হাউজ মস্ক

ক্যাডেট কলেজ ব্লগে আমরা সাধারণত আমাদের সুখের স্মৃতি নিয়ে লিখে থাকি। সব সময় যে ঠিক একই রকম লেখা আসে তাওনা, আমাদের কিছু দুঃখের কাহিনীও ক্যাডেট কলেজ ব্লগে লিখা আছে।
আজকে অন্যরকম ব্যাপারে আলোচনা করতে চাই যা আজকে একটা ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগ পড়তে গিয়ে চোখে পরে।

ব্লগটি লেখা হয়েছে হাউজমস্ক নামের একটা ওয়ার্ডপ্রেস সাইটে। আমি নিজেও কলেজে হাউজ মস্কে মোটামুটি একটিভ থাকার কারণে আগ্রহ নিয়েই ব্লগটা পড়লাম। প্রথমত অনেকের কাছেই পড়ে মনে হতে পারে ব্লগের শেষে হয়তোবা লেখক টুইস্ট রেখে দিয়েছে যে এটা আসলে তার স্বপ্ন কিন্তু আমি নিজেও আমাদের কলেজে এধরণের অভিজ্ঞতা থাকার কারণে অবাক হইনি বরং অনেক মিল খুঁজে পাওয়ার কারণে হালকা ভয় পেয়ে গিয়েছি।

ক্যাডেট কলেজে কি হাউজ মস্ক সবসময় ছিল ?? নাকি প্রেয়ার রুম গুলো মুসলমান ক্যাডেটদের ব্যাবহার বেশী হতো বলে সেগুলো পরে হাউজ মস্কে রূপান্তরিত হয় !!!

আমাদের সময় হাউজ মস্কে কি কি হত তার একটা ধারণা দেই। তার আগে একটা তথ্য জানিয়ে রাখা প্রয়োজন যে আমাদের কলেজে বেশ কিছু শিবিরের সরাসরি কিছু সিনিয়র ক্যাডেটদের সাথে সম্পর্ক ছিল। তারা জুম্মার নামাজের দিন কলেজ মস্কে কিংবা মারগিবের সময়ে কিছু ভাইয়ার সাথে আলাপ করতেন, হয়তবা বই এবং ম্যাগাজিন ও দিতেন।

আমরা যখন ক্লাস এইট কিংবা নাইনে ছিলাম তখন বুঝতে পারলাম হাউজ মস্ক দিনে দিনে আরো অর্গানাইজড হচ্ছে। হাউজ মস্ক কমিটি গঠন করা হয়েছে, আমিও কমিটির মেম্বার ছিলাম এবং আমার মনে পরে আমরা কোনোদিন কে হাদিস পড়বে সেটার লিস্ট করতাম এমনকি কিছু কম্পিটিশন এর ও আয়োজন করা হয়েছিল মনে পড়ে। জুম্মার নামাজের পর ও মাঝে মাঝে হাউজ মস্কে মাঝে মাঝে মিটিং হত এবং কেরাত প্রতিযোগিতার মত জিনিষ আয়োজন করা হত। আস্তে আস্তে নতুন নিয়ম যোগ হতে লাগলো। কিছু ভাইয়া জুনিয়রদের হাতে একটা কাগজ ধরিয়ে দিলেন যেটাতে তারা টিক দিবে প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাজের পর এবং সপ্তাহে একবার দুইবার একজন ভাইয়া সেটা চেক করতেন।

প্রথমে ভাবতাম হয়তবা আমাদের হাউজ বেশ ওর্গানাইজড এ ব্যাপারে অন্য হাউজগুলো হয়তবা এরকম না। আমার ধারণা ভুল ছিল বিশেষ করে নীল হাউজ থেকে আমাদের হাউজের ভাইয়াদের কাছে ইন্সট্রাকশন আসতো। ঐ দুই একজন ভাই ব্যাপারগুলো কমিটিতে তুলতো এবং পরে এটা নিয়ে আলোচনা হত।

যাইহোক আজকে লেখার প্রধাণ কারণ, যদিও কলেজে থাকতে বুঝিনাই তবে ক্যাডেট কলেজে আসলে আমরা প্রপার মুসলিম হওয়ার জন্য যাইনাই। বরং অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে ক্যাডেট কলেজ গুলো এসব ধর্মীয় ব্যাপার থেকে বেশী সাবধানে থাকবে এবং ধর্মীয় প্রভাব থাকবেনা এটাই স্বাভাবিক। আমরা কলেজে থাকতে এটা রোধ করার জন্য কিছু করিনাই বরং হালকা প্রমোট ও করছি বলা যাইতে পারে।

