সুটকেস গুছিয়ে চলে গেছে। সুখের সংসারে কালো কালো কাল সাপ, এইরকম কালো কালো কাল সাপ দেখেছিলাম কুয়াকাটায়। আমি খুব মন খারাপ করলাম, দুঃখ প্রকাশ করলাম অনেক। আর অইদিকে ভাই একের পর এক নানান শব্দে বায়ু নির্গমন করে চলছে, কখনও হিস হিস, কখনও ফুট ফুট, কখনও ভুম। আমি নাক কুঁচকে বললাম- আচ্ছা ভাই আমি তাহলে আসি, পরে আসবো। ভাই বললেন- আরে মিয়া জানালা খুলে দেই বসো, এতদিন বান্ধবী ছিল রুমে, শান্তিমতো পাদও দিতে পারি নাই, এখন একটু শান্তি মতো পাদ দিতেছি আর কি, নো মাইন্ড ওকে? যত জোরে দিতে পারবা পেটের গ্যাস তত ক্লিয়ার হবে, শরীরটা হালকা বোধ হবে।

আবারও বেলাইনে চলে গেছি, রাজনৈতিক পোস্ট গন্ধ বানিয়ে ফেলেছি। অবশ্য আমারও বা কি দোষ? কাদের মোল্লার যেই রাতে ফাঁসি হল সেই রাতে ইন্দুরের গর্ত থেকে সুশীলেরা বেরিয়ে এসে লেখা শুরু করলেন- মানুষ বলেই হয়ত ফাঁসিতে খুশি হতে পারছি না, কেউ লিখলেন- একজন মানুষের ফাঁসিতে উল্লাসই বুঝিয়ে দেয় আমরা কততা বর্বর হয়ে গেছি, কেউ কেউ বললেন- দেশের সকল আইন আদালত অমান্য করে ফাঁসির আদেশই বুঝিয়ে দেয় নতুন এক বাকশাল যুগের সম্মুখীন আমি, নরম মনের মেয়েরা লিখলো- আল্লাহ তালাই সর্বত্তোম বিচারক, অথচ আমরা তার জন্য অপেক্ষা করলাম না।
ফাঁসি হবার আগ পর্যন্ত সব ঠিক ঠাকই ছিল, পোস্ট আসতো পরাটা মাংশের, বাইকের, লাইক পরত সানি লিওনিতে, যেই না ফাঁসি হইল কার্যকর, সাথে সাথে শুরু হইল ম্যা ম্যা ভ্যা ভ্যা ফুট ফাট হিস হিস ভুম

আরেকবার বেলারুশের দিকে গিয়েছি ঘুরতে, এক বড় ভাইয়ের আছে ছোট মাইক্রো, পিকনিকের সকল জিনিসপত্র নিয়ে মাইক্রোতে উঠে গ্রামের দিকে রওনা দিয়েছি- দুই একজন মুখ কালো করে বলল- কতদিন নিজে জবাই করে কিছু খাই না, ভালো লাগে না এইরকম কেনা মাংশ খেতে। অনেকেরই পুরুষত্ব চেগিয়ে উঠলো, মাইক্রো থামিয়ে রাস্তার পাশের ক্ষেত থেকে কাঁধে করে এক খাসি তুলে আনলেন একজন, এমন ল্যাত্রা মার্কা বিদেশী খাসি যে কোন শব্দও করল না। দেশী হইলে ম্যা ম্যা করে এলাকা মাথায় তুলে ফেলত। অতপর খাসি কেটে দিনভর পিকনিক, সন্ধ্যা পরে গেল, ঢেকুর দিচ্ছি আর খাসি উঠছে পেটের ভেতর থেকে, অইদিকে গ্রামের লোকেরা পথ আটকে দাঁড়িয়ে আছে, মাইক্রোবাস থামিয়ে তারা জিজ্ঞাসা করল খাসি কে নিয়েছে? দুই-তিন জন ফিস্ফিস করে বলল একটা দাম ধরে দিয়ে দেয়া হোক, তাইলে কোন ঝামেলা করবে না। বিধি বাম একজন বড় ভাই নেমে খুব চোস্ত রাশিয়ানে গম্ভীর গলায় বলল- আমরা সার্ভে টিম, সার্ভে করতে এসেছি, আপনারা আমাদের পথ আটকেছেন, কাজে বাঁধা দিচ্ছেন, আমি এখন পুলিশে ফোন করব, আর আপনাদের ছবি মোবাইলে তুলে রাখবো, ছবি দেখে দেখে এক একজনকে শিকের পেছনে পোরা হবে, ফেডারেল আইনে মামলা হবে, রেডি থাকেন।
এইরকম আক্রমণের জন্য গ্রামবাসী প্রস্তুত ছিল না, তারা মিন মিন করতে করতে পথ ছেড়ে দিল।
আমি মনে মনে ভাবলাম বাহ, যাদের খাসি কেটে খেলাম তাদেরই ঝাড়ি দিয়ে দিলাম, বাংলাদেশী বলে কথা।

