১
বিশাল লাইব্রেরিতে আমি যখন ঢুকি,একটা বিশাল মানসিক প্রশান্তি পাই। অনেকটা বটতলা বটতলা একটা আমেজ। মাঝে মাঝে বিনা পয়সায় ইন্টারনেট গুঁতাগুঁতি,সব মিলিয়ে খারাপ যায় না সময়।
কোন এক বিকালে বসে আছি সেখানে,এক টেবিলে একা একা। হিবিজিবি চিন্তা ভাবনা করছি। সামনে অবশ্য বই খুলে রেখেছি। আর একটা এটলাস।
খট খট শব্দ ঠিক টেবিলের সামনে এসে থামল। চোখ না তুলেই বুঝলাম মানবী। এমন শব্দ একমাত্র হাইহিল বুট থেকেই আসা সম্ভব।
-আমি কি এখানে বসতে পারি?
বেশ রুক্ষ কণ্ঠস্বর,কেমন একটা ডিক্তেটিং আমেজ,চোখ তুলে তাকিয়ে দেখলাম, চকলেট। ইয়ে মানে কফি রঙের চামড়া,কালো চুল। কোন ভাবেই রাশান না। একটা মিক্স আছেই।
– বেজ প্রব্লেম( কোন সমস্যা নেই)
বসতে বসতে ত্তাহার আরও দুই মিনিট,একবার এই বই বের করে, তো আর একবার অন্য একটা, একবার এ্যালবাম তো আর একবার পেন্সিল বক্স। যুদ্ধ শেষে রমণী আসন গ্রহন করল।
খুব ব্যস্ততার সাথে এই পৃষ্ঠা ওই পৃষ্ঠা উল্টাতে লাগলো জীবন্ত সেই ঈশ্বরী। আকি ঝুকিও করল মিনিট খানেক।
ঈশ্বরীর গা থেকে একটা পারফিউম ভেসে আসে,কিন্তু বুঝতে পারি না কি পারফিউম। মেয়েদের সকল পারফিউম আমার কাছে এক মনে হয়। শেনেল ফাইভ টা চিনি অবশ্য। কিন্তু এ গন্ধ শেনেলের না।
আধা ঈশ্বরী উশ খুশ করতে লাগলো,একটু অস্থির মনে হল- মেয়েরা যেমন হয় আর কি,আবার তার গলা শোনা গেল
– তোমার কাছে একটা ইরেজার হবে?
– কি?
-ইরেজার?
-ও আচ্ছা,হ্যাঁ হবে
– একটু দেয়া যাবে?
– শিওর
আধা ঈশ্বরী এবার ঘষাঘষি শুরু করল,চোখের কোনা দিয়ে দেখালাম, মুহূর্তেই এ্যালবামের শাদা পাতা ধুসর হয়ে গেল। এবার আধা ঈশ্বরী আকিঝুকি শুরু করল। বেশ কিচ্ছুক্ষন নীরবতা। চিত্রটা প্রায় শেষ করে এনেছে আধা ঈশ্বরী। বাড়া ভাতে ছাই দেবার অভ্যাস আমার দীর্ঘদিনের। খেকে গলা পরিষ্কার করলাম,গলা নীচে নামিয়ে বললাম
– কিছু মনে না করলে একটা কথা বলি?
– আমাকে?
– হ্যাঁ
– হ্যাঁ হ্যাঁ অবশ্যই,ইরেজার লাগবে?
– না ইরেজার না
– তাহলে?
– যে ফিগারটা এঁকেছ,সেখানে গলদ রয়ে গেল,টিচার ছিড়ে দেবে নিশ্চিত।
-মানে?
– মানে চিত্রটা ভুল হয়েছে।
– উফ, কোথায় ভুল হয়েছে?
– কোষ গুলো গোলাকার হবে,নিউক্লিয়াস লম্বাকৃতি,বেগুনি রঙের।
– এতক্ষনে বলতে পারলে না,ছবি আকা শেষে কেন বলতে গেলে?
– ইয়ে মানে তোমাকে চিনি না,তাই
– মনে হচ্ছে খুব ভালো ছাত্র?
– না মানে,টিচার টা খুব খাচড়া,বাধ্য হয়ে সব শিখতে হয়েছে।
– ও আচ্ছা
আধা ঈশ্বরী ভগ্ন হৃদয়ে আবার ঘষাঘষি শুরু করল,এবারে পাতার অবস্থা আরও করুণ হয়ে দাঁড়ালো। খুব মায়া লাগলো আমার।
– এইদিকে দাও,একে দিচ্ছি,কবে সাইন করাতে হবে?