কলেজে আমি মনে করি একটা চক্র ওর্গানাইজড ভাবে শিবির, তাবলিগ নিয়ে যাচ্ছে। আমরা ইতিমধ্যে আল আমিন বেগ সহ বেস কিছু জঙ্গি ক্যাডেটদের কথা শুনেছি। কলেজ গুলো কি এ ব্যাপারে কোনো ব্যাবস্থা নিচ্ছে যাতে বর্তমান ক্যাডেটরা এর ছোয়া না পায় ?

আমিন বেগ এবং তার সাথে আরো জঙ্গি এক্স ক্যাডেটরা যাস্ট নট অনলি হ্যাপেন্ড টু বি এন এক্স-ক্যাডেট। অবশ্যই আমিন বেগ বিসিসি থেকে জঙ্গি হয়নাই তবে সে ক্যাডেট কলেজের বিভিন্ন প্লাটফর্ম ব্যাবহার করে আরো ক্যাডেট রিক্রুট করেছে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার জন্য।

এখন আসি যে ব্লগটার কথা বলছিলাম সেটা নিয়ে, ব্লগটি পড়তে পারবেন এখানে

কিছু লেখা উল্যেখ করলামঃ

‘বাইরের দুনিয়ার একজন মুসলিম যিনি দ্বীনের ব্যাপারে সিরিয়াস-তা তার বাহ্যিক বেশভূষায় ফুটে ওঠে। কিন্তু ক্যাডেটদের বেলায় সে সুযোগ ছিল না।
তা সত্ত্বেও ‘মোল্লা টাইপ’ ক্যাডেটরা চিহ্নিত ছিল। সম্ভবত সে কারণেই আমরা এক অদৃশ্য সংঘবদ্ধতা অনুভব করতাম। এবং ক্লাস ইলেভেন-টুয়েলভের দ্বীনি ভাইদেরকে আমরা নিজেদের পুরোধা মনে করতাম। এক ব্যাচ চলে গেলে অন্য ব্যাচের ভাইয়েরা দায়িত্ব নিয়েছেন -এমনটিই মনে করতাম।’

‘২০০৯ সালের সম্ভবত জুন মাসে ২৬ তম ব্যাচ কলেজ থেকে চলে যায়। পরদিন ভোরে ফজরের নামাযে যাবার সময় এক প্রকার শূন্যতা অনুভব করলাম। সম্ভবত নেতৃস্থানীয় ভাইদের শূন্যতা। এরপর অবশ্য ২৭ তম ব্যাচের ভাইয়েরা দায়িত্ব নিয়ে নেন। আমরা যেহেতু এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলাম, আমাদের ব্যাচ থেকে দ্বীনমুখী ক্যাডেটরা যেন চিল্লায় বের হয়, তারা সে ব্যাপারে ফিকর করতে থাকেন।’

‘নতুন ‘সাথি’ হিসেবে কাদের নির্বাচন করব? এর জবাবে এক ভাই বলেছিলেন- নিয়মিত নামাযি, দুনিয়া (প্রিফেক্টশীপের) প্রতি আসক্ত না, টিভি আসক্ত না, আর্মি অফিসারের ছেলে না -এসব গুণ যার মধ্যে পাও, তাকে। [আর্মি অফিসারের ছেলে হলে তার অতিরিক্ত ধর্মীয় ঝোঁক দেখে বাপ যদি কলেজে আবার খোঁজ লাগায়, এতে ঝামেলা বাড়বে]’