রাজনৈতিক পোস্ট বার বার বেদিক হয়ে যাচ্ছে, হ্যাঁ যা বলছিলাম- নকল ও মেয়াদ উত্তীর্ন ওষুধ বাজেয়াপ্ত করল আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, আর ফার্মেসি মালিক সমিতি দিল দেশ জুড়ে সকল ফার্মেসি বন্ধ করে, দাবী- মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি করতে দিতে হবে, রোগী মারা যাবে? যাক। কিছুই আসে যায় না, ওষুধ বিক্রি করতে পারাই শেষ কথা।
ভেজাল ওষুধ বিক্রি করার বৈধতা চাই, বৈধতা দিতে হবে, নাহলে সব রোগী মেরে সাফ করে ফেলবো।

একটি ইংলিশ জোকের কথা মনে পরে যাচ্ছে, এক ভদ্রলোক বারে এসেছেন মদ খেতে, মদ খেতে খেতে বিভিন্ন ভদ্রমহিলার সাথে পরিচয় হবার চেষ্টা করে যাচ্ছেন, অইদিকে তার মনে পরল বাড়িতে তার স্ত্রী তার জন্য অপেক্ষা করে বসে আছে, তখন তিনি মুঠোফোনে স্ত্রীকে মেসেজ লিখলেন-

প্রিয়তমা
আমি বন্ধুদের সাথে এক গ্লাস বিয়ার খাবার জন্য বারে এসেছি, ঘন্টা দুয়েক পরে ফিরে আসবো বাসায়।
আর যদি না ফিরি, তাহলে এই মেসেজটি বের করে আরেকবার পড়ে নিও।
জন

অনালাইনে একটি নিরপেক্ষ তথা সুশীল প্রজন্মের সৃষ্টি হয়েছে, এর মধ্যে আছে কিছু বামপন্থী। এদের কাজ হল সব কিছুর বিরোধিতা করা, একখানা লিস্টি এদের তৈরি করাই থাকে, দেশে উন্নতি যাই হোক, সেই লিস্টি থেকে একটা বিষয় তুলে দেবে। মানে দুই ঘন্টা পর বাসায় না আসলে আবার মেসেজ পড়।

লিস্টির নমুনা
১- বিশ্বজিত খুন
২- সাগর- রুনী খুন
৩- রামপাল চুক্তি
৪- টিকফা চুক্তি
৫- বিডিআর হত্যাকান্ড
৬- ডেস্টিনির পয়সা লুট

এরমধ্যে বিশ্বজিত খুনের বিচার হয়েছে, বিডিআর খুনের বিচার হয়েছে, কিন্তু কোন লাভ নেই, এই বিশাল লিস্টি থেকে একের পর এক ইস্যু নামতে থাকবে, দারিদ্যের দুষ্টুচক্র এর মতো। কোন শেষ নেই, এক প্রজাতির কালো মহিলা মাকড়শার মতো, মিলনের পর যারা পুরুষ সঙ্গীকে মাথা কামড়ে মেরে ফেলে।

এক গ্রামের মধু আহরণকারী মধু আহরণ করার সময়ে বাঘের দেখা পেলেন সুন্দরবনে। বিশাল এক বাঘ, রয়েল বেঙ্গল টাইগার, এরপর বাঘের বর্ননা শুনতে সবাই শুরু তার বাড়ি ভিড় জমায়, তিনিও মজা করে বাঘের বর্ননা দেন, শুরু করেন এইভাবে – গাছে আমি যেই উঠলাম, নীচে দেখি ইয়া বড় এক বাঘ, বাঘ তো বাঘ তার লেজ ৩২ হাত, এমন বর্ননা শুনে ঘরের ভিতর থেকে স্ত্রী জোরে জোরে কাশি দেন, তখন তিনি ঠিক করে বলেন- ইয়া বড় বাঘ, লেজ কমসে কম ২৫ হাত, আবার স্ত্রী সজোরে কাশি দেন, তিনি আবার ঠিক করে বলেন ইয়া বড় এক বাঘ লেজ তার কমসে কম ২০ হাত, স্ত্রী আবার কাশেন, বাঘ দর্শনকারী এবার বিরক্ত হয়ে বলেন- তুমি যতই কাশো, আমি ২০ হাতের নীচে নামছি না।