-বুধবার। কিন্তু আমার চিত্র তুমি কেন আকবে?
– কারন তুমি পাতার পর পাতা শুধু ঘষেই যাবে
খিল খিল শব্দে আধা ঈশ্বরী লাইব্রেরি ভরিয়ে তুলল। পরক্ষনে নিজেই হাত দিয়ে মুখ চাপা দিল,তাতেও শেষ রক্ষা হোল না, মধ্যবয়সী লাইব্রেরিয়ান চোখ দিলে আধা ঈশ্বরীকে ততক্ষণে আধা গিলে ফেলেছেন।
বিবলিওটেকে নি রাজগাভারিভাইয়েম
পা টিশে
( লাইব্রেরি কথা বলবার জন্য নহে – নীরবতা কাম্য)
লাইব্রেরিয়ানের চিৎকার করে উঠল। শুনশান নীরবতা নেমে আসলো লাইব্রেরিতে।আমি চিত্র আঁকতে লাগলাম, বেশ মনোযোগ দিয়ে,প্রতিভার প্রশ্ন। খারাপ হলে নিশ্চিত দায় নিতে হবে। এর মধ্যেই আধা ঈশ্বরীর প্রশ্নবান শুরু হয়ে গেল। আমি মনে মনে ভাবলাম বিপ্লবীকে কি ১৪৪ ধারা দিয়ে বেধে রাখা যায়? তবে এইবার রয়েসয়ে ফিশফিশিয়ে
– তুমি সিগারেট কেন ফোঁক?
– সেটা তুমি কিভাবে জানলে?
– এপ্রনের পকেট উচু হয়ে আছে, সেল ফোন এত উচু হয় না, তার মানে সিগারেটের প্যাকেট।
– একজন মহিলা শার্লক হোমসের সাথে পরিচিত হয়ে আমি গর্বিত।
– ইউ ক্যান কল মি অগাথা ক্রিসটি
– তুমি রাশান?
– কি মনে হয়?
– আমার অনেক কিছুই মনে হয়
-যেমন?
– ইন্ডিয়ান- রাশিয়ান,ইউক্রেন-আজারবাইজান,বেলারুশ-তাজাকিস্তান
– একটাও হয়নি,তবে আমার মিক্স আছে
– ও আচ্ছা
– আমার তাতার- গ্রীক মিক্স, মা গ্রীক বাবা তাতার।
-জেনে প্রীত হলাম
– নিজের সম্পর্কে বলাটাও ভদ্রতা।
– আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি,কোন মিক্স নেই।
– আমি আন্দাজ করেছিলাম তুমি ইন্ডিয়ান
– আমি বাংলাদেশী
– বাংলাদেশ কি ইন্ডিয়ার একটা শহর না?
– সেটা বেঙ্গালুর,বাংলাদেশ না, তোমার স্কুলের ভূগোল টিচারকে আমার পক্ষ থেকে মিডেল ফিঙ্গার দেখিয়ে দিও।
– কি আশ্চজ্জ, রাগছ কেন?
– তাহলে কি ম্যাপ নিয়ে নাচবো?
– আমি দুঃখিত।আমি সত্যি দুঃখিত।
– স্কিপ।
– তোমার কি নাম?
– আমার নাম মীম।
– ইজন্ট ইট এন আরাবিক এলফাবেট?
– হু
– তুমি মুসলমান?
– মুসলমান ফোবিয়া আছে নাকি তোমার?
– ফোবিয়া নেই,উত্তর এখনও পেলাম না।
– জন্মসূত্রে পাওয়া ধর্ম আমার কাছে অর্থহীন মনে হয়,নিজের ধর্ম নিজের খুজে নিতে হয়।
– এহহহ! খুব দার্শনিক।
– সাধারন লজিক
– পা নাড়িয়ো না, টেবিল শুদ্ধ কাপছে।
– আচ্ছা
– খুব টেনশনে আছো মনে হচ্ছে?
– ইয়ে মানে না, মানে হ্যাঁ।
– কি হয়েছে?
– তোমার যে চিত্রটা আকছিলাম,মানে পুরাই গেছে
– ওয়েল আই টেক দেট এজ আ কমপ্লিমেন্ট।
– কেন কেন?