‘হয়ত একজন সিনিয়র থাকত। সাথে দু-একজন জুনিয়র। হঠাৎ কোন শিক্ষক এসে পড়লে তারা কথাবার্তার বিষয়বস্তু বদলে ফেলতেন।
কর্তৃপক্ষের শ্যেন দৃষ্টি এড়িয়ে জুনিয়রদের কাছে দ্বীনি কথা পৌঁছানোর জন্য ছুটির দিনের ভোর আর বিকেলগুলো ছিল উত্তম সময়।
পরে অবশ্য জেনেছিলাম যে, ভাইয়েরা রীতিমত ‘মাশোয়ারা’ করতেন। এবং কোন শিক্ষকের হাতে যেন ধরা না পড়েন, সে জন্য অভিনব সব পন্থা অবলম্বন করতেন। যেমন, হাউসের পেছন দিকে একজন সজাগ দৃষ্টি রাখত। কোন স্যারকে আসতে দেখলে সে তার রুমের সামনে ঝোলানো পিটি স্যু সরিয়ে নিত। এই সিগন্যাল পেয়ে বিপররীত পাশে মাশোয়ারায় বসা ভাইয়েরা দ্রুত বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতেন!
প্রত্যেক হাউসে প্রত্যেক ব্যাচে অন্তত একজনকে যিম্মাদারি দেয়ার চেষ্টাও চলত। দ্বীনের দিকে ঝোঁকার পর যেন বিগড়ে না যায়, সেদিকেও নজর রাখা হত। এসএসসি পরীক্ষার পরের লম্বা ছুটিতে চিল্লায় পাঠানো ছিল লক্ষ্যের অন্তর্ভুক্ত।’

পুরো ব্লগটা পড়লে মনে হবে কোনো আবাসিক মাদ্রাসার একজন ছেলের তার মাদ্রাসার লাইফের কথা লিখছে। একজন ব্যাক্তিগতভাবে নামাজ পড়ে ফাটাইয়া ফেলুক সমস্যা নাই, এটা যদি তারে বিভিন্নভাবে মানুষিক শান্তি দেয়।
কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই ধরণের মানুষিকতার লোকজন নিজের মধ্যেই এই জিনিষগুলো সীমাবদ্ধ করেনা,তারা এটা সব জায়গায় নিয়ে যায়।

এই ব্লগের লেখক ক্যাডেট ও খালি এই ব্লগ লিখছে যে তানা, সে ‘হাউজমস্ক’ নামক একটু গ্রুপ খুলেছে ফেসবুকে, যেটার বর্তমান সদস্য মাত্র ৩৭১, তবে সেটা বাড়তেও পারে এবং তারচাইতেও ভয়ঙ্কর যদি তারা সদস্য বাছাই করে অল্পসংখ্যাক কাউকে রাখে। এরকম ব্যাপার ইতিমধ্যে ঘটেছে আমিন বেগ এবং এক্স ক্যাডেট ইসলামিক ফোরামে!!!

গ্রুপের একটা পয়েন্ট আমার শেয়ার করতেই হয় যেটা নিয়ে আমি হালকা চিন্তিতঃ

‘২। দ্বীনের ব্যাপারে নিজেদের ভাবনা,অভিজ্ঞতা শেয়ার করা। বিশেষ করে এক্স-ক্যাডেট কমিউনিটি ও ক্যাডেট কলেজে দ্বীন প্রচারে স্ট্র্যাটেজি,অভিজ্ঞতা ও পরিকল্পনা শেয়ার করা এবং সেই অনুযায়ী কাজ করা।’

আরো ৭ টা পয়েন্ট আছে সেই গ্রুপের ডিটেইল এ কি করতে চায় তারা এই গ্রুপকে প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যাবহার করে।

আশাকরি যারা এসব ব্যাপারে একশন নিতে পারবেন দয়া করে এ ব্যাপার গুলোতে চোখ রাখবেন।

২,২০৬ বার দেখা হয়েছে

৬ টি মন্তব্য : “হাউজ মস্ক”

  1. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    তোর খেয়াল আছে কিনা ২০১১/১২ এর দিকে এক্স ক্যাডেট ইসলামিক ফোরাম করা হয়।

    ক্যাডেট কলেজে যথেষ্ট শক্তভাবে এই সমস্ত বিষয়গুলো হ্যান্ডেল করা হয় না।
    দুয়েকজন শিক্ষক এইসব বিষয়ে কড়া হলে তাদের কে নাস্তিক, ইসলামবিরোধী নানা নামে ভূষিত করার ইতিহাস আছে।

    বেশ কিছু কলেজ এর পোলাপানদের আমি দেখেছি ছাগুভাবাপন্ন।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  2. রেজা