কোরি এন্ডারসন ক্রিকেটের মহাপুরুষ আফ্রিদির ৩৬ বলে সেঞ্চুরির রেকর্ড যেই না ভেঙ্গে ফেলল অমনি হাক ডাক পরে গেল প্রথম আলোর খেলার পাতায়, প্রথমে তারা নিউজ করল- আফ্রিদির রেকর্ড হাতছাড়া, এরপর সকালে ঘুম থেকে ঊঠে আফ্রিদি জানতে পারলেন রেকর্ড নেই, এরপর কোরি এন্ডারসনকে আফ্রিদি চিনতেনই না। তবুও সাধ মেটে না, শেষ পর্যন্ত তারা ভোটিং পোলই খুলে ফেলল- আপনি কি মনে করেন দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডটি আফ্রিদিরই থাকা উচিত?

null
চিত্র- বাঘের লেজ কমসে কম ৩২ হাত

এইদিকে দুষ্টু ছেলেরা যা তা শুরু করেছে, কই থেকে তারা আফ্রিদির ডাক মারার পরিসংখ্যান তুলে এনেছে, আফ্রিদির নাম বদলে এখন ডাকছে ডাক্রিদি!!!
null
চিত্র- ফর ইউ ডাক্রিদি হেটারস

সৈয়দ মুজতবা আলী দিয়ে শেষ করছি। তার একটি ছোট গল্পে উঠে এসেছে রুশ লেখক তুর্গিনিয়েভের জীবনের ছোট একটি ভালোবাসার কাহিনী-

তুর্গেনিভ তার কৈশোরে এক মারাত্মক অসুখ থেকে সেরে ওঠার পর নেভা নদীর তীরে ডাক্তারের নির্দেশে অবকাশ যাপনের জন্য গিয়েছিলেন। একটি সুবোধ-সুন্দরী জেলে মেয়েকে তাঁর ভালো লাগে; মেয়েটিও তুর্গেনিভকে প্রচণ্ডভাবে ভালোবেসেছিল। অনেকেই ইভানের কাছে অনেক কিছু চেয়েছে। কিন্তু সে মেয়েটি তার কাছে কিছু চায়নি; শুধু প্যারিস থেকে তুর্গেনিভ তার কাছে ফিরে আসুক—সেটিই চেয়েছে। অনেক পীড়াপীড়ির পর সে একটি সুগন্ধি সাবান তাকে আনতে বলেছে। কেন সে একটি সাধারণ সাবান তাঁকে আনতে বলল, তা জিজ্ঞেস করাতে মেয়েটি বলেছিল, তুর্গেনিভ যেহেতু মেয়েটির হাতে চুম্বন করে এবং জেলেকন্যা সে মেয়েটির হাতে মাছের আঁশটে গন্ধ থাকে, সে গন্ধ বিদূরণের জন্য সে তাকে সুগন্ধি সাবান আনতে বলেছে। অদৃষ্টের ফেরে তুর্গেনিভের আর নেভার তীরে মেয়েটির কাছে ফিরে আসা সম্ভব হয়নি বলে সারাজীবন তুর্গেনিভ সে কষ্ট ভুলতে পারেননি। প্রিয় পুরুষটি হস্তচুম্বন করে যাতে হাতে মত্স্যগন্ধ না পেয়ে সুগন্ধি সাবানের গন্ধ পায়।

এই জেলে কন্যাটিকে আমার বাংলাদেশ মনে হয়, যার হাতে লেগে আছে জামাত-শিবির, পয়সালোভী, বিক্রি হয়ে যাওয়া স্বাধীনতা বিরোধী সুশীলের গন্ধ। আমাদের সত্য একটা সুগন্ধী সাবান দরকার, ডলে ডলে এই গন্ধগুলোকে দূর করতে।

৪,৪৯১ বার দেখা হয়েছে

৪২ টি মন্তব্য : “গরম মশল্লা ( গুড়া)”

  1. মোকাব্বির (৯৮-০৪)

    সায়েদাবাদের নিকটে যে বিখ্যাত ময়লার ডেপো সেখানে মাটির দেখা কি মেলা সম্ভব? জেলে পাড়ার মেয়েটির হাতের মাছের আঁশটে গন্ধের চেয়েও ভয়াবহ অবস্থা বাঙলাদেশের।