– চিত্রর দিকে নয়,তোমার মনোযোগ আমার দিকে ছিল।
হতাশ হইয়া একটা নিঃশ্বাস ফেলিলাম। যে প্রতিভার বিস্ফোরণ ঘটাইতে চাইছিলাম,উহা বাস্প হইয়া উড়িয়া গেল,আধা ঈশ্বরী আমার পানে চাহিয়ে তখন মুচকি মুচকি হাসিতেছে। উহাকে অগ্রাহ্য করিয়া আমিও দু পাটি দন্ত বের করিয়া নিঃশব্দে হাসিতে লাগিলাম।
আমি আধা ঈশ্বরীকে কহিলাম
– কফি চলবে, একতলায় মেশিন আছে
– চলতে পারে
– চকলেট?
– একটা মিনি মার্স, দাড়াও পয়সা দিচ্ছি
– অধমের আতিথেয়তা গ্রহন করা হোক, জরিমানা স্বরূপ।
– কিসের জরিমানা
– চিত্র নষ্ট করেছি,এই কারনে।
আধা ঈশ্বরী আবার খিল খিল করিয়া হাসিয়া উঠিল। উহার মাঝেই সেল ফোন বিপ করিয়া উঠিল। আধা ঈশ্বরী ফোন নিয়া ঘাটাঘাটি শুরু করিল, কিছুক্ষন পর আমার দিকে হতাশ চোখে তাকাইয়া বলিল
– আমাকে যেতে হবে, মায়ের মেসেজ
– শিওর। পরিচিত হয়ে অনেক প্রীত হলাম।
– আমিও
আধা ঈশ্বরী হুট হাট করিয়া নিজের বইখাতা ব্যাগে পুরিতে লাগিল। খচ খচ শব্দ করিয়া জ্যাকেট পরিয়া বের হইবার উপক্রম করিল, আমার মনে হইল আমার বাড়া ভাতে তেলাপোকা উড়িয়া আসিয়া জুড়িয়া বসিল।
জলজ্যান্ত মানবী ২ মিনিটের মধ্যে আমার দিকে হাত নাড়িয়া উড়িয়া চলিয়া গেল। বের হইবার আগ মুহূর্তে টেবিলের দিকে তর্জনী দিয়া কি ইশারা করিল। উহার দিকে আমার তখন খেয়াল নাই, আমি উহার গমন পথের দিকে অপলক চাহিয়া রইলাম।
সিনেমায় মাঝে মাঝে একটা দৃশ্য খুব দেখা যায়। কোন কোন সময়ে কোন মানুষের জন্য সময় স্থির হয়ে যায়,তখন চার পাশ থেকে হু হু করে গাড়ি চলে যায়, কর্মজীবী মানুষ দ্রুত হেটে যায়,বাতি নেভে আর জ্বলে,কিন্তু সময় স্থির হয়ে যাওয়া মানুষটি কিছুই অনুভব করে না। গরুর মতো বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে থাকে।
নিজের এই অবস্থা দিয়ে আমি সিনেমার সেইসব সিনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলাম। হতাশ হয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে আমি আবার টেবিলে চোখ দিলাম।
একখণ্ড ভাজ করা চিরকুট রাখিয়া গিয়াছে আধা ঈশ্বরী। বুভুক্ষের মতন ঝাপিয়ে পড়লাম চিরকুটের উপর।
” কারো সাথে পরিচিত হবার পর,তার নাম জিজ্ঞাসা করাটা একটা ভদ্রতার পরিচয়। সেটা তুমি বেলামুম ভুলে গিয়েছ,যাই হোক তোমার সাথে কথা বলে অনেক ভালো লেগেছে, এক কাপ কফি খাবার ইচ্ছে আমারও ছিল। যদি সম্ভব হয় পরে কখন………
নিজের নাম্বারটা রেখে গেলাম,তুমি নিজে থেকে চাইতে পারবে না,বোঝা হয়ে গিয়েছে। আর শার্টের কলার ভাজ করে রাখলেই তোমাকে বেশি ভালো লাগবে, পরামর্শ অযাচিত লাগলে আগের মতন উচিয়ে রাখতে পারো।
– সাবিনা মামেদভা”
চিরকুট পড়িয়া আমি সোজা হইয়া বসিলাম, মেরুদণ্ড বরাবর শিরশির করিতে লাগিল, আমি শার্টের কলার নামাইয়া ভদ্র হইবার একটা ভান করিতে লাগলাম। আধা ঈশ্বরীর নাম তাহলে সাবিনা, বেশ বেশ। মনে মনে এহেন অর্জনে আত্মতৃপ্তির এক বিশাল ঢেঁকুর তুলিলাম।
২
শীত শেষ হইয়া আসিয়াছে তখন , ঘাস গুলো বড় হইয়া উঠিয়াছে,দুই এক জায়গায় ফুল ও দেখা যায়,সকল গাছে পাতা ধরিয়াছে। আপেল গাছের সবুজ আপেল গুলো সুপুষ্ট হইয়া উঠিয়াছে। ইহাকে এক কথায় বসন্ত বলা হয়।