    নাজমুল,
    তোমার লেখা পড়লাম। কোন কারণে তোমার হাউস মস্ক বিষয়টি দুঃখের তা ধরতে কষ্ট হচ্ছে। ৯০% এর বেশি মুসলিম (তথাকথিত) দেশে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নামাজের/ ইবাদতের ঘর কি সমস্যা আমি বুঝি নাই। কলেজে কোন জিনিসটি তোমাকে পীড়া দিয়েছে, হাউস মস্কে কতিপয় ক্যাডেটের নামাজ আদায়, নাকি তাদের দাওয়াতি কর্মকাণ্ড, ব্যক্তি বিশেষের আচরণ, কোনটা? অনেকের মত তুমিও ইসলাম আর তাবলীগ (মাওলানা ইলিয়াস (রঃ)) ও আবুল আলা মউদুদীর জামাতে ইসলামী সব জগাখিচুড়ি বানায়ে ফেলসো। পার্থক্য করতে পারো নাই।

    আমার একটা অনুরোধ থাকবে। একটু খুঁজে দেখো। কোনটি তোমাকে সমস্যায় ফেলছে, ধর্ম পালন, ধর্ম না কোন ব্যক্তি? কেন ফেলছে? আমার মনে হয় তুমি ধরতে পারবে। ইসলাম কিন্তু শুধু ব্যক্তি পর্যায়ে ধর্ম পালন করার কথা বলে না, সেটা সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে পালনের কথাও বলে। এবং এটা একসময় কিছু ব্যক্তি করে দেখিয়েছে। আমরা করছি না সেটা ভিন্ন কথা।

    আর হাউস মস্ক গ্রুপ নাম এখানে দেখলাম। আর কেউ যদি ভবিষ্যতে কোন ভুল করে তাঁর দায় তো সে নিবে, জ্ঞান -বুদ্ধিতো সবার আছে।


    বিবেক হলো অ্যানালগ ঘড়ি, খালি টিক টিক করে। জীবন হলো পেন্ডুলাম, খালি দুলতেই থাকে, সময় হলে থেমে যায়।

    জবাব দিন
    • নাজমুল (০২-০৮)

      বন্ধু রেজা,
      আমার হাউজ মস্ক নিয়ে কোনো দুঃখ নাই অবশ্যই, তবে আমার প্রশ্ন আমরা কি প্রেয়ার রুমকে কনভার্ট করে মস্ক বানালাম কিনা !! তাহলে বাকি যারা নামাজ/কোরান বাদে অন্য কিছু নিয়ে প্রার্থনা করে তাদের জন্য জায়গা কোথায় ?? তারা যদি রুমে পালন করতে আরে আমরা পারি। সো ৯০% মুসলিমের দেশ এটা মানলাম কিন্তু আমরা ৯০% এর থেকে আলাদা জায়গায় পড়াশোনা করছি যেখানে সংখ্যা গরিষ্ঠ কিংবা লঘিষ্ঠ ব্যাপার গুলা প্রাধান্য না পেয়ে কোনটা সঠিক সেটা ঠিক রাখার প্রয়োজন বেশি।

      লেজে কোন জিনিসটি তোমাকে পীড়া দিয়েছে, হাউস মস্কে কতিপয় ক্যাডেটের নামাজ আদায়, নাকি তাদের দাওয়াতি কর্মকাণ্ড, ব্যক্তি বিশেষের আচরণ, কোনটা?

      দাওয়াতি কর্মকান্ড।

      অনেকের মত তুমিও ইসলাম আর তাবলীগ (মাওলানা ইলিয়াস (রঃ)) ও আবুল আলা মউদুদীর জামাতে ইসলামী সব জগাখিচুড়ি বানায়ে ফেলসো। পার্থক্য করতে পারো নাই।

      আমার মনে হয় তুই ব্লগের মেইন জিনিষটা বুঝতে পারিস নাই, আমি বলতেছিনা যা আমাদের কলেজ মস্কই এগুলা করতেছে তবে রশিদ স্যারের ছেলে জুম্মার নামাজের পর শিবিরের বই দিত কয়েকজন উপরের ক্যাডেটদের। আমাদের কলেজের আমার টেবিল মেট ছিল একজন ঐ দলে। আর এটার ব্যাপারে আমার মনে হয় তোদের আরো বেশী প্রতিবাদ করা উচিৎ। আমার কোনো ভালোবাসা নাই ইসলামের উপর কিংবা কোনো ধর্মের উপর কিন্তু এরা তোদের ভালবাসার একটা জিনিষকে (এক্ষেত্রে ইসলাম), ব্যাবহার করে জামাত শিবির কলেজে নিয়ে যাচ্ছে।
      আর আমার লেখার প্রধাণ কারণ আমাদের হাউজ মস্ক না বরং পিসিসির এই কয়েকটা এক্স এর কর্মকান্ড। ব্লগে আরেকটা ব্লগের লিঙ্ক আছে সেটা পড়ে দেখ, এইটা ইসলাম প্রচার করা না (যেটার বিপক্ষে আমি, কারণ একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধর্ম বিক্রীর বাজার না এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক বাচ্চাদের মাথা খুব সহজেই পালটানো যায়।)
      এদের মাথায় একটা বিশেষ কিছু চাপাইয়া দিলে সেটা বের হয়না সহজে। আমার মাথা থেকে ধর্ম বের করতে অনেক সময় এবং পড়াশুনার প্রয়োজন হইছে।