    খোরাসান থেকে জেরুজালেম হঠাৎ বাঙলাদেশ।
    কেঁপে কেঁপে উঠে মুরসির বিপ্লবী উচ্ছ্বাসে।

    🙂 (সম্পাদিত)


    \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
    অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

    জবাব দিন
  2. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)
    ওর হোগা মেরে ভোতায়ে দিবো, খালি মেয়ে মানুষের মারি মনে করেছেন? ব্যাডাগো হোগাও বহুত মারছি, আমি চিটাগাইঙ্গা পুয়া।

    :gulti:


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  3. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)
    যাহ ব্যটারা দিলো সব কেচে, এই কাদের সেই কাদের না হইলে পাকিস্তানের এত লাগে কেন? ফুটুস করে সত্যি বের হয়ে গেল, সুশীলদের প্লেটের কেকের পুটু পাকিস্তানই মেরে দিল।

    :pira2:


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  4. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)
    আরে মিয়া জানালা খুলে দেই বসো, এতদিন বান্ধবী ছিল রুমে, শান্তিমতো পাদও দিতে পারি নাই, এখন একটু শান্তি মতো পাদ দিতেছি আর কি, নো মাইন্ড ওকে? যত জোরে দিতে পারবা পেটের গ্যাস তত ক্লিয়ার হবে, শরীরটা হালকা বোধ হবে।

    :khekz:


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  5. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)
    কাদের মোল্লার যেই রাতে ফাঁসি হল সেই রাতে ইন্দুরের গর্ত থেকে সুশীলেরা বেরিয়ে এসে লেখা শুরু করলেন- মানুষ বলেই হয়ত ফাঁসিতে খুশি হতে পারছি না, কেউ লিখলেন- একজন মানুষের ফাঁসিতে উল্লাসই বুঝিয়ে দেয় আমরা কততা বর্বর হয়ে গেছি, কেউ কেউ বললেন- দেশের সকল আইন আদালত অমান্য করে ফাঁসির আদেশই বুঝিয়ে দেয় নতুন এক বাকশাল যুগের সম্মুখীন আমি, নরম মনের মেয়েরা লিখলো- আল্লাহ তালাই সর্বত্তোম বিচারক, অথচ আমরা তার জন্য অপেক্ষা করলাম না।

    একটা খারাপ কথা মনে আসছে এদের কথা মনে কইরা। দেখি চিনির সিরাপ দিয়া বলি,

    " এদেরকে সঙ্গমের সময় নাই।"


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  6. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)
    অইদিকে গ্রামের লোকেরা পথ আটকে দাঁড়িয়ে আছে, মাইক্রোবাস থামিয়ে তারা জিজ্ঞাসা করল খাসি কে নিয়েছে? দুই-তিন জন ফিস্ফিস করে বলল একটা দাম ধরে দিয়ে দেয়া হোক, তাইলে কোন ঝামেলা করবে না। বিধি বাম একজন বড় ভাই নেমে খুব চোস্ত রাশিয়ানে গম্ভীর গলায় বলল- আমরা সার্ভে টিম, সার্ভে করতে এসেছি, আপনারা আমাদের পথ আটকেছেন, কাজে বাঁধা দিচ্ছেন, আমি এখন পুলিশে ফোন করব, আর আপনাদের ছবি মোবাইলে তুলে রাখবো, ছবি দেখে দেখে এক একজনকে শিকের পেছনে পোরা হবে, ফেডারেল আইনে মামলা হবে, রেডি থাকেন।
    এইরকম আক্রমণের জন্য গ্রামবাসী প্রস্তুত ছিল না, তারা মিন মিন করতে করতে পথ ছেড়ে দিল।
    আমি মনে মনে ভাবলাম বাহ, যাদের খাসি কেটে খেলাম তাদেরই ঝাড়ি দিয়ে দিলাম, বাংলাদেশী বলে কথা।

    কাজটা ঠিক হয় নাই। তারপরো :awesome:


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
    • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