বসন্ত তখন আমার মনেও লাগিয়াছে,সাবিনা আর আমি তখন খুব কাছের মানুষ হইয়া উঠিয়াছি। একসাথে ঘুরিয়া বেড়াই,সাবিনার টিচাররাও বেশিরভাগ আমাকে চিনিয়া রাখিয়াছে। সাবিনা আবার মরদেহ কাটিতে খুব ভয় পায়, আতঙ্কে নাকি উহার বমি পায়,হাত পা অবশ হইয়া আসে। আমি তখন উহার জায়গায় প্রক্সি দিয়া লাশ কাটি, আর সাবিনা আমার বাড়ির কাজ করিয়া দেয়।
আধা ঈশ্বরী মাঝে মাঝে আমাকে খোটা দিয়া বেড়ায়, আমার নাকি উহার সাথে যোগাযোগ করিবার কোন বাসনা ছিল না। সে নাকি নিজে থেকেই আগ্রহী হইয়া ইহা গড়িয়া তুলিয়াছে।
আমি তখন নিঃশ্বাস ছাড়িয়া কই-
” নুন ছাড়া সুপে না হয় তুই একটু লবন দিয়েছিস,উহাতে এত ক্রেডিট লইবার কি আছে?”
আমি আরও কই ভালো বন্ধু পাইবার জন্য এক আধটু ছাড় দিতে হয়।
ইহা ছাড়াও আরও বড় এক সমস্যা ছিল। উহা সাবিনার মা। গ্রীক এই মহিলা কোন এক কারনে আমাকে অসম্ভব পছন্দ করিয়া ফেলেন, মাঝে মাঝেই আমার দাওয়াত পরিত সেই বাসায়,সেই বাসায় আরও একটি প্রাণী ছিল, উহা একটি বিড়াল। বিড়ালের নাম ছিল কিসি। মনুষ্য প্রাণীর মাঝে বড় হওয়া এই বিড়াল খানা ছিল বড়ই নির্লজ্জ, আমাকে পাইলে আমার গায়ে গা ঘষে উহার কিছু লোম আমার কাপড়ে না ফেলিলে উহার শান্তি মিলিত না,সাবিনার মন রক্ষার্থে আমি কিছুই বলিতে পারিতাম না, নিয়ম করিয়া বিড়াল খানার মাথায় হাত বুলাইয়া চুক চুক শব্দ করিতাম।
নিজের রন্ধন প্রতিভা নিয়া বড়ই গর্বিত সাবিনার মা,আমাকে প্রায় দিন এটা সেটা রাধিয়া খাওয়াইতেন। খোলা মেলা বলিলে, উনি বিভিন্ন রান্নার পরীক্ষা নিরিক্ষা করিতেন,আর সেই সব অখাদ্য চাখিতে হইত আমাকে। উনি খুব গাজর প্রেমী ছিলেন, ওনার হাতে আমি গাজরের কত আইটেম খাইয়াছি গুনিতে পারিব না।
তবে এই মিষ্টিভাষী মহিলাকে আমি বড়ই শ্রদ্ধা করিতাম, বিদেশের মাটিতে ওনার মতো একজনকে খুজিয়া পাওয়া দায়।
একদিন উনি বিশাল এক গ্লাস গাজরের জুস হাতে লইয়া আমাকে ডাকিতে লাগিলেন,আমার হাতে ধরাইয়া দিলেন উহা। গন্ধে আমার অর্ধ ভোজন হইয়া গেল। এক চুমুক দিয়া দ্বিতীয় চুমুক দেবার সাহস যোগাইতে পারিলাম না।
– কেমন হয়েছে
– আন্টি জাস্ট অসাম। আপনার জুসের হাত আসলেই ভালো
আমার আন্টি গর্বে ফুলিয়া গেলেন, নিজের হাতের গ্লাস এক চুমুকে নিঃশেষ করিয়া আমার দিকে তাকাইয়া রহিলেন, এহেন দুরাবস্থায় আমার এক খানি খাটি বাংলা প্রবাদ মনে পড়িয়া গেল
” রাধুনির হাতে পড়িয়া রুই মাছ কাদে
জানিনা রাধুনি মোরে কেমন করিয়া রাধে”
৩
ঘুরিয়া ফিরিয়া বেড়ানো আমাদের খুব শখ ছিল,তবে সাবিনার সময় হইত না,তিনি আবার নাচ শেখেন, ব্যালেট নাচ। ইহা এক রকম শিল্প। নাচের মাধ্যমে একটি গভীর বিষয়কে তুলিয়া ধরা। তবে বেশির ভাগই প্রেম তুলিয়া ধরা। খুব ধীর গতির কারনে অনেকেই এই নাচ পছন্দ করেন না। তবে আমার বেশ লাগে।
কোন এক সন্ধায় আমি আর সাবিনা নাচ দেখতে গেলাম, সিট পাইলাম ব্যলকনিতে। এই জায়গা থেকে নাচ দেখতে অপরূপ লাগে।
বেশ কিছুক্ষন পর আমি উশ খুশ করতে লাগলাম
– এই শোন
– বল
– না কিছু না
– মীম জালাইস না আমারে, আর্ট দেখতে দে
– আচ্ছা ঠিকাছে দেখ।
– না বলে ফেল
– ইয়ে মানে,একটা কথা বলার ছিল
– বল না, তোর মুখে কয়লা কে দিয়েছে?