      ইসলাম কিন্তু শুধু ব্যক্তি পর্যায়ে ধর্ম পালন করার কথা বলে না, সেটা সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে পালনের কথাও বলে। এবং এটা একসময় কিছু ব্যক্তি করে দেখিয়েছে। আমরা করছি না সেটা ভিন্ন কথা।

      এটা ভয়ংকর, যারা দেখিয়েছে তারা আমাদের কয়েকশ বছর পিছিয়ে নিয়ে গেছে। ধর্ম ব্যাক্তিগত জিনিষ, সেটাকে রাষ্টের সাথে মেশানো মানে আরো কিছু ইরান, আরব দেশ অথবা আমেরিকার টেক্সাস হবে।
      ধর্ম ধর্মের জায়গায়, ধর্মকে রাষ্টের সাথে নিয়ে আসলো রাষ্ট্র চলবেনা, সেটা একটা জোক্সে পরিণত হবে।

      জবাব দিন
      • রেজা

        নাজমুল,
        বন্ধু আমার, আমার কমেন্টে রিপ্লাই দেয়াতে আমি যারপর নাই কৃতজ্ঞ। রুমে নামাজ আদায়ের বিষয়টা আর হাউস মস্কে নামাজ আদায়ের বিষয়টা আমার মনে হয় তুমি আরো আগেই ধরতে পারতে। কিন্তু কেন ধরলে না বুঝলাম না। সাতাশ গুণ সওয়াব এর বিষয়টি তুমি হয়ত আমার মত ছোট বেলায় পড়ে থাকবে। একসাথে কিছু ক্যাডেট নামাজ আদায় দূষণীয় না। আমাদের সময়ে আমার হাউসে এক হাফেজ ভাই ছিল। উনি কলেজ মস্কে রামাদানে তারাবির নামাজও পরিয়েছেন।
        দাওয়াতের বিষয়টির সমস্যা কোন জায়গায়? একজন মুসলিম ভালো কাজের দিকে ডাকবে আর অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকতে বলবে এটাই কি স্বাভাবিক নয়? আমাদের কলেজে যারা নামাজের জন্য ডাকতো, তারা অনেক কম জুনিয়র ডিলিন্স করতো, পাঙ্গাতো। মানবীয় গুণাবলী বেশি প্রকাশ পেত। অন্যদিকে প্রচণ্ড নোংরা-অপরিস্কার, স্যাডিস্ট ক্যাডেটও দেখেছি। বন্ধু আসো একসাথে সুখটান দেই। এই সুখটান থেকে আরো কত কিছুতে গিয়ে ঠেকেছে বলার অপেক্ষা রাখে না। আরো বিষয় আছে যেটা ওপেন প্লেসে বলছি না। তুমি ধরতে পারবে। ইসলামে জামাত দলবদ্ধতা শিক্ষা দেয়। ক্যাডেট কলেজের সব কম্পিটিশন, সব কাজও কি তাই শিক্ষা দেয় না? পিটি, প্যারেড, গেমস সব একসাথে। খাওয়া দাওয়া একসাথে। অফিসারের ছেলে, কৃষকের ছেলে একই সুবিধা পায়। জামাতে সবাই সমান। ধনীর পাশে গরিব দাড়াতে পারে। সিমিলারিটি দেখার চেষ্টা কর বন্ধু। দাওয়াত যদি হয় আসো নামাজ পড় আর শিবিরে যোগদান কর, তাহলে ভিন্ন কথা। যাক, একজনের ব্যক্তির আচরণ তোমাকে কষ্ট দিয়েছে। ভুলে যাও, হয়তো আর কক্ষনো তাঁর সাথে তোমার আর দেখাই হবে না।