      বাঙালীর পক্ষেই সম্ভব এই ফাঁপর দিয়া বাইর হয়ে আসা। ডেইলি স্টারের শুক্রবারের স্টার সংখ্যায় "ঢাকা ডায়েরী" বা এরকম নামে একটা অংশ থাকতো সেখানে মানুষজন তাদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতো। ২০০৩-০৪ এর দিকের কাহিনী একটা পড়েছিলাম। এক মোটরবাইক চালককে ট্রাফিক সার্জেন্ট থামিয়েছে। কাগজপত্র কিছু কম আছে। মামলা ধরানোর চেষ্টা করতে ৩০০ টাকায় রফা হলো। চালক ৫০০ টাকার নোট বের করে এগিয়ে দিতে উনি বললেন ভাঙতি নাই, আপনি বক্সে গিয়ে বলেন ওখানে ভাঙতি পাবেন। চালক বক্সে এসে বললেন স্যার ২০০ টাকা জরিমানা করসেন, ৫০০ টাকার নোট দিসি, ৩০০ টাকা ফেরত চাইতে পাঠাইসেন। রাস্তার এপাড়ের বক্সে বসে থাকা সহকর্মী সার্জেন্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সার্জেন্ট হাত উঁচিয়ে তিন দেখালেন। বক্স থেকে ৩০০ টাকা নিয়ে কাগজ গুছিয়ে সুন্দর বাসায় এসে উনি ঢাকা ডায়েরীতে এই কাহিনী লিখেন। এই না হইলে চিপা বু্দ্ধি। :brick:


      \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

      জবাব দিন
  7. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)
    নকল ও মেয়াদ উত্তীর্ন ওষুধ বাজেয়াপ্ত করল আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, আর ফার্মেসি মালিক সমিতি দিল দেশ জুড়ে সকল ফার্মেসি বন্ধ করে, দাবী- মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি করতে দিতে হবে, রোগী মারা যাবে? যাক। কিছুই আসে যায় না, ওষুধ বিক্রি করতে পারাই শেষ কথা।
    ভেজাল ওষুধ বিক্রি করার বৈধতা চাই, বৈধতা দিতে হবে, নাহলে সব রোগী মেরে সাফ করে ফেলবো।

    ওদের কিছু যায় আসে না কারণ ওদের ঔষুধ আসে বিদেশ থেকে পার্সেলে।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  8. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)
    এই জেলে কন্যাটিকে আমার বাংলাদেশ মনে হয়, যার হাতে লেগে আছে জামাত-শিবির, পয়সালোভী, বিক্রি হয়ে যাওয়া স্বাধীনতা বিরোধী সুশীলের গন্ধ। আমাদের সত্য একটা সুগন্ধী সাবান দরকার, ডলে ডলে এই গন্ধগুলোকে দূর করতে।

    ::salute::


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  9. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    ১- বিশ্বজিত খুন - আমি ছাত্রলীগের ঐসব খুনীদের সাথে একই কাতারে ঐসব ফটো সাংবাদিকদের ও দাড় করাতে চাই।

    ২- সাগর- রুনী খুন - যেকোন খুন বেদনাদায়ক। কিন্তু তারা সাংবাদিক বইলাই এইটা নিয়া বেশি নাড়াচাড়া হইছে।
    য্যান ঢাকাবাসী না হইলে আর সাংবাদিক না হইলে বাংলাদেশের নাগরিক না।
    তবে এটা অনস্বীকার্য যে এই খুন টা বেশ রহস্যময়।

    ৩- রামপাল চুক্তি
    আমি রামপালের বিপক্ষে নীতিগত কারণে। কিন্তু এইটাও সত্য যে আজ অবধি পরিবেশ বা বন ধ্বংশ কইরাই সভ্যতা (?) আগাইছে।

    ৪- টিকফা চুক্তি
    ডোন্ট বদারড এনি মোর।

    ৫- বিডিআর হত্যাকান্ড
    এইটা একটা বিশাল প্রশ্নবোধক চিহ্ন হয়ে থাকবে। কেনো জানি ১৯৭৫ এর ৭ই নভেম্বর মনে পড়ে যায়।

    ৬- ডেস্টিনির পয়সা লুট
    এইটা নিয়া তোদের এক ক্লাসমেটরে এতো বেশি ক্ষ্যাপাইছি যে আমি তোদের ক্লাসমেট হইলে ও নির্ঘাত আমারে খুন করতো।

    ও ভালো কথা তুই টিপাইমুখ বাদ দিছিস।
    আর তারকাটায় ঝুলতে থাকা ফেলানি বাদ পড়ছে।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  10. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    জব্বর হইছে লেখা।
    কাদের মোল্লার জন্য পাকিস্তানের আলগা দরদটা দেশীয় ছাগুপনার পুটু মেরে দিলো।
    এদিকে ফেসবুকে দেখলাম একজন লিখেছে কাদেইরা নাকি জান্নাতের পাখি হয়ে উড়ে বেড়াচ্ছে। তো জান্নাতের পাখিই যদি হবে, শহীদই যদি হবে তাগোই ত সবার আগে ফাঁসির দাবীতে সামিল হওইয়া উচিত। পাঁঠা থেকে পাখি, কি মজা!

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।