– এমন করছিস কেন?
– তাহলে বলে ফেল
– মানে, মানে খুব কঠিন কথা,তোর মনোযোগ নেই,পরে বলি
– এখন বল, আমার মন এখানেই আছে
– ও আচ্ছা
– কই বল?
– কি বলব?
– আমি কি জানি?
– তুই না বলবি,শুধু শুধু জ্বালালি কেন?
– তুই জানিস না?
– না জানিনা।
– যা জানলে নাই, নাচ দেখ, পারলে নিজে গিয়া নাচ
আমি মেজাজ খিচে মনোযোগ দিয়া নাচ দেখিতে লাগলাম, মাথার মধ্যে গরম পানির মতো মগজ ফুটছে। সহসা কনুইতে নখের আচড় অনুভব করলাম,ঘুরে তাকালাম রাগি চোখে।
আধা ঈশ্বরী আমার চোখে চোখ রাখিয়া কহিল ” জানি জানি আমি সব, বুঝি। কাপুরুষ কোথাকার,নিজে থেকে বলতে পারলি না,এখন নাচ দেখ”
আমি একটা বড় নিঃশ্বাস ফেললাম, নাচের দিকে মন দিলাম। আমার কাধে তখন আধা ঈশ্বরীর মাথা,চুল থেকে অদ্ভুত সুন্দর শ্যাম্পুর গন্ধ আসছে,কিন্তু ঝামেলা হোল এই শ্যাম্পুর গন্ধও আমি আলাদা করতে পারি না, সব শ্যাম্পুর এক গন্ধ মনে হয়।
আধা ঈশ্বরী এক হাতে আমার হাত ধরে রাখে, আর এক হাতে আমার কনুই আঁচড়াতে থাকে।
বাতি নেভানো হলরুমে আবছা আলো ছায়া খেলা করতে থাকে ওর চোখে মুখে। অদ্ভুত সুন্দর এক প্রতিমা।
কিছু কিছু উপমা আসলেই খুব বাড়াবাড়ি রকমের সত্য,তার মধ্যে একটা হল
” অর্ধেক মানবী সে অর্ধেক ঈশ্বরী”
( লেখার মাঝে ইচ্ছে মতো সাধু চলিত মিশিয়েছি, সাধু গদ্যরূপের প্রতি আমার প্রচণ্ড আসক্তি থেকেই এই গুরুচন্ডালি দোষ। আশা করি সবাই এড়িয়ে যাবেন)
🙂
;;;
চাঁদ ও আকাশের মতো আমরাও মিশে গিয়েছিলাম সবুজ গহীন অরণ্যে।
:clap:
:))
চাঁদ ও আকাশের মতো আমরাও মিশে গিয়েছিলাম সবুজ গহীন অরণ্যে।
🙂
😛
চাঁদ ও আকাশের মতো আমরাও মিশে গিয়েছিলাম সবুজ গহীন অরণ্যে।
:thumbup:
লেখাটা ভাল লাগল। তরতর করে পড়া গেলো 🙂
ঠিক, "তরতর করে পড়া গেল"
😀
ভাল্লাগছে।
:clap: :clap: :clap: :clap: :clap:
:clap:
:clap: :clap: :clap:
তানভীর আহমেদ
:clap: :clap: :clap:
''সেটা বেঙ্গালুর,বাংলাদেশ না, তোমার স্কুলের ভূগোল টিচারকে আমার পক্ষ থেকে মিডেল ফিঙ্গার দেখিয়ে দিও।'' :thumbup: :thumbup: :thumbup:
এটা ছিল আমার পড়া প্রথম ব্লগ