        "এটা ভয়ংকর, যারা দেখিয়েছে তারা আমাদের কয়েকশ বছর পিছিয়ে নিয়ে গেছে। ধর্ম ব্যাক্তিগত জিনিষ, সেটাকে রাষ্টের সাথে মেশানো মানে আরো কিছু ইরান, আরব দেশ অথবা আমেরিকার টেক্সাস হবে।"

        কোন সময়ে কথা বলছো, আমি ধরতে পারিনি। আমি কিন্তু রাসুল (সাঃ) ও সাহাবাদের কথা বুঝিয়েছি। বর্তমান নয়। মুসলিম (সামগ্রিক) দের কর্মকাণ্ড দিয়ে ইসলাম বুঝতে যেয়ো না। তোমার কমেন্ট পড়ে বুঝেছি তুমি অনেক জ্ঞানী, অনেক পড়াশুনা কর। ছোট বেলায় সমাজ বিজ্ঞানে নিশ্চয়ই আমার মত নগর রাষ্ট্র পড়েছ? তারপর বিভিন্ন যুগে কিভাবে বিভিন্ন দেশ জাতি, রাষ্ট্র শাসিত হয়েছে তা পড়ে দেখ। ইউরোপেই প্রথম রাষ্ট্র আর ধর্ম পৃথক করে।

        বন্ধু, আমার অনুরোধ থাকবে একটু কষ্ট করে কোন জিনিসগুলো তোমাকে সমস্যায় ফেলছে তা নোট করে উত্তরগুলো খুঁজে দেখার চেষ্টা কর। এখন সবচেয়ে মার খাওয়া জাতি কোনটা তুমি জানো। কারা মারছে তুমি জানো। কেউ কিন্তু নিরপেক্ষ নয়। সবাই নিজ নিজ পরিণতির দিকে ধাবিত হচ্ছে।

        ভালো থেক।


        বিবেক হলো অ্যানালগ ঘড়ি, খালি টিক টিক করে। জীবন হলো পেন্ডুলাম, খালি দুলতেই থাকে, সময় হলে থেমে যায়।

        জবাব দিন
  3. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    ক্যাডেট কলেজে হাউজ মস্ক তুলে দেয়া উচিত। আরেকটা এক্সট্রা রুম পাওয়া যাবে ছেলেদের জন্য।
    যদি কলেক মস্ক না থাকতো তাহলে কথা ছিলো।
    ক্যাডেট কলেজ মাদ্রাসা না।
    যার নামাজ পড়ার ইচ্ছা সে রুমে পড়বে।
    আমার ছয় বছর কলেজ জীবনে ক্লাস সেভেন শুধু হাইজ মস্কে গিয়ে নামাজ পড়েছি, তাও সেটা রুম লিডারের ভয়ে বা আদেশে আর ক্লাস টুয়েলভের নামাজি ভাই দের নামাজের আগে ডেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
    নিঃসন্দেহে তারা বেহেশতে যাওয়ার মতো পূণ্য কামাই করেছেন ওসব করে।
    রুম লিডার বিদায় হবার পর আর হাউজ মস্ক মুখো হই নাই।
    আর সেইসব নামাজি ভাইএরা আসলে আরেক দরোজা দিয়ে পালাতাম।
    এইসব ফাইজলামির অবসান হওয়া জরুরি।
    অবশ্য আমাদের কলেজে নোতুন করে হাউজ হচ্ছে। আমার ধারণা ওতে আরো আয়োজন করে হাউজ মস্ক করা হবে।
    দেখা যাক, শোনা যাক।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  4. খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

    ক্যাডেট কলেজে এখন এতসব ধর্মীয় কার্যকলাপ চলে, তা আমার জানা ছিল না। আমাদের সময়ে কোন হাউজ মস্ক ছিলনা, তবে তিনটি হাউজের প্রতিটিতেই একটি করে "প্রেয়ার রুম" ছিল, যেখানে জামাতে নামায পড়া হতো। সেটা করা হতো ঐচ্ছিকভাবে, কোন জোর জবরদস্তি ছিলনা। এমন কি আমাদের সময় কোন 'কলেজ মস্ক'ও ছিলনা। মস্কটি আমাদের সময়ে নির্মাণাধীন ছিল, সেটা চালু হয় আমরা কলেজ ছেড়ে চলে আসার পর।

